রঙিন খামে বিষাদের চিঠি পর্ব-২৪

0
462

#রঙিন_খামে_বিষাদের_চিঠি
#পর্বঃ২৪
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

৫৫,
আয়াতকে সাজিয়ে গুজিয়ে রেডি করলো রিফা এবং রিয়ানা মিলে। শাড়ি পরানো হয়েছে তাকে। শাড়ি-টা রিফা পরিয়েছে। রিফা আয়াতের ২মাসের ছোট। দুজনের মধ্যে বেশ মিল। রিয়ানার ভালো লাগে যে, অন্তত তার বোনকে বোঝার মতো আরও একটা মানুষ আছে। রিফা শাড়ি পরানোর পর রিয়ানা তাকে সাজিয়েছে। আয়াতের কেমন সাজগোজ করার স্বভাব! রিয়ানা জানে। সেই অনুযায়ী তাকে সাজিয়েছে। সাজানোর পর রিফা আর রিয়ানা দুজন-ই মুগ্ধ নয়নে আয়াতকে দেখছে। উজ্জল ফর্সা মেয়ে-টার শরীরে নীল রঙের জামদানী শাড়ি-টা ফুটে উঠেছে। সাথে সিম্পল কিছু অর্নামেন্টস আর মানান সই মেকআপে আয়াতের সৌন্দর্য যেন দ্বিগুণ রুপে বেরিয়ে এসেছে। মেয়ে-টার বয়স ২৫এর কোঠায় পৌঁছেছে। কিন্তু দেখে বোঝার উপায়-টা নেই। রিয়ানা তো চোখে কাজল পরেনা। বোনের চোখ থেকেই কাজল নিয়ে নজর টিকা দেওয়ার ছলে মজা করে বললো,

“আল্লাহ আমার বোনকে সব কু-নজর থেকে হেফাজতে রাখুন। এত সুন্দর লাগছে। আজ দেখতে এসে না বিয়ে পরিয়ে নিয়ে চলে যায়!”

রিয়ানার কথায় রিফা হাসলো। আয়াত রিয়ানার পিঠে মৃদু চাপর মারার ভঙ্গিতে বললো,

“মাইর একটাও মাটিতে পরবেনা ফাজলামি করলে।”

“আচ্ছা মজা করলাম না। কিন্তু এই আচমকা আসা পাত্র-টা কে আপু? তোর আইডিয়া আছে?”

“আচমকা নয়, আগের জন-ই নাকি! বাবা বললো। জিগাসা করেছিলাম। বললেন, বড়-বাবা আমরা চলে যাওয়ার পর সব খোজ নিয়েছেন। আর এখন খোজ চলছে, ঐ ছেলের সম্পর্কে মিথ্যা কথা যারা বলেছিলো! তাদের পেলে খবর আছে। ছেলে-টা ভালো, শিক্ষিত। পরিবার হোক একটু বনেদী পরিবার। কিন্তু যুগের সাথে মানান সই ভাবে চলাফেরা করে। কেউ তো চেয়েছিলো বিয়ে-টা না হোক। এজন্য এই কাজ-টা করেছিলো।”

“লেইট ইট বি। যা হওয়ার তা হয়েছে। টেইল মি ওয়ান থিং। তুই এই বিয়েতে মন থেকে খুশি তো আপু? তোর পছন্দের কেউ কি সত্যি নেই?”

হঠাৎ করে রিয়ানার এই প্রশ্নে আয়াতের মুখের কথা থমকালো। আনমনা হয়ে ভাবলো, তার কি সত্যি-ই পছন্দের কেউ নেই? আয়াত চোখ বন্ধ করে নিলো। ফরমাল লুকে অতি সুদর্শন এক পুরুষ অবয়ব ভেসে উঠলো চোখের পাতায়। আয়াত চমকে চোখের পাতা মেললো। এটা কি করে সম্ভব! রায়াদ-কে কেন দেখলো সে? তবে কি সত্যি তার মনে রায়াদের জন্য ভালো লাগা কাজ করেছিলো? ‘ধ্যাত, কি সব ভাবছি আমি! রায়াদকে আমার ভালো লাগলে! আমি কি করে খুশিমনে অন্যদিকে বিয়ের কথা বলায় রাজী হলাম? একটুও তো খারাপ লাগছে না। এটা হতেই পারেনা। হয়তো খানিক সময়ের মোহ। ভিন্ন ধাচের ব্যক্তিত্বের জন্য হয়তো এট্রাকশন ফিল হয়েছে। তারমানে এটা না, সে আমার পছন্দের পুরুষ। অপজিট জেন্ডার যেহেতু! এট্রাকশন ফিল হবে-ই। তাই বলে সে ম্যারিড ম্যাটেরিয়াল! একদম না। দুজনের বয়সের পার্থক্য-ও তো খুব বেশি নয়। বড় জোর ২বছর হবে। দুজনকে একদম মানাবে না, একদম না।’ আয়াত আপন মনে এসব ভেবে নিজে-কে নিজেই মনে মনে ধমক দিলো। আয়াতের জবাব না পেয়ে আগ্রহ সহিত তাকিয়েছিলো রিফা এবং রিয়ানা। তার জবাব না পেয়ে রিয়ানা বোনের কাঁধে মৃদু ধাক্কা দিয়ে শুধালো,

“এই আপু? কোন জগতে হারিয়ে গেলি?”

আয়াত ফের চমকালো। ঝাঁকি দিয়ে উঠে চোরা চোখে রিয়ানার দিকে তাকিয়ে থতমত খেয়ে বললো,

“কি হয়েছে?”

“তোকে কিছু জিগাসা করেছিলাম আমি? জবাব না দিয় ভাবতে বসে গেছিস!”

আয়াত রিয়ানার গালে হাত রাখলো। মৃদু হেসে বললো,

“না নেই। তুই তো বলিস, আমি তোর বড় বোন হয়ে একটা বয়ফ্রেন্ড জোটাতে পারিনি। অথচ তুই কত মানুষের সাথে ফ্লার্ট করিস। লজ্জাজনক ব্যাপার স্যাপার।”

৫৬,
রিয়ানা মুখ গোমড়া করার ভাণ ধরলো। কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো আয়াতের দিকে। আয়াত রিয়ানার দৃষ্টি খেয়াল করে চোখ সরিয়ে নিলো। এই দৃষ্টি ভয়ংকর। রিয়ানা কড়া চাহনী মিথ্যা ধরে ফেলতে সক্ষম। মানুষ-কে ভালো অবজার্ভ করতে পারে তার বোন। আয়াতের মনের কথা চোখের ভাষায় চট করে ধরে ফেলতে এক মিনিট সময় নিবেনা। রিয়ানা লক্ষ্য করলো আয়াতের লুকোচুরি। কিন্তু কিছু বললো না। বিছানায় গিয়ে বসলো। ডুব দিলো ভাবনার জগতে। খুঁজতে চেষ্টা করলো, তার বোনের জীবনে তেমন স্পেশাল কেউ ছিলো কি! যার কথা রিয়ানার অবগত নয়? সে হাতরে পেলো না কাউকে। তার বোন তো সহজ-সরল বাঙালি এক নারী। যার মাথায় বাবার চিন্তা, বোনের চিন্তা, বাবার সব-টা আগলে রাখার চিন্তা। শুধু চিন্তা ছিলো না নিজেকে নিয়ে। এজন্য তো এমন কোনো মানুষ আয়াতের জীবনে আসার সুযোগ পায়নিন। তবে কি দেশে আসার পর কেউ এসেছে! রিয়ানার অনুপস্থিতিতে কাউকে পছন্দ করেছে তার বোন? যার কথা তাকে বলেনি! কিন্তু এমন পুরুষ মানুষ তো এই বাড়িতে আসায় পর কোথাও নজরে পরলো না। পছন্দ করার মতো পুরুষ তো কেবল! জুবায়ের আর রায়াদের কথা মাথায় আসলো রিয়ানার। সে আয়াতের দিকে ফের দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। আয়াত বসে রিফার সাথে গল্প করছে নিজের সাজগোজ নিয়ে। শাড়ি না পরিয়ে, থ্রিপিস পরালেও হতো। এসব বলছে। রিয়ানা সেদিকে কান দিলো না। ভাবতে বসলো, জুবায়ের নাকি রায়াদ! কাকে পছন্দ করেছে তার বোন? তার প্রশ্নে আয়াতের লুকোচুরি দৃষ্টি হাজার বার জবাব দিয়ে দিয়েছে আয়াতের পছন্দের কেউ অবশ্যই আছে। সে যেমন মনে একজনকে রেখে ২য় কাউকে বসাতে পারছেনা। দহনে পুড়ছে। রিয়ানা চায় না তার বোন তেমন পরিস্থিতিতে পরুক। পছন্দে একজনকে রেখে অন্য কারোর সাথে বিয়ের পর তাকে পছন্দ করা, ভালো লাগা, ভালোবাসার চেষ্টা তার বোনকে একটু বেশি-ই পোড়াবে। এটা রিয়ানা একদম চায় না। একদম না। কিন্তু ভেবেচিন্তে কূল পেলো না সে। থাক সেসব ভাবনা এখন। দেখতে আসলেই তো বিয়ে হয়না। দেখে যাক। এরপর না হয় বোনের সাথে একান্তে কথা বলা যাবে। রিয়ানার ভাবনা চিন্তার মাঝে-ই অন্তি সেখানে উপস্থিত হলো। দরজায় দাড়িয়ে শুধালো,

“আপুকে সাজানো হয়েছে? হলে নিয়ে যেতে বললো নিচে। পাত্রপক্ষ অনেক সময় হলো এসে বসে আছে।”

রিফা মৃদু হেসে বললো,

“তুমি ভাবী হও, নিয়ে যাও। আমাদের পরিবারে তো কড়া নিষেধ জারি করা, অবিবাহিত মেয়ে-রা বাড়ির এক মেয়েকে দেখতে আসলে নিচে যাওয়া নিষেধ। বলা তো যায় না, সবাইকে না পছন্দ করে ফেলে।”

অন্তি হাসলো রিফার কথায়। আয়াতের কাছে এসে তার হাত ধরে দাড়া করালো। মাথায় ভালো ভাবে শাড়ির আঁচল টেনে ঘোমটা দিয়ে দিলো। নিজেও মাথায় শাড়ির আঁচল টেনে মাথা ঢেকে আয়াতকে নিয়ে পা বাড়ালো বাইরের দিকে। দুজন চলে যেতেই রিফা উঠে এসে রিয়ানার পাশে বসলো। পা দুলিয়ে বললো,

“বোধ হয় তোমার অপমান কাজে লাগলো রিয়ু। অন্তি একটু শান্ত হয়ে গেছে। খেয়াল করছি সকাল থেকে-ই।”

রিয়ানা জবাবে হাসলো। কিছু বললো না। উঠে দাড়িয়ে জানালার পাশে গেলো। পরনের ওরনার এক মাথা আঙুলে পেঁচাতে পেঁচাতে ভাবলো,

“আমার কথা আর আঘাত দু’টোই সমান হয়ে গেছে রিফা আপু। এই আঘাত কাউকে ভালো করে, কাউকে কষ্ট দেয়। একজন ভালো হচ্ছে, অপর জন কষ্ট পাচ্ছে। আমার থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মুখোমুখি হতে হবে তাকে। নতুবা এই কষ্টের পর্ব মিটবেনা। মিটিয়ে দিয়ে উড়াল দেওয়ার পালা অন্য দেশে।”

৫৬,
পাত্রের জায়গায় জুবায়েরকে দেখে বিস্ময়ে হতবাক আয়াত। কিভাবে কি! সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তার। জুবায়েরে দাদু, বাবা, চাচা, জুবায়েরের মা, চাচী আর সে এসেছে আয়াতকে দেখতে। আয়াতের ঘোমটা উঠিয়ে মুখ দেখার সময় সবাই সবার পরিচয় দিয়েছে। সব দেখে আয়াতের চক্ষু চড়ক গাছ। বড় রা সব সোফায় বসেছে। সবার তো সোফায় বসার জায়গা হয়নি, চেয়ার এনেও গোল হয়ে বসে পরেছে সব। সোফায় পাত্রপক্ষ, চেয়ারে আয়াতের বাবা, চাচা আর চাচী বসেছেন। সাজ্জাদ আর রায়াদ সোফার এক কোণায় পাশাপাশি দাড়ানো। অন্তি আয়াতের পাশে বসা। ভাবী হয় সম্পর্কে, সেই যে যা বলছে। তা করে দিচ্ছে আয়াতের হয়ে।আজ-ই পছন্দের পর্ব মিটলে আংটি পরিয়ে দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। পছন্দ তো সবার হয়ে-ই গেছে। এজন্য জুবায়েরের দাদু হামিদ চৌধুরী বললেন,

“নাত বউকে তো পছন্দ হলো-ই। এবার তবে দিন তারিখ ঠিক করা যাক?”

“তার আগে আমার একটা অবজেকশন আছে দাদু। একটু থামো।”

তার কথা শেষে জুবায়ের কথা-টা বললো। জুবায়েরের কথায় সবাই একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো। তার বাবা রবিউল চৌধুরী বললেন,

“কি অবজেকশন?”

“আগে তোমরা শোনো, পাত্রী রাজী কিনা? খালি তার গলায় আমায় ঝুলিয়ে দিলেই বাঁচো একেকজন!”

জুবায়েরের কথায় সবাই হাফ ছাড়লো। সস্তি ফুটে উঠলো সবার মুখে। জুবায়েরের মা মিসেস ডালিয়া বললেন,

“দেখো মা, আমি কিন্তু জুবায়েরের গর্ভধারিণী মা নই। তবে সেটা কেউ বলতে পারে না যে, আমি ওর সৎ মা। আমাদের পরিবার সম্পর্কে সব জানো বোধ হয়। খোজ নিয়েই কথা এতদূর। এখন সব জেনে-ই নির্ভয়ে সবার সামনে তোমার মতামত দাও। পরে শুনবে যে সৎ শাশুড়ী। ভাববে সে তো মায়ের মতো দরদ করবেনা। তাহলে বিয়ের আগে বলেনি কেন? এজন্য আগে-ই বললাম। এবার বাকি সিদ্ধান্ত তোমার উপর ছেড়ে দেওয়া হলো।”

সৎ মা! কথা-টা আয়াতের কর্ণগোচর হতেই সে চমকালো। মুখ তুলে জুবায়েরের পানে তাকালো। এই ছেলে-টা তার মতো-ই মা হীন! এজন্য শহরে একা থাকে? তবে তার সৎ মা যে বললো, কেউ বলতে পারেনা সৎ মা? তাহলে জুবায়ের পরিবারের সাথে কেন থাকেন? পড়াশোনার খাতিরে? তাকে দেখে তো মনে হয় না, কোনো কষ্ট চেপে চলছে জীবনে। অবশ্য উপর থেকে যা দেখানো হয়! তা কি সবসময় সত্যি হয়? অনেকগুলো প্রশ্ন-রা ঘুরপাক খেতে লাগলো আয়াতের মাথায়। রায়াদের সাথে যেখানে বয়সের পার্থক্য কম ভেবে একদম ভাবতে চায়নি কিছু! সেখানে জুবায়েরের সাথে-ও তো একই পার্থক্য। কি করে সম্পর্ক-টা জুড়বে সে? বয়স-টা ফ্যাক্ট না। আয়াত ভাবেনা সেটা। রায়াদ তার বোনকে গুছিয়ে দিক। এই চিন্তা থেকে তো সে মনকে বুঝিয়ে নিয়েছে। সে ভাবনা-চিন্তার মাঝেই বলে দিলো,

“আমার আপত্তি নেই।”

সবাই আয়াতের জবাবে খুশি হলো। মিষ্টি তুলে একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে নতুন আত্মীয়তার সূত্রপাত ঘটলো। আয়াতের পাশে বসলেন। ছোট্ট আংটির বক্স থেকে আংটি বের করে পরিয়ে দিলেন আঙুলে। রায়াদ অনেকক্ষণ যাবত অস্থির হয়ে দাড়িয়ে ছিলো জুবায়েরের সাথে কথা বলবে বলে। কিন্তু তাকে একা পাচ্ছে-ই না সে। একগাদা প্রশ্ন মাথায় কিলবিল করছে। অথচ জবাব শূণ্য। সে আর মানুষ-দের মাঝে থাকতে পারলো না। পা বাড়ালো গেস্টরুমের দিকে। যেখানে রায়াদের রেস্ট করার জন্য থাকার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু দরজার কাছাকাছি যেতেই রায়াদ মুখোমুখি হলো রিয়ানার। তার হাতে কফির মগ। পা টিপে উপর তলার দিকে যাচ্ছিলো সে। রিয়ানাকে চোরের মতো নিজের বাড়িতে হাঁটতে দেখে রায়াদের হাসি পেলো। সে হাসি আঁটকে বললো,

“নিজের বাড়ি-তে চোরের মতো হাঁটছেন যে?”

“চুপ করুন, রিফা আপু বলে দিয়েছে পাত্রপক্ষের সামনে না পরতে। এরা দেখতে এসেছে একজনকে। বিয়ের যোগ্য পাত্রী পেলে গুস্টির সব ছেলের জন্য পারলে ঠিক করে নাকি! অবশ্য আমি এত সব জানিনা।”

রায়াদ একটু অবাক হলো রিয়ানার মুখে এত কথা দেখে। সে মৃদু হেসে মাথা চুলকে বললো,

“এমন চঞ্চল হতে পারেন না? সবসময় গাম্ভীর্যের মাঝে নিজের চঞ্চলতা লুকিয়ে রাখেন কেন?”

“কারণ আমি বাকি মানুষদের মতো নরমাল নই। এবনরমাল। বুঝেছেন? সরুন সামনে থেকে। আমায় যেতে দিন।”

রিয়ানা রায়াদকে পাশ কাটায়। পা বাড়ায় উপর তলার দিকে। রায়াদ তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে হতাশ হলো। আনমনে ভাবলো,

“নরমাল সত্তাকে তো এবনরমাল বানিয়ে ফেলেছেন। বানিয়ে ফেলেছেন!নাকি বানাতে বাধ্য হয়েছেন? প্রশ্ন থেকে-ই যায়।”

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে