ফারাহ পর্ব-০৮

0
1540

#ফারাহ
#পর্ব:৮
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

১৭,
সজীবকে অসময়ে কলেজে দেখে খানিকটা অবাক হয় ফারাহ। সজীব ধীর গতিতে ফারাহর দিকে এগিয়ে আসছে। ফারাহ শীতলের হাত খামচে ধরে ফিসফিস করে বলে,

“সজীব ভাই এখানে এই সময়ে কেনো আসলো রে শীত! আমার ভয় করছে তো। বিয়ে করবো না বলেছি বলে কি রাগ দেখাতে আসছে নাকি!”

“তুইও যেখানে দাড়িয়ে, আমিও সেখানেই দাড়িয়ে। তাহলে আমার কাছে পা”গলের মতো জানতে চাচ্ছিস কেনো? আমি জানি নাকি?”

শীতল হাতটা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে উত্তর দেয় ফারাহর কথার। ফারাহ চিন্তিত সুরে ফের বলে,

“যে মানুষ রে বইন! আস্তো তেলাপোকা। তেলাপোকাকে যেমন ভয় পাই, সহ্য হয়না। এনাকেও আমার তেমন লাগে। যখন তখন উড়ে এসে জুড়ে বসে তেলাপোকার মতো ভয় দেখায়। এর সাথে আমার সংসার কি করে হবে বল!”

শীতল প্রাণপ্রিয় বান্ধবীর উপর বিরক্ত হয়। ঝাঁজালো স্বরে বলে,

“দয়া করে চুপ কর বইন। আগে সজীব ভাই কি বলে সেটা তো শোন। না জেনেই একেবারে সজীব ভাইয়ের গুণাগুণের ১৪গুস্টি উদ্ধার করে দিচ্ছিস কেনো?”

শীতল ফারাহকে পাশ কাটিয়ে চলে যায় কথাটা বলে। সজীব ততোক্ষণে ফারাহর সামনে এসে পরেছে। ফারাহ সজীবকে দেখে মাথা নিচু করে ফেলে। সজীব গলা খাকাড়ি দিয়ে প্রশ্ন করে,

“ক্লাস নেই তোর?”

“না, আপাতত ব্রেক চলছে।”

ফারাহ বা হাতে কলেজ ইউনিফর্মের বা পাশটা চেপে ধরে মাথা নিচু করেই উত্তর দেয়। নিশ্চিত লোকটা বিয়ে করবেনা ফারাহ, সেটা শুনেই বকা দিতে আসছে। নয়তো কলেজ বয়ে কে আসে! ফারাহর আকাশ কুসুম চিন্তার মাঝেই সজীব ফারাহকে বলে,

“ক্লাস না থাকলে স্যারকে বলে একটু আমার সাথে বাসায় যাবি? তোকে মা নিয়ে যেতে বলেছে।”

“মামী! কিন্তু আমায় নিয়ে যেতে বললেন কেনো?”

“সেটা তো আমার মা আর উপর ওয়ালা জানে ফারাহ। আমায় বললে নিশ্চিত আমি তোকে নিতে আসতাম না। তাই তুই একটু অনুগ্রহ করে গেলে ভালো হতো। তুই তো জানিস আমার মায়ের কথা আমি ফেলতে পারি না। সেটারই ফায়দা তুলছে আমার মা।”

সজীব গম্ভীর স্বরে উত্তর দিলো। ফারাহ সজীব বকা দিবে না বুঝে স্বাভাবিক ভাবে সজীবকে বলে,

“তুমি গেইটের বাইরে অপেক্ষা করো সজীব ভাই। আমি আসছি স্যারকে বলে বই গুলো নিয়ে।”

“আচ্ছা।”

সজীব ছোট্ট উত্তর দিয়ে ঐ জায়গা থেকে প্রস্থান করলো। পরিচিত কাউকে পায়নি নয়তো তাকেই বলে ফারাহকে ডেকে পাঠাতো। নিজে কলেজে ঢুকতো না। সজীব আশপাশ টায় তাকালো। ফারাহর সাথে কথা বলতে দেখে মানুষ কি বাজে কিছু ভাবলো! আজকাল তো সমাজের মানুষের ভয়ে নিজের বোনের সাথেই রাস্তাঘাটে একা বের হওয়া যেখানে বি”পদের, কি সম্পর্ক না জানি কি বানিয়ে দেয়! সেখানে তো ফারাহ তার ফুফুর মেয়ে। চারপাশে মানুষের কথাকে বড্ড ভয় পায় সজীব। শতোহোক মানুষের কথার ধার অস্ত্রের ধারের থেকেও যে বেশি।

১৮,
কলেজ গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে সজীব। প্রায় ১০মিনিটের মাথায় ফারাহ কাধে ব্যাগ ঝুলিয়ে হিজাব আর মাস্কের মাঝখানে চোখের চশমাটা ঠিক করতে করতে গেটের দিকে হেটে আসছে সজীবের দিকে তাকিয়ে। সজীব একদৃষ্টিতে ফারাহকে দেখে দৃষ্টি নামিয়ে নেয়। ঐ চোখের দিকে তাকানো যায়না। চোখের মাঝেই তেজের বাহার। ফারাহ গেটের সামনে আসতেই সজীব প্রশ্ন ছুড়ে দেয় ফারাহর দিকে,

“এতো সময় লাগে বের হতে?”

“স্যারকে বলে, বই নিয়ে শীতলকে জানিয়ে আসলাম। একটু সময় লেগেছে। তাতে কি এমন হয়ছে সজীব ভাই?”

“এই তোকে বলিনি ভাই ডাকবি, তার সাথে নাম নিবি না। তাহলে ভাই ডাকার দরকারই কি?”

“তোমাকে আমার এভাবে ডাকতেই ভালো লাগে সজীব ভাই।”

ফারাহ খিলখিলিয়ে হেসে কথাটা বললো। সজীব ফারাহর হাসির শব্দে আর কিছু বললো না। অপেক্ষা করতে লাগলো অটোভ্যানের। কিন্তু আজও দুপুরের সময়। গাড়ির দেখা পাওয়া দুষ্কর। গাড়ি ছায়া অব্দি দেখা যাচ্ছে না। ফারাহ রাস্তার এ মাথা ও মাথা একবার দেখে নিয়ে সজীবের উদ্দেশ্যে বললো,

“আমরা আজকেও হেটে যাবো সজীব ভাই? আমার আজ হাঁটতে একটুও মন টানছে না।”

“দেরি হোক, তবু গাড়িতেই যাবো ফারাহ। আমিও হাটতে পারবোনা। পায়ে ব্যথা আমার।”

“কি হয়েছে আপনার পায়ে?”

ফারাহ সজীবের কথা শুনে ব্যতিব্যস্ত হয়ে প্রশ্নটা করে। সজীব ফারাহর এমন ব্যস্ততা দেখে নিরস মুখে বলে,

“তোর তো শ’ত্রু হই আমি। আমার ব্যথা নিয়ে তোর এতো চিন্তা কিসের?”

“আপনি আমার কোন জনমের শ”ত্রু সজীব ভাই?”

ফারাহ অবাক হয়ে প্রশ্ন করে। সজীব হালকা হেসে বলে,

“কেনো জানিস না তুই? ফুফু যখন আমার সাথে তোর বিয়ের কথা বলেছে। তুই তো উত্তর দিয়েছিস, আমার সাথে তোর মিলেনা এক সেকেন্ডও। সেখানে একসাথে সারাজীবন থাকা যায় কি করে? তাহলে হলাম না আমি তোর শ’ত্রু?”

সজীবের মুখে সরাসরি নিজেদের বিয়ের কথা শুনে লজ্জা পায় ফারাহ। কিন্তু প্রকাশ করেনা৷ সে নিজের তেজ ঠিক রেখেই বলে,

“ঝগড়া তো তোমার জন্য হয় সজীব ভাই।”

“আমার জন্য? আমি কি করি তোর? বাড়া ভাতে ছাই দিই?”

“তা দাও না। কিন্তু সোজা কথা সোজা ভাবো বলতে পারো না। এই যে জিগাসা করলাম। এখনও উত্তর দিলে না।”

“আমার পায়ে কি হয়েছে এটা তোর জানতে হবে না।”

“কেনো জানবোনা? আমারই জানতে হবে। বলো বলছি।”

ফারাহ একটু জোড় খাটিয়েই প্রশ্নটা করে৷ সজীব ভ্যাবাচেকা খায় ফারাহর এরকম জোড় খাটিয়ে প্রশ্ন করা দেখে। এই মেয়ে নিজের অজান্তেই যে তার প্রতি অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। সজীব তা ধরতে পারে। সে নিজেও তো নিজের অজান্তেই ফারাহর প্রতি নিজের অনুভূতিদের সাজিয়েছে। কিন্তু কখনও প্রকাশ করেনি। সে নিজেও জানেনা ফারাহকে সে ভালোবাসে কিনা! কিন্তু ফারাহ অন্য কারোর হলে সে মানতে পারবে না। এজন্যই তো সে সহজেই রাজী হয়ে গেছে। কিন্তু ফারাহ! সে রাজী হবে তো! সজীব আকাশ পাতাল চিন্তায় মত্ত হয়ে ফারাহর কথার উত্তর দিতেই ভুলে গেছে। তখনই অটোভ্যানের বেলের শব্দে সজীবের হুশ ফিরে। খেয়াল করে দেখে ফারাহ ভ্যান থামিয়েছে। এরপর নিজেই ভ্যানের বেল বাজিয়েছে। সজীব ফারাহর দিকে প্রশ্ন বোধক চাহনীতে তাকাতেই ফারাহ বলে,

“উঠবে কি ভ্যানে? নাকি দাড়িয়ে থাকবে এখানেই?”

ফারাহ প্রশ্নটা করতে করতে ততোক্ষণে ভ্যানে উঠে পড়েছে। সজীবও ফারাহও অপর পাশে উঠে বসে। ভ্যানওয়ালা সজীব উঠতেই ভ্যান ছেড়ে দেয়। ফারাহ ফের প্রশ্ন করে,

“তোমার পায়ে কি হয়েছে সজীব ভাই?”

“তেমন কিছু হয়নি রে। কাদামাটিতে শামুক ছিলো, পা কে”টেছে। আর পায়ের বুড়ো আঙুলের কোণায় মাটি ঢুকে গিয়েছিলো ধানের চারা লাগাতে গিয়ে। কাদার মাঝে কাজ, জানিসই তো।”

ফারাহ নিশ্চুপ হয়ে যায় সজীবের উত্তরে৷ মানুষ টা নিজের পরোয়া একটুও করেনা। সারাক্ষণ শুধু কাজ আর কাজ। কাজের জন্য নিজের খেয়াল টুকু রাখেনা। পায়ে কি রকম অসুবিধা বাধিয়ে বসে আছে। তবুও কাউকে জানিয়েছে কিনা সন্দেহ! জানালে তো মামী সজীব ভাইকে তাকে নিতে আসতে দিতো না। ফারাহর এসব আকাশ কুসুম ভাবনার মাঝেই সজীবের ফোনটা বেজে উঠে। ফারাহ সজীবের দিকে তাকায়। সজীব পকেট থেকে নিজের বাটন ফোনটা বের করে রিসিভ করে হ্যালো বলে। এরপর ওপাশ থেকে যা বলা হয় শুনে চুপচাপ কলটা কে”টে দেয়। কোনো উত্তর দেয়না৷ শুধু ভ্যানওয়ালাকে ভ্যান ঘুরিয়ে ফারাহদের বাড়ির দিকে নিতে বলে। ফারাহ তা দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করে,

“যাচ্ছিলাম তোমাদের বাড়ি। আমাদের বাড়ির দিকে ভ্যান ঘুরাতে বললে যে!”

“চুপ করে বসে থাক একটু। আমার ভালো লাগছে না ফারাহ। আগে বাড়ি পৌছায়, এরপরই কারণ জানতে পারবো। আমিও জানিনা কেনো যাচ্ছি। মা বললো, তাই এদিকে গাড়ি ঘোরাতে বললাম।”

সজীব রাস্তার দিকে দৃষ্টি মিলিয়ে ফারাহর প্রশ্নের উত্তর দেয়। ফারাহ ফের প্রশ্ন করে,

“মামী ফোন দিয়েছিলো?”

“হ্যাঁ।”

সজীবের উত্তরের পর ফারাহ আর প্রশ্ন করে না। সজীব রাগলে আবার সমস্যা। রাস্তাঘাটে ঝগড়া করার দরকার নেই। ফারাহও শূণ্যে দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে রয়। ২০মিনিটের মাথায় ভ্যান গিয়ে ফারাহদের বাড়ির সামনে থামে। সজীব ভাড়া বেশি দিয়ে ভ্যানওয়ালাকে বাড়ি অব্দি এনেছে। হাটতে আসলেই কষ্ট হচ্ছে তার। ভাড়া মিটাতেই সজীবের সাথে বাড়িতে প্রবেশ করে ফারাহ৷

১৯,
সজীবকে ফারাহর সাথে বাড়িতে দেখে অবাক হোন আছিয়া বেগম। আদরের বড়ো ভাইপোকে দেখে অবাকের সহীত নিজের আগ্রহ দমন করতে বলেন,

“আরে সজীব বাবা তুমি? এই সময় আমাদের বাড়ি, ফারাহর সাথে। কোনো সমস্যা হলো বাবা?”

“কোনো সমস্যা হয়নি ফুফু। মা আসতে বললো। আর মা-ও আসতেছে আপনাদের এখানে। তাই আসলাম ফারাহর সাথেই।”

“আচ্ছা বাবা বুঝলাম। কলপারে যাও, হাতমুখ ধুয়ে আসো আগে। অনেক ধুলাবালি রাস্তায়৷ হাতমুখের কি অবস্থা দেখো।”

সজীব ফুফুর কথামতোই সোজা কলপারে চলে যায়। ফারাহ ঘরে যায়। কলেজ ড্রেস পাল্টে বাড়িতে পরে থাকার সাধারণ থ্রিপিস পরে বের হয়। সজীব ততোক্ষণে হাতমুখ ধুয়ে এসেছে। সে আসতেই ফারাহ গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে আসে। আছিয়া বেগম ভাইপোর সাথে ভালোমন্দ কথাবার্তা বলছেন। ফারাহ তা দেখে চলে যায় ঘরে। চুল আচরে বাইরে এসে মা-কে বলে খেতে দিতে। তার ক্ষুধা পেয়েছে। আছিয়া বেগম মেয়েকে রান্নাঘরে ডেকে ভাত দিয়ে বলেন,

“সজীব আসলো! শুধো ভাত তো দেওয়া যায়না ফারাহ। কি করবো বলতো!”

“আপনার এতো মুরগী আছে জ”বাই করলেই হয় একটা।”

ফারাহ উত্তর দেয়। সজীব বারান্দায় চেয়ারে বসে আছে। ফারাহ খেতে আসার সময় ডাকলেও সে আসেনি। শুধো ভাত, ফারাহও জোড় করেনি। খাওয়া শেষ করে ফারাহ ছোট্ট রান্নাঘর থেকে বের হলে সজীব বলে,

“একটু পুকুরপাড়ে চলতো।”

বলেই সজীব হনহন করে চলে যায়। আছিয়া বেগম মুরগী ধরে পাশের বাড়ির প্রতিবেশীদের ছেলেদের দিয়ে জ’বাই করে নিতে গেছে। সজীব চলে যেতেই ফারাহ সজীবের পিছনে পিছনে পুকুর পারে চলে যায়।

ফারাহদের বাড়ির পাশের পুকুরপারে বসে আছে ফারাহ আর সজীব। ফারাহ এবং সজীব শান বাঁধানো ঘাটে বসে আছে। ফারাহ যেতেই সজীব শুধু একবার ঘাড় ঘুরিয়ে বসতে বলে এরপর নিশ্চুপে পুকুরের পানিতে এক নাগারে তাকিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে পরেছে। ফারাহ বেশ খানিকক্ষণ সময় যাবার পর বিরক্ত হলো। সে ঝাঁঝালো স্বরে শুধালো,

“সজীব ভাই! এভাবে চুপচাপ বসে থাকতেই কি আমায় ডেকেছেো তুমি?”

“তুই বড্ড চটপটে ফারাহ। এতোটা চঞ্চল হওয়া ঠিক নয়।”

সজীব ফারাহর দিকে তাকিয়ে গভীর দৃষ্টি ফেলে কথাটা বলে। ফারাহ সজীবের এমন গম্ভীর দৃষ্টি দেখে অসস্তিতে গাট হয়ে বসে। সে দৃষ্টি নামিয়ে নেয়। কণ্ঠে নমনীয়তা সঞ্চালিত করে বলে,

” আমি আমার প্রিয় মানুষগুলোর সামনেই চঞ্চল সজীব ভাই। বাইরের মানুষের সামনে তো চঞ্চলতা প্রকাশ করিনা।”

“আমিও কি তবে তোর প্রিয় মানুষ ফারাহ?”

সজীব ফারাহর দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। ফারাহ নিজের বলা কথা সজীবের প্রশ্নেই খেয়াল করে চমকে উঠে। মনের অজান্তেই সজীবকে সে প্রিয় মানুষের কাতারে ফেলে কথাটা বলে ফেলেছে। সজীবের সাথে তো তার ঝগড়া ব্যতিত ভালো করে দু’টো কথা, আদৌও হয়েছে বোধ-বুদ্ধি হওয়ার পর! না হয়নি। ফারাহর অতীত বিচরণে উত্তর এটাই আসলো।
ফারাহ উত্তর দিচ্ছে না দেখে সজীব ফের প্রশ্ন করে,

“উত্তর দিচ্ছিস না যে!”

“উত্তর খুজে পাইনা সজীব ভাই।”

“আচ্ছা না পেলি। মাথায় জোড় দিস না।”

“মামী আমাদের আসতে বলে এখনও তো আসলো না সজীব ভাই। কি বলবে চিন্তা হচ্ছে আমার।”

“চিন্তার কিছু নেই। তোর মতামত না থাকলে এই বিয়েটা হবেনা। এটা আমার ওয়াদা।”

সজীবের কথা শোনে ফারাহর অন্তরে ধ্বক করে উঠে পুরো বিষয়টা ঘিরে। সে তো এই বিয়ের কথা ভেবে কিছু বলেনি। তবে সজীব এভাবে বললো কেনো! ফারাহর বোধগম্য হলো না বিয়ষটা।

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে