তোমার জন্য সাইকো পর্ব-২০

0
2509

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_২০

মুন তাকিয়ে দেখে যে ওর দিকে কেউ ঝুঁকে আছে। মুন দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার দিতে যাবে তার আগে অজানা মানুষ ওর মুখ চেপে ধরে।
অজানা: চুপ খুব ভালোবাসি খুব ( মুনের কানের কাছে গিয়ে)তোমাকে খুব আপন করে নিতে ইচ্ছা করছে কিন্ত সেটা করা তো যাবে না । খুব তাড়াতাড়ি ফিরব, খুব তাড়াতাড়ি তোমাকে আপন করে নেবো।

মুন নির্বাক শ্রোতা হয়ে সব শুনছে।
অজানা মুনের কপালে গালে অনেক গুলো চুমু খেয়ে চলে গেলো।

মুনের যেনো কথা ছোয়া সব চেনা লাগছে ।

মুন দেরি না করে বারান্দায় এসে দেখে আরুশ নিচে দাড়িয়ে আছে মুনের মুহুর্তে খুব রাগ হলো।
মুন ঘরে এসে একটা মুচকি হাসি দিয়ে । ঘুমিয়ে পরলো।

সকালে মুনের ঘুম ভাঙ্গল মুন বাইরে উকি মেরে চারিদিক দেখে ওর খুব ভালো লাগলো। অনেক দিন পর আজ মুনের খুব ভালো লাগছে।
মুন রেডী হয়ে নিচে গিয়ে দেখে ওখানে সবাই আছে। মুনকে দেখে রাইমা চৌধুরী এসে মুনকে বসিয়ে খায়িয়ে দিতে লাগলেন।

রোদের মামী: ঢং দেখে আর বাচি না ।
কথাটা কেউ না শুনলে ও নিহাল চৌধুরী শুনছে।
নিহাল চৌধুরী কিছু না বলে বসে পরে।
মুন: গুড মর্নিং পাপাই।
নিহাল: গুড মর্নিং মামনি।
আফজাল হোসেন : দুলাভাই আমি বলছি কি মুনের একটা বিয়ে দেওয়া দরকার কোনো দিন এভাবে থাকবে?
মুন তো রেগে ফায়ার।
নিহাল চৌধুরী একটা হালকা হাসি দিয়ে বললো।
নিহাল: আমার মনে হয় কি তোমাদের এখন যাওয়া উচিৎ। অনেক দিন তো হলো এখন তোমরা ফিরে যাও আর মুনের চিন্তা তোমাদের করতে হবে না ওর জন্য আমরা আছি।
আফজাল হোসেন: দুলাভাই তুমি
নিহাল: আহা আমার কথাতে কষ্ট পেও না আমি তো বলছি কারণ আমরা বাইরে ঘুরতে যাচ্ছি। তোমরা ফাউ থেকে কি করবে তাই চলে যাওয়া ভালো ।
মুন: পাপাই আমরা কোথায় যাবো ( খুশি হয়ে)
নিহাল: আমার এক বন্ধুর বাসায় ওখানে কিছু দিন থাকবো।
রাইমা: তুমি তো আমায় কিছু বলো নি?
নিহাল: সকালেই ফোন করলো তাই বলার টাইম পাইনি।
মামনি আজ তাড়াতাড়ি এসো আমরা সকাল সকাল বের হবো।
মুন: ওকে পাপাই আমি এখন যাই।
টাটা মামনি।
মুন নাচতে নাচতে চলে গেলো।
রোদের মামা , মামী এর মুখ তো দেখার মত ।
রাইমা চৌধুরী কিছু বলছে না উনি ও জানেন উনার ভাই ভাবি খুব লোভী।
নিহাল: তোমাদের এখানে রেখে কি আমি আমার প্ল্যান নষ্ট করব। মুন কে এইখান দেখে যে করে হোক বের করতে হবে । খুব সাবধানে ( মনে মন) বলে একটা রহস্য ময়ি হাসি দিল।
খাওয়া শেষে নিহাল অফিস এ গেলো আর রোদের মামা মামী ও প্যাকিং করে বাড়ি চলে আসলো।( ওদের এনেছিলাম অন্য একটা কারণে কিন্ত আমার পাঠকরা পছন্দ করছে না তাই বিদায় করলাম )

মুন ভার্সিটিতে গিয়ে ওর স্কুটি এক পাসে রেখে ভিতরে গেলো।
মুন ওর ফ্রেন্ড দের কাছে যাওয়ার আগে আরুশ ওকে টেনে খালি ক্লাস রুমে নিয়ে গেল।
মুন: হাত ছাড়ুন( ছড়ানোর চেষ্টা করে)
আরুশ : কেনো ?
মুন: কেনো মানে আমার হাত ধরার অধিকার আপনাকে কে দেছে
আরুশ: দেখো মুন সোজা কথা সোজা ভাবে বলি আমি তোমাকে ভালোবাসি আর এটাই ফাইনাল এখন আর রোদ নেই সো
আর বলতে পারলো না
মুন: অনেক বলেছেন এবার আমার টা শুনেন আমি আপনাকে ভালোবাসি না বুঝছেন আমি রোদকে ভালোবাসি । আর রোদ বেচে আছে আমার নিশ্বাসে বেচে আছে আমার প্রতিটি শিরা উপশিরায় বেচে আছে ওর জায়গা কেউ কখনো দিতে পারবে না আমার নিশ্বাস থাকা পযন্ত তো না।
কথাটা বলে মুন চলে গেলো ।
আরুশ: আমি ও দেখি তুমি কতদিন আমার থেকে দূরে থাকো আমার কাছে তো তোমাকে ধরা দিতেই হবে।
( একটা ডেভিল স্মাইল দিয়ে রুম থেকে চলে গেলো)

মুন ক্লাস করে বাইরে আসতেই আরুশ এর জ্বালাতন আবার শুরু। মুনের তো রেগে গা জ্বলে যাচ্ছে।

মুন কিছু টা দূরে গিয়ে বসে পরে ।
ফোনে রোদের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে।
মুন: কবে আসবেন আপনি আমার যে আর ভালো লাগছে না প্লিজ চলে আসুন। আপনার সাইকো গিরি যে আমি খুব মিস করছি আর কত কষ্ট দেবেন এবার সামনে আসলে আগের বারের থেকে ও বেশি বড়ো শাস্তি দেবো । হ্ন প্লিজ চলে আসুন প্লিজ।

মুন রোদের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে তখনই ওর পাশে কইটা ছেলে এসে বসলো।
মুন উঠে যেতে চাইলো। কিন্ত পিছন থেকে ছেলেগুলো ওর হাত ধরে ফেললো।
মুন: কি হচ্ছে কি ছাড়ুন আমার হাত।
একটা ছেলে: কেনো সুন্দরী আমাদের সাথে ও একটু কষ্ট share করো।
আরেক টা ছেলে: আরে কষ্ট বলতে হবে না চলো তোমাকে কষ্ট ভুলিয়ে দিতে চলো।
মুন তো ছড়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছে।
শেষে না পেরে একটা কে লাঠি মেরে চলে আসলো।
ছেলেগুলো ওর পিছন পিছন আসে।
মুন দৌড়ে লামিয়া দের আছে যায়।
লামিয়া: কিরে তুই এভাবে দৌড়াছিস কেনো?
মুন…
লামিয়া: কি হলো
মুন ওদের সব বললো ওরা দেখে পিছনে ছেলে গুলো দাড়িয়ে আছে।
লামিয়া ছেলেগুলোর কাছে গিয়ে সব মেয়েদের দিয়ে ছেলেগুলো কে মার খাওয়ায়।
ওদের ঝামেলা দেখে আরুশ দের গ্রুপ এর সবাই এসে যখন শুনে যে মুনের হাত ধরছে।
আরুশ তো ছেলে গুলোর কাছে অনেক মারে।
শেষে আরুশ এর বন্ধুরা এসে থামায়।
ছেলে ২ টো তো জান বাচিয়ে ফেরত যায়।

আরুশ মুনের কাছে গিয়ে বলে
আরুশ: একা ওখানে কেনো গিয়েছিলে?( রেগে)
মুন…
আরুশ: কি হলো কথা বলছো না কেনো তুমি জানো না যে ওই জায়গায় তেমন কেউ যায়না যদি আজ কিছু হতো তো
মুন কিছু না বলে চলে যায় সাথে ওর বান্ধবীরা।

আরুশ: এই মেঁয়েকে তো
আরুশ ও রেগে চলে যায়।

এদিকে একজন এসব শুনে রাগে ফুসছে ।
ম্যানেজার: স্যার কি করবো?
…..
ম্যানেজার: ওকে স্যার
ম্যানেজার চলে গেলো।
লোকটা একটা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে বলে
লোকটা: i am back
বলে অট্ট হাসিতে ফেটে পরে।

মুন ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে সোজা বাসায় যায়।
বাসায় গিয়ে দেখে ওর সব কিছু গুছানো।
মুন ও ফ্রেশ হয়ে রেডী হয়ে নিল।

কিছুক্ষণ পর ওরা বেরিয়ে পরলো।

গাড়িতে রাইমা চৌধুরী আর মুন বক বক করে যাচ্ছে।
নিহাল চৌধুরী কাকে যেনো একটা মেসেজ পাঠাল।

আধা ঘন্টা পর পৌঁছালো।
নিহাল সবাইকে নিয়ে ভিতরে গেলো বিশাল বড়ো এক বাড়ি ( ওতো ব্যাখা দিতে পারবো না সরি)
নিহাল: ওই তো আমার বন্ধু।
বিপ্লব রহমান: আরে দোস্ত কত দিন পর দেখা।
বলে নিহাল চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরলেন।
নিহাল: হা রে সেই কবে দেখা হয়ছিল।
এই হলো তোর ভাবি ।( রাইমা কে দেখিয়ে)
বিপ্লব: ওহ কেমন আছেন ভাবি ?
রাইমা: জী ভালো আপনি?
বিপ্লব: আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
নিহাল: আর ও হলো আমার মেয়ে মুন
বিপ্লব : ওহ তাহলে এই হলো মুন
নিহাল: হুম ।
মুন: অ্যাসালুমালায়কুম
বিপ্লব: অলায়কুম সালাম
টা তোর পরিবার কই।
বিপ্লব: আমার পরিবার বলতে ও এক ছেলে আর এক মেয়ে। মেয়ে বিয়ে হয়ে গেছে আর ছেলে অফিস।
একটু পর আসবে।
নিহাল: ওহ আচ্ছা
বিপ্লব: যা তোরা ফ্রেশ হয়ে নে।
এই ওদের রুম দেখিয়ে দাও।

ওরা ৩জন রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলো।
কিন্ত মুন বিছানায় শুয়ে ঘুম ।

সবাই মিলে আড্ডা দিতে লাগলো।

মুন ঘুম থেকে নিচে যায়।
নিচে গিয়ে সবার সাথে আড্ডা দেয়।

কিছুক্ষণ পর একটা ছেলে আসলো।
বিপ্লব: হে my son ইয়াস আহমেদ।
সবাই ছেলেটার দিকে তাকালো।
মুন তো ছেলেটা কে দেখে শকড ।
লোকটা সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে ।
মুন তো শুধু দেখে যাচ্ছে

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে