একগুচ্ছ কদম পর্ব : ৬

0
2822

একগুচ্ছ কদম ?
পর্ব : ৬
লেখা : আহমেদ রিপা

কারো ডাকে অতীত থেকে বের হয়ে আসলো রিদানশ । অতীত ভাবতে ভাবতে কখন যে এতোটা সময় কেটে গেছে বুঝতে পারলাম না। আজোও ওই সময়টা মনে পরলে বুকটা কেঁপে উঠে । ওই সময়টাতে কতো আকুতি মিনতি কররেও তোমাকে আটকে রাখতে পারলাম না। ভুল কি সত্যিই আমার ছিল না সবটাই তোমার ছলনা ছিল । ছলনাই করেছো তুমি !!

!! তুমি বিচ্ছেদ চেয়েছো আর আমি তোমাকে
অবশেষে তুমি পেলে নতুন সঙ্গী
আর আমি পেলাম কলুষিত
কিছু স্মৃতি!!!

মনে মনে আওড়াতে লাগলাম । বিচ্ছেদ এর যে কি যন্ত্রণা । সবটা এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে। যতো চাই সব ভুলে যেতে ততোই সব মনে পড়ে । সেইদিন আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কালো দিন । ভেঙ্গে পড়েছিলাম বাপি সামলিয়েছেন আমায় । কতো বার চেষ্টা করেছি মরে যাওয়ার । পারিনি আমি কিভাবে পারতাম আমার সাথে যে অন্যায় করেছে তার শাস্তি তাকে যে পেতে হবে। আমার বোন আমার থেকে দূরে সরে গেছে শুধু মাত্র তোমার জন্য রিদিতা খান ছাড়ব না আমি তোমায় ( চিৎকার করে বলতে লাগলাম ) আবারো ডুব দিলো অতীতের পাতায় !

দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল এভাবেই । প্রতিদিন রিদিতাকে এক নজর দেখতে ওর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। দুজনের মনেই তো ভালোবাসা ছিলো ।

বাড়িতে ঢুকতেই মোহো ডাকতে লাগল!!!
-দাভাই কথা ছিল তোর সাথে ( মোহো )
-বল ( বলেই সোফায় বসে পড়ল রিদানশ )
-দাভাই তুই রিদিকে ভালোবাসিস (মোহো )
-হ্যা বাসি তো ( রিদানশ )
-লাভ নেই ওর ভাই কখনোই মানবে না এইসব প্রেম ভালোবাসা ( মোহো )
-ওর ভাইয়ের মানা না মানা দিয়ে কি ( রিদানশ )
-ওর ভাইয়ের মানা দিয়ে অনেক কিছু ( মোহো )
-রিদি মানলেই হবে ওর ভাইকে দিয়ে কি হবে ( রিদানশ )
-কারণ ওর কাছে ওর ভাই সবার আগে আর ওর ভাই কখনোই মানবে না তোকে ( মোহো )
-কেন কেন‌ মানবে না আমায় সেইটা তো বলবি আমায় ( রিদানশ )
-( চিৎকার করে বলতে লাগলাম ) কারণ তোর জন্য মাহিদ খানের ভালোবাসা মরে গেছে ( মোহো )
-কি বলছিস এইসব আবল তাবল ( রিদানশ )
-কেন মানতে কষ্ট হচ্ছে এটাই সত্যি মাহিদ‌‌ খান তোকে ঘৃণা করে ঘৃণা আর সারাজীবন তাই করবে ( মোহো বলেই চলে আসলাম উপরে )

আমার জন্য মাহিদের ভালোবাসা মারা গিয়েছে‌ মানে কি । এটা কোন মাহিদ আমাকে জানতে‌ হবে । সব ভুল বোঝাবুঝি শেষ করতে হবে । মোহো কিভাবে জানল এগুলো সব সব জানতে হবে আমার ।

-রিদি চলো ( মাহিদ )
-হ্যা ভাই ( রিদি )
-(গাড়িতে উঠে বেড়িয়ে পড়লাম )
-পড়াশোনা কেমন চলছে তোমার ( মাহিদ )
-ভালোই চলছে ( রিদি )
-সামনের মাসে বাপি আসবে ( মাহিদ )
-আচ্ছা ! ভা ভাই ( রিদি )
-বলো ( মাহিদ )
-মোহো তোমাকে ভালবাসে ভাই ( রিদি )
-জানি আমি কিন্তু এটা ওর আবেগের সময় ও ভাবছে ও আমায় ভালোবাসে কিন্তু এটা ভালোবাসা না এটা ওর মোহো । ও আবেগের বশে এমন পাগলামি করলেও আমি ওর পাগলামিতে সায় দিতে পারি না তাই না ( মাহিদ )
-কিন্তু ভাই ও তোমায় সত্যিই ভালোবাসে ( রিদি )
-মোহোর জন্য সব করতে পারো তুমি রিদি ? ( মাহিদ )
-পারব না কেন ভাই অবশ্যই পারি ওর জন্য সব করতে পারব ( রিদি )
-যদি কখনো তোমায় মোহো আর তোমার জীবনের বিশেষ কারো মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হয় তুমি কাকে নিবে ( মাহিদ )
-সে সেটা এখন কিভাবে বলব ভাই ( রিদি )
-আচ্ছা এখন বলো না সময় হলেই বলো । চলে এসেছি চলো ( মাহিদ )

শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের জন্য আজকের এই পার্টি‌ । ছোট বড় সব ব্যবসায়ী উপস্থিত আজকের এই পার্টিতে । আজকের পার্টিতে চৌধুরী আর খান‌ পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত। রিদি আর ওর ভাই এসেই সবার সাথে পরিচয় হতে লাগল ।

-রিদি আসো তোমাকে আমার ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই ( রিদানশ )
-আচ্ছা ( রিদি )
-হেই সৌহার্দ্য ( বলেই জড়িয়ে ধরল রিদানশ )
-আরে মাহিদ ! কেমন আছিস ( সৌহার্দ্য )
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুই কেমন আছিস ( মাহিদ )
-আলহামদুলিল্লাহ ! এটা কে তোর সাথে ( সৌহার্দ্য )
-ওহ বলতে ভুলে গেছি এটা আমার ছোট বোন রিদিতা খান ( মাহিদ )
-তুমি তাহলে মাহিদের বোন ( ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে সৌহার্দ্য )
-হ্যা হ্যা ভাইয়া !!
-কেমন আছো তুমি ( সৌহার্দ্য )
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো ( রিদি )

কেউ একজন রাগে ক্ষোভে ফুঁসছে । সুযোগ পেলেই যেন তাকে ছাড়বে না ।

রিদিতা মোহোর কাছে যেতে গেলে কেউ একজন ওর হাত টেনে স্টোর রুমে নিয়ে আসে ভয় পেয়ে যায় রিদিতা ওকে নিয়েই দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ওর গলায় স্লাইড করতে লাগলাম। নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলাম । রিদিতা কেঁপে কেঁপে উঠছে আর নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো।হুট করেই ওর গলায় ছোট ছোট চুমু দিতে লাগলাম !!!!!

“”সে তোমার সাথে থাকলে তুমি
ভয়ংকর রকম ঝড় ও সামলে
নিতে পারবে
কিন্তু সেই যখন তোমার জীবনে
ভয়ংকর ঝড় হয়ে উঠবে তখন তুমি
ধ্বংস হতে বাধ্য””?

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে