#মনের_গহীনে_শুধুই_তুমি
#পর্ব_11+12
#Mst_Meghla_Akter_Mim
মেঘ রোদের কথায় কান না দিয়ে আলমারি খুলতে নিলো। এদিকে রোদের যেনো কোনো অমূল্য জিনিস নিয়ে নিচ্ছে মেঘ এমন অবস্থা রোদের। মেঘ কে আটকানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে মেঘের কাছে যাওয়ার আগেই মেঘ আলমারি খুলতে নিলো কিন্তু খুলতে পড়লো না। মেঘ কয়েকবার চেষ্টা করে মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে তুললো। রোদ মেঘের আলমারি না খুলতে পাড়ায় যেনো পরম শান্তি পেলো। জোরে জোরে কয়েকবার নিশ্বাস নিয়ে মুখে শয়তানী হাসি ফুটিয়ে তুললো। ওর মনে পড়ছে ও কাল রাতে আলমারি lock করেছিলো। মুখে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তুলে মনে মনে নিজেকে বললো,
“রিয়েলি ইউ আর brilliant. একটা কাজের কাজ করেছিস তুই রোদ। নাহলে আজ তোর সবকিছু এই মেঘ নিয়ে নিত।”
মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে ওর বাঁকা হাসি লক্ষ্য করলো। রোদের এই হাসি মেঘের বিরক্তি আরো চরম পর্যায়ে নিয়ে গেলো। মেঘের মন বলছে রোদ কে গোটা কয়েক পিটাতে। মেঘ রোদের সামনে হাত বাড়িয়ে বললো,
-” আলমারির চাবি টা দিন।”
মেঘের কন্ঠে ঝগড়া করার মত কোনো লক্ষণ দেখা গেলো না, খুব serius ভাবেই বললো। রোদ বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লো। মেঘের কথায় কোনো গুরুত্ব যেনো দিলো না। মেঘের কথা যেনো শুনেই নি ও তেমন করে খাটে হাত পা ছড়িয়ে বললো,
-“আহ্ কি শান্তি। সোফায় থেকে তো হাত পা ব্যথা হয়ে গেছে আমার। একটু শান্তিতে ঘুমায় এখন। এই যে মেঘ রানী আমাকে disturb করবে না কেউ ডাকলে বলবে আমার শরীর খারাপ ওকে?”
মেঘের বিরক্তি কিছুটা রাগে পরিণত হল। তবুও রাগ দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে বললো, “আপনি ঘুমান যা খুশি করুন কিন্তু আগে আমায় চাবি দিন।”
রোদ বললো,” আমি চাবি দিবো না। তোমার ড্রেস আমার আলমারি তে রাখা যাবে না। আমার আলমারি শুধুই আমার আর আমার ভালোবাসার মানুষের বুঝলে?”
মেঘ বসে মুখ গুমরা করে বললো,” আপনার রুম এ তো ওয়ারড্রোপও নেই তাহলে কোথায় আমার ড্রেস রাখব বলেন তো। আর একটু আমার ড্রেস রাখলে হবে টা কি?”
-“অনেক কিছু হবে। সবকিছু নিয়ে নাও কিন্তু আলমারি কাছেও যাবে না।”
মেঘ মুখ ভেঙ্গচি দিয়ে মনে মনে বললো,” আগে ঘর থেকে বেরোনো আপনি ওই আলমারি তে কি এমন আছে তা তো আমি দেখব ই।”
মেঘ কে চুপ থাকা খেয়াল করে রোদ শোয়া থেকে উঠে মেঘের দিকে উকি দিলো। একা একা বললো,” আজ এত শান্ত আছে ব্যাপার আবার কি। এই মেয়েকে বিশ্বাস নেই।”
রোজা চৌধুরী দরজায় দাঁড়িয়ে রোদের উকি দেয়া দেখে হাসল। মেঘ রোজা চৌধুরী কে দেখেই হাসি দিলো। উঠে গিয়ে কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো,
-“মা আপনার ছেলে আমার সাথে কত খারাপ ভাবে কথা বলছে। আমি তো উনার স্ত্রী উনার আলমারি তে একটু ড্রেস রাখলে হবে টা কি বলুন তো।”
রোদ রোজা চৌধুরীর দিকে তাকালো। ওর চাহনি দেখে মনে হচ্ছে রোজা চৌধুরী রোদের আলমারির কাছে না যাওয়ার কারণ জানে। রোজা চৌধুরী রোদের দিকে তাকিয়ে আবারো মেঘের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-” মা ও যখন চাইছে না আলমারি তে ড্রেস রেখো না। এই রুমে ওয়ার ড্রপ শিফট করে দিবো এখনই।”
-“শুধু ওয়ার ড্রপ নয় বাবা তো তোমার জন্য অনেক গুলো ড্রেস ও নিয়ে এসেছে।” – আয়রা হাস্যজ্জ্বল মুখে ঘরে প্রবেশ করে বললো।
মেঘ যেনো কোনো উত্তর দেয়ার সুযোগ ই পাচ্ছে না। রোদ আয়রার সামনে গিয়ে বললো,” তাহলে এই জন্য সোফা সারানো! আমার জন্য কি কি এনেছে তা বল।”
আয়রা রোদের মাথায় একটা মারলো। রোদ রাগী রাগী হওয়ার ভান করলো। আয়রা মুখ চেপে হাসছে। আয়রার হাসির দিকে তাকিয়ে রোদ বললো,
-“আমি তোর বড় ভাই তা ভুলে গেছিস? এখন আমার গায়ে হাত ও তুললি। তোর সাহস দিন দিন আকাশ ছুয়ে যাচ্ছে দেখছি। দাঁড়া মা কে বলছি তোকে তো….”
আয়রা হাত দিয়ে ইশারা করে রোদ কে থামিয়ে দিয়ে বললো, “উফ ভাইয়া আমার কথা শেষ না হতেই এত বকর বকর করছিস কেনো? আরে এইটা আমি মারি নি আব্বু বলেছে তুই যদি তোর জন্য কি এনেছে জিজ্ঞেস করিস তাহলে তোকে মারতে।”
রোদের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো। তবুও বললো,” কেনো রে বোন কেনো? আমার বাপ টা আমার সাথে কেন এমন করতেছে? মারতে কেন বলছে বল শুনি!”
-” আব্বু বললো তোর জন্য মার ছাড়া আর কিছুই আনা যায় না। তুই দিন দিন বান্দর হয়ে যাচ্ছিস। আজ তুই ভাবি কে আলমারি তে হাত দিতে দিলি না।”
বলতে বলতে আয়রা মেঘের কাছে এসে কাঁধে হাত দিলো।
-” মা তুমি ওকে কিছু বলবে না? আমায় মারবে ছোট হয়ে?”
রোজা চৌধুরী বললেন,” তোদের মধ্যে আমি নেই। আমি জাজ নাকি হুম।”
রোদ মুখ ফুলিয়ে ফেললো। মেঘ একটু মুচকি হেসে আয়রা কে সামনে নিয়ে বললো,” প্রিয় ননদীনি তুমি আমার স্বামী কে মেরে একদম ঠিক করো নি বুঝলে?”
আয়রা উত্তেজিত হয়ে বললো,” ভাবি তুমিও ভাইয়ার পক্ষ নিলে!”
রোদ ও অবাক হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ আয়রার গালে হাত দিয়ে বললো, “আয়রা আমি উনার পক্ষ নেই নি। তুমি ওর ছোট তো তাই তুমি আমাদের সামনে উনাকে মারলে উনার খারাপ লাগবে। আর আমার জন্য কেনো এইসব করবে? উনি তো আমার স্বামী করুক না উনার খুশিতে কিছু। আর মা ওয়ার ড্রপ লাগবে না, আর কোনো ড্রেস ও না। অনেকগুলো ড্রেস আছে আমি আর ড্রেস কি করব।”
রোদ আয়রার কাঁধে ভর দিয়ে বললো,” বোন কি হচ্ছে বল তো। আমার পক্ষ নিয়ে কেনো কথা বললো? আর কিছুই লাগবে না বলে কেন।”
রোজা চৌধুরী বললো,” আছে তো তোমার অনেকগুলো ড্রেস কিন্তু শাড়ী তো একটাও নেই। তাই আমি আর তোমার বাবা কিছু শাড়ী নিয়ে এসেছি। তুমি না করো না আর।”
মেঘ আর কিছুই বললো না। রোজা চৌধুরী কে জড়িয়ে আর আয়রা ঘর থেকে গেলেন আর বলে গেলেন। রোদ আর মেঘ ঘরে একা। রোদ মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ রোদের তাকানো দেখে ঘর থেকে যেতে নিলো। রোদ ওর হাত ধরলো পেছন থেকে। কিছুটা কেঁপে উঠলো মেঘ, এক অদ্ভূত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে মেঘের শরীরে। চোখ বন্ধ করে মেঘ বললো,
-“হাত ছেড়ে দিন প্লিজ। আমি নিচে যাবো।”
রোদ হাত ছেড়ে বললো,” আয়রা কে বকা দিলে কেনো আমায় মারার জন্য? তুমি তো আমায় জ্বালাতে পারলে খুশিতে থাকো। ব্যাপার কি প্রেমে পড়লে নাকি?”
মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,”আমি আর আপনার প্রেমে?পাগল হয়নি। আয়রা কে বকা দিলাম কারণ সবার সামনে আমি আপনাকে কত সম্মান করি তা দেখাতে হবে না? সবার সামনে এমন দু একটা কথা শুনে আমি আপনার প্রেমে পড়েছি এমন কিছু ভাববেন না। শেষে নিজেই প্রেমে পড়বেন।”
রোদ মেঘের কথা শুনে আবার যেনো অবাক হলো। মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে মায়াবী হাসি দিয়ে তাকালো। এমন সময় ঈশান এসে দরজার knock করে বললো,
-” এই যে লাভ বার্ড আমার কি একটু আসা যাবে?”
মেঘ আর রোদ একটু স্বাভাবিক হল। রোদ হেসে বললো,”আয় ভেতরে জিজ্ঞেস করতে হবে কেনো?”
ঈশান ভেতরে এসে মেঘ কে বললো, “তুই তো হুট করে আমার ভাবি হয়ে গেলি। কলেজে কিছু practical নোট লিখতে দিয়েছিল তা মনে আছে?আর আজ সেগুলো জমা দিতে হবে।”
মেঘ মাথায় হাত দিয়ে বললো,” দোস্ত শেষ আমি। একটাও করিনি, এইসব ঝামেলার মধ্যে কিছুই মনে ছিল না। এখন কি করব!”
রোদ বিড়বিড় করে বললো, “আর কিছু মনেও থাকবে না।”
ঈশান হেসে বললো,” জানতাম তো আমি। চল আমার সাথে চল আমি তোর টাও করে রেখেছি। ”
মেঘ খুশিতে গদগদ হয়ে ঈশান কে জড়িয়ে ধরলো ।রোদ মেঘের ঈশান কে জড়িয়ে ধরা দেখে হাত মুষ্ঠি বন্ধ করে ফেললো। কোনো মতে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করল। রোদের রাগ হচ্ছে মেঘ কে ঈশানের সাথে দেখে।ওর মন যেনো বলছে মেঘ শুধু ওর সম্পত্তি। ঈশান রোদের দিকে লক্ষ্য করলো। মনে মনে বললো,
“ভাইয়া তুই মেঘ কে ভালোবেসে ফেলেছিস অনেকটা।”
মেঘ ঈশান কে ছেড়ে বললো, “এইজন্য আমি তোকে এতো ভালো বন্ধু মনে করি। সবসময় তুই আমার বিপদে পাশে থাকিস।”
ঈশান রোদ কে দেখিয়ে দেখিয়ে বললো, “হুম আমি সবসময় তোর পাশে আছি। দিহান একটা লিখে রাখছে আর আমি অন্য টা। তাড়াতাড়ি চল দেরী হয়ে যাবে। ”
মেঘ তাড়াহুড়ো করে বললো, “হুম হুম চল।”
বলে ঈশানের হাত ধরে নিয়ে যেতে নিলো। এদিকে রোদ একা একা বললো,” এই ঘরে যে আপনার স্বামী আছে তার থেকে অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন আছে তা ভুলে গেলেন? ”
মেঘ এক গাল হেসে বললো,” আপনি তো আমাকে নিজের স্ত্রী মানেন না তাই অনুমতি কেন নিবো। থাকুন আসি।”
বলে মেঘ ঈশান ঘর থেকে গেলো। রোদও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো আর বলছে, “একবার সবার সামনে এক কথা আর আমাকে একা পেলে আরেক কথা। আমি তো মানুষ না। ”
রোদ নিচে গিয়ে দেখলো আদিল চৌধুরী পেপার পড়ছে। রোদ আদিল চৌধুরীর পাশে বসলো। আদিল চৌধুরী পেপারের দিকে তাকিয়ে বললো ,” কিছু বলবি মনে হচ্ছে।”
রোদ একটু দেরি করে নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,”thank you বাবা আমার আলমারি টা শুধুই আমার রাখার জন্য।”
আদিল চৌধুরী পেপার রেখে রোদের দিকে তাকিয়ে বললো, “আমি তোর ভালোর জন্য ই সবকিছু করছি। ভাবলাম ওই আলমারি তে তোর অনেক স্বপ্ন – ইচ্ছা, স্মৃতি জমিয়ে রেখেছিস ওইসব তোর ই থাক। আমিও বুঝি তো তোকে রোদ কিন্তু এখন মেঘ কে মেনে নিয়ে নতুন ভাবে জীবন শুরু কর। ”
রোদ হুট করে আদিল চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে বললো,”বাবা আমি সবকিছু ভুলতে পারবো না। মেঘ মেয়েটা কে ভালোবাসা সম্ভব না। ”
আদিল চৌধুরী কে কিছু না বলতে দিয়েই রোদ উঠে দাঁড়িয়ে বললো,” বাবা আমার যেতে হবে এখন। আর আবারো thank you তোমাকে ।”
রোদ বাড়ি থেকে চলে গেলো। আদিল চৌধুরী রোদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, “তুই ভালোবাসবি রোদ আমি জানি। আর আলমারির রহস্য মেঘ নিজে খুঁজে বের করুক এই জন্য আমি আজ এই কাজ করলাম।”
.
মেঘ আদিল চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে ঈশানের সাথে কলেজে যাওয়ার জন্য বেরল। ঈশান ড্রাইভ করছে আর মাঝে মাঝে মেঘের দিকে তাকাচ্ছে। রোদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
-“আমি কি তোর বউ লাগি যে বারবার দেখছিস আমাকে?”
-“না তোকে তো আমার বউ করা আর হলো না। ভাবছি তুই আজ আমাকে জড়িয়ে ধরলি কেনো? আর তোকে চিন্তিত লাগছে।”
মেঘ মনে মনে বললো, “আলমারি তে কি আছে না জানা পর্যন্ত যে আমার শান্তি হচ্ছে না।”
ঈশান আবারো বললো, “চুপ কেনো? কিছু জিজ্ঞেস করলাম তো। ”
মেঘ হেসে বললো,” চিন্তা করছি না কিছু। আর তোকে জড়িয়ে ধরেছিলাম উনাকে দেখানোর জন্য। জানিস সেদিন দিহানের সাথে আমায় কথা বলতে দেখে কি রাগ। আর উনাকে রাগাতে বেশ লাগে আমার। ”
কথাগুলো শেষ করে মেঘের মুখে শান্তির হাসি দেখা দিলো। ও যেনো কোনো স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে। ঈশান এর আগে কখনো মেঘ কে কোনো ছেলের কথা বলতেও শুনেনি। ঈশান মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
-” তোদের বেশ মানায় কিন্তু। আজ থেকে তোকে ভাবি বলেই ডাকব ভাবছি। ”
-” এই না না না। আমি উনাকে স্বামী বলে মানি না। তুই আমার বন্ধু আর তুই আমাকে ভাবি বলবি না। কিন্তু একটা কথা বল তোর বোন আর উনার মধ্যে কি ব্যাপার আছে রে?”
ঈশান জোরে জোরে হেসে উঠে বললো, “আমার বোন নাকি রোদ কে ভালোবাসে তাই তো বলে। কয়েকদিন থাক এমনি বুঝতে পারবি ব্যাপার গুলো। আর আমার মা কিন্তু তোকে একটুও পছন্দ করবে না তা আগেই তোকে বলে রাখছি। কারন উনার মেয়ের সাথে রোদের বিয়ের কথা উনিও ভাবতেন। ”
কথা শেষ করেই ঈশান ব্রেক চাপল। আর বললো, “চল কলেজে এসে গেছি। ”
মেঘ ভাবনায় ডুবে গেলো। মনে মনে বলছে,” ইহানার ব্যাপার বুঝলাম কিন্তু তাহলে কে উনার girlfriend?”
গাড়ি থেকে নেমে মেঘ ঈশানের পাশে পাশে যেতে যেতে বললো,” ঈশান তাহলে উনার girlfriend কে তুই চিনিস?”
ঈশান হাসতে শুরু করলো। ওর হাসি দেখে মনে হচ্ছে মেঘ কোনো অসম্ভব কিছু বলে ফেলেছে। মেঘ রাগী দৃষ্টিতে ঈশানের দিকে তাকালো।
.
ঈশান হেসেই চলেছে। মেঘ রাগী গলায় বললো, “পাগল হয়েছিস যে এতো হাসি পাচ্ছে তোর?”
-“আরে তুই তো আমারে পাগল ই করে দিবি। ভাইয়ার গার্ল ফ্রেন্ড আছে এই কথা কেউ শুনলে পাগল ই হয়ে যাবে।”
মেঘ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ঈশানের দিকে তাকালো। ঈশান হাসি থামিয়ে আঙুল দিয়ে কিছু মেয়েকে দেখিয়ে বললো, “মেয়ে গুলো কে দেখছিস না? ওই মেয়ে গুলো ভাইয়ার জন্য পাগল কিন্তু ভাইয়া ওদের দিকে কখনো ফিরেও তাকায়নি। আসল ব্যাপার হলো ভাইয়ার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।”
মেঘ ঈশানের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে আছে। মেঘ ঈশান কে কিছু জিজ্ঞেস করবে তার আগেই কোথায় থেকে যেনো নির্ঝর ভাইয়া এসে ঈশান কে জড়িয়ে ধরলো।মেঘ হঠাৎ এতদিন পর নির্ঝর ভাইয়া কে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। নির্ঝর ঈশান কে ছাড়ল।ঈশান নিজেও খুব খুশি ওকে দেখে তা ওর মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। ঈশান আর নির্ঝর দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে ই আছে একটা কথাও বলছে না। আসলে ঈশান আর নির্ঝর খুব ভালো বন্ধু ছিল। আর নির্ঝরের সঙ্গে সাপার relationship হয়েছিল ঈশান এর মাধ্যমেই। কিন্তু ওদের মাঝে কোনো কিছু একটা ঝামেলা হওয়ায় নির্ঝর কোথাও একটা চলে গিয়েছিল। মেঘ মনে মনে ভাবছে,
-” নির্ঝর ভাইয়া এখানে কি করে? তাহলে কি ওদের মনোমালিন্য ঠিক হয়েছে?”
ভাববার চাদর থেকে বেরিয়ে মেঘ বললো, “তোমার কি তাকিয়ে ই থাকবে? তোমাদের দেখে আমার মনে হচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকা অনেকদিন পর দেখা হয়েছে এ জন্য দুজন দুজন কে মন ভরে দেখছো। নির্ঝর ভাইয়ার সামনে সাপা থাকলে অন্য কথা ছিল। কি নির্ঝর ভাইয়া ঈশান কে কি সাপার মত লাগছে নাকি?”
কথাগুলো বলে মেঘ একটু হাসি দিলো ॥ঈশান আর নির্ঝর ঘোর থেকে বেরিয়ে মৃদু হাসল। ঈশান বললো,” মেঘ তুই ও না! অনেকদিন পর দেখা তাই গলা দিয়ে তো কোনো কথায় বেরোতে চাচ্ছিল না।”
নির্ঝর হেসে বললো,” হুম মেঘ ঈশান ঠিক বলেছে। আর ঈশান কে ঈশান এর মতই লেগেছে আমার। সাপার মত লাগলে আমি ওর সামনেও আসতাম না।”
শেষের কথা গুলো বলতে নির্ঝরের কণ্ঠে একটা রাগ ফুটে উঠলো।মেঘের মুখের হাসি মলিন হয়ে গেলো। মনে মনে বললো,
-” তাহলে তোমাদের মধ্যে সবকিছু এখনও ঠিক হয়নি। কোনো ব্যাপার না এইবার ঠিক হবে তুমি তো এসেই গেছো।”
নির্ঝর মেঘের হাতে স্পর্শ করে বললো,” মেঘ চুপ করে আছো কেনো? আমায় দেখে খুশি হও নি বুঝি? তাহলে না হয় আমি চলেই যায়!”
মেঘ কষ্ট করে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলে বললো,” ভাইয়া তুমি কি যে বলো! তোমাকে দেখে তো আমি অনেক খুশি হয়েছি। কিন্তু ভাবছি তুমি হুট করে উধাও হয়ে গিয়েছিলে আবার কোথায় থেকে এলে তাই ভাবছি।”
মেঘ সাপা আর নির্ঝরের মধ্যে ঝামেলা এর কথাটা জানে তা লুকিয়ে গেলো। ঈশান মেঘ কে ইশারা দিয়ে বুঝাল ঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে সে। ঈশান ও মেঘের সাথে তাল মিলিয়ে বললো,
-” হ্যাঁ দোস্ত কোথায় ছিলি এতদিন?”
নির্ঝর মুচকি হেসে বললো,” আমার মামা অসুস্থ ছিল তাই লন্ডনে গেছিলাম মামা কে দেখতে।কিন্তু তোদের ছাড়া বেশিদিন কি ভালো লাগে বল? তাই চলে আসলাম।”
-“তুই গেছিস কাউকে বলেও তো যাস নি আর গিয়ে যোগাযোগ পর্যন্ত রাখিস নি কারণ কি বল।”
-“আর বলিস না ওখানে গিয়ে মামার ব্যাবসা সামলাতে গিয়ে সময় ই পাই নি। এখন কি তোদের এইসব বলব শুধু? চল জমিয়ে আড্ডা তো দেয়া যায়। কি বল মেঘ?”
মেঘ একটু হেসে বললো,” ভাইয়া ঠিক বলেছ। যা ঈশান একটু আড্ডা দে ভাইয়ার সাথে।”
-” উম হুম শুধু ঈশান কেনো? আগের মতো তুমিও আমাদের সাথে আড্ডা দিবে।”
-” না মানে ভাইয়া নোট গুলো জমা দিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে আমার।”
ঈশান দাঁত কেলিয়ে বললো,” আমাদের মেঘ এখন রোদ ভাইয়ার বউ বুঝলি! ভাইয়া কে না দেখে বেশি ক্ষণ থাকতে পারে না।”
মেঘ দাঁত কটমট করে ঈশানের দিকে তাকালো কিন্তু ঈশান দাঁত কেলিয়ে হাসি দিয়েই যাচ্ছে।
নির্ঝর অবাক হয়ে বললো,” কি! মেঘের বিয়ে হয়েছে রোদের সাথে?কি করে বিয়ে হল? লাভ ম্যারেজ নিশ্চয়ই?”
মেঘ আমতা আমতা করে বললো,” না মানে ব্যাপার টা তা না।”
ঈশান ঝাড়ি দিয়ে বললো,” না মানে কি করতেছিস হ্যাঁ? এই নির্ঝর তুই আমার সাথে চল সব বলছি তোকে। মেঘ সব উলট পালট করে দিবে।”
মেঘ কিছু বলতে নিবে তার আগেই ঈশান নির্ঝর কে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে আর বলছে,” আরে ভাই চল তো। ওদের কাহিনী বলতে বলতে তো অনেকক্ষণ লেগে যাবে আমার। চল।”
নির্ঝরও ঈশানের সাথে চলে গেলো। মেঘ নিজে নিজে বললো,” ঈশান তো সবাই কে বলে দিবে দেখছি। ধ্যাত!”
বলে সামনে যেতে নিতেই মেঘের চোখে পড়লো রুদ্র কে। কলেজের বাহিরের গেটে উকি দিচ্ছে বারবার। মেঘ রুদ্রর কাছে গিয়ে পেছন থেকে বললো,” ভাইয়া আপনি এখানে কেনো? কোনো কাজে এসেছিলেন?”
মেঘের কথা শুনে রুদ্র সামনে তাকিয়ে ভূত দেখার মত চমকে উঠলো। তুতলিয়ে বললো,” মে.. মেঘ ভাবি তুমি এইখানে?”
-“আমি তো এখানে আসবই! এইটা তো আমার কলেজ। কিন্তু আপনি তুতলিয়ে কথা বলছেন কেনো ভাইয়া? কোনো কাজে এসেছিলেন?”
-” না মানে…”
রুদ্র কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না।
মেঘ রুদ্রর চুপ থাকা দেখে বললো, “ভাইয়া আপনি চুপ করে কেনো?”
-“মানে ভাবি তোমার ওই বান্ধবী কলেজে আসেনি?”
-” কোন বান্ধবী? আর তার সাথে আপনার কি দরকার বুঝলাম না।”
-” না না আমার কোনো দরকার নেই। অর্চির কথা বলছি। একটু বলতে পারবে এসেছে কি আসে নি?”
-“না তো ভাইয়া। আমি এখনই আসলাম ঈশানের সঙ্গে। ওদের সাথে এখনো দেখা হয়নি।”
রুদ্র মন খারাপ করে বললো,” ও….”
মেঘ একটু মুচকি হেসে বললো,” ভাইয়া ওদের সাথে তো আমার দেখা হবে ই। বলে দিবো নি আপ্নার কথা কিন্তু কি বলবেন ওকে?”
রুদ্রর মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো। পেছনে অর্চি আর সাপা কে আসতে দেখে রুদ্র একটা ঢোক গিলে ফোন বের করে কানে দিয়ে মেঘ কে বললো, “ভাবি একটা important কল আসছে। পরে বলবো নি।”
বলতে বলতে রুদ্র চলে গেলো। মেঘ একা একা বললো,”কি হচ্ছে কোথায় সব আমার মাথার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে।”
কলেজের ভেতরে যেতে নিতেই অর্চি আর সাপা পেছন থেকে মেঘ কে জড়িয়ে ধরলো ।মেঘ কিছুটা অবাক হলেও একটু পর হেসে বললো,” শয়তানীরা ছাড় আমায়। আমি তোদের চিনে ফেলেছি।”
সাপা আর অর্চি সামনে এসে বললো, “তুই কেমন করে বুঝলি আমরা দুজন ই হুম? অন্য কেউ তো হতে পারত।”.
মেঘ ওদের গাল টেনে বললো, “তোরা ও জানিস আমার হাতে গোনা কয়েকটা ফ্রেন্ড আর তার মধ্যে তোরাই সবচেয়ে কাছের। তোদের চিনবনা তা কি হয় নাকি?”
অর্চি ঠোঁট উল্টে বললো,” এখন তো আমাদের আস্তে আস্তে ভুলেই যাবি। স্বামী পাইছিস তো।”
মেঘ, সাপা আর অর্চি হাঁটছে। মেঘ একটু হেসে বললো,”আমার স্বামী আছে তো তোদের ভুলে যাব বলছিস! কিন্তু এখনও কিন্তু ভুলে যায় নি কিন্তু তোরা তো স্বামী না পেয়েই আমায় ভুলে গেছিস। আমাকে আর কিছুই বলিস না।”
-“আমরা আবার কি বললাম না!”
-” রুদ্র ভাইয়া তোকে কেনো খুঁজে রে অর্চি? এই ব্যাপারে তো আমি কিছুই জানিনা।”
সাপাও অবাক মেঘের কথা শুনে। সাপা বললো,” এ.. এ… রুদ্র কে? ব্যাপার কি? আমিও তো কিছুই জানি না। অর্চি বলবি নাকি মাইর খাবি?”
অর্চি বললো,” ঠাম না একটু। সব বলছি, বলার সময় তো দিবি?”
মেঘ হল রুমে বসলো। বসে বললো, “হুম শুরু কর। ভাষণ শুরু কর ব্যাপার কি!”
-“মেঘ তুই আবারো আমাকে নিয়ে মজা করছিস!”
মেঘ গম্ভীর মুখ করে বললো,” আমি জিজ্ঞেস করার আগে বলিস নি কিছু আর এখন আবার আমার কথার দোষ ধরতেছিস! বেশি বকর বকর করলে সাপার সাথে আমি তোকে পিটাবো আর তুই তো জানিস আমি কি কি করতে পারি!”
বলে মেঘ শয়তানী হাসি দিলো।
অর্চি এক নির্শ্বাসে সবকিছু বললো। সাপা গালে হাত দিয়ে আছে শুনে। মেঘ ভ্রু কুঁচকে অর্চির দিকে তাকিয়ে আছে। অর্চি ওদের দুজন কে পর্যবেক্ষণ করে বললো,
-“তোদের কি হলো? আমাকে কি কোনোদিন দেখিস নি?”
সাপা গালে হাত দিয়েই বললো, “দেখেছি কিন্তু তোকে কখনো প্রেমে পড়তে দেখিনি।”
বলেই সাপা হেসে উঠলো। অর্চি বললো, “এই বাজে কথা বলিস না। আমি ওকে পছন্দ করি না।”
-“কিন্তু ও তো করে ।সবদিক থেকে ভালো কিন্তু ছেলেটা।ভালো না বাস কয়েকদিন ঘুরা পেছনে। ”
অর্চি আর সাপা কথোপকথন করলেও মেঘ চুপ করে আছে। কিছু একটা ভাবছে মনে হচ্ছে। হঠাৎ মেঘ ওদের কাছে থেকে উঠে কড়া গলায় বললো,
-” সাপা, অর্চি এইটা জীবন! কোনো তামাশা করার জায়গা না।”
অর্চি আর সাপা এক সঙ্গে বললো, “মেঘ তোর আবার কি হলো?”
-“আমার কিছু হয়নি। তোদের কিছু কথা বলি কান খুলে শুনে রাখ। ”
বলে অর্চির দিকে তাকালো। মেঘের কণ্ঠ এখনও খুব কঠিন। ও এক পলক ফেলে অর্চি কে বললো, “দেখ অর্চি তোর কথা শুনে মনে হলো রুদ্র ভাইয়া তোকে পছন্দ করে। কিন্তু উনাকে এইভাবে না ঘুরিয়ে যদি তুই পছন্দ করিস তাহলে উনাকে একটা সুযোগ দিস নাহলে সরাসরি বলে দিস তুই ওকে পছন্দ করিস না। ”
-“কিন্তু মেঘ..। ”
মেঘ হাত দিয়ে ইশারা করে সাপা কে থামিয়ে বললো,”অর্চি কথাগুলো ভেবে নিস নাহলে পরবর্তী তে এর ফল পাবি ই। আর সাপা তুই কি জীবন কে খেলা ভাবিস? নিজে তো নির্ঝর ভাইয়ার সাথে অভিনয় করে মানুষ টা কে ভেতর থেকে শেষ করে দিয়েছিলি আবার অর্চি কে ঠিক একই কাজের জন্য বলছিস! জীবন টা মজা করে উড়িয়ে দেয়ার জন্য না মনে রাখিস। তোর কাছে সেটা মজা অন্য একজনের কাছে তা সাজা বুঝলি। ”
সাপার চোখ থেকে পানি ঝড়ছে। মাথা নিচু করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, “মেঘ নির্ঝরের সাথে আমি ঠিক করিনি। এখন আমিও ওর জন্য খুব কষ্ট পাই। আমিও ওকে ভালোবাসি হয়তো! ”
মেঘ তাৎচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে পেছন ঘুরে তাকালো। তাকাতেই দেখলো নির্ঝর লুকিয়ে সাপা কে দেখছে। মেঘ একটু জোরে বললো,
-“তোর এই চোখের জল আমায় দেখিয়ে কিছুই হবে না। যার কাছে ভুল করেছিস পারলে তার কাছে ক্ষমা চা গিয়ে। ভালোবাসা অনেক সুন্দর একটা জিনিস তার সাথে মজা জিনিস টা আর গুলিয়ে ফেলিস না। আর নির্ঝর ভাইয়া ফিরে এসেছে।”
সাপা কাঁদতে কাঁদতে মেঘের সামনে এসে বললো, “মেঘ কোথায় নির্ঝর বল আমায়। ”
-” কলেজেই এসেছে। তুই খুঁজে নে আমি আজ আসি। ”
বলে মেঘ রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। দিহানের সাথে দেখা করে বাকি নোট গুলো নিয়ে সবকিছু জমা দিলো। ঈশান মেঘ কে নিয়ে যাওয়ার জন্য বন্ধু দের ছেড়ে এসে বললো,”মেঘ চল।”
-“তুই এখনই যাবি?”
-“আমি না গেলে তুই যাবি কিভাবে? ”
দিহান এসে বললো,” তুই চিন্তা করিস না আমি পৌঁছে দিয়ে আসবো। শুনলাম নির্ঝর এসেছে তুই যা ওদের ব্যাপার টা একটু দেখ।”
ঈশান মেঘের দিকে তাকালো। মেঘ চোখ দিয়ে ইশারা করে বললো,” হুম দোস্ত তুই থাক। নির্ঝর ভাইয়া আর কষ্ট পাক আমি চাই না। আর কি হয় আমায় বলবি ফোনে। ”
ঈশান মেঘের মাথায় মেরে বললো,” ওই ফোন কেন করতে হবে? তুই এখন আমার ভাবি ভুলে গেছিস। ”
মেঘ হাসি দিয়ে বললো,” সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম রে।”
.
দিহানের বাইকে করে মেঘ কলেজের বাহিরে যেতেই দেখলো রোদ ওর গাড়িতে হেলান দিয়ে হাতের ভেতরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দিহান বাইক থামিয়ে রোদের সাথে কথা বলতে নিলো কিন্তু রোদ বেশি কথা না বাড়িয়ে বললো,
-” দিহান আপনি বাসায় চলে যান। আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি। ”
রোদ কে দেখে খুব করে বুঝা যাচ্ছে ও খুব জেলাস ফিল করছে আর খুব রেগেও আছে। দিহান মৃদু হেসে বললো,”ঠিক আছে। মেঘ তাহলে ভাইয়ার সাথেই যা। আমি যায়।”
দিহান চলে গেলো। মেঘ রোদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রোদ এক দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ কিছুটা ভয় পাচ্ছে রোদের চাহনিকে। একটু মাথা উচু করে বললো,
-“আপনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো? আর আপনি এইখানে কেনো?”
রোদ কোনো কথা না বলে মেঘ কে গাড়িতে বসিয়ে ড্রাইভ শুরু করলো। মেঘ অনেক কিছু জিজ্ঞেস করছে কিন্তু রোদ কিছুই বললো না। বাসায় এসে কারো সাথে কোনো কথা না বলে মেঘ কে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে গিয়ে ঘর বন্ধ করে দিলো। মেঘ এইভাবে দরজা বন্ধ করে দেয়ায় কিছুটা অবাক হলো, সাথে ভয় ও পেলো। তবুও সাহস করে বললো,
-“সরুন আমি বাহিরে যাবো।”
তবুও রোদ কিছুই বলছে না। আয়রা ওদের এইভাবে আসতে দেখে ঘরের সামনে এসে বললো, “ভাইয়া দরজা খুলে দে। কি হয়েছে তোদের?”
মেঘ দরজার দিকে যেতে নিলো। রোদ ওকে আটকে ওর মুখে হাত দিয়ে শান্ত গলায় বললো, “আয়রা কিছু হয় নি তুই যা এখন। কোনো কথা আর বলবি না যা তুই। ”
আয়রা আর কিছু না বলে চলে গেলো। মেঘ রোদের এই ব্যবহারে অনেক অবাক হয়ে আছে। রোদ মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে আর মেঘও রোদের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু বলবে তার কোনো উপায় নেই কারণ রোদ মেঘের মুখ শক্ত করে চেপে ধরে আছে।
.
চলবে…