ভালোবাসার অনন্যা পর্ব: ২| রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

0
4908

ভালোবাসার_অনন্যা
পর্ব: ২
লেখিকা: Gangster queen (ছদ্মনাম)

************************

পদ্মার পাড়ে পৌঁছে গেলাম ।তারপর ঘোরাঘুরি করে দুপুরে নদীর পাড়ের একটা হোটেলে খেতে বসলাম। হঠাৎ করে চিল্লাচিল্লির শব্দে আমরা সবাই বাইরে চলে আসলাম। বাইরে এসে দেখলাম একটা ছেলে একজন মধ্যবয়স্ক লোক কে বেধড়ক পেটাচ্ছে কেউ তাকে থামাচ্ছে ও না। এভাবে কেউ কাউকে মারে নিজেকে কি মনে করেন আপনি ছাড়ুন উনাকে (অনন্যা ছেলেটাকে ধাক্কা দিয়ে)

এই অনন্য ওইখানে গেলি কেন এদিকে চলে আয় (মারিয়া)

আরে ওতো ঠিকই করছে তুই চুপ থাকত। একজন লোককে এভাবে কেউ মারতে পারে চল আমরা ওকে যেয়ে সাহায্য করি ।(মিশু)

Hey you stupid girl what’s your problem? আসফি চৌধুরীকে ধাক্কা মারার সাহস হয় কিভাবে তোমার। আর কিছু না জেনে কি হিরো হওয়ার শখ জেগেছে নাকি ও না না না স্টার জলসার নায়িকা হওয়ার সাধ জাগছে তাই না। ফালতু মেয়ে এই লোকটা আমার বোনকে টিস করছিল তাই ওকে এই ভাবে পিটাচ্ছি বুঝতে পেরেছো। না জেনে না বুঝে কোথাও interfere করাটাই উচিত না সেটা কি তোমার ফ্যামিলিতে শিখায়নি? (আসফি)

আসলে সরি ভাইয়া ও বুঝতে পারেনি।ভাবছে একটা লোককে পেটানো হচ্ছে কেউ ধরছে না এইজন্য আগায় আসছে সরি ভাইয়া ।এই তুই চল এখান থেকে সব জায়গায় না বুঝে খালি পাকনামি(মারিয়া অনন্যাকে টানতে টানতে)

এই লোকটার সাহস দেখছিস আমারে কতগুলো কথা শুনিয়ে দিল ।ভুল একটা না হয় করেই ফেলেছি তাই বলে এতগুলো কথা শোনাবে ভ্যা ভ্যা ভ্যা(অনন্যা কান্না করতে করতে)

এই চুপচাপ বস এখানে তুই তো সবসময় এমন করিস। কোথায় কি বলতে হয় সেটা তো জানিস না আবার না বুঝে উল্টা-পাল্টা বকিস ও(মারিয়া রাগ দেখিয়ে)

এখন আবার কান্না করছিস কেন থামত। ঘুরতে আসার মুডটাই নষ্ট করে দিলি। যে যা মনে চায় করুক তোর এত ইন্টারফেয়ার করতে হয় কেন বুঝিনা(সুমাইয়া রাগ দেখিয়ে)

এই চুপ কর তো আমার দোস্ত টারে একলা পাইয়া ধুইতাছস না তোরা। থাক দোস্ত আর কান্না করিস না ওদের কথা বাদ দে তো আমি আছি না। (মিশু অন্যকে জড়িয়ে ধরে)

এই তোরা একটা জিনিস খেয়াল করেছিস ছেলেটা কিন্তু দেখতে জোস ছিল ইস ও‌ যদি আমার বয়-ফ্রেন্ড বা বর হতো (নীলিমা গালে হাত দিয়ে বসে)

এই লুচ্চি মাইয়া তোর না বিয়ে ঠিক হইছে আবার বয়ফ্রেন্ড ছেকা ও দিছে। বইন তোর কয়টা লাগে একটু বলবি?(সুমাইয়া ঠেস দিয়ে)

আহ সবগুলো চুপ করবি! চল খাবারের বিল পে করে দেন আর একটু ঘুরে ফিরে সন্ধ্যার আগে যাইতে হবে যা হয়েছে হয়েছে বাদ দে(মারিয়া)

মারিয়ার ঝাড়ি খেয়ে সবাই চুপ হয়ে গেলাম তারপরে খাবারের বিল পে করলাম। আর একটু ঘোরাঘুরি করে ৪:৩০এর দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম কিন্তু হঠাৎ গাড়িতে প্রবলেম হল। কি হলো হঠাৎ গাড়ির ব্রেক মারলি যে কোন সমস্যা (অনন্যা)

কি হলো হঠাৎ বুঝতে পারছিনা তো সন্ধ্যা হয়ে আসছে। বাইরে যেয়ে দেখি (মারিয়া)

হ্যাঁ চল দেখি (সবাই)

কাজ সারছে। এখন আর একঘন্টা বসতে হবে এখানে তো কোন গ্যারেজ দেখছি না আশেপাশে। ফোন করি ঢাকা থেকে ভাইয়াকে আসতে বলি গাড়ি নিয়ে আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য (মারিয়া চিন্তিত হয়ে)

কি হয়েছে কি (সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে)

গাড়ির সামনের ইঞ্জিনে কোন প্রবলেম হয়েছে বুঝতে পারতাছি না আমি।এখন ভাইয়াকে কল করে আনতে হবে নাহলে আশেপাশে তো কোন গ্যারেজ দেখছি না।গ্যারেজ থাকলে না হলে গাড়ি ঠিক করে নেওয়া যেত। কি করি বল এতক্ষণ পর্যন্ত বসতে হবে দেখি ফোন দেই(মারিয়া)

গ্যারেজ কী খুজবো (মিশু)

এখানে এখন কই গ্যারেজ খুজবি(সুমাইয়া)

আশেপাশে হেঁটে দেখি। না খুঁজেই শুধু শুধু ভাইয়াকে ডিস্টার্ব করা উচিত হবে না তাইনারে মিশু (অনন্যা)
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
হ্যাঁ ঠিক বলেছিস আচ্ছা তোরা এখানে বস আমি আর অনন্যা যেয়ে খুঁজি পেলে পেলাম না হলে মারুফকে (মারিয়ার ভাই) আসতে বলিস।(মিশু)

এই সন্ধ্যার টাইমটা একলা যাবি কিছু হইলে (মারিয়া চিন্তিত হয়ে)

কি হবে ভয় পাস না তো আসেপাশে খুঁজবো পাঁচ দশ মিনিটের মত পেলে পেলাম না পেলে মারুফ ভাইয়াকে ফোন করিস (অনন্যা)

ঠিক আছে জলদি চলে আসিস ফোন হাতে রাখিস (মারিয়া)

আচ্ছা চল মিশু (অনন্যা)

আমি আর মিশু আশেপাশে খুঁজছিলাম গ্যারেজ পাইনি ।কিছু লোককে জিজ্ঞেস করলাম।তারা বললো এখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটা গ্যারেজ আছে। এত দূরে হেঁটে যাওয়া পসিবল না তাও ভরসন্ধ্যায় ব্যাক করব ভাবলাম। যেই ভাবা সেই কাজ দুইজনের ওদের কাছে ব্যাক করছিলাম হঠাৎ আমাদের সামনে একটা গাড়ী এসে থামলো। এটা কেমন তর অসভ্যতামি এভাবে কেউ গাড়ি ব্রেক করে গাড়ি চালাতে না জানলে গাড়ি চালান কেন ফালতু লোক কোথাকার (অনন্যা চিল্লিয়ে)

সব সময় না বুঝে কথা বলার অভ্যাস নাকি তোমার। By the way এই সন্ধ্যার টাইমে তোমরা হাঁটাহাঁটি করছ কেন। তোমাদের কি কমনসেন্স এর অভাব আছে? এই খালি রাস্তায় দুইটা মেয়ে হাঁটাহাঁটি করছো ভয় নাই তোমাদের। (আসফি)

দুপুরবেলাও অনেকগুলা কথা শুনিছেন কিছু বলি নাই ।এখন কি আপনার কথা শুনতে হবে আমাদের ফালতু লোক কোথাকার। আমরা যেখানে মন চায় সেখানে হাটব আপনার সমস্যা কি এটা কি আপনার জায়গা ?(অনন্যা রাগ দেখিয়ে)

আরে দোস্ত চুপ থাক না। আসলে ভাইয়া আমার ফ্রেন্ডের যে গাড়ি নিয়ে আসছি লাম সেইটার ইঞ্জিনে প্রবলেম হয়েছে।তাই জন্য গ্যারেজ খুজছিলাম আর না হলে আমাদের এইখানে বসে থাকতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঢাকা থেকে আমাদের এসে নিয়ে যায়। তাই ভাবলাম আশেপাশে গ্যারেজ থাকলে গাড়িটা ঠিক করে চলে যেতাম (মিশু)

ও আচ্ছা আমার গাড়িতে উঠ।তোমার ফ্রেন্ডের গাড়ির সামনে দিয়ে আসি আর দেখি ঐ গাড়ির কি সমস্যা হয়েছে (আসফি)

মরে গেলেও আপনার গাড়িতে উঠবো না। এই মিশু চলতো। এই ফালতু লোকের সাথে এতো কথা কিসের তোর (অনন্যা মিশুর হাত টানতে টানতে)

আরে লোকটা আমাদের হেল্প করতে চেয়েছে তো এখন এখানে বসে থাকার থেকে কারো হেল্প নেওয়া ভালো না (মিশু)

চিনি না জানি না হেল্প কেন নিতে যাব। আর এই ফালতু লোক টার থেকে তো কোন হেল্প আমি নিব না। মারিয়ার গাড়িতে 2-1 মিনিট পরেই পৌঁছে যাব। ওনার গাড়ীতে চরে যাওয়ার কোন সখ নেই আমার। (অনন্যা)

আচ্ছা ভাইয়া থাক আপনি চলে যান আমরা ম্যানেজ করে নেব ।(মিশু)

তোমার এই ফ্রেন্ড এর মাথায় কি প্রবলেম আছে? আমি নিজে থেকে হেল্প করতে চাইছি আসফি চৌধুরী তোমার ফ্রেন্ড আমাকে বারণ করছে ভালো। আমি তোমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি হেল্প করব চলো আমিও তোমাদের সাথে হেটে যাই।(আসফি)

ও হ্যালো গায়ে পড়ে এসে হেল্প আমি নেইনা আপনার হেল্প তো আরো আগে নেব না (অনন্যা রাগ দেখিয়ে)

কি শুরু করছিস রে দুইটাই মিল্লাহ আমার কানটাতো ঝালাপালা হয়ে যাইতাছে। আই অনন্যা চুপ কর না হেল্প করতে চাইতেছে হেল্প নিলে সমস্যা কি?(মিশু)

বেটা বজ্জাত,অসভ্য ,শয়তান ,বাজে লোক আমার বান্ধবী গুলারে আমার বিপক্ষে কইরা দিছে ।তোরে আল্লাহ বিচার করব ।তোর কপালে একটা পেত্নী বউ জুটবো(অনন্যা মনে মনে)

Hello girls.How are you all? Hi I am ashfi chaudhari. From Dhaka.(আসফি)

We are fine. আমি নিলিমা ও সুমাইয়া ও মারিয়া ও মিশু এবং ও অনন্যা। তা হঠাৎ আপনি এখানে (নীলিমা)

এইতো ঢাকা ফিরছিলাম তোমার বান্ধবীদের দেখলাম রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছে ভাবলাম ভূত পেত্নী নাকি অন্যকিছু চেক করতে নেমে দেখি এরা 2 জন। তার পরে জানলাম গাড়ি সম্পর্কে তাই তোমাদের হেল্প করতে আসা। Nice to meet you all ladies and one pitni(আসফি)

তা এখানে পেত্নীটা কে?(সুমাইয়াও নীলিমা অবাক হয়ে)

কে আমাকে দেখিসনা বদ ব্যাটা আমারে পেত্নী বলে কতো খাটাস দেখছিস ভ্যা ভ্যা ভ্যা(অনন্যা কান্না করে)

আরে দোস্ত থাম থাম।ভাইয়া প্লিজ ওকে আর পেত্নী বইলেন না প্লিজ ভাইয়া ওর কান্না শুরু করলে তখন আপনার কান ঝালাপালা হয়ে যাবে প্লিজ ওকে রাগিয়েন না ঠিক আছে‌।(মারিয়া)

Sorry sorry আর বলবো না প্লিজ কান্না থামাও আমার কান এর ১২টা বেজে গেল (আসফি কানে হাত দিয়ে)

গাড়ির ইঞ্জিন গরম হয়ে গেছে একটু পানি দিতে হবে। একটু পানি দাও তো। (আসফি)

আপনি কি মেকানিক আন্তাজে গাড়ি ঠিক করতে আসছেন? (অনন্যা)

না আমি মেকানিক না। But your kind information I have a car showroom in Dhaka. যে কোন গাড়ি সম্পর্কে আমি ধারণা রাখি বুঝতে পারছেন মেডাম। আমাকে আমার কাজটা করতে দিন। আর না জেনে বুঝে প্লিজ কথা বলা বন্ধ করুন (আসফি)

তোর সব জায়গায় উল্টাপাল্টা প্যাচাল না পারলে হয়না।(মারিয়া রাগ দেখিয়ে)

যা তোদের সাথে আর কথাই নাই।(অনন্যা রাগ দেখিয়ে গাড়ির মধ্যে বসে)

নিচে দোষ করবে আবার নিজেই রাগ দেখায় মানে ওরে নিয়া পারিনা সব জায়গায় বাঁচ্চামি করলে চলে। আই মিশু ওর সাথে একটু যেয়ে কথা বলতো(মারিয়া)

ঠিক আছে (মিশু)

নাও গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দেখতো মারিয়া ঠিক আছে কিনা?(আসফি)

ঠিক আছে দেখছি। হ্যাঁ ভাইয়া গাড়ি স্টার্ট হয়ে গেছে। Thank you so much(মারিয়া)

Thanks এর দরকার নেই তবুও welcome. তো সবাই ভালো মতো যাও।আর তোমাদের সাথে তো আর কথাই বলা হলো না তা তোমাদের কন্টাক্ট নাম্বার গুলো পেতে পারি কথা বলার জন্য ভবিষ্যতে? (আসফি)

জি ভাইয়া লিখুন (নীলিমা উৎকণ্ঠা হয়ে)

Thank you so much. ঠিক আছে কথা হচ্ছে ভালো থেকো bye.(আসফি)

Most welcome. আপনিও ভালো থাকবেন আশা করি ভবিষ্যতে আবার দেখা হবে আসি। আল্লাহ হাফেজ (মারিয়া)

আসি ভাইয়া আল্লাহ হাফেজ (নীলিমা ও সুমাইয়া)

Hey মিশু এবং পেত্নী আসি ভালো থেকো দেখা হবে আশা করি আল্লাহ হাফেজ। (আসফি মুচকি হেসে)

আচ্ছা ভাইয়া ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ. (মিশু)

আসসালামুয়ালাইকুম ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাহায্য করার জন্য। আমি ক্ষমাপ্রার্থী দুপুর থেকে না বুঝে খারাপ ব্যবহার করার জন্য। ভালো থাকবেন আসি।(অনন্যা খুব শান্ত স্বরে)

ওয়ালাইকুম আসসালাম না ঠিক আছে।(এর আবার কি হলো ।হঠাৎ এত চেঞ্জ দুপুর থেকে যাকে দেখছি আর এখন যাকে দেখছি দুজনকে তো আমি মিলাতে পারছিনা ।মেয়েটা কি আসলেই এরকম না দুপুর থেকে দেখে আসা ওই রকম বুঝতে পারছি না কিছু। আসফি মনে মনে) ভালোমতো যেও ভালো থেকো আশা করি আবার দেখা হবে (আসফি)

তারপর আমরা গাড়ি চালিয়ে চলে আসলাম।আমি এরকমই আগের পর্বে বলেছিলাম আমি কখন কোথায় কি বলতে হয় সেটা ভাবি না আর যখন ভাবি তখন হয়তো খুব দেরি হয়ে যায় আরো অনেকগুলো ভুল করে বসি।গাড়িতে বসে যখন ভাবলাম কথাগুলো তখন মনে হল লোকটা তো খারাপ না। যাকগে তার কথা ভাবার দরকার কি!
আমার বাড়ি চলে আসছি এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দিলাম ঘুম কারণ সকালে কলেজে আছে। সকালে উঠে আম্মু আব্বুকি কালকে কিছু বলেছিল?(অনন্যা)

তোর আব্বু এখনও অফিস যাইনি। তোর সাথে নাকি কিছু কথা আছে। কালকের কথা এখনও আমি বলি নাই আর বলার দরকার নেই চুপচাপ খা। কি এমন বলবে আল্লাহ মাবুদ জানে (আম্মু)

শুভ সকাল অনন্যা। কেমন আছো? (আব্বু)

শুভ সকাল আব্বু। আলহামদুলিল্লাহ আমি খুব ভালো আছি ।আপনার শরীর কেমন আছে?(অনন্যা)

আমি খুবই ভালো আছি। তোমার সাথে প্রায় এক মাস ধরে কথা হয়না । ব্যবসার কাজে ইদানীং খুব বিজি থাকি।আজকে তোমার সাথে কিছু ইম্পরট্যান্ট কথা আছে। মন দিয়ে শুনবে পুরো কথাটা শেষ হওয়ার আগে কোন কথা বলবেনা! বুঝতে পেরেছ?(আব্বু)

জি আব্বু বলেন (অনন্যা)

তোমার বয়স আঠারোতে পারা দেবে একমাস পরে তাইতো?(আব্বু)

জি আব্বু (অনন্যা)

আসলে আমার এক বন্ধুর ছেলের জন্য দেখতে আসতে চাইছে। আর আমিও হ্যাঁ করে দিয়েছি। দেখতে আসলেই বিয়ে হবে এমন তো কোন কথা নেই। তবে কাউকে না কাউকে তো বিয়ে করতে হবে আমি চাই খুব যাচাই-বাছাই করে আমার একমাত্র কন্যা তোমাকে বিয়ে দেবো। ছেলে খুব ভালো শুনেছি আমি কাজও খুব ভালো দেখেছি আমি ।এখন ওরা দেখতে আসতে চাইছে তোমাকে দেখাতে চাইছি আমি। তোমার এতে কোনো দ্বিমত নেই তো। বুঝতে পারছ আমি কিসের কথা জিজ্ঞেস করেছি? এখনকার যুগের ছেলে মেয়ে তোমরা পছন্দ থাকলে বলে দাও ।দেখানোর পরে তাদের পছন্দ হলে বিয়ে করাবে তারা আমার এতে দ্বিমত নেই কিন্তু তোমার থাকতেও পারে। তাই আমি দেখাতে যাওয়ার আগে তোমার মতামত জানতে চাইছি।অনেক ছেলেমেয়েরাই আছে দেখানোর সময় কিছু বলে না বিয়ে ঠিক হয়ে যায় হয়তো বলে না হয়তো বললেও বাবা মা রাজি হয় না তাই ছেলেমেয়েরা পালানোর পথ বেছে নেয়। আমি তোমাকে কঠোরভাবে লালন পালন করেছি তার কারণ তুমি জানো। তাও পছন্দ থাকতেই পারে তুমি যেমন ছেলে কে পছন্দ করো এটা তোমার ডিসিশন আমি তোমার ডিসিশন কেই হ্যাঁ বলবো ।যদি থেকে থাকে আগেই বলে দাও দেখাতে যাওয়ার ঝামেলায় আমি যাবনা। আর না থাকলে পরশুদিন তারা আসবে তোমায় দেখবে তারপরে যা হওয়ার আল্লাহ মালুম। এখন বল কি বলবা (আব্বু)

প্রথমত আপনি আমার ভালোর জন্য কঠোরভাবে লালন পালন করেছেন। যাতে আমি সব দিক দিয়ে ঠিক থেকে সবার কাছে ভালো থাকতে পারি। দ্বিতীয়তঃ আমি কাউকে কোনদিন ভালোবাসার চেষ্টা করিনি আমার আব্বু আম্মুর ওপর আমার পুরো ভরসা আছে তারা আমাকে সঠিক পাত্রের হাতে দান করবেন। আর তৃতীয় আপনারা যা ভালো মনে করবেন আমার জন্য সেই পথেই আমি বেছে নেব। কিন্তু একটা প্রশ্ন ছিল আমার করতে পারি? (অনন্যা)

হ্যাঁ অবশ্যই (আব্বু)

আমি কি আমার পড়াশোনা টা কন্টিনিউ করতে পারব?বিয়ে আজকে হোক কালকে হোক একদিন না একদিন করতেই হবে মেয়ে হয়ে জন্মেছি যেহেতু।কিন্তু বিয়ের পরেও আমি আমার পড়াশোনা টা কন্টিনিউ করতে চাই এই ব্যাপারটা একটু আপনি উনাদের সাথে খোলাসা করে নেবেন যদি তারা রাজি হয় তাহলে দেখতে আসতে বলবেন।(অনন্যা)

ঠিক আছে আমি তাদের সাথে কথা বলে নেব। তো পরশুদিন আমি তাদের আসতে বলছি। কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে নিও (আব্বু)

ঠিক আছে আব্বু আমার খাওয়া শেষ ।আমি কলেজের জন্য বের হব আসি আসসালামুয়ালাইকুম আল্লাহ হাফেজ।(অনন্যা)

ওয়ালাইকুম আসসালাম আল্লাহ হাফেজ (আব্বু)

আম্মু আসি আল্লাহাফেজ (অনন্যা)

ঠিক আছে যাও আল্লাহ হাফেজ (আম্মু)

কি আপনারা ভাবছেন তো আমার আর আব্বুর মধ্যে এত দূরত্ব কেন। আমার আব্বু গ্রামের খুবই সহজ সরল একজন লোক। আব্বুর ফ্যামিলিতে ছেলে এবং মেয়েদের কঠোরভাবে লালন পালন করা হয়। স্বাধীনতা বলতে স্কুল-কলেজের গণ্ডি পর্যন্তই থাকা চাই যদিও বা এটা মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আব্বু বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তাই সর্বদা বাংলায় কথা বলতে হয় ।উনি বাংলায় কথা বলতে খুব ভালোবাসে। আমি মাঝেমধ্যে এইজে ঘুরতে যাই সেটা আম্মুর ফজিলতে। আম্মুর মতে বিয়ের পরে আর ঘুরতে যাওয়া হবে না যদি আব্বুর মত স্বামী পাই। আমার আব্বু আম্মুকে নিয়ে কোনোদিন কোথাও ঘুরতে যাইনি। টাকার অভাব ছিল না ,আম্মুও খুব সুন্দরী ছিল কেন যায়নি জানেন আব্বুর মতে ঘুরতে যাওয়া মানে সময় নষ্ট করা জীবনের হাসি ঠাট্টা মানেই সময় নষ্ট করা ভাবা যায় সিরিয়াস টাইপের এই মানুষটা আমার আব্বু যদিওবা ভালোবাসি তাকে খুব। কিন্তু ওই যে কঠোরতার মাঝখানে বাবা মেয়ের মাঝখানে দূরত্ব সৃষ্টি করেছে যে সেইটার কমাতে পারেনি।আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে কলেজ চলে আসছি ক্লাস করি। দোস্ত বিয়ের মনে হয় সিজন লাগছে বুঝছিস (অনন্যা)

কেন কার আবার বিয়ে ঠিক হল (মিশু ও মারিয়া অবাক হয়ে)

হয় নাই হবে।পশু দেখতে আসছে আমাকে আল্লাহ মালুম হলে হতেও পারে জানিনা কি রেখেছে। (অনন্যা মন খারাপ করে)

মানে কি ?তোর বিয়ে মানে? দেখতে আসছে মানে? কি বলিস আবোল তাবোল মজা করতেছিস নারে তুই?(মিশু উদ্বিগ্ন হয়ে)

আমি কি বলছি বিয়ে হয়ে যাবে বললাম দেখতে আসছে বিয়ে হইলে হইতেও পারে। (অনন্যা)

তা হঠাৎ দেখতে আসবে কে আনছে সম্বন্ধটা ( মিশু)

আব্বু আনছে আব্বুর ফ্রেন্ড এর ছেলের জন্য (অনন্যা)

কি শুরু করছে সবাই সবগুলার বিয়ে হয়ে গেলে কেমনে কি (মিশু প্রায় কান্না করে)

কান্না করিস না বিয়ে হইলে পড়ালেখা চালায় যাব যদি তারা দেয়। দোয়া করিস যেন পড়ালেখাটা চালিয়ে যেতে দেয়। কিরে নীলিমা তোর বিয়ের খবর কি বল। তোরটা খাইতে পারবো একলা নাকি জামাই নিয়া খাইতে হবে?(অনন্যা হাসতে হাসতে)

একমাস পরে ডেট দিছে। (নীলিমা)

বলিস কি খুব ভালো খবর তো সবাই প্ল্যান কর কে কি পড়বো (অনন্যা এবং মিশু)

হ্যাঁ হ্যাঁ কর কর সব প্লান তোরাই কর। আমি বিয়েতে কিভাবে কান্না করব সেই প্র্যাকটিস করি (নীলিমা মন খারাপ করে)

সবাই ওর কথা শুনে হেসে দিলাম।আহারে বেচারী পালারে সাজবে এ কান্না করলে সব সাজ ধুয়ে যাবে সেই কোস্টে এখন থেকেই কান্নার প্র্যাকটিস করছে যাতে সাজ না নষ্ট হয় হিহিহিহিহিহি (সবগুলা মজা নিয়ে)

এভাবে মজা আনন্দ কেটে গেল দুই দিন। কালকে অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে আজকের জন্য ছুটি নিয়ে নিয়েছি। আজকে আমাকে দেখতে আসছে আব্বুকে ভয়ের জন্য কিছু আর জিজ্ঞেস করতে পারিনি। নাম কি? কি করে? আম্মুকেও জিজ্ঞেস করিনি ভাবলাম সামনাসামনি দেখা যাবে সামনাসামনি জিজ্ঞেস করে নেব!

তারা চলে এসেছে। আম্মু এসে আমাকে সাজিয়ে দিয়েছিল সিম্পল একটা ব্লু কালার থ্রি পিস পড়েছি,ঠোটে হালকা লিপস্টিক ,কানের ঝুমকো এইতো আম্মু বলল আর বেশি সাজার দরকার নেই এমনিতেই নাকি অনেক সুন্দর লাগছে।আর আব্বু বলে দিয়েছে যা দেখবে সাজগোজ ছাড়াই যাতে দেখাই।যাতে কোনটা আসল চেহারা আর কোনটা নকল চেহারা সেটা যাচাই করতে ওই বাড়ির লোকেদের কোন সমস্যা না হয়। ভাবা যায় !!!আমার আব্বু তো নয় কি আর বলব ঠিক আছে দেখা যাক যে দেখতে আসছে সে কেমন?????(অনন্যা)

*************(চলবে)***************

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে