#ভালোবাসার_লুকোচুরি
#পর্ব_১৩
#মেহরাজ_হোসেন_রনি
কথাটা শুনে রিয়া রেগে আগুন।মুখে কিছু বলছে না।কিন্তু মনে মনে আকাশ ইচ্ছে মত বকা দিচ্ছে।রিয়াকে দেখে বাসার সবাই হাসছে।আকাশকে বিয়ে করবে বলে সেই কবে থেকে বসে আছে রিয়া কিন্তু এখনো বিয়ে হল না।এবার আকাশের আম্মু বলল
“আচ্ছা আকাশ যেহেতু বিয়েতে রাজি হয়েছে তাহলে পরের শক্রবারে বিয়ের তারিখটা ঠিক করি।কি বলো আকাশের আব্বু?”
আকাশের আব্বু কিছু বলবে তার আগেই রিয়া বলল
“এত দেড়ি করার কি আছে ফুপি।বিয়েটা এই শক্রবারে করলেই তো হয়।”
“এত তাড়াতাড়ি কি সব আয়োজন করা যাবে?”
“করা যাবে ফুপি।আয়ান আর নিরা ভাবি তো আছে।তাহলে এত টেনশন করার কি আছে।ফুপি তুমি বিয়ের তারিখটা এই শক্রবারে রাখো তাহলে ভালো হবে বেশি।”
আকাশের আব্বু বলল
“আচ্ছা রিয়া যখন এত করে বলছে তাহলে বিয়েটা এই শক্রবারেই হবে।এবার খুশি রিয়া মা।”
“হ্যা ফুপা খুব খুশি।আমি খবরটা আম্মু আব্বুকে বলে আসছি।”
রিয়া রুমে চলে গেল।আকাশের আব্বু বলল
“আয়ান আকাশের বিয়ের দায়িত্বটা পুরোটা তোর।এবার কিন্তু আকাশের বিয়েতে কোনো সমস্যা করিস না আয়ান।”
আয়ান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল
“আগের বার যেটার জন্য সমস্যাটা করেছিলাম সেটা পেয়ে গেছে আমি।তাই ভাবছি এবার ভাইয়াকে বিয়েটা করতে দিবো।”
আয়ানের কথা শুনে সবাই নিরার দিকে তাকিয়ে হাসছে।নিরার দিকে এইভাবে সবাই তাকিয়ে থাকাতে নিরা কিছুটা লজ্জা পেল।নাস্তা শেষ করে আয়ান রুমে আসতেই নিরা বলল
“তোমার কি লজ্জাশরম কিছুই নেই।সবার সামনে কিভাবে কথাটা বললে।”
“আমি লজ্জা পাবো কেনো?লজ্জা পেয়েছো তুমি সেটা বলো।কিন্তু যাই বলো লজ্জা পেলে তোমাকে কিন্তু বেশ সুন্দর লাগে।”
“ইস তোমার মুখে কিছু আটকায় না তাই না।”
“আটকাবে কেনো?যা সত্যি তাই বলেছি।”
“হ্যা হ্যা জানি।আমার সত্যবাদী হাজব্যান্ড।”
বিকালে রিয়াদ আর নিলা দেখা করবে বলে ঠিক করেছিল।কিন্তু সকালেই বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার পর থেকে নিলা কিছুটা টেনশন আছে।কারন নিলা আজ কিভাবে রিয়াদের সাথে দেখা করতে যাবে সেটাই ভাবছে।দুপুরের লাঞ্চ শেষ করে অনেক ভাবনা চিন্তা করে নিলা ওর আপুকে কল দিলো।
“কিরে নিলা বাসার ভিতরে আছিস তাহলে কল দিচ্ছিস কেনো পাশের রুম থেকে?
“আপু আমি যেই রুমে আছি সেই রুমে একটু আসো তো।কথা আছে।”
“তুই আমাদের রুমে চলে আয়।সমস্যা নেই আয়ান রুমে নেই এখন।”
“আচ্ছা।”
নিলা আয়ানের সামনে কথাগুলো বলতে চাচ্ছিল না।তাই নিরাকে একা রুমে ডেকেছিল।কিন্তু আয়ান যে রুমে নেই সেটা নিলা জানতো না।নিলা নিরা রুমে গিয়ে দেখে নিরা খাটে বসে আছে।নিরার পাশে বসে নিলা বলল
“আপু একটা কথা ছিল?”
“হ্যা বল।”
“আমি বিকালে একটু বাইরে যেতে চাচ্ছিলাম।”
“যার সাথে দেখা করতে যাবে তাকে এইখানে ডেকে দেখা করলেই তো পারো নিলা।”
রুমের ভিতরে আসতে আসতে কথাটা বলল রিয়া।রিয়ার কথা শুনে নিরা বলল
“নিলা তুই কার সাথে দেখে করতে যাবি?”
রিয়া বলল
“ভাবি তুমিও না।বুঝো না কিছুই।আরে রিয়াদের সাথে দেখা করতে যাবে তাই না নিলা।”
নিলা বলল
“আপু তেমন কিছু না।”
রিয়া বলল
“আমার কাছে কিন্তু তোমাদের সব খোজ আছে।”
নিরা বলল
“আচ্ছা নিলা তুই আমার থেকে এইসব লুকাতে চাচ্ছিস?”
“নাহ আপু।”
এবার নিরা আর রিয়া না হেসে পারলো না।নিলা বোকার মত ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।হাসি থামিয়ে নিরা বলল
“তুই কি মনে করিস আমি কিছু জানি না?আমি আর রিয়া সব জানি বুঝেছিস।একটু পরে রিয়াদ আসবে তখন ওর সাথে বাইরে থেকে ঘুরে আসিস।এবার খুশি।”
“আপু তুমিও না।”
নিলা রুম থেকে চলে গেল।রিয়া বলল
“ভাবি আমি কিন্তু কিছুদিন পর পার্মানেন্ট ভাবে চলে আসতেছি।”
“হুম সেটাই ভালো হবে।তা বিয়ের শপিং কবে থেকে শুরু করবে?”
“আগামীকাল থেকে।আর তুমিও আমার সাথে যাবে।”
“হুম সেটা না হয় গেলাম।”
বিকালে রিয়াদ এই বাসাতে আসলো।সবার সাথে কিছুসময় কথা বলে নিলাকে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে গেল।বাইরে আসতেই নিলা বলল
“আপনি সব কথা আপুদের কেনো বলেন?”
“ভাবি বলেছে যদি তাকে সব কিছু না বলে তাহলে নাকি আপনার সাথে কথা বলতে দিবে না।আর রিয়া আপুর থেকে আমি কিছু লুকাই না।আমার বিষয়ে সব জানে আপু।সেটা খারাপ বা ভালো যাই হোক না কেনো।সেটা আমি আপুকে বলি।”
“হুম ভালো।কিন্তু এখন থেকে আমাদের মধ্যে যে সব কথা হবে সেটা নিরা বা রিয়া আপু কেউ যেন না জানে।মনে থাকবে?”
“হ্যা থাকবে।কিন্তু কেউ যদি সত্যিটা জানতে চায় তখন আমি মিথ্যা বলতে পারবো না।”
“আপনি হঠাৎ এত সত্যবাদী হলেন যে?”
“ভাবি বলেছে আয়ান ভাইয়ার মত না হলে নাকি আপনার সাথে রিলেশনশিপ করতে দিবে না।”
“ওই আমি আপনার সাথে আবার কবে রিলেশনশিপ ছিলাম?”
“তাহলে এখন আমাদের মধ্যে যেটা আছে সেটা কি?”
নিলা রিয়াদের বাম হাতটা জড়িয়ে ধরে বলল
“আমাদের মধ্যে যেটা আছে সেটা অন্য কিছু।এবার চুপ করে হাটেন।”
রিয়াদ কিছু আর না বলে মুচকি হাসলো।পরের দিন রিয়ার আম্মু আব্বু আকাশদের বাসায় চলে আসলো।আকাশের আম্মু বলেছে বিয়ে অনুষ্ঠান এইখানেই হবে।যেহেতু বিয়েতে আত্মীয়স্বজন আসবে তাই আর আলাদা ভাবে অনুষ্ঠান করার দরকার নেই সব এক সাথেই হবে।
বিকালে সবাই মলে চলে গেল শপিং এর জন্য।বড়রা একসাথে আর ছোট একসাথে শপিং করবে।নিরা আর রিয়া একসাথে সব কিনছে।রিয়াদ আর নিলাও শপিং এ এসেছে কিন্তু শপিং মলটা ভিন্ন।কারন ওদের কথাটা এখনো বড়রা জানে না।আর এই দিকে আকাশ আর আয়ানের অবস্থা অনেকটা খারাপ।দুই ভাইয়ের হাতে শুরু শপিং ব্যাগ।আকাশ একবার অসহায় হয়ে আয়ানের দিকে তাকাচ্ছে।আবার আয়ান অসহায় হয়ে আকাশের দিকে তাকাচ্ছে।পর পর দুই দিন শপিং করে রিয়া আর আকাশের বিয়ের শপিং শেষ হলো।
আজ সন্ধ্যায় আকাশ আর রিয়ার গায়ে হলুদ।হলুদের অনুষ্ঠান আকাশদের বাসার ছাদে হবে।বাসায় মেহমান অনেক।কারন আগের বার শুধু আকাশদের আত্মীয়রা এসেছিল কিন্তু এবার রিয়াদের আত্মীয়রাও এসেছে তাই আত্মীয়স্বজনের সংখ্যাটা একটু বেশি।
আয়ানের কোনো খোজ নেই।সেই সকালে বেড়িয়েছে এখনো আসার নাম নেই।নিরা অনেকবার কল দিয়েছে কিন্তু ফোন ধরছে না আয়ান।বিকাল হওয়ার কিছুসময় আগে আয়ান বাসায় আসলো।নিরা তো রেগে আছে আয়ানের উপর।নিরা যে রেগে আছে সেটা আয়ান ঠিকই খেয়াল করেছে।কিন্তু সবার সামনে কিছু জিজ্ঞাস করে নি।আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে নিরা রুমেই আছে।
“তা আমার বউটা এত রেগে আছে কেনো হ্যা?”
নিরা চুপ করে আছে কিছু বলছে না।আয়ান এবার নিরার গা ঘেসে বসে বলল
“কি হয়েছে বলো না।এত রেগে আছো কেনো?”
“তুমি সারা সকাল কোথায় ছিলে?”
“আসলে ভাইয়া আর রিয়ার বিয়ের সব আয়োজন একসাথে শেষ করে এসেছি।যাতে রাতে আর আগামীকাল কোনো সমস্যা না হয়।”
“তাহলে আমার কল রিসিভ করো নি কেনো?”
“আসলে ফোনটা সাইলেন্ট মুডে ছিল।”
“হুম।”
“আচ্ছা আমার না একটা কথা মনে পরেছে আজ?”
“কি কথা?”
“আমি বলছিলাম আমাদের তো এখনো বাসর হয় নি।আগামীকাল তো ভাইয়ার বিয়ে।তাই ভাবছিলাম ওদের সাথে আমরাও আমাদের বাসর করে ফেলতে।”
“ছিঃ ছিঃ আয়ান এই সব কি ধরনের কথা?আমি না তোমার বড়?তাহলে তুমি এই সব কি বলছো?”
“তাতে কি?তুমি আমার বিয়ে করা বউ নিরু।”
“ওই এই নিরুটা আবার কে?”
“আরে তোমাকেই নিরু বলছি।এখন তুমি যদি না চাও তাহলে আমরা বাসর করবো নাহলে করবো না।”
“আমার এই সব ভালো লাগে না।আমি যাই আমার কাছে আছে।”
নিরা রুম থেকে চলে গেল।আয়ানও ভেবে নিয়েছে ওর আর বাসর হবে না।সন্ধ্যার দিকে সবাই ছাদে চলে গেল হলুদের অনুষ্ঠানের জন্য।আকাশকে মুরুব্বীরা আর ছেলেরা হলুদ লাগাচ্ছে।কোনো মেয়ে আকাশকে হলুদ লাগাতে পারবে না।এইটা রিয়ার আদেশ।আকাশের পাশেই রিয়া বসে আছে।
বড়রা সবাই আকাশ আর রিয়াকে হলুদ লাগিয়ে দিয়েছে।এখন শুধু আকাশ আর রিয়ার কাজিনরা হলুদ লাগে।প্রথমেই আয়ান আসলো আকাশকে হলুদ লাগাতে।আকাশকে হাল্কা হলুদ লাগিয়ে আয়ান চলে যাচ্ছিল তখন রিয়া বলল
“এখন থেকে আমাকে ভাবি বলবি বুঝেছিস?”
আয়ান রিয়ার সামনে এসে বলল
“তোকে এখন থেকে ভাবি বলতে হবে তাই তো?”
“হুম।”
“আচ্ছা ভাবি।”
কথাটা শেষ করতেই আয়ান দুই হাত ভরতি হলুদ রিয়ার গালে লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালালো।রিয়া তো এমন পুরাই রেগে আগুন।রিয়ার মন চাচ্ছে আয়ানের চুল টেনে ছিড়ে ফেলতে।কিন্তু এত মানুষের সামনে থেকে উঠাটা ঠিক হবে না তাই রাগ নিয়ে চুপ করে বসে আছে।সবাই আয়ান আর রিয়ার কান্ড দেখে হাসছে।
নিলা রিয়াদকে অনেকসময় ধরে খুজছে কিন্তু পাচ্ছে না।হঠাৎ নিলা ওর গালে কারো ছোঁয়া অনুভব করে।পিছনে তাকিয়ে দেখে রিয়াদ হাসছে।আর রিয়াদের হাতে হলুদ লাগানো।এবার নিলা নিজের গালে হাত দিয়ে দেখে ওর দুই গালে হলুদ লাগানো।
“আপনি আমার গালে হলুদ লাগালেন কেনো?”
“আমার হবু বউ এর গালে একটু হলুদ লাগালাম।তাতে সমস্যা কোথায়?”
“কে আপনার হবু বউ?”
“কে আবার তুমি।”
“এই সব কি বলছেন আপনি?”
“আমার আম্মু তোমার আম্মু আর আপুর সাথে কথা বলেছে আমাদের বিষয়ে।সবাই রাজি হয়েছে।”
“সত্যি!”
“হ্যা।আমি যখন জব করবো তখন আমাদের বিয়ে হবে।সবাই এটাই ঠিক করেছে।”
“কিন্তু আমি যে আপনাকে বিয়ে করবো সেটা আপনাকে কে বলেছে হ্যা?”
“আচ্ছা সমস্যা নেই।আমি তাহলে অন্য কাউকে খুজে নিচ্ছি।”
রিয়াদ চলে যাচ্ছিল তখন নিলা রিয়াদের হাত ধরে বলল
“ভালোবাসি আপনাকে আর আপনাকেই বিয়ে করতে চাই।”
চোখ বন্ধ করে দারিয়ে আছে নিলা।রিয়াদ নিলার কাছে এসে নিজের গালের সাথে নিলার গাল লাগিয়ে বলল
“আমিও আমার নিলুকে খুব ভালোবাসি।তাই তো কেউ তোমাকে আমার থেকে নিয়ে যাওয়া আগেই আমার করে রেখে দিলাম।যাতে আমাদের মাঝে অন্য কেউ না আসতে পারে।”
নিলার চোখ না খুলেই মুচকি হাসলো।রাতে আয়ান আর নিরাকে কাছে পেলো না।অন্য রুমে নাকি শুয়েছে নিরা।
পরের দিন সবাই ব্যস্ত হয়ে পরলো বিয়ের আয়োজন নিয়ে।ছেলেরা সবাই আকাশকে রেডি করাতে ব্যস্ত হয়ে পরেছে আর মেয়েরা রিয়াকে রেডি করাচ্ছে।আকাশ আর রিয়াকে রেডি করিয়ে স্টেজে বসিয়ে দেয়া হল।সবাই আজ অনেক খুশি।কিন্তু তার থেকেও বেশি খুশি রিয়া।
আকাশ আর রিয়ার বিয়েটা খুব সুন্দর ভাবে হয়ে গেল।রিয়া ফিসফিস করে বলল
“অবশেষে এই পিচ্চিকেই বিয়ে করলেন?”
“হুম তো।তুই তো আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়লি।বিয়ে তোকে করতেই হবে।তাই তো বিয়েটা করলাম।নাহলে এখনো অনেক মেয়ে আছে আমাকে বিয়ে করার জন্য।”
রিয়া কিছু বলছে না।কিন্তু মনে মনে ঠিক করছে কিভাবে আকাশে শাস্তি দেয়া যায়।
রিয়াকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।আকাশ রুমে বসে আছে রিয়া।অবশেষে পার্মানেন্ট ভাবে এই রুমটা রিয়ার হলো।আকাশের বিষয়ে ভাবছে আর মনে মনে লজ্জা পাচ্ছে রিয়া।
আকাশকে ওর রুমের ভিতরে দিয়ে এসে আয়ান নিজের রুমে আসলো।কিন্তু আয়ান হয়তো ভুল কোনো রুমে এসে পরেছে।সেটাই আয়ানের মধ্যে মনে হচ্ছে।তাই আবার রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল তখন নিরা বলল
“বাইরে যাওয়ার দরকার নেই।এইটা আমাদেরই রুম।আজ ওদের সাথে আমাদেরও বাসর হবে।তোমার শেরওয়ানি ওয়াশরুমে রেখে এসেছে।যাও গিয়ে রেডি হয়ে এসো।”
খাট থেকে কথাটা বলল নিরা।আয়ান হেসে ওয়াশরুমে চলে গেল।কিছুসময় পরে আয়ান শেরওয়ানি পরে নিরার সামনে এসে বসলো।আয়ান নিরার ঘোমটা সরিয়ে বলল
“ইস আমার নিরু আজ খুব সুন্দর লাগছে।”
নিরা নিচের দিকে তাকিয়ে হাসছে।অনেকসময় হয়ে গেল আয়ান কিছু বলছে না দেখে নিরা এবার সামনে তাকিয়ে দেখে আয়ান নিরার দিকে এক ধ্যানে দিকে তাকিয়ে আছে।নিরা বলল
“সেই কখন থেকে কি এমন দেখছো আয়ান?”
“দেখছি এই নিরুটা যদি আমার লাইফে না আসতো তাহলে আমার কি হতো।”
“কিছুই হত না।আমি কি সারাদিন এইভাবে বসে থাকবো?”
“কেনো ভালোই তো লাগছে।”
“তাহলে আমি নিলার কাছে চলে যাই।থাকো তুমি।”
“সেটা তো হচ্ছে না ম্যাডাম।”
নিরাকে আর কিছু বলতে দিলো না আয়ান।কারন নিরার ঠোট আয়ান নিজের অধীনে নিয়ে নিয়েছে।
সকালে রিয়া ঘুম থেকে উঠে দেখে আকাশের বুকে শুয়ে আছে।রিয়া কিছুসময় আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওয়াশরুমে যাচ্ছিল তখনি আকাশ রিয়ার হাত ধরে টান দিলো।রিয়া বলল
“কি করেছেন ছাড়েন।আমি ফ্রেশ হয়ে যাবো।”
“নাহ তুই এখন কোথাও যাবি না।”
আকাশের দুষ্টু হাসি দেখে রিয়া বলল
“এখন আর কিছু হবে না।রাতে এই পিচ্ছিকে ঠিক মত ঘুমাতে দেন নি।এখন ছাড়েন।”
“সেটা তো হচ্ছে না পিচ্চি।”
রিয়াকে আর একা ফ্রেশ হতে যেতে দিলো না আকাশ।নিজেই কোলে করে নিয়ে গেল ওয়াশরুমে।
রিয়াদ ছাদে দারিয়ে আছে।রিয়াদের পাশে দারিয়ে আছে নিলা।রিয়াদ নিলার হাত ধরে বলল
“আমাদের বিয়েটা আজ হয়ে গেলে কত ভালো হতো তাই না।”
নিলা কিছু না বলে বাকা চোখে রিয়াদের দিকে তাকিয়ে আছে।রিয়াদ আবার বলল
“এখন যদি বিয়েটা হয়ে যেতে তাহলে সামনের বছরের মধ্যে আমাদের একটা বা দুইটা বেবি থাকতো।”
“আপনি এত খারাপ কেনো?মুখে কিছু আটকায় না আপনার?”
“আমি জানি তুমি আপসোস করছো বিয়েটার জন্য।সেটা তুমি যাই বলো না কেনো।”
রিয়াদের কথা শুনে নিলা রিয়াদকে মারতে মারতে বলল
“আপনি খুব খারাপ।”
“সেটা আমি জানি।”
কিছুসময় মারার পর রিয়াদকে জড়িয়ে ধরে নিলা।এবার রিয়াদ বলল
“বিয়ের আগেই এইভাবে জড়িয়ে ধরতে নেই।পরে যদি আমার দ্বারা কোনো ভুল হয়ে যায় তাহলে কিন্তু সেটা আমার দোষ না।”
নিলা কিছু না বলে রিয়াদকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মনে মনে হাসছে নিলা।কারন নিলা বুঝে গেছে এই ছেলেকে ছাড়া নিলার একা থাকা দুষ্কর।
-সমাপ্ত-
This story is very nice