#রং_বদল
#IH_Iman_Haque
#পর্ব_০৯
শেষে চলে আসলাম জান্নাতুন এর বাসায়,মানে আমার শশুর বাড়িতে।বাসার ভীতরে ঢুকে আমি অবাক কারন এখানে অনেক মানুষ।আমাকে দেখতে আসছে নাকি, এনারা কি জন্য এসেজে বুঝতে পারতেছি না?আবার কিছু মেয়ে ও আছে বাসার ভিতরে।মেয়েগুলো কি যেনো বলা বলি করতেছে শুনতে পারতেছি না?হঠাৎ করে একটা মেয়ে আমাকে চোখ টিপা মেরে হাসতেছে, আমি তো অবাক চেনা নাই জানা নাই আমাকে চোখ টিপা মারতেছে।জান্নাতুন কে কি মেয়েগুলোর ব্যপারে বলবো,না বাবা যদি পরে ভূল বুঝে?এমনিতে মেয়েরা স্বামীকে সন্দেহ বেশি করে।
জান্নাতুন জামাইকে নিয়ে রুমে যা,এখানে দাড়িয়ে আছিস কেনো।(আমার শাশুড়ি বলতেছে )
হুম যাচ্ছি মা।এই যে তুমি আমার সাথে আসো।
কোথাই যাবো।
কোথায় মানে রুমে যাবে না।
হুম যাবো তো।
তাহলে আমার পিছনে পিছনে আসো।
আমি জান্নাতুন এর পিছনে পিছনে যাচ্ছি।হঠাৎ করে মেয়েগুলো আমার সামনে এসে বলতেছে,
এই যে দুলাভাই কোথায় যাচ্ছেন,আমাদেও সাথে নিয়ে যান।
আপনাদের ঠিক চিনতে পারলাম না,কে আপনারা?
আপনি আমাদের চিনবেন না, কিন্তু আমরা সবাই আপনার চিনি আমরা সালি লাগি আপনার ।
কি আমার সালি ও আছে আগে তো জানতাম না,তাহলে তো ভালোই হলো কিউট কিউট সালি আছে শুনে?এই জান্নাতুন এদিকে আসো তো,(আমাদের থেকে একটু দূরে ছিলো তাই কাছে ডাকলাম )
হুম কি হয়েছে বলো?
এই মেয়েগুলোকে চিনো তুমি,
হুম ওরা আমার খালাত বোন-আর ফুপাতো বোন।
কি আগে বলবে না,আমাকে তোমার বোন আছে?কতো সুন্দর সালিগুলোর সাথে আগে পরিচয় করে দেও নি, তুমি কাজটা কিন্তু ভালো করো নি?
পরিচয় করিয়ে দেই নি ভালো হয়েছে,এখন এখানে না দাড়িয়ে থেকে আমার সাথে আসো বলতেছি (মেয়ে দেখতে মুখ দিয়ে লালা পড়ে তাই না।)
আরে তুমি রাগ করতেছো কেনো (আমি বুঝতে পারতেছি মেয়ে গুলোর সাথে কথা বলা দেখে জান্নাতুন রাগ করতেছে,ওকে আরো রাগার জন্য এমন করতেছি )
আপু তুই রাগ করতেছিস কেনো,তুই গেলে যা না আমরা সবাই দুলাভাই এর সাথে একটু আড্ডা দেই।(এক সাথে সবাই বলতেছে )
তোদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য এখানে আসে নি,চলো আমার সাথে বলতেছি।
বউ শুনো না,আর একটু সালিদের সাথে কথা বলি।
বললাম না তোমাকে আমার সাথে যেথে,এদের সাথে আড্ডাদিতে হবে না।(ওদের সবার কথা শুনে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে।কোন মেয়ে চায় না, তার স্বামী অন্য মেয়ের সাথে কথা বলুক, সে যতোই নিজের বোন হোক )
দুলাভাই আপনি যান আপুর সাথে এমনিতে আপু রাগ একটু বেশি আমরা না হয় পরে আড্ডা দিবো।
ওকে পরে আড্ডা দিবো সালিকারা।
চলো আমার সাথে,
তারপর জান্নাতুন আমাকে জোড় করে একটা রুমে নিয়ে আসলো।রুমে ভিতরে ঢুকে অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখতেছি।কতো সুন্দর ভাবে গোছানো রুম টা।এটা মনে হয় জান্নাতুন এর রুমে।মেয়েদের রুম এত সুন্দর হয় আগে জানতাম না।
আমি দরজাটা লাগাই দিয়ে সোজা আমার স্বামীর কলার ধরে বলতেছি,
তোমাকে না বললাম ওদের সাথে কথা না বলতে। তুমিও কেমন বেহেয়ার মতো ঢলে ঢলে কথা বলতেছো ওদের সাথে হ্যা।তুমি জানো না বউ রেখে অন্য মেয়েকে দেখলে চোখে জেনা হয়।খুবেই তো নবী (সাঃ) এর আদর্শর কথা বলতে এখন তুমি কোথায় আছো হ্যা,
ওই তুমি আমার কলার ধরলে কেনো আর ওগুলো কি বলো তুমি,সালি গুলো কতো সুন্দর দেখতে কথা না বলে থাকা যায়, কি বলো?আমিও এটা জানি বউকে রেখে বেপর্দা নারীকে দেখলে চোখে জেনা হয়,এমনিতে শয়তানি করলাম একটু।
ঠিক আছে তুমি তোমার সালিদের নিয়ে থাকো,আমি তো কেউ না,ওরায় সব তোমার।
এই কই যাও তুমি আমার সব,কেউ না মানে।
আমি যদি তোমার সব হই, তাহলে আমাকে কথা দাও ওই মেয়েগুলোর সাথে কথা বলবে না।
মেয়েগুলো মানে তোমার তো বোন হয় ওরা।
বোন হোক যতোই, এক সময় বোন ও পর হয়ে যায়,তাই আমি চাই না তোমাকে কোন কারনে হারাতে কথা দাও আর কথা বলবে না ওদের সাথে।
বউ যখন বলেছে তাহলে কথা দিলাম আর কথা বলবো না।এবার হয়েছে।
হুম শুনো না, আমাকে একটু জরিয়ে ধরো না আমার কেমন কেমন যেনো লাগতেছে।
কি বলো তুমি আচ্ছা কাছে আসো জরিয়ে ধরতেছি?তারপর আমি জান্নাতুনকে জরিয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাচ্ছি।
শুনছো তোমার বুকে মাথা রাখলে আমার কেনো যে এতো শান্তি পাই আল্লাহ্ ভালো জানে।
তাই,
সব দুঃখ কষ্ট ভূলে যাই,
এটা হচ্ছে আল্লাহ্ তৈরী বন্ধন একে অপরকে মন থেকে ভালোবাসলে স্বামী বুকে মাথা রাখলে দুঃখ-কষ্ট সব ভূলা যায়।আচ্ছা শুনো আমার মাথাটা ব্যথা করতেছে তাই ফ্রেস হতে হবে।
ঠিক আছে তুমি বাথরুমে যাও,আমি তোমার কাপড় নিয়ে আসতেছি।
জান্নাতুন এর কথা শুনে বাথরুমের ভিতরে গেলাম।বাথরুম টাও বেশ সুন্দর।তারপর দশ মিনিট ধরে গোসল করলাম কিন্তু জান্নাতুন এর কোন খবর পাচ্ছিলাম না তাই বাথরুমের দরজা হাল্কা খুলে মাথা বাহির করে ডাকতেছি,..
ওগো বউ কই তুমি আমার কাপড় দেও,
এই তো আসতেছি,এই নেও তোমার কাপড়।
ওতো দূর থেকে কিভাবে নিবো,একটু কাছে আসো?
হুম যাচ্ছি এবার নিন।
কাপড় নেওয়ার ছলে জান্নাতুনকেও বাথরুমে ঢুকে নিলাম।
এই কি করতেছো, তুমি আমাকে কেনো বাথরুমে নিয়ে আসলে?
দুই জনে এক সাথে গোসল করবো দেখে।স্বামী-স্ত্রী এক সাথে জরিয়ে ধরে গোসল করা কতো যে মজা তুমি বুঝবা কি?
আচ্ছা তুমি হঠাৎ করে রোমান্টিক হয়ে যাও কেনো বলো তো।
রোমান্টিক সব সময় আমার মাঝে থাকে কিন্তু তুমি বুঝো না।
না, ঠিকে আছে তুমি কথা ভালোই বানাতে পারো।এবার গোসল করা হয়েছে তাই আমাকে ছেড়ে দেও।
তোমাকে না ভেজা কাপড়ে হেব্বি লাগতেছে গো বউ।
তাই বুঝি,
শুনো না বউ একটা কিচ হয়ে যাগ,
এখন কোন কিচ মিচ হবে না,যা করা রাতে করিও ওকে।
তুমি তো এখনো সুস্হ হও নাই।
আমি সুস্হ হয়ে গেছি,
তাহলে কি প্রথম বাসর আমার শশুর বাড়িতে হবে?
যা এগুলো কি বলো তুমি,আমার লজ্জা করে না বুঝি?
রাতে যাও তোমার সব লজ্জা ভেঙ্গে দিবো।
আচ্ছা দিও, কিন্তু এখন ভেজা কাপড় গুলোচেন্জ করতে হবে বেশিক্ষন ভিজে থাকলে অসুস্হ হবে।
ঠিক আছে চেন্জ করো তুমিও ।
ওকে।তারপর আমরা দুই জনে কাপড় চেন্জ করে বাথরুমে থেকে রুমে আসলাম।রুমে আসার পরে হঠাৎ করে রুমের দরজায় কে যেনো ঠক ঠক শব্দ করতেছে।
বউ দেখো তো কে জেনো দরজার ও পাশে।
তুমি বসো আমি দেখতেছি,
একটু পরে জান্নাতুন আমার কাছে আবার আসলো।ওর আসা দেখে আমি বলতেছি,
কে ছিলো গো বউ,
আমার ফুপাত বোন ছিলো,আম্মু খেতে নিচে ডাকতেছে।
ওকে তাহলে চলো আমারো খুদা লেগেছে।
ওকে।তারপর রুম থেকে নিচে চলে আসলাম।নিচে এসে দেখি তখনকার মেয়েগুলো আর কিছু মহিলা চেয়ারে বসে কার জন্য যেনো অপেক্ষা করতেছে দেখে বুঝা যাচ্ছে।ওনাদের কাছে যেথে বলতেছে,
এই তো আমাদের জামাই বাবাজি এসে পড়েছে।
এই কথা শুনে বুক ফুইলা গেলো শশুর বাড়িতে এতো জামাই এর সম্মান।তারপর জান্নাতুনকে আর আমাকে পাশা পাশি বসা বলো চেয়ারে।শুরু হয়ে গেলো আমার উপরে অত্যাচার।যে আসতেছে সেই আমার প্লেটে খাবার দিয়ে যাচ্ছে।যখন বলতেছি আর দিয়েন না ততোই আরো বেশি করে দিচ্ছে। বউ এর বোন থাকলে মনে হয় দুলাভাই এর কপাল খারাপ একটু পর পর এসে ওরায় খাবার প্লেটে দিয়ে যাচ্ছে।জান্নাতুন শুধু আমার কাহিনী দেখতেছে আর মুচকি হাসি দিচ্ছে।শেষে খেতে খেতে আর খেতে পারতেছিলাম না তবুও আরো খেতে বলতেছে আমি ওখানে আর বসে না থেকে সোজা রুমে দৌড় দিলাম।আমার দৌড় দেখে সবাই হাসতেছে।আমি সোজা রুমে এসে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে শুয়ে পড়লাম বেশি খাইলে যা হয়,জামাই আদর এতো বেশি করেছে যে খিলাতে খিলাতে আমাকে মেরেই ফেলতো একটুর জন্য বেঁচে গেছি,
এখন আপনাদের কিছু বলি রোজা রেখে তিনটি কাজ করলে রোজা হবে না,সর্বদা মনে রাখবেন
১▪প্রথমতো মিথ্যা বলা যাবে না রোজা রেখে।
২▪দিনের বেলা স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক করা।এখন আপনারা বলতে পারেন ভাই এটা তো হালান জিনিস কিন্তু আল্লাহ্ এই রমজান মাসে হালাল জিনিসকেও হারাম করে দিয়েছেন।তাই কেউ রোজা রেখে স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক করতে চাইবেন না।যে মহিলার উপর রোজা ফরয হয়েছে, তার সম্মতিতে রমজানের দিনে স্বামী-স্ত্রীতে যৌনকার্য সংঘটিত হলে, উভয়ের উপর একই হুকুম কার্যকরী হবে (ক্বাযা করতে হবে ও কাফ্ফারা দিতে হবে)। আর স্বামী যদি জোর করে সহবাস করে তাহলে স্ত্রী শুধু ক্বাযা আদায় করবে, কাফ্ফারা দিতে হবে না। তবে স্বামীকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। যে সব পুরুষ লোক নিজেদেরকে সংযত রাখতে পারে না, তাদের স্ত্রীদের উচিত দুরে দুরে থাকা এবং রমজান দিবসে সাজ-সজ্জা না করা।
৩ ▪এক জনের কথা অন্যজনকে বলে বেড়া।কেউ আছে না,এক জনের কথা অন্যজনের কাছে বানায় বানায় অনেক মিথ্যা বলে মানে যে ব্যক্তি নাই কিন্তু তার বিষয়ে সমালোচনা করা এই রোজা রেখে করা যাবে না।
এই তিনটা বিষয় যদি না করেন তাহলে আপনার রোজা সঠিক হবে ইনসাআল্লাহ্।যদি গল্প নিয়ে কিছু বলার বা প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করে জানাবেন উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
চলবে