তবু আছি কাছাকাছি (Doctors love) Part-37

0
2667

#তবু_আছি_কাছাকাছি(Doctors love)?
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_37
?
.
.
মিহির সামনে বসে আছে সাদি। পাশে দাঁড়ানো সুমু। সাদির মুখ লাল হয়ে আছে। তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে কি রকম ভয়ংকর ভাবে রেগে আছে সে। পাশে দাঁড়িয়ে সুমু বাঁকা হাসছে। আর মিহি ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে বসে আছে। সুমু সামনে না থাকলে আজ সাদি তার বারোটা বাজিয়ে ছাড়তো। এবার বলি কাহিনী।

সুমুকে মিহি লোক দিয়ে কিডন্যাপ করে এনেছিলো। সুমুর চোখ বেধে দিয়েছিলো বিধায় প্রথমে সুমু বুঝতে পারে নি এটা মিহির কাজ। তাকে চেয়ারের সাথে বাধা হয়েছিল। দুইজন লোক সুমুকে বেধে ওইরুম থেকে বের হতেই মিহি প্রবেশ করে। সুমু ইচ্ছা করেই চিৎকার করছিলো, আসলে তার উদ্দেশ্য ছিলো সামনের মানুষদের ডিস্ট্র‍্যাক করা। তার মধ্যেই মিহি এসে বিরক্ত হয়ে সুমুর মুখটাও বেধে দিলো। আর সামনে বসে সুমুকে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে লাগলো। সুমুর তাতে বিন্দুমাত্র মন নেই। তাও মিহিকে ডিস্ট্র‍্যাক করছে। সুমুর মুখের বাধন খুলে বলে,

মিহিঃ শুধু মাত্র তোর জন্য সাদি আজ আমার নয়! ও যে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলবে তা আমি ভাবতেই পারছি না।

—ওহ আচ্ছা তাই নাকি? কই ছিলা এতোদিন? সাদির বয়স ৩০ পার হয়ে যাচ্ছে এখন আসছো বিয়ে করতে? ধুর! কয়দিন পর আসতে! তাহলে হয়তো আমাদের বাচ্চার মুখেভাত দেখতে পারতে।

মিহি রাগে ফুঁসছে। পা দিয়ে কয়েকবার ফ্লোরে ধুপধাপ আওয়াজ করেছে। সুমুর বেশ আনন্দ লাগছে মিহিকে জ্বালাতে পেরে। মিহি সুমুর চোখের বাধন খুলে দেয়। সুমু একটা শ্বাস ফেলে নিজের কাজে লেগে পড়ে৷ এতোক্ষন সুমু হাত ঘুরিয়ে দেখছিলো তাকে বাওলিন নটে বাধা হয়েছে। সুমু হালকা হেসে দেখলো মিহি সামনে। একজন গার্ড মিহির ডানদিকে আর অন্যজন একটু দূরে দাঁড়ানো। সুমু কয়েকবার দরজার দিকে দেখলো অন্যকোন লোক আছে নাকি! হ্যাঁ আরো দুইজন আছে বাইরে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে ভালোই ভাঙা রড, কাঠের লাকড়ি রাখা! রুমটা অতিমাত্রায় অপরিষ্কার। তাদের একটা বিশেষ ভুল হলো তারা সুমুর পা বাধেনি। তা ভেবে সুমু একটু হাসলো। তারপর আস্তে আস্তে ডানহাত ঘুরিয়ে বাম হাতের কাছে রশির প্রান্তটা আস্তে করে ঢিল করলো৷ তারপর হাতের বিপরীতে যে প্রান্তটা আছে সেটা আরেকটু ঢিলা করে এই পাশের প্রান্ত খুলে নিলো, এতে অপরপ্রান্ত এমনিতেই খুলে গেলো। সুমু ফোনটা মিহির কাছে। যদিও নিয়ে বিশেষ সুবিধা করতে পারে নি। হার্ড পাসওয়ার্ড দেওয়া।

.
সুমু তাড়াতাড়ি এক লাফে উঠে মিহির পিছন থেকে হাতের কব্জি সামনে এনে গলায় পেচিয়ে ধরে ধাপ করে মিহিকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়েই পাশ থেকে একটা মোটা রড নিয়ে ধুমাধুম পিটাতে লাগলো ওই লোকগুলোকে। কৌশলে মারার জন্য সুমুর তেমন একটা খাটতে হয়নি। আবার মিহির দিকে ফিরে ওকে উঠতে না দিয়ে নিচ থেকে রশিটা নিয়ে মিহিকে তিন প্যাঁচ দিয়ে রশিটা পিছন দিক থেকে নুজ নট দিয়ে বাধলো। যার জন্য রশির প্রান্তটা পড়লো হাতের বিপরীতে। এতো টাইট করে বেধেছে যে হাত ঘুরাতে গেলে কেটেই যাবে। তারপর সুমু আবার ওই চারজন লোককে পিটাতে লাগলো। সুমু পুরো হাঁপিয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই সাদি হাজির! ও সুমুর ফোন ট্র‍্যাক করিয়ে এখানের ঠিকানা পাওয়া মাত্র দৌড়াতে দৌড়াতে এসেছে। এসেই দেখে তার বউ একেকজনের হাল খারাপ করে দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছে মিহিকে বাধা দেখে। সুমু সাদিকে দেখে রডটা ফেলে দেয়। বাকি মারগুলো সাদিই দিতে থাকে। আর সুমু চেয়ারে হাত দিয়ে হেলান দিয়ে দেখছে আর হাসছে। মারামারি শেষে সাদি সুমুকে বলে,

সাদিঃ একবারো কি আমাকে হিরো হওয়ার চান্স দিবা না? সবসময় তুমিই মারো?

—তো কি করবো? তুমি তো বাংলা সিনেমার পুলিশের মতো লেট লতিফ! মারামারি শেষ হওয়ার পর বাঁশি বাজাইতে বাজাইতে আসো! হাহা!

সাদিঃ সুমু! বাই দা ওয়ে!মিহি এখানে কি করছে?

—(হাসতে হাসতে) তোমার ফ্রেন্ডই আমাকে কিডন্যাপ করেছে। উদ্দেশ্য তোমাকে পাওয়া! হাহাহাহা!

বর্তমান,

সাদিঃ বিশ্বাস কর মিহি! আমার ইচ্ছা করতেছে তোরে এখানেই গেড়ে রাখি!

মিহি ভয়ে চুপসে গেছে।

—ধুর! এই দুর্বল মাইয়ারে মাইরা মজা পামু না। এটা রে কি করা যায় বলোতো। আবার একটা মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের ক্ষতি কিভাবে করি? তার উপর ইনি আবার প্রেগন্যান্ট!

সাদিঃ ওয়াট! মিহি তোর বিয়ে হইছে?

মিহি নিজেও অবাক! ও প্রেগন্যান্ট তা নিজেও বুঝতে পারলো না। তার মানে ওর বয়ফ্রেন্ড ওকে ধোকা দিছে।

—বাদ দাও তো ডাক্তারসাহেব! এই ক্যারেক্টারলেস মেয়েদের আবার বিয়ে লাগে নাকি! এটারে এর ফ্যামেলির কাছে হস্তান্তর করলেই হবে।

মিহি এবার কান্না শুরু করছে।

মিহিঃ প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও সুমু! আমার পরিবারকে জানিও না! ওরা অনেক কষ্ট পাবে! প্লিজ!

—তোমার প্লিজ গ্রান্টেড হয় নি। সরি। আমি এতো উদার না।

সুমু মিহির ফোন নিয়ে মিহির ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে লক খুলে ওর বাবার নাম্বারে কল করে তাকে সবটা জানালো। তিনি বললেন দুই ঘন্টার মাঝেই এসে মিহিকে নিয়ে যাবে।

.
সব ঝামেলা চুকিয়ে সুমু আর সাদি হোটেলে ফিরেছে। সুমু বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সে আর এখানে থাকতে চাইছে না। এসেছিলো বেড়াতে কিন্তু একটার পর একটা বিপদ আসছেই! তাই এই ট্রিপ ক্যান্সেল করে বাসায় ফিরবে তারা। সুমু নিজেই সাদিকে বলেছে এবার বাই এয়ার ফিরবে। ট্রেন জার্নি করার শক্তি নেই সুমুর। সাদিও কিছু একটা ভেবে রাজি হয়ে গেলো। পরদিনই বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হলো তারা।

.
বাসায় ফিরে সুমু কোনরকম ফ্রেশ হয়েই ঘুম দিয়েছে। সাদিও আর ডিসটার্ব করে নি। ডিনার নিজেই তৈরি করেছে। এভাবেই কেটে গেলো কয়েকটা দিন।

,,
,,
,,
,,
(চলবে)……..

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে