#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_৪৯_৫০
রোহিতের চিৎকারের শব্দ শুনে রুম থেকে বাহিরে বের হয়ে আসলাম। এসেই দেখি মার হাত থেকে কিসের একটা পেপার নিচে পরে গেছে।আমি এসেই নিচ থেকে পেপারটা উঠিয়ে নিলাম।পেপার খোলেই দেখি এটা ডিভোর্স পেপার। আমি ভেবেছিলাম ওনী হয়তো ওনার ভুল বুঝতে পারবেন।আমাকে আবার ফিরিয়ে নিতে আসবেন। কিন্তু ওনী ডিভোর্স পেপারে সই করে পাঠিয়ে দিয়েছেন।ডিভোর্স পেপারে ওনার সই দেখেই আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো। এত তাড়া ওনার ওই মেয়েকে বিয়ে করার তবে আমি আর কেন ওনার পথের কাঁটা হয়ে থাকবো?ওনী যা চান তাই হবে।আমি ডিভোর্স দিয়ে দিবো ওনাকে।আমি আর কিছু না ভেবে উকিলের কাছ থেকে কলম নিয়ে ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিলাম।উনী তো মুক্তি চেয়েছেন আমার কাছ থেকে আজ ওনার এই ইচ্ছাও পূরণ করে দিলাম। আর কোনদিন ওনাকে আমার এই মুখ দেখতে হবে না।ওনী এখন মুক্ত এই বাধ্য হয়ে করা বিয়েটা থেকে আর আমিও মুক্ত। ডিভোর্স পেপারে সাইন করতে আমার হাত একবারের জন্যও কাপলো না।কিন্তু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।সাইন করে আমি আর এক মুহূর্ত দেরি না করে রুমে চলে আসলাম।এখন আমার একা থাকা অনেক প্রয়োজন।আমার নিজেকে সমলানোর জন্য সময়ের প্রয়োজন।রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে সব কিছু ভাবতে লাগলাম।কি থেকে কি হয়ে গেলো আমি এখনো বুঝছি না। সব কেমন অগোছালো মনে হচ্ছে এখন।নিজেকে অনেক একা একা লাগছে নিজের কাছে।জীবনের রং এত তাড়াতাড়ি কি করে বদলে গেলো তা ভাবছি, কাল পর্যন্ত আমি একজনের স্ত্রী ছিলাম আর আজ আমার পরিচয় আমি একজন ডিভোর্সী। ভাবতেই আমার খারাপ লাগছে।কোন ভাবে আমি কান্না থামাতে পারছে না।পারছি না নিয়তি ভেবে এইসব কিছু মেনে নিতে,,,,,
উকিল ডিভোর্স পেপার নিয়ে চলে গেল আর এক সপ্তাহ পরে কোর্টে উপস্থিত থাকতে বললেন।
অদ্রিতার মা কান্না করতে করতে দৌড়ে অদ্রিতার পিছনে যেতে নিলে তার বাবা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,”ওকে এখন একা থাকতে দাও।আমার মেয়ে অনেক সাহসী ও কখনো নিজের কোন ক্ষতি করবে না ওর এখন নিজের জন্য সময়ের প্রয়োজন,যা হয়েছে তার থেকে বেরিয়ে আসতে এখন তার আমাদের সাহায্য প্রয়োজন।একটু পরে তুমি ওর কাছে যাবে,ওকে উৎসাহ দিবে নিজের জীবনকে আবার সুন্দর করে সাজাতে।আমাদের জন্যই তো মেয়েটা এতদিন এত কষ্ট পেয়েছে, এখন থেকে সে যেন আর কোন কষ্ট না পায় তার দায়িত্ব আমাদের।একজন মাই পারে তার মেয়ের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হতে।তোমাকেই তাকে সাহস দিতে হবে।সেই তুমিই যদি এভাবে ভেঙে পরো তবে কিভাবে হবে?আগে তুমি নিজেকে সামলাও,কান্না থামাও।পরে অদ্রিতার কাছে গিয়ে তাকে বুঝাও।”অদ্রিতার মা আর কিছু বলে না শুধু মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি করে।
অন্যদিকে আজ আরিয়ান অফিস থেকে তাড়াতাড়িই বাড়িতে চলে আসে।কলিং বেল বাজাতেই তার মা দরজা খোলে দেয়।ভিতরে ঢুকতেই তার বাবা ঠাস করে তার গালে চর মারে।হাঠাৎই এমন হওয়ার আরিয়ান তাল সামলাতে না পেরে কিছুটা পিছিয়ে যায় সে অবাক হয়ে তার বাবার দিকে তাকিয়ে বলে,”কি হয়েছে বাবা? তুমি আমাকে মারলে কেন?”সে তার বাবার দিকে তাকাতেই সাহস পাচ্ছে না।এমনেই তার বাবা অনেক রাগী। তার উপরে আজ মনে হচ্ছে তার বাবা প্রচন্ড রেগে আছে।রাগে তার বাবার চোখ- মুখ পুরো লাল হয়ে আছে।কিন্তু হঠাৎ করে এতটা রেগে থাকার কারণ সে বুঝতে পারছে না,সকালে তো সব ঠিকি ছিল তবে কি এমন হলো যার জন্য এতটা রেগে আছে।
আরিয়ানের বাবা রাগে কর্কশ স্বরে বলে,”তুই জানোস্ না কি হয়েছে?তুই এতটা নিচ,জগন্য হবি তা যদি আগে বুঝতে পারতাম তবে জন্মের সময়ই তোকে গলা টিপে মেরে ফেলতাম।”
আরিয়ান বিষন্ন স্বরে বলে,” তুমি এভাবে কেন বলছো বাবা। আজ পর্যন্ত আমি এমন কোন কাজ করিনি যার জন্য তুমি আমাকে এভাবে বলতে পারো।আমি তো তোমাদের সব কথা শুনেছি।”
আরিয়ানের কথা শুনে তার মা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,তুই আমাদের সব কথা শুনিস!এই তোর আমাদের সব কথা শুনার নমুনা। তোর থেকে তো জানোয়ারও অনেক ভালো হয়।কোন পশুও যদি আমাদের সাথে কয়েকদিন থাকে তবে তার প্রতি আমাদের মায়া জন্ম নেয় আর একটা মানুষ তোর সাথে কয়েক মাস থাকলো তার প্রতি তোর বিন্দু পরিমাণ মায়া জন্মালো না। তুই কি করে পারলি একটা নির্দোষ মেয়েকে এতটা কষ্ট দিতে।আমার তো ভাবতেই লজ্জা লাগছে তুই আমার সন্তান।
আরিয়ান তার মার দিকে অশ্রুভরা চোখে তাকিয়ে বলে,তুমি আমাকে এভাবে কথা বলছো! কি করেছি আমি তা তো বলবে? তোমাদের কথার মানে আমি বুঝছি না।
তার বাবা রাগে চিল্লিয়ে বলে,আমাদের মান- সম্মান সব ধূলোয় মিশিয়ে দিয়ে এখন বলছিস আমি কি করেছি?কেন তুই জানোস্ না তুই কি করেছিস্?
আরিয়ান কিছুটা অবাক হয়ে বলে আমি জানি না আমি কি করছি,তোমরা কোন বিষয়ের কথা বলছো?তোমাদের কি হয়েছে? আমি কি এমন করেছি তার জন্যে তোমরা এতটা রেগে আছো।প্লিজ আমাকে বলো,আমারও তো জানার অধিকার আছে।
আরিয়ানের মা কান্না করতে করতে বলে তোর জন্য অদ্রিতা এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। দিনের পর দিন তুই মেয়েটা উপর অত্যাচার করছিস্ আর মেয়েটা মুখ বুজে সব সহ্য করেছে।তার গায়ে হাত তোলার আগে একবারের জন্যও তোর হাত কাঁপলো না।আমি তো কখনো তোকে এমন শিক্ষা দেয়নি। এতটা কাপুরষ তুই কিভাবে হলি,মেয়েদেরকে সম্মান করতে পারিস্ না।
আরিয়ান কিছু বলছে না।সে চুপ করে আছে। সত্যিই তো সে কাজটা ঠিক করেনি কিন্তু এছাড়া তো তার হাতে অন্য কোন উপায়ও ছিলো না।সে অদ্রিতাকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারবে না। তার থেকে তো এটাই ভালো সে অদ্রিতাকে ছেড়ে দিছে। তাছাড়া রাইশাকে দেখে এখন তার অদ্রিতাকে একদমই সহ্য হচ্ছিলো না।সে জানে না রাইশার প্রতি তার যা আছে তা মোহ নাকি ভালোবাসা কিন্তু সে একটা কথাই জানে রাইশাকে তার চাই ই চাই। তার জন্য অদ্রিতাকে তার লাইফ থেকে দূরে চলে যেতেই হবে।অদ্রিতা তার লাইফ থেকে না গেলে সে রাইশাকে বিয়ে করতে পারবে না।তার থেকে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে।আপদ তো বিদেয় হলো এই অনেক।এখন আমি নিজের মতোন করে থাকতে পারবো,,,,,
আরিয়ানকে চুপ থাকতে দেখে তার মা চিল্লিয়েই আবার বললো,,,,,,,
.
..
…
চলবে,,,,,,
( ছোট করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত,,,,,, নেক্সট পার্ট বড় করে দেওয়ার চেষ্টা করবো,,,,,,)
#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_৫০
আরিয়ানকে চুপ থাকতে দেখে তার মা আবার একটু চিল্লিয়েই বলে,,,,,,,,,
আমার তো এখন নিজের উপরই ঘৃণা হচ্ছে কি করে তোর মতো একটা জানোয়ারকে পেটে ধরলাম।মেয়েটা একটু কালো বলে তুই তাকে এভাবে অপমান, অবহেলা আর অত্যাচার করতে পারলি।তোর কি বিবেকে একটুও বাঁধলো না।ওর মতো মেয়ে হয় না। এই কয়েক মাসে মেয়েটা আমাদের বুঝতেই দেয়নি ও এত কিছু সহ্য করেছে।হাসি মুখে তোর দেওয়া সকল কষ্ট ও অপমান সহ্য করেও আমাদের যত্ন নিয়েছে।নিজের জন্য না ভেবে আমাদের জন্য ভেবেছে।তোর যখন এক্সসিডেন্ট হলো মেয়েটা দিন-রাত এক করে তোর সেবা-যত্ন করে তোকে সুস্থ করেছে।এই সব কিছু কি এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি। তোকেও অদ্রিতা অনেক ভালোবাসে।আজ যখন ওর বাবা তোর নামে পুলিশ কমপ্লেন করতে বললো তখন মেয়েটা না করে দিয়েছে শুধু আমাদের আর তোর কথা ভেবে।আমাদের অপমানিত হতে হবে তাই।কতটা ভাগ্যবান হলে এমন একটা বউ পাওয়া যায় আর তুই কিনা মেয়েটার নিঃস্বার্থ ভালোবাসাটাও বুঝছিস্ না।এখনো সময় আছে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আন।
আরিয়ান তার মার দিকে তাকিয়ে শান্তভাবে বলে,যে চলে গেছে তাকে নিয়ে আর ভেবো না।যে চলে গেছে তাকে যেতে দাও,তাকে ফিরিয়ে আনা আমার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়।তাছাড়া আমি ডিভোর্স পেপারে সাইন করে উকিলের মাধ্যমে অদ্রিতার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি আর অদ্রিতাও সাইন করে দিয়েছে।উকিল ফোন করে বলেছে আর ডিভোর্স পেপার কোর্টে সাবমিট করা হয়ে গেছে আর এক সপ্তাহ পরে আমি পুরোপুরি মুক্ত হবো এই বিয়ে নামক শিকল থেকে।তোমাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। অদ্রিতার থেকে অনেক ভালো আর সুন্দরী মেয়েকে আমি বিয়ে করবো।আমি রাইশাকে ভালোবাসি।অদ্রিতার সাথে ডিভোর্সটা হয়ে গেলে আমি রাইশাকে বিয়ে করে নিবো।রাইশা নিউইয়র্কে স্যাটেল সে আমাকে নিউইয়র্কে নিয়ে যাবে।আর ওইখানে সবকিছু গুছিয়ে পরে তোমাদেরও সেখানে নিয়ে যাবো।এখন ওই অদ্রিতার কথা বাদ দাও।আমি মাত্র অফিস থেকে আসলাম আগে আমাকে ফ্রেশ হতে দাও,বাকি কথা পরে বলবো।
আরিয়ান রুমে যেতে নিলেই তার বাবা তাকে থামিয়ে বলে,এখন তোর রুমে যাওয়া হবে না।তুই এখন বউমার কাছে যাবি। তার কাছে মাফ চাইবি, তাকে এই বাড়িতে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসবি আর তা যদি না করতে পারোস্ তবে তুইও এই মুহূর্তে এই বাড়ি থেকে চলে যাবি। মনে করবো আমরা নিঃসন্তান।
আরিয়ান গম্ভীর স্বরে বলে,” কোথাকার কোন একটা মেয়ে আর তার জন্য তুমি আমাকে এই বাড়ি থেকে চলে যেতে বলতে পারলে। এই কয়েক মাসে ওই মেয়েটা তোমাদের কাছে আমার থেকে বেশি ইমপোর্টেন্ট হয়ে গেলো,কি করে?
আরিয়ানের মা বুঝতে পারে ছেলেকে এখন রাগ দেখিয়ে, বকা- ঝকা কিছু করানো সম্ভব নয়।ছেলে এখন বড় হয়েছে।তাই নিজেকে একটু শান্ত করে একটু ভালো করে বলে,”দেখ আরিয়ান তুই এখন বড় হয়েছিস্, কোনটা ঠিক কোনটা ভুল বঝতে শিখেসি্।তাই বলে তোর কোন ভুল হতে পারে না এমনটা নয়।আর তোর কোন ভুল হলে মা- বাবা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব তোকে ঠিক পথে নিয়ে আসার, তোকে তোর ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার।ওই মেয়েকে বিয়ে করা তোর সবচেয়ে বড় ভুল হবে, ওই মেয়েটা তোর যোগ্য নয়।একটা মেয়ে হয়েও যে মেয়ে অন্য একটা মেয়ের সংসার ভাঙতে পারে সে কিছুতেই ভালো মেয়ে হতে পারে না।তোকে বিয়ে করার পিছনেও হয়তো ওই মেয়ের কোন উদ্দেশ্য আছে।আর বিয়েটা কোন ছেলেখেলা না।আজ একটা মেয়েকে বিয়ে করলি আর কাল ভালো লাগলো বলে তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য একজনকে করবি।এটা হয় না।বিয়ে হলো একটা পবিত্র সম্পর্ক।এটার মূল্য দিতে শিখ।তুই তো এমন ছিলি না।সময় থাকতে সব ঠিক করে নে নয়তো তুই সব হারিয়ে ফেলবি।যেই জন্য আজ তুই অদ্রিতাকে ছেড়ে অন্য একজনকে বিয়ে করছিস্ একদিন তাই তার কাল হবে।একদিন তুই নিঃস্ব হয়ে যাবি।তুই চাইলেও তখন পূর্ণতা খোঁজে পাবি না। অপূর্ণতা তোকে ঘিরে ধরবে।তখন বুঝবি #অপূর্ণতা কতটা বিষাদময় হয়।”
আরিয়ান শান্ত স্বরে বলে,” মা তুমি যাই বলো না কেন,আমার পক্ষে কিছুতেই আর অদ্রিতার সাথে থাকা সম্ভব নয়। আমি কিছুতেই অদ্রিতাকে আমার স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবো না। অনেক তোমাদের কথা শুনেছি।এখন তোমাদের কথা শুনে আমি আমার লাইফটাকে হেল করতে পারবো না। আমার লাইফ আমি আমার মতো করে বাঁচতে চাই। আমার ওয়াইফ কে হবে তা আমাকেই ঠিক করতে দাও। আমি নিজেই বুঝে নিতে পারবো সে আমার যোগ্য কি না।তোমাদের আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করতে হবে না।আমি ভালো করে জানি কার সাথে আমি ভালো থাকবো।”
আরিয়ানের বাবা কন্ঠে গম্ভীর্যতা রেখে শান্ত স্বরে বলে,”এই তোর শেষ কথা।”
আরিয়ান নিজের কথায় অনড় থেকে বলে,”হুমম,,,,এটাই আমার শেষ কথা। আমি রাইশাকে বিয়ে করে নিউইয়র্কে চলে যাবো আর এটাই ফাইনাল।তাতে তোমরা রাজি হও আর না হও আমার আর কিছু করার নেই।”
এটাই যদি তোর শেষ কথা হয়ে থাকে তবে আমারও শেষ কথা শুনে রাখ,,,এই মুহূর্তে তুই এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবি। জীবনে কখনো তোর এই মুখ যাতে আমরা আর না দেখি। তোর মতো জানোয়ারকে আমি কখনোই আমার সন্তান হিসেবে ভাবতে পারবো না।আজ থেকে মনে করবো আমাদের সন্তান মরে গেছে। আজ থেকে তুই আমাদের জন্য মৃত।তোর জীবনে কোন দিন পূর্ণতা আসবে না।অপূর্ণতা তোকে সারাজীবন কুরুে কুরুে খাবে।যেই অপমান,অত্যাচার আর কষ্ট তুই ওই মেয়েটাকে করেছিস্ তার থেকে বেশি কষ্ট তুই পাবি।আমার এই কথা মনে রাখিস।
আরিয়ান অশ্রুভেজা চোখে তাকিয়ে বিষন্ন কন্ঠে বলে,” বাবা তুমি বাইরের একটা মেয়ের জন্য নিজের ছেলেকে এভাবে বলতে পারলে?তোমার একটুও বাঁধলো না।”
আরিয়ানের কথা শুনে তার বাবা রেগে কর্কশ স্বরে বলে,”তোর এই মুখে আমাকে আর বাবা ডাকবি না। আমার ঘৃনা লাগছে তোর মুখে বাবা ডাক শুনে। আর সে কখন থেকে বাইরের মেয়ে বাইরের মেয়ে করছিস্ আজ থেকে অদ্রিতাই আমাদের নিজেদের মেয়ে।এখনি বেরিয়ে যা বলছি।”
আরিয়ানও রেগে বের হয়ে যায় শুধু যাওয়ার আগে একটা কথাই বলে, যদি কোন দিন তোমাদের রাগ কমে তবে আমাকে বলো আমি তেমাদের কাছে চলে আসবো। সে আর এক মুহূর্ত দেরি না করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
তার মা কান্না করতে করতে ফ্লোরে বসে পরেন।এই কি হলো?তাদের ছেলে এতটা স্বার্থপর কি করে হলো।শেষ পর্যন্ত কিনা নিজের মা- বাবাকে ছেড়ে চলে গেলো অন্য একটা মেয়েে জন্য। তার বাবা তাকে সামলিয়ে বলে,আজ থেকে তুমি ওর জন্য আর কাঁদবে না।যার কাছে আমাদের কোন মূল্য নেই,আমাদের কাছেও তার কোন মূল্য থাকতে পারে না।এই বলে সে উপরে রুমে চলে যায়।কিন্তু মায়ের মন কি আর এই সব কিছু মানে, না মানতে চায়। তিনি কান্না করতে থাকে..
অন্যদিকে নিলয় অফিসের কাজ শেষ করে অদ্রিতার বাড়িতে যায়। দুই-তিন বার কলিং বেল বাজাতেই তার মা দরজা খোলে দেয়।অদ্রিতার মা নিলয় দেখে চিনতে না পরে প্রশ্ন করে,আপনি কে?আপনাকে তো চিনলাম না?
আমি নিলয়,অদ্রিতার ফ্রেন্ড।অদ্রিতা কি বাড়িতে আছে?
অদ্রিতার মা বিষন্ন কন্ঠে বলে,” হুমমম।”
নিলয় ইস্তত করে বলে,”তাকে একটু ডেকে দেওয়া যাবে?আমার কথা একটু বললেই হবে, ও চিনবে আমাকে।”
মেয়েটার মনের অবস্থা ভালো নয়।তুমি কাল আসো।পরে না হয় তার সাথে কথা বলো,আজ সে আমাদের সাথেই কথা বলছে না। তোমার সাথে কথা বলবে বলে মনে হয় না।
অদ্রিতার মার কথা শুনে নিলয়ের অস্থিরতা আর বেড়ে যায়।তবে কি আমার যা মনে হয়েছে তাই কি সত্যি? অদ্রিতা কষ্টে আছে।নিলয় ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করে অদ্রিতার কি হয়েছে আন্টি?প্লিজ আমাকে বলেন।অদ্রিতাকে একবার না দেখে আমি কিছুতেই এখন যেতে পারবো না।প্লিজ আন্টি আমাকে একটু সব খোলে বলেন,,,,,,,
নিলয়কে দেখে ওনার অনেক ভালো লাগলো। কেন জানি মনে হলো তাকে সব কিছু বলা যায়।নিজের কাছের লোক ভাবা যায়।কেন জানি ওনার মনে হচ্ছে অদ্রিতাকে এখন এই ছেলেটাই এই অবস্থা থেকে বের করতে পারবে।তিনি বেশি কিছু না ভেবে নিলয়কে সব কিছু খোলে বললেন।সব কিছু শুনার পরে নিলয়ের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।মনে মনে অদ্রিতার উপর রাগ করলো,সে কেন এত কিছু সহ্য করলো,কেন আগে তাকে কিছু বলে নি?আগে যদি তাকে সব কিছু বলতো তবে সে কিছুতেই আরিয়ানের সাথে তাকে থাকতে দিতো না।নিজের কাছে নিয়ে আসতো।এতটা কষ্ট তাকে সে কখনোই পেতে দিতো না।
অদ্রিতা রুম থেকে মার আর নিলয় ভাইয়ার সব কথা শুনতে পায়।ডয়িং রুমের পাশেই তার রুম তাই শুনতে কোন অসুবিধা হয়নি।নিলয় ভাইয়ার গলার আওয়াজ শুনেই সে তাকে চিনতে পারে।বেশি কিছু চিন্তা না করে আমি রুম থেকে বেরিয়ে আসে,,,,,,,,
.
..
…
চলবে,,,,,,,