#ছোঁয়ার_শিহরণ_২য়_খন্ড
#ফাতিমা_আক্তার_অদ্রি
পর্ব-০৭
সাবিহা সাবরিন কিচেনে নাশতার আয়োজন করছেন। মিষ্টি তাকে এটা ওটা দিয়ে সাহায্য করছে। মিষ্টির বয়স আনুমানিক সতেরো কি আঠারো হবে। মেয়েটা খুব দ্রুত কাজ শিখে ফেলেছে। সাবিহা সাবরিনকে এখন খুব বেশি প্রয়োজন না হলে রান্নাঘরে ঢুকতে হয় না। মিষ্টি সব সামলে নেয়। আজ কিচেনে ঢুকেছেন কারণ তার ভাসুর , ভাসুরের বউ আর তাদের ছেলে এসেছে। নয়তো মিষ্টিকে দিয়েই রান্নাটা করিয়ে ফেলতেন। অবশ্য মিষ্টিকে একা সব কাজ করতে হয় না। আয়নার মা তাকে সাহায্য করে। তবে তিনি কাজ শেষ করে সন্ধ্যার আগেই বাসায় চলে যান। আজ আয়নার মা আসেনি। তার মেয়েটা অসুস্থ বলে আজকে ছুটি নিয়েছে।
সানজানা বেগম কিচেনে ঢুকেই বললেন, ‘সাবি! তোর তো অনেক সুবিধা বাসায় কাজের লোক আছে। কোনো টেনশন নাই। সব কাজ ওরাই করে ফেলে।’
সাবিহা সাবরিন বললেন, ‘ভাবি! কাজের লোক কই দেখছেন?’
‘কেন? মিষ্টির কথা বলছি। তাছাড়া আরো অনেক কাজের লোক তো আছেই।’ সরু চোখে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে তীক্ষ্ণ গলায় বললেন সানজানা বেগম।
‘ভাবি, আপনিও কী যে বলেন না! মিষ্টি তো আমাদের পরিবারেরই একজন সদস্য । ওকে তো আমরা কাজের লোক হিসেবে ট্রিটই করি না। তাছাড়া অন্য যারা আছেন তারাও আমাদের পরিবারের সদস্যের মতোই।’ সাবিহা সাবরিন দৃঢ় গলায় বললেন।
‘দেখ সাবি! বাইরের মানুষদের আপন করতে যাস না। ওরা হচ্ছে নিম্ন স্তরের মানুষ। ওদের অতশত বিশ্বাস করতে যাস না যেন।’ সানজানা বেগম সতর্ক গলায় বললেন।
সাবিহা সাবরিন কড়াইতে চিকেন রোল ভাজতে ভাজতে বললেন, ‘ভাবি! আমার ভরসা আছে মিষ্টির উপর। ভরসা না থাকলে এভাবে ওকে নিজের কাছে এনে রাখতাম না।’
‘তুই আসলে খুবই সরল মনের সাবি। তাই আমি আগে থেকেই তোমাকে ওয়ার্ন করলাম । এই আরকি। তাছাড়া তোর ঘরে জোয়ান ছেলে আছে। পরে আবার বলবি আমি তোকে সতর্ক করিনি।’ সানজানা বেগম, মিষ্টির দিকে ত্যাড়ছা চোখে তাকিয়ে বললেন।
‘অনেক ধন্যবাদ ভাবি আপনার অগ্রিম সতর্কতা বাণীর জন্য। আপনার সতর্কবাণী আমার মনে থাকবে।’ সাবিহা সাবরিন মৃদু হেসে বললেন।
মিষ্টি তখন ঝাল পাকোরার ডো তৈরী করছিল। সে একবার তাকাল সানজানা বেগমের দিকে । তার কাছে এই মহিলাকে অনেক বেশি ধূর্ত টাইপের মনে হয়। আর উনার ছেলেকে মনে হয় অতি নিস্মস্তরের মনুষ্য কীট! তবে এরা অতি সাবধানতা অবলম্বন করে। যেমন, সে নিজে এদের খারাপ বললেও কেউ বিশ্বাস করতে চায় না। যার কারণে সে নিজেই দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। ভাবে, তার মানুষ চিনতে ভুল হচ্ছে না তো! অনাথ আশ্রমে থাকাকালীন তো কত মানসিকতার মানুষকেই দেখেছে। তাই তার এই অল্প বয়সের জীবনেও সে মানুষ চিনতে শিখেছে, শিখেছে মানুষের দৃষ্টি পড়তে। জীবন মানুষকে অনেককিছু শিখিয়ে দেই। নিজের অপারগতা মানুষকে বাধ্য করে জীবনে চলার পথের প্রতিবন্ধকতা উপড়ে নতুন উপকরণ আহরণ করতে। মিষ্টিও সে পন্থাই অবলম্বন করত এতদিন কিন্তু এই পরিবারে আসার পর থেকে সে শান্তিতে ঘুমাতে পারে। মনে হয় যেন শত বছর পরে সে শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে। সাবিহা সাবরিনের কথায় তার চিন্তার রেশ থমকে গিয়ে বাস্তবে ফিরে এলো।
নাশতা তৈরী শেষে সাবিহা সাবরিন মিষ্টিকে ট্রেতে করে ড্রয়িং রুমে নাশতা নিয়ে যেতে বললেন।
ড্রয়িং রুমে বসে সাব্বির আহমেদ তার বড়ো ভাই ওয়াহিদ আহমেদের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছে দাবা খেলায়। দু’ভাইই এই খেলাতে বেশ দক্ষ। তাই কে জিতবে তা বলা বেশ মুশকিল। শিহরণ আর রাফি বসে খেলা পর্যবেক্ষণ করছে। মিষ্টি নাশতার ট্রে এনে রাখতেই খেলায় মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হলো।
সাবিহা সাবরিন এসেই কড়াভাবে বললেন আগে নাশতা শেষ করার জন্য। সবাই তার কথা মেনেও নিল। বহ্নি নিজের রুমে শুয়ে আছে। তাই সাবিহা সাবরিন মিষ্টিকে দিয়ে বহ্নির রুমে নাশতা পাঠিয়ে দিলেন।
‘আগুনমণি আপু! নাশতা নিয়ে এসেছি। খেয়ে নাও।’ মিষ্টি তার মিষ্টি স্বরে বলল।
বহ্নি শুয়ে থাকা অবস্থাতেই চোখ মুখ কুঁচকে তিরিক্ষি মেজাজে বলল, ‘ তোকে না বলছি আমাকে আগুনমণি না ডাকতে? এই নামে আমাকে কেবল এক জনই ডাকতে পারবে । আর কেউ ডাকতে পারবে না।’
‘আচ্ছা আর ডাকব না। কিন্তু নাশতা…?’ মিষ্টি দু’চোখের ভ্রু কুঁচকে ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল।
‘রেখে যা। পরে খাব।’ গমগমে গলায় বলল, বহ্নি।
‘মিষ্টিপু! দেখ না আকাশে মেঘ করেছে। বৃষ্টি আসবে মনে হচ্ছে। ভিজবে বৃষ্টিতে?’ মিষ্টি ভেজা গলায় বলল।
বহ্নি এবার নরম কণ্ঠে বলল, ‘ওই মিষ্টি তো তোর নাম। আমাকে মিষ্টিপু কেন বলছিস? এখন ভিজলে মা বকা দিবে রে । এমনিতেই শরীরটা খারাপ লাগছে।’
‘তোমাকে আমার খুব মিষ্টি লাগে তাই ডাকি।তাহলে তুমি নাশতা খেয়ে বিশ্রাম নাও।’ এটুকু বলে মিষ্টি দরজার কাছে যেতেই বহ্নি তাকে ডেকে বলল, ‘এই মিষ্টি! ওরা এখনো যায়নি?’
‘না আপু। মাত্র খাওয়ার পর্ব শুরু করেছেন।’
‘কি বলিস?’ বহ্নি চিন্তিত সুরে বলল।
‘হ্যাঁ, আপু।’ বিষণ্ণ গলায় বলল, মিষ্টি।
‘আচ্ছা, ঠিক আছে যা।’
বহ্নি নাশতা সেরে বারান্দায় এসে দাঁড়াল।
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে । বারান্দায় দাঁড়িয়ে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে হাত বের করে দিয়েছে। দু’হাতের তালুকে নৌকার মতো করে বেঁকিয়ে রেখেছে। সেখানে জমছে সন্ধ্যাকালীন বৃষ্টির কাচের ন্যায় স্বচ্ছ ফোঁটা । একটু রাখতেই হাত ভরে যাচ্ছে। আর বহ্নি সেই পানির ফোঁটাগুলো চারপাশে ছড়িয়ে দিচ্ছে । এক ধরনের মাদকতা বিরাজ করছে পুরো প্রকৃতি জুড়ে। তার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে বহ্নির মাঝেও। তার ঠোঁটে একটা হাসির রেখা দেখা দিয়েছে। গান শুরু করেছে সে। বৃষ্টিকালীন সন্ধ্যায় রিনরিনে মিষ্টি কণ্ঠের সুরেলা গান।
“আজ এ বর্ষায় তুমি এলে
একগুচ্ছ কদম হাতে
আমি চেয়ে আছি পথ তোমার
শত বর্ষ ধরে ও মোর প্রিয়তম
বলো–কবে আসবে তুমি?”
‘থামলে কেন? খুব ভালো লাগছিল শুনতে। তোমার গানের গলা তো দারুণ, বহ্নি ।’ বহ্নি ঘুরে দাঁড়াতেই রাফিকে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল।
‘আমার ইচ্ছা।’ দায়সারাভাবে বলল, বহ্নি ।
‘আমার কল রিসিভ করছিলে না কেন?’ শান্ত কণ্ঠে প্রশ্ন করল রাফি।
রাফিকে নিজের রুমে দেখে বহ্নির এমনিতেই প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে। ইচ্ছে করছে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এই ছ্যাঁচড়া ছেলেটাকে বের করে দিতে। কিন্তু তার হাত বাঁধা সম্পর্কের বাঁধনে । তাই মনের এই চাওয়াটা সে পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলল,’ইচ্ছে হয়নি তাই । তুমি আমার রুমে কেন ?’
‘কেন আসতে পারি না?’ বহ্নির খাটে বসে নির্বিকারভাবে বলল, রাফি।
‘না।’ দৃঢ়তার সাথে বলল বহ্নি, ‘পারো না।’
‘অবশ্যই পারি । আফটার অল এটা আমার চাচার বাড়ি।’ দাঁত কেলিয়ে হাসতে হাসতে বলল, রাফি।
‘অনুমতি নিয়েছ তুমি আমার রুমে ঢুকার আগে?’
‘আমার চাচার বাসায় আমার অনুমতি লাগবে কেন?’
‘অবশ্যই , অনুমতি নিতে হবে। কারো বেডরুমে ঢুকতে হলে যে অনুমতি নিতে হয় তা নিশ্চয়ই তোমার অজানা নয়।’
‘এত জটিল করে কথা বলো কেন তুমি? তুমি কি জানো না আমি তোমাকে পছন্দ করি।’
‘হুম, জানি। আর তাই তোমাকে এটা বুঝাতে চাই যে আমি তোমাকে কেবলই ভাই মনে করি। এর থেকে বেশি কিছু কখনোই সম্ভব নয়।’ বহ্নি বুকের উপর দু’হাত ভাজ করে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল।
‘যদি বাসা থেকে আমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয় তখন কী করবে?’ রাফির পাল্টা প্রশ্ন।
‘কিছুই করতে হবে না আমার। কারণ আমার আব্বু আমার অনুমতি ছাড়া কখনোই আমার বিয়ে দেবার কথা ভাববেনও না।’ প্রগাঢ় কণ্ঠে বলল, বহ্নি।
‘এত বিশ্বাস?’ তাচ্ছিল্যের স্বরে বলল, রাফি।
বহ্নি ছোট্ট করে বলল, ‘হুম।’
‘দেখে নিও তোমার এই বিশ্বাস আমি ভাঙবোই।’ তেজী কণ্ঠে বলল, রাফি।
‘হা হা হা।’ বহ্নি সহাস্যে বলল, ‘অপেক্ষায় রইলাম।’
রাফি ধাম করে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে গেল বহ্নির রুম থেকে। রাফি চলে যাওয়াতে বহ্নি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। এই রকম ছ্যাঁচড়া কেন তার চাচাত ভাইটা বহ্নি তা ভেবে পায় না। বিড়বিড় করে বলল, ‘তুমি যদি আমার চাচাত ভাই না হতে তবে তূর্ণকে দিয়ে আচ্ছামতো ধোলাই খাওয়াতাম। কিন্তু আফসোস! ভাই বলে পারছি না। তবে তোমার আমাকে বিয়ে করার স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যাবে।’
______________________
রাদিদ নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বেরিয়ে দেখল ঝুম বৃষ্টি নেমেছে। অন্ধকার হয়ে গেছে চারপাশ। ল্যাম্পপোস্টের হলদে আলো জ্বলছে। একবার আকাশ পানে তাকাল সে। ছাতাটা যে কেন সাথে করে নিয়ে আসেনি সে তার জন্য খুব আফসোস হচ্ছে। অটো বা রিকশা কোনোটাই পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। কেমন বোকার মতো কাজটাই না করল সে। যখন নামাযের জন্য বেরিয়েছিল তখনই তার মনে মনে ধারণা হয়েছিল বৃষ্টি নামতে পারে। কিন্তু মনের ইচ্ছেটাকে প্রাধান্য দেয়নি। এখন ভুগতে হবে। বৃষ্টিতে ভিজলে তো আর কথাই নেই। জ্বর এসে একদম শোচনীয় অবস্থা হয়ে যাবে।
তবে সমস্ত চিন্তা ছাপিয়ে এখন একটাই চিন্তা বাসায় যাবে কী করে! বৃষ্টির মধ্যে রওনা হলে আবার ভিজে একাকার হয়ে যাবে। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল সে। বেশ খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে এদিক ওদিক তাকাল সে, কোনো সাহায্য পাওয়ার আশায় হয়তো। নামায পড়া শেষে অনেকেই ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরে গেছে। হঠাৎ পেছন থেকে কারো ভাঙা ভাঙা কণ্ঠ শুনে ফিরে তাকাল সে। একজন বৃদ্ধ লোক তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘তুমি ওসমানের বাসায় যাবে না?’
রাদিদ লোকটিকে চিনতে না পেরে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। কোনোরকমে বলল, ‘জি, দাদু।’
বৃদ্ধ লোকটি বলল, ‘এসো, আমার সাথে যেতে পারবে। আমি ছাতা নিয়ে এসেছি।’ বলতে বলতে বৃদ্ধ লোকটি ছাতা খুলে ফেলল।
রাদিদ খেয়াল করল ছাতাটাতে করে কোনোমতে একজন মানুষ যেতে পারবে। দুজন মানুষের জায়গা কোনোমতেই তাতে হবে না।
তাছাড়া এই বৃষ্টিতে ভিজলে দাদুটি নির্ঘাত অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই রাদিদ না চাইতেও সম্মতি দিল। তারপর বৃদ্ধ মানুষটিকে ধরে ধরে পুরো রাস্তা হেঁটে আসল। রাদিদ ছাতাটা এমনভাবে ধরল যাতে বৃদ্ধ লোকটি না ভিজে যান। এটা করতে গিয়ে সে নিজেই কাকভেজা হয়ে গেছে। কিন্তু তাতে কী! সে যেহেতু এখনো ইয়াং তাই তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি কিন্তু বৃদ্ধ মানুষটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তার চাইতে অনেক কম। তাই সে নিজে ভেজার বেলায় আর কোনো তোয়াক্কা করল না।
হাঁটতে হাঁটতে দাদুটি বলল, ‘তুমি কি করো দাদুভাই?’
রাদিদ সহাস্য বলল, ‘দাদু ! এই তো ছোটোখাটো একটা ব্যাবসা করি। আলহামদুলিল্লাহ, এতেই খুব ভালো চলছে।’
সারা রাস্তা বৃদ্ধ মানুষটি তার সাথে কথা বললেন। তিনি রাদিদকে খুব পছন্দ করলেন। রাদিদের ফুফুর বাসার পরের দুই বাসা পরেই মানুষটির বাসা। বাসায় পৌঁছে দিতেই রাদিদ চলে আসতে উদ্যত হলো। বৃদ্ধ দাদুটি বলল,’ দাদুভাই এক কাপ চা খেয়ে যাও।’
রাদিদ বলল,’ অন্য আরেকদিন খাব। এখন বাসায় না গেলে ফুফু রাগ করবেন ।’
রাদিদ চলে আসতে চাইলে বৃদ্ধ দাদুটি বলল, ‘আরেহ্, দাদুভাই। আমার ছাতাটা সাথে করে নিয়ে যাও।
রাদিদ সহাস্যে ছাতাটা হাতে নিল। প্রত্যুত্তরে কিছুই বলল না।
বৃদ্ধ দাদুটি আবার বলল,’আরেকদিন এসে আমার সাথে একসাথে চা খেতে হবে। মনে রেখ দাদুভাই।’
রাদিদ প্রত্যুত্তরে হেসে বলল, ‘দাদু ছাতা দিতে হলেও আমায় আর একবার আসতে হবে।’
বৃদ্ধ মানুষটি তার দিকে তাকিয়ে প্রাণবন্ত হাসলেন। রাদিদ বৃষ্টিভেজা কংক্রিটের রাস্তায় ধীর পায়ে হাঁটছে। হাঁটতে হাঁটতেই তার মনে হলো সে তো দাদুটির নামটাই জানে না। এতক্ষণ কথা বলল কিন্তু মানুষটির নামটাই জানতে চাইল না সে। বৃষ্টি তখন থেমে গেছে । চারপাশে প্রকৃতি এক নতুন সজীবতায় যেন উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। আবছা আলোতেও রাদিদ তা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে। হঠাৎ করে কেঁপে উঠল সে। ভীষণ ঠান্ডা লাগছে। নির্ঘাত এবার জ্বরের কবলে পড়বে সে।
_______________________