আড়ালে ভালোবাসি পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব

0
1900

#আড়ালে ভালোবাসি
#শেষ পর্বের (প্রথম অংশ)
#লেখনিতে:রিদিকা আফরোজ রোজা

আবির রাতের বেলায় সবাই কে এক সাথে ডোয়িং রুমে আসতে বলে। আবির এর বাবা বলে কি হয়েছে কিছু বলবে। আবির বলে তোমাদের সবার সামনে আজকে এক জন এর মুখোশ খুলবো ওয়েট বলেই ফোনটা চালু করে সবার সামনে ধরে। ফোনের মাঝে নিশাত আর রায়ান এর সমস্ত কথা শুনাই। এই সব দেখে আরসাল আইরা বাদে সবাই অবাক । নিশাত ভয়ে ডুব গিলছে। আবির এর মা কিছু বলতে যাবে তখনি আবির হাত দেখিয়ে থামিয়ে দেই। আবির নিশাত এর সামনে গিয়ে বলে কি হলো ভাবছো তো কি করে যানলাম আমি। এরপর আবির রিমার সাথে যা করা হয়েছে সব বলে আর কি ভাবে এসব ভিডিও রেকর্ড করেছে সেই গুলো বলে। নিশাত বলে আমাকে মাফ করে দাও আবির। আবির নিশাত এর দুই গালে দুইটা থাপ্পর মারে নিশাত ছিটকে পরে যাই। কেউ আসছে না থামাতে। আবির এর বাবা মা বলে তোর মতোই কাল নাগিনী কে এতো দিন রেখেছি এই বাসাই ভাবতে শরির এ কাঁটা দিচ্ছে।

আবির এই দিখে নিশাত কে বেল্ট দিয়ে আঘাত করছে আর চেঁচিয়ে বলে তোর জন্য শুধু তোর জন্য আমি সব হারিয়েছি জীবনে সব চেয়ে বড় পাপ করেছি আমি তোকে আমার লাইফে এনে যার ফল আমি পাচ্ছি। নিশাত আবির এর পায়ে ধরে মাফ চাইছে তবুও আঘাত করে যাচ্ছে। এবার আরসাল এসে আবির কে থামায়। আইরা উঠে বলে আবির ওকে বের করে দাও গলা ধাক্কা দিয়ে। আবির নিশাত কে চারতে আইরা নিশাত এর কাছে গিয়ে বলে পিপীলিকার পাখা উঠে মরিবার তরে তোর এই অবস্থা বেশী লোভ করে পেলেছিলি তাই এবার রাস্তাই যা। আর তুই রাস্তাই কেনো যাবি আমি তো ভুলে গেছিলাম তোর সো কোল্ড বয়ফেন্ড আছে তার কাছে যা বলে ধাক্কা মেরে দরজার বাহিরে পেলে দেই ।আবির সাথে সাথে নিজের ঘরে ডুকে দরজার বন্ধ করে কেঁদে দেই আর ভাবতে থাকে তার একটা ভুল এর জন্য সব হারালো। কিছু কোন পর আবির উঠে লাগেজ গুছিয়ে নেই লন্ডন এ যাওয়ার জন্য।

এই দিখে নিশাত রায়ান প্লাটে ডুকে দেখে রায়ান একটা মেয়ে সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় মুহুর্তে নিশাত এর পায়ের নিছে মাটি সরে যাই ভাবছে কাকে দেখছে সে রায়ান অন্য মেয়ের সাথে। নিশাত চেঁচিয়ে বলে ওঠে রায়ান। রায়ান সাথে সাথে মেয়েটি কে চেরে দিয়ে নিজের জামা কাপড় পরে নেই। রায়ান কিছু বলতে যাবে তার আগে নিশাত রায়ান এর গালে থাপ্পর মেরে বলে জানোয়ার প্রতারক তোর জন্য আমি এসব কিছু করেছি এতো দিন আর তুই আমাকে টকালি। এরপর পাশের মেয়েটাকে থাপ্পর মারতে যাবে তার আগে রায়ান নিশাত কে থাপ্পর মেরে বলে উঠে ওর শরীর এ হাত তুলার সাহস কি করে হলো তোর ও আমার বউ। নিশাত বলে তাহলে আমি কি ছিলাম। রায়ান বলে জাস্ট টাইম পাস আর আমার আসল উদ্দেশ্যে ছিলো তোকে দিয়ে আবির এর সব সম্পত্তি আনিয়ে এরপর তোকে বিয়ে করে সব আমার নামে এনে তোকে বিদেশে নিয়ে বিক্রি করে দিবো কিন্তু এখন আর তোকে দরকার নেই এবার এখান থেকে যা বলে ধাক্কা মেরে বের করে দেই। নিশাত চিৎত্কার করে কাঁদতে থাকে আর ভাবে যে অন্যায় আবির এর সাথে করেছে সে তার ফল পেলো। নিশাত দৌরে চলে যাই রাস্তার দিখে আর বলে আমি মরে যাবো বাঁচবো না বলেই দৌরতে থাকে রাস্তার মাজ কান দিয়ে তখনি একটা গাড়ি সামনে চলে আসে নিশাত কে পিষে চলে যাই। নিশাত এর দেহ পরে থাকে রাস্তার মাজে।

পরের দিন সকাল বেলা আবির লাগেজ হাতে নিয়ে নিচে নামে আবির এর মা বাবা আরসাল বলে কোথায় যাচ্ছিস। আবির বলে মম আমি লন্ডন যাচ্ছি প্লিজ বাধা দিও না আমি একটু মানসিক শান্তি চাই মম প্লিজ আমি কথা দিচ্ছি আমি ঠিক ফিরে আসবো প্লিজ মম। আবির এর বাবা মা বলে ঠিক আছে যাও। আবির আরসাল এর কাছে গিয়ে আরসাল কে জরিয়ে ধরে বলে আই এম সরি ভাইয়া কোনো ভুল করে থাকলে মাফ করে দাও। আরসাল আবির এর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠে তুই আমার সাথে কোনো অন্যায় করিস নি মাফ কেনো চাইছিস তুই যানিস না তোকে আমি কতো ভালোবাসি। আরসাল এর কথা শুনে আবির কেঁদে দেই। একটু পর আরসাল কে ছেরে আইরা কাছে গিয়ে বলে আমাকে মাফ করে দিস হয়তো তোর সাথে যে অন্যায় করেছি তার জন্যে এই সাজা কম তুই পারলে আমাকে আরো সাজা দে তবুও মাফ কর। আইরা আবির এর হাত ধরে বলে আমি তোমাকে কবে মাফ করে দিয়েছি আর অতীতে ভেবে কষ্ট পেও না আমি ভালো আছি তো তাহলে কেনো নিজেকে দোষী ভাবছো বরং এটাই আমাদের ভাগ্য লেখা ছিলো। আবির হেসে চোখের পানি মুছে বলে ধন্যবাদ আইরা এতো সুন্দর করে বোঝানোর জন্য আর আমি যেনো আরেক বার এসে দেখি আমি চাচ্চু হয়েছি হুম বলে বেরিয়ে যাই সবার আড়ালে চোখের জল মুছে।

বিমানে এ বসে আছে আবির আর ভাবছে সবার কথা তখনি একটা মেয়ের এসে আবির এর পাশে বসে পরে। আবির মেয়েটির দিখে থাকাতে দেখে লাল টপ কালো জিন্স পায়ে হাই হিল চুল গুলো হালকা লাল একদম ফর্সা পুরা বিদেশিদের মতো চেহারা। মেয়েটি হাত বারিয়ে বলে উঠে আমি নাইরা তুমি। আবির এর ইচ্ছা না থাকলে ও ভদ্রতার কাতির এ হাত মিলিয়ে বলে আমি আবির। এরপর মেয়েটি বিভিন্ন কথা বলে যাচ্ছে আবির শুধু হে বলছে কোনো কথা বলছে না। হঠাৎ প্লেন উরতে শুরু করে মেয়েটি ভয়ে আবির কে দুই হাতে জরিয়ে ধরে। আবির মেয়েটির কান্ডে অভাক। মেয়েটি আবির কে বলে প্লিজ আমাকে চারবেন না আমি ভয় পাই বলেই আরো আকরে ধরে আবির কে। আবির বাধ্য হয়ে মেয়েটি কে আগলে নেই।

রাতের বেলায় আবির লন্ডন এর এয়ারপোর্ট এ নামে মেয়েটি ও। আবির বলে তুমি কোথায় যাবে। মেয়েটি ঠিকানা বলে। আবির বলে এক মিনিট আসমা খান মানে উনি কি হয় তোমার। নাইরা বলে মম। আবির বলে কি তুমি ফুফির মেয়ে আইমিন আদিরা শবনম নাইরা। নাইরা বলে ইয়েস তুমি কি আবির ভাইয়া যে আমাদের বাসাই থাকতে ছোট বেলা। আবির বলে ইয়েস । আইরা খুশি হয়ে আবির কে জরিয়ে ধরে বলে ও মাই গড আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা তুমি আসবে আবার। এরপর দুই জন চলে যাই আবির এর ফুফুর বাসাই। আবির বাসাই যেতে ওর ফুফু জরিয়ে ধরে কেঁদে দেই ছোট বেলা থেকে মানুষ করেছে নিজের হাতে সেই ছেলে আবার ফিরে এসেছে। এরপর আবির ভিতরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বাসাই কল করে জানিয়ে দেই ও চলে এসছে।
চলমান….

#আড়ালে ভালোবাসি
#শেষ পর্ব
#লেখনিতে: রিদিকা আফরোজ রোজা

দেখতে দেখতে কেটে যাই ছয় বছর পাল্টে গেছে সবার জীবন। আরসাল আর আইরার ছেলে হয়েছে নাম আরশ বয়স পাঁচ বছর একদম বাবার মতো গম্ভীর স্বভাব। এই দিখে ছয় বছর পর দেশে আসছে আবির তবে এখা না নাইরা আর তাদের এক বছর এর ছোট মেয়ে আরিসা। আবির ফুফুর বাসাই যাওয়ার পর নাইরা ওর পাশে বন্ধুর মতো থেকেছে সব সময় । আর আবির এর ফুফুর ইচ্ছা আবির খে মেয়ের জামাই করবে। আবির ও না করেনি ফুফুর মুখের উপর আর নাইরা সব দিখ থেকে দেখতে ভালো। তাই আবির বিয়ে করে নেই। তিন বছর আগে আবির নাইরার বিয়ে হয়ছে আর একটা ছোট বাচ্চা ও আছে। আবির দের দেখে সাবাই উঠে পরে। আবির এসে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে। নাইরা ও সবাই কে সালাম করে। নাইরা আরসাল এর কাছে এসে বলে তুমি খুব খারাপ ভাইয়া বোন কে একে বারে ভুলে গেছো। আরসাল বলে সরি লিটেল সিস এখন থেকে আর এই ভুল হবে না তুই তো এখন চোখের সামনে থাকবি আর ভুলবো না তোকে হলেই হেসে দেই। আইরা আবির এর বেবি কে খুলে তুলে নেই। আবির আরশ এর কাছে যাই। আরশ উল্টো দিখে মুখ ফিরিয়ে নেই। আবির আরশ এর সামনে এসে কান ধরে বলে সরি বাবু। আরশ বলে তোমার সাথে কোনো কথা বলবো না আমি রেগে আছে তুমাকে আমি বলেছিলাম না আমার বউ কে আগে আমি খুলে নেবো কিন্তু তুমি নিয়েছে আগে কোনো কথা নেই। আবির বলে সরি বাবু এই যে দেখো তোমার বউকে এক বারে তোমার কাছে নিয়ে এসেছি আর কখনো তোমার থেকে দূরে থাকবে না তোভার সাথে এখন থেকে থাকবে। আরশ বলে সত্যি। আবির বলে তিন সত্যি এরপর আরশ কে সোপাতে বসিয়ে আবির আরিসা কে দেই আরশ এর খুলে। আরশ আরিশা কে খুলে নিয়া গালে চুমু দিয়ে বলে তুই আমার পরী বউ বড়ো হয়ে তোখে বিয়ে করবো ওকে একদম আমার কথা শুনে চলবি না হলে মারবো। আরশ এর কথা শুনে সবাই হেসে দেই। এরপর কেক কেটে আরশ এর জন্মদিন পালন করা হয়।

রাতের বেলায় ব্যালকনিতে দারিয়ে বৃষ্টি দেখছে আরসাল আইরা।আইরা আরসাল এর গলা জরিয়ে দরে বলে সাত বছর হয়ে গেছে তাই না এক সাথে পথ চলা আমাদের তবুও আগের মতো মজবুত আছে সম্পর্ক। আরসাল বলে মৃত্যুর আগে অব্দি থাকবে। আইরা হেসে আরসাল কে জরিয়ে ধরে। আরসাল আইরা কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে উঠে জান পাখি চলো না এবার আরশ এর জন্য একটা বোন আনি। আইরা মুচকি হাঁসে। আরসাল বলে মনে আছে আমাদের প্রথম কাছে আসার দিন টা সেই দিন ও কিন্তু বৃষ্টি ছিলো। আইরা মাথা নারাই। আরসাল আইরার মুখ উপরে তুলে কপালে চুমু খাই। আইরা আরসাল এর দিখে তাকিয়ে মুছকি হেসে আরসাল এর ঠোঁট আকরে ধরে আবারো প্রথম দিনের মতো শাক্কী এই বৃষ্টি রাত আরসাল ।

সমাপ্ত ………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে