আগন্তুক পর্ব-০১

0
2989

আগন্তুক
– সাবিহা বিনতে রইস

#পর্ব – ১

শ্বেত পাথরের বিশাল মহলটির সামনে দাঁড়িয়ে বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে ছিলো লাবণ্য। রাজশাহীর থেকে মাত্র ঘন্টা দেড়েকের দুরত্বে কোথাও এমন জায়গা লুকিয়ে থাকতে পারে, সে ভাবতেও পারেনি। মহলটির চারপাশে ঘন শালবন। তার ঠিক মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা লাল মাটির পথ লোহার গেটে গিয়ে ঠেকেছে। কারুকার্যখচিত সেই গেটের ভেতর দিয়ে মহলটির সামনে অংশ কিছুটা দেখা যাচ্ছে। ভেতরে পাথরের জলপরীকে ঘিরে চমৎকার এক ফোয়ারা। চারিদিকে নয়নাভিরাম ফুলের বাগান। চয়ন তখন গাড়ী থেকে মালপত্র নামিয়ে লাবণ্যর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে৷ লাবণ্য কনুই দিয়ে তাকে খোঁচা মেরে বললো,

– দারুণ না জায়গাটা?

চয়ন ঠোঁট উল্টালো৷

– তোমার কাছে যখন দারুণ লেগেছে, তখন আর আমার মতামতে কিছু যায় আসে না।

লাবণ্য সরু চোখে চয়নের দিকে তাকালো৷ তার মুখে বিরক্তির ছাপ। এখানে আসতে সবচেয়ে বেশি যদি কারো আপত্তি থাকে, তবে নিঃসন্দেহে তা চয়নের।

চয়ন আর লাবণ্য৷ তাদের বিয়ে হয়েছে সবে দু মাস। তবে পরিচয় প্রায় বছর দুয়েকের। চয়ন একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকুরীজীবী। পরিবারে আছে বলতে মা আর বড় বোন। বোন দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্য প্রবাসী। কয়েক বছর ধরে মা ও সেখানে স্থায়ী হয়েছেন। দেশে আছে শুধু চয়ন, একা। অন্যদিকে লাবণ্যর বিশাল পরিবার। বাবা – মা, ছোট ভাই, দীদা, চাচা-চাচী, চাচাতো ভাই-বোন সকলে মিলে একসাথে থাকে। বাবা-মা দুজনেই সরকারী কলেজের অধ্যাপক। লাবণ্য সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে। তবে তার সবচেয়ে বড় পরিচয়, সে একজন লেখক। গত কয়েক বছরে তার জনপ্রিয়তা দেশের গণ্ডি পেরিয়েছে। ওপার বাংলার উঠতি ছেলেমেয়েদের কাছেও সে ভিষণ জনপ্রিয়। দেশে সে থ্রিলার কুইন নামে সকল পাঠকের কাছে পরিচিত। দারুণ দারুণ সব হরর-থ্রিলার, সাসপেন্সে ভরা লেখা দিয়ে টানা তিন বছর সে বেস্টসেলার তালিকার প্রথম স্থানে অবস্থান করছে। দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন বুকশপ গুলোর টপ চার্টে প্রথম স্থানে তার নাম একপ্রকার অনড়। এ নিয়ে লাবণ্যর মনে সূক্ষ্ম গর্ববোধ আছে। তবে সে বিষয়টা চেপে রাখতে পছন্দ করে। গর্বের বিষয়টি কখনোই সে কারো কাছে প্রকাশ করে না৷

লাবণ্য চয়নের দিকে ঘুরে দু হাত দিয়ে তার ঘাড় জড়িয়ে ধরে বললো,

– আমরা কিন্তু হানিমুনে এসেছি ওকে? এখানে এসে এইরকম পেঁচার মতো মুখ কিন্তু আমি সহ্য করবো না!

– হানিমুন!! মানুষ হানিমুন করতে যায় সমুদ্রে, পাহাড়ে, আর আমরা হানিমুন করতে এসেছি কিনা এই জঙ্গলের মধ্যে, তাইনা? এইসব আজগুবি গপ্পো আমাকে দিও না। তুমি যে একটু পরই তোমার খাতা কলম নিয়ে নতুন উপন্যাসের কাজে বসে পড়বে, তা আমার ঠিক জানা আছে।

লাবণ্য হেসে ফেললো৷ চয়ন মাঝে মাঝে এমন করে, যেন ঠিক ছোট্ট একটা শিশু। চয়ন চেয়েছিলো হানিমুনে ইউরোপ ট্যুরে যেতে। কিন্তু হঠাৎ করে বিশ্ব জুড়ে মহামারী শুরু হয়েছে। করোনা ভাইরাস নামে এক ভাইরাসে বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। সব দেশ প্রায় লক ডাউন হয়ে যাচ্ছে। অফিস আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব ছুটি৷ দেশের পর্যটন কেন্দ্র গুলো পর্যন্ত বন্ধ। কোথাও যাবার উপায় নেই। এই ফাঁকে ছোট্ট একটা হানিমুনের ব্যবস্থা করে ফেলেছে লাবণ্য। অবশ্য এই হানিমুনে তারা একা নয়। সাথে চয়নের দুজন বেস্ট ফ্রেন্ড রয়েছে। রূপম আর প্রত্যয়। সেই কলেজ লাইফ থেকে তাদের বন্ধুত্ব। তারা দুজনেই বিবাহিত৷ রূপমের স্ত্রী অনিন্দিতা, প্রত্যয়ের স্ত্রী মল্লিকা। বন্ধুত্বের বাইরে রূপম আর প্রত্যয়ের মাঝে একটা আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। রূপম আর মল্লিকা দুই ভাই- বোন। রূপম নিজের বোনের বিয়ে প্রিয় বন্ধুর সাথে দিয়েছে, এই আর কি!

চয়ন আর লাবণ্যর বিয়ের কয়েকমাস আগে এক আড্ডায় মল্লিকা প্রথম এই বাড়ির কথা বলেছিলো৷ বাড়িটি নাকি প্রায় দুশো বছর আগের তৈরি। সেসময়ের জমিদার রাজ চন্দ্র চৌধুরী প্রায় চল্লিশ বিঘা জমির মাঝখানে এই বাড়িটি বানিয়েছিলেন। সে সময় এই শ্বেত মহলটি ছিলো দারুণ জমজমাট। কিন্তু এক রক্তক্ষয়ী ঘটনার ফাঁদে পড়ে এক রাতে, বাড়ির সকল লোক মারা যায়। তারপর অনেক বছর বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিলো। তার দীর্ঘ দিন পর রূপম- মল্লিকার প্রপিতামহ বাড়িটি নিজের দখলে নেন। সেই থেকে তাদের তত্ত্বাবধানে আছে মহলটি। তবে কখনো এখানে রাত কাটানোর সুযোগ হয়নি তাদের৷ মল্লিকার মুখ থেকে এমন ইন্টারেস্টিং ঘটনা শোনার পর থেকে লাবণ্য একপ্রকার মুখিয়ে ছিলো বাড়িটি দেখার জন্য। কিন্তু নিজেদের ব্যক্তিগত কাজের চাপে সেভাবে এখানে আসার সুযোগ হয়ে ওঠেনি৷ অবশেষে সুযোগ আসে গত পরশু। করোনা ভাইরাসের কারণে সব প্রতিষ্ঠান যখন ছুটি, তখন এই তিন জুটির নিভৃতে সময় কাটানোর এর থেকে ভালো সুযোগ, আর কি বা হতে পারে? আর সরকার থেকে বার বার ঘোষণা আসছে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার। আল্লাহর রহমতে তারা সকলেই বেশ সুস্থ। গত দুমাসে প্রবাসী কারো সংস্পর্শে আসার রেকর্ডও নেই তাদের। তাই একরকম নিজ উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে তারা।

গাড়ীর শব্দে চয়নকে ছেড়ে সরে দাড়ালো লাবণ্য। তাদের ঝকঝকে বিএমডব্লিউর পেছনে দুটো মারুতি এসে দাড়িয়েছে। প্রথম গাড়ী থেকে রূপম আর অনিন্দিতা নেমে এলো। পেছনের গাড়ি থেকে মল্লিকা নেমেছে। প্রত্যয় মালামাল নামাতে ব্যস্ত। রূপম তাদের দিকে এগিয়ে এসে চোখ টিপে বললো,

– কি বন্ধু, আসতে না আসতেই রোমান্স শুরু? একটু রয়ে সয়ে থাকো, এক-দুইদিন নয়, চৌদ্দ দিনের জন্য এসেছি। অনেক সময় আছে।

ইশ! রূপম ভাইটা কি সব যে বলে না!
লাবণ্য আড় চোখে তাকালো চয়নের দিকে। চয়নের কানও লাল হয়ে উঠেছে। বন্ধুদের মধ্যে চয়ন সামান্য লাজুক আর কি! অন্তত বন্ধুপত্নীদের সামনে কিছুটা বুঝেশুনে কথা বলে৷ কিন্তু রূপম আর প্রত্যয় ভাইয়ের কথা লাগাম ছাড়া।

অনিন্দিতা ভাবী এগিয়ে এসে বললো,

– কি গো? কোন সমস্যা হয়নি তো আসতে? পথ চিনে আসতে পারলে?

– এ আর এমন কি! হাইওয়ে দিয়ে আসতে তেমন সমস্যা হয়নি। আর গ্রামে ঢোকার পর গ্রামবাসী পথ দেখিয়ে দিয়েছে।

– তোরা সব দাঁড়িয়ে থাকবি? এতগুলো জিনিস আমাকে একা নিয়ে বাসা পর্যন্ত যেতে হবে নাকি?

প্রত্যয়ের কথায় সকলে পেছন ফিরে তাকালো। রূপম পকেট থেকে চাবিটা বের করে মল্লিকার দিকে ছুড়ে দিয়ে বললো,

– তুই গেটের তালা খুলে দে। আমরা প্রত্যয় কে হেল্প করছি। আর মোশাররফ চাচাকে ফোন দে। বল, আমরা চলে এসেছি৷ চাচার তো আগে থেকেই এখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো,তাই না?

মল্লিকা মাথা নাড়লো৷ চয়ন আর রূপম, প্রত্যয় কে সাহায্য করতে এগুলো৷ অনিন্দিতা আর মল্লিকার সাথে মহলের দিকে পা বাড়ালো লাবণ্য। বড় লোহার গেটের কাছে পৌছে দাঁড়িয়ে পড়লো সে৷ ডানপাশে শেওলা জমা ফলকের উপর অবহেলায় খোদায় করা একটি নাম। নয়নতারা। তার নিচে খানিকটা ছোট অক্ষরে লেখা, ১২০৮ বঙ্গাব্দ।

গেট পেরিয়ে ভেতর ঢুকে লাবণ্যর শুধু অবাক হওয়ার পালা। ঠিক যেন রূপকথার কোন প্রসাদপুরিতে চলে।এসেছে সে৷ মূল ফটক থেকে অন্দরমহল প্রায় বিশ কদমের পথ। অন্দরে ঢোকার আগে প্রশস্ত বারান্দা, কারুকার্যখচিত কাঠের দরজা, দালানের দুপাশে ঘোরানো সিঁড়ি দোতলায় উঠে গেছে। মনে মনে চনমনে হয়ে উঠছিলো লাবণ্য৷ নতুন গল্পের সূত্রপাত এখান থেকেই করা যাবে। অনিন্দিতা আর মল্লিকার সাথে পা বাড়িয়ে সে দোতলায় উঠে এলো। বাড়িটি এখনকার বাড়ির তুলনায় উচ্চতায় বেশি খানিকটা বেশি। নিচ তলা থেকে দোতলায় উঠার সময় প্রায় তেত্রিশটি সিঁড়ি ভাঙতে হয়েছে। নিচতলার তুলনায় উপরের ঘরগুলো বেশি পরিস্কার। মল্লিকা হাতে চাবির গোছা খুঁজে খুঁজে খুলতে থাকলো ঘর গুলো৷ বারান্দার চকচকে মেঝে দেখে বোঝা যাচ্ছে, দিন দুয়েকের মধ্যে কেউ ঘরগুলো পরিস্কার করে গেছে। অনিন্দিতা নিজেই বললো,

– বুঝলে লাবণ্য, গ্রামে আমাদের কয়েকজন লোক আছে। তাদের কাছে বাড়ির চাবি দেওয়া আছে। বছরে দু একবার এলে, তারা বাড়িঘর পরিস্কার করে দিয়ে যায়। এমনই শুনেছি আমি বাবার কাছে। কি মল্লিকা, ঠিক বলেছি তো?

– হুম, ঠিকই বলেছো৷ আসলে এত বড় বাড়ি সবসময় দেখাশোনার জন্য লোকজন রাখা খুবই কস্টলি। আর আমরা ছোটবেলা থেকে কেউ কখনো এখানে রাত কাটাইনি৷ বাবা-মা ও এখানে এসেছে কোনদিন একরাত থেকেছে বলে শুনিনি৷

লাবণ্য কৌতূহলী হয়ে বললো,

– তা বুঝলাম, কিন্তু ঘরে তো জিনিসপত্র ভালোই আছে দেখছি। চুরি হয়না এটাই তো বিশাল ব্যাপার।

অনিন্দিতা ফস করে বলে ফেললো,

– চুরি করবে, তাও আবার এই বাড়িতে? এত বড় সাহস কারো আছে?

– কেন? বাড়ির উপর বিশেষ কারো নজর আছে নাকি?

– তা আর বলছি কেন? এ বাড়িকে নিয়ে তো গল্পের শেষ নেই। গ্রামের লোকেরা বলে…

– আহ ভাবী! চুপ করো তো৷ এইসব কথা পরে বলা যাবে৷ শোনো লাবণ্য, তুমি ঠিক করো কোন ঘরে থাকবে! এখানে পাশাপাশি তিন ঘরই একইরকম। সব ঘরের সাথে এটার্চ বাথ।

লাবণ্য বেরিয়ে এলো। ফাল্গুনের মধ্য দুপুর। দূরে কয়েকটি শিমুল গাছ ফুলে ফুলে রক্তিম হয়ে আছে। বাতাসে অদ্ভুত রকমের স্নিগ্ধতা। চয়ন লাগেজ হাতে নিয়ে দোতলায় উঠে এলো, তার ঠিক পেছনে পেছনে এলো রূপম আর প্রত্যয়।

রূপম হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করলো,

– কি হলো? ঘর ঠিক হলো তোমাদের? দেখা শেষ হয়েছে সব?

লাবণ্য হাসলো। বললো,

– সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আমার উপর চাপিয়ে দিও না রূপম ভাই। কিছু দায়িত্ব তোমার বন্ধুর উপরে থাক, সে বলুক কোন ঘরে থাকবে!

– আহা! আবার আমার উপরে এই কঠিন দায়িত্ব কেন? তার থেকে বরং তোরা আগে ঠিক কর কোথায় থাকবি।

প্রত্যয় অবশ্য সাথে সাথে বাধ সেধেছে।

– তা বললে হবে না। আমি আর অনিন্দিতা ভাবী, দুইনজই শ্বশুরবাড়ির সূত্র ধরে হলেও এই বাড়ির আত্মীয়৷ কিন্তু তোরা দুজন অতিথি৷ তাই ফার্স্ট চয়েসের অধিকার তোদের উপরই দেওয়া উচিৎ।

লাবণ্য খানিকক্ষণ চিন্তা করলো। তারপর বললো,

– ওকে! আমাকে যদি বেছে নিতে বলো, তাহলে দক্ষিণ জানালাওয়ালা ঘরটি আমার চাই।

রূপম মাথা নাড়লো।

– ঠিক আছে, তাহলে মাঝের ঘরে আমরা থাকছি। আর উত্তরের ঘরে মল্লিকা প্রত্যয় থাকুক। সবাই ফ্রেশ হয়ে নে। দিন পনেরোর জন্য রান্নার দুজন কাজের লোক ঠিক করেছি৷ রান্না থেকে বাড়ির যাবতীয় কাজ তারা করবে। নিচতলার রান্নাঘরে কাজ শুরু হয়ে গেছে৷ কমপ্লিট হলে ওরা ডাক দিবে। আমি বরং কিছুক্ষণ গড়াগড়ি দিয়ে নিই।

লাবণ্য আর চয়নও নিজেদের লাগেজ টেনে নিয়ে ঘরে এসে ঢুকলো৷ ঘরদোর মোটামুটি পরিস্কারই আছে। আসবাব বলতে একটা প্রকান্ড খাট, বেড সাইড টেবিল, তার উপর একটা ল্যাম্প, এক পাশে কাঠের পুরানো আলমারি, আর ছোট একটা বুক সেলফ। ঘরের দক্ষিণ আর পশ্চিমে প্রকাণ্ড দুটি জানালা। বাইরে যতদূর চোখ যায় কেবল শাল গাছের ঘন বন।

লাবণ্য এগিয়ে এসে চয়নকে বললো,

– কেমন লাগছে এখন? খুব বেশি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি? এই হানিমুন পছন্দ হচ্ছে না?

চনয় লাবণ্যর কাছে এসে দাড়ালো।

– এখন আর অতটা খারাপ লাগছে না। তবে হানিমুনটা শুধু তুমি আর আমি হলে, আরো ভালো লাগতো।

– এখানেও তো তুমি আমি। যদিও তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডরা আছে, তারা খুব একটা ডিস্টার্ব করবে বলে মনে হচ্ছে না। দেখলাম তো, কি দারুণ স্পেস দিয়ে গেল আমাদের!

লাবণ্যর চোখে মুখে দুষ্টুমি খেলছে। চয়ন আরো গাঢ় হয়ে দাড়ালো তার সামনে। লাবণ্যকে জড়িয়ে নিলো বুকের সাথে। সেও শিশুর মতো লেপ্টে গেল চয়নের সাথে। ঠিক তখনই মনে হলো, কারো একটা পাতলা শাড়ীর আঁচল উড়ে গেল দক্ষিনের জানালা দিয়ে। মুহুর্তে পিলে চমকে উঠলো লাবণ্য। কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে এক ঝটকায় চয়নের বাহু বন্ধন থেকে নিজেকে সরিয়ে ছুটে গেল সে জানালার কাছে।
নাহ! বাইরে কেউ নেই। নিস্তব্ধ নিঝুম দুপুরে কেবল একটানা ঘুঘুর ডাক। লাবণ্য নিচে তাকালো। এবাড়ির দোতলার ঘর সাধারণ দোতলা বাড়ির থেকে অনেক উঁচুতে। এখানে কে এসে দাঁড়াবে? কিভাবেই বা আসবে এখানে? লাবণ্য ভেতরে ভেতরে কেঁপে উঠলো। জানালার বাইরে তাহলে কি দেখলো সে?

(চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে