প্রেম পর্ব-১৭

0
1389

#প্রেম
#পর্বঃ১৭
#Tanisha Sultana

“মিষ্টি
জীমের ডাকে মিষ্টি একটু থামে। মিষ্টির বাবা এগিয়ে গিয়ে বলে

” তোমার সাহস তো কম না আবার আমার মেয়ে কে বিরক্ত করছো

“আংকেল আমি মিষ্টির সাথে কথা বলতে চাই

” মিষ্টি তোমার সাথে কথা বলবে না

“কেনো বলবে না? ওকে কথা বলতেই হবে

” জীম আমাদের একটু শান্তিতে থাকতে দাও প্লিজ। আমার মেয়েকে রেহায় দাও

“আমি খুব কষ্টে রাগটা কন্ট্রোল করে আছি। দয়া করে রাগটা বারাবেন না

মিষ্টির বাবা কিছু বলতে যায়। মিষ্টি থামিয়ে দেয়।
জীম কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে

” কি বলবেন বলেন

“এভাবে বলছো কেনো? আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। এই তিনদিন কতো কষ্ট হয়েছে যানো। প্লিজ তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না

” জীম জানেন আপনি কাল আমি আপনার সাথে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গুছিয়েছিলাম। আপনাকে ফোন দিতে যাবো তখন আপনি

মিষ্টি আর কিছু বলতে পারলো না গলা ধরে আসছে। চোখ দিয়ে পানি পরছে। জীমের চোখেও পানি। মিষ্টির বাবা মা দাদা দাদি দাঁড়িয়ে শুনছে

“কেনো করলেন জীম এমনটা? কেনো আপনি এতো খারাপ? কেনো আমি আপনাকে একটুও বদলাতে পারলাম?

” মিষ্টি আমি

“আপনি ভুল করেন নাই মার্ডার করার চেষ্টা করেছেন। আই হেট ইউ
ঝাঁঝালো গলায় বলে মিষ্টি।

” আমার জীবনের বড় ভুল আপনি। ভুল করেছি আমি।
মিষ্টি একটু থেমে চোখ মুছে বলে

“বদলে যান না জীম।

” আমি বদলালে তুমি থাকবে আমার সাথে? ধরবে আমার হাত

“নাহহহ। তবে বড় গলায় বাবাকে বলতে পারবো আমি ভুল মানুষকে ভালোবাসি নি। এমন কিছু করেন যাতে আমার বাবা আফসোস করে কেনো আমাকে আপনার হাতে তুলে দিলো না। নেক্সট টাইম আপনার লাইফে যে আসবে তার অবস্থা যেনো আমার মতো নাহয়। সমাজের সবাই যাতে বলে রাইয়ান রহমান জীম একজন খুব ভালো মানুষ।
মিষ্টি একটু চুপ থেকে বলে

” আর একটা কথা (দুই হাত জোর করে বলে) আপনার এই মুখটা যেনো আমাকে আর না দেখতে হয়।

মিষ্টি দৌড়ে চলে যায়। খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। মিষ্টির বাবা মাও চলে যায়। জীম একা দাঁড়িয়ে থাকে।

চারপাশের লোকজনরা মিষ্টিকে নিয়ে বাজে কথা বলছে। মিষ্টির জন্য একটা ছেলে মিষ্টির বাবাকে খুন করতে গেছিলো এসব কথা বলাবলি করছে। মিষ্টির মাকে তো কয়েকটা মহিলা বলেছে এরকম মেয়ে তাদের হলে তারা মেরে ফেলতো।

এতো এতো অপমান মিষ্টির সয্য হচ্ছে না। মিষ্টির বাবা বলে দিয়েছে কাল সকালে এখান থেকে ওরা চলে যাবে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে জীমের রুমের দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি

“মন তো চাইছে সব ভুলে আপনার কাছে ছুটে চলে যায়। কিন্তু বিবেক বাধা দিচ্ছে। আমি আস্তে আস্তে বাবাকে মানিয়ে নিতে পারতাম তাহলে আপনি কেনো এমন করলেন? এখন আমাকে নিয়ে লোকে বাজে কথা বলছে। #প্রেম আমার হাসিখুশি জীবনটাকে নরক বানিয়ে দিয়েছে।

অনমনে মিষ্টি কথা গুলো বলছে

” কাল চলে যাবো। আর কখনো হয়ত আমাদের দেখা হবে না। আপনি হয়ত আমাকে ভুলে যাবেন কিন্তু আমি তো আপনাকে ভুলতে পারবো না। আমার বেঁচে থাকাটাই কষ্ট হয়ে যাবে

মিষ্টির চোখের পানিতে জামা ভিজে গেছে। জীমের রুমে তাকিয়ে দেখে জীম একটা মেয়ের সাথে হাসাহাসি করছে। মেয়েটা জীমের গলা জরিয়ে ধরে আছে। এই দৃশ্যটা মিষ্টির সয্য হলো না। তাই রুমে এসে গোছগাছ শুরু করে দেয়।

সব জিনিস পএ গাড়িতে ওঠানো হয়ে গেছে। মিষ্টির মনটা চাইছে শেষ বারের মতো জীমকে একবার দেখতে কিন্তু জীমে কোথাও দেখছে না। মিষ্টির বাবা মা তাজ দাদা দাদি সবাই গাড়িতে বসেছে। মিষ্টি বাড়িটা দেখছে। দুরে দেখতে পায় জীম আর ওই মেয়েটা বাইকে কোথাও যাচ্ছে। জীমকে খুব খুশি খুশি লাগছে। মিষ্টি জীমের হাসি মুখটা দেখে গাড়িতে বসে।

জীম ওর বেস্টফ্রেন্ডের সাথে একটা গানের অডিশনে গেছে। জীম সেখানে গান গায়। ওর গান সবাই খুব পছন্দ করে। জীম বিশ হাজার টাকা পায়।

“আজ বাড়ি ফিরে মিষ্টির বাড়িতে যাবো। মিষ্টি খুব খুশি হবে আংকেলও আমাকে মেনে নেবে

জীম মার্কেট থেকে মায়ের জন্য আর মিষ্টির জন্য শাড়ি কিনে। ভাই আর বাবার জন্যও কেনে। ফাস্ট রোজগারের টাকা জীমের।

বাইক রেখে হাসতে হাসতে বাড়িতে ঢোকে জীম

” মা ও মা

জীমের মা রান্না করছিলো জীমের ডাকে বেরিয়ে আসে। জীমের বাবা বাড়িতেই ছিলো তাি সেও আসে। জিসান বসে বসে চিপস খাচ্ছে

“কি হয়েছে

” দেখোতো শাড়িটা কেমন

জীম শাড়িটা মায়ের গায়ে পেচিয়ে দেয়

“খুব সুন্দর কিন্তু

” আমি গান গেয়ে টাকা পেয়েছি সেই টাকায় কিনেছে।

জীমের মা তো খুব খুশি। জীম বাবার সামনে গিয়ে ব্যাকটা এগিয়ে দিয়ে বলে

“এটা তোমার জন্য কিনেছি

জীমের বাবা প্যাকেটটা নিয়ে জীমকে জড়িয়ে ধরে।
জিসানকেও দেয়
সবাই খুব খুশি।

” ওইটা কি

“মিষ্টির জন্য শাড়ি কিনেছি। আমি মিষ্টিকে দিয়ে আসছি

জীম যেতে নিলে জীমের বাবা ডাকে

” জীম

“হুম বাবা

” মিষ্টিরা চলে গেছে

“মানে

” চলে গেছে

জীমের হাত থেকে পেকেটটা পরে যায়। জীম বসে পরে। জীমের বাবা মা এগিয়ে যায়

“বাবা মিষ্টি কেনো চলে গেলো? আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না। আমার মিষ্টিকে এনে দাও বাবা

জীম কান্না করছে। জীমকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা ওর বাবা মায়ের নেই। হঠাৎ জীম উঠে দাড়ায়। নিজের রুমের বেলকনিতে গিয়ে দেখে মিষ্টির রুমটা অন্ধকার। জীম মিষ্টির রুমের দিকে তাকিয়ে থাকে।

নতুন বাড়ির ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি

” মিষ্টি

পেছনে তাকিয়ে দেখে কৃশ

“মন খারাপ

” নাহহ

“তাহলে

” কিছু বলতে চাই

“তুমি জীমের সাথে রিলেশন করতে এটাই বলবে তো

” হুম

“আর কিছু না

” নাহহ

“আমার কোনো সমস্যা নেই। জীম তোমার পাস্ট। তোমার পাস্ট নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। এখন আমি আছি ফিউচারেও আমি থাকবো।

” আমি জীমকে বি

“মিষ্টি প্লিজ নতুন কিছু শুনাও। জীমের পৃষ্ঠা উল্টে ফেলো। মুছে ফেলো মন থেকে। আচ্ছা চলো তোমার এক জায়গায় নিয়ে যায়

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে