একজোড়া চড়ুই পর্ব-০৭

0
1369

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_৭
#Writer_Afnan_Lara
?
টিকেট কাউন্টারের লোকটা জানালো বাস আপাতত বেশিদূর যায়নি,সায়দাবাদে গিয়ে থামবে,সেখানে ৩০মিনিটের মত থেমে যাত্রী নিবে,এই ৩০মিনিটের ভিতরে সায়দাবাদ পৌঁছাতে পারলে বাস ধরা যাবে
ছোঁয়া তো উনার কথা শুনে লাফিয়ে উঠলো,ব্যাগ নিয়ে বাবার হাত ধরে হাঁটা ধরলো সে,বাবা ওকে থামিয়ে সিএনজি ডেকে উঠলো
২৫মিনিটেই তারা সায়দাবাদ এসে পড়েছে
এখন কথা হলো বাসটা ভর্তি হয়ে গেছে,ছোঁয়া রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বাসের পিছনে এক লাথি মেরে দিলো
বাবা রোডে দাঁড়িয়ে মায়ের সাথে কথা বলতেসে
ছোঁয়া ব্যাগ থেকে সেফটিপিন নিয়ে বাসের টাইয়ার পাঞ্চার করায় ব্যস্ত কথা হলো গিয়ে বাসের চাকা তো ইয়া বড় আর শক্ত তাই যত গুতাচ্ছে টাইয়ার পাঞ্চার হওয়ার নামই নিচ্ছে না আর ওদিকে বাস ছেড়েও দিসে
ধুর ধুর!
.
শ্রাবণ সায়দাবাদে এসে বাইক থামিয়ে দোকান থেকে কলা পাউরুটি কিনতেসে,সকালের নাস্তা করা হয়নি
হঠাৎ তার নজরে পড়লো ছোঁয়া পায়ের জুতা খুলে একটা চলন্ত বাসের দিকে মারতেসে
শ্রাবণের কাশি উঠে গেলো দৃশ্যটা দেখে,চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকলো সে
ছোঁয়া এগিয়ে গিয়ে নিজের জুতা নিয়ে ফেরত আসতেসে আবার
শ্রাবণ এবার ছোঁয়ার বাবাকেও দেখতে পেলো
উনি ফোনে কথা বলতেসেন এখনও
শ্রাবণ এগিয়ে গিয়ে উনাকে সালাম দিলো
উনি সালাম নিয়ে হেসে বললেন”তুমি এখানে??”
.
আঙ্কেল আমি তো কাজে ফেরত যাচ্ছিলাম,খাগড়াচড়িতে
এখন কিছু খাবার কিনতেসি,আপনি এখানে এই সময়ে?
.
আরে বলো না ছোঁয়াও খাগড়াচড়িতে জব পেয়েছে,এখন বাস মিস হয়ে গেলো
.
(তাই বুঝি জুতা মারছিলো?এই মেয়েটা পারেও বটে)
.
তুমি হাসতেসো যে?
.
আসলে আঙ্কেল মাত্র দেখলাম ছোঁয়া জুতা খুলে বাসের দিকে মারতেসে
.
??হাহা তাই নাকি??ভাগ্য ভালো বাসের ড্রাইভারকে হাতের কাছে পায়নি
.
কি করতো মারতো নাকি?
.
না মারতো না,তারে দাঁড় করিয়ে বলতো দাঁড়িয়ে থেকে বাস চালাতে
তারপর সে ড্রাইভারের সিটে বসে খাগড়াচড়ি যেতো
.
কি ডেঞ্জারাস!
.
ওর যা তেজ সেখানে ডেঞ্জারাস শব্দটা একদম কম কিছু
.
তাহলে এখন কি করবেন?
.
এক কাজ করতে পারবা বাবা?ছোঁয়াকে সাথে করে নিয়ে যেতে পারবা?তাহলে নিশ্চিন্ত হতাম
.
শ্রাবণ থ হয়ে চেয়ে আছে ছোঁয়ার বাবার মুখের দিকে,হুট করে আবারও দায়িত্ব দিয়ে দিবে সে ভাবতেই পারেনি,জানলে হয়ত এই প্রশ্ন করতোই না
কি আর বলবে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে দিলো
ছোঁয়া তার জুতা পরে ব্যাগ টেনে বাবার কাছে এসে শ্রাবণকে দেখেই চোখ বড় করে বললো”উনি এখানে?”
.
ভালোই হয়েছে রে,ও তোকে সাথে করে খাগড়াচড়ি নিয়ে যাবে
.
মানে কি?আমি উনার সাথে কেন যাবো,আর খাগড়াচড়ি কি ঢাকা থেকে কাছে নাকি?আমি এত বড় জার্নি বাইকে করে করবো?এমনিতেও বমি করতে করতে অবস্থা খারাপ হয় আবার বাইক?
.
আঙ্কেল তাহলে আমি আসি
.
এক মিনিট শ্রাবণ!
ছোঁয়া?তাহলে তুই কি সকাল ১১টার বাসে যেতে চাস?
.
ছোঁয়া চুপ করে বাবার মুখের দিকে চেয়ে আছে তারপর উপায় না পেয়ে বললো “না,এখনই যাবো”
মুখ কালো করে শ্রাবণের পাশে গিয়ে বসলো সে,বাবা ট্রলি ব্যাগটা ছোঁয়ার পিছনে বাইকে বেঁধে দিলো যার কারণে ছোঁয়াকে শ্রাবণের গায়ের সাথে একটু লেগে বসতে হয়েছে
ছোঁয়ার ও অস্বস্তি হচ্ছে সাথে শ্রাবণেরও
ট্রলি ব্যাগ দুজনের মাঝখানেও দেওয়া সম্ভব না কারণ তাহলে ছোঁয়া পড়ে যেতে পারে
.
টাটা বাবা
.
টাটা!গিয়ে ফোন করিস
.
ওকে
.
এই যে শুকনো মরিচ,একটু সরে বসেন,এত লেগে বসেছেন কেন?
.
একদম আমাকে শুকনো মরিচ বলবেন না,আমি মোটেও ইচ্ছে করে লেগে বসিনি,ব্যাগের কারণে একটু লেগে বসতে হয়েছে
.
ব্যাগ মাথায় ধরে রাখেন তাও আমার থেকে দূরে থাকেন
.
আমি এখন আব্বুকে কল করে বলে দিব আপনি আমার সাথে কেমন বিহেভ করতেসেন
.
তো কি করবো??
.
এট ফার্স্ট শুকনো মরিচ ডাকা অফ দেন
.
ওকে তাহলে বোম্বাই মরিচ ডাকবো,এটা ডান
.
কিহহ!শুকনো মরিচই ভালো ছিল
.
না না,আমি বোম্বাই মরিচই ডাকবো এখন থেকে
.
আমি খাগড়াচড়িতে একবার যাই তারপর জীবনেও আপনি আমার মুখ দেখবেন না
.
আমিও তোমার মুখ দেখতে চাই না ওকে?
.
এই হারামির লগে ইতি আপুর বিয়ে হলে আমি শেষ হয়ে যাবো,সাথে ইতি আপুও
.
কিছু বললা?
.
না বললাম আপনি অনেক ভালো
.
তার মানে খারাপ কিছু বলতেসিলা,যাই হোক তোমার টাকা দিয়ে আমি আমার বাগানে আবারও রজনীগন্ধার চাষ শুরু করসি,এবার ফলন ভালো হলে তোমাকে একটা কলি দিব,তুমি তোমাদের বাসার ওখানে লাগাইও নেক্সট টাইম আমার বাগানের দিকে নজর দিবা না আর
.
হুহ!
ওয়াক!
.
শ্রাবণ দূরে দাঁড়িয়ে আছে,ছোঁয়া বমি করতেসে রোডের কিনারায়
.
কি বিপদ!যারা জার্নি করতে পারে না তারা কেন জার্নি করতে আসে?আমি আমাকে নিয়ে কম ঝামেলায় ছিলাম যে এখন আবার আরেক ঝামেলা তাও এই বোম্বাই মরিচের?
আল্লাহ জানে আমি যে স্কুলের টিচার এই মরিচ সেই স্কুলের টিচার কিনা কে জানে তাহলে আমার জীবন পাপড় বানিয়ে দিবে
.
ছোঁয়া টিসু দিয়ে মুখ মুছে বাইকে বসে আছে মুখ গোমড়া করে
শ্রাবণ রোডের পাশের একটা দোকান থেকে পানি এক বোতল কিনে এনে ছোঁয়ার হাতে ধরিয়ে দিলো তারপর বাইকে বসতে বসতে বললো “নিন এই চকলেটটা খান”
.
আমার বমি আসতেসে,বমি করতে করতে জান বের হয়ে আসতেসে আর আপনি আমাকে চকলেট খেতে বলতেসেন?
.
আরে ভাই চকলেট এটা খেলে বমি আসবে না,মিনিমাম কম সেন্স নেই তোমার?জার্নিতে যারা বমি করে তারা এই ১/২টাকার চকলেট বারবার খেলে বমি আসে না,আসলেও একদম কম
.
আচ্ছা জানতাম না তো,আর এটা কি চকলেট?আমি স্ট্রবেরি ফ্লেভারের চকলেট খাই না
.
উফ!
.
এটা খেলে আবার বমি আসবে
.
তাহলে কোন ফ্লেভারের খান?
.
মিঃ ম্যাংগো চকলেটটা খাই আমি
.
তাহলে বসেন!
.
শ্রাবণ এবার গেলো মিঃ ম্যাংগো চকলেট আনতে
ছোঁয়া পানি খেয়ে শ্রাবনের দিকে তাকিয়ে আছে,সবসময় গায়ে পাঞ্জাবি থাকে,পাঞ্জাবি পরা ছেলেদের হিমু রুপা উপন্যাসের হিমুর মত লাগে
একদিন এক রঙের পাঞ্জাবি পরে,ঐদিন মনে হয় খয়েরী রঙের পরছিলো আর আজ সবুজ,আরেহ আমার জামাও তো সবুজ,মানুষ দেখলে বলবে হাসবেন্ড ওয়াইফ
আম্মু জোর করে সবুজ রঙের জামা পরিয়ে দিয়েছে
সবুজ রঙে নাকি শ্যামলাদের মানায়,কিন্তু আমার তো অসহ্য লাগে এই রঙটা,আরে এসব রঙে গাছ আর ধানের ক্ষেতকেই মানায় মানুষকে মানায় না বিশেষ করে আমাকে তো মানায় না
মাকে কে বুঝাবে,আমাকে সবুজ ধানের ছড়া বানিয়ে রাখছে
না জানি কখন কে বলে উঠে আপনি কি বিএনপি করেন?
.
এই নেন খান আপনার চকলেট,জামাও সবুজ,খান ও সবুজ নাম ও বোম্বাই মরিচ
তার মানে আমার দেওয়া নামটা একদম পারফেক্ট?
.
?চকলেট কিনে দিসেন বলে কিছু বলছি না,তা না হলে!!!
.
কিছু করার সাহস তোমার নেই,মাঝপথে নামিয়ে দিয়ে চলে যাবো আমি
.
আপনার বাইকে উঠলেই খোঁটা দেন কেন বলুনতে??ঢং বেশি করেন,তাই তো ইতি আপু আপনাকে দেখতে পারে না
.
ইতি আপু কে?ওহহহ ঐ যে নিজেকে সুন্দরি মনে করে সে?
.
মনে করে মানে কি?ইতি আপু তো আসলেই সুন্দর
.
আপনাকে আর চামচামি করতে হবে না,আমি সুন্দর আর অসুন্দরের তফাৎ চিনি
.
আমি কি তাহলে??
.
তুমি.?বলবো?
.
হ্যাঁ বলুন বলুন!
.
তুমি হলে বোম্বাই মরিচ,এটাই তোমার পরিচয়
.
ছোঁয়া রেগে আরেকদিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে
শ্রাবণ মুচকি হেসে বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দিলো
.
বাইক থামান
.
কেন?
.
খিধা লাগছে,ভোর থেকে একটা মেয়ে আপনার বাইকে না খেয়ে আছে,৬বার বমিও করসে আর আপনি কিনা আমাকে একটিবার খাওয়ার কথাও জিজ্ঞেস করতেসেন না তার উপর অপরিচিত হলেও এক কথা হতো সম্পর্কে আমি আপনার ছোট বোনের ছোট ননদ হই
.
সম্পর্ক বুঝাতে হবে না,আমি খেতে বলতেসি না কারণ এখন খেলেই বমি করে দিবেন,না খাইয়েও রাখবো না ৮টা বাজলে হোটেলে গিয়ে দুজনে খেয়ে নিব,আমি এতটাও irresponsible নাহ
.
হ্যাঁ দেখি তো কতোটা responsible!

ছোঁয়ার ঘুম আসতেসে চোখ জুড়ে,৭টা বাজে হয়ত,এখনও সকাল,তাও সকালের শুরু,ছোঁয়া বারবার শ্রাবণের পিঠে ঝুঁকে যাচ্ছে আবারও শক্ত হয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে ঘুম কাটার চেষ্টা করছে
.
শ্রাবণ বাইক থামিয়ে মায়ের সাথে কথা বলতেসে একটু দূরে দাঁড়িয়ে
ছোঁয়া বাইক থেকে নেমে এদিক ওদিক হেঁটে হেঁটে দেখছে,জায়গাটার নাম উদয়পুর
দূরে একটা শাপলাবিল দেখতে পেলো ছোঁয়া,তবে চারিদিক বাউন্ডারি করা,ছোঁয়া শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে এখনও কথা বলতেসে,এই সুযোগে সে রোড থেকে নেমে বিলের দিকে গেলো
শ্রাবণ ফোনে কথা বলা শেষ করে বাইকের দিকে তাকাতেই দেখলো ছোঁয়া নেই,চমকে এদিক ওদিক তাকাতেই চোখে পড়লো একটু দূরের একটা বিলের কোনায় দাঁড়িয়ে একটা শুকনো লাঠি দিয়ে শাপলা টেনে টেনে নিতেসে ছোঁয়স
শ্রাবণ মাথায় হাত দিয়ে বাইক লক করে সেদিকে ছুটলো,বাউন্ডারি করা মানে ঘাপলা আছে ব্যাপারটায়,শ্রাবণ চারিদিক দেখতে দেখতে এগোচ্ছে
ধরা না পড়লেই হয়,আজ এই মেয়েটার জন্য না জানি কোন বিপদে পড়তে হয় আমাকে
ছোঁয়া অনেকগুলো শাপলা নিয়ে এক দৌড় দিলো,যেনো তেনো দৌড় না একেবারে রেকর্ড করা দৌড় দিলো
শ্রাবণকে পেরিয়ে ছুটলো সে,শ্রাবণ বিলটার ভিতরে বাউন্ডারি পেরিয়ে সবে মাত্র ঢুকলো কিন্তু ছোঁয়ার এমন দৌড়ের কারণ সে বুঝতে পারলো না,হ্যাবলার মত ছোঁয়ার চলে যাওয়া দেখছ সে
ছোঁয়া শাপলা হাতে নিয়ে জান নিয়ে দৌড়াচ্ছে শেষে শ্রাবণের কথা মাথায় আসতে তার দৌড়ের গতি কমিয়ে পিছনে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বললো “বিলের মালিক আসতেসে”
.
শ্রাবণ চোখ বড় করে ছোঁয়ার দিকে তাকালো কয়েকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে,ঢোক গিলে সেও দৌড় মারলো
.
বেয়াদব মেয়ে,অসভ্য মেয়ে,চুন্নি একটা!!নিজে তো বিপদে পড়েছেই সাথে আমাকেও ফেললো
.
ছোঁয়া বাইকে উঠে হাঁপাচ্ছে
শ্রাবণ হামাগুড়ি দিয়ে রোডে উঠলো অবশেষে,এরকম দৌড় জীবনেও দৌড়াইনি সে
কপালের ঘাম মুছে উঠে দাঁড়িয়ে ছোঁয়ার কান টেনে ধরলো শ্রাবণ
.
আউচচচ!কি হলো আবার?
.
চোর কোথাকার,আর কি কি চুরি করো তুমি??তোমার সাহস হয় কি করে মানুষের বাউন্ডারি করা বিল থেকে শাপলা চুরি করার??কি করবা এই শাপলা দিয়ে??বেকুব মেয়ে কোথাকার,আর একটুর জন্য জেলের ভাত খেতে হতো
.
শাপলা খাওয়ার জন্য আনছি,ফুলের ভিতরে যে নরম জেলির মত আছে ওটা
.
শ্রাবণ ব্রু কুঁচকে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে মাথা ঠাণ্ডা করে ছোঁয়ার হাত থেকে শাপলার ডাঁটা গুলো নিয়ে নিলো
.
কি করবেন এগুলা দিয়ে
.
আমি রান্না করে খাবো,আজকে রাতের তরকারি হবে এগুলা দিয়ে
.
শাপলা আবার রান্না করে নাকি?
.
তো করে না?নারকেল দিয়ে সেই হয়,আমি তো আজ শাপলার তরকারি রাঁধবো
.
ছোঁয়া মুখটা গুলিয়ে বললো”আমাকে এট্টু দিয়েন”
.
তুমি আমাকে কই পাবা?তোমাকে ধরে খাগড়াচড়িতে ছেড়ে আমি চলে যাবো আমার বাসায়
.
প্লিস একটু দিয়েন
.
আজব তো!তুমি কি আমার বাসায় থাকার জন্য খাগড়াচড়িতে আসতেসো?
.
না সেটা না,এক কাজ করা যেতে পারে,আমি আপনার সাথে আপনার বাসায় গিয়ে শাপলার তরকারি খেয়ে তারপর আমার খালামণির বাসায় যাবো
.
আমার এত ঠ্যাকা পড়ে নাই
.
তাহলে দিন আমাকে শাপলার ডাঁটা গুলো,এগুলো আমি চুরি করসি,আমি ফেলে দিব নাকি আপনাকে দিব সেটাও আমি ডিসাইড করবো
.
শুনো তোমার জন্য আমাকেও দৌড়ানি খেতে হয়েছে সো এটাতে আমারও হক আছে
.
না নেই!
.
আচ্ছা ফাইন শাপলার তরকারি খাওয়াবো
.
?
.
হেসে লাভ নেই নারকেল পাবো কই?আমার হাতে এতো টাকা নেই,হিসাব করে এই মাস চলতে হবে,পিউর বিয়েতে টাকা দিতে হয়েছিল বাবাকে
তুমি বরং শাপলার ডাঁটা ফেলে দাও, লাগবে না
.
আরে না না,ফেলবো কেন??আমি বিল থেকে আসার সময় একটা নারকেল গাছ দেখসিলাম
.
তো তুমি এখন আমাকে আবারও সেই বিলে যেতে বলতেসো??
.
আপনার আজকের তরকারি মুফতে মিলবে এটাতে কি আমার লাভ নাকি আপনার??
.
তুমিও যাবে আমার সাথে
.
আমি গিয়ে কি করবো?
.
তুমি নিচে থেকে পাহারা দিবে কেউ আসে কিনা
.
ওকে ডান!চলুন
.
এক মিনিট,শাপলা ফুলের ভিতরের জেলিটা আমাকে দাও,তুমি একাই খাবে?
.
আপনি সব কিছুতে ভাগ বসান কেন?
.
কারণ তুমি আমাকেও হয়রানিতে ফেলতেসো!
.
ছোঁয়া বিড়বিড় করে কিসব বলে শাপলা ফুল দিলো শ্রাবণকে
খাওয়া শেষ করে দুজনে নামলো নারকেল চুরির জন্য
বিলটার ভিতরে ঢুকতেই নারকেল গাছটা সামনে পড়ে
শ্রাবণ গাছ ধরে উঠতেসে,অভ্যাস আছে তার গাছে উঠার
ছোঁয়াকে রেখেছে পাহারা দেওয়ার জন্য
সে যে কটা শাপলা অবশিষ্ট ছিল সেগুলো ও নিতেসে পাহারার কাজ না করে
শ্রাবণ নারকেল ১টা নিলো,তারপর নামতে নিতেই ছোঁয়া ওকে নামতে মানা করলো
.
কি?আমি কি সারাদিন এই গাছেই থাকবো নাকি?
.
না সেটা বলিনি,একটা ডাব ও দেখতেসি,ডাব ওটা নিয়ে নামেন
.
তোমার মাথা ঠিক আছে??ডাব নিয়ে কি হবে?দা বটি কিছু নাই,খাবা কেমনে?
.
পরেরটা পরে দেখা যাবে,আপনি নামেন,পানিও খাওয়া যাবে সাথে ডাবের আঁশ ও খাওয়া যাবে,আহা জোস জোস!!!
.
শ্রাবণ অনেক কষ্টে ডাবটা নিয়ে অবশেষে নামলো
.
ব্যাটারা আবার কি চুরি করতে আসছে,ধর ধর!!!!
.
শ্রাবণ ডাব আর নারকেল নিয়ে দৌড় দিলো
ছোঁয়া শাপলা ফুল নিয়ে দৌড় দিলো,দুজনে প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে
এবারও রক্ষা হলো,এখন কথা হলো ডাবটা খাবে কেমনে
.
ছোঁয়া ফোন টিপে ইউটিউব ঘেঁটে কি করে হাত দিয়ে ডাব কাটা যায় তা বের করে শ্রাবণকে দেখালো
ভিডিওটা দেকে শ্রাবনের কাশি উঠে গেসে
তারপর গলা ঠিক করে বললো”আমাকে কি তোমার কুস্তিবাজ মনে হয়??বলদ মেয়ে কোথাকার!!আমার হাতে এত শক্তি নাই যে বাড়ি দিয়ে ডাব দুইভাগ করবো
.
কি বলেন এসব,মাইরপিট জানেন না??এসব না জানলে কেমন পুরুষ আপনি?
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে