#গল্পপোকা_কবিতা_লিখন_প্রতিযোগিতা
কবিতা: তিলোত্তমা
লেখানীতে: ফাতিমা আক্তার অদ্রি
তিলোত্তমা!
ভালোবেসে নিবেদন করেছি অর্ঘ্য
তোমার পদতলে, ভালোবাসার চিহ্ন স্বরূপ।
স্বদর্পে, কোমল পাদদেশ মাড়িয়ে,
নির্বিকার ভঙ্গিতে চলে গেলে,
ফিরেও তাকালে না একটিবার!
তিলোত্তমা!
তোমার দীর্ঘ কালো কেশের নেশা যে দু’চোখে ধরেছে;
রাতের নিস্তব্ধতায়ও দু’চোখের পাতা আর এক হয় না।
তোমার ভালোবাসার কাঙ্গাল বানালে আমায় অবলীলায়।
অথচ কী নির্দয় তুমি; আমায় ভালোবাসা দিলে না!
তিলোত্তমা!
জোনাকির পিঠের আলো জ্বলে উঠে পুনরায় নিভে যাওয়ার মতোই;
তুমিও ভালোবাসার লেলিহান শিখা জ্বালিয়ে দিলে আমার হৃদয় মন্দিরে।
ফলস্বরূপ লাভা নামক অগ্নি ফুলকি জ্বলে উঠে আবার নিভে!
তিলোত্তমা!
তুমি কি মোমবাতির মতো করে একবার ভালোবাসবে আমায়?
আমার হৃদয় মন্দিরের প্রাঙ্গণ জুড়ে জমেছে অভেদ্য ধুলোর পুরু স্তর!
সেথায় একটিবার তোমার পদচিহ্ন যদি ফেলো
তবে ধন্য হবে আমার হৃদয়ও প্রান্তর, তোমারই স্পর্শে।
তিলোত্তমা!
আমার শত আকুতি, ব্যথা ভরা মিনতি,
সহাস্যে তাচ্ছিল্য ভরে অগ্রাহ্য করলে তুমি!
এগিয়ে গেলে সম্ভাবনার এক নতুন ভোরের দিকে।
আমার হৃদয়ও মন্দিরের ধুলোর পুরু স্তরে আজ বিষাক্তবাণ!
তিলোত্তমা!
অবশেষে আজ জীবন সায়াহ্নে এসেও
তোমায় নৈবেদ্য অর্পণ করতে হৃদয় ব্যাকুল!
আজও আমি খুঁজেই চলেছি তোমার ভালোবাসা।
আজও ভোরের শিউলি ফুল যখন বিকেলে ঝরে পড়ে;
তখনও ভাবি তাদের উৎসর্গ করব তোমার নামে, তোমারই পাদদেশে, আমার হদয়ও মন্দিরে!
তিলোত্তমা!
জানি জীবনবসান হলেও তুমি হবে না আমার!
তবুও এমন আবদার করেছিলাম বৈ কী কৈশোরের তাড়নায়!
আজও এমনই আবদার করি বেদনায় সিক্ত নেত্রপল্লব বুজে।
তিলোত্তমা!
হেলায় উড়িয়ে দিলে কৈশোরের সেই ভালোবাসা
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ালে আমায় তোমার রুপেরও প্রবঞ্চনাতে!
আমি মৌতাত হয়ে ডুবে গেলাম সেই বিষাক্ত সায়রে।
তিলোত্তমা!
গাছ থেকে ঝরে পড়া পুষ্প তোমায় দেব না,
সদ্য ফুটন্ত স্নিগ্ধতায় জড়ানো পুষ্পের অঞ্জলি দেব তোমায়।
আজও আঁখিরও পল্লবে নির্নিমেষ তোমার বসবাস,
হৃদয়ও মন্দিরের প্রাঙ্গণে রক্তিম ধারা প্রবাহিত হলো!
অথচ তবুও তুমি কী ভীষণ নির্বিকার!
তিলোত্তমা!
আজি আমার এই জীবন সায়াহ্নে এসে,
চিরতরে চোখ বুজার আগে, ফের আকুতি জানাতে
প্রেমও ভিখারি হয়ে এসে দাঁড়ালাম তোমার দুয়ারে,
শুধু একবার বলো ভালবাসবে আমায়, তুমি আমার মতো করে!
তিলোত্তমা!
একবার কি ভালোবাসবে আমায়?
তুমি আমার মতো করে!
জীবনাবসান হলেও আক্ষেপ রবে না-কো…!
ধুঁকে ধুঁকে যেন উড়ে না যায় খাঁচার ভেতর পোষা অচিন পাখিটি।
নীরব রাতের নিস্তব্ধতা সাক্ষী, আজও তুমি এলে না!
অচিন পাখিটি একটা বারও ডানা ঝাপটাতে পারলো না…!
তিলোত্তমা!
খাঁচায় বন্দী পাখি উড়ে যাবার মুহূর্ত ঘনিয়ে এলো!
চিরতরে নেত্রদ্বয় মুদে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বোধোদয় হলো আমার,
তুমি ছিলে আমার এক আজন্ম আরাধনা!
পূজার নিমিত্তে অর্ঘ্য নাম্নী অনভিপ্রেত অভিলাষ।
_______________