তোমার জন্য সাইকো পর্ব-১১

0
2870

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_১১
স্যার এর কথা শেষ হতে না হতেই একটা লম্বা লোক গায়ে নিল শার্ট কাল প্যান্ট আর কোর্ট পড়া চোখে চশমা গোলাপী ঠোট পাগল করা হাসি সব মেয়েদের ক্রাশ । মেয়েরা তো হা করে তাকিয়ে আছে কিন্ত একজন তো বড়ো বড়ো চোখ করে তাকিয়ে আছে।
হেড স্যার: এই সেই স্পেশাল মানুষ যাকে ঘিরে আমাদের এতো আয়োজন mr rod ahmed chowdhori
( হ্যা লোকটা রোদ মুনের সাইকো)
মেঁয়েরা সব তো সেই আনন্দ করছে আর টা দেখে মুন জ্বলছে
মুন: উফফ আল্লাহ এই সাইকো এখানে কি করছে আবার নাকি স্পেশাল মানুষ এর থেকে তো রাক্ষস ও ভালো ছিল। দেখ আসছে কিভাবে পাট নিয়ে সব মেয়েদের ইমপ্রেস করার জন্য আর মেয়েরা ও কিভাবে তাকিয়ে দেখছে মনে হচ্ছে সবার চোখ তুলে ফেলি (মনে মনে)
রোদ সবার দিকে একবার তাকিয়ে মুনের দিকে একটা হাসি দিয়ে হেড স্যার এর কাছে গিয়ে সালাম করলেন।
হেড স্যার: রোদ আহমেদ চৌধুরী শুধু একজন ভালো বিজনেস মান না উনি একজন ভালো মনের মানুষ আর আমাদের ভার্সিটির একজন পরানু স্টুডেন্ট ।
মুন: আমাকে তো কখনো বলেনি আর কি কি লুকিয়েছে তাই উনি জানে
হেড স্যার : আমি রোদকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করবো ।
রোদ মাইক টা নিয়ে বলা শরু করলেন
রোদ: আমি এই ভার্সিটির পড়ানো একজন স্টুডেন্ট আমার ও আপনাদের মত অনেক সপ্ন ছিল কিন্ত আমার লক্ষ্য স্থির ছিল বলে আমি আজকের জায়গায় আসতে পেরেছি ।তোমাদের ও লক্ষ্য স্থির করতে হবে
মুন: উফফ এতো লেকচার দিতে পারে বাড়িতে জ্বালিয়ে হয়নী এখন আবার উফফ আল্লাহ ভালো লাগে না ।
কিছু ক্ষণ পর রোদের ভাষণ শেষ সব মেয়েরা
তো মুন দিয়ে রোদের কথা বলা হাসা হাত নাড়ানো দেখছিল ।
মুন লামিয়া আর রুমা ওখান থেকে চলে গেলো।
লামিয়া: কিরে মুন রোদ ভাইয়া এখানে কি করছে আমাদের তো বললি না
মুন: আমি জানলে তো বলবো। আমি নিজে ও জানিনা
রুমা: রোদ আগের থেকে অনেক হ্যান্ডসাম হয়ছে
মুন: তুই না রোদ ভাইয়া বলতি
রুমা: ওই আর কি
তখনই ওখানে রোদ আসলো
লামিয়া: আরে ভাইয়া আপনি কেমন আছেন ?
মুন তাকিয়ে দেখে রোদ দাড়িয়ে আছে হাতে কোর্ট নিয়ে।
রোদ: এই তো ভালো তোমরা কেমন আছো ?
লামিয়া+ রুমা: জী ভালো মুনকে খুঁজতে আসছেন
রোদ: হা আমাদের আজ বেরোতে হবে তো তাই
মুন: কথায় যাবো
লামিয়া: আচ্ছা তোরা কথা বল আমরা গেলাম
বলে ওরা চলে গেলো।
রোদ: আম্মু ফোন করেছে বলছে এখন এ বের হতে নাহলে দেরি যেতে অনেক দেরি হবে
মুন: ওহ কিন্ত আপনাকে তো আজ দুপুর এর আগে ছাড়বে না
রোদ: হা তাই তো দেখছি কি করা যায় ভাবছি
মুন তাকিয়ে দেখে সব মেয়েরা রোদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে মুনের কেনো যেনো সহ্য হলো না
মুন: আচ্ছা আপনার সব সময় এতো সেজে বেড়ানোর কি দরকার বুঝিনা ( রেগে)
রোদ: মানে
মুন: মানে বোঝেন না কত কত মেয়ে আপনর দিকে তাকিয়ে আছে।
রোদ কিছুক্ষণ ভেবে বললো
রোদ: are u jelious?
মুন: no আমি কেনো jelious হবো।
রোদ: সে তো বুঝতে পারছি এখন চলো আমি তোমার স্যারদের সাথে কথা বলে তোমাকে নিয়ে বের হবো।
মুন কিছু না বলে রোদের সাথে গেলো ।

রোদ স্যারদের বলে ওখান থেকে মুন গিয়ে নিয়ে বের হলো।
বাড়িতে এসে মুন গুছিয়ে নিলো।সব গুছিয়ে নিচে নামলো।
নিচে নেমে দেখে রোদ দাড়িয়ে আছে ব্ল্যাক শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট পরা হাত ফল্ড করা সামনের দুটো বোতাম খুলা সেখানে চশমা রাখা মুন তো হা করে তাকিয়ে আছে ।
রোদ: চলো বের হই রাস্তায় কিছু খেয়ে নীবানে
রোদের কথায় মুনের ধ্যান ভেঙ্গে।
মুন কিছু না বলে গাড়িতে উঠে ।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে দুজনের মধ্যে নিরবতা।
রোদ: নামো
মুন: জী
রোদ: বলছি নামো
মুন: আমরা কি এসে গিচ্ছি
রোদ: না রেস্টুরেন্ট এ এসে গেছি কিছু খেতে হবে না
২জন গাড়ি থেকে নেবে কিছু খেয়ে নিল
তারপর আবার রওনা দিলো।
রোদ খেয়াল করলো যে মুন জিমোছে
রোদ: তোমার কি শরীর খারাপ করছে
মুন: না এমনি একটু টরাইড লাগছে
রোদ কিছু না বলে এক হাত দিয়ে মুন কে জড়িয়ে ধরলো । মুন ও রোদের কাধে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো
রোদ: পাগলী মেয়ে একটা একদম বাচ্চা।

এদিকে
আরুশ তো পাগল হয়ে যাচ্ছে । ঘরের সব কিছু ভেঙ্গে ফেলছে।

কিছুক্ষণ আগে আরুশ দেখে মুন আর রোদ হাত ধরে রেসুরেন্ট এ ঢুকছে আরুশ ও ওদের পিছন পিছন যায় গিয়ে দেখে রোদ নিজে হাতে মুনকে খায়িয়ে দিচ্ছে এটা দেখে আরুশ এর মাথায় আগুন জ্বলে উঠে
সেখান থেকে বাড়ি এসে সব কিছু ভাংচুর করছে
আরুশ : না এতো সহজে আমি মুনকে হাত ছাড়া করবো না মুন শুধু আমার আর না মুন ভার্সিটিতে আসলেই যেটা পরে করতে চেয়েছিলান সেটা এখন এ করতে হবে ।
রোদ চৌধরী মুন তো আমার হবেই তুমি কিছু করতে পারবে না
বলে বাকা হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেলো

মুন ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে ও বিছানায় শুয়ে আছে আর রোদ ছোফায় লাপটবে কাজ করছে ।
মুন: আমরা কোথায় আমি না গাড়িতে ছিলাম
রোদ: হা তোমাকে ওখান থেকে কিডন্যাপ করা হয়েছে
মুন: আপনি
তখনই সেখানে রাইমা চৌধুরী আসলেন
রাইমা চৌধুরী: কি ঘুম হয়েছে
মুন: মামনি আমি এখানে
রাইমা চৌধুরী: তুই ঘুমিয়ে ছিলি তাই রোদ তোকে কোলে করে নিয়ে এসেছে
মুন: এই লোকের কি লজ্জা বলতে কিছু নেই( মনে মনে)
রোদ: না নেই
রাইমা চৌধুরী: কিরে কি নেই
রোদ: কিছু না
রাইমা চৌধুরী: আচ্ছা চল খেতে যাবি আর রোদ তুই আর আমি আর মুন এই ঘরে থাকবো ওদের বাড়ি অনেক মেহমান তোর আব্বু আসলে তুই আর তোর আব্বু এক রুমে থাকবি।
চল মুন নিচে চল
মুন কিছু না বলে ওর মামনির সাথে যেতে লাগলো পিছন পিছন রোদ ও
মুন ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে এসে দেখে অনেক মানুষ মুন গিয়ে ওর মামনির পাশে বসলো ।
রোদ মুনের ডান সাইডে বসেছে ।
মুন কিছু না বলে খেতে যাবে তখনই রোদ ওর হাত শক্ত করে ধরে রাখছে
মুন কিছু বলতে ও পারছে না
রাইমা চৌধুরী: কিরে খসছিস না কেনো
মুন: মামনি তুমি খাইয়ে দাও কত দিন তোমার হাতে খাইনা
রাইমা চৌধুরী: আচ্ছা দারা
বলে রাইমা চৌধুরী খাইয়ে দিতে লাগলেন
খাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে গেলেন ।
রাইমা চৌধুরী: মুন কাল কিন্ত অনেক সকালে উঠতে হবে আমার সাথে সাথে থাকবি
মুন: আচ্ছা মামনি
রাইমা চৌধুরী: রোদ তুই ওদের সাথে একটু কাজ করিস ওদের বাড়ি ছেলে নেই
রোদ: ছেলে নেই তাই এই মানুষ আর ছেলে থাকলে।
রাইমা চৌধুরী: চুপ বিয়ে বাড়ীতে ওমন মানুষ হয় তোর বিয়ে তো হবে
রোদ কিছু না বলে মুনের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দেয়।
মুন কিছু বলে না
সবাই শুয়ে পরে কিন্ত মুনের ঘুম আসছে না ।
আসবে কি করে গাড়িতে তো অনেক ঘুমিয়েছে।
মুন কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে উঠে বসলো।
মুন: সবাই ঘুমিয়ে গেছে আমার আসছে না কেনো এক কাজ করি ছাদে গিয়ে ফেসবুকিং করি হা সেটাই ভালো হবে।
মুন পা টিপে টিপে ছাদে গেলো
মুন: ওরে বাবা এখানে তো অনেক শীত উফফ চাদর টা ভালো করে জড়িয়ে নি।
মুন দেখলো একটা দোলনা আছে মুন গিয়ে দোলনায় বসলো।
বসে গান শুনছিল তখনই কেউ একজন দোলনায় দোল দিছিলো মুন পিছনে ফিরে যেই চিৎকার দিতে যাবে তখনই সামনের মানুষটা মুনের মুখ চেপে ধরে ।
রোদ: এই মেয়ে এভাবে চিল্লাও কেনো সবাই যে চলে আসবে
মুন: উম উম
রোদ: কি উম উম করছো
আর একবার চিৎকার দিলে দাত ভেঙ্গে দেব
বলে মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিল
মুন: আপনি এত রাতে এখানে কেনো
রোদ: তুমি এত রাতে এখানে কেনো?
মুন: ঘুম আসছিলো না তাই
রোদ: টা আসবে কেনো ? এতো রাতে ছাদে কিসের জন্য আসছ একটা অচেনা জায়গায় কোনো সেন্স আছে তোমার বেয়াদৰ মেয়ে
(রেগে )
মুন: সব সময় এমন করে কেনো বুঝিনা( মনে মনে)
রোদ: কি হলো চুপ করে আছো কেনো ans me dame it( চিল্লিয়ে)
মুন : আর কখনো হবে না
রোদ মুনকে দেঁয়ালের সাথে চেপে ধরলো
রোদ: এই কথা কত বার বলবে হা এতো ভুল কেনো হয় তোমার।
মুন তো রোদের এভাবে বলাতে অনেক ভয় পায়
তাও কোনো মতো বলে
মুন: আমি আর কখনও এমন করবো না আপনি যা বলবেন তাই করবো
রোদ: কথাটা মনে থাকবে তো
মুন: হুমম
রোদ: ওকে এখন নিচে যাও গিয়ে ঘুমাও
মুন কিছু না বলে নিচে এসে ঘুম পরার নাটক করে ।
কিছুক্ষণ পর রোদ আসে এসে শুয়ে পরে।

সকালে মুন ঘুম থেকে উঠে মামনির কাছে যায়
রাইমা চৌধুরী: কিরে তোর ঘুম হলো আয় তোকে পরিচয় করিয়ে দি। আমার বান্ধবী নিলাসা আর ওর husband তুহিন
মুন: আসসালামুআলাইকুম
নিলসা + তুহিন: ওলায়কুম সালাম
রাইমা এই বুঝি তোর মেয়ে খুব সুন্দর ।
রাইমা: হুম যা তো মা ওই ঘরে যা দেখ বিয়ের কোণে আছে ।
একটা মেয়ে এসে মুনকে একটা ঘরে নিয়ে যায়
মেয়েটা: আমার নাম সাইমা তোমার নাম
মুন: আমার নাম মুন
সাইমা: খুব সুন্দর
মুন: তুমি বুঝি বিয়ের কোণে
অহনা: হা
মুন: তুমি খুব সুন্দর দেখতে
অহনা: তুমি ও তোমার কথা ও খুব সুন্দর। বিয়ে পর্যন্ত তুমি আমার সাথে থাকবা
মুন: আচ্ছা ।

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে