বধূবরণ পর্ব-০৪

0
232

#বধূবরণ-৪র্থ পর্ব
#অবন্তিকা_তৃপ্তি

সাঈদের বাইক একটা ক্যাফের সামনে এসে থামে। গ্রাম থেকে বেশ দূরে ক্যাফেটা। সাঈদ বাইক থেকে নেমে চাবি খুব ভাব নিয়ে পকেটে রাখে। তারপর বসে থাকা হৈমীর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে,

-নেমে আয়।

হৈমী খুব দ্বিধায় পরে গেল। আশেপাশে মানুষ তেমন নেই। খুব নিরিবিলি ক্যাফে। হৈমী কাঁপতে থাকা হাত সাঈদের হাতে রাখল।সাঈদ খুব শক্ত করে সেই হাত নিজের হাতের তালু দিয়ে চেপে ধরে হৈমীকে বাইক থেকে নামালো। হৈমী নামলে সাঈদ হৈমীর বাম পাশ থেকে হৈমীর কাধটা আগলে ধরে সামনে এগুলো। হৈমী আলগোছে মাথা তুলে সাঈদের মুখের দিকে তাকালো। সাইদের মুখের ডান পাশটা দেখা যাচ্ছে। কী নিখুঁত সেই মুখের ধরন। হৈমীর বুক কেপে উঠল উত্তেজনায়। হৈমী আরও একটু চেপে দাঁড়াল সাঈদের পাশে। নাকে সাঈদের ব্র্যান্ডের পারফিউমের ঘ্রাণ আসছে। ভেসে যাচ্ছে হৈমী।

সাঈদ ক্যাফেতে প্রবেশ করলে, একটা ছোটো হালকা পাতলা গড়নের ছেলে দৌঁড়ে আসলো। এসেই সাঈদের সামনে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডশেক করার জন্যে হাত বাড়িয়ে দিলো। সাঈদ এক হাতে হৈমীকে আগলে রেখে অপর হাতে বেশ স্মার্টলি হ্যান্ডশেক করলো। ছেলেটা ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করে, হৈমীর পাশে চোখের ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো,

-ভাই, ভাবী নাকি?

সাঈদ হালকা হাসলো। বললো,

-হ্যাঁ।

-ভাবির বয়স তো একদম কম। ভাইকে সামলাতে পারেন তো ছোট ভাবি?

হৈমীকে কথাটা জিজ্ঞেস করেই হু হা করে হেসে উঠলো ছেলেটা। ছেলেটার সাথে সাঈদও হালকা হাসলো। হৈমী দুজনের হাসি দেখে তব্দা হয়ে চেয়ে রইল তাদের দিকে। সাঈদ এক ফাঁকে লুকিয়ে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো,

-আসলেই সামলানো যায় আমাকে, রাব্বির ছোট ভাবী? আমি তো তার ভাবির কাছে এলেই কেমন বেসামাল হয়ে পড়ি, জানে সে?

হৈমী অবাক চোখে তাকালো সাঈদের দিকে। পরপর মাথা নত করে ফেললো। রাব্বি তারপর তাদের একটা আলাদা নিরিবিলি জায়গা বেছে বসার জন্যে বললো। সাঈদ হৈমী মুখোমুখি বসলো। রাব্বি তাদের ম্যানু দেখতে বলে চলে গেল অপরদিকে। সাঈদ ম্যানু সোজা হৈমীর দিকে এগিয়ে বললো,

-কী খাবি অর্ডার দে।

হৈমী ম্যানু হাতে নিয়ে চোখ বুলালো। সাঈদের একটা কল এসেছে। সে কল রিসিভ করে কথা বলছে। হৈমী ম্যানু দেখে যারপরনাই অবাক, বিস্মিত। সামান্য কফির দাম ৫৬০ টাকা। কফিতে কী মেশায় এরা।এত এত কফির নাম সে এ জীবনেও শুনেনি। পাস্তা পাওয়া যায়, দাম ১৩৯০ টাকা। পাস্তা ঘরে বানায় হৈমী। কই ঘরে বানাতে সবে ২০০ টাকার মধ্যেই হয়ে যায়। এখানে ১৩৯০? হৈমী কী অর্ডার দিবে খুঁজে পেলো না। ম্যানু হাতে চুপচাপ বসে রইলো। সাঈদ কথা বলা শেষ করে ফোন বন্ধ করে টেবিলের উপর রাখলো। হৈমীর দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করলো,

-কী খাবি পছন্দ হয়েছে? কফি খাস? ক্যাপাচেনো চলবে? নাকি এক্সপ্রেসো? তারপর ভারি খাওয়া যাবে।

হৈমী এক নজর ক্যাপাচেনো আর এক্সপ্রেসোর দাম দেখে নিলো। ক্যাপচেনো-১১০০ টাকা! এক্সপ্রেসো-১২৩০ টাকা। দাম দেখে হৈমীর কফি খাওয়ার ইচ্ছে চলে গেল। সাঈদ একপর্যায়ে রেগে গেলো। বললো,

-ম্যানু খেতে তোকে দেওয়া হয়নি। সেটা থেকে অর্ডার করতে দেওয়া হয়েছে। এত কী দেখিস ম্যানুতে?

হৈমী ম্যানু শব্দ করে টেবিলে রাখলো। আশেপাশে চোখ রেখে ফিসফিস করে বললো,

-আমরা এখানে কেন এসেছি? দাম দেখেছেন সবকিছুর? আমার এক মাসের হাত খরচ থেকেও বেশি একটা সাধারণ কফি। আমরা অন্য রেস্টুরেন্টে যাই, চলুন।

সাঈদ এ কথা শুনে কিছুক্ষণ হৈমীর দিকে তাকিয়ে থাকলো। পরে চেয়ারে হেলান দিয়ে সোজা বসে সরাসরি হৈমীর দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো,

-তোকে এখানে কে নিয়ে এসেছে?
-আপনি।

হৈমী মিনমিন করে জবাব দেয়।সাঈদ আবার জিজ্ঞেস করে,

-এখানের বিল কে দিবে?
-আম-আপনি।
-টাকার চিন্তা করছেটা কে?
-আম-আমি।

সাঈদ এবার ঝুঁকে এলো হৈমীর দিকে। তারপর চোখে চোখ রেখে বললো,

-অর্ডার নাও, অ্যান্ড রাইট নাও।

হৈমী সঙ্গেসঙ্গে চোখ খিঁচে জবাব দেয়,

-পাস্তা আর কফি।

সাঈদ হৈমীর ভয় পাওয়া দেখে হাসলো হালকা। চোখ বন্ধ থাকায় হৈমী হাসি দেখলো না। সাঈদ আবার সোজা হয়ে বসল। তারপর ওয়েটার ডেকে অর্ডার দিয়ে দিলো। দেরি হবে খাবার আসতে। তারা বানিয়ে দিবে নতুন করে অর্ডার দেওয়ার পর। হৈমী আর সাঈদ চুপচাপ বসে আছে। হৈমী এদিক ওদিক তাকিয়ে ক্যাফের ডেকোরেশন দেখছে। সাইদ দেখছে হৈমীকে স্বয়ং। একপর্যায়ে সাঈদ উঠে হৈমীর পাশে বসে গেল। গায়ে ধাক্কা লেগে হৈমী পাশে তাকালো। সাইদকে নিজের এত কাছে দেখে ভড়কে গেলো ও। সাঈদ হাত বাড়িয়ে হৈমীর হিজাব ঠিক করে দিলো।হৈমী বললো,

-খুলে গেছে হিজাব? তাড়াহুরো করে বেঁধে এসেছিলাম।

সাঈদ মাথা নেড়ে ঠিক আছে বললো। তারপর এতক্ষণে কাঙ্ক্ষিত কথা তুললো,

-বিয়ে করে তো গায়ে হাওয়া লেগেছে। দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিস। আমি চলে গেলে খবরদার কারো সঙ্গে অ্যাই মিন ছেলেদের সঙ্গে কথা বলবি না।আমি ফিরে এসে যেন যেমনে রেখে যাচ্ছি, অমনি পাই। কী মনে থাকবে?

হৈমী মাথা নাড়লো। পরে বললো,

-সেই রাস্তা বিয়ের আগেই বন্ধ করে রেখেছেন, জানেন না?

-তাও তো রোজ লাভ লেটার কম পাস না। শোয়েব কে? আজকাল পেছনে ঘুরছে শুনলাম? খবরদার হৈমন্তী। নেক্সট ডে, সোজা গিয়ে একটা থা প্প ড় দিয়ে সরাসরি বলবি, অ্যাই অ্যাম ম্যারিড। কী, বলতে পারবি না?

শোয়েব এর কথাও সাঈদের কানে গেছে। ছেলেটা খুব সাবধানে হৈমীর সাথে কথা বলতে আসে। নিজেকে অনেক আড়াল করে। সেটাও জেনে গেছে। আর কতকিছু যে জানে কে জানে।হৈমী বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নেড়ে বললো,

-থা প্প ড় লাগবে না। আমি ভালো ভাবে বলে দিবো, হবে না?

সাঈদ হাসলো একটু। কী নিষ্পাপ তার হৈমন্তী!
___________________
সাঈদ চলে গেছে আজ প্রায় দেড় মাস। যাবার পর প্রথম কদিন কল দেওয়া হত তার। আপাতত তার ১৫ দিন ধরে মাস্টার্স এক্সাম চলছে। তাই কল করার সময় পাচ্ছে না বলে সে আগেই জানিয়েছে হৈমীকে। হৈমী শুনে, প্রতিবাদ করে না। সাঈদ আর যাই করুক, পড়াশোনায় সে বড্ড ভালো। এ ব্যাপারে সে এটুকু ফাঁকি দেয়না।এজন্যে আরও সে বাড়ির বড্ড আদরের।

এই ফাঁকে, কদিন আগে হৈমীকে এসে দাওয়াত দিয়ে গেছে চেয়ারম্যান বাড়ির ছোট মেয়ে, সাইদের ছোট বোন অন্যনা। চেয়ারম্যান বাড়িতে ঘরোয়া পরিবেশে একটা ফ্যামিলি গেট টুগেদার করা হবে। চেয়ারম্যান বংশের অনেকেই থাকবেন সেখানে। চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লাহ চাইছেন, হৈমীকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবেন এবার। বিয়ে আল্লাহর রহমতে হয়ে আছে, এখন চেয়ারম্যান বাড়ির বউকে সবার সামনে আনা উচিত। বিয়ে করবে না করবে না করে ছেলে তাদের সোজা তুলে এনে বিয়ে করে নিয়েছে।কাউকে তেমন জানানো যায়নি বিয়ের কথা। মূলত হৈমীর জন্যেই এই গেট টুগেদার আয়োজন।

হৈমীকে নিজে এসে দাওয়াত দিয়ে গেলো অনন্যা ও সাঈদের বড় ভাবী। সঙ্গে যাবে হৈমীর পুরো পরিবার। তবে অনন্যা বলছে, হৈমীকে দুপুরের আগেই নিয়ে যাবে নিজের সঙ্গে। শাহেদ মানা করবে করবে করেও শেষ অব্দি রাজি হয়েছেন। তিনি মূলত চাইছেন না, বিয়েটা এখনই প্রকাশ পাক। কিম্তু চেয়ারম্যান বাড়ির মানুষের তোপের মুখে পরে শেষ অব্দি গড়িমসি করে রাজি হয়ে গেছেন।

হৈমী সেদিন দুপুরের আগেই তৈরি হয়ে আছে। আজকে হৈমী শাড়ি পরেছে। আকাশি রঙের তাঁতের শাড়ি। শাড়িটা আজকের জন্যে হৈমীকে চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে উপহার দেওয়া হয়েছে। সেদিন কথার ফাঁকে, হৈমী শুনেছে অনন্যার থেকে। আজকে সাঈদ গ্রামে আসছে। আপাতত সে রাস্তায়। এই ফিরলো বলে। অনন্যা নয়, বরং সাঈদ নিজে হৈমীকে নিয়ে যাবে তাদের বাড়ি। এতদিন তৃষ্ণার্থ কাকের ন্যায় সাঈদকে দেখার আশায় হৈমী রীতিমতো মা রা যাচ্ছিলো। আজকে তার সঙ্গে অবশেষে দেখা হচ্ছে। খুশিতে হৈমী সময়ের আগেই তৈরি হয়ে বসে থাকলো।

একপর্যায়ে হৈমীর মোবাইলে কল এলো। অচেনা নম্বর। হৈমী কল ধরলো। ওপাশ থেকে সাইদের কণ্ঠস্বর কেউ একজন নকল করে বললো,

-হৈমন্তী, আমর-আমি বাড়ির বাইরে। দ্রুত আয়। তোর হাতে গুণেগুনে ঠিক ২ মিনিট সময়।

হৈমী কথাটা শুনে আর আগেপিছে দেখার সুযোগ পেলো না। খুশিতে হিতাহিত জ্ঞানবুদ্ধি হারিয়ে দ্রুত শাড়ি একটু তুলে বাবাকে বলে দৌঁড় লাগালো উঠোনের বাইরে। খুশিতে হৈমীর চোখ চিকচিক করছে।

উঠোনের বাইরে পা রাখতেই, শাড়ির আঁচলে টান খেলো। হৈমী আটকে গেলো। পেছনে তাকিয়ে দেখে মাছু গু ন্ডা তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হৈমীর দিকে এগিয়ে আসছে। হৈমী বোকা হয়ে তাকিয়ে রইল তাদের দিকে। তারপর অবস্থা বুঝে দৌঁড় দিতে আরম্ভ করতেই শাড়ির আঁচল হৈমীর গায়ের সঙ্গে শক্ত করে পেঁচিয়ে মুখে রুমাল চাপে মাছু। মিনিট খানেক ধস্তাধস্তির পরপরই হৈমী জ্ঞান হারায়। মাছু হৈমীকে কাঁধে তুলে গাড়িতে তুলে নেয়। হৈমীর শাড়ির আঁচলের একটা ছোট টুকরো ছিঁড়ে মাটিতে পরে থাকে। হৈমীকে নিয়ে ওরা চলে যায় লুকানো কোন জায়গায়। যেখানে সাঈদ তাদের কক্ষণও খুঁজে পাবে না।
_________________
সাঈদ হৈমীদের উঠোনের সামনে এসে বাইক থামায়। তারপর বাইকে বসেই কল দেয় হৈমীকে। ওপাশ থেকে কল ধরে না কেউই। সাঈদ এবার বিরক্ত হয় অনন্যাকে কল লাগায়। ওপাশে কল ধরলে সাঈদ ধমকে উঠে,

-তুই হৈমীকে বলিস নি আমি নিতে আসবো তাকে?

অনন্যা সঙ্গেসঙ্গে রিপ্লাই দেয়,

-আমি বলেছি ভাইয়া। হৈমী ভাবি তো এ কথা শুনে দুপুরের আগেই শাড়ি পরে রেডি ছিলো। আমাকে রেডি হয়ে নিজেই কল করেছে, ছবিও পাঠিয়েছে।

সাঈদ অবাক হলো। তারপর কল কেটে দিলো। ভাবলো বাড়ির ভেতরে যাবে। বাইক থেকে নামলে, একটু এগোতেই পায়ে বাজে শাড়ির আঁচলের টুকরো। সাঈদ কিছুটা অবাক হয়। কোমর ঝুঁকিয়ে আঁচল হাতে তুলে নেয়। শাড়িটা চিনতে তার একবিন্দুও অসুবিধা হলো না। এ শাড়ি সে হৈমীর জন্যেই ঢাকা থেকে নিজে কিনে পাঠিয়েছে। কিন্তু শাড়িরো আঁচল এভাবে ছিঁড়ে পরে আছে কেন মাটিতে? সাঈদ কিছুক্ষণ হাতে থাকা শাড়ির আঁচলের দিকে চেয়ে থাকলো। তারপর হঠাৎই মনে পড়লো কিছু একটা।সঙ্গেসঙ্গে চোখ দুটো বড়বড় হয়ে এলো সাঈদের। দৌঁড়ে হৈমীর বাড়ির দিকে ছুটে গেলো সে। শাহেদ তৈরি হচ্ছেন চেয়ারম্যান বাড়ি যাবার জন্যে। সাঈদ বাড়ির উঠোন পেরিয়ে সোজা শাহেদের রুমে ঢুকে গেল। শাহেদ সাঈদকে এ অবস্থায় দেখে কিছু প্রশ্ন করতে যাবেন, তার আগেই সাঈদ মাথার চুল খামছে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,

-হৈমী বাড়ি থেকে কখন বেরিয়েছে আঙ্কেল?

শাহেদ অবাক হলেন। সাইদের অবস্থা দেখে তার মোটেও সুবিধার লাগছে না। তিনি উত্তর দেন,

-ঘণ্টা খানেক আগে। তোমার বোন এসে নিয়ে গেছে।

সাঈদ জবাব দেয় এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে,

-হৈমী আমাদের বাড়ি যায়ই নি আঙ্কেল। কেউ ওকে তুলে নিয়ে গেছে। এই দেখুন ওর ছেড়া শাড়ির আঁচল। এটা উঠোনের বাইরে পরে ছিলো।

সাঈদ বড্ড হাপিত্যেশ করছে। বারবার আঙুল নিয়ে নাকের নিচের ঘাম মুছছে। অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে তার। হৈমীর আসন্ন বিপদের কথা চিন্তা করে রাগে মাথাটা ফে টে যাচ্ছে সাইদের। কে সে? কে হাতে পারে? হৈমী ঠিক আছে তো? যদি হৈমীর কিছু হয়, সাঈদ তাদের বংশের নাম ধাম কাম সবকিছু ধ্বংস করে দিবে, সাঈদকে চেনে না তারা। সাঈদ বিড়বিড় করে গালি দিলো, ‘জা নো য়া রে র বাচ্চাদের একবার হাতে পেলে টুকরো টুকরো করবো আমি সাঈদ!’

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে