#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব- শেষ পর্ব (ক)
খন্দকার বাড়িতে আবারও বিয়ের আয়োজন। রাত পোহালেই বাড়ির ছেলের গায়ে হলুদ। মেয়ের বিয়েতে যতোটা করা হয়েছে ঠিক ততোটাই ছেলের জন্যও হচ্ছে। ময়ূখের শর্ত আয়শার কান পর্যন্ত যেতেই সে মনে মনে একগাদা গা-লি দিয়েছে ময়ূখকে। সেই সাথে প্রমিস করেছে আজীবন তাকে গালি দিয়েই সংসার করবে। ময়ূখের সকল ইচ্ছে পূরণ হওয়ার নয় তাইতো আয়শাও ডিমাণ্ড করেছে ওদের হবে ডেসটিনেশন ওয়েডিং। তারজন্য আবার জায়গা ঠিক করেছে ঢাকার বাহিরে তাও কিনা হলুদের দুদিন পর হবে বিয়ে৷ আত্মীয়স্বজন সকল দাওয়াত দিতে গিয়ে আবরার, ইরিন রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছে। ইরিন তো বলেই ফেলেছে, কি তার ছেঁড়া মেয়ে খুঁজেছো মৈত্রী? বাবু সারাজীবন কি করে সামলাবে এই পা-গ-লছাগলকে।”
ইরশাদ হাসতে হাসতে বলেছে, “আম্মু টেনশন করো না তো। এক পা-গ-লই পারে অন্য পা-গ-লকে সামলাতে। আর আমরা তো চাচ্ছিলামই ময়ূখ আগের মত হোক সেজন্য হলেও তার আয়শাকে লাগবে।”
মায়ের মন তবুও শ-ঙ্কা-য় ভোগে। প্রার্থনায় আকুল হয়ে আবেদন জানায় রবকে যেন ছেলেটা এবার সঠিক সঙ্গীই পায়। আবরার আর ফখরুল প্রায় দুজনেই একজোট হয়ে বিয়ের আয়োজন দেখছেন। মেহের কালই চলে এসেছে শ্বশুর বাড়ি থেকে ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে। কথা ছিল এ সপ্তাহে তারা হানিমুনে বালি যাবে পাসপোর্ট, টিকিট সব রেডিও হয়েছিল কিন্তু সবটাই ময়ূখের এই হঠাৎ বিয়েতে ভে-স্তে গেছে। মোহের অবশ্য তাতে মোটেও অখু-শি নয় শুধু জারিফ ফোন করে ব-কে-ছে ময়ূখকে, “শা-লা বিয়ে করার আর সময় পেলি না! আমার সাধের হানিমুন।”
“ঘ্যানঘ্যান করতে হবে না আগামী সপ্তাহেই পাঠিয়ে দিব তোদের। একটার জায়গায় দুইটা করবি হানিমুন।” ময়ূখও বন্ধুর সাথে মজা করল।
এদিকে মৈত্রী আজ একটু পর পরই ফোন কানে এ ঘর ও ঘর পায়চারী করছে৷ কাল রাত থেকেই শরীরটা ঠিক নেই টের পাচ্ছে। আবারও ইরশাদকে ছাড়া কে-টে গেছে দু সপ্তাহ। মেহেরের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতেই সে চলে গেছে সিলেট৷ মৈত্রী যেতে চেয়েছিল ইরশাদ রাজী হয়নি সঙ্গে নিতে৷ মোটামুটি সবারই জানা ময়ূখকে রাজী করাতে পারলে শিগ্রই আরেকটা বিয়ে হবে বাড়িতে৷ তাই অযথা জার্নিটা করাতে চায়নি কিন্তু এখন ইরশাদেরই দিন কা-টছে ক-ষ্টে। একে তো, সারাদিন পর অফিস থেকে ফিরে একা ঘরে থাকতে ভালো লাগে না তারওপর, কিছুদিন ধরেই মৈত্রীর শরীরটা ভালো থাকছে না বলে চি-ন্তা হয় খুব। আম্মুকে বলল তাকে নিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আনো মৈত্রী নাকি রাজী হয়নি৷ তার এক কথা ইরশাদ আসুক তখন যাবে৷ আজ তাই অপেক্ষা ছিল ইরশাদের আসার। কাল থেকে হলুদের ব্যস্ততা থাকবে তখন আর ইচ্ছে হবে না ডাক্তারের কাছে যাওয়ার। কিন্তু ফোন রিসিভ করেই ইরশাদ ভারী স্বরে বলল, “আজও আসা হবে না রাগ কোরো না তুমি। আসলে শেষ মুহূর্তে আমিই একটা কাজ নতুন যোগ করিয়েছি এখন সেটার লাস্ট ডেট কাল কিন্তু কাজ কমপ্লিট হয়নি। ফয়সাল আঙ্কেল, রনি ভাই (ফয়সালের ভাগ্নে) বলেছিলেন চলে আসতে কিন্তু বোঝোই তো দ্বায়িত্ব নিয়ে অন্যের কাঁধে ফেলে আসাটা ঠিক হবে না।”
“থামেন তো এত কৈফিয়ত কে চাইছে?”
“না চাইলেও দেওয়া জরুরি মনে হলো।”
“আমি রাগ করি না। কিন্তু মিস করি খুব আপনাকে।”
“আর একটা দিন সয়ে নাও এরপর আর কোন বিয়ে শাদীর চিন্তা নেই কোথাও গিয়ে থাকতে হবে না।”
“ইশ, বললেই হলো নাকি! শেলির বিয়ে হবে না সেখানে তো আমি পনেরোদিন আগেই চলে যাব।”
“ওহহো ভুলেই গেছি ম্যাম একমাত্র শালির বিয়ের কথা।”
“শুধু কি শালি!” কিছুটা খু-চিয়ে বলল মৈত্রী। ইরশাদ যে শেলির এককালীন ক্রাশ ছিল সে কথা ইরশাদকে বলেছিল মৈত্রী। তারপর থেকেই ইরশাদ শ্বশুর বাড়ি গেলেই শেলির সাথে খুব মজা করে এ নিয়ে। আধা গিন্নি বলেও ক্ষে-পা-য়। দুজনে কথা বলে অনেকটা সময় নিয়ে এতে মৈত্রীর মন খারাপ ভাবটা কে-টে যায়। রাতে শ্বাশুড়ির সাথে বসে আয়শার হলুদ আর বিয়ের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেয় সকালেই পাঠিয়ে দিতে হবে। ডেসটিনেশন ওয়েডিংয়ের জন্য লোকেশন ঠিক করা হলো গাজীপুরের একটি নান্দনিক রিসোর্ট। অল্পসময়ে এর চেয়ে দূরে বা এর চেয়ে ভালো কোন আয়োজন সম্ভব হয়নি।
বাড়ি ভর্তি মানুষ গিজগিজ করছে। অর্ধেক মানুষ ময়ূখের মায়ের গোষ্ঠীরই৷ তার মধ্যে অনেককে ময়ূখ চেনে না পর্যন্ত শুধু আবরার চেনে বলেই তাদের দাওয়াত করেছে। আফছার দেশেই ভাইয়ের ব্যবসায় যোগ দিয়েছে ভাইয়ের সহকারী হিসেবে। কিছুদিন ময়ূখও থাকবে তাদের সাথে। ইরিন শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে ময়ূখকে ব্যবসায় যোগ দিতে রাজী করানোর ব্যাপারে। এখন সবাই তক্কে তক্কে আছে কোন একভাবে ইরশাদকেও তাদের দলে ভিড়াতে। পুরো বংশে ময়ূখ একাই ছেলে আর বোনেরও একটাই ছেলে বলে আবরার চাচ্ছেন তার গড়া বৈষয়িক ইমারতের খুঁটি শেষতক ময়ূখ আর ইরশাদ ধরে রাখুক। আফছারও তাই চাচ্ছেন; বয়স তো তাদের এখন অর্ধেক কে-টেই গেছে। আজ বাড়ির চারদিকের রোশনাই কেমন যেন চোখ ঝলসে এলো তাঁর। মনটা বড় অশান্ত হাওয়ায় দোদুল্যমান। মেয়েটাকে কিছুতেই পারলো না এক জায়গায় স্থির রাখতে। পায়ে ঠেলে দিলো সততার পর্বতকে এখন ছিন্নমূল হয়ে ভাসবে। মেয়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিলেও যোগাযোগ তার একদমই শেষ হয়নি। শাইনের সাথে সব শেষ হলেও সন্তানটির সাথে দূরত্ব খুব বেশি নয়। আজ একটু আগেই নোরা কল করে বলছিল সে এ সপ্তাহে বয়ফ্রেন্ডের সাথে নিউজিল্যান্ড যাচ্ছে ভ্যাকেশনে। আফছার মনে মনে আফসোস করে এ নিয়ে কিন্তু অদৃষ্টের লিখন এমনটাই করার কিছুই নেই। সে ঘরে এসে কিছু সময় থম মে-রে বসে রইল। কিছু সময় চুপচাপ ভাবল নিজেকে নিয়ে, মেয়েকে নিয়ে তারপরই মনে হলো তার কিছুই করার নেই। নোরার সাথে যা হয়েছে বা হবে সবটার জন্য সে একাই দায়ী। সে এবং শাইন দুজনেই দু দিক থেকে চেষ্টা করেছিল মেয়েটা কোথাও এক জায়গায় খুঁটি গাড়ুক সে গাড়েনি৷
নিয়ম করে আজকাল আয়শার সাথে কথা বলতে হয় ময়ূখের। নিয়মটা আয়শার তৈরি করা ময়ূখ বারণ করেনি এ নিয়ে। জীবন বাঁধাইয়ের কাজে কোন একজনকে শক্ত হয়ে অধিকার খাটাতে হয়। সেই কাজটা আয়শাই করুক না হয় ময়ূখ লক্ষী ছেলের মত শুধু আদেশ, আবদার পালন করে যাবে। কাল হলুদ বলে আয়শা আজ সন্ধ্যায় একটা ট্রিট চেয়েছে ময়ূখের কাছে অ্যাজ আ গার্লফ্রেন্ড। ময়ূখ বলেছে কেমন ট্রিট চাই তোমার বলো।
রা-গ হয়েছে আয়শার। নিজে যেচে ট্রিট চাইছে তাই বলে ধরণটাও তাকে বলে দিতে হবে! মুখ ফুলিয়ে সে জানিয়ে দিল, লাগবে কোন ট্রিট। পুরনো ময়ূখ হলে হয়ত তৎক্ষনাৎ বুঝে যেত সে রা-গ, অভিমানের ধাঁচ৷ এই ময়ূখ টের পেলো না ফলে আজ রাতে আর কথা হলো না দুজনার। রাত শেষে গাঢ় ঘুমে কানে এলো ফোনের টোন। লাগাতার বেজে চলল সাত, আটবার। শেষ রাতের গাঢ় তন্দ্রা ছুটে গেলে মেজাজ যেমনটা রুক্ষ লাগে ময়ূখেরও তেমনটা লাগল। রেগে গিয়ে চোক না মেলেই ফোন ধরলো। অনেকগুলো দিন পর আজ অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বসলো সে, কোন মাদার** এত রাতে ফোন দিছিস রে! ওপাশের ব্যক্তিটি কথাটা শুনেই বোধহয় কল কে-টে দিল। এরপর একটা ছোট্ট মেসেজ এসে পড়ল ময়ূখের নম্বরে কিন্তু সে আর সেদিকে খেয়াল করেনি। ঘুমের পরত ভারী হয়ে আছে চোখের পাতায় তাই ঘুমটাই প্রাধান্য পেল। সকালে নয়টার পর ঘুম থেকে উঠে নাশতা সেরেই বের হলো সেল্যুনের উদ্দেশ্যে। তার সঙ্গী হলো জারিফ। দুই বন্ধুতে ফেসিয়াল করলো, ময়ূখ হেয়ার কাটও করল তবে খুব একটা চেঞ্জ এলো না তাতে। আয়শা সেদিন হঠাৎই বলল, তোমাকে কিন্তু আউলবাউল চুলেই ঝাক্কাস লাগে৷ বিয়ের সময় চুল গুলোতে পাগড়ি লাগবে না এমনিতেও এসো। বিয়ের কথা পাকা হতেই আয়শা তার সম্মোধনে পরিবর্তন এনেছে। ময়ূখের বলে দিতে হয়নি সে নিজে থেকে তুমি করে ডাকছে সারাক্ষণ। মেয়েটা পা-গলাটে, ক্ষেপাটে আর প্রজাপতির মত ভীষণ ছটফটে। সারাক্ষণ যেন ওড়ে বেড়ানোর ধা-ন্ধা-য় থাকে। ময়ূখের ভালো লাগে মেয়েটার এই বাচ্চামো, চঞ্চলতা। ভেতরে তার না আছে কু-টি-লতা না আছে গম্ভীরতার আড়ালে কোন হ-ঠ-কারিতা। যা আছে সবটাই প্রকাশ্যে যেন বইয়ের কোন খোলা পাতার একাংশ সে। সেল্যুন থেকে বের হতে হতে সময় হয়েছে দুপুর। মাথার ওপর গনগনে রোদ, বুকের ভেতর তৃষ্ণা। ময়ূখের হঠাৎ মনে পড়ল আজ সকাল থেকে পাগলটা একবারও কল করেনি। ঝটপট সে পকেট থেকে ফোন বের করে কললগ ওপেন করল। চোখের দৃষ্টি আ-ট-কে গেল পরিচিত একটি নাম্বারে। ডিলিট করা হয়নি নম্বরটি তবে কথাও হয়নি টানা এক বছর। তার আগে ডিভোর্সের পরও কথা হয়েছিল কয়েকবার বিভিন্ন ইস্যুতে। কিন্তু আজ কেন কল করেছিল! বুকের ভেতর কোথাও একটু কৌতূহল জাগলো কেন এসেছিল এই কলটা! পরক্ষণেই মনে হলো না এ নিয়ে ভাবার মত কোন বিষয় নয় এটা। মনটাকে ঝাড়ি মে-রে কল দিল আয়শার নম্বরে।
“হ্যালো ময়ূখ।”
“কি করছো? ”
“ইউ নো হোয়াট! কালকের আমার বিয়ে”
“সিরিয়াসলি! দাওয়াত করলে না আমায়?” পাংশুটে মুখ করে বলল ময়ূখ।আয়শাও ভেংচি কে-টে বলল, আধম-রা লোকদের দাওয়াত দেই না আমি।
দুজনের সম্পর্কটা হবু স্বামী -স্ত্রীর মত হয়নি। তাদের জীবনের পলনতুন অধ্যায়টা ঠিক বন্ধুত্বের খু-ন-সু-টিময়। ময়ূখ স্বস্তি পায় আয়শার বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে। মেয়েটা বয়সের তুলনায় যথেষ্ট বুদ্ধিসম্পন্ন৷ পরিস্থিতি বুঝে সব রকম আচরণেই নিজেকে প্রকাশ করে৷ মন বলে, তাকে নিয়ে জীবনের বসন্তগুলো দারুণ কা-ট-বে। আয়শার সাথে দুষ্টুমিষ্টি গল্প কথায় নোরার কাছ থেকে পাওয়া ভোরের অনাকাঙ্ক্ষিত কলের কথাটি বেমালুম ভুলে গেল ময়ূখ৷ দিনের বাকি সময়টা কে-টে গেল খোশমেজাজে। ইরশাদ এসে পৌঁছুলো সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে। মৈত্রী শাড়ি পরে হালকা সাজে খোঁপা বাঁধলো গাঢ় হলদে রঙে। ইরশাদের জন্য কমলা রঙের পাঞ্জাবিটা ইস্ত্রি করে রেখে দিল খাটের ওপর। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে সে পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে আয়নায় দেখলো নিজেকে৷ মৈত্রী পাশেই দাঁড়িয়ে কানে দুলের হুক লাগাচ্ছিল। ইরশাদ চুপচাপ কয়েক মিনিট দেখলো নিজেদের তার হঠাৎই দু হাতে মৈত্রীর কোমর জড়িয়ে ঘাড়ে চুমু খেল।
“এত সেজেছো কেন? আমার তো এখন আর বের হতে ইচ্ছে করছে না।”
“তো থাকেন। আমার দেরি হচ্ছে ছাড়ুন।”
“তোমাকে ছাড়লে কি করে হবে!”
“যেভাবে এতদিন হয়েছিল।”
“উফ, আর বলো না। আমি আর তোমাকে কোন বিয়েশাদী এটেন্ড করতে দিচ্ছি না৷ বউ ছাড়া মানুষ কি করে থাকে!” ইরশাদের কণ্ঠে অধৈর্য্য ভাব। মৈত্রীও ভালো ছিল না দূরে থেকে। মনে মনে সেও বলে আর কোথাও যাবে না এভাবে। বাইরে থেকে ইরিনের ডাক শোনা গেল৷ হলুদ শুরু করবে রাত বাড়ছে। জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে বাড়ি, হলুদের ভেন্যু লোকে লোকে পা নিঃশ্বাস ফেলা মুশকিল৷ ময়ূখ বসে আছে স্টেজে ; পরনে তার কমলা আর হলুদ কম্বিনেশনের পাঞ্জাবি যার কলার, কাফ আর বুকের মাঝটায় কারচুপি আর স্টোনের কাজ। একই রঙের লেহেঙ্গা পরে কাঁচা ফুলের হলদে সাজে পাশেই বসে আছে আয়শা। চোখে মুখে তার লজ্জার র-ক্তি-ম ছায়া। তার দিকে তাকিয়েই চমকে গেল ময়ূখ৷ এই উড়ালপাখি মেয়েটি লজ্জা পেতে জানে? অবিশ্বাস্য!
“শোনো”
ময়ূখ ফিসফিসিয়ে ডেকে উঠলো আয়শাকে।
“হু” মাথা না তুলেই ক্ষীণ স্বরে জবাব দিল আয়শা।
“তুমি কি লজ্জা পাচ্ছে?”
“না তো!” না বললেও গলার স্বরে আওয়াজ ছিল বড্ড দূর্বল৷ ময়ূখের হাসি পেল; দিনভর নির্লজ্জের মত বিয়ে আর হানিমুন করতে থাকা, মুরুব্বিদের সামনেই ডেসটিনেশন ওয়েডিং আর নাচের প্লানিং করা মেয়েটা হুট করেই কেমন লজ্জারাঙা হয়ে উঠলো। ভালো লাগছে ময়ূখের, মন বলছে জীবনটা খুব বেশি না হলেও ভালোই কা-ট-বে। পাগলামোর পাহাড়ে বসে দুজন মিলে মনের রঙে রংধনু আঁকবে৷ ধরে রাখতে পারলে রঙ মিলান্তির চমৎকার এক খেলা হবে বাকি জীবনটা।
চলবে
#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
শেষ পর্ব
নীরদবরণ আকাশটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে ময়ূখ৷ পরশু হলুদ শেষে সে মেসেজটা চেক করেছিল। নোরার মেসেজ বলেই সে ইচ্ছাকৃত ভাবে ইগনোর করেছিল দিনভর। ভেবে রেখেছিল একেবারে বিয়ের কার্যাদি সম্পন্ন করে তবেই এই মেসেজখানা দেখবে। কিন্তু সেটা হতো তার জন্য বড় একটা ভু-ল৷ প্রেম না থাকলেও একটা বছরের টানা হেঁচড়া একটা সম্পর্ক ছিল তাদের তারও আগে চাচার মেয়ে হিসেবে রক্তের সম্পর্কটাও তো আছে। সে কারণেই বি-চ্ছে-দ হলেও কোথাও না কোথাও একটুখানি আফসোস কিংবা মায়া জমা ছিল৷ সে কারণেই আয়শাকে খুব কাছের ভাবতে সময় লাগছিল কিন্তু ওই মেসেজ দেখতে গিয়ে যখন চোখে পড়লো প্রোফাইল ফটোখানা তখনই টের পেল বুকের ভেতর থাকা ভারী শ্বাসটা তার হালকা হয়ে গেছে। নোরা আবারও নতুন সঙ্গী পেয়ে গেছে নিজের জন্য। অনেক ভেবে বের করলো, নোরাকে আসলে কোন শ্বেতাঙ্গ, লম্বা-চওড়া পুরুষের সাথেই মানায়। তার মত মোটামুটি রকম উচ্চতায় গাঢ় বর্ণের অগোছালো ছেলের পাশে বেমানান৷ নোরার প্রতি কোন দা-য় নেই, মনের মাঝে আর দোটানা সংশয় নেই৷ এখন মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়তে থাকা মানব সে আর তার অপেক্ষায় আছে তার আধ পা-গ-ল মানবী। তাকে ভাবতে ভাবতেই হাসি পায় ময়ূখের। শুধু কি ময়ূখই হাসে! না বাড়ির প্রত্যেককেই হাসায় মেয়েটা। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা তারপরই দুজন বাঁধা পড়বে একই বাঁধনে। রিসোর্টে পৌঁছে ময়ূখের করার কোন কাজ না থাকায় এক রুমে ঢুকে বিছানায় গা এলিয়েছে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হবে বাগানের মাঝামাঝি একটা জায়গায়। দু পাশে দুটো স্টেজ অনেকটা চৌকির মত আকার। রঙিন কাপড় আর তাজা ফুলে সাজানো চারপাশ। বর কনের যে স্টেজ তাতেও ফুলেল সজ্জা। কনের স্টেজের সামনে রাখা হয়েছে পাতলা কাপড়ের পর্দা আর বরের স্টেজের সামনে লম্বা লম্বা ফুলের মালা ঝুলানো যেন সেটাই একটা পর্দা মধ্যিখানে ফাঁকা জায়গা। সবটাই আয়শার বলে দেওয়া পদ্ধতি। মেয়েটা বলিউড মুভিতে বড্ড আ-স-ক্ত তাইতো কোন এক মুভিতে এমন দেখে সেটাই করালো। তার এমন সব উদ্ভট আবদারে কারোই যেন বি-র-ক্তি আসে না। দেখলে মনে হয় যেন কতকাল তারা বিনোদন থেকে দূরে ছিল তাই এখন আয়শার আচরণই সেই বিনোদন হয়ে উঠেছে তাদের জন্য।
মেহের বিউটিশিয়ান এনেছে সঙ্গে করে ঢাকা থেকেই আর তাদের নিয়ে সেই ভোরে বসেছে সাজবে বলে। এ পর্যন্ত সকালের নাশতা আর দুপুরের খাবারও শেষ তবুও তার সাজ শেষ হচ্ছে না। একটু পরপরই সাজ রেখে ময়ূখকে ফোন করছে, কখনো মৈত্রীকে কখনোবা তার আম্মুকে ডেকে পাশে বসাচ্ছে। যতটা ছটফট সে এখন করছে ময়ূখ ভাবছে ততোটা কি স্টেজে গেলেও থাকবে! সেদিন তো হলুদে বসে কেমন লজ্জায় লাল হয়ে উঠেছিল। বেশ লোগেছে তার সেই মুহূর্তগুলো। সারাক্ষণ কথার তুবড়ি ছোটানো মেয়েটা এক আসর লোকের সামনে হঠাৎই বোবা বনে গেল। দরজা লাগিয়ে ঘরের পর্দা নামিয়ে অন্ধকার করে চোক বুঁজে পড়ে থেকেও কাজ হলো না। দু চোখের পাতায় ঘুমের ছিটেফোঁটা নেই উল্টো অবচেতন মন সময় গুনছে ভাই আর মৈত্রী কখন আসবে? চারটা কখন বাজবে! অপেক্ষা শুধু সেই মহেন্দ্রক্ষণের যে ক্ষণে পা-গ-লের নামটা তার নামে জুড়ে যাবে আজীবনের জন্য।
হাতের মেহেদীর দিকে নিষ্পলক চেয়ে আছে মৈত্রী। খুঁটে খুঁটে দেখছে মেহেদীর ফাঁকে লুকিয়ে রাখা ইরশাদ নামটাকে৷ অসুস্থতার জন্য দু দিন ধরেই চোখ ঝাপসা হয়ে মাথা ঘুরিয়ে যাচ্ছে। তবুও নিজেকে সামলে নিতে পারায় খুব একটা পাত্তা দেয়নি সেদিকে৷ ইরশাদ আন্দাজ করেই খুব জোরাজুরি করেছিল ডাক্তার দেখাবে বলে। মৈত্রীও যাবে বলেছিল শুধু বিয়ের দিন কয়েক অপেক্ষা করতে চেয়েছে। আজ বিয়েটা হয়ে গেলে ঢাকা ফিরেই সে ডাক্তার দেখাবে বলেছিল৷ কিন্তু তা আর হলো কই! সকালে ঘুম থেকে উঠে একা একা একটু হাঁটছিলো রিসোর্টেরই আশপাশটা৷ ইরশাদ তখনো ঘুমে ছিল অন্যরাও নিজেদের কাজে ব্যস্ত তাই সে একাই হাঁটছিলে কিন্তু দূ-র্ভা-গ্য মিনিট পাঁচেক হাঁটার পরই মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো৷ মুহূর্তেই চোখ ঝাপসা হয়ে পড়ে গেল সেখানেই৷ জ্ঞান হারিয়ে পড়েছিল কিছুক্ষণ তখনই ডেকোরেশনের কোন এক লেকের চোখে পড়ে। তার ডাকাডাকিতে সকলেই আসে। মৈত্রীকে দেখে ইরশাদের ভা-ঙা গাঢ় ঘুম নিমেষেই কর্পূরের মতো উড়ে গেল। না চাইতেও কেমন আ-ত-ঙ্ক ভর করলো হৃদয় গহীনে। ইরশাদ আচমকাই নিশ্চল হয়ে গেল তখনই ময়ূখ দৌড়ে কাছে গেল মৈত্রীর। কোন দিক না দেখে সে পাঁজাকোলে তুলে ছুটলো গাড়ির দিকে। ইরশাদের হুঁশ ফিরলো ইরনের ডাকে।
“শাদ!”
“আম্মু ওর কি হলো?”
“চল বাবা হসপিটালে যেতে হবে ওর কপাল কে-টে রক্ত ঝরছে।”
চেতনা ফিরলো এ কথা শুনেই। এবার ইরশাদও ছুটলো গাড়ির কাছে। ময়ূখ ততক্ষণে মৈত্রীকে গাড়ির পেছনের সিটে শুইয়ে দিয়েছে তার পেছন পেছন শেলি, মৈত্রীর বাবা, মামনি আর অন্যরাও ছিল। ময়ূখ ড্রাইভিং সিটে বসতে বসতে রোকসানা আর মুজিব সাহেব দুজনেই গাড়িতে উঠে বসেছেন। ইরশাদ এলে সে অস্থি-র হয়ে পেছনের সিটে তাকালো৷ রোকসানা হয়ত ইরশাদের চোখের ভাষা বুঝে নিলো৷ সে দ্রুত নেমে ইরশাদকে বসতে বলে নিজে সামনে গিয়ে বসল। অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানকার স্থানীয় এক ক্লিনিকে নেওয়া হলো মৈত্রীকে। ডক্টর কপাল আর হাতে আ-ঘা-তের চিকিৎসা করলেন। ততক্ষণে জ্ঞান ফিরেছে মৈত্রীর। ডক্টর তাকে সব রকম সমস্যা জিজ্ঞেস করেই প্রশ্ন করলেন, বিয়ের কতদিন হলো?
-তিন বছর আট মাস।
“আগের ছেলে মেয়ে আছে?”
মৈত্রীর আগে ইরশাদই জবাব দিলো ‘না’
“ইচ্ছাকৃত ভাবে নেওয়া হয়নি নাকি!”
ডাক্তারের কথা শেষ হয় না মৈত্রী কেঁ-দে ফেলে। ইরশাদ জবাব দেয় ডাক্তারের তারপরই মৈত্রীকে ইউরিন, ব্লাড আরও কিছু টেস্ট করাতে বলে দেয়। এদিকে বিয়ের সময়ও ঘনিয়ে আসছিলো তাই ইরশাদ অনেকটা জোর করেই সবাইকে রিসোর্টে পাঠিয়ে দেয়। সেই থেকে টানা পাঁচ ঘন্টা তারা হসপিটালেই আছে। একটু আগেই রিপোর্ট হাতে পেয়েছে ইরশাদ। মৈত্রীকে করিডোরে বসিয়ে রেখে ইমারজেন্সি রিপোর্ট নিয়ে নিজেই ঢুকেছে ডক্টরের কেবিনে। ডাক্তার সব রিপোর্টস চেক করে গম্ভীর মুখে তাকায় ইরশাদের দিকে। সেই তাকানোতে কিছু একটা ছিলো যার ফলে ইরশাদের বুকের ভেতর চিনচিনে ব্য-থার উদ্রেক হয়। খুব কি খা-রা-প কিছু হয়েছে!
“মিস্টার ইরশাদ, মিষ্টি কি আপনি খাওয়াবেন না আমিই আনাবো।”
“জ্বী!”
“আপনারা বলেছেন আপনাদের বেবি হচ্ছে না। বিয়ের পর থেকেই তো চেষ্টা করছিলেন উপরওয়ালার মর্জি হয়নি৷ কিন্তু আজ তো উপরওয়ালার মর্জি হয়ে গেছে। কংগ্রাচুলেশনস সুখবরটি চলে এসেছে।”
ইরশাদ শুনলো ডাক্তারের কথা। কিছু সময় স্থানুবৎ রইল তারপরই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ালে। অতি সন্তর্পণে ডান চোখের কোণটা ডান হাতের তর্জনীতে মুছে ডাক্তারের কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেল। ইরশাদকে দেখেই মৈত্রী দূর্বল দেহটাকে দাঁড় করাতেই ইরশাূ ফুলেফেঁপে ওটা সমুদ্রের ফেনিল ঢেউয়ের মত ডুবিয়ে নিলো মৈত্রীকে৷ সাইক্লোন বে-গে দু বুকের মাঝে জাপটে ধরলে শ-ক্ত করে৷ আকস্মিক এমন বাহুবন্ধনে টলে গেল মৈত্রীর ছিপছিপে শুকনো শরীরটা। কি হলো বোঝা গেল না শুধু টের পেল তার কাঁধে দু ফোঁটা তপ্ত জল৷ মুখ খোলার শক্তিটুকুও পাচ্ছিলো না মৈত্রী অথচ মনে মনে সে আওড়ে চলছিল, “কি হয়েছে ইরশাদ! আপনি কাঁদছেন কেন?”
সময় কাটলো নিরবে অনেকটা। করিডোর দিয়ে আসা যাওয়া করা প্রতিটা মানুষ কেউ আঁড়চোখে কেউবা সরাসরি তাকিয়ে দেখছিল তাদের। লোকের দৃষ্টি গ্রাহ্য করে মৈত্রী ইরশাদের বুকে হাত রাখতেই সে হুঁশে ফিরল। সরে দাঁড়িয়ে হাতে থাকা ফাইলটা মৈত্রীর দিকে বাড়িয়ে দিল। কানের কাছে মুখটা নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল, “আলহামদুলিল্লাহ্! কংগ্রাচুলেশনস মিস্টার এন্ড মিসেস শাহরিয়ার আপনারা বাবা-মা হতে চলেছেন।”
বিয়ের আসর জমে উঠেছে ছোট বড় সকলের উল্লাসে৷ বর, কনে হিসেবে ছেলে আর মেয়েরা আলাদা হয়ে দু ভাগ হয়েছে৷ মেয়েরা সকলেই কনে পক্ষ ছেলেরা বরপক্ষ। মৈত্রী একমাত্র জা আর ভাবী হিসেবে দু পক্ষেই সমান কিন্তু সামনে মুরুব্বিরা থাকায় তার ভূমিকা শীতল। এদিকে ইরশাদও খুব চোখে চোখে রাখছে তাকে৷ হাসপাতাল থেকে ফিরেছে কাজী আসার আধ ঘন্টা আগে। পুরো রিসোর্টে এক দফা মিষ্টিবর্ষণ হয়েছে সুখবর শুনে৷ মৈত্রী যখন জানলো সে মা হবে ডাক্তার বলেছে সত্যিই সে এবার মা হবে তখন আবারও জ্ঞান হারিয়েছিল৷ ডাক্তার জানালো তার বিপি লো, রক্তের ঘাটতি তারওপর টায়ার্ডনেস সব মিলিয়ে তার জ্ঞান হারানোটা স্বাভাবিক৷ কিন্তু এমনটা চলতে থাকলে সেটা ক্ষ-তি-র কারণ হতে পারে। মৈত্রীর জ্ঞান ফেরার পর রিসোর্টে ফিরে ইরশাদ চাইছিলো মৈত্রী বিশ্রাম করুক৷ কিন্তু না দূর্বল শরীরেও সে বিয়ের আসরে উপস্থিত থাকবেই। বা-ধ্য হয়েই ইরশাদ তাকে অনুমতি দিয়েছে থাকার সেখানেও শর্ত জারি। শাড়ি, লেহেঙ্গা দুটোই বাদ তাকে সুতির একটি কামিজ পরে থাকতে হলো একমাত্র দেবরের বিয়েতে। কাজী এলো বিয়ের রীতি অনুযায়ী এক এক করে সকল ফরমালিটি পূরণ করে কনেকে কবুল বলতে বলা হলো। সবাই ভেবেছিল আয়শা ফটাফট বলে দিবে কবুল। কিন্তু না সবাইকে অবাক করে দিয়ে সে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো ভরা মজলিশে। পর্দার ওপাশে থাকা আয়শার কান্না চোখে পড়লো না ময়ূখের শুধুই কানে বাজলো কান্নার সুর। মেয়েদের জীবনের পরম সত্য বিয়ের পর আপন জনদের ছেড়ে পরকে আপন করা। আয়শা কি সেই কথা ভেবেই ব্যাকুল হয়ে কাঁদছে! ময়ূখের খা-রা-প লাগছে সেই কান্নার আওয়াজ। ইচ্ছে করলো উঠে গিয়ে সান্ত্বনা দেয় মেয়েটাকে কিন্তু সকলের সামনে এমন কিছু করা অশোভনীয়৷ আয়শার বাবা’ই তার কান্না থামালো। কবুল শব্দটির পরিসমাপ্তি ঘটতেই আরেকদফা মিষ্টির বর্ষণ হলো এবার সাথে যুক্ত হলো খেজুরও। কাজী আর মুরুব্বিরা চলে যেতেই বর কনেকে একসাথে বসানো হলো। দুজনের মাথার ওপর লম্বা এক ঘোমটা টেনে নিচে আয়না রাখা হলো৷ কোন এক নিয়ম নীতির নামের এই আয়নাবাজিতে ময়ূখ চোখ বুঁজে নিলো। আয়শাকে দেখার আগে সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নিলো, “আজ এ ক্ষণে দৃষ্টির সীমানায় থাকা মেয়েটিই যেন হয় আমার শেষ ঠিকানা।” তারপর চোখ মেলে তাকায় ময়ূখ। চোখে চোখ পড়লো, এই হলো প্রথম তাদের শুভদৃষ্টি।
পরিশিষ্টঃ বছর পাঁচেক পরের এক বসন্তে বাড়ির আঙিনায় খেলছে আরিশা আর ইনায়া৷ ইরশাদের চার বছরের মেয়ে ইনায়ার কথাবার্তায় এখনই ভীষণ গম্ভীরতা আর কি যে বুদ্ধি তার! এদিকে ময়ূখ আয়শার মেয়ে আরিশা স্বভাবে সম্পূর্ণ মায়ের মত। তিন বছরে পড়বে পড়বে বয়সেই সে দিনভর হাজারটা কথা বলবে, যে কোন ব্যাপারে নিজের মত পাগলামি করে আধো আধো বুলিতে সকলকে অস্থির করে তুলবে। ইরশাদ মৈত্রী আপাতত ইনায়াকে নিয়েই ব্যস্ত অপরদিকে ময়ূখ খুব উস্কে দিচ্ছে আয়শাকে। তার এখনই আরও একটা বাচ্চা চাই তাও আবার আয়শার মত। সে অহর্নিশ বলতে থাকে, আমার ঘরে এক হালি বাচ্চা চাই তোমার মত। আমার মত না হলেও চলবে। আর আয়শাও তার স্বভাবসুলভ গালি দিয়েই বিড়বিড় করে। ময়ূখ যখন টের পায় তার স্ত্রীর বিড়বিড়ানো তখনি জবরদস্তি ঠোঁট কামড়ে ধরে। – নে এবার কর বিড়বিড়।
সমাপ্তি
( রিচেক করা হয়নি ভুলত্রুটি পেলে ক্ষমার চোখে দেখবেন। রিভিউয়ের কথা বলব না মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম।ভালো থাকবেন সবাই )