গানের ওপারে তুমি পর্ব-১৩

0
315

“গানের ওপারে তুমি”
পর্ব- ১৩
(নূর নাফিসা)
.
.
রিপ্তি ঘড়িতে সময় দেখে একটা ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নেয় আজ। প্রথম ক্লাস শেষ হতেই সে বেরিয়ে পড়ে ক্যাম্পাস হতে। ছুটে রঙ্গমালা ক্যাফের উদ্দেশ্যে। এগারোটা বাজতে আরও মিনিট দশেক বাকি। দুপুরের সময় হওয়ায় ক্যাফেতে ভীড় তুলনামূলক কম। বেশ কিছু টেবিলই ফাঁকা। একটাতে বসে পড়ে রিপ্তি। অপেক্ষায় থাকে এগারোটা বাজার। মনে মনে গুছিয়ে নিতে থাকে কথামালা। ক্যাফের লোক এসে জিজ্ঞেস করে যায়, কফি দিবে কি না? কিছুক্ষণ পরে অর্ডার করবে বলে জানায় সে। একা একা পাঁচ মিনিটের মতো সময় কাটাতেই ডায়াল করে ইয়ানাতের নম্বরে। প্রথমবারের মতোই রিসিভ হয়।
“হ্যাঁ, রিপ্তি ম্যাম?”
“হ্যালো, আপু। আপনি কি আসছেন? আমি পৌঁছে গেছি এখানে।”
“তাই নাকি? আমিও ক্যাফেতেই আছি। আপনি ভেতরে আসুন।”
“আমি ভেতরেই বসে আছি।”
“কোথায়! ড্রেস কালার?”
কথা বলতে বলতে রিপ্তি সামনের টেবিলেই মেরুন রঙের টপস পড়া মেয়েকে দেখছিলো ফোন কানে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। এমনি ইয়ানাতের প্রশ্নে সে জবাব দেয়,
“সাদা এপ্রোন। আপনি কি মেরুন ড্রেসে আছেন?”
আর জবাব দিতে হয় না। পিছু ঘুরেই নিশ্চিত হয় মেয়েটি, এটিই রিপ্তি। হাসিমুখে নিজেই ঝটপট উঠে আসে রিপ্তি উঠার আগে। রিপ্তি উঠতে গিয়েও পুনরায় বসে যায়।
“হাই…”
“হ্যালো। বসুন।”
“ভারি মিষ্টি তো মিসেস মিহির খাঁন! কতক্ষণ হয় এসেছেন?”
“এইতো পাঁচ মিনিট হয়।”
“তবে আরও আগে কল দিবেন না? আমি তো প্রায় পনেরো মিনিট যাবত বসে আছি এগারোটা বাজার অপেক্ষায়। এক কাপ কফিও নেওয়া হয়ে গেছে।”
“আমিও এগারোটার অপেক্ষাই করছিলাম। কফি নেই?”
“আপনি নিন। আমি মাত্রই এক কাপ শেষ করলাম।”
“সমস্যা কি, আরেক কাপ হয়ে যাক না আমার সাথে।”
“ওকে।”
দুই কাপ কফির অর্ডার করে নেয় রিপ্তি। মেয়েটি রিপ্তির থেকেও বয়সে অনেকটা বড়। কিভাবে কথা শুরুটা করবে, সেটাই ভাবছে রিপ্তি। যেহেতু বড়, যথেষ্ট সম্মান বজায় রেখে উক্তি ব্যক্ত করতে হবে তাকে। এদিকে ইয়ানাত মেয়েটি রিপ্তিকে বললো,
“বয়সে আপনি আমার ছোট বলে মনে হচ্ছে। পড়াশোনা করছেন, তাই না?”
“জ্বি।”
“কিসের উপর?”
“ফ্যাশন ডিজাইনে।”
“গ্রেট!”
“আপনার বাসা তো এদিকেই, তাই না?”
“হুম, বাসায় যাবেন?”
“নাহ। তা এখানে বাবার বাসা, নাকি শ্বশুরের?”
“আরে নাহ। বাবার বাসা।”
তার হাসিতেই কথায় টান দিয়ে বসে রিপ্তি,
“সে কি! বিয়ে হয়নি?”
“উম্মম, কেন বলুন তো?”
“না, মানে আপনার কথায় মনে হলো।”
“না হলে বিয়ে দিয়ে দিবেন?”
কথার সুরে ভেবেছে লজ্জাবোধ করবে এই মেয়ে। তা না করে উল্টো রিপ্তিকে চমকে দিতে যেন নির্লজ্জ হতে চাইছে। যা রীতিমতোই বিরক্তবোধ করছে সে মনে মনে। তবুও হাসি বজায় রাখা এখানে আদর্শ। রিপ্তি হেসেই জবাব দেয়,
“আপনার রুচিবোধ কেমন তা তো আমি জানি না। তবে যেভাবেই হোক, বিয়েটা করে নেওয়া প্রয়োজন। সে যাক, যে কথা বলতে এতো তাড়া নিয়ে এলাম আপু।”
“হুম?”
কফিতে চুমুক দেয় রিপ্তি।
“শুনেছি, মিহির খাঁনের গানের জগতে আসার পেছনে খুব বড় অবদান আপনার। আগেপাছে আপনার প্রতি খুব কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।”
“জ্বি, গতকাল ফোনেও জানালো। সেদিন দেখা হওয়ার পরও জানালো। কিন্তু এতোটা বড় করে আমি ব্যাপারটা দেখি না। অবশ্যই মিহির খাঁনের চেষ্টা তাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।”
“হয়তোবা। তবুও তো শুরুটা আপনার হাত ধরেই। তার স্ত্রী হওয়ার সুবাদে আমিও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছি।”
“ও মাই গড! এটাই এতো জরুরী তলব ছিলো?”
“না, না। কেবল এটাই না। আমার জন্য আরও জরুরী বার্তা হচ্ছে আপনাকে একটু জানা। কিছু প্রশ্ন করলে বিরক্ত হবেন না তো?”
“প্রশ্ন যদি বিরক্ত হওয়ার মতোই না হয়, তবে কেন বিরক্ত হবো?”
“সেটাই। তবুও আছে না যে, সাধারণ কোনো ব্যাপারে একটু বেশি জিজ্ঞাসা করলেই অনেকে বিরক্ত বোধ করে ফেলে। যাইহোক, আপনাদের মানে মিহির খাঁনের সাথে আপনার পরিচয়টা কতদিন আগের?”
“এইতো, বছর চার হবেই।”
“দিন তারিখ কিছু উল্লেখ করলে একটু উপকৃত হতাম।”
“কেন বলুন তো?”
“না, তেমন কিছু না। একটু দিনলিপি করতে নেমেছি আরকি।”
“মানে?”
“মানেটা অবশ্যই বলবো। তবে এখনই না। আমার প্রশ্নলিপি করা শেষে।”
“প্রশ্নলিপি, দিনলিপি বুঝে আসছে না কিছুই। এতোসব লিপি করে কি হবে?”
“ধরুন, আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজই এনে দিবে এই লিপি।”
“তাই নাকি! মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সব। আচ্ছা, শেষ করুন প্রশ্নলিপি। এইটায় আমি পাস করে গেলাম। দিন তারিখ আসলেই আমি সেভাবে মনে রাখিনি। যদি এই লিপিটিপির সম্মুখীন হবো জানতাম, অবশ্যই নোট করে রাখতাম।”
বলেই হাসে ইয়ানাত। রিপ্তিও তাল মেলায়।
“আচ্ছা আপু, আপনি কি কোনো গায়িকা?”
“না তো।”
“তবে আপনি কিভাবে মিহির খাঁনকে গাওয়ার সুযোগ করে দিলেন?”
“ও, এই ব্যাপার! আমি সুযোগ করে দিয়েছি বলতে আমি তাকে গান শেখাইনি। ওই একটু ইন্ডাস্ট্রিতে কানেক্ট করতে সাহায্য করেছি। এ-ই… ”
“হ্যাঁ, সেটাই জানতে চাইছি যে আপনি কিভাবে তাকে কানেক্ট করে দিলেন। কোনোভাবে কি আপনি ইন্ডাস্ট্রির কাজের সাথে জড়িত?”
“না, তেমন কিছু না।”
“তবে?”
“আমি একজন গানের টিচারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই মিহির খাঁনকে। উনিই তাকে ব্যবস্থা করে দেন।”
“এই না বললেন, আপনি কানেক্ট করিয়ে দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে?”
“ইনডিরেক্টলি আমার মাধ্যমেই তো হলো।”
“ও, তা অবশ্য ঠিক। তবে তো আপনার চেয়েও বড় অবদান ওই টিচারের বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে। বাই দ্যা ওয়ে, আপনার সাথে তো উনার দেখাই হয়নি কখনো। যতদূর জানি। তবে কিভাবে আপনি তার পরিচয় করালেন?”
“উম্মম, ফোনে। ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছি।”
“ওহ্। ওকে।”
“কিন্তু এতো আজিব আজিব প্রশ্ন কেন আসছে, কারণটা বলুন দেখি?”
ভ্রু নাচায় ইয়ানাত। রিপ্তি সৌজন্যতার হাসি হেসে প্রত্যুত্তর করে,
“বললাম না, সারপ্রাইজ আছে। তাই যাচাই করে যাচ্ছি, আপনিই আসল ইয়ানাত কি না।”
“মানে!”
“মানে আমি সন্দিহান, এতোদিন পর একটা মানুষ হুট করেই কিভাবে উদিত হতে পারে! আবারও জমিয়ে তুলতে পারে এতোশত গল্প! যে মিহির খাঁনকে এতো বছরেও পাত্তা দিতে চাইলো না।”
“কি বলছেন এসব? পাত্তা কেন দিবো না?”
“সে কি! আপনি এ-ও জানেন না যে, মিহির খাঁনকে পাত্তাই দেয়নি ইয়ানাত? আপনি জানেন টা কি তবে? মিহির খাঁন যে এতো বছর যাবত আপনাকে খুঁজে বেড়ালো, সেদিন কোথায় ছিলেন? আজ তার ঘরে বউ আসতেই আপনার জ্বলে যাচ্ছে একেবারে!”
“অদ্ভুত তো! মানে কি এসবের? বউয়ের সাথে আমার কানেকশান কি! তার ঘরে বউ এলেই আমাকে আসতে হবে কেন?”
কণ্ঠের সৌজন্যতা কেটে ক্ষিপ্ততা জাগ্রত হয়েছে রিপ্তির। তবে ততটাও উত্তেজিত নয় তার গলা। কথাগুলোও কেবল চুলকানোর!
“আমারও তো একই প্রশ্ন। এতোকাল মনে পড়েনি মিহির খাঁনকে? এখন ইয়ানাত সেজে নাটক করতে আসছেন তার সংসার ভাঙতে?”
“হোয়াটস রঙ উইথ ইউ! আমি কেন নাটক করতে আসবো!”
“ও আচ্ছা, নাটক নয়?”
“আপনি তো সেদিন কেক পাঠিয়ে বার্থডে উইশ করলেন। রাইট?”
“তো?”
“বলুন দেখি, কেকের রঙ কি?”
“এটা কি ধরনের প্রশ্ন!”
“সাধারণ প্রশ্ন। উত্তরটাও অতি সাধারণভাবেই হওয়ার কথা। যেহেতু পছন্দ করে পছন্দের মানুষের জন্য একটা জিনিস আপনি পাঠিয়েছেন। অথচ জানেনই না কেকের রঙ কি। চিরকুটও তো ছিলো একটা। তো বলুন, চিরকুটে কি লিখেছিলেন?”
কেমন ধাঁধায় বাঁধাগ্রস্ত মেয়েটির চোখ! প্রত্যুত্তর না পেয়ে রিপ্তি ফের প্রশ্ন করে,
“আপনার গানের টিচারের মাধ্যমে তার পরিচয় করিয়েছিলেন, তাই না? তো বলুন দেখি ওই টিচারের নাম কি? বয়স কেমন? বাসা কোথায়? ছেলেমেয়ে ক’জন?”
“কি আজিব!”
“আজিব না। আজবও না। গজব। পুরাই গজবের একটা কাণ্ড সৃষ্টি করতে এসেছেন আপনি। কার বুদ্ধিতে? মিহির খাঁনের এতো বড় শত্রুটা কে? এমন নাট্যশিল্পী বানিয়ে কে পাঠিয়েছে আপনাকে? নাকি নিজেই এসেছেন? মিহির খাঁনকে খুব পছন্দ করতেন? তার ঘরের রমণী হওয়ার খুব সাধ ছিলো? যেখানে আমাকে দেখতে সহ্য হচ্ছে না আপনার? খুব চালাক, তাই না? হুট করেই ইয়ানাত সেজে তার ইমোশন নিয়ে খেলতে এলেন।”
একটা কথাও বলছে না মেয়েটি। চাইছেও না বলতে৷ কেমন একটা নিরবতা ধারণ করে রিপ্তিকে শুনে যাচ্ছে ড্যাবডেবে চোখে তাকিয়ে। যা এই মুহুর্তে খেয়াল করতে যাচ্ছিলো রিপ্তি। অথচ তার খেয়াল কেড়ে নিয়ে গেলো কেউ পিছু হতে কাঁধে হাত রেখে! ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই মিহিরকে দেখতে পায় শিয়রে! এজন্যই কি মেয়েটি চুপ করে ছিলো নাকি? ভাবারও খুব একটা সময় নিলো না। ঝটপট উঠে দাঁড়িয়ে মিহিরের উদ্দেশ্যে বলে,
“আপনি এখানে?”
“আমারও তো একই প্রশ্ন। তুমি এখানে কেন? ক্লাসে যাওনি?”
“হ্যাঁ, মানে চলে এসেছিলাম।”
“ইয়ানাতের সাথে তুমি? চেনো নাকি তাকে?”
“না, এমনি হঠাৎ দেখা করতে এলাম।”
এক গাল হেসে বসে থাকা মেয়েটি বলে,
“উনি জরুরী আয়োজনে ডাকলো আমাকে। এখন প্রশ্ন উঠছে, আমি নাকি ইয়ানাত নয়। ইয়ানাত হতে কি করি এখন, বলুন তো মিহির খাঁন?”
রিপ্তি পুনরায় তার দিকে তাকিয়ে প্রত্যুত্তর করে,
“দেখুন আপু, আপনি বয়সে আমার খুব বড়। আর তাই সসম্মানে এখনো আমি অনুরোধ রাখছি, আপনার নাটক কাইন্ডলি বন্ধ করুন। হাজারটা প্রমাণ উপস্থিত করার চেষ্টা করলেও প্রতিটিতেই ধরা খাবেন। কেননা প্রকৃত প্রমাণ একটাও আসবে না। আমি মিহির খাঁনের সামনেই বলি, আপনি ইয়ানাত না।”
পরক্ষণে মিহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,
“উনি ইয়ানাত না। আপনি তাকে ইয়ানাত ভেবে ভুল করছেন। আমি নিশ্চিত, এটা কারো চক্রান্ত।”
ওদিকে বসে থাকা মেয়েটির অনুচ্চ উক্তি,
“পাগল ক্ষেপেছে, মিহির খাঁন!”
রিপ্তি ঠিকই এবার ক্ষেপে গেলো,
“এক্সকিউজ মি, আপনি কাকে পাগল বলতে চাইছেন?”
মিহির এইটুকু সময় চুপ থাকলেও এখন রিপ্তির হাত ধরে বললো,
“রিপ্তি, চলো।”
“চলো মানে? আপনার সামনে উনি আমাকে…”
“হিশশ!”
গলার আওয়াজ ফিসফিসে করেই রিপ্তি পুনরায় একই কথা বলতে যায়।
“আপনি শুনেননি, উনি কি বলেছে?”
“আমার শুনতে হবে না। চলো।”
“কেন শুনবেন না আপনি?”
“চলবে নাকি? আমারও তোমাকে এখন পাগলই মনে হচ্ছে!”
ব্যথিত হয় রিপ্তি। একরাশ অভিমান নিয়ে সে চলে আসে হনহনিয়ে। সাথে আসে মিহিরও। পাশাপাশি রিকশায় চড়লো দু’জন, একটা কথাও হলো না নিজেদের মধ্যে। রিপ্তি গড়লো কড়া অভিমান, মিহিরের মনে ক্ষোভ। অভিমানে থেকেও পাশে বসা লোকটাকে নিয়ে ভাবছে রিপ্তি। ক্ষোভটা কেন তার প্রতি? ক্লাসের নাম করে চলে আসায়? নাকি প্রাণপ্রিয় বন্ধুকে অপমান করায়? এই মিথ্যে বেড়াজাল থেকে বের করতে হবে তাকে। এক্ষুণি। তবে রাস্তায় নয়। ব্যাপারটাও জোরদার পরিষ্কার না করলেই নয় আজ।

বাড়ির সামনে রিকশা থামলে রিপ্তিই আগে আগে ভেতরে যেতে থাকে মাথায় গোল পাকানো নানান বিষয় চিন্তা করতে করতে। সিঁড়ি পর্যন্ত আসতেই দেখে উপর তলার দিকে যাচ্ছে শ্বাশুড়ি। পায়ের শব্দে পিছু ফিরে তিনি বলেন,
“এসে গেছো? এই নাও চাবিটা। জিতুর মাকে বাটিটা দিয়ে আসি। ভর্তা দিয়ে গেছে সেই কবে৷ দিবো দিবো করে দেওয়া হচ্ছে না। হাতমুখ ধুয়ে ভাত খেতে বসো শিগগির। চেহারার কি হাল! আমি এখনই চলে আসছি।”
উপর থেকে চাবিটা ঢিল ছুঁড়ে দিতেই হাতে নিয়ে নেয় রিপ্তি। চুপচাপ মাথা নেড়ে সায় দিয়ে যায় শ্বাশুড়ির কথায়। মলিন মুখে তালা খুলে ভেতরে আসে সে। মিহির রিকশা ভাড়া প্রদান করতে পিছু পড়েছিলো তার। পিছন থেকে তাকে তালা খুলতে দেখে ঘরে পা রেখেই জিজ্ঞেস করে,
“মা কোথায়?”
“উপর তলায় গেছে।”
আর কোনো কথা হলো না তাদের। রিপ্তির ভাবনাগুলো মাথা আউড়ে যাচ্ছে। গোলযোগটা আসলে কে বাঁধালো? নাটকের গোঁড়ায় কি মিহির? মিহির জানে সব? কিছু বলছে না কেন সে? ভাবতে ভাবতেই এপ্রোন হিজাব ছাড়িয়ে নিয়েছে সে৷ মিহিরও চেঞ্জ করতে ব্যস্ত। তার গম্ভীরতা ভালো লাগছে না রিপ্তির। নিজে তো অপরাধ বোধ করছেই, শান্ত মানুষের গম্ভীরতায়ও তার ভয়। তাই নিরবতা ভেঙে কথার শুরুটা এবার রিপ্তিই করে বসে,
“কিছু বলার ছিলো আপনাকে।”
“কি বলবে তুমি?”
হুট করে তার তাকানোতেই দৃষ্টি নত হয়ে যায় রিপ্তির। আবারও মনে মনে হাতড়াতে থাকে, মিহিরের ক্ষোভ কোথায়? পরক্ষণে আরও এক পলক তাকিয়ে আবারও চোখ নামিয়ে নেয়। মিহির কেমন শক্ত চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। রিপ্তি মেঝেতে দৃষ্টি রেখেই মলিন মুখে বলে,
“উনি ইয়ানাত না।”
“ও, তো আজ এতোদিন পর তুমি আমাকে ইয়ানাত চেনাবে?”
“আমি বলতে চাইছিলাম যে,”
“কি বলবে তুমি? ওটা ইয়ানাত না, আর তুমি ইয়ানাত? এটাই বলতে চাও?”

[চলবে।]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে