পুতুল ছেলেটি পর্ব-০৬

0
969

#পুতুল_ছেলেটি
#Part_06
#Writer_NOVA

রাতের আঁধারে ছেয়ে গেছে পুরো পৃথিবী।ঘন কালো অন্ধকারে সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। চাঁদের আলো থাকলেও এতটা কষ্ট হতো না পথ চলতে।খুব সাবধানে পা ফেলে চলছে আকিব ও নীলাভ।হাতে মোবাইলের ফ্লাশ লাইট জ্বালানো।পা টিপে টিপে সামনে এগুচ্ছে তারা।একসময় এক বিশাল পুরনো ফ্যাক্টেরীর সামনে এসে দাঁড়ালো। ভেতর থেকে খুটখাট শব্দ, হালকা আলো এসে জানান দিচ্ছে, ভেতরে কাজ চলছে।

আকিবঃ ভেতরে ঢুকবো কি করে? ধরা পরলে আমরা আস্ত থাকবো না নীলাভ।চল, বাসায় যাই।এখানে থেকে লাভ নেই। আমার জীবনটা অনেক দামী।

নীলাভঃ চুপ কর ব্যাটা।এত জোরে কথা বলিস কেন?ক্যামেরাটা সাথে এনেছিস তো?এটা যদি না আনিস তাহলে তোর একদিন কি আমার যতদিন লাগে।

আকিবঃ হ্যাঁ,এনেছি।নীলাভ চল, বাসায় চলে যাই।আমার ভয় করছে।নিশ্চয়ই ভেতরে ভুত আছে।

নীলাভঃ কানের নীচে মারবো একটা।উল্টাপাল্টা কথা বলা বন্ধ কর।কোন ভূত-প্রেত এখানে লাইট জ্বালিয়ে কাজ করবে না। আমরা কি এখানে সারাজীবন থাকতে এসেছি নাকি।কাজ শেষ হলেই চলে যাবো।এই ফ্যাক্টেরীর রহস্য আমি আজ বের করবোই।

আকিবঃ যদি বেঁচে না ফিরতে পারি?? আমি এখনো বিয়ে করিনি।আমার হবু বউ-বাচ্চার কি হবে🥺?

নীলাভঃ 🤬🤬

আকিবঃ আচ্ছা, সরি আর কিছু বলবো না।এখন গেইটের ওপারে যাবো কি করে? যদি গেইটের দারোয়ান চলে আসে।তাহলে কিভাবে যাবো?

নীলাভঃ দেয়াল টপকে।এছাড়া কোন উপায় দেখছি না।কেউ বোধহয় আসছে।জলদী লুকিয়ে পরতে হবে।

একটা লোককে আসতে দেখে দুজনেই দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে রইলো।সে ছিলো গেইটের দারোয়ান। এসেই দারোয়ান গেইটের সামনে টুল নিয়ে বসে রইলো।এবার আকিব,নীলাভ বিপদে পরে গেল।নীলাভ একটা খাইয়া ফালামু লুক নিয়ে তাকালো।

আকিবঃ আমার কোন দোষ নেই। আমি এমনি বলি।কিন্তু আল্লাহ তা সত্যি করে দেয়।আমিতো উদাহরণ স্বরূপ বলেছিলাম যদি গেইটের দারোয়ান চলে আসে। কিন্তু সত্যি সত্যি চলে এলো।

নীলাভঃ তোর ঐ মুখটা বন্ধ রাখ।যা বলিস তাই সত্যি হয়ে যায়।সেদিনও তোর কথা সত্যি হয়ে গেছে। ঐ মেয়েটার সাথে দেখা হয়ে গেছে। ওদের বাসায় পিৎজা ডেলিভারি দিতে গিয়েছিলাম।তারপর কি বিপদে পড়েছিলাম।তা এখনো ভুলি নি।

আকিবঃ তুই ঐ মেয়েটার বাসায় পিৎজা ডেলিভারি দিতে গিয়েছিলি😮😮????

নীলাভঃ মুখ বন্ধ কর।মশা ঢুকে যাবে।সেই ঘটনা পরে বলবো।এখন দেয়াল টপকে ঐ ধারে যেতে হবে।

নীলাভ কথা না বাড়িয়ে সাবধানে দেয়াল টপকে ফ্যাক্টরেরীর সামনে চলে এলো।কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো আকিবকে নিয়ে। দেয়াল থেকে নামতে গিয়ে পায়ে হালকা ব্যাথা পেলো।ধপ করে শব্দ হতেই দারোয়ান নড়েচড়ে উঠলো। আর জোরে জোরে জিজ্ঞেস করলো।

—- কে কে কেডায় ঐখানে?কথা কও না কে?

দারোয়ান উঠে সেদিকে আসতেই আকিব ও নীলাভ আড়ালে লুকিয়ে পরলো।নীলাভ আবারো রাগী চোখে আকিবের দিকে তাকালো। তা দেখে আকিব ইনোসেন্ট ফেস করো ফিসফিস করে বললো।

আকিবঃ আমার কোন দোষ নেই। পা বেজে গিয়েছিল। যার কারণে ধপ করে শব্দ হয়েছে। আর আমি পায়ে ব্যাথা পেয়েছি। কিন্তু তুই —–

আকিব পুরো কথা শেষ হওয়ার আগে নীলাভ ওর মুখ চেপে ধরলো।দারোয়ান ওদের সামনে দিয়ে ঘুরে চলে গেল। দারোয়ানটা সম্ভবত চোখে কম দেখে। তাই আকিব বা নীলাভ কাউকে দেখলো না।ওরা যেভাবে লুকিয়ে ছিলো, ভালো করে খেয়াল করলে পেয়ে যেত।দারোয়ান চলে যেতেই নীলাভ স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
খুব সাবধানে ফ্যাক্টরীর ভেতরে ঢুকে পরলো।

💗💗💗

সূর্যি মামা পূর্ব দিগন্তে উঁকি মারছে।কিছু সময়ের মধ্যে সারা ধরণী আলোকিত হয়ে উঠবে।আজ ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমায়নি সাহিয়া।চায়ের কাপ নিয়ে ছাদে চলে এসেছে। আজ সূর্য উদয় দেখবে।সাথে এক কাপ চা হলে মুহুর্তটা আরো আকর্ষণীয় লাগবে।সাজিয়া ঘুমাচ্ছে। অনেক রাত পর্যন্ত তুরাগের সাথে কথা বলেছে।যার কারণে নামাজ পড়ে ঘুম দিয়েছে।রেলিঙের সামনে দাঁড়িয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিলো।

—- কেমন আছো হিয়া?

একটা ছেলে কণ্ঠ পেয়ে পেছনের দিকে তাকালো সাহিয়া। পাশের দালানের ছাদে মারুফ ভাইকে দেখে মুচকি হাসলো। নিশ্চয়ই এক্সারসাইজ করতে এসেছে। মারুফ আবার সকাল হলে ছাদে এসে জিম করে।সে স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক সচেতন। ছাদের একপাশে জিম করার নানা জিনিসপত্র। সাহিয়াদের পাশের দালানের বাড়িওয়ালার ছেলে মারুফ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে এখন সেখানকার এক বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরীতে জয়েন করেছে।

সাহিয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো মারুফ ভাই।আপনি কেমন আছেন?বাসার সবাই ভালো আছে?

মারুফঃ আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।সাথে সবাই ভালো আছে। অনেকদিন পর তোমাকে দেখলাম।বাসা থেকে কি বের হও না??

সাহিয়াঃ বাসা আর কলেজ। এছাড়া কোথাও যাওয়া হয় না। তাছাড়া আপনি তো বাসায় থাকেন না।কবে আসলেন রাজশাহী থেকে?

মারুফঃ গত পরশু রাতে আসছি।তুমি অবশ্য ঠিক কথাটাই বলেছো।আমিই তো বাসায় থাকি না।তোমার সাথে দেখা হবে কি করে? বাসায় সবাই ভালো আছে তো?আসলে অনেক দিন হলো চাচা-চাচীর সাথে দেখা হয় না।তাই জিজ্ঞেস করলাম।

সাহিয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো আছে।

মারুফের মনে অনেকক্ষণ ধরে প্রশ্নটা ঘুর ঘুর করছে।শেষে টিকতে না পেরে, আমতা আমতা করে সাহিয়াকে জিজ্ঞেস করেই ফেললো।

মারুফঃ সাজিয়া কেমন আছে হিয়া?

সাহিয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো মারুফ ভাই।আপুর তো বিয়ে কিছুদিন পর।বিয়েতে কিন্তু অবশ্যই আসবেন মারুফ ভাই।

মারুফঃ হ্যাঁ, মা বললো ওর বিয়ের কথা।ও ভালো আছে তাতেই ভালো।ওর পছন্দের মানুষের সাথে বিয়ে হচ্ছে। এটা শুনে ভীষণ খুশি হয়েছি।কয়জন বা নিজের মনের মানুষকে নিজের করে পায়।সত্যি ঐ ছেলেটা অনেক ভাগ্যবান।তাই তো সাজিয়াকে নিজের করে পাচ্ছে।

কথাগুলো বলতে বলতে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো মারুফ। তার এক তরফা ভালোবাসার মানুষটার কয়েকদিন পর বিয়ে।সে চাইলেও কিছু করতে পারবে না। মারুফ অনেক আগের থেকে সাজিয়াকে পছন্দ করে।একবার সাহস করে সাজিয়াকে প্রপোজও করেছিলো।কিন্তু ততদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে। কারণ সাজিয়া তুরাগের সাথে রিলেশনশিপে জড়িয়ে গেছে। তাই নিজ থেকে সরে এসেছে সাজিয়ার জীবন থেকে। নিজের ভালোবাসাকে গলা টিপে হত্যা করেছে। তারপরেও বাসায় এলে সাজিয়ার খবর নেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে যায়।একনজর সাজিয়াকে দেখার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা ছাদে দাঁড়িয়ে থাকে।যদি একপলক দেখতে পায়।বেহায়া মনটা যে মানে না।সেই মানুষটা কিছু দিন পর অন্যের হয়ে যাবে।তারপরেও তাকে দেখতে ইচ্ছে হয়।

সাহিয়াঃ কি ভাবছেন মারুফ ভাই?

মারুফঃ কিছু না হিয়া।আচ্ছা, তুমি থাকো।আমার আজ কিছু ভালো লাগছে না। তাই বাসায় চলে যাই।সময় পেলে আমাদের বাসায় এসো।মা তোমার কথা অনেক বলে।

সাহিয়াঃ চাচীকে আমার সালাম দিবেন।সময় পেলে একদিন বিকেলে চাচীর সাথে দেখা করে আসবো।

মারুফ কোন কথা না বলে নিচে চলে গেল।সাহিয়া আবার আকাশ দেখতে ব্যস্ত হয়ে পরলো।লাল কুসুমের মতো সূর্যটাকে দেখা যাচ্ছে। পাখিরা তাদের খাবার খুঁজতে বাসা থেকে বের হচ্ছে। কিছু সময়ের মধ্যে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পরবে।হাতের কাপটা নিচে রেখে সূর্যদোয় দেখতে মন দিলো সে।

💗💗💗

আজও না খেয়ে বের হতে হয়েছে। তাই রাস্তার পাশের এক দোকানে এসে বসলো নীলাভ।দোকানের কাজ করা ১২ বছরের বাচ্চাটাকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলো।

নীলাভঃ মামা,আজ খাবারের আইটেম কি কি আছে?

বাচ্চা ছেলেটির নাম সবুজ।সে সামনে এসে দাঁড়ালো। এক গাল হাসি দিয়ে বললো।

সবুজঃ কি খাইবেন মামা?

নীলাভঃ কি কি আছে?

সবুজঃ ভাত, ডাইল,মাংস,মাছ,রুটি,পরোটা,ভাজি।কোনডা লাগবে বলেন?

নীলাভঃ আমার জন্য তিনটা পরোটা আর ভাজি নিয়ে এসো।বেশি কিছু লাগবে না।

ছেলেটা অর্ডার পেয়ে দৌড় লাগালো।নীলাভ শিস বাজাতে বাজাতে এদিক সেদিক চোখ বুলালো।এক হাত দিয়ে টেবিলে তবলা বাজানোর মতো করে শব্দ করছে।আরেক হাতে থাকা কলম দিয়ে টেবিলে বারি মারছে।প্রায় দিনই এই দোকানে খেতে আসে।তখনি ওর কান গেল পূর্ব দিকে থাকা টিভির নিউজে। কলমটা মুখের ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে এক ধ্যানে মনোযোগ দিলো নিউজে।

“আজ সকালে মেয়র আমিনুল ইসলামের ফ্যাক্টরী থেকে প্রায় হাজারের ওপর মদের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে অনেক আগের থেকে এই মদের ব্যবসা থেকে জড়িত আছেন উনি। বিভিন্ন দেশ থেকে নিম্বমানের মদ আমদানি করে সেগুলোকে নতুন করে মোড়কীকরণ করে বাজারে ছাড়েন তিনি।সেগুলো বিক্রিও হয় চড়া দামে।যুব সমাজ ধ্বংস করার হাতিয়ার যদি শহরের মেয়রের হাতে থাকে তাহলে অন্যরা কি করবে?এমনটাই বলছে জনগণ।প্রতিদিন রাতে খুটখাট শব্দ পেতো স্থানীয়রা।কিন্তু পরিত্যক্ত ও পুরনো ফ্যাক্টেরী হওয়ায় কেউ সেখানে যেতে সাহস করতো না।ফ্যাক্টরীটাকে সিল গালা করে দিয়েছে কতৃপক্ষ। গতকাল রাতে আননোন নাম্বার থেকে কল করে এক অজ্ঞাত শুভাকাঙ্ক্ষী পুলিশকে খবর জানায়।প্রথমে বিষয়টা আমলে না নিলেও কিছু সময় পর একটা ভিডিও পাঠায় সে অজ্ঞাত ব্যাক্তি।সেটা দেখে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৭ জনকে আটক করে ও মদের বোতলগুলো জব্দ করে।আটকৃতরা জানিয়েছে মেয়রের আদেশ তারা কাজ করে।তাছাড়া আরেকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাদের টিভি চ্যানেলেও সেই ভিডিওটা পাঠিয়েছে। এখন প্রাথমিক সূত্রে ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশকে ইনফর্ম করা ব্যক্তি, ভিডিও পাঠানো ব্যক্তি ও আমাদের কাছে যে ভিডিও পাঠিয়েছে সে একজনই হবে।তবে তার খোঁজ কেউ পাইনি।তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ করে দিয়েছে।আমরা এখন সরাসরি চলে যাবো সেই ভিডিওটি তে।চলুন আমরা দেখে আসি।সমাজসেবার নামে কি করেছেন মেয়র?

নীলাভ এতটুকু শুনেই সামনের প্লেটে থাকা পরোটা ছিঁড়ে ভাজি নিয়ে মুখে পুরলো।মুখে তার রহস্যময়ী এক বাঁকা হাসি।নিউজের মাঝখানে এসে সবুজ পরোটা ও ভাজি দিয়ে গেছে। এক কোণার টেবিলে উল্টো হয়ে বসায় তাকে কেউ খেয়াল করছে না।সবুজ আবারো এসে জিজ্ঞেস করলো।

সবুজঃ মামা,আর কিছু লাগবো।কিছু লাগলে কইতে পারেন।আপনি হইলেন আমগো দোকানের নিয়মিত কাস্টমার।

নীলাভঃ আর কিছু লাগবে না। তুমি আমাকে এক গ্লাস পানি দিয়ে যেয়ো।

সবুজঃ আইচ্ছা। একটা কথা কমু মামা।
(মুখটা কুচোমুচো করে)

নীলাভঃ হ্যাঁ বলো।

সবুজঃ আপনি না দেখতে একেবারে পুতুলের মতো।আপনে তো বড় কোন নায়ক হইতে পারতেন।তাইলে এই সামান্য কাম করেন কে?

নীলাভ মুখে হাসি ঝুলিয়ে গ্লাসে থাকা পুরো পানি ঢকঢক করে শেষ করলো।ছেলেটি এখন চাতক পাখির মতো নীলাভের দিকে উত্তরের আশায় তাকিয়ে আছে। নীলাভ ওর দিকে তাকিয়ে বললো।

নীলাভঃ জীবনটা অনেক কঠিন।আমি হয়তো চেষ্টা করলে সত্যি নায়ক হতে পারতাম।কিন্তু আমি চেষ্টা করিনি।আর করতেও চাই না।সমাজের উঁচু স্তরের মানুষের সাথে মিশতে আমার ভালো লাগে না। মানুষ যত উপরে উঠে তত তার মধ্যে দাম্ভিকতা বেড়ে যায়।অনেক স্বার্থপর হয়ে উঠে।কিন্তু সমাজের নিচুস্তরের মানুষগুলো হয় সহজ,সরল।কোন প্যাঁচগোছে নেই। তাদের সাথে থাকলে কখনো মনে স্বার্থপরতা জাগায় না।বরং তাদের সাধারণ জীবন-যাপন আমাকে আকৃষ্ট করে।তাই আমি নিচুস্তরে থাকতে চাই। সাধারণ মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই।তাছাড়া নায়কের প্রফেশনটা আমার পছন্দ নয়।তুমি আরেকটা কথা বলেছিলে।তা হলো আমি কেন সামান্য কাজ করি?সবসময় মনে রেখো,কোন কাজ ছোট নয়।সব কাজকে শ্রদ্ধা করা উচিত।কাজ তো কাজই হয়।সেটা সামান্য,দামী, ছোট,বড় কি করে হয়? আমরা নিজেরাই কাজকে এতগুলো ভাগে বিভক্ত করেছি।মুচি যদি আমাদের জুতো পলিশ না করে দিতো। তাহলে কিন্তু সে জুতো আমাদেরি পলিশ করতে হতো।এছাড়া অনেক উদাহরণ আছে।সেগুলো দিতে গেলে সারাদিন কেটে যাবে কিন্তু উদাহরণ শেষ হবে না। আচ্ছা, অনেক কথা বললাম।আজ উঠি।

সবুজঃ মামা,পানি খাইবেন না।

নীলাভঃ লাগবে না।তোমার নাম কি?এতদিন ধরে আসি অথচ তোমার নামটা জানি না। কেমন কথা দেখেছো?

সবুজঃ আমার নাম সবুজ।মায়ের সবুজ রং অনেক পছন্দ। হের লিগা আমার নাম রাখছে সবুজ।

নীলাভঃ মাশাল্লাহ, খুব সুন্দর নাম।এই নাও টাকা।আজ আসি।নয়তো দেরী হয়ে যাবে।

সবুজঃ মাত্র ৪০ টাকা হইছে।আপনি ১০০ টাকা দিলেন কেন?দাঁড়ান আমি ভাংতি টাকা নিয়ে আসতেছি।

নীলাভঃ দরকার নেই। বাকিটা তোমার বখশিশ।

কথাটা বলে এক মিনিটও দাঁড়ালো না নীলাভ।দোকান থেকে বের হয়ে গেলো।১০০ টাকার নোটটা নিয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে নীলাভের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো সবুজ।মানুষটাকে অনেক অদ্ভুত লাগে ওর কাছে।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে