ডাইনামিক_হিস্ট্রি
পর্ব ০৬
সানজানা জামান
খাদ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় ওমেগার মনে হলো সে কোনো সুরঙ্গে প্রবেশ করছে।মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো সে।মাথার পিছনে হাত দিতেই চিপচিপে রক্ত ভেজা পেলো।এরপর বেহুশ হয়ে গেলো।কোথায় সে পড়েছে কিছু মনে নেই তার।
চোখ মেলে তাকালো ওমেগা।ঠিক কতক্ষণ বা কতদিন পর সে সম্পর্কে ধারণা নেই তার।সে হাওয়ায় ভাসছে বলে মনে হলো তার কাছে।আশে পাশে তাকাতেই দেখলো একটা ছোট খুপরি ঘরে হাওয়ায় ভাসছে সে।দেয়ালের আশেপাশে বিভিন্ন ধরণের চোখসহ আজগুবি নকশা আঁকা।আশেপাশে আবার চোখ ভুলিয়ে নিলো সে।এরপর চোখ বুঝে মুখে কিছু বির বির করলো।ঠাস করে পড়ে যেতে লাগলো সে।ওমেগা ভেবেছিলো সে সোজা ফ্লোরে যেয়ে পড়বে কিন্তু সে ফ্লোর ভেদ করে নিচের দিকে পড়ে গেলো।
হালকা হালকা ভাবে তাকালো ওমেগা।আবারো মাথায় আঘাত পেয়েছে সে।বেশ ভালো ভাবেই পেয়েছে।মাথায় হাত দিতেই কিছু হাতড়ে পেলো সে।টান দিয়ে মাথা থেকে খুলে নিয়ে এলো।এক ধরণের চামড়ার সাহায্য নিয়ে মাথা বাঁধা হয়েছিলো তার।কিন্তু এগুলো কিসের চামড়া কে-ই বা বেঁধে দিয়েছে।অথবা সেই বা আছে কোথায়?
রক্তমাখা মাথাটা বাঁধার জন্য নিজের শার্টের হাতা ছিড়ে ফেলে নিতে লাগলে খেয়াল করলো তার শরীর অবশ হয়ে আসছে।সে কিছুতেই শার্টের হাতা ছিড়তে পারছেনা।প্রচেষ্টা বাদ দিয়ে সে উঠে দাড়াতে লাগলো কিন্তু সে দাড়াতে পারছে না।অবশ হয়ে যাচ্ছে শরীর।নিজের সাথে বহু যুদ্ধের পর কিছুদূর আগাতে পারলো সে।তিন চোখ আঁকা এক দরজা দেখতে পাচ্ছে সে।দরজার আড়ে এসে ধপ করে বসে পড়লো ওমেগা।বিন্দুমাত্র চলার শক্তি যে নেই আর তার।
হাত দিয়ে একটুখানি দরজা ফাঁকা করলো সে।এরপর দরজার মাঝ বরাবর চোখ রাখলো।
একটা ঘরের সমস্তটুকু জুড়ে ইলুমিনাতির বিভিন্ন জিনিস আঁকা।কোথাও কোনো ইঞ্চি ফাঁকা নেই।ওমেগা বুঝতে পারলো সে এমন কোনো জায়গায় এসেছে যেখানে সরাসরি শয়তানের উপাসনা করা হয়।সাইডে চোখ চলে গেলো ওমেগার।সেখানে এক বিস্তর জুড়ে রক্তের দাগ লেগেছে।বিভিন্ন সীসা থেকে শুরু করে এক বড় কড়াইয়ে দাও দাও করে রক্ত ফুটছে।আর সেই রক্ত থেকে বেরিয়ে আসছে কিছু আর্তনাদ এবং কান্না।সারা শরীরে এক রোমহর্ষক শিহরণ বয়ে গেলো তার।কারো আসার শব্দে কিছুটা সরে গেলো ওমেগা।আবার চোখ রাখলো দরজার ফাঁকে।দেখলো দুইজন কেউ এলো ঘরটাতে।সাথে একজন মানুষকে নিয়ে এলো।দুইজনের সারাশরীরে ইলুমিনাতর চিহ্ন আঁকা।ওমেগা দেখলো মানুষটা আকুতি মিনতি করছে তাদের পা ধরে।মনে হচ্ছে মানুষটি কোনো মেয়ে।কিন্তু তারা কোনো কিছু শুনলো না।এর মধ্যে কোনো এক অদ্ভুত লম্বাটে বস্তু এসে তাদের হাতে কোদাল দিয়ে দিলো আর সেই কোদাল দিয়ে একজন মানুষটিকে দু’ভাগ করে ফেললো।চোখ বন্ধ করে ফেললো ওমেগা।এমন বস্তু চোখের সামনে দেখা অসম্ভব।আবার কিছুক্ষন পর চোখ মেললো ওমেগা।দেখলো তারা মানুষটাকে কাটছে এবং যত্ন সহকারে টুকরাগুলো সেগুলো চেটেপুটে খাচ্ছে।আর কিছু মাংস পাশে রেখে দিচ্ছে।এরপর সদ্য জবাই করা লোকটির রক্তগুলো তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে তারা।মুহুর্তের মাঝেই তাদের দানব ভ্যাম্পায়ার হয়ে উঠতে দেখলো ওমেগা এবং সেই সাথে গুটিখানিক ভ্যাম্পায়ার এসে তাদের কাছে রক্ত চাইতে লাগলো খাওয়ার জন্য।সবাইকে অর্ধ জবাই করা মাংসের দলার কাছে পাঠানো হলে তারা যেয়ে মাংসের দলা থেকে রক্তগুলো চেটেপুটে খেতে লাগলো।সে এক অসহ্যনীয় দৃশ্য।গা গুলিয়ে আসছে ওমেগার।সেই সাথে বুঝতে পারলো তার মাথায় তখন মানুষের চামড়া বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো।কিন্তু কারা এরা?চেহারার মধ্যে তিন চোখ ওয়ালা মাস্ক ঢেকে দেওয়া আর মুহুর্তের মাঝে দানব ভ্যাম্পায়ার হয়ে যাওয়া।সব গড়মিল লেগে যাচ্ছে তার।হঠাৎ মনে হলো কেউ তার দিকে এগিয়ে আসছে।সামনে আসতে আসতে দেখলো গুটিখানিক চোখজোড়া তার দিকে এগিয়ে আসছে।সাথে সাথে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেলো সে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
ওমেগা চোখ মেলে দেখলো যে সে শুয়ে আছে।তার পাশে বসে আছে এরিনের বাবা।চোখ মুখ ফুলে অবস্থা একাকার তার।
-আঙ্কেল আপনি এখানে?
-ওমেগা!তুমি দুইদিন যাবত এই হসপিটালে ছিলে।তোমাকে হাইওয়ে থেকে পেয়েছিলাম আমরা অজ্ঞান অবস্থায়।ডাক্তার বলেছে ব্রেইনে খুব এফেক্ট পড়েছে তোমার।
-আঙ্কেল এরিন কোথায়?
-ওকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না ওমেগা।শেষ এক সপ্তাহ আগে ওর সাথে কথা হয়েছিলো আমাদের।এরপর ওকে ওর বাসায় খুঁজতে যাই।কিন্তু ওকে নাকি কোথাও দেখা যায়নি।তারপর খোঁজ নিয়ে তোমার বাসায় যেতে নিলেই দেখি তুমি হাইওয়ে তে পড়ে আছো।রক্তে গড়াগড়ি খাচ্ছিলে।
ওমেগা যেন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।তার মানে সেই স্বপ্ন থেকে শুরু করে সবকিছু একদম সত্যি ছিলো?তারা কি এরিন কে মেরে ফেলেছে?সে কি হারিয়ে ফেলেছে এরিন কে?চিরদিনের জন্য?????
#চলবে…….