একগুচ্ছ কদম পর্ব : ৪

0
3127

একগুচ্ছ কদম ?
পর্ব : ৪
লেখা : আহমেদ রিপা

“মানুষ বলে স্ত্রীর মৃত্যুর থেকেও প্রেমিকার মৃত্যু ভয়ংকর কারণ স্ত্রীর লাশে অধিকার থাকে যা প্রেমিকার লাশে থাকে না”
সেই সময়টি আমি ফেলে এসেছি যখন আমার ভালোবাসার মানুষটির মৃত্যু আমায় দেখতে হলো। ওর জন্য মারা গিয়েছিল আমার ভালোবাসা এর দাম ওকে একদিন না একদিন দিতে হবে । ওর বোন ও তো আমাকে ভালোবাসে ওর বোনও সেই জ্বালা অনুভব করবে । আমি নিজে করাব । যেই খেলা ও শুরু করেছে সেই খেলা আমি শেষ করব ।

পর পর কিছুদিন যাবত রিদানশ রিদিতার কোন দেখাই পাচ্ছিল না । তখন মরিয়া হয়ে উঠে রিদানশ । একদিন মাঝরাতে রিদিতার বেলকনির বাহিরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ওর মন বলছিল রিদিতা আসবে আর ঠিক তাই হয়েছিল কিছুক্ষণ পরেই রিদিতা বেলকনিতে গিয়ে বসে চিংকার করে কাঁদতে লাগে আর বলতে লাগলো!!

“এ কোন মায়ায় জড়িয়ে পরলাম আমি
এ মায়া কাটানো যে বড় কঠিন
এ কোন সর্বনাশের খন শুরু হলো
এ সর্বনাশ যে সবাইকে শেষ করে দিবে ”

দূর থেকে রিদানশ তার কদমকে কাঁদতে দেখে উতলা হয়ে উঠে। ভাবতে থাকে কি হয়েছে আমার কদমের । ভাবতে লাগে এ কোন খেলা নিয়তির !!

সময় বহমান নদীর পানির মতো। দুটি মনে দুজনের জন্য বাড়তে থাকে ভালোবাসা। কেউ ভাবে সে পাবে তার ভালোবাসার মানুষটিকে আর কেউ ভাবে আমার এই ধরা বাধা জীবনে তাকে আমি পাবো না।

মোহোর জন্মদিনে ও আসে রিদিতাকে নিয়ে যেতে।
-চল না তোকে নিতেই এসেছি আমি ( মোহো )।
-ভাই বকবে আমায় ( আমি ) ।
-আচ্ছা তোর ভাইকে আমি বলব ( মোহো ) ।
-আচ্ছা বলে দেখ ( আমি ) ।
-তো তোর ভাইটা কোথায় ? ( মোহো )
-ভাইয়ের স্টাডি রুমে তুই যা ( আমি ) ।
-আচ্ছা।

-আসব ?
-কে
-মোহো
-আসো
-কেমন আছেন
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি কেমন আছো
-আমার আর ভালো থাকতে দিলেন আপনি ( বিরবির করতে লাগলাম )
-কি বিরবির করছো ( ভ্রু কুঁচকে )
-না নাহ কি বিরবির করব ( হাসার চেষ্টা করতে লাগলাম )
-কিছু বলতে এসেছো কি
-হ্যা হ্যা
-তো বলো
-আ আসলে আজকে আমার জন্মদিন তাই রিদিতাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলাম যদি আপনি অনুমতি দেন
-( কিছুক্ষণ ভেবে বললাম ) আচ্ছা নিয়ে যাও সময় মতো দিয়ে যেও
-আচ্ছা দিয়ে যাব ধন্যবাদ
-আব শুভ জন্মদিন মোহো
-ধন্যবাদ আপনাকে । আচ্ছা তাহলে ওকে নিয়ে যাই আমি
-যাও
-আচ্ছা

কতোদিন পর আমার কদমকে দেখব। উফ্ কি খুশি না লাগছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো রিদানশ ।

রিদিতা আর মোহো চৌধুরী বাড়িতে ঢুকতেই ওদের উপর গোলাপের পাপড়ি পড়তে লাগলো। দু’জনে হাসতে লাগলো। আড়ালে একজন খুশি হয় ভাবে এই খুশিটাই দেখতে চেয়েছিলাম তোমার মুখে।

-কেমন‌ আছো কদম ? ( রিদানশ )
-কদম সে আবার কে ( ভ্রু কুঁচকে আমি )
-তুমি কদম ?
-ওহহো দাভাই একেবারে কদম হু হু ( মুচকি মুচকি হাসতে লাগল মোহো )
-যা তোরা তৈরি হয়ে আয় ( রিদানশ )
-হ্যা যাচ্ছি তুইও যা ( মোহো )

উপরে মোহোর রুমে চলে আসলাম।এসেই মোহোকে ড্রেস পছন্দ করে‌ দিতে লাগলাম ।

-তোর জন্য বাপি এটা এনেছে নে ( বলেই একটা ব্যাগ এগিয়ে দিলো আমার দিকে )
-আমার জন্য আবার কেনো
-তুই যা পড়ে আয়
-আচ্ছা ভাবিজি ( হাসতে লাগলাম )

কালো জামদানীর লেহেঙ্গা পড়েছি , চুলগুলো সোজা সিঁথি করে খোঁপা করে বেলি ফুল গুঁজে দিয়েছে মোহো । মোহো পড়েছে কালো গাউন চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে ওকে মা শাহ আল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে।

-কিরে চল নিচে যাই ( মোহো )
-হ্যা চল ( বলেই লেহেঙ্গা ধরে নামতে লাগলাম )

উপর থেকে কাউকে নামতে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে রইলাম । এ যে আমার প্রেয়সী। রিদিতাকে নামতে দেখেই বুকে হাত দিয়ে বলতে লাগলাম !!

“Meri Zindegi Ka Khajana
Mere Dil kii dolat hai tu
Mohabbat Hui hai Jabhse
Mere Sason ki Mohlat hai tu ”

-দাভাই ওই ওই ( হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে ডাকতে লাগলো মোহো )
-হ্যা হ্যা বল ( রিদানশ )
-আমাদের কেমন লাগছে বল না
-তোকে তো একদম ( ভ্রু কুঁচকে রিদানশ )
-একদম কি ( মোহো )
-ভুতনি লাগছে ( বলেই হাসতে লাগলাম )
-দাভাই তুই তুই খুব খারাপ খুব খারাপ ( বলেই মারতে লাগলাম )
-আরে সত্যি বলছি অনেক সুন্দর লাগছে তোদের দুইজনকে। বিশেষ করে কদমকে ( বলেই বাঁকা চোখে তাকালো আমার দিকে )
-( এই লোকটা শুধু শুধু আমাকে লজ্জায় ফেলে মনে মনে ভাবতে লাগল রিদিতা )
-আচ্ছা মোহো যা বাপি কে ডেকে নিয়ে আয়( রিদানশ )
-চল রিদি বাপি কে ডেকে নিয়ে আসি ( মোহো )
-ওর যেতে হবে না তুই যা ( রিদানশ )
-আচ্ছা তুই এখানে দাঁড়া আমি আসছি ( মোহো )
-আচ্ছা ( রিদিতা )

মোহো চলে যেতেই রিদিতার হাত ধরে এক সাইডে নিয়ে আসলাম !!

-আরে আরে ভাইয়া কি করছেন ( রিদিতা‌ )
-( দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলতে লাগলো ) তোমার কোন জন্মের ভাই লাগি আমি রিদিতা ( রিদানশ ) ।
-কোন জন্মের ভাই হবেন কেন‌ মোহোর ভাই আমারো ভাই ( রিদিতা ) ।
-তোমার ভাই না আমি বুঝলে নাম ধরে ডাকবে আমায় ( রিদানশ ) ।
-ডাকব না কি করবেন ( ভ্রু কুঁচকাতে লাগলাম ) ।
-ডাকবে না তাই তো ( রিদানশ ) ।
-হ্যা হ্যা
-আচ্ছা ( বলেই ওর ঘাড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করতে লাগলাম ) ।
-কি কি করছেন আপনি ছাড়ুন আমায় ( রিদিতা )।
-নাম ধরে ডাকবে না হুম ( রিদানশ ) ।
-ডাকব ডাকব ( রিদিতা ) ।
-গুড গার্ল ( রিদানশ )

“Phir Aaj koi Gazal Tere
Naam Na ho Jaye
Kahin Likhte Likhte
Shaam Na ho Jaye
Kar Rahe Hain Intezar
Teri Mohabbat ka
Isi Intezar me Zindegi
Tamam Na ho Jaye ”

চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে