গল্প:-#তুমি চাইলে যেতে পারো (পর্ব:-১৭+১৮)
লিখা:- AL Mohammad Sourav
।
সিমি তুমি আমার পিছনে আসলেই আমি শাওনের ব্যপারে কিছুই বলবো না আর তোমাকে বলি প্লিজ তুমি আমাকে এভাবে ঝালাতে এসো না। আমি যেইটা নিজে থেকে না বলি সেইটা আমাকে দিয়ে কেউ হাঁ বলাতে পারে না। তখনি সিমি বলে আপনি আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেন তাহলে আর কখনো আপনাকে ঝালাবো না বরং আমি আপনাকে প্রচন্ড ভালোবাসবো।
আল:- ভালোবাসবে মানে?
সিমি:- হ্যা আমি আপনাকে এতটা ভালোবাসবো যে আপনি আফসোস করবেন কেনো আরও আগে আমাকে সবকিছু খুলে বলেন নাই। তখনি সিমিকে আল ধাক্কা দিয়ে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে বলে।
আল:- দেখো আমাকে তোমার ভালোবাসতে হবে না। তুমি তাকেই ভারোবাসো যে তোমাকে ভালোবাসে। তোমার ভালোবাসাটা সেই পাপ্য যে তোমাকে ভালোবাসে। তোমার মুখের হাসির জন্য সবকিছু করতে পারে তাকেই তোমার ভালোবাসা উচিৎ। যে তোমার জন্য নিজের সবকিছু ত্যাগ করতে পারে তাকেই তোমার ভালোবাসা উচিৎ। যে মানুষটা তোমাকে নিয়ে ভাবে তোমার দুঃখের সময় তোমার সাথে থাকে তাকেই ভালোবাসো। আমি যা বলেছি এসবের মধ্যে আমি কোনটাই তোমার জন্য করতে পারবো না এই জন্য আমাকে তোমার ভালোবাসাটা একদম বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
সিমি:- আপনি যেই কথা গুলি বলেছেন সেই গুলি একটু নিজের মধ্যে চিন্তা করেন তাহলে আমার ভালোবাসাটা ঠিক আছে। আর আপনারও উচিত আমাকে বিশ্বাস করে সবকিছু বলে দেওয়া। তখনি আল সিমিকে আরও শক্ত ভাবে দেওয়ালে চেপে ধরেছে তখনি সিমির চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে আল চেয়ে দেখে সিমি ডান হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সাথে সাথে ছেড়ে দিয়েছি তখনি সিমি বলে। কি হলো ছেড়ে দিয়েছেন কেনো আমার জন্য নাকী আপনার মাঁয়া নেই তাহলে আমার ব্যথা লাগছে তা দেখে ছেড়ে দিয়েছেন কেনো?
আল:- সিমি তুমি প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো তখনি আলের মা এদিকে আসতেছে দেখে দুজনে দুই দিকে চলে গেছে আর আল সোজা নিচে এসে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেছে। সিমি রুমে গিয়ে আনোকে ঘুম থেকে উঠিয়ে ওর হাত মুখ ধুয়ে দিয়ে নিচে নেমে এসেছে।
দাদী:- ছোট নাত বৌ আনোর শরীরটা এখন কেমন?
সিমি:- দাদী মা এখন শরীরটা আগের থেকে ভালো।
মালা:- আনো এখন ভালোই থাকবে ওর মামুনি এসে গেছে তার জন্য।
মা:- সিমি তুমি আর কখনো আলকে ছেড়ে যাবে না। আল যদি তোমার সাথে কোনো রকম অন্যায় করে তাহলে আমাকে বলবে আমি নিজে ওকে শাস্থি দিবো।
ঝিনুক:- হ্যা তোমরা সবাই ওকে মাথায় তুলে নাচতে থাকো। পড়ে বুঝবে কেমন লাগে আমি আগেও বলেছি আর এখনো বলি ও দেখতে যতটা ভালো ঠিক ততটাই ও খারাপ। নিশ্চয় নতুন কোনো প্ল্যান করে আবার এই বাড়ীতে এসেছে।
ভাবি:- আচ্ছা সিমি তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? তোমার মায়ের কাছে নাকী অন্য কোথাও? সিমি চুপচাপ বসে আছে তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- কোথায় থাকবে নিশ্চয় কোনো নাগরের কাছে। তখনি আলের দাদী ঝিনুককে ধমক দিয়ে বলে।
দাদী:- ঝিনুক তোর কথাবার্তা দিন দিন এতটা বাজে হচ্ছে কেনো? সিমি এতদিন ওর মায়ের কাছেই ছিলো তাইনা সিমি? সিমি চুপচাপ বসে আছে কি বলবে এখন তখনি ভাবি বলে।
ভাবি:- সিমি এবার চুপচাপ হয়ে আছো কেনো? বলো তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? সিমিকে সবাই জিজ্ঞেস করতে আরম্ভ করেছে সিমি এতদিন কোথায় ছিলো। সিমি মনে মনে ভাবছে কি বলবে এখন তখনি মালা বলে।
মালা:- আমার মনে হয় ভাবিকে জিজ্ঞেস না করে আল ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করাটা ভালো হবে। ভাবিকে মনে হয় ভাইয়া এসব বলতে বারণ করে গেছে।
দাদী:- হ্যা তা একদম ঠিকই বলেছিস! আর তাছাড়া এসব ব্যপারে কোনো কথা না জিজ্ঞেস করা ভালো। আল আবার কোন কথা থেকে কোনটা বুঝে পড়ে সমস্যা হবে তখনি মালার মোবাইল ফোন বেজে উঠেছে। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে আল ফোন করেছে রিসিভ করতেই আল বলে।
অাল:- মালা একটু কোহিনুর ঠিকানাটা মেসেজ করে দিস আর সাথে ওর মোবাইল নাম্বার।
মালা:- ভাইয়া সিমি ভাবি তো চলে এসেছে তাহলে কোহিনুর আপুর ঠিকানা দিয়ে কি করবি?
আল:- এত বেশি কথা না বলে আমি যা বলেছি তুি সেই কাজটা একুনি কর। আর শুন এই কথাটা আবার সিমিকে বলিস না বলেই ফোন কেটে দিয়েছে। মালা চেয়ে দেখে সিমি মালার দিকে তাকিয়ে আছে কিছুটা গম্ভীর মুখ করে তখনি মালা হেসে বলে।
মালা:- ভাবি তুমি কিছু বলবে?
সিমি:- নাহ কিছু বলবো না বলেই আনোকে ওর দাদীর কাছে দিয়ে সিমি সোজা উপরে গেছে। মালা এই সুযোগে কোহিনুরের ঠিকানাটা আলের মোবাইলে মেসেজ করে দিয়েছে।
আল মালার মেসেজ পেয়েছে তারপর সেই মেসেজে দেওয়া ঠিকানা মতে চলে গেছে। কোহিনুরের বাড়ীর সামনে গিয়ে আল কোহিনুরের নাম্বারে ফোন করেছে প্রথমবার রিং বাজতে বাজতে কেটে গেছে এরপর আবার ফোন করেছে এবার কিছুকক্ষণ রিং হওয়ার পর রিসিভ করেছে। কোহিনুর ফোন রিসিভ করতেই আল তাঁর পরিচয়টা দিয়ে বলেছে ওর বাড়ীর সামনে আছে একবার দেখা করতে চাই তখন কোহিনুর রাজি হয়ছে আর আলকে বাড়ীর ভেতরে যেতে বলছে। আল বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করেছে তখন কোহিনুর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আলকে ভেতরে ড্রয়িংরুমে বসতে দিয়েছে।
কোহিনুর:- বলুন আল সাহেব কেনো এসেছেন?
আল:- আমি গতকালের ব্যবহারের জন্য লজ্জিত প্লিজ আপনি সিমির কথা কিছু মনে করবেন না।
কোহিনুর:- দেখুন আল সাহেব আমি কিন্তু নিজে থেকে দেখা করতে যায়নি! আপনার বোন আমাকে অনেক রিকুয়েস্ট করেছে তাঁর জন্য আমি দেখা করতে গেছিলাম। কিন্তু আপনারা সবাই মিলে আমার সাথে যে খারাপ আচরণ করেছেন সেইটার জন্য আমি আপনাদের ক্ষমা করতে পারবো না। তখনি একজন ভদ্র লোক এসে বলে কোহিনুর ওনি কে?
কোহিনুর:- ভাইয়া ওনি আল ইসলাম আর ওনার সাথে গতকাল দেখা করতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে। তখনি ওনি রেগে গিয়ে বলে তোর এত বড় সাহোস আমার বোনকে অপমানিত করে আবার আমাদের বাড়ীতে এসেছিস?
আল:- দেখুন আমি এখানে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আসি নাই। আমি গতকালের ঘটনার জন্য একদম লজ্জিত তার জন্য এসেছি ক্ষমা চাইতে। দেখুন মিস কোহিনুর আপনার সাথে আমার স্ত্রী সিমি যে ব্যবহার করেছে সত্যি সেইটা অন্যায় করেছে তার জন্য আমি আন্তঃরিক ভাবে দুঃখিত। প্লিজ যা হয়ছে সবটা ভুলে যান এইটা বলার জন্যই আমি এখানে এসেছি। তখনি কোহিনুর ভাবি বলে কোহিনুর ছেলেটা ভালো তার জন্য নিজে বাড়িতে এসে ক্ষমা চেয়েছে তোমার উচিৎ ওদের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া।
কোহিনুর:- একটা শর্তে ক্ষমা করতে পারি।
আল:- বলুক কি শর্ত?
কোহিনুর:- আপনার স্ত্রীকে ঐ কফিসপে সবার সামনে আমার কাছে দুই হাত জোঁড় করে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি ক্ষমা না চাই তাহলে আমি আপনাদের কি অবস্থা করবো তা আপনি বুঝতে পারছেন আর তার জন্যই কিন্তু আপনি নিজে থেকে আমার কাছে এসেছেন ক্ষমা চাওয়ার জন্য।
আল:- দেখুন মিস কোহিনুর সিমি আমার স্ত্রী নয় আর তাছাড়া অল্প কিছুদিনের মধ্যে আমি ওকে ডির্ভোস দিয়ে দিবো। অযথা বাড়া বাড়ী না করে ব্যপারটা এখানে শেষ করে নিলে আমাদের দুজনের জন্য ভালো হবে তখনি কোহিনুর ভাই বলে। ঠিক আছে তাহলে আপনার স্ত্রীর সাথে ডির্ভোস হয়ে গেলে আমার বোন কোহিনুরকে বিয়ে করে নেন তাহলেই আমরা সবকিছু স্বাবাভিক করে দিবো কি কোহিনুর আমার প্রস্তাবে তোর কোনো আপত্তি আছে?
কোহিনুর:- নাহ ভাইয়া আমার কোনো আপত্তি নেই তবে ওনার স্ত্রীকে এক মাসের মধ্যে ডির্ভোস দিতে হবে তানা হলে আমরা আমাদের কাজ করে ফেলবো। এখন বলেন মিষ্টার আল সাহেব আপনি আমাদের প্রস্তাবে রাজি আছেন?
আল:- ঠিক আছে আমাকে কিছুদিন সময় দিন আমি চিন্তা ভাবনা করে আপনাদের জানাচ্ছি বলেই আল কোহিনুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। আলের বিশ্বাস হচ্ছে না সামান্য একটা ঘটনার জন্য আজ এত বড় ঝামেলাতে পড়ে যাবে কি করবে এখন তবে একটা উপায় আছে আলের কাছে কিন্তু এমনটা করলে যদি পরে সিমি পাল্টি মারে? তবে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে সিমিকে বিশ্বাস করা যায় কিন্তু রিক্স নেওয়া যাবে না এর থেকে ভালো সিমিকে ডির্ভোস দিয়ে দিলে কিন্তু সিমি তো একটা চুক্তি না-মা করে বসে আছে এইটার থেকে আগে মুক্তি পেতে হবে। নাহ আমাকে আরও গভীর ভাবে চিন্তা করতে হবে বলে অফিসে গিয়ে দেখে সিমি আলের অফিসে আর ওর চেয়ারে বসে আছে সিমিকে দেখেই আল রেগে গিয়ে বলে সিমি তুমি আমার অফিসে এসেছো কেনো? আর তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে কে?
সিমি:- তাঁর আগে বলেন আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন?
আল:- দেখো আমি তোমার কাছে কোনো কৈয়ফত দিতে বাধ্য নয়। তুমি এখুনি আমার অফিস থেকে বেরিয়ে যাও। তখনি সিমি তার ব্যাগ থেকে ঐ কাগজটা বের করে আলের হাতে দিয়ে বলে।
সিমি:- কাগজের লিখা অনুযায়ী আমি এই অফিসের মালকিন আর আমি আপনাকে যা যা বলবো আপনি তা তা করতে এবং বলতে বাধ্য। এবার আপনি নিজে থেকে বলবেন নাকী আমি অফিসের সব স্টাফকে ডেকে এনে কাগজটা দেখাবো।
আল:- আমার বাহিরে এক ক্লাইন্টের সাথে দেখা করতে গেছিলাম।
সিমি:- আপনার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে আপনি মিথ্যা কথা বলছেন! সত্যি করে বলুন আপনি কোথায় গেছিলেন? তখনি আল কিছুটা নরম হয়ে আস্তে করে বলে।
আল:- সিমি এটা আমার কাজের জায়গা আর এখানে কোনো রকম গন্ডগোল না করে বাড়িতে যাও। আমি রাতে বাড়িতে যাবো তখন তোমার সব কথার উত্তর দিবো।
সিমি:- আচ্ছা আমি আপনার কথা কেনো শুনবো? আর তাছাড়া আপনি হলের আমার কর্মচারী আমি যা বলবো তার উত্তর দিবেন। এখন আমাকে সত্যি করে বলুন আপনি কার সাথে দেখা করতে গেছিলেন? তখনি আল রেগে গিয়ে নিজের টেবিলে জোঁড়ে এক থাপ্পড় দিয়ে বসে সিমি আলের এমন কান্ডে অনেকটা ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে আর তখনি অফিসের বাকী স্টাফ গুলি চলে আসে আলের কেবিনের সামনে। সাথে আরিফ আর ফিরুজ দুজনে এসে সিমিকে দেখে অবাক হয়ে যায়।
আরিফ:- আল কি হয়ছে এমন করছিস কেনো?
আল:- কিছু হয়নি ওকে বলো এখান থেকে চলে যেতে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- আমি যাবো না আগে আমাকে বলেন আপনি কোথায় গেছিলেন? আর যদি না বলেন তাহলে আমি এই মুহুর্তে সবাইকে কাগজটা দেখিয়ে দিবো তখন আরিফ বলে।
আরিফ:- আল সিমি কিসের কাগজের কথা বলছে?
আল:- ভাইয়া তুমি যাও ওর কথা কানে নিলে মাথাটা একদম শেষ করে দিবে। আমার আগেই বুঝা উচিৎ ছিলো কিন্তু এখন নিজেই গলাই কাঁ’টা বাঁধিয়ে রেখেছি না পারছি ফেলতে না পারছি ঢুক গিলতে। আরিফ সহ সবাই চলে গেছে তখনি আল সিমির হাতটা ধরে সুন্দর ভাবে ওকে চেয়ারে বসিয়েছে। আলের এমন কান্ড সিমি অবাক হয়ে গেছে তখনি আল বলে। সিমি সত্যি করে বলবে তুমি আমার কাছে কি চাও?
সিমি:- সেটা তো সকালে বলেছি বলেন কেনো শাওনকে দশ লক্ষ টাকা দিতে বলেছেন? সেটা কি আপনি নিজে থেকে বলেছেন নাকী শাওন আপনাকে কোনো ভাবে রাজি করিয়েছে। তখনি আর হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। আমি তো মনে করেছি কোহিনুর ব্যপারে সিমি জানতে পারছে তার জন্য অফিসে এসেছে। আল কিছুটা চিন্তা করে বলে।
আল:- তুমি কি মনে করেছো আমি শাওনের কাছে গেছি?
সিমি:- হ্যা আমার মনে হয় শাওন আপনাকে কোনো ভাবে ব্ল্যাক মেইল করার চেষ্টা করছে। আপনি বলুন না কেনো শাওনকে আপনি টাকা দিতে চায়ছেন? তখনি আল সিমিকে জড়িয়ে ধরে আর ওর গালে দুইটা চুমু দিয়ে দেয়। আলের এমন কান্ডে সিমি থ হয়ে গেছে। সিমি মনে হয় স্বপ্নের মধ্যে আছে তখনি আল বলে।
আল:- তুমি যেইটার জন্য এসেছো সেইটা পেয়েছো?
সিমি:- হ্যা।
আল:- তাহলে এবার যাও আমার অনেক কাজ পড়ে আছে। তখনি সিমি চেয়ার থেকে উঠে ঘোরের মধ্যে থেকেই সামনের দিকে হাটা দিয়েছে আর আল মনে মনে ভাবছে দুইটা চুমু আর একবার জড়িয়ে ধরলে যে মানুষ এমন হয়ে যাবে জানলে আরও আগেই জড়িয়ে ধরে চুমু দিয়ে দিতাম। আল তার চেয়ারে বসেছে তখনি আবার সিমি এসেই আলকে বলে।
সিমি:- এই আপনি একটু আগে কি করেছেন?
আল:- তুমি আবার এসেছো বলেই ওকে জড়িয়ে ধরেছে এবার তিনটা চুমু দিয়েছে একটা কপালে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- এই আপনার শরীর খারাপ করছে? নাকী আমি সবকিছু লিখে নিয়েছি বলে পাগল টাগল হয়ে গেছেন? বার বার আমাকে জড়িয়ে ধরছেন চুমু খাচ্ছেন ব্যপার কি ভ্রু কুঁচকিয়ে কথাটা বলেছে আল সিমির দিকে তাকিয়ে আছে। সিমির দুইটা গাল লাল হয়ে আছে আজ মনে হয় কফি কালার লেহেঙ্গাটাতে আরও বেশি সুন্দর লাগছে। তখনি সিমি ওকে ধরে বলে কি হলো কোথায় হারিয়ে গেলেন?
আল:- ইশ এই আমি কি করছি ছিঃ বলেই সিমির দিকে তাকিয়ে বলে সিমি প্লিজ তুমি যাও আমি তোমাকে সব বলবো তাঁর জন্য আমাকে কিছুটা সময় দাও।
সিমি:- আপনাকে দশদিন সময় দিলাম আর এই দশদিনের মধ্যে আমাকে সবকিছু খুলে বলবেন। যদি সবকিছু না বলেন তাহলে আমি আপনার নামে আদালতে মামলা করে আপনাকে পথের ফকির বানিয়ে রাস্থায় নামিয়ে দিবো বলে দিলাম।
আল:- ঠিক আছে তাই করো তাও আমার এত যন্ত্রনা ভালো লাগে না। এবার তুমি যাও আমাকে এখন কাজ করতে দাও।
সিমি:- আজ আর কাজ করতে হবে না আমার সাথে চলেন আমি শপিং করবো। আমার মাত্র দুইটা শাড়ি আর দুইটা লেহেঙ্গা ছাড়া আর কোনো কাপড় নেই। আজ আমি শপিং করবো চলেন আমার সাথে।
আল:- শপিংয়ে যাওয়া আমার পক্ষে একদম সম্ভব না তুমি রহিছ মিয়াকে সাথে নিয়ে যাও ও তোমাকে ভালো একটা লেডিস দোকানে নিয়ে যাবে তুমি পছন্দ করে কিনে নিও।
সিমি:- আমি বলছি আপনি আমার সাথে চলেন শপিং করতে যদি আপনি আমার সাথে না যান তাহলে আমি সবাইকে বলে দিবো আপনার সবকিছু আমার নামে লিখে দিয়েছেন। আল সিমির দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে আমাকে যেভাবে হোক সিমির কাছ থেকে অর্জিনাল কাগজটা নিতে হবে। আজ না হয় ওর কথা মেনে নেই। তখনি সিমি বলে কি ভাবছেন এতক্ষণ যাবৎ। আপনি যাবেন নাকী আমি সবাইকে ডেকে বলবো আমি এই অফিসের মালকিন।
আল:- ঠিক আছে চলো আজকে সারাটা দিন তোমাকে দিলাম। সিমি অনেক খুশি হয়েছে আর মনে মনে ভাবছে যাক আজকের মধ্যে ওনার থেকে জানতে হবে কেনো ওনি শাওনকে টাকা দিতে চায়ছে যেভাবে হোক জানতে হবে। আমি যা ভাবছি ওনি কি সেইটার জন্য শাওনকে টাকা দিতে রাজি হয়েছে। তখনি আল বলে তোমার চিন্তা করা শেষ হলে এবার চলো যাই।
সিমি:- হ্যা চলুন বলে দুজনে বেরিয়ে নিচে এসে রহিছ মিয়ার কাছ থেকে চাবিটা নিয়ে গাড়িতে আল বসেছে যখনি সিমি আলের সাথে সামনের সিটে বসতে যাবে তখনি আল বলে।
আল:- তুমি পিছনের সিটে বসো। সিমি আলের কথা না শুনে সামনের সিটে আলের পাশে বসে বলে।
সিমি:- আমি আপনার মালকিন আমি যা বলবো আপনি তা করবেন। তখন আল আর কোনো কথা না বলে গাড়িটা চালাতে আরম্ভ করে বলে।
আল:- বুঝতে পারছি তবে এতটা উড়তে যেওনা ওলুর যখন পাখা গজায় তখন কিন্তু আ’গু’নে পুরে ম’রে।
সিমি:- আমি ওলুর মত বোকা নয় যে আলো দেখে আ’গু’নে ঝাপ দিবো! আমার নাম সিমি রহমান আমি সবকিছু বুঝে চিন্তে হিসাব করে এরপর সামনে দিকে যাই।
আল:- আচ্ছা আনোকে তুমি কার কাছে রেখে এসেছো?
সিমি:- ওর দাদীর কাছে আর বলে এসেছি মামুনি না আসা পর্যন্ত কোনো রকম দুষ্টমি করা চলবে না। আনো তো আমার ভক্ত আমি বলতে অজ্ঞান হয়ে যায় তাই তো আমি আনোকে এতটা ভালোবাসি। আপনি যদি আমার ভক্ত হতেন তাহলে আপনাকেও অনেক ভালোবাসতাম।
আল:- আমার এত ভক্ত হবার কোনো ইচ্ছে নেই। এখন বলো তো তোমাকে আমার অফিসটা কে চিনিয়েছে?
সিমি:- আপনার অফিস বলেন কেনো? এটা আমার অফিস আর আমি আমার অফিস চিনবো না তা কি করে হয়? আল আর কিছুই বলেনি একদম চুপচাপ হয়ে গেছে নিজের মত করে গাড়ি চালাচ্ছে আর এদিকে সিমি নিজে নিজে বক বক করছে। আচ্ছা আপনি আনুমানিক কত টাকার মালিক আছেন?
আল:- কেনো?
সিমি:- মানে আপনি তো আর এই সবকিছু মালিক না আপনার যা আছে সবকিছু তো আমার। আপনি আনুমানিক কত টাকার মালিক আছেন বলেন? আল সিমির দিকে তাকিয়ে আছে একদম রাগি চোখে সিমি তখনি বলে থাক বলতে হবে না তবে আমার মনে হয় ত্রিশ চল্লিশ লক্ষ টাকার মালিক আমি হবো। তখনি আল গাড়িটা থামিয়ে বলে।
আল:- তোমার মত মেয়ে আমার জীবনেও দেখিনি।
সিমি:- না দেখলে দেখে নিন গাড়ি থামিয়েছেন কেনো?
আল:- নামো শপিং সেন্টারে চলে এসেছি। সিমি গাড়ি থেকে নেমেছে আল গাড়িটা পার্কিং করে এসে সিমিকে সাথে নিয়ে শপিং সেন্টারে ঢুকেছে। সিমি তুমি কি ধরেন কাপড় কিনবে?
সিমি:- সব রকমের কিনবো। আল আর কিছু বলেনি বুঝতে পারছে আজ ওর মাথাটা খাবে এই বলে সিমিকে বড় একটা কাপড়ের দোকানে নিয়ে গেছে। সিমি আলের সাথে বসেছে তবে এই দোকানে সব সেলম্যান মেয়ে শুধু ম্যানাজার ছাড়া সিমি ঘুরে ঘুরে কাপড় গুলি দেখছে সিমি কোনোনো কাপড় পছন্দ করছে না আল বিরক্ত হয়ে বলে।
আল:- সিমি তুমি কাপড় কিনবে নাকী আমি চলে যাবো?
সিমি:- আমার পছন্দ হচ্ছে না আপনি একটু পছন্দ করে দিবেন? আল সিমির দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে গিয়ে এক এক করে কাপড় বের করতে আরম্ভ করেছে। যেইটা হাতে নিচ্ছে সেইটা সিমির পছন্দ হচ্ছে সিমির জন্য চারটা শাড়ি তিনটা চুড়িদার আর তিনটা গোল জামা সহ মোট ১২সেট কাপড় কিনেছে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- আচ্ছা এই কাপড় গুলি তো এখানে ছিলো তাহলে আমার চোখে পড়েনি কেনো?
আল:- তোমার চোখে তো অন্য নেশা কাপড় পছন্দ হবে কি করে? তখন সব কাপড়ড় নিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে গেছে তখন ম্যানাজারের সাথে একটা মেয়ে ছিলো সেই মেয়েটা বলে।
ভাইয়া ওনি কি হয় আপনার? তখনি আল বলে তেমন কিছু না দূর সম্পর্কের আত্বীয় হয়। তখনি মেয়েটা কেমন করে আলের দিকে তাকিয়ে আছে। সিমি মেয়েটার দিকে চোখ গুলি বড় বড় করে তাকিয়ে আছে যখনি একটা গুশি দিতে যাবে তখনি মেয়েটা বলে। কিন্তু ভাইয়া দেখে তো মনে হচ্ছে আপনারে স্বামী স্ত্রী আর আপনাদের দুজনকে খুব সুন্দর মানিয়েছে। কি আমি ঠিক বলেছি তো আপু? তখনি সিমি একটা সুন্দর হাসি দিয়ে বলে।
সিমি:- হ্যা ঠিক বলেছো তখনি আলের হাত থেকে মানি ব্যাগটা নিয়ে এক হাজার একটা নোট বের করে মেয়েটির হাতে দিয়ে বলে এইটা তোমার টিপস। সিমির এমন কান্ড দেখে অবাক হয়ে আছে। সিমি আলের দিকে তাকিয়ে বলে এই সব টাকার মালকিন আমি সুতুরাং এমন ভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। আমি গাড়ীতে যাচ্ছি আপনি ব্যাগ গুলি নিয়ে আমার পিছু পিছু আসুন। তখনি দোকানের ম্যানাজার বলে ভাই রাগ করে লাভ নেই যা বলছে তা করুন তানা হলে কত রাত যে উপশ থাকতে হবে সেটা কল্পনাও করতে পারবেন না। সত্যি বলছি আমার জীবনের বাস্তব অভিগ্যতা থেকে। আল ম্যানাজার কথা শুনে আরও রেগে গিয়ে শপিং ব্যাগ গুলি হাতে নিয়ে সিমির পিছু পিছু হাটা দিয়েছে।
।
চলবে…
গল্প:-#তুমি_চাইলে_যেতে_পারো (পর্ব:-১৮)
লিখা:- AL Mohammad Sourav
।
সিমির কর্ম কান্ডে দিন দিন আমি অবাক হচ্ছি না বরং ওর প্রতি কেমন একটা ভালোবাসা তৈরি হচ্ছে এমন ভাবে সিমির সাথে সময় দিতে থাকলে একসময় আমি সিমির প্রেমে পড়ে যাবো নাহ যেভাবে হোক নিজেকে সিমির থেকে দূরে দূরে রাখতে হবে এসব ভাবতে ভাবতে সিমিকে নিয়ে গাড়ীতে উঠে বসেছি। সিমি আমার দিকে তাকিয়ে দেখে আমি কিছুটা ঘেমে গেছি তখনি সে তার ওরনাটা দিয়ে আমার চেহারার ঘাম মুছতে চায়ছে তখনি আমি ওর হাত ধরে বলি।
আল:- এসব সস্থা কাজ করে আমার মনে জায়গা পাওয়ার চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে দাও।
সিমি:- আপনার মনে আমার জায়গা তৈরি করার জন্য আমি এসব কিছুই করছি না। আপনি শুধু বলে দিন আমাকে বিয়ে করার জন্য শাওনকে টাকার অফার করেছেন কেনো?
আল:- সেই কখন থেকে এক প্রশ্ন করে যাচ্ছো? সব উত্তর সময় হলে পাবে তবে তার জন্য তোমাকেও আমার কিছু কাজ করে দিতে হবে।
সিমি:- আপনার কেমন কাজ করতে হবে আমি জানি তবে আগে আমার সব প্রশ্নের উত্তর চাই। তখনি আলের মোবাইলে ফোন আসছে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে ওর মা ফোন করছে রিসিভ করতেই বলে।
মা:- আনো কখন ধরে কান্না করছে মামুনির কাছে যাবে বলে। আর সিমি তো সেই কখন বেরিয়েছে এখনো আসার কোনো নাম গন্ধ নেই। সিমি কোথায় গেছে তোর কাছে কিছু বলে গেছে?
আল:- সিমি আমার সাথেই আছে আমি নিয়ে আসতেছি এই বলে ফোন কেটে দিয়েছে।
সিমি:- কে ফোন করেছে?
আল:- মা ফোন করেছে আনো কান্না করছে আমাদের এখুনি বাড়িতে যেতে হবে। দুজনে চুপচাপ হয়ে আছে আল নিজের মত করে গাড়ি চালাচ্ছে। সিমি মনে মনে ভাবছে ওনার কি এমন কাজ করতে হবে নিশ্চয় আমাকে দিয়ে ডির্ভোসের কাগজে সাইন করাবে এইটা ছাড়া আর কি কাজ হতে পারে? এসব মনে মনে ভাবছে আর বাহিরে তাকিয়ে আছে তখনি দেখে শাওন অন্য একটা মেয়ে নিয়ে বাইকে করে যাচ্ছে তখন বড় একটা নিশ্বাঃস নিয়ে বলে ছেলেরা এমন কেনো একজন মেয়ে মানুষের সাথে ওদের সমস্যা কোথায়? ওরা এক নারীতে আসক্ত থাকতে পারেনা কারণ ওরা কখনো মনকে ভালোবাসে না ওরা ভালোবাসে সাদা চামড়া আর সুন্দর দে’হ’কে। যখনি কোনো সাদা চামড়া আর সুন্দর দে’হ ওদের চোখে পড়ে তখনি ওদের মাথা নষ্ট হয়ে যায়। আর যে সব দোষ ওদের হবে তা কিন্তু নয় আমরা মেয়েরাও আছি সুন্দর আর গুচিয়ে কথা বলতে পারলেই ছেলেটার চরিত্র সম্পর্কে না যেনেই তার হাতে নিজের সবকিছু দিয়ে দেয়। একটু সুন্দর আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বললে আমরা কোনো কিছু যাচায় না করেই ওকে ভালোবাসি অথচ সে আমাদের মত কত মেয়ের জীবন নিয়ে চিনিমিনি খেলা করে সেটা তো পড়ে বুঝতে পারি যখন আমাদেরকেও ধোকা দিয়ে থাকে। এসব ছেলেদের জন্য আজ পুরুষ জাতী হয় কলঙ্ক আর মেয়েরা হয় লাঞ্চিত দিন শেষে ওরাই ভালো থাকে মাঝে থেকে ভালো মানুষ গুলির প্রতি আমাদের হারায় বিশ্বাস। সব ছেলেরাই যে এমনটা করে ঠিক তাও না কিছু মেয়ে জাতীর মধ্যে এমন অনেক আছে এক হাতে কি কখনো তালি বাজে দুইটা হাতের দরকার পড়ে। তখনি গাড়িটা থামছে আর আল বলে তুমি বাড়ির ভেতরে যাও আমি গাড়িটা রেখে আসতেছি। সিমি কিছু না বলেই মন খারাপ করে বাড়িতে গেছে। আল গাড়িটা রেখে যখন আসতেছে তখনি শপিং ব্যাগের কথা মনে পড়ছে। কিছুটা বিরক্ত হয়ে শপিং ব্যাগ গুলি গাড়ির ভেতর থেকে বের করে নিজেই বাড়ির ভেতরে নিয়ে প্রবেশ করেছে। আলের হাতে এত শপিং ব্যাগ দেখে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- আল এত শপিং কার জন্য করেছিস? আল কিছু না বলেই ব্যাগ গুলি হাতে নিয়ে সোজা উপরে চলে গেছে।
ভাবি:- দেখছো ঝিনুক আল কিছু না বলেই চলে গেলো?
দাদী:- আহা তোমরা দুজনে আবার শুরু করেছো? আল হয়ত সিমির জন্য শপিং করে নিয়ে এসেছে। কেনো তোমাদের জামাই তোমাদের সাথে নিয়ে যখন ব্যাগ ভর্তি করে শপিং নিয়ে আসে তখন তো তোমরা অনেক খুশি থাকো আর তোমাদের তো কেউ কখনো কিছু জিজ্ঞেস করে না। আলের দাদীর কথা শুনে সবাই চুপচাপ হয়ে গেছে এতক্ষনে আল রুমে গেছে। রুমে ঢুকে দেখে সিমি আনোর সাথে দুষ্টমি করছে। ব্যাগ গুলি রেখে আল ওয়াশরুমের চলে গেছে।
আনো:- মামুনি তুমি আমাকে রেখে কোথায় গেছিলে?
সিমি:- একটু বাহিরে কাজ ছিলো মামুনির সেই কাজটা করতে গেছিলাম। ওরা দুজনে গল্প করছে এর মাঝে আল ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়েছে।
সিমি:- মামুনি তুমি বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি আমরা অনেক গল্প করবো কেমন?
আনো:- ঠিক আছে। সিমি ফ্রেশ হতে গেছে আল আনোর পাশে বসে আনোর সাথে খেলা করতে আরম্ভ করেছে কিছুকক্ষণ পর সিমি ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে। আল সিমির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারছে সিমি কিছুটা মন খারাপ করে আছে। আল নিজের মত করে মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারান্দায় গেছে তখনি শাওন ফোন করেছে আল সাথে সাথে রিসিভ করেছে।
শাওন:- আল সাহেব আপনি তো সিমিকে নিয়ে গেছেন এখন আমি কি করবো? তবে আপনার জন্য একটা অফার আছে আগামীকাল কোনো এক কফি সপে বসে সেই অফারটা দেয় কি বলেন?
আল:- ঠিক আছে বলেই ফোনটা কেটে দিয়েছে। আল মনে মনে ভাবছে একবার সিমিকে জিজ্ঞেস করবো? নাহ থাক সিমি জানতে পারলে খুব কষ্ট পাবে আবার এমন আছে অনেক বড় দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে তাঁর থেকে ভালো আমি শাওনের সাথে টাকার বিনিময়ে কাজটা শেষ করে ফেলি এসব ভাবতেছে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- লতা ডেকে গেছে খাবার টেবিলে যেতে। যদি খেতে ইচ্ছে হয় তাহলে আসুন।
আল:- আমার ক্ষিদা নেই তুমি যাও। সিমি কিছু না বলে আনোকে সাথে নিয়ে খাবার টেবিলে গেছে। সবাই সবার মত করে রাতের খাবার খেয়ে যার যার ঘরে চলে গেছে। সিমি আনোকে নিয়ে রুমে এসে বারান্দায় একটু
তাকিয়েছে নাহ আল রুমে বারান্দায় কোথাও নেই। সিমি মনে মনে ভাবছে এত রাতে গেছে কোথায় তখনি আনো বলে।
আনো:- মামুনি আসো ঘুমাবো। সিমি আনোকে সাথে নিয়ে শুয়ে পড়েছে। আনোকে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেই ঘুমিয়ে গেছে। রাত দুইটার দিকে সিমির ঘুম ভেংগেছে চারদিকে দিকে তাবিয়ে দেখে আল এখনো ঘরে আসেনি আনোকে ভালোবাসে শুয়িয়ে দিয়ে দরজাটা হালকা করে লাগিয়ে ছাদের দিকে প্রথমে গেছে। গিয়ে দেখে ছাদের উপরে আল পায়চারি করছে আলকে দেখে সিমির চিন্তা দূর হয়েছে। আল সিমিকে দেখতে পেয়েও না দেখার মত করে পায়চারি করতেছে তখনি সিমি গিয়ে বলে।
সিমি:- কি হলো আপনি এখনো এত রাতে ছাদের উপরে কি করছেন?
আল:- তুমি এখানেও চলে এসেছো? তুমি কি আমাকে একটু শান্তিতে থাকতে দিবে না?
সিমি:- সবকিছু নিজের মনের মধ্যে চেপে রাখলে শান্তি পাবেন কোথা থেকে? বুকের মধ্যে সব কথা লুকিয়ে না রেখে কিছু কথা বলে ফেলুন কারো বিরুদ্ধে অভিযোগে থাকলে সেইটা বের করে ফেলুন তাহলে অন্তঃত নিজে শান্তি পাবেন।
আল:- আমি আগে খুব ভালো কেনো জানি তোমাকে বিয়েটা করতে গেলাম। সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে হচ্ছিলো এখন যত সমস্যা শুরুহয়ছে সব তোমার জন্য।
সিমি:- আমার জন্য আপনার সমস্যা হচ্ছে? আপনি একবার চিন্তা করে দেখুন আমার জন্যই আনো আজ আপনার কাছে। আমার জন্য মালা তার ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পারছে। আমার জন্যই আজ ঝিনুক আপা তার স্বামীর ঘর করতে পারছে। আমার জন্যই আপনার বাড়ির সবাই আপনাকে ভালো বলতে বাধ্য হয়ছে। আর আজ আপনি বলছেন সব সমস্যার মূল আমি? বলেন আমি আপনার কি এমন সমস্যা তৈরি করেছি?
আল:- সব শুনে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে তো মিস সিমি রহমান?
সিমি:- কেনো পারবো না আমার জানা মতে আমি এমন কোনো অন্যায় কাজ করিনি যার জন্য নিজেকে কষ্ট পেতে হবে! আপনি বলুন আমি আপনার জীবনে কি সমস্যা তৈরি করেছি?
আল:- এত যেহেতু শুনার আগ্রোহ তোমার তাহলে শুনো তবে তার জন্য তোমাকে আমার একটা কাজ করে দিতে হবে।
সিমি:- ঠিক আছে করে দিবো তাও বলেন আমি কি সমস্যা তৈরি করেছি? তখনি আল কিছুটা হেসে বলে উঠে।
আল:- তুমি আর শাওন মিলে যে আকাম কুকাম করেছো সেই ভিডিও শাওনের কাছে আছে। শাওন বলেছে তোমাকে যদি না পায় তাহলে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে। তখনি সিমি আলের একদম কাছে এসে ওকে ঠাসস করে একটা থাপ্পড় মেড়ে দেয়। আল সিমির দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে তোমার এত বড় সাহোস হলো কি করে আমাকে থাপ্পড় দেবার? বলেই আল সিমিকে থাপ্পড় দিতে যাই তখনি সিমি বলে
সিমি:- সবাইকে নিজের মত করে ভাবেন তাইনা? আমি শাওনের সাথে কোনো আকাম কুকাম করিনি। শাওনের সাথে আজ অব্দি আমার একটা ছবি পর্যন্ত উঠানো হয়নি। আর আপনি বলছেন শাওনের সাথে আমি আকাম কুকাম করেছি আর সেই ভিডিও ওর কাছে আছে ছিঃ আপনি এতটা নোংরা মনের মানুষ আমার জানা ছিলো না। আল সিমির থাপ্পড় খেয়ে অনেকটা রেগে থেকে ওকে থাপ্পড় দিতে চায়ছে কিন্তু থাপ্পড় না দিয়ে তখন বলতে আরম্ভ করে।
আল:- তুমি বলছো তোমার সাথে শাওনের তেমন কোনো সম্পর্ক হয়নি তাহলে শাওন কেনো আমার অফিসে এসে নিজে এসব কিছু বলে গেছে আর প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকি দিচ্ছে তোমাকে ওর কাছে দিয়ে দিতাম আর সাথে দশ লক্ষ টাকা।
সিমি:- শাওন আপনাকে বোকা বানাচ্ছে। আমার নিশ্চিন্তে বলতে পারি আমি আচ পর্যন্ত কোনো ছেলের সাথে কোনো রকম খারাপ কাজ করিনি। আপনাকে কি শাওন ভিডিও দেখিয়েছে নাকী শুধু হুমকি দিচ্ছে? তখন আল কিছুটা চুপ থেকে বলে।
আল:- শাওন বলেছে ভিডিওটা আমাকে তখনি দেখাবে যখন তোমাকে ডির্ভোস দিয়ে ওকে দশ লক্ষ টাকা দিবো। তাঁর জন্যই আমি তোমাকে শাওনের কাছে দিয়ে আসছিলাম।
সিমি:- শাওন আপনার সাথে গেইম খেলেছে সত্যি বলতে শাওনের কাছে কোনো রকম ভিডিও নেই। আপনি ওকে ডেকে বলেন আগে ভিডও দেখাতে তারপর আপনি টাকা আর ডির্ভোস দিবেন। আমি নিশ্চিৎ ও আপনাকে কিছুই দেখাতে পারবে না আর তাছাড়া সে আপনার সাথে কোনো দিন দেখা করবে না।
আল:- তুমি চা বলতেছো সব সত্যি বলতেছো তুমি আজ অব্দি শাওনের সাথে তেমন কিছুই করোনি?
সিমি:- হ্যা হ্যা হ্যা আমি কিছুই করিনি আর কতবার চিল্লাইয়া বললে আপনি বিশ্বাস করবেন? আর তাছাড়া আপনি এত বোকা কেনো? নিজের চোখে আজকাল দেখেই মানুষ বিশ্বাস করেনা আর আপনি শুধু মাত্র শাওনের কথা শুনেই এমন করছেন কেনো?
আল:- ঠিক আছে আমি তোমার কথা মত শাওনকে ডেকে জিজ্ঞেস করবো আর ওকে বলবো কানা কুড়িও দিবো না যা পারে তা করতে।
সিমি:- হ্যা বলুন তাহলেই তো সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। তখনি বুঝতে পারবেন কে সত্যি বলছে আর কে মিথ্যা বলছে।
আল:- ঠিক আছে আগামীকাল তাহলে সবটা পরিষ্কার হবে। তবে তুমি আজ একটা কথা বলো শাওনের সাথে যে আমার দশ লক্ষ টাকার চুক্তি হয়ছে সেইটা তুমি জানতে পারলে কি করে?
সিমি:- ঐদিন কফি সপে জানতে পারি শাওন মোবাইলে কাকে যেনো বলছে আল সাহেব সিমিকে বিয়ে করার পর টাকাটা দিলেই আমরা দুজনে পালিয়ে যাবো পরে সিমিকে ডির্ভোস দিয়ে দিবো।
আল:- কি? ওর এত বড় সাহোস ঠিক আছে আমি ওকে আগামীকাল দেখে নিবো বলে আল নিচে চলে এসেছে সিমিও আলের পিছু পিছু নিচে এসেছে। সিমি তখনি বুঝতে পারছে শাওন আলকে কোনো কিছু দিয়ে ফা’সা’চ্ছে দুজনে রুমে এসে যার যার জায়গাতে শুয়ে পড়েছে।
আজ খুব তাঁড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেছে আল ফ্রেশ হয়ে নাস্তা না করেই অফিসে চলে গেছে। অফিসে গিয়ে শাওনকে ফোন করেছে কিছুকক্ষণ রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ করেছে আর তখনি বলি।
আল:- আমি ঘন্টা খানেকের ভিতরে ওল্ড কফি হাউসে আসতেছি তুমিও আসো সেখানে বসে আমাদের কাজটা শেরে নিবো। তবে আসার সময় সবকিছু সাতে করে নিয়ে এসো আমিও তোমার জন্য সবকিছু নিয়ে আসতেছি।
শাওন:- ঠিক আছে বলে ফোন কেটে কিছুটা হেসে দিয়ে বলে। শালা বড় লোক গুলি একটু বেশি বোকা হয়। নিজের বৌকে অন্যের হাতে তুলে দেয় আবার টাকা চাইলে টাকাও দেয় সত্যি এরা বলদ হয় কিন্তু কি করে এত টাকা পয়সা কামাই কে জানে এসব ভাবতে ভাবতে শাওন ফ্রেশ হয়ে ওল্ড কফি হাউসের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে আর এদিকে আল ইসলাম আজ নিজেকে আগের রূপে নিয়ে বেরিয়েছে। শাওন আগেই চলে এসেছে আল কিছুটা পরে এসেছে দুজনে কর্নারে একটা টেবিলে বসেছে তখনি আল বলে।
আল:- শাওন আজকেই আমি সবকিছু শেষ করতে চাই। আমি টাকা নিয়ে এনেছি তুমি ভিডিওর ডুকমেন্ট দাও।
শাওন:- ভিডিওর কথা তো ছিলো সিমির সাথে আপনার ডির্ভোস হবার পরে দিবো।
আল:- এক হাতে ভিডিওর সব ডুকমেন্ট আর অন্য হাতে টাকা পাবে। আর আমি অলরেডি সিমিকে গতকাল রাতে ডির্ভোসের কাগজে সাইন করিয়ে নিয়েছি। এখন ভিডও দাও আর টাকা নিয়ে যাও তখন শাওন তার পকেট থেকে একটা মেমোরি বের করে আলের হাতে দিয়ে বলে।
শাওন:- এইটাতে সবকিছু আছে আপনি চাইলে ভেংগে দিতে পারেন। তখন আল মেমোরি হাতে নিয়ে বলে।
আল:- আগে তো দেখি সত্যি সত্যি এটাতে কিছু আছে নাকী আমাকে বোকা বানাতে চাচ্ছো? তখনি শাওন কেমন করে উঠে আর কিছুটা ভয় পেয়ে গেছে।
শাওন:- আমাকে বিশ্বাস করুন এটাতে সব আছে।
আল:- আমি তো নিজেকেই বিশ্বাস করি না আর তোমার কোথায় বিশ্বাস করবো! আগে নিজের চোখে দেখবো তখন বিশ্বাস করবো বলেই মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে মেমোরিটা মোবাইলে লাগাতে যাবে তখনি শাওন বলে।
শাওন:- এমন একটা পরিবেশ আপনি এসব দেখবেন কি করে? এর থেকে ভালো আপনি বাড়িতে গিয়ে আরামছে দেখুন?
আল:- কফি হাউসে এখনো তেমন কোনো লোক আসেনি এত সকালে আমরা দুজন ছাড়া আর কেউ নেই বলেই মেমোরি মোবাইলে ঢুকিয়েছে তখনি শাওন বলে।
শাওন:- সরি মিষ্টার আল সাহেব আমাকে ক্ষমা করুন আসলে সিমির সাথে আমার তেমন কোনো সম্পর্ক হয়নি। আমি সিমিকে ভালোবাসি আর সিমি আমাকে ভালোবেসেছে এটা সত্যি কিন্তু কোনো দিন সিমির সাথে এমন কোনো খারাপ করা হয়নি সিমি নিজেকে অনেকটা সেইব রেখেছে এসব থেকে তখনি আল শাওনকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। আর ওর সাটের ক্লার টেনে ধরে।
আল:- কেনো আমার সাথে এমনটা করেছিস আমি তোকে পুলিশে দিবো তোর জন্য আমি সিমিকে কতটা অবিশ্বাস করেছি? আজ সিমি আমাকে নোংরা মনের মানুষ মনে করে।
শাওন:- আসলে এসব কিছু করেছি সিমির মামাত ভাই রনির পাল্লাই পড়ে ও বলেছিলো এমন কিছু করলে আমি টাকাও পাবো আর সাথে সিমিকেও পাবো। আপনার আগের বৌ নাকী আপনাকে ডির্ভোস দিয়েছে আপনি নাকী ঠিক মত ঐ বৌয়ের চাহিদা মেঠাতে পারেন না বলে।
আল:- রনি এসব করেছে?
শাওন:- হ্যা রনি এসব বলেছে আর আমাকে সবকিছু রনি শখিয়ে দিয়েছে কি ভাবে কি করতে হবে? রনি এটাও বলেছে সিমিকে আমি বিয়ে করার কিছুদিন পরে ডির্ভোস দিবো আর তখন সেই সুযোগে সে সিমিকে বিয়ে করবে।
আল:- যদি তোর কথা স্যতি হয় তাহলে তোর কোনো ক্ষতি করবো না আর যদি রনির কথা মিথ্যা হয় তাহলে তোদের দুজনকে আমি পুলিশে দিবো। তখনি শাওন তার পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে রনির সাথে যে কথা গুলি হয়ছে সবকিছু শুনিয়েছে। আল সব শুনে একটা পুলিশ অফিসারকে ফোন করে রনির সম্পর্কে সবকিছু বলেছে আর ওকে থানায় নিয়ে কিছু উত্তম মাধ্যম দিবার জন্য আর আকার ইঙ্গিতে ওনাকে কিছু বুঝিয়ে দিয়েছে। আল শাওনকে ছেড়ে দিয়েছে শাওন সরি বলে ক্ষমা চেয়ে চলে গেছে। আল নিজের উপর রাগ করছে এতসব কিছু করার আগে একবার অন্তঃত সিমিকে জিজ্ঞেস করে নিলে ভালো হতো এত কিছু হতো না। এসব ভাবতে ভাবতে অফিসে এসেছে। অফিসে আজ কিছুটা রিলেক্স হয়ে কাজ করছে এমন সময় কোহিনুর ফোন করেছে আল রিসিব করতেই বলে।
কোহিনুর:- আল আপনাকে যে বলেছি তার তো খবর আমাকে জানান নাই? তাহলে আমি কি আমার কাজ করে নিবো?
আল:- আজকের দিনটা সময় দিন আমি আগামীকাল সিমিকে নিয়ে আপনার সাথে দেখা করবো?
কোহিনুর:- ঠিক আছে সময় দিলাম তবে আগামীকালের পরেই কিন্তু আপনার জীবনে ধ্বস নেমে আসবে বলে দিলাম।
আল:- হ্যা জানি বলেই ফোনটা কেটেছে। আবার চিন্তায় পড়ে গেলো এখন কি করবে আল? দূর কিছু ভালো লাগছে না সিমি কি রাজি হবে কোহিনুরকে সরি বলতে? যেভাবে হোক সরি বলাতে রাজি করাতে হবে একটা সরি বলার কারণে যদি আমার এত বড় ক্ষতি থেকে বেচে যায় তাহলে সিমির সরি বললে সমস্যা কি হবে। এসব ভাবতে আজ অনেক দেরী হয়ে গেছে। আল আজ অনেক দেরী করে বাড়ীতে গেছে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- কি হলো শাওন কি ভিডও বা কোনো ডুকমেন্ট দিয়েছে?
আল:- নাহ তুমি যা বলেছো তাই হয়ছে তবে এসব কিছু করিয়েছে তোমার মামত ভাই রনি। আর রনিই সব খবর দিয়েছে শাওনকে।
সিমি:- আমার মনে হয় এসবের পিছনে বাবা রনিকে সাহায্য করেছে। তানা হলে রনি এতকিছু জানতে পারতো না।
আল:- তুমি ঠিক ধরেছো সবকিছু তোমার বাবা করিয়েছে। তবে আমি শাওনকে ওয়ার্নিং দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি আর পুলিশকে বলেছি রনিকে উত্তম মাধ্যম দিতে।
সিমি:- এবার তো আমার কোনো দোষ নেই আমার জন্য তো আপনার আর কোনো সমস্যা নেই?
আল:- একটা বড় রয়ে গেছে আর সেইটার জন্য তোমাকে একজনের কাছে সরি বলতে হবে তুমি সরি বললে সমস্যাটা সমাধান হয়ে যাবে।
সিমি:- শুধু সরি বললে যদি সমস্যা সমাধান হয়ে যায় তাহলে আমি সরি বলতে রাজি আছি তবে কার সরি বলতে হবে?
আল:- আগামীকাল তোমাকে আমি নিয়ে যাবো এই বলে আল ওয়াশরুমে চলে গেছে। সিমি মনে মনে ভাবছে কার কাছে নিয়ে যাবে এসব ভাবতে ভাবতেই আনোকে নিয়ে নিচে গেছে আল ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সেও নিচে গেছে। সবাই এক সাথে বসে খাবার খেয়ে যার যার ঘরে চলে গেছে। আজকের রাতটা তেমন কোনো ঝগড়া করেনি ওরা দুজনে সকালে আল অফিসে গেছে আর সিমি আনোর সাথেই দুষ্টমি করছে দুপুরবেলা আল বাড়ীর মোবাইলে সিমিকে ফোন করে বলেছে আনোকে রেখে সিমি যেনো খুব দ্রুত আলের অফিসে যাই। সিমিও আনোকে লতার কাছে রেখে খুব দ্রুত একটা সি এন জি নিয়ে আলের অফিসের সামনে নামতেই দেখে আল দাঁড়িয়ে আছে। আল নিজেই তাঁর পকেট থেকে মানি ব্যাগ বের করে সি এন জি ভাড়াটা দিয়েছে।
সিমি:- এত তাঁড়াতাড়ি আসতে বলছেন কেনো?
আল:- চলো আমার সাথে বলেই গাড়িতে বসিয়েছে।
সিমি:- গাড়িতে বসিয়েছেন কেনো? কোথায় যাবেন আপনি?
আল:- কথা কম বলো গেলেই বুঝতে পারবে বলেই গাড়ি চালাতে আরম্ভ করেছে। সিমি মনে মনে নানান রকম চিন্তা ভাবনা করছে। আল চুপচাপ গাড়ি চালাচ্ছে সিমির মনে কৌতূহল জাগতেছে তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্চে তখনি সেই কফিসপের সামনে গাড়িটা থামিয়েছে।
সিমি:- এখানে কেনো এসেছেন?
আল:- তোমাকে নিয়ে একা একা কফি খাবো বলে। চলো আমার সাথে বলেই সিমির হাতটা ধরে আল নিয়ে যাচ্ছে ভিতরে সিমি আলের দিকে তাকিয়ে আছে আর আল সিমিকে নিয়ে যাচ্ছে ওদের দুজনকে এমন ভাবে যেতে দেখে অনেকেই তাকিয়ে আছে। ভেতরে প্রবেশ করে একদম মাঝের একটা টেবিলে গিয়ে বসে মোবাইলটা বের করে শুধু বলেছে আমরা এসেছি আপনি কোথায় এই বলে ফোনটা কেটে দিয়েছে।
সিমি:- কাকে ডাকছেন আপনি? তখনি একজন এসে বলে যাক তাহলে আপনি আপনার লোকশান থেকে বাচতে শেষ মেষ রাজি করিয়ে নিয়েছেন আমাকে সরি বলার জন্য? সিমি চেয়ে দেখে সেদিনের মেয়েটি মানে কোহিনুর সামনে দাঁড়িয়ে কথাটা বলেছে।
আল:- হ্যা সিমি আপনাকে সরি বলতে রাজি আছে। সিমি তুমি ওনাকে সরি বলো আর বলো ম্যাডাম আমার ভুল হয়েছে সেদিন এমনটা করা আমার উচিত হয়নি তখনি কোহিনুর বলে।
কোহিনুর:- মিষ্টার আল সাহেব শুধু সরি বললে তো হবে না সাথে আপনাকেও ডির্ভোস দিতে হবে আপনি সেইটা বলেন দিতে? ও আপনাকে ডির্ভোস দিলে তো আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো তাইনা মিষ্টার আল ইসলাম। ঠিক তখনি সিমি রেগে মেগে আগুন হয়ে বলে।
সিমি:- ঐ তুই কে আর তোকে আমি সরি বলবো কেনো? তোর লজ্জা নেই সেইদিন তোকে এত অপমান করার পরেও কি তোর লজ্জা হয়নি?
আল:- সিমি তুমি কি বলছো আমার অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে প্লিজ তুমি থামো প্লিজ।
সিমি:- ঐ আপনি চুপ থাকেন আমাকে বলতে দিন ওকে আমি সরি বলবো না। আর তোকে বলি আজকের পর যদি আমার স্বামীর আশে পাশে তোকে দেখি তাহলে তোকে খু`ন করে ফেলবো। ওনি এসেছে আমার স্বামীকে বিয়ে করতে! তুই এখুনি আমার চোখের সামনে থেকে যা তানা হলে আমি তোর গাঁয়ের উপরে হাত তুলে ফেলবো।
কোহিনুর:- মিষ্টার আল ইসলাম আজকের অপমানের জন্য আপনি তৈরি থাকুন। আমি এখান থেকে যাওয়া মাত্রই আপনার কামডাউন শুরু হয়ে যাবে বলেই কোহিনুর চলে যেতেছে।
আল:- সিমি তুমি নিজেও জানো’না আমার কত বড় ক্ষতি করেছো সত্যি যদি তুমি আমাকে ভালোবাসো তাহলে ওর কথা মত কাজটা করে দাও প্লিজ বলেই কোহিনুরকে ডাক দিয়ে ওর কাছে গেছে।
কোহিনুর:- দেখুন মিষ্টার আল এখন যদি ও আমার পায়ে পড়ে তাও আমি আপনার কোনো কথা শুনবো না। তখনি আল চেয়ে দেখে সিমি কান্না করতে করতে কফিসপ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে আর তখনি আল বলে।
আল:- মিস কোহিনুর আপনি যা খুশি করতে পারেন সিমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইবে না আর সিমি যদি নিজেও রাজি হয় তাও আমি ওকে ক্ষমা চাইতে দিবো না। আপনার মত অহংকারী মেয়ের কাছে কখনো আমার ভালোবাসার মানুষটাকে নিচু হতে দিবো না। আমারো ইচ্ছে ছিলো সিমি যেনো তোমার কাছে ক্ষমা না চাই আর সিমি সেইটা প্রমাণ করেছে সেই আমার এক মাত্র যোগ্য স্ত্র হয়ে থাকবে তুমি যা খুশি করো আমি এখন আর কিছু পরওয়া করি না বলেই আল সিমিকে খোঁজতে চলে গেছে।
।
চলবে….