“গানের ওপারে তুমি”
পর্ব- ৬
(নূর নাফিসা)
.
.
“অটোগ্রাফ লাগবে?”
রিপ্তি উপেক্ষিত চোখে একবার তাকিয়ে আবার গাড়ির পথ দেখতে লাগলো। জবাব দিলো না কোনোরকম৷ প্যান্টের পকেটে দুহাত রেখে দাঁড়িয়ে ভদ্রলোক মিহির বললো,
“রাগ করেছো সুপারস্টারের উপর? প্রথমত স্যরি, তোমার বিড়াল ছানা হারানোর জন্য। এক্সিডেন্ট ইচ্ছাকৃত হয়নি। দ্বিতীয়ত স্যরি, বকা দেওয়ার জন্য। তুমি দেখা হলে প্রতিদিনই অটোগ্রাফ নিয়ো। একই এলাকার মানুষ তো, তোমার জন্য অটোগ্রাফের লাইন ফ্রি। আমাকে না কি যেন গিফট দিবে বলেছিলে? সাথে আছে? দাও থাকলে।”
রিপ্তি রীতিমতো উপেক্ষা যোগে মলিন মুখটা নত রেখেই সরে গেলো এখান থেকে।
“সে কি! দিবে না?”
নিরুত্তর রিপ্তি এগিয়ে দাঁড়ালো নিত্যকার দাঁড়ানোর সেই জায়গাতে। কড়া অভিমানে লালিত উপেক্ষা পানে অপলক তাকিয়ে রইলো মিহির। পিছু গিয়ে বিরক্ত করলো না আর। ফিরে এলো বাড়িতে। আজ অবসরের দিনটায় অনেকবারই মনে পড়লো রিপ্তিকে। ভালো লাগা থেকেই ভাবলো। অভিমানী মুখটা এতো ভালো লাগলো কেন তার কাছে? হাসিখুশি রিপ্তি আর অভিমানী রিপ্তির মাঝে যেন খানিক তফাৎ! হুটহাট হেসে উঠা আর বকবক করা রিপ্তিকে স্কুল পড়ুয়া মনে হলেও অভিমানী মুখটা যেন তার বয়স বাড়িয়ে প্রমান করলো সে কলেজের স্টুডেন্টই। খুব না হলেও কিঞ্চিৎ গম্ভীর হওয়ার চেষ্টা করেছে মেয়েটা। এমন মেয়েই তো ভালো, সবসময় হাসিখুশি থাকবে। অপরাধ করলে একটা ধমক দিলেই চুপ হয়ে যাবে৷ অভিমান করবে, চোখ ভিজাবে। এভাবেই প্রেম বাড়িয়ে মনের গভীরতা তৈরি করবে। কথায়ও হবে স্পষ্টবাদী। তবে চ্যাটাং চ্যাটাং কথায় পাকামোটা একটু বিরক্তিকরই। এছাড়া যেন ভালোই লাগছে মেয়েটাকে। কি আশ্চর্য! কিছুদিন আগেও যে ম্যাচুরিটির প্রেমে আটকে ছিলো, আজ সে বাচ্চামোকে ভালো লাগায় আটকে রাখতে চাইছে। কেন এমনটা হলো? ম্যাচুরিটিতে বিতৃষ্ণা এসে গেলো নাকি ইয়ানাতের জন্য? তাই হবে হয়তো। নয়তো আর কি? ভেবে ভেবেই একবার ফোনটাও হাতে নিয়েছিলো মিহির, রিপ্তির ফেসবুক আইডিতে ফ্রেন্ড হওয়ার আবদারটা রাখতে। কিন্তু তার আইডির নামটা স্মরণ করতে পারলো না। তবুও ইনবক্সে রিপ্তি নামটা খোঁজার চেষ্টা করলো। নতুন নতুন মেসেজ রিকুয়েষ্টে ভরপুর। এভাবে আর কতগুলো চেক করে দেখা যায়? কিছুক্ষণ ঘেটে দেখেই আবার রেখে দিলো। বিকেলে ঘটক এলো। মিহির বাসায়ই ছিলো। মা এবং ছেলের সামনেই ঘটক সাহেব এক মেয়ের সম্পর্কে বর্ণনা দিতে লাগলেন। বিত্তশালী পরিবার। মেয়ের মাস্টার্স কমপ্লিট যেহেতু বয়স তো একটু বেশিই। কিন্তু মিহিরের চেয়ে বেশি না। চেহারাও পছন্দ করার মতো সুন্দর। তবে জিনিয়া তাবাসসুমর কাছে বয়সটা একটু বেশি মনে হলেও মিহিরের কাছে তেমনটা মনে হয়নি। মিহিরের আপত্তিটা অন্য জায়গায়। মেয়ের পরিবার খাজাবাবা বংশধর, যা তাদের পছন্দ না। এই একটা কারণ জানার পরই আর বিবেচনায় বসলো না তারা এই সমন্ধে। অন্য মেয়ে দেখার জন্য বলে দিলো।
এদিকে গানের রেকর্ডিং কমপ্লিট। এখন শুটিংয়ের প্ল্যান এবং দেশের বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা সেরে উঠার কাজকর্ম চলছে। রিপ্তির সাথে দেখা হওয়ার পর মাঝখানে শুক্রবার বাদে শনিবারই আবার দেখা হলো সকালে। ভোরে ড্রাইভ করে এক সহকর্মীর বাসায় গিয়েছিলো কিছু কাগজপত্র জমা দিতে। ফেরার পথে রিপ্তিকে পাওয়া গেলো একই সময়ে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়ানোর জায়গায়। মাত্রই রিপ্তি ছোট রাস্তা অতিক্রম করে এই রাস্তা পর্যন্ত এসেছে। মিহিরও বড় রাস্তা থেকে ছোট রাস্তায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে। দুই রাস্তার সন্ধিস্থলেই তারা মুখোমুখি। রিপ্তি রাস্তার এক তৃতীয়াংশে অবস্থান করলে মিহির হর্ণ দিলো। রিপ্তি সরতে গিয়েও সরলো না মিহিরের গাড়ি দেখে। উক্তস্থানে একদম স্থির দাঁড়িয়ে রইলো মুখটাকে গোমড়া করে। মিহিরের ভ্রু কুচকে গেলো তার সরতে গিয়েও সরে না যাওয়া দেখে। সে আবারও হর্ণ বাজালো। কাজ হলো না তাতে। রিপ্তি পাত্তাহীন। যেন পণ করে বসেছে, মিহিরকে সাইড দিবেই না। মিহির ইচ্ছাকৃতই ধীর গতিতে তার দিকে এগিয়ে নিলো গাড়িটা। রিপ্তি তবুও সরছে না, তবে মনে মনে ভয় বাড়ছে গাড়িকে এগিয়ে আসতে দেখে। আসুক না গাড়ি। কি করবে? এবার ইচ্ছাকৃত এক্সিডেন্ট করবে? তার মতো সেলিব্রিটি এক্সিডেন্ট করেই বা পাড় পেয়ে যাবে? উল্টো আরও গণদোলানী খাবে না দেশ জুড়ে? মিডিয়া সারাদেশ ছড়িয়ে দিবে, সে যে এক্সিডেন্ট করেছে। এক্সিডেন্ট শব্দটার সাথে রিপ্তি নামটাও ছড়বে সারাদেশে। বাহ! এক মৃত সেলিব্রিটি হয়ে উঠবে সে-ও। এই হলো রিপ্তির বর্তমান মনোভাব! গাড়িটা রিপ্তির একদম নিকটে এসেই থামলো। পা কাঁপছে রিপ্তির। দূরত্ব বেশি হলে দুই থেকে তিন ইঞ্চি হবে। গাড়ি এসে থামতেই সে তাকালো গ্লাসের ভেতরে মিহিরের দিকে। মিহির মাথা বের করে বললো,
“সরবে না?”
মুখটা ফিরিয়ে নিয়ে রিপ্তি অনুচ্চ উক্তি জুড়লো,
“রাস্তা কি কারো নিজের সম্পদ! আমার যেখানে ইচ্ছা, সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো। দেখবো কে কি করতে পারে। সেলিব্রিটি হলেই একেবারে রাস্তার দখলদারি নিতে আসবে নাকি!”
তার অনুচ্চ উক্তিতে মিহির মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো,
“আসলে তোমার মতো দু’চারটা পাগল না থাকলে, সেলিব্রিটি হয়েও মজা নেই। আমি আমার পাশের বাসার মেয়েদেরও চিনি না, তোমাকে যতটুকু চিনলাম!”
মিহির ঠিক হয়ে বসে গাড়ি পেছনে টেনে নিলো। রাস্তার এক তৃতীয়াংশ জায়গা ছেড়ে দিয়ে বাকি দুই-তৃতীয়াংশ দিয়েই গাড়ি টেনে নিলো। তবে গন্তব্যে গেলো না এখনই। গাড়িটা সাইডে পার্ক করে নেমে এলো। রিপ্তি চলন্ত গাড়ির পিছু দেখতে গিয়েই আৎকে উঠলো মিহিরকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে। গাড়ি তো সেখানে স্থির, লোক দেখা যায় তার কাছেই আসছে! এবার সে রাস্তা থেকে সরে আরেকটু ওদিকে চেপে গেলো। মিহির হাঁটতে হাঁটতে তার পাশে এসেই থামলো একটু ভাব জমাতে। গত দুই দিনের ভাবনাতে এই মেয়েটা তার ভাবের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ফেলেছে ভীষণ। মিহির বিনা সংকোচে জানতে চাইলো,
“তোমার ফেসবুক আইডির নাম যেন কি বলেছিলে? আবার মেসেজ দিয়ো।”
হ্যাঁ, না, কিছুই বললো না রিপ্তি। সামনে দিয়ে টেম্পো গেলো, সিগনালও দিলো না। মিহির জবাবের জন্য একটু অপেক্ষা করে আবার জিজ্ঞেস করলো,
“তুমি আমাকে কতটা পছন্দ করো?”
এমন জিজ্ঞাসায় একবার আড়চোখে তাকিয়েও চোখ ফিরিয়ে নিলো রিপ্তি। আজ প্রত্যক্ষ উপেক্ষাটুকু করছে না। মনটা বোধহয় ভালো আছে, লক্ষ্য করছে মিহির। তাইতো স্বাভাবিকতা বিরাজ করছে মুখাবয়বে। সে শান্ত গলায়ই সংকোচহীন প্রস্তাবে বললো,
“গিফট তো দিলে না। মাকে পাঠাবো তোমার বাসায়, তোমাকে তুলে নিয়ে আসার জন্য?”
রিপ্তির মুখের রশ্মি যেন পাল্টে গেলো। ভারি বিস্ময় জেগেছে চোখেমুখে এবং মনের অন্তস্থলে। কি শুনলো সে এটা! নিচের দিকে রাখা দৃষ্টি জোড়া পিটপিট করতে লাগলো যেন তার। যা মিহির খুব সহজেই ধরতে পেরেছে এবং নিজের মুখের হাসিটা আরও প্রশস্ত করে নিয়েছে। সে আবারও বললো,
“আমার বাসা দেখবে? চলো, চিনিয়ে দেই।”
রিপ্তি ফিরে তাকালো না। একইভাবে থেকে যেন বিস্ময়ের বৃষ্টিতে ভিজে যেতে লাগলো। এদিকে মিহির তার প্রত্যক্ষ জবাবের প্রত্যাশায় ছিলো। এমনি আরেকটা টেম্পো এলো। মিহির নিজেই সিগনাল দিলো। সিট খালি থাকায় টেম্পো থেমেও গেলো।
“আচ্ছা, আরেকদিন চিনে নিয়ো নাহয়। কলেজ যাও, দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
সহকর্মীর বাসায় নাস্তা করে এসেছে মিহির। তবুও বাড়ি ফিরে দেখে মা এদিকে নাস্তা রেডি করে অপেক্ষায় আছে। অপেক্ষা সুমিষ্ট করতে মায়ের মন তো রাখতেই হয়। তাই একটা রুটি নিয়ে টেবিলের কোণায় বসেই খেতে খেতে বললো,
“মা, একটা মেয়ে পছন্দ হয়েছে। বিকেলে দেখতে যেয়ো।”
জিনিয়া তাবাসসুম কিচেনে রান্নার কাজে ব্যবহৃত থালাবাটি মাজছিলেন। ছেলের কথায় কাজ ফেলে তুরন্ত এগিয়ে এলো,
“কোথায় দেখলি? কেমন দেখলি?”
“এদিকেই বাসা। বাজারের পাশে তিন তলা একটা আধ পুরনো রঙ করা বিল্ডিং আছে। বাজারের একদম শুরুতেই রাস্তার ওপাশে বাসাটা। আমি তারিকুল ভাইকে বলে দিলেই চিনবেন উনি।”
“মেয়ে দেখতে সুন্দর?”
“হুম, সুন্দরী। স্বাস্থ্যটা একটু কম। পড়াশোনার চাপ তো, চোখমুখ দেখেই বুঝা যায়।”
“বয়স কেমন?”
“ছোট-ই। কলেজে পড়ে। কত আর হবে, সতেরো আঠারোই ধরো। তোমার পছন্দ হয়ে যাবে। যদিও আমার এক্সপেকটেশন আরেকটু বেশি ছিলো। টুয়েন্টি প্লাসের মেয়ে আমার জন্য পারফেক্ট ছিলো। তবে মেয়েটাকে ভালো লেগেছে।”
“ওই সতেরো, আঠারো আর বিশ একদিকেই।”
“বাইশ তেইশ হলে ব্যাটার হতো।”
বেশি বয়সের প্রত্যাশা করায় জিনিয়া তাবাসসুম সামান্য মস্করা জুড়ে বললেন,
“হুম, কয়েক বছর গেলেই বাইশ তেইশও হয়ে যাবে। তবে আজই যাই দেখতে। মেয়ের বাবার নাম কি?”
মায়ের প্রথম বাক্যে মৃদু হাসলো মিহির। পরে রিপ্তি সম্পর্কে প্রত্যুত্তর করলো,
“আমি সঠিক জানি না তার পরিচয়। মেয়ের নাম রিপ্তি, এইটুকু বলতে পারি। তুমি গিয়ে দেখো।”
“আচ্ছা, সমস্যা নেই। তুই সাথে গেলেই হবে।”
“না, না। আমি যাবো না। অফিস যাবো একটু।”
“তবে গাড়ি নিবি না?”
“না। সিএনজি নাহয় বাসে চলে যাবো।”
“আচ্ছা, তবে তারিকুলকে বলে দিস।”
“ওকে।”
“একটা ব্যবস্থা হলেই হয় এবার। নিজে পছন্দ করেছিস বলে কথা!”
বলতে বলতে কিচেনে চলে গেলেন জিনিয়া তাবাসসুম। মায়ের সগতোক্তিতে খানিক মনযোগ দিলো মিহির। তার পছন্দতত্ত্বে মা আনন্দিত। মায়ের আনন্দটাই মনযোগে দেখলো মিহির। দুপুরে বাড়ির ঠিকানাটা ড্রাইভারকে বুঝিয়ে দিয়ে অফিস চলে গিয়েছিলো সে। রাতে আবার বাড়ি ফিরে জিজ্ঞেস করলো,
“গিয়েছিলে, মা?”
“হ্যাঁ গেলাম তো। কিন্তু মেয়ে তো ছোট না। ফ্যাশন ডিজাইনে পড়ছে নিটারে। আর এক-দেড় বছর গেলেই শেষ হবে। বয়স একুশ বাইশ হবে।”
“কি বলো! ঠিক বাসায় গিয়েছো তো?”
“সেখানেই তো নিলো তারিকুল। মেয়ের নাম রিপ্তি না? এক ভাই, এক বোন। মেয়েটা বড়, ভাইটা ছোট। কিন্ডারগার্টেনে পড়ে।”
“হ্যাঁ, রিপ্তি। ভাইবোনের সংখ্যা জানা নেই। তবে একটা ছোট ভাই দেখেছিলাম। কিন্তু মেয়ের বয়স তো এতো মনে হয় না!”
“ওই একটু চিকন দেখেই আর মুখটা কচি দেখেই বয়স বুঝা যায় না। মেয়ের বাবামা কি আর মিথ্যা বলবে আমাকে?”
“না, সেটা না। বয়স তেমন হলে তো ভালোই। মেয়ে কেমন দেখলে, বলো এবার।”
“ভালোই তো লাগলো। আমি বলে এসেছি তাদেরকে, আমাদের বাসায় আসার জন্য। আগামীকাল সন্ধ্যায় আসবে বললো। মেয়ের বাবা ব্যাংকের ম্যানেজার। শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত পরিবার। স্থানীয় বাড়ি। তোর দাদা, বাবা, চাচাদের চিনেই। শিক্ষাজীবনে বড় ভাই ছিলো নাকি তোর বাবা।”
“ওহ্, ওকে। তোমার পছন্দ হয়েছে তো?”
“মাশাআল্লাহ। মেয়ের মা বললো, মেয়ে নাকি তোর গানের খুব ভক্ত।”
“ওকে, আসুক তবে।”
“তুই থাকিস আগামীকাল। আসবে, কথাবার্তা বলবে না? তুই না থাকলে আর কার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবে?”
“প্রব্লেম নেই। আমি বাসায়ই আছি আগামীকাল।”
পরবর্তী সন্ধ্যায় রিপ্তির বাবা মা এবং বড় ফুপু এলো মিহিরদের বাসায়। সাথে এনেছে একগাদা ফলমূল আর কিছু ফাস্টফুড। তারা বিকেলেই আসতো, রিপ্তির বাবা রেফাজ উদ্দিন ব্যাংক থেকেই ফিরেন বিকেল পাঁচটার পর। মাগরিবের আজানের সময় হয়ে যায়। তাই সন্ধ্যার সময়টাই বেছে নিয়েছেন তারা। এসে বসলেন, প্রায় অনেকটা সময় গল্পসল্প করলেন। একই এলাকার চেনাজানা লোক, ছোটকালের কত স্মৃতি! মিহিরের বাবাচাচাদের মধ্যকার সম্পর্কও জানেন কিছুটা। যদিও ছেলেমেয়েদের সেভাবে চিনেন না। তবে মিহিরকে চিনে জনপ্রিয়তার কারণে। রাতের খাওয়ার সময়ই হয়ে গিয়েছিলো তাই হালকা নাস্তার পর রান্নাবান্নার আয়োজনেও যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেন জিনিয়া তাবাসসুম। মেয়ে পক্ষ তাকে সেই ঝামেলায় যেতেই দিলেন না। দুই পক্ষেরই আলাপসালাপ এবং মতামত চললো। তাদের মতামত তারা এখানেই জানিয়ে গেছেন। মিহিরের প্রস্তাবে তাদের আপত্তি নেই। একটাই তো মেয়ে। মেয়ের সুখটাই প্রত্যাশার উর্ধ্বে। এদিকে মিহিরের পছন্দের ভিত্তিতেই মিহিরের মায়ের উক্তি, বিয়েতে কোনো আয়োজন করবে না তারা। করতে গেলে খুব বড় আয়োজনই করতে পারে। কিন্তু মিহিরের চাচাদের সম্পর্কে তো তারা একটু হলেও অবগত বললেন। অথচ পূর্ব ক্ষোভের কারণে বর্তমানে মিহিরকে সহ্য হয় না তাদের। আর বাড়ির লোকেরাই যখন মুখ ফিরিয়ে, তখন বাইরের লোকেদের বাড়ি নিয়ে আসে কিভাবে? তাই এই আয়োজনটা বর্জন করতে ইচ্ছুক তারা। রিপ্তিদের বাসা থেকে মেহমান আসবে, যাবে। আপ্যায়নের কমতি রাখবে না জিনিয়া তাবাসসুম। কিন্তু বিয়েটা সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবেই সারতে চায়। তাদের অবস্থা বিবেচনায় এনে সম্মত হলো রিপ্তির পরিবার। একরকম পাকাপাকি আলোচনা করেই উঠলেন তারা। পরবর্তী সপ্তাহের সোমবার বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার সময় নির্ধারিত হলো।
চলবে।