“ডাইনামিক হিস্ট্রি”পর্ব ০৪

0
763

“ডাইনামিক হিস্ট্রি”পর্ব ০৪

সানজানা জামান

পরের দিন সকাল বেলা বিছানায় শয়নরত অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করে ওমেগা।মাথা শরীর দুটোই যেন অবশ হয়ে আছে তার।কি হয়েছিলো কাল রাতে?মনে করার চেষ্টা করছে সে।যতদূর মনে পড়ে সে প্ল্যানচ্যাট করছিলো।তারপর আর কিছু মনে পড়ছে না তার।আবার নিজের মাথায় প্রেশার দিয়ে চেষ্টা করে মনে করার।শুধু মনে পড়ে সে এক ফ্যাক্টরি তে ছিলো আর তার হাতে ছিলো এক কোদাল।
-আমার হাতে কোদাল ছিলো কেন?
আবারও মাথায় হাত দিয়ে মনে রাখার চেষ্টা করে ওমেগা।কিন্তু তার কিছুতেই কিছু মনে পড়ছে না।এদিকে ডিপার্টমেন্ট থেকে কল আসলে জানায় যে ডক্টর মিলান কে বোধহয় কেউ মেরে ফেলেছে।তার রক্ত আর একটা আঙুল পাওয়া গেছে ফরেন্সিক ল্যাবের ফ্লোরে।কিন্তু তার বডি পাওয়া যাচ্ছে না।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওমেগাকে ওখানে যেতে বলে তারা।ওমেগা আর এক মুহুর্ত না বাড়িয়ে চলে যায় সেখানে।

একটু আগেই ফরেনসিক ল্যাব থেকে ফিরেছে সি আই ডি এর পুরো টিম।ওমেগাও ছিলো সেখানে।ফ্লোর থেকে রক্ত আর আঙুল কালেক্ট করা হয়েছে।এখন ডি এন এ পরীক্ষার উপরই ভিত্তি করছে যে আঙুল ব্লাড ডক্টর মিলানের ম্যাচ যায় কি-না।সবাই অপেক্ষা করছে টেস্টের রেজাল্ট আসার।ঘন্টাখানিক বাদেই সি আই ডি টিমের একজন অফিসার এসে জানান দিলো যে রক্ত আর আঙুল টা ডক্টর মিলান এরই।শরীর টা প্রচুর খারাপ লাগছে ওমেগার।তার উপর দিয়ে যেন কোনো এক ঝড় পার হয়ে যাচ্ছে।ডক্টর মিলানের জন্য খারাপ লাগছে তার।এই সি আই ডি সোর্স এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে পরিচিত হয় তারা।এর মধ্যে একজন হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসে অফিসে।
-স্যার আমার ছোট ভাই কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
-মানে খুলে বলুন সব!
-আমার ছোট ভাই ক্যামেরন ব্র‍্যান্ডের ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো।কাল রাতের বেলা বললো যে কিছু কাজ আছে।কাজ করেই এসে পড়বে।আজ বিকাল হয়ে গেলো এখনো আসেনি।ওকে খুঁজেছিও পাচ্ছি না।
-হয়তো কোনো ইমারজেন্সি কাজ পড়ে গেছে।এসে পড়বে।বাট আপনি তাকে কল দিয়েছিলেন?
-কল বাজছে।কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না।
-আপনার ছোট ভাইয়ের কোনো ছবি আছে? এতক্ষনে মুখ খুললো ওমেগা।
-হ্যাঁ আছে তো!লোকটি তার ফোন বের করে দেখালো।ওমেগার ছবি দেখে মনে হলো যে সে লোকটাকে আগে কোথাও দেখেছে।আবার কিছু মনে করার চেষ্টা করলো ওমেগা।কোদাল হাতে কোনো ফ্যাক্টরিতে দাঁড়িয়ে আছে সে।তার সামনে কেউ একজন আকুতি মিনতি করছে।কিন্তু সে যেন নির্বিকার।প্রশস্ত এক ভয়ানক হাসি দিয়ে লোকটাকে কোদাল দিয়ে জবাই দিলো সে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


আবার বর্তমানে ফিরে এলো ওমেগা।এ কি দেখলো সে?এমন তো নয় যে সেই লোকটিকে খুন করেছে?কিন্তু সে কিভাবে করবে?আর করলেও বা লাশ কোথায়?এক্ষুনি ফ্যাক্টরি তে যাওয়া প্রয়োজন।

ফ্যাক্টরি তে গেলো ওমেগা।ফ্যাক্টরি টা ঠিক ওইরকম ই যেমন টা সে মনে করতে পারছে।আস্তে আস্তে ফ্যাক্টরি টা ঘুরে দেখছে সে।হুবহু তার মনে করা জায়গার সাথে মিলে যাচ্ছে।মন টা ভীষণ অবচৈতন্য লাগছে তার।এই অব্দি মোটামুটি ভালো রকম প্যারানরমাল কেসে জড়িয়েছে সে কিন্তু এমন কোনোদিন হয়নি।এরিনের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।সেই আপাতত এখন তাকে সামলানোর একমাত্র মানুষ।

এরিনের সাথে ওমেগার পরিচয় হয় হাই স্কুলে থাকতে।এরিন যখন প্রথমবার স্কুল এ আসে তখন থেকেই ভালোলাগা শুরু করে তার।লং স্কার্ট আর দুই বেণুণী করা এই সাধারণ মেয়েটিকে যেন অপসরী লাগছিলো সেদিন।ধীরে ধীরে ভালো লাগা থেকে পরিণত হয় ভালোবাসায়।এরিনের ও ভালো লাগতো ওমেগা কে।একজোড়া সুশীল ভদ্র চোখ যে সবসময় তার দিকে তাকিয়ে থাকতো এটা সে আন্দাজ করতে পারতো।এখান থেকেই ভালোবাসার শুরু।দেখতে দেখতে বারো বছর পেরিয়ে গেছে সম্পর্কের।তবে কেউই এখনো বিয়ে নামক বন্ধন এ আবদ্ধ হওয়ার চিন্তা ভাবনা করেনি।যেভাবে আছে সেভাবেই যে দিব্যি চলছে বেশ।একমাত্র এরিনের জন্যই তার ক্যারিয়ারে উন্নতি হয়েছে।ওমেগা কখনোই তার ক্যারিয়ার সম্বন্ধে সচেতন ছিলো না।এই এরিনই তাকে উৎসাহিত করে।এর জন্য বোঝাপড়াও কম হয়নি দু’জনার মধ্যে।এখন এরিন কে মনে মনে হাজার কৃতজ্ঞতা জানায় সে।একটা নির্জন রাস্তায় এরিনের জন্য অপেক্ষা করছে ওমেগা।এই রাস্তার সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে আছে তাদের।আন্ডারএজ থাকাকালীন সময় দুইজন লুকিয়ে লুকিয়ে এখানে এসে দেখা করতো।দশ বছর পেরিয়ে গেছে সে সময়ের।রাস্তা ঘাটও পাল্টিয়েছে।কিন্তু স্মৃতি?তা কি ভোলা সম্ভব?ওমেগা দেখলো যে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছে এরিন।
-আমি এসে গেছি ওমেগা।
-আরে সাবধানে।কি দরকার ছিলো এভাবে ছুটে আসার?
-তুমি তো অপেক্ষা করছিলে।
-আমার ক্ষতি হচ্ছিলো না।
-চলো হাঁটা যাক।

ওমেগা এরিনের দিকে তাকালো কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছে এরিন কে।
-এরিন তুমি কি অসুস্থ?
-না না কই?ঠিক ই তো আছি।
-দেখে মনে হচ্ছে না। বলেই ওমেগা হাত ধরতে নিলো এরিনের।এরিন চিৎকার দিয়ে উঠলো।
-নো ওমেগা!ইউ ক্যান্ট হোল্ড মাই হ্যান্ড।
-সিরিয়াসলি এরিন?এই বারো বছরে কয়েক হাজার বার আমি তোমার হাত ধরেছি।তোমার এই হাতে চুমো খেয়েছি।আজ তুমি একথা বলছো?
-আমাকে বোঝার চেষ্টা করো ওমেগা।প্লিজ!
-তুমি আমার এরিন তো?
-হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ! কোনো সন্দেহ আছে তাতে?
-অবশ্যই আছে।

কথাটা বলার সাথে সাথেই ওমেগা স্পর্শ করলো এরিন কে।এরিনের শরীর জ্বলে উঠলো।বিভৎস চেহারার এক ভ্যাম্পায়ার বেরিয়ে গেলো।
-উই উইল সি ইউ এডওয়ার্ড।উই উইল সি ইউ।

বলেই বিলীন হয়ে গেলো ভ্যাম্পায়ার টি।ঘটনার আকস্মিকতায় দমে গেলো ওমেগা।এরিন?সে কোথায়?তার কিছু হয়নি তো!

#চলবে…….

আগের পর্ব: https://www.facebook.com/100049746556081/posts/132683158399902/?substory_index=0&app=fbl

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে