রঙধনু পর্ব আট (Season 02)

0
2004

রঙধনু?

দ্বিতীয়বার

তৃধা মোহিনী(মৃন্ময়ী)

পর্ব আট

?

ঘরে বসে মোহ নিঃশব্দে চোখের পানি ফেলছে,ফারিশ থাপ্পড় মেরে বেরিয়ে যাওয়ার পর আর আসে নি..এদিকে একা একা থাকতেও ভয় লাগছে তার।।

আধাঘন্টা পেরিয়ে গেছে,ফারিশের আসার নামগন্ধ নেয় ঘরে..আর এদিকে চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার নামছে আস্তে আস্তে।।

এক ঘন্টা পর,

ফারিশ রুমের দরজা খুলে আসলো..মোহ ফারিশকে দেখে ভয়ে কুকড়ে যেয়ে দাড়িয়ে পরলেও দেয়ালে ঘেষে দাড়ালো..ফারিশ মোহর মাথায় ওড়নাটা দিয়ে টানতে টানতে নিচে নিয়ে যাচ্ছে..মোহ জিজ্ঞেস করতে পারছে না কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তাকে সে,রক্তিম চোখে ফারিশের রাগ যেন বের হয়ে আসছে।।

ফারিশ যখন মোহকে টানতে টানতে নিচে নিয়ে আসলো তখন মোহ দেখতে পেলো নিচে একজন মুরুব্বি বসে আছে।।

ফারিশ মোহকে সোফাতে বসিয়ে নিজেও সোফার উপরে বসে পরলো।।

“স্টার্ট” ফারিশ থমথমে আওয়াজে বললো।।

মুরুব্বি দেখি বিয়ে পরানো শুরু করলো..বিয়ে পরানো দেখে মোহর টনক করলো,তার মাথা ঘুরাচ্ছে যে কি হচ্ছে এইসব??

দাড়াতে গেলে ফারিশ তার হাতের কব্জি অনেক শক্ত করে ধরে।।

“ডোন্ট ইউ ইভেন ট্রাই টু ডেয়ার টু ডু দিস” ফারিশ দাঁতে দাঁত চেপে বললো।।

মুরব্বি অর্থাৎ কাজিসাহেব পেপার আগিয়ে মোহকে সাইন করতে বলে..কিন্তু মোহ সাইন করে না..তার হাত পা কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।।

“সাইন করো??এতো কাঁপা-কাঁপি বাসর রাতের জন্যও রাখো??” ফারিশের শক্ত জবাব।।

“আমি পারবো না” মোহ ভয়ে ভয়ে বললো।।

“দেখ মেজাজ খাইস না!!যা বলছি কর?নইত তোর সামনে এই কাজিকে খুন করে ফেলবো আজ আমি” ফারিশ রেগে বললো।।

মোহ অসহায় চোখে তাকালেও,ফারিশ সেদিকে পাত্তা দেয় নি..এদিকে কাজিও ভয়ে আছে কারন হুমকি খেয়ে কাজি আসছে বিয়ে পরাতে।।

মোহ আর উপায় না দেখে চোখে পানি নিয়ে সাইন করে দিলো..হয়ে গেলো অন্যের সহধর্মিণী.. নিজের উপর রইলো না আর নিজের অধিকার,এখন থেকে সবটুকু জোরে তার।।

মোহর সাইন শেষ হইলে ফারিশ সাইন করে ফেলে..লিগ্যালি তার এখন হাসবেন্ড এন্ড ওয়াইফ।।

“ইউর টাইম আপ নাও?নিচে আমার গার্ড আছে,আপনার পাওনা বুঝিয়ে নি!!জাস্ট লিভ নাও” ফারিশ কাজিকে বললো।।

ফারিশের এমন থ্রেট মূলক কথা শুনে,সুরসুর করে কাজি চলে গেলো।।

ফারিশ মোহদ দিকে তাকিয়ে আবারো হাত টানতে টানতে উপরে নিয়ে গেলো।।

ফারিশ বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছে কি করবে আজ,দুইদিন আগে সন্ধ্যাবেলা ফারিশ তার বাবার সাথেই প্ল্যান নিয়ে আলোচনা করছিলো যে আজকের পার্টিতে মোহকে সবার সামনে উপস্থিত করে বিয়ের তারিখ ঘোষণা করবে মিডিয়ার সামনে..তাই তার বাবাকে সব ব্যবস্থা করতে বলেছিলো কিন্তু তার আগে মোহ সব ভেস্তে দিলো।।

ফারিশ মোহকে বেডের উপর ছুড়ে মারলো,বেডের উপর ছিটকে পরলো মোহ।।

ফারিশ তার শার্টের দুইটা বোতাম খুলে আস্তে আস্তে আগাচ্ছে মোহর দিকে,মোহ নিচে নামতে গেলে..ফারিশ মোহর পা টান মেরে কাছে আনে..মোহর মুখের উপর ফারিশের গরম নিঃশ্বাস পরছে..এই মুহূর্তে মোহর মনে ফারিশের জন্য সবকিছু আউলা ঝাউলা লাগছে।।

“দে..দেখুন!!আমার সময় চা” পুরো কথা মোহ বলার আগে ফারিশের আঙ্গুল মোহর ঠোটে গিয়ে পরলো।।

“ডোন্ট সাউন্ড!!সময় দিতে চেয়েছিলাম আমি??কিন্তু সময় টাকে কিভাবে ইউজ করলে??না করেছিলাম না আমি,আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবিতে??বলো” অনেক জোরে চিৎকার দিলো ফারিশ।।

মোহর আত্না ভয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো এমন আওয়াজ শুনে।।

“আমি ত আপনার ক্ষতি হোক এইজন্য” মোহ ভয়ে ভয়ে বললো।।

“ওহ রিয়েলি??আমার ভালো চাইছিলে?ইউ ডাফফার!!আমার ভালো যদি এতোটায় বুঝতে তাহলে এটাও বুঝতে তোমাকে ছাড়া আমি কেমন হয়ে যায়??তোমাকে ছাড়া আমি আমার জিবন টা নিশ্চল ভাবি..তোমাকে ছাড়া এই দুনিয়াটাকে ছাড় খার করে দিতে ভাবি??আর তুমি তোমাকে আমার থেকে আলাদা করতে চাইছিলে??হাও কুড ইউ” ফারিশ আরো জোরে চিল্লিয়ে।।

“আমার ভুল হয়ে গেছে” মোহ বললে,ফারিশ কাছে এসে মোহর ঠোটে নিজের আঙ্গুল রেখে বললো,

“এইভাবে তো জ্বালাটা কমবে না আমার?আমি আমার ওয়েতে তোমাকে শাস্তি দিব” ফারিশ বললো।।

ফারিশের কথা বুঝে উঠার আগেই,ফারিশ নিজের ঠোট দ্বারা মোহর ঠোট চেপে ধরলো..মোহর জীবনে চুমু নামক এই জিনিসের সাথে কখনো পরিচিত ছিলো না..ফারিশ কেমন প্রেশার দিচ্ছে মোহর ঠোটে মনে হচ্ছে ইচ্ছা করে করে শক্ত করে চুমু দিচ্ছে,ঠোটটা মনে হয় ইতিমধ্যে ছিলে গেছে..মোহ ব্যাথা পাচ্ছে কিন্তু থামানোর শক্তিটুকু পাচ্ছে না,অনুভূতি গুলো কেমন দলা পাকিয়ে গেছে।।

চুমুর বদলে কামড়ে পরিনত হওয়ায় মোহর চোখ দিয়ে পানি পরছে..আস্তে আস্তে ফারিশ কামড় বন্ধ করে হালকা হালকা অনেকগুলো ছোট ছোট চুমু দিচ্ছে মোহর ঠোটে,এতোক্ষন মোহর হাত দুটো সে বেডে চেপে ধরেছিলো এখন আলগা হয়ে আসছে..মোহর ওড়না টান মেরে সরিয়ে,গলাতে মুখ ডুবালো,আস্তে আস্তে লাভ বাইট ও দিচ্ছে..মোহর এরকম অনুভূতির সাথে পরিচিত হচ্ছে আস্তে আস্তে..শিউরে উঠছে সে নিজেও..এমন উত্তেজনা অনুভূতি তার জন্য এখন ব্যাথাদায়ক সুখকর হয়ে উঠছে,ফারিশের গলাটা কিভাবে যেন খামচে ধরে আছে সে।।

মোহর এমন খামচে ধরাটা ফারিশের অস্থিরতা যেন আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে দিল,মোহর জামা পিছনের চেইন খুলে,নিজের শার্ট টাও দূরে ছুড়ে মারলো..ফারিশের চুমুর পরিমান তীব্র থেকে তীব্রভাবে বাড়ছে,এদিকে মোহও এক সময় সাপোর্ট দিতে শুর করছে..নিজেও চুমু খাচ্ছে কিন্তু ফারিশের জন্য পাচ্ছে না,মোহর ঠোট থেকে নিজের ঠোট সরিয়ে,মোহর কাধের তিলে অনেক জোরে কামড় দিলো..এই কামড় মোহর কাছে ফিল করার মতো লাগছে,ফারিশের চুল শক্ত করে চেপে ধরলো..এইভাবে তারা দুজনে আবদ্ধ হলো দুজনাতে..সময় থেমে যাক,ভালোবাসা অবিরাম চলতে থাক….ফারিশের ভালোবাসার কাছে মোজ বিড়াল ছানার মতো কুকড়ে যেয়ে হার মানলো।।।

অবশেষে বাঘ তার শিকারকে নিজের করে পেলো।।

সকালবেলা,

হালকা মিস্টি রোদ মোহর মুখে পরছে,চোখমুখ কুচকে ফেলছে এমন ডিস্টার্ব ফিল করাতে..চোখ খুললো যখন নিজের উপর ভারী কিছু আবিষ্কার করলো সে।।

মোহ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে,ফারিশ তার উপরে সম্পূর্ণ ভর দিয়ে তারই বুকে মাথা নিয়ে ঘুমে বিভোর হয়ে আছে..কে বলবে কাল রাত এই মানুষটা রাগে কেমন হিংস্র হয়ে গেছিলো??ঘুমে কেমন নিষ্পাপ লাগছে,স্নিগ্ধতা আসছে চেহারাতে।।

উঠতে গেলে পারছে না,এদিকে সে টের পেলো নিজের গায়ে জামাকাপড় নাই..ঘরে তার আর ফারিশের জামা কাপড় ছিটিয়ে পরে আছে..ফারিশকে ঠেলেও সরছে না,এতো ভারী কেমনে??।।

কোনমতে ফারিশকে ঠেলে সরিয়ে,আলমারিতে হাত দিয়ে দেখলো একটা তোয়ালে আছে,নিজের গায়ে চাদর জড়িয়ে ওয়াশরুমে গেলো গোসলে।।

মোহ দেখলো তার শরীরের কিছু অংশে কেমন কালসিটে দাগ..হ্যা ফারিশের দেয়া কামড়ের দাগ,ঠোটটাই ফুলে গেছে,পানি পরাতে হালকা জ্বলছেও..কিন্তু মোহর কাছে আজকে পরিপূর্ণ লাগছে নিজেকে..শান্তি পাচ্ছে সে।।

গোসল সেরে মোহ তোয়ালে পেচিয়ে গায়ে,ভিজা চুল নিয়ে বের হলো..এখন জামা কোথায় পাবে সে??বেক্কলের মতো গোসলন্ত করে নিলো।।

এদিকে ফারিশ ঘুমের মধ্যে কিছু একটা খুজছে,না পেয়ে তড়াক করে চোখ খুললে মোহকে এমন রুপে দেখতে পায়..চোখ আটকে যায় তার মোহর দিকে।।

মোহর কাছে যেয়ে ওর ভিজা চুলে নাক ডুবালো..মোহ ভয় পেয়ে শিউরে উঠলেও,নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

“ছা.ছাড়ুন??সকাল হয়ে গেছে..আমি মাত্র গোসল সারলাম??

” ত?আমার শাস্তি শেষ হয় নাই??” ফারিশ মোহকে থামিয়ে দিয়ে,মোহর ঘাড়ে মুখ রেখে কথাগুলো বললো..ফারিশের এমন গরম নিঃশ্বাস মোহর বুকে কেমন ঢেউ খেলে যাচ্ছে।।

ফারিশ মোহকে নিয়ে বেডে নিয়ে যেয়ে শুয়ে তার কানে কানে বললো,”তোমার মাঝে এতো শান্তি আগে জানলে কবে তোমাকে খুজে নিজের করে নিতাম..আমার অস্থিরতা কারন তুমি..আমার অতিরিক্ত ভালোবাসার কারন তুমি..যা আমার শান্তির কারন,যাকে আমি ভালোবাসি মাত্রাতিরিক্ত তাকে কোনভাবে আমি এই জন্মে ত ছাড়ছি না..আই নিড ইউ নট ফর টুডে,আই নিড ইউ এভ্রি সিঙ্গেল মোমেন্ট অফ মাই লাইফ”ফারিশ কথাগুলো মোহর কানে ফিসফিসিয়ে বলে তোয়ালে টান দিয়ে,তার ভালোবাসা স্বরুও শাস্তি দিতে ব্যস্ত হয়ে গেলো..মোহ ও তার স্বত্তাকে ফারিশের নাম করে দিলো।।

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে