#নূপুর_বাঁধা_যেখানে-৭
#মিফতা_তিমু
এসাইন্মেন্ট পেপারগুলো রেখে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো ফাহমান। চেয়ারে বসে থেকে থেকে তার শরীরে যেন জং ধরে যাচ্ছে। এই ডাক্তারির সুবাদে সারাদিন দৌড়াদৌড়ি আর বসার উপর থাকার অভ্যাস তার হয়ে গেছে। সঙ্গে সিনিয়রদের ঝাড়ি তো আছেই। ওসবে এখন অভ্যস্ত সে।
ফাহমানকে কোনওদিন নিজের কোনো কাজের জন্য কারোর কাছে ঝাড়ি খেতে হয়নি। অথচ এই মেডিক্যাল ফিল্ডে আসার পর সিনিয়রদের কবলে পড়ে সেটাও সহ্য করতে হয়েছে। কিছু কিছু মানুষ আছে অকারণে ঝাড়তে পছন্দ করেন। প্রথম প্রথম এসব তিক্ত লাগতো। ইচ্ছে করতো ছেড়েছুঁড়ে চলে যাক। কিন্তু ডাক্তার হওয়াটা ফাহমানের শখ নয় জেদ। তাই তার জেদের কাছে সাময়িক কষ্ট হার মানলো।
খাবার ঘর থেকে মনোয়ারা বেগম হাক ডাকছেন সন্ধ্যার নাস্তা করতে। ফাহমান এগিয়ে গেলো খাবার ঘরের দিকে। ঘরে ঢুকে চেয়ার টেনে বসল। দেখলো এক মাঝারি বোলে পাতলা ট্যালট্যালে স্যুপ। সেই স্যুপে উকি ঝুঁকি দিচ্ছে সবজি আর সসেজ। মনোয়ারা সেই বোল থেকে বাটিতে স্যুপ নিয়ে ফাহমানের দিকে এগিয়ে দিলেন।
আচমকা নিজেদের ঘরে স্যুপের আগমন দেখে ফাহমান খানিকটা চমকালো মনে হয়। স্যুপ খাননা মনোয়ারা বেগম তাই বাড়িতে স্যুপ রান্না হয় না। তবে স্যুপ কোথা থেকে ? ফাহমান সুধালো হৈমন্তীকে ‘ এই স্যুপ কোথেকে এলো হৈমি ? ‘
হৈমন্তী এক চামচ সুপ মুখে তুলে বললো ‘ ঝুমুর পাঠিয়েছে ‘।
‘ কি বলিস কি ? ওই পিচ্ছি স্যুপ রান্না করতে পারে ? ‘ ঝুমুর স্যুপ পাঠিয়েছে শুনেই আকাশ থেকে পড়লো মনে হয় ফাহমান। ঝুমুরকে দেখে গায়ে গতরে লম্বা মনে হলেও সে যে পাতলা টিংটিংয়ে এক কিশোরী মেয়ে সেটা আন্দাজ করা ফাহমানের জন্য আহামরি কঠিন কিছু নয়।
‘ ওয়ে ভাই, শুনো আমার বান্ধবী না কোনো পিচ্ছি মেয়ে না। যথেষ্ট বড় ও। আর ছোট হলেই যে রান্না জানবে না এমন তো না। ও মোটামুটি ভালই রান্না পারে শুধু তরী তরকারি রাধতে পারে না। ‘ হৈমন্তী ভেংচি কেটে বললো।
‘ বুঝছি, তোর বান্ধবী বিবাহিত মহিলা। ‘ ফাহমানও মুখ বাঁকিয়ে বললো।
‘ ভাইয়া…. ‘ চেঁচিয়ে উঠলো হৈমন্তী।
মনোয়ারা বেগম সিমের বিচি ছাড়াচ্ছিলেন কিন্তু এই দুই ভাই বোনের চিল চিৎকারে বিরক্ত হলেন। রাগত গলায় বললেন ‘ আহ্ তোরা কি ঝগড়া বন্ধ করবি ? কাজটা করতে দে। এত কথা বলিস না। আর চুপ থাকতে না পারলে এখান থেকে যা। ‘
মায়ের ধমকে দুই ভাই বোন চুপ করলো। ফাহমান স্যুপ খেতে খেতে ভাবলো বাগান রানী তবে বাগানের মালী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকা রাধুনীও। বাগানের মালী!! নামটা ঝুমুরের সঙ্গে যায়না তবুও ওটাই ডাকতে ইচ্ছে করছে কারণ ফাহমান তাকে প্রথমবার বাগানেই মাটিমুটি মাখানো অবস্থায় সকালের মিঠে রোদ জড়ানো মায়াবী চেহারায় দেখেছিল।
মেয়েটা অন্যরকম, এক আলাদা ভালো লাগা আছে তার প্রতি ফাহমানের। মেয়েটাকে দেখলেই ফাহমানের ভিতরটা এক অন্যরকম প্রশান্তিতে আচ্ছন্ন হয়ে উঠে। ফাহমান জানে না কেন তবে ঝুমুরের ওই তীক্ষ্ণ চিবুকের লম্বাটে মুখটায় হাসি দেখলে ওর অন্যরকম এক অনুভূতি হয়। ঝুমুর আর পাঁচজন মানুষের মতো নয়। পাতলা, টিংটিংয়ে ধারালো ব্যক্তিত্বের মানুষ সে। ওর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে চেহারারও মিল আছে। চেহারায় ফুটে উঠেছে তার তীক্ষ্ণ এক সৌন্দর্য্য।
মেডিক্যাল ফিল্ডে আসার পর কোনো নারীর দিকে অন্যরকম দৃষ্টি নিয়ে তাকানোর সুযোগ কিংবা সময় কোনোটাই হয়নি ফাহমানের। তাছাড়াও আগেও এসবে সে সেরকম আগ্রহী ছিল না। পড়তে পড়তে সময়ই বা কোথায় ? মেডিকেলের পড়াশোনা তার কয় বছর যাবত শুরু হলেও এর জন্য প্রস্তুতি সে অনেক পূর্বে থেকে নিয়ে আসছে। ভালো ফলাফলের জন্য তাকে করতে হয়েছে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম। এসবেই সে কোনওদিন সুযোগ পায়নি অন্য কারোর দিকে তাকানোর।
অথচ সেদিন প্রথমে সেই অচেনা নূপুর নারীর কাজল দীঘির মতো চোখ আবার আজকের এই তীক্ষ্ণ সৌন্দর্যের অধিকারী ঝুমুর দুইই যেন ফাহমানকে পাগল করে ফেলেছে। ফাহমান এখন দুই নারীতে দ্বিধান্বিত। সে আসলে কার প্রতি মুগ্ধ ? মিস নূপুর নাকি বোনের বান্ধবী ঝুমুর ? আহা ব্যাপারটা বড্ড যন্ত্রণা দিচ্ছে।
এসব নিয়ে ভাবলেই ফাহমানের মনে হয় ওর মাথার রগগুলো ছিঁড়ে যাবে। অথচ মিস নূপুরের সেই কাজল দীঘির মতো গভীর চোখ কিংবা ঝুমুরের লম্বা কেশরাশি কোনোটাই যে সে ভুলতে পারছে না। এই সুন্দরী রমণীরা ফাহমানকে পাগল করে দিবে মনে হচ্ছে। ফাহমানের এখন নিজেকে লুচ্চা টাইপ ছেলে মনে হয়। সে কি করে পারলো দুই নারীর মাঝে আটকে যেতে ? কত দিনের শখ ছিল নিজেকে ওয়ান ওমেন ম্যান উপাধিতে ভূষিত করবে অথচ এখন দুই নারীর মাঝে আটকে মাইনকার চিপায় পড়ার মতো অবস্থা।
উফফ অসহ্য… অসহ্য। আর ভাববে না এসব নিয়ে ফাহমান। যা হবে দেখা যাবে। আর কোনো কাজকর্ম নেই নাকি যে ডাক্তারি ছেড়ে এখন দুই নারীর মাঝে টাল খাবে। তার থেকে নিজের ডাক্তারিতে কনসেনট্রেট করাই ভালো। এসব প্রেম ভালোবাসা এখন সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই করবে না তার। সবকিছুরই এক নির্দিষ্ট সময় আছে। সেই সময় আসলে প্রেম আপনেই নিজ হাতে এসে ধরা দিবে।
—-
কোচিং থেকে দেওয়া লিস্টেড বইগুলো পুরনো লাইব্রেরী থেকে কিনতে এসেছে ঝুমুর আর হৈমন্তী। বেশি খোঁজাখুঁজি করতে হয়নি। পুরনো লাইব্রেরী হিসেবে কলেজ গেটের লাইব্রেরীগুলোর বেশ সুনাম আছে। কাজেই লাইব্রেরীতে বলতেই লাইব্রেরির মালিক নিজ উদ্যোগে বইগুলো খুজে দিয়েছেন। কিন্তু আসল বিপত্তি বাধল টাকা দিতে গিয়ে। তাড়াহুড়োয় ঝুমুর টাকা আনতেই ভুলে গেছে।
আজ সকাল থেকেই মন মেজাজ ভালো নয় ঝুমুরের। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মন মেজাজ খারাপ করে বেরিয়েছে সে। ব্যাপারটা কিছুই নয় আবার অনেক কিছুই। তাফিম আর সামি ঝগড়া করছিলো। ছোট থেকে সব ভাই বোনদের বড় বোন প্রীতি আর শ্রদ্ধা দেখে অভ্যস্ত ঝুমুর ঝগড়াঝাটিতে খানিকটা দম্বন্ধকর অনুভূতি টের পেলো। তাই দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে সে মাঝে পড়ে যখন সামিকে থামতে বলল তখন পর্যাপ্ত বদান্যতার অভাবে সামি ঝুমুরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে বললো তার আর তার ভাইয়ের মাঝে যাতে না পড়ে ঝুমুর।
সামি ঝুমুরের দশ বছরের ছোট আর তাফিম সাত। বয়সে বড় হওয়ায় তাফিম ঝুমুরকে অনেক শ্রদ্ধা করে এবং বড় বোন হওয়ায় ঝুমুরের প্রতি এক আলাদা ভয় মিশ্রিত ভালোবাসাও আছে। সামিও ঝুমুরকে শ্রদ্ধা করে কিন্তু তার সেই শ্রদ্ধা কাজের সময় পালিয়ে যায়। তার বিপক্ষে যখন কেউ কিছু বলে তখন সে কথা তো শুনেই না উল্টো কড়া কথা শোনায়। বলা যায় তার মাঝে বদান্যতা খুবই কম।
আর এই জিনিসটাই ঝুমুরের পছন্দ নয়। সে বড় এবং সেই হিসেবেই সে সবার কাছ থেকে যথেষ্ট সম্মান পায়। এমনকি তার আপি, নানুও তার কাজের তুলনায় কথা কম বলা এবং বুঝদার মনোভাবের জন্য তাকে যথেষ্ট আদর, আহ্লাদ এবং বেশ গুরুত্ব দেন। কাজেই সামির এই বেয়াদবি তার সহ্য হলো না। সে নিরবে সরে পড়তে চাইলো তবে বাঁধ সাধলেন আঞ্জুম আরা।
ঝুমুরের ভাই বোনদের উপর হাত তোলা পছন্দ নয়। অন্তত তার সামনে তো এসব মোটেই চলে না। হ্যাঁ সে এটা জানে বাঙালি মা বাবারা ফরেইনার প্যারেন্টদের তুলনায় অন্যরকম। ছেলে মেয়েদের ভুলে তারা পর্যাপ্ত শাসন করেন। কিন্তু ভুল করলেই সেটা মেরেধরে বুঝাতে হবে এমনটা ঝুমুরের ধারণার বাহিরে। কথাটা বকে, ধমকে কিংবা শান্ত ভাবেও বোঝানো যায়। কাজেই আঞ্জুম আরা যখন ছেলের বেয়াদবির জন্য চাপকে থাপ্পড় লাগাতে গেলেন তখন ঝুমুর শান্ত চোখে এমন কাজে আপত্তি জানিয়ে বেরিয়ে এলো। তারপর কি হলো কে জানে। আঞ্জুম আরা কি ঝুমুরের আড়ালে ছেলেকে শাসন করলেন কি না করলেন ঝুমুর জানে না। এমনকি ঝুমুরের জানতেও ইচ্ছা করছে না। মনটা তার মন খারাপের বিষে নীল হয়ে আছে।
ঠিক এই কারণেই ঝুমুরের মন মেজাজ ভালো নেই। উত্তপ্ত গরম মেজাজ নিয়েই সে ঘর থেকে বেরিয়েছিল টাকা পয়সা ছাড়াই। ব্যাগের সাইড পকেটে খুচরো বিশ টাকা ছিল যেটা দিয়ে ও আর হৈমন্তী রিকশায় এসেছে। এখন বইয়ের টাকা দিতে গিয়ে দেখলো ব্যাগ পুরো খালি। মাত্র পাঁচ টাকার পয়সা। রাগে,দুঃখে ঝুমুরের মেজাজ আরও খিচড়ে গেলো। দোকানদার আর হৈমন্তীকে একটু অপেক্ষা করতে বলে বাসার উদ্দেশ্যে বেরোলো সে। হৈমন্তীকে রেখে আসা যাতে বইগুলো অন্য কেউ নিতে না পারে।
ঝুমুরের মেজাজ এখনও গরম হচ্ছে। বরাবর শান্ত স্বভাবে থাকা সে এখন আবার ডাবল রিকশা ভাড়া দিয়ে আসা যাওয়া করতে হবে ভেবে রেগে যাচ্ছে। অযথা টাকা খসানো তার মোটেই পছন্দ নয়। শুধু শুধু টাকা পয়সা খসানোর ব্যাপারটা দেখলেই তার মেজাজ বিচ্ছিরি রকমের খারাপ হয়ে যায়। আর আজ এটা ঘটছে শুধুমাত্র তার ভুলের কারণেই।
আজ ফাহমানের নাইট ডিউটি বলে সকালের দিকটা বাড়িতেই আছে সে। বের হবে সন্ধ্যার দিকে তারপর ফিরবে কাল সকালে। আজ অনেকদিন পর নাইট ডিউটি পড়লো তার। সচরাচর জুনিয়র হিসেবে ফাহমানের নাইট ডিউটি পড়ার কথা বেশি কিন্তু তার ভাগ্যটা অতিশয় ভালো কিনা তাই নাইট ডিউটি পড়ে কম। হয়তো পরে মাসে চার কি পাঁচবার। এদিক দিয়ে এতেই ফাহমানের লাভ। রাতের সময়টা সে পড়া আর বিশ্রাম নেওয়ার কাজে লাগাতে পারে।
বাড়িতে থাকার সময়টা ফাহমানের বিভিন্ন ভাবে কাটে। কখনও মোটা মোটা বইয়ের ভাজে চোখ বুলাতে বুলাতে কাটে তো কখনও কখনও বারান্দার বাজরিগার পাখি দুটোর সঙ্গে কথা বলতে বলতে কাটে। দিনের এই সময়টায় মারিয়াম বাড়িতে থাকেন না। ভোরে সারাদিনের খাবার রান্না করে আটটার দিকে বেকারির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। সকালের সময়টাতে তিনি নিজে বেকারিতে বসেন আর সন্ধ্যায় বসেন তার এক সহকারী হাসিবুল মিয়া। তাই ফাহমানের কোনওদিন নাইট ডিউটি পড়লে সকালটা তার এভাবেই কাটে।
আজ অনেকদিন পর পাখি দুটোর সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছে ফাহমান। কাজেই সময়টা হাতছাড়া করলো না। মোটা বইয়ের মাঝে লাস্ট নোটটা স্টিক করে দিয়ে বই বন্ধ করে উঠে দাড়ালো। গুনগুন করতে করতে তার পাখি দুটোকে ভালোবেসে চাল দিলো, পানির পট বদলে দিল।
পাখিদের খাবার দিতে দিতে ফাহমান বললো ‘ কিরে টুনু মুনু মুখের এই হাল কেন ? আবার ঝগড়া করেছিস দুজনে ? তোদের নিয়ে কি করি বল ? কিছু হলেই দুজনে ঝগড়া করে খাচার দুই ধারে বসে থাকিস। ‘ ফাহমান ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে টুনু মুনুর গায়ে হাত বুলালো।
ফাহমান টুনু মুনুকে আদর করতে করতে বারান্দার বাহিরে গলির মোড়ের দিকে তাকালো। দেখলো একটা মেয়ে দৌড়ে আসছে। মেয়েটা দৌড়ে আসতে আসতে ওর অদল স্পষ্ট হলো। এ তো হৈমন্তীর বান্ধবী বাগান কন্যা ঝুমুর। এভাবে দৌড়চ্ছে কেন সে ? ফাহমান প্রশ্নের উত্তর পেলো না। তার আগেই ঝুমুর দৌড়ে ঢুকে গেলো ওদের বিল্ডিংয়ের ভিতর।
ঝুমুরের বারান্দা আর ফাহমানের বারান্দা মুখোমুখি কাজেই ওর বারান্দার স্লাইড ডোর খোলা থাকায় রুমের ভিতর ডেস্ক ড্রয়ার থেকে ঝুমুরকে টাকা নামাতে দেখলো ফাহমান। মেয়েটাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে বড্ড তাড়াহুড়োয়। ঝুমুর যতটা তাড়াহুড়োয় এসেছিল ঠিক ততটা তাড়াহুড়োয় বেরিয়েও গেলো। ফাহমান বুঝলো না কি থেকে কি হয়ে গেল। মেয়েটা কি টাকা ফেলে গিয়েছিল ? দেখে তো মনেই হলো টাকা নিতেই ফিরেছিল।
ঝুমুরকে দেখতে যতটা ম্যাচিওর মনে হয় ও ঠিক ততটাও ম্যাচিওর নয়। ম্যাচিওরিটির বয়স তো তার ঠিকঠাক এখনও আসেইনি। বয়স কম কাজেই এতটা সেন্সেবল তাকে আশা করা যায় না। আবার মেয়েটা দুরন্তও বটে। একান্তে থাকলে সে পৃথিবীর সেরা চঞ্চল কিশোরী। সেই সঙ্গে লোক সমাগমের সামনে ঠিক ততটাই শান্ত আর বুঝদার। অথচ মুখে তার সবসময় সূক্ষ্ম এক মন ভোলানো হাসি।
ঝুমুরের চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললো ফাহমান। ঝুমুরকে নিয়ে ভাবলেই ঝুমুরের সূত্র ধরে মিস নূপুরও তার মস্তিষ্ক জুড়ে বিচরণ শুরু করে। তারপর নিজের ডালপালা ছড়িয়ে ফাহমানের মস্তিষ্কে এক সময় জটলা বেধে দেয়। তাই ফাহমান প্রাণপণে চাইছে ঝুমুর ও তার আত্ম সখী মিস নূপুরের কথা এড়িয়ে যেতে। এদের দুজনকে নিয়ে ভাবতে বসলেই ফাহমানের দিন পেরিয়ে যায় অথচ ভাবনা আর শেষ হয় না। এরা এমনই, দুজন একজন আরেকজনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত অথচ ফাহমানের কল্পনায় দুজনে সম্পূর্ণ আলাদা মানুষ।
~চলবে ইনশাআল্লাহ্…