#গল্পভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব (৭)
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি
নীলাকে ঘরের ভেতর টেনে নিয়ে গেলো রিশিকা তারপর দরজা আটকে দিলো।রাগের চোটে রিশিকার বুকটা যেনো প্রায় ফেটে যাচ্ছিলো।
নীলাঃ। মিসেস খান আপনি আমাকে এই ঘরে কেন আনলেন। আমি কি করেছি আর আমি এক্ষুনি বেরিয়ে যাবো এই ঘর থেকে। আর আজ যদি আপনি আমার গায়ে আবারও হাত উঠান এর পরিনাম কিন্তু ভালো হবে না।
নীলা ঘর থেকে যেই বের হতে যাচ্ছিলো রিশিকা তার কাধটা ধরে এক হেচকা টান মারলেন আর ধাক্কা টা এতোই জোরে ছিলো যে ধাক্কাটা না সামলাতে পেরে কিছুটা ছিটকে দুরে পড়ে গেলো। আহ বলে কাতরে ওঠে! নীলার চোখ ফেটে কান্না আসছে। আজকেও কি তাকে বিনা দোষে মার খেতে হবে।
রিশিকাঃ তুই কি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখিস নি হ্যাঁহ– কোন সাহসে তুই ফাহিমের কাছে গিয়েছিস। আমরা এতো বছর ধরে – এতো আগলে রেখেছি তোকে আর তুই আমার মুখের উপর কথা বলিস। যেখানে তুই জানিস আমরা তোকে কোথা থেকে কোথায় এনেছি । আমরা যদি তোকে আশ্রয় না দিতাম তাহলে এতো দিনে রাস্তায় পচে মরতি। আমার থালাতে খেয়ে আমার থালায় ছিদ্র করছিস। আর বলছিস আমি তোকে মারলে পরিনাম খারাপ হবে।
নীলার গলায় সুস্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে মার্কস গুলো। গলায় জোরে হেচকা টান দেওয়ার জন্য কেটে গেছে রিশিকার নখ দিয়ে। ফর্সা গলাটা খুব বাজে ভাবে কালচে লাল হয়ে গেছে।
নীলা উঠে গিয়ে রিশিকার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো —-
নীলাঃ আমি আপনার মেয়ের উডবি হাসবেন্ডের কাছে যায় নি অই ছেলেটা আমার কাছে এসেছিলো।আমি নই! এখানে আমার কি দোষ বলতে পারেন মিসেস খান। প্রথম থেকেই অই ছেলেটা আমার দিকে কুনজরে তাকাচ্ছিলো — আর আমি তো রান্না ঘরে কাজ করছিলাম অই ছেলেটা ওখানে কেনো গিয়েছিল আমি তো ডাকি নি আর না অই ছেলেটার সাথে আমি কোনো কথা বলেছি।
এক নাগারে কথা গুলো বলে থামলো নীলা মিসেস খানের চোখে চোখ রেখে।
রিশিকাঃ ওয়েল! ওয়েল –নীলা– আমি জানতাম আমাদের খান বাড়ির প্রোপার্টির প্রতি তোর খারাপ ইন্টেইনশন আছে। তুই এক দম তোর মায়ের মতোই হয়েছিস যেমন টা তোর মায়ের ছিল এক সময়। তোর শরীরে তো তোর মায়েরই রক্ত বয়ছে। তোরা শুধু জানিস এদিক সেদিক গিয়ে কি করে পুরুষ মানুষকে সিডিউস করতে হয়। আর তোর যদি কাউকে সিডিউস করতেই হয় যা না অন্য কারোর কাছে যা রাস্তায় অনেককেই পেয়ে যাবি। আমাদের বাড়িতে থেকে নিজেকে ইম্বারেস করিস না।
নীলাঃ আপনি মুখ সামলে কথা বলুন আপনি আমাকে নিয়ে যা খুশি বলুন কিন্তু আপনি আমার মরা মাকে তুলে কথা বলবেন না। একদম বাজে কথা বলবেন না আমার মাকে নিয়ে।। কোনো মেয়েই তার মাকে নিয়ে কেউ বাজে কথা বলুক সেটা সে মানতে পারে না তা সেটা তার মা যেমনি হক না কেনো।
রিশিকাঃ তোর মা যেমন তেমনই বলেছি আর বলবো। আর তুই কি ভেবেছিস তুই ফাহিমের মতো ছেলেকে তুই পটাতে পারবি তোর এই বেহেনজি মার্কা চেহেরাটা দেখি। আর কি বললি ফাহিম তোর কাছে এসেছিলো তুই বললি আর আমাকে সেটা মানতে হবে।ফাহিম তোর দিকে ফিরেও তাকাবে না আর তুই কি না বলছিস ফাহিম তোর কাছে এসেছিলো বাহ ভালোই চাল চেলেছিস তুই।
রিশিকার হাতে মার খেয়েও নীলা এতো টা দুঃখ পাইনি কিন্তু এই কথা গুলো তার মনে পাহাড় সমান কষ্ট দিয়েছে তার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নীলা হাসতে লাগলো। নীলা জোরে একটা শ্বাস ফেলে নিজের জামাটা ঠিক করে বললো —
নীলাঃ আপনি যদি মনে করে থাকেন আমি উনার জন্য গুড ওনাফ নয় আর এতো টাই অযোগ্য যে তিনি আমার দিকে ফিরেও তাকাবেন না। তাহলে আপনি এতো চাপ নিচ্ছেন কেনো।
রিশিকা নীলাকে আবার মারতে শুরু করে। তোর সাহস তো কম না আবার আমার মুখের উপর কথা বলিস।–একে তো অন্যায় করেছিস তার উপর বড় বড় কথা।
এই বলে ঘারে হাত দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে মাটিতে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই। এতো জোরে ধাক্কা দেওয়ায় নীলা ওখানে থাকা খাটের সাথে লেগে তল পেটে আঘাত লাগে নীলা তল পেটে হাত কুকরে চিৎকার উঠে। তার আজই পিরিয়ডের ডেট ছিলো। আর আঘাত টা এতোই জোরে ছিলো যে অনেক ব্লিডিং শুরু হয়ে যায়— মিনিটের মধ্যে সাদা টাইলস করা ফ্লোর টা রক্তে লাল হয়ে গেলো!!! এতো ব্লিডিং দেখে নীলা ঘাবড়ে গিয়ে চিৎকার করতে শুরু করে।
রিশিকাও ঘাবড়ে যায় আর নীলার মুখ চেপে ধরতে যাবে তখনি বাইরে থেকে কিছু আওয়াজ শুনতে পেলেন
— নীলাও দরজার দিকে তাকালো আর আনমনে বলে উঠে দাদি–
রিশিকা নীলার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে কাপা কাপা হাতে দরজা খুলে শকড হয়ে যায় কারণ দরজার বাইরে মিস্টার খান আর শাহানা খান দাঁড়িয়ে আছেন —– তারপর আমতাআমতা করে বলে ইমরান ত-তু-তুমি——
ইমরান হাত দুটো বুকের উপর ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে আর রিশিকার দিকে রেগে তাকিয়ে আছেন।
মিস্টার খানঃ কি হচ্ছিল এখানে এতক্ষন এখানে চিৎকার করছিলো কেনো নীলা।
রিশিকাকে আরও কিছু বলতে যাবেন তখনি চোখ গেলো নীলার দিকে।
তিনি অনেকটা ঘাবড়ে যায়।
এর মধ্যেই মুন্নি আর জীনিয়াও চলে এসেছে সেখানে। মুন্নিও ঘাবড়ে গেছে আমার এই অবস্থা দেখে।
জীনিয়াকে দেখে মনে হচ্ছে না তার মধ্যে কোনো ভাবান্তর হয়েছে।
আর দাদি আমার কাছে এসে আমাকে শক্ত করে ধরে-।-আমার দু চোখ অন্ধকার হয়ে যায়। আমি লুটিয়ে পরি দাদির কোলেই। দাদি শুধু দাদিকে বলতে শুনলাম ইমরান ধর মেয়েটাকে। আমি একটু আপসা ঝাপসা দেখতে পেলাম— মিস্টার খান আমার দিকে এগিয়ে আসছেন দৌঁড়ে। ব্যাস আমার আর কিছুই মনে নেই আমি অজ্ঞান হয়ে যায়!!
———————————————————
সদ্য যুবতী একটা মেয়ে হুইল চেয়ারের চাকা ঘুরিয়ে ভেতরে আসলো। মেয়েটা আর কেউ না শুভ্রর ছোট আদরের বোন হিয়া।
আস্তে আস্তে তার মুখটা স্পষ্ট হচ্ছে।
গায়ের রং কিছুটা চাপা। শ্যামলা গড়নের একটি মেয়ে!চুল গুলো ঘার পর্যন্ত! মিষ্টি একটা হাসি মেয়েটার মুখে! কতই না মহনীয় লাগছে মেয়েটিকে। কালো কুর্তি আর সাদা পালাজ্জো পরা মেয়েটি।
শুভ্র হিয়াকে দেখে ফিহাকে কোল থেকে নামিয়ে দেই।
শুভ্রঃ আরে বোন তুই — আয় ভেতরে আয় কিন্তু তুই একা একা কেনো হুইল চেয়ার ঠেলে আসছিস বাড়িতে কি সার্ভেন্ট অভাব হয়েছে নাকি। এতো গুলো সার্ভেন্টকে মুখ দেখার জন্য রেখেছি। তোকে যে দেখা শুনা করে সে কোথায়। আজকেই সব কোটাকে বের করে দিবো। এই বলে শুভ্র সার্ভেন্টকে ডাকতে যাবে–
হিয়াঃ আরে ভাইয়া কাউকে ডাকতে হবে না আর না কাউকে বের করে দিতে হবে।
আমাকে তো কিছু বলতে দিবি নাকি তা না নিজেই একা একা বক বক করে যাচ্ছিস। আমি ঠিক আছি। আসলে ফিহা আমার সাথেই খেলছিল দৌঁড়ে তোর ঘরে চলে এসেছে। ওকেই নিতে এসেছি।
শুভ্রঃ হুম নিয়ে যা তো বাবা বাবা বলে মাথাটা খেয়ে ফেললো মেয়েটা।
হিয়াঃ এইভাবে কেনো বলছিস ভাইয়া। আর হ্যাঁ আমি কিন্তু খুব রাগ করেছি তোর সাথে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে —
শুভ্রঃ কেন বোন আমি কি কিছু করেছি। তোর কোনো কথা রাখি নি বল আমায়।
হিয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে বিচলিত হয়ে!
হিয়াঃ হুম করেছিস তো অনেক কিছু করেছিস।তুই বিয়ে করেছিস একটা বাচ্চা হয়ে গেছে এতো দিনেও আমরা কিচ্ছুটি জানতে পারলাম না কেনো ভাইয়া। আমাকে না হয় না ই বললি মা — মাকে তো অন্তত বলতে পারতিস আমরা কি তোর কাছে এতোই পড় হয়ে গেছি!
এক নাগারে কথা গুলো বলে থামলো হিয়া।
শুভ্রঃ বিশ্বাস কর বোন আমি সত্যিই জানি না এই কি হচ্ছে আমার সাথে আর আমি যদি বিয়ে করেই থাকি সেটা তোদের থেকে কেনো লুকাতে যাবো এখানে তো আমার কোনো পার্পোজ নেই বল। ইভেন এই বাচ্চা টি কিভাবে কোত্থেকে এলো আমি কিচ্ছু জানি না। আমি সব জায়গায় চিরুনি তল্লাশি করিয়েছি আমার লোকজনদের দিয়ে। কিচ্ছু পাইনি।
হিয়াঃ কিন্তু তুই তো এই বাচ্চা টাকে অস্বীকার করতে পারিস না। তার জলজ্যান্ত প্রমান আছে। সেটা তুমিও ভালো করেই জানো। ওই রিপোর্টে যা আছে সেটা যে মিথ্যা না তুমি তো নিজেও জানো!
কথা গুলো বলে শুভ্রর দিকে তাকালো হিয়া।
শুভ্রঃ হুম এইখানে তো সব কিছু আটকে আছে। কার -কার এতো বড় সাহস যে আমাকে নিয়ে এতো বড় গেম টা খেলছে! কে –কে? উঠে গিয়ে দেয়ালের সাথে হাত বারি দিয়ে। আমি তো তাকে খুঁজে বের করবই। এট এনি কোস্ট। আর এক বার শুধু খুঁজে পাই তারপর দেখাবো আমি কি করতে পারি।
রেগে দাতে দাত চেপে।
হিয়াঃ ভাইয়া রিলেক্স। শান্ত হো। আচ্ছা মানছি তুই জানিস না কিছুই কিন্তু মা কি বলেছে তোর কি মাথায় আছে সেটা।
শুভ্রঃ হ্যাঁ আছে— কিন্তু সেটা তো আমার পক্ষে পসিবল না। আরে তোরা কেন বুঝতে পারছিস না আমি সাত দিনের মধ্যে বাচ্চার মা কে কোথায় পাবো।
এতো কিছু কি আর এই ছোট্ট বাচ্চা মেয়েটি বুঝে এতোক্ষন সে চুপটি করে বসে ছিলো।
ফিহা শুভ্রকে বাবা বাবা বলে ডেকে উঠে। বাবা ও বাবা হাত দুটো বাড়িয়ে শুভ্রর দিকে এগিয়ে দেই কোলে উঠার জন্য।
শুভ্র ফিহার দিকে তাকিয়ে রেগে যায় সেই মুহুর্তে । রেগে গিয়ে জোরে চেচিয়ে বলে এই মেয়ে এই তুমি আমাকে বাবা ডাকবে না যাও এখান থেকে। যাও বলছি।
ফিহা শুভ্রর ধমকে ভে ভে করে চিৎকার করে কেঁদে দেই।
হিয়াও কিছুটা কেঁপে উঠলো কারন শুভ্র খুব রেগে কথা গুলো বলেছে। সে জানে তার ভাইয়া রেগে গেলে। রাগের মাথায় কি করে না করে কিছুই খেয়াল থাকে না।
আমিই ভয় পেয়ে গেছি আর
সেখানে এই এক রত্তি মেয়েটা কাঁদবে না।
হিয়াঃ ভাইয়া এটা কি ধরনের ব্যবহার করছ বাচ্চা মেয়ে ও কি এতো কিছু বুঝে। এটা তুমি ঠিক করো নি। একটা বাচ্চার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে।
এই বলে হুইল চেয়ারের চাকা কিছু টা জোর ঘুরিয়ে ফিহাকে শান্ত করার জন্য এগিয়ে যায়। আলে আলে ফিহা সোনা মা আমার কাঁদে না মামুনি টা!
ফিহা কেদেই যাচ্ছে। ফিহার কান্না শুনে মিসেস চৌধুরী দৌড়ে এখানে চলে এসেছে। এসেই ফিহা কে কোলে তুলে নিয়েছেন। কি হয়েছে আমার ফিহা দাদু মনির। কাঁদছে কেন!
শুভ্র গম্ভীর হয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
হিয়াঃ মা দেখো না ভাইয়া ফিহাকে বকছে
মোল্লিকা ফিহার কান্না থামাতে থামাতে কিছুটা রেগে —
মোল্লিকাঃ হিয়া তুই তোর ভাই কে বলে দে আমার নাতনির সাথে ফারদার যদি এমন করেছে তার ফল ভালো হবে না। আর হ্যাঁ আমার সর্তের কথাটা মনে না থাকলে আবার মনে করিয়ে দে। আর তা যদি না করে তাহলে আমাকে মা বলে ডাকতে বারন করবি।
কথা গুলো বলেই তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন।
শুভ্র তার মায়ের চলে যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো।
তারপর হিয়ার কাছে গিয়ে বললো বোন তুই একটু মা কে বুঝা না আমি কোথায় পাবো বাচ্চার মাকে যেখানে আমি জানিই না বাচ্চা টা কে। আর দেখছিস মা আমার সাথে কথায় বলছে না।আমি মায়ের সাথে কথা না বলে কি করে থাকবো বল বোন।
অনুনয় করে বললো শুভ্র।
হিয়া কিছুই বলতে পারছে না। সে তার ভাইয়ার এই অসহাত্বটা দেখতে পারছে না। আমি কিচ্ছু করতে পারবো না। এতেই যে তোর ভালো হবে রে ভাইয়া। মনে মনে ভাবছে হিয়া।
হিয়াঃ ভাইয়া তুই মার কথা মেনে নে না। তাহলেই তো হয়ে যায়।
শুভ্রঃ বোন তুইও। যাহ এখান থেকে আমাকে তোদের বিশ্বাস করতে হবে না
কাদতে কাদতে বললো শুভ্র!!আমাকে একা ছেড়ে দে যাহ এখান থেকে।
হিয়া কাদতে কাদতে চলে গেলো হুইল চেয়ারের চাকা ঘুরাতে ঘুরাতে।
শুভ্র মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো খাটের উপর। তারপর চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লো।
চলবে—
(কাল থেকে জানি না কি হচ্ছে গল্প শুধু ডিলিট হয়ে যাচ্ছিলো আর পেস্ট করলে দুই বার করে হচ্ছিল তাই গল্প দিতে পারছিলাম না। জানি না কি হচ্ছে 🥺🥺🥺 একটু কষ্ট করে বুঝে নিয়েন। নিচের টুকু ডিলিট করতে গেলে পুরোটা ডিলিট হয়ে যাচ্ছে। অনেক কষ্টে কিছু টা কেটেছি)
রিশিকাঃ ওয়েল! ওয়েল –নীলা– আমি জানতাম আমাদের খান প্রতি তোর খারাপ ইন্টেইনশন আছে। তুই এক দম তোর মায়ের মতোই হয়েছিস যেমন টা তোর মায়ের ছিল এক সময়। তোর শরীরে তো তোর মায়েরই রক্ত বয়ছে। তোরা শুধু জানিস এদিক সেদিক গিয়ে কি করে পুরুষ মানুষকে সিডিউস করতে হয়। আর তোর যদি কাউকে সিডিউস করতেই হয় যা না অন্য কারোর কাছে যা রাস্তায় অনেককেই পেয়ে যাবি। আমাদের বাড়িতে থেকে নিজেকে ইম্বারেস করিস না।
নীলাঃ আপনি মুখ সামলে কথা বলুন আপনি আমাকে নিয়ে যা খুশি বলুন কিন্তু আপনি আমার মরা মাকে তুলে কথা বলবেন না। একদম বাজে কথা বলবেন না আমার মাকে নিয়ে।। কোনো মেয়েই তার মাকে নিয়ে কেউ বাজে কথা বলুক সেটা সে মানতে পারে না তা সেটা তার মা যেমনি হক না কেনো।
রিশিকাঃ তোর মা যেমন তেমনই বলেছি আর বলবো। আর তুই কি ভেবেছিস তুই ফাহিমের মতো ছেলেকে তুই পটাতে পারবি তোর এই বেহেনজি মার্কা চেহেরাটা দেখি। আর কি বললি ফাহিম তোর কাছে এসেছিলো তুই বললি আর আমাকে সেটা মানতে হবে।ফাহিম তোর দিকে ফিরেও তাকাবে না আর তুই কি না বলছিস ফাহিম তোর কাছে এসেছিলো বাহ ভালোই চাল চেলেছিস তুই।
রিশিকার হাতে মার খেয়েও নীলা এতো টা দুঃখ পাইনি কিন্তু এই কথা গুলো তার মনে পাহাড় সমান কষ্ট দিয়েছে তার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নীলা হাসতে লাগলো। নীলা জোরে একটা শ্বাস ফেলে নিজের জামাটা ঠিক করে বললো —
নীলাঃ আপনি যদি মনে করে থাকেন আমি উনার জন্য গুড ওনাফ নয় আর এতো টাই অযোগ্য যে তিনি আমার দিকে ফিরেও তাকাবেন না। তাহলে আপনি এতো চাপ নিচ্ছেন কেনো।
রিশিকা নীলাকে আবার মারতে শুরু করে। তোর সাহস তো কম না আবার আমার মুখের উপর কথা বলিস।–একে তো অন্যায় করেছিস তার উপর বড় বড় কথা।
এই বলে ঘারে হাত দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে মাটিতে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই। এতো জোরে ধাক্কা দেওয়ায় নীলা ওখানে খাটের সাথে লেগে তল পেটে আঘাত লাগে নীলা তল পেটে হাত কুকরে চিৎকার উঠে। তার আজই পিরিয়ডের ডেট ছিলো। আর আঘাত টা এতোই জোরে ছিলো যে অনেক ব্লিডিং শুরু হয়ে যায়— মিনিটের মধ্যে সাদা টাইলস করা ফ্লোর টা রক্তে লাল হয়ে গেলো!!! এতো ব্লিডিং দেখে নীলা ঘাবড়ে গিয়ে চিৎকার করতে শুরু করে।
রিশিকাও ঘাবড়ে যায় আর নীলার মুখ চেপে ধরতে যাবে তখনি বাইরে থেকে কিছু আওয়াজ শুনতে পেলেন
— নীলাও দরজার দিকে তাকালো আর আনমনে বলে উঠে দাদি–
রিশিকা নীলার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে দরজা খুলে শকড হয়ে যায় কারণ দরজার বাইরে মিস্টার খান আর শাহানা খান দাঁড়িয়ে আছেন —– তারপর আমতাআমতা করে বলে ইমরান ত-তু-তুমি——
ইমরান হাত দুটো বুকের উপর ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে আর রিশিকার দিকে রেগে তাকিয়ে আছেন।
মিস্টার খানঃ কি হচ্ছিল এখানে এতক্ষন এখানে চিৎকার করছিলো কেনো নীলা।
রিশিকাকে আরও কিছু বলতে যাবেন তখনি চোখ গেলো নীলার দিকে।
তিনি অনেকটা ঘাবড়ে যায়।
এর মধ্যেই মুন্নি আর জীনিয়াও চলে এসেছে সেখানে। ওরা মুন্নি ঘাবড়ে গেছে আমার এই অবস্থা দেখে।
জীনিয়াকে দেখে মনে হচ্ছে না তার মধ্যে কোনো ভাবান্তর হয়েছে।
আর দাদি আমার কাছে এসে আমাকে শক্ত করে ধরে-।-আমার দু চোখ অন্ধকার হয়ে যায়। আমি লুটিয়ে পরি দাদির কোলেই। দাদি শুধু দাদিকে বলতে শুনলাম ইমরান ধর মেয়েটাকে। আমি একটু আপসা ঝাপসা দেখতে পেলাম— মিস্টার খান আমার দিকে এগিয়ে আসছেন দৌঁড়ে। ব্যাস আমার আর কিছুই মনে নেই আমি অজ্ঞান হয়ে যায়!!
———————————————————
সদ্য যুবতী একটা মেয়ে হুইল চেয়ারের চাকা ঘুরিয়ে ভেতরে আসলো। মেয়েটা আর কেউ না শুভ্রর ছোট আদরের বোন হিয়া।
আস্তে আস্তে তার মুখটা স্পষ্ট হচ্ছে।
গায়ের রং কিছুটা চাপা। শ্যামলা গড়নের একটি মেয়ে!চুল গুলো ঘার পর্যন্ত! মিষ্টি একটা হাসি মেয়েটার মুখে! কতই না মহনীয় লাগছে মেয়েটিকে। কালো কুর্তি আর সাদা পালাজ্জো পরা মেয়েটি।
শুভ্র হিয়াকে দেখে ফিহাকে কোল থেকে নামিয়ে দেই।
শুভ্রঃ আরে বোন তুই — আয় ভেতরে আয় কিন্তু তুই একা একা কেনো হুইল চেয়ার ঠেলে আসছিস বাড়িতে কি সার্ভেন্ট অভাব হয়েছে নাকি। এতো গুলো সার্ভেন্টকে মুখ দেখার জন্য রেখেছি। তোকে যে দেখা শুনা করে সে কোথায়। আজকেই সব কোটাকে বের করে দিবো। এই বলে শুভ্র সার্ভেন্টকে ডাকতে যাবে–
হিয়াঃ আরে ভাইয়া কাউকে ডাকতে হবে না আর না কাউকে বের করে দিতে হবে।
আমাকে তো কিছু বলতে দিবি নাকি তা না নিজেই একা একা বক বক করে যাচ্ছিস। আমি ঠিক আছি। আসলে ফিহা আমার সাথেই খেলছিল দৌঁড়ে তোর ঘরে চলে এসেছে। ওকেই নিতে এসেছি।
শুভ্রঃ হুম নিয়ে যা তো বাবা বাবা বলে মাথাটা খেয়ে ফেললো মেয়েটা।
হিয়াঃ এইভাবে কেনো বলছিস ভাইয়া। আর হ্যাঁ আমি কিন্তু খুব রাগ করেছি তোর সাথে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে —
শুভ্রঃ কেন বোন আমি কি কিছু করেছি। তোর কোনো কথা রাখি নি বল আমায়।
হিয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে বিচলিত হয়ে!
হিয়াঃ হুম করেছিস তো অনেক কিছু করেছিস।তুই বিয়ে করেছিস একটা বাচ্চা হয়ে গেছে এতো দিনেও আমরা কিচ্ছুটি জানতে পারলাম না কেনো ভাইয়া। আমাকে না হয় না ই বললি মা — মাকে তো অন্তত বলতে পারতিস আমরা কি তোর কাছে এতোই পড় হয়ে গেছি!
এক নাগারে কথা গুলো বলে থামলো হিয়া।
শুভ্রঃ বিশ্বাস কর বোন আমি সত্যিই জানি না এই কি হচ্ছে আমার সাথে আর আমি যদি বিয়ে করেই থাকি সেটা তোদের থেকে কেনো লুকাতে যাবো এখানে তো আমার কোনো পার্পোজ নেই বল। ইভেন এই বাচ্চা টি কিভাবে কোত্থেকে এলো আমি কিচ্ছু জানি না। আমি সব জায়গায় চিরুনি তল্লাশি করিয়েছি আমার লোকজনদের দিয়ে। কিচ্ছু পাইনি।
হিয়াঃ কিন্তু তুই তো এই বাচ্চা টাকে অস্বীকার করতে পারিস না। তার জলজ্যান্ত প্রমান আছে। সেটা তুমিও ভালো করেই জানো। ওই রিপোর্টে যা আছে সেটা যে মিথ্যা না তুমি তো নিজেও জানো!
কথা গুলো বলে শুভ্রর দিকে তাকালো হিয়া।
শুভ্রঃ হুম এইখানে তো সব কিছু আটকে আছে। কার -কার এতো বড় সাহস যে আমাকে নিয়ে এতো বড় গেম টা খেলছে! কে –কে? উঠে গিয়ে দেয়ালের সাথে হাত বারি দিয়ে। আমি তো তাকে খুঁজে বের করবই। এট এনি কোস্ট। আর এক বার শুধু খুঁজে পাই তারপর দেখাবো আমি কি করতে পারি।
রেগে দাতে দাত চেপে।
হিয়াঃ ভাইয়া রিলেক্স। শান্ত হো। আচ্ছা মানছি তুই জানিস না কিছুই কিন্তু মা কি বলেছে তোর কি মাথায় আছে সেটা।
শুভ্রঃ হ্যাঁ আছে— কিন্তু সেটা তো আমার পক্ষে পসিবল না। আরে তোরা কেন বুঝতে পারছিস না আমি সাত দিনের মধ্যে বাচ্চার মা কে কোথায় পাবো।
এতো কিছু কি আর এই ছোট্ট বাচ্চা মেয়েটি বুঝে এতোক্ষন সে চুপটি করে বসে ছিলো।
ফিহা শুভ্রকে বাবা বাবা বলে ডেকে উঠে। বাবা ও বাবা হাত দুটো বাড়িয়ে শুভ্রর দিকে এগিয়ে দেই কোলে উঠার জন্য।
শুভ্র ফিহার দিকে তাকিয়ে রেগে যায় সেই মুহুর্তে । রেগে গিয়ে জোরে চেচিয়ে বলে এই মেয়ে এই তুমি আমাকে বাবা ডাকবে না যাও এখান থেকে। যাও বলছি।
ফিহা শুভ্রর ধমকে ভে ভে করে চিৎকার করে কেঁদে দেই।
হিয়াও কিছুটা কেঁপে উঠলো কারন শুভ্র খুব রেগে কথা গুলো বলেছে। সে জানে তার ভাইয়া রেগে গেলে। রাগের মাথায় কি করে না করে কিছুই খেয়াল থাকে না।
আমিই ভয় পেয়ে গেছি আর
সেখানে এই এক রত্তি মেয়েটা কাঁদবে না।