আমি শুধুই তোমার সিজন০২ পর্বঃ০২

0
2650

#আমি_শুধুই_তোমার?
#সিজন০২
#পর্বঃ০২
#Arshi_Ayat

(১৮+ এলার্ট)
ইনশিরা অজ্ঞান অবস্থা পড়ে আছে।তার দিকে মানুষরুপি জানোয়ার এগিয়ে আসছে।এখন মধ্যরাত।বাহির থেকে শিয়ালের ডাক আসছে।নিস্তব্ধ পরিবেশ।লোকটা এগিয়ে এসে ইনশিরার জামা কাপড় খোলা শুরু করলো।ইনশিরার জ্ঞান না থাকায় সে বুঝতে পারলো না।তারপরই জানোয়ারটা ঘুমন্ত ইনশিরার ওপর ঝাপিয়ে পড়লো।

ইনশিরার জ্ঞান আসার পর ওর অনুভব হলো কেউ একজন ওর ওপর পড়ে আছে।আর নিজের শরীর যে কোনো জামা নেই সেটাও বুঝতে পারলো।সাথে সাথেই ইনশিরার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।তার সব শেষ।কিন্তু এখান থেকে বেচে ফিরতে হবে।জায়গাটাই তো সে চেনে না।ফিরবে কিভাবে।গায়ের ওপর থাকা অমানুষটা নড়াচড়া করতেই ইনশিরা ঘুমের ভান ধরে পড়ে রইলো।অমানুষটা ওর গায়ের ওপর থেকে উঠতেই ইনশিরা চোখটা একটু ফাক করে দেখতেই ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে উঠলো।লোকটা ওয়াশরুমে যেতেই ইনশিরা কান্না করে দিলো।এ সে কি দেখলো!ইনশিরা কান্নাই করছে।লোকটা ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে ইনশিরাকে কান্না করতে দেখে বিশ্রি হাসি দিয়ে বলল”বেবি কান্না করে লাভ নেই।এখানে কেউ তোর কান্না শুনবে না তাই চুপ থাকাই তোর জন্য মঙ্গল।তারপর ইনশিরার হাতের বাধন খুলে দিয়ে জামা কাপড় দিয়ে বলল”যা শাওয়ার নে।খবরদার এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলেই কেটে রেখে দেবো।”

ইনশিরা জামা কাপড় নিয়ে কাপতে কাপতে ওয়াশরুমে গেলো।শাওয়ার অন করে এর নিচে বসে বসে কাদছে।একটা সময় ওর মনে হলো।আমিতো কোনো পাপ করি নি তবে আমি কাদছি কেনো?ওরা কাদবে যারা আমার সাথে এমন করেছে।এর বদলাতো আমি নেবোই।কিন্তু এর আগে আমাকে এখান থেকে বের হতে হবে।আর কোনো মেয়েকে ওদের খপ্পরে পড়তে দেওয়া যাবে না।ইনশিরা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখলো জানোয়ারটা বেরিয়ে গেছে দরজায় বাইরে থেকে তালা দিলে।ঘরে খাবারও নেই।ইনশিরার খুদা লাগছে প্রচুর।ইনশিরা সারা ঘরে তন্ন তন্ন করে খাবার খুঁজেছে কিন্তু পায় নি।কিন্তু হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে কেঁপে উঠে পিছনে ফিরতেই দেখলো ওই লোকটা না এটা অন্য আরেকটা।ওর সাথে আরেকজনও এসেছে।দু’টোর একটাকে চেনে না ইনশিরা।

———–

আদ্রি ছুটতে ছুটতে ইনানের কাছে এলো।আদ্রিকে এভাবে ছুটতে দেখে ইনান বলল”কি রে এভাবে ছুটছিস কেনো?”

“ইনশিরাকে আজ সকাল থেকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।আন্টি আমাকে ফোন দিয়েছিলো আমি ওদের বাসায় গিয়ে দেখি আন্টি আঙ্কেল কাদছে।ওর ভাই ওকে খুজতে বেরিয়েছে।”

“ও গড।কই যেতে পারে ও?”

“বুঝতে পারছি না।”

“তুই দাড়া আমি আয়াশকে কল দিচ্ছি।”

ইনান আয়াশকে ফোন দিয়ে তাড়াতাড়ি আসতে বলল।আয়াশ আসতেই ওকে সব বলার পর আয়াশ বলল”ওর সব ফ্রেন্ডের কাছে খোঁজ নে।আর আমাদের জানামতে ওর তো কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই।”

আদ্রি বলল”থাকলে আমিও তো জানতাম।ওর কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই তা আমিও জানি।”

ইনান মুখটা দেখার মতো।প্রচুর টেনশন হচ্ছে ওর।আয়াশ বলল”শোন আমাদের প্য্লান অনুযায়ী কাজ করতে হবে।আদ্রি তুই আজ ভার্সিটিতে থাকবি দেখবি আমাদের ডিপার্টমেন্টে কোন কোন ছেলের সাথে ও কথা বলা এবং ওদের মধ্যে কে কে আসে নি।আমি ওর সব বন্ধুদের থেকে খবর নিচ্ছি।তারপর আমি আর ইনান ওকে খুজতে বের হবো।যে যার কাজে লেগে পড়লো।

এদিকে ইনশিরা আবার শাওয়ারের নিচে বসে আছে।প্রচুর দুর্বল লাগছে।একটু আগেও ওই দুই নরপিশাচ ওর ওপর হামলা করেছে।ইনশিরা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসে দেখলো গ্লাসে ওয়াইন আর কেক রাখা আছে।ও কখনো ওয়াইন খায় নি তবুও আজ খেলো।কেক আর ওয়াইন খেয়ে পুরো ঘর লোক দুটোকে খুঁজলো কিন্তু কোথাও পেলো না।তারমানে চলে গেছে।এখন পালানোর রাস্তা খুজতে হবে।পুরো রুম খুজে পালানোর কোনো রাস্তা পেলো না।এদিকে বিকেল গড়িয়ে আরেকটা হিংস্র রাত অপেক্ষা করছে ওর জন্য।কি হবে আজ!!

ইনান,আয়াশ,আদ্রি কেউই ইনশিরার খবর পেলো না।চব্বিশ ঘন্টা না হওয়া পর্যন্ত মিসিং ডাইরীও করা যাবে না।ইনান ভেঙে পড়ছে।আয়াশ ওকে শান্তনা দিয়ে বলল”দোস্ত ভেঙে পড়িস না এভাবে।ওকে আমরা খুজে বের করবোই।”

“দোস্ত জানি না কেনো যেনো মনে হচ্ছে ওর কোনো বিপদ হয়েছে।”

“তুই বেশি ভাবছিস।কিচ্ছু হয় নি ওর।”

“আমি নিজেকে শান্ত রাখতে পারছি না।”

“তোকে শান্ত হতে হবে।আমাদের ইনশিরাকে খুজে বের করতেই হবে।”

“কিন্তু কিভাবে কোনো ক্লু ই তো খুজে পাচ্ছি না।”

“পাবো ধৈর্য ধর।আর ইনশিরা আমাদের সাথে অবশ্যই যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে।”

“ওর যদি কোনো বিপদ হয় ও কিভাবে যোগাযোগ করবে?”

“আল্লাহর ওপর ভরসা রাখ।আমরা ইনশিরাকে ফিরে পাবোই।”

আয়াশ কোনোরকমে ইনানকে বুঝ দিলো কিন্তু নিজেরও অনেক ভয় হচ্ছে। ইনান বাড়ি দিয়ে এসে নিজেও বাসায় গেছে।ইনান বাসায় এসে ওর মামাকে কল দিলো।

“হ্যালো মামা।একটা হেল্প করবে?”

“হ্যা বল।”

“মামা আমার এক ফ্রেন্ডকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।”

“মিসিং ডায়েরি করেছিস?”

“না এখনো তো ২৪ ঘন্টা হয় নি।”

“ও আচ্ছা তুই ওর ছবিটা পাঠা।আর কখন থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওই সময়টা বল।”

“আচ্ছা আমি সব কিছু মেইল করছি।তুমি প্লিজ কিছু করো।”

“আচ্ছা আমি দেখছি।”

ইনান ফোনটা রেখে কম্পিউটারের ইনশিরার ফুল বায়োডাটা আর ছবি মেইল করলো ওর মামাকে।

——-

রাত বাড়ছে সাথে ইনশিরার ভয়ও বাড়ছে কখন না আবার ওই জানোয়ারগুলো চলে আসে।হঠাৎ দরজাখোলার শব্দ হতেই ইনশিরা চমকে উঠলো।

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।সিজন০১ আর সিজন ০২ এর কাহিনি আলাদা।তাই আপনারা সিজন ০১ না পড়লেও সিজন০২ পড়তে পারবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে