#ভালোবাসবে_তুমিও❤
#পর্ব__১৯
#অদ্রিতা_জান্নাত
রুমের মধ্যে বিছানায় জ্ঞানহীন অবস্থায় পরে আছে শ্রেয়া ৷ বাড়ির সবাই চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে ৷ ডাক্তার ওর পাশে বসে ওর চেকআপ করছে ৷ কিছুক্ষন শ্রেয়াকে চেকআপ করে গম্ভীর মুখে বসে রইলেন তিনি ৷ তুহিন ওনার কাছে গিয়ে চিন্তিত স্বরে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,
“আঙ্কেল শ্রেয়ার কি হয়েছে? ওর হঠাৎ করে কি হলো?”
লোকটি কিছুক্ষন গম্ভীরমুখে বসে রইল ৷ তারপর কিছু একটা ভেবে তুহিনের দিকে তাকিয়ে বললেন,,,,,,,,,,
“আমি ঠিক বুঝতে পারছি না ৷ তুমি আমার থেকেও ভালো একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলে দেখো ৷”
“মানে?”
“শ্রেয়াকে একজন ভালো ডাক্তার দেখাও ৷ যত দ্রুত সম্ভব ৷ একজন ভালো ডাক্তার দিয়ে ওর চিকিৎসা করাও ৷ শ্রেয়ার লক্ষন মোটেও ভালো লাগছে না আমার৷”
তুহিন একবার শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,
“কি হয়েছে ওর? যে ওকে চিকিৎসা করাতে হবে?”
“আমি যেটা ধরেছি সেটা নাও হতে পারে ৷ তাই বলছি ভালো কাউকে দিয়ে ওর চেকআপ করাও ৷ আমারটা ভুল হলে শুধু শুধু তোমরা চিন্তা করবে ৷ তাই বলছি ভালো কোনো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওর চিকিৎসা করাও ৷ ভালো রিপোর্ট আসতেও পারে ৷ চিন্তা না করে মনকে শক্ত করো ৷ আজ আমি আসি ৷ দরকার হলো আবার বলো ৷”
বলেই চলে গেলেন তিনি ৷ বাড়ির সবাই একপলক শ্রেয়াকে দেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ তুহিন একদৃষ্টিতে শ্রেয়ার শুকিয়ে যাওয়া মুখটার দিকে তাকিয়ে রইল ৷ চৈতি তুহিনের কাঁধে হাত রেখে বললো,,,,,,,,
“সব ঠিক যাবে ৷ তুমি যাও ভাইয়া ৷ আমি শ্রেয়ার পাশে আছি ৷ ওকে দেখে রাখবো ৷ কোনো চিন্তা করো না ৷”
তুহিন শ্রেয়ার দিক থেকে চোখ সরিয়ে চৈতির দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,,,,,
“ওর জ্ঞান ফিরলে বলিস আমাকে ৷”
আর এক মূহুর্তও দাঁড়ালো না ও ৷ রুম থেকে বাহিরে বেরিয়ে গেল ৷ চৈতি তুহিনের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে শ্রেয়ার পাশে গিয়ে বসলো ৷ শ্রেয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে উঠলো,,,,,,,,,
“আমার আগেই সন্দেহ হয়েছিল ৷ কিন্তু তুমি তো ভাইয়াকে বলতে দিলে না ৷ ভেবেছো নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যাবে ৷ অসুখ কি কখনো নিজে নিজে সাড়ে? আমিও যে কেন আগে বুঝলাম না ৷”
_________________________________
বাড়ির কলিংবেল বেজে উঠার শব্দে চৈতি নিচে নেমে দরজা খুলে দিল ৷ বাহিরে অরূপকে দেখে অবাক হলো ও ৷ অরূপ বাহির থেকে ভিতরে একবার উঁকি দিতে দিতে বলে উঠলো,,,,,,,,
“সরো সামনে থেকে ৷ এরকম খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন?”
চৈতি রেগে গিয়ে বললো,,,,,,,,
“কি বললেন আপনি? আমার বাড়িতে এসে আমাকেই ইনসাল্ট করছেন? কে আপনি? সরবো না আমি ৷ ভিতরেও যেতে দিবো না ৷ চলে যান ৷”
বলেই দরজা লাগাতে নিলে অরূপ ঠেলে ভিতরে ঢুকলো ৷ আশেপাশে তাকাতে তাকাতে সোজা উপরে চলে গেল ৷ চৈতি হা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো ৷ চেনা নেই জানা নেই এভাবে বাড়ির ভিতর ঢুকে পরলো? ওর বিষয়টা একটুও ভালো লাগলো না ৷
পুরো বাড়ি সার্চ করেও অরূপ শ্রেয়াকে খুঁজে পেল না ৷ এক প্রকার হতাশ হয়ে নিচে নেমে এলো ৷ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে নিতেই পিছন থেকে চৈতি বলে উঠলো,,,,,,,,,,,
“আপনি কে হ্যাঁ? এভাবে বাড়িতে ঢুকে পুরো বাড়ি সার্চ করে গেলেন ৷”
অরূপ চৈতির দিকে ঘুরে তাকালো ৷ ওর এখন কথা বলতে বিরক্ত লাগছে ৷ তাই কোনো প্রকার কথা না বলে চুপচাপ বাড়ির বাহিরে চলে গেল ৷ এদিকে চৈতি রাগে দাঁত কিড়মিড় করে বিড়বিড় করতে করতে উপরে চলে গেল ৷
৷
৷
৷
৷
একজন ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হলো শ্রেয়া ৷ সোজা নিচে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো ও ৷ ওর মাথায় খালি কালকের ঘটনাগুলো ঘুরছে ৷ হঠাৎ করে কাল ওর কি হলো সেটাই বুঝতে পারছে না ৷ অরূপ কেন আসবে ওর কাছে তাও এতোদিন পর? আসার হলে তো আরো আগেই আসতে পারতো ৷ ওটা হয়তো ওর মনের কোনো ভুল ছিল ৷
কিছুক্ষন পর তুহিন এসে ড্রাইভিং সিটে বসলেন ৷ আমি একবার ওনার দিকে তাকিয়ে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালাম ৷ তুহিন কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিলেন ৷ কিছুদূর যেতেই একটা গাড়ির দিকে চোখ আটকে গেল ৷ কালকের মতো সেই গাড়িটা ৷ গাড়িটাকে দেখে তুহিনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি থামাতে বললাম ৷ উনি অবাক হয়ে বলে উঠলেন,,,,,,,,,
“হঠাৎ করে কি হলো? গাড়ি কেন থামাতে বললে?”
আমি কিছু বললাম না ৷ তুহিন গাড়ি ব্রেক করলে সাথে সাথে কিছু না বলেই নেমে গেলাম ৷ রাস্তা পাড় হয়ে ওই গাড়িটার কাছে গেলাম ৷ গাড়ির জানালা দিয়ে উঁকি দিলেও ভিতরে কাউকে দেখতে পেলাম না ৷ আশেপাশে একটু তাকাতেই তুহিন আমার সামনে এসে বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,,,,,,
“এসব কি শ্রেয়া? তুমি এভাবে গাড়ি থেকে নেমে চলে এলে কেন? চলো তাড়াতাড়ি ৷”
বলেই আমাকে গাড়ির দিকে নিয়ে যেতে লাগলেন ৷ আমি আশেপাশে তাকাতে তাকাতে গাড়িতে উঠে বসলাম ৷ পুরোটাই মনের ভুল ৷ কেন ওনার কথা বারবার ভাবছি আমি ৷ যে যাওয়ার সে চলেই যাবে ৷ তাহলে আবার তার কথা কেন ভাবছি আমি? উনি আসেন নি আর আসবেনও না কখনো ৷ শুধু শুধু তার জন্য তুহিনকে কষ্ট দিতে পারবো না ৷
৷
৷
৷
৷
বেশ কিছুক্ষন পর বাড়িতে এসে পৌঁছালাম ৷ বাড়িতে এসে সোজা নিজের রুমে চলে গেলাম ৷ ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসতেই চৈতি এলো ৷ আমার পাশে বসে বলতে লাগলো,,,,,,,,,
“এখন কেমন আছো?”
কপাল হালকা কুচকে বলে উঠলাম,,,,,,,,,,,,,
“আমার আবার কি হবে?”
“না কিছু না ৷ তোমার কোথাও খারাপ লাগছে নাকি সেটাই জিজ্ঞেস করছিলাম ৷”
“আচ্ছা তুহিন হঠাৎ ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেলেন আমাকে ৷ কিন্তু কেন?”
“ওওওই যে তোমার মাথা ব্যাথা হয় কেন সেটা জানার জন্য ৷”
“কেন হয়?”
“উফ রিপোর্ট অাসলে বুঝতে পারবো ৷ তুমি এতো চাপ নিও না তো ৷ সব ঠিকঠাকই আসবে দেখো ৷”
“হুম ৷ আচ্ছা বাড়ির সবাই কোথায়? দেখতে পেলাম না তো কাউকে ৷”
“পাপার অফিসে গেছে সবাই ৷ এক্ষুনি চলে আসবে ৷ তুমি একটু রেস্ট নাও ৷ মাথায় চাপ দিও না একদম ৷ আমি আসছি এখন ৷”
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই কাশি উঠে গেল ৷ মুখে হাত দিয়ে কাশতে লাগলাম ৷ চৈতি আমাকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিল ৷ আমি পুরোটা পানি খেয়ে নিলাম ৷ হাতের দিকে তাকাতেই দেখি হাতে রক্ত লেগে রয়েছে ৷ সেটা দেখে চৈতি বলে উঠলো,,,,,,,,,,,
“রক্ত?”
“তুমি একটু যাবে প্লিজ ৷ আমি একটু একা থাকবো ৷”
চৈতি কিছু না বলেই দৌঁড়ে বাহিরে চলে গেল ৷ আমি হাত মুখ ধুয়ে এসে বিছানায় বসতেই আমার উপর একটা মোড়ানো কাগজ এসে পরলো ৷ জানালা দিয়ে বাহিরে উঁকি দিলাম কিন্তু কাউকে পেলাম না ৷ চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকাতেই আবার আরেকটা কাগজ এসে পরলো ৷ সবগুলা সাদা কাগজ ৷ কিছুই লিখা নেই এতে ৷ তো কাগজ গুলো এভাবে দিচ্ছে কে? জানালার কাছে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করলাম কে আছে ৷ কিন্তু এবারো কাউকে পেলাম না ৷ অন্যদিকে তাকাতেই আরেকটা কাগজ আমার উপর এসে পরলো ৷ রেগে জানালা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় গিয়ে বসে পরলাম ৷
এবার পাথর ছোঁড়ার আওয়াজ পাচ্ছি ৷ মানে কেউ পাথর ছুড়ছে আর সেটা জানালার গ্লাসের সাথে লেগে শব্দ হচ্ছে কিন্তু রুমের ভিতরে আসছে না ৷ আমি রুম থেকে বেরিয়ে সোজা বাড়ির বাহিরে চলে গেলাম ৷ যেদিক থেকে কাগজ ছোঁড়া হচ্ছিল সেদিকে গেলাম ৷ কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলাম না ৷ আরেকটু সামনে এগিয়ে যেতেই হঠাৎ হাতে টান পরলো ৷ ভয়ে আমার হাত পা কেঁপে উঠলো ৷ কেউ আমার হাত ধরে টেনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো ৷ আমি চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ফেললাম ৷ কোনো পরিচিত গলার আওয়াজ পেয়ে চোখ খুললাম ৷
অরূপকে আমার সামনে দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে গেলাম ৷ পুরো এক বছর পর ওনার গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম ৷ কষ্টটা যেন আরো বের হয়ে আসতে চাইছে ৷ এতোদিন পর কেন আজ আসলেন উনি? চাইলে তো আগেই আসতে পারতেন ৷ সেসব ভেবেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম ওনাকে ৷ উনি কিছু কদম পিছিয়ে গেলেন ৷ আমি হালকা চেঁচিয়ে বলে উঠলাম,,,,,,,,,,
“এখানে কেন এসেছেন? চলে যান আপনি ৷ আর ঝামেলা করতে আসবেন না প্লিজ চলে যান ৷”
বলেই আমি চলে যেতে নিলে অরূপ আমার হাত চেপে ধরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলেন ৷ আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করেও ছাড়াতে পারলাম না ৷ অরূপ বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,
“এই একবছর আমাকে দূরে রেখেও শান্তি পাও নি?”
আমি কিছু বললাম না ৷ উনি আবার বলতে লাগলেন,,,,,,,,
“এই একবছর তো দূরে থেকেছো আমার থেকে ৷ বুঝেছি রাগ করে দূরে রয়েছিলে ৷ তাই বলে তুহিনকে বিয়ে করতেও রাজি হয়ে যাবে? এটা কীভাবে করলে?”
“আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই আমি রাজি হয়েছি ৷ আপনি বলার কে? আপনি কোন অধিকারে বলবেন আমাকে এসব?”
“ভালোবাসার অধিকার নিয়ে বলবো ৷”
তাচ্ছিল্য হেসে বললাম,,,,,,,,
“ভালোবাসা? আপনি না মায়া আপুকে ভালোবাসতেন ৷ তো আমাকে কেন টানছেন আবার? মায়া আপুকে এখন আর ভালো লাগে না তার জন্য?”
অরূপ চোখ বন্ধ করে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বলে উঠলেন,,,,,,,,,,
“হ্যাঁ ওকে আমার ভালো লাগে না ৷ ও আমাকে মিথ্যা বলেছে তোমার নামে ৷”
“আপনি নাকি ভালোবাসতেন আমাকে? তো আপনার ভালোবাসা এতোটা সস্তা? কারো একটু মিথ্যা জালে নিজেকে জড়িয়ে ফেললেন?”
“আচ্ছা আমি ভুল করেছি ৷ হ্যাঁ এটাকে ভুল না অন্যায় বলে ৷ কিন্তু এর জন্য কি তুমি আমার থেকে দুরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করবে? একটা কি সুযোগ দিবে না? স্বামী স্ত্রীর মাঝে তো কতই ঝগড়া হয় ৷ তাই বলে কি তারা আলাদা হয়ে যায়?”
“ঝগড়া আর কারো উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া এক না ৷ এতোই যখন আমাকে নিজের বউ মনে করতেন তাহলে বিয়ের পর অন্তত সেই মিথ্যা কথাগুলো বিশ্বাস না করে আমাকে মেনে নিতে পারতেন ৷ কিন্তু আপনার মধ্যে কোনো বিশ্বাস নেই ৷ এক ভুল তো আবারো করতে পারেন ৷ তখন?”
“তখন নাহয় নিজের হাতে মেরে ফেলো ৷”
অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম আমি ৷ চোখ ভিজে আসছে বারবার ৷ অরূপ আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলতে লাগলেন,,,,,,,
“চলে যাওয়ার একটু আগে যদি একবার পিছনে ঘুরে দাঁড়াতে, পিছনে তাকিয়ে দেখতে তাহলে আজ এক বছর হয়তো আমরা একসাথেই থাকতাম ৷”
অামি অরূপের দিকে তাকালাম ৷ উনি আবার বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,,,,,,,,
“হুম হয়তো আমার ভালোবাসাটা অবিশ্বাসের ছিল ৷ কিন্তু কি বলো তো আমি তোমাকে তখন মাত্র ভালোবাসতে শুরু করেছিলাম ৷ সম্পূর্ণ ভালোবাসার আগেই মায়া আমাকে ভুল বুঝিয়ে দিল ৷ আমি তখন জানতাম না যে মায়া ছিল এসবের পিছনে ৷ কে এরকম করেছিল তাকে আমি খোঁজার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পাই নি ৷ তুমি চলে যাওয়ার পর তোমার শুন্যতা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে কাকে কতটা ভালোবাসি আমি ৷ কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল ৷ তুমি তো আমাকে ফেলেই চলে গিয়েছিলে ৷ কোথায় খুঁজি নি তোমাকে? সব জায়গায় তোমাকে খুঁজে বেরিয়েছি ৷ জায়গায় জায়গায় লোক লাগিয়েছি ৷ দেশের বাইরেও লোক পাঠিয়েছি ৷ নিজেও সব জায়গায় হন্ন হয়ে খুঁজেছি ৷ কিন্তু কোত্থাও পায় নি তোমায় ৷ তোমাদের বাড়িতেও গিয়েছিলাম ৷ তোমার মা বাবাকে বারবার বলতে বলেছিলাম তুমি কোথায় আছো? কিন্তু তারা কিছুই বলে নি আমাকে ৷ কত কাকুতি মিনতি করেছি তবুও বলেন নি তারা ৷ তাদের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছি ৷ হাত জোড় করে তোমার খবর দিতে বলেছিলাম ৷ কিন্তু তারা একটা টু শব্দও মুখ থেকে বের করেন নি ৷ ওই বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল তারা ৷ আমি আমার নিজের মতো খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে গেছি কিন্তু পাই নি কোত্থাও ৷”
ধরা গলায় বলে উঠলাম,,,,,,,,,
“তো এখন কীভাবে জানলেন?”
“তোমার আব্বুর মোবাইল থেকে তোমার নাম্বারের লোকেশান পেয়েছিলাম ৷ আচ্ছা শ্রেয়া অতীতকে ভুলে কি আমার কাছে আসতে পারবে না?”
অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে উঠলাম,,,,,,,,,
“অতীত আমি ভুলতে পারবো না ৷ অতীত অতীতই ৷ আপনি আসতে অনেক দেরি করে ফেলেছেন ৷ আমার তুহিনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ৷ আমি তুহিনকে কষ্ট দিতে পারবো না ৷ এখন আমি চাইলেও আপনার কাছে ফিরতে পারবো না ৷ আমি চাই না আমার জন্য তুহিনের মন ভেঙ্গে যাক ৷ উনি তো কোনো দোষ করেন নি ৷ আমাকে সবসময় সাহায্য করেছেন ৷ সবসময় আমার পাশে ছিলেন ৷ তো আমি কীভাবে তাকে কষ্ট দিব? তাও আমার জন্য?”
অরূপ আমাকে ওনার দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,,
“তাহলে তুমি আমাকে মেরে ফেলো ৷ এই এক বছর তো আমাকে কষ্ট দিয়েছো তাতে কি তুমি ভালো ছিলে? প্রত্যেকটা মূহুর্ত আমি জ্যান্ত লাশ হয়ে বেঁচে ছিলাম ৷ বারবার মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা জেকে বসতো ৷ কিন্তু মনের মধ্যে একটা ছোট্ট আশা নিয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করতাম রোজ ৷ কিন্তু প্রতিদিনই নিরাশ হতে হতো আমাকে ৷ যখন তোমার খবর পেয়েছিলাম তখন কতটা খুশি হয়েছিলাম জানো? কিন্তু সেই খুশির থেকেও বেশি কষ্ট হয়েছে তখন যখন তোমার আর তুহিনের বিয়ের কথা শুনেছি আমি ৷ আচ্ছা আমার একটা ভুলের জন্য এতো বড় শাস্তি দিচ্ছো আমাকে? তাহলে নাও মেরে ফেলো আমাকে এক্ষুনি ৷ আমাকে নিজের হাতে মেরে যা ইচ্ছা করো তবুও আমার চোখের সামনে তুহিনকে বিয়ে করো না শ্রেয়া ৷ সহ্য করতে পারবো না আমি ৷ মরে যাবো আমি ৷”
বলতে বলতেই দুই হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পরলো অরূপ ৷
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,