#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_৪৩_৪৪
রাইশা মুচকি হেসে বলে,” বলে দিলে কি আর তা সারপ্রাইজ থাকবে?ওয়েট করো কালই জানতে পারবে।”
আচ্ছা কিন্তু ওয়েট করা আমার একদম পছন্দ না।তা তো তুমি জানোই।তাই যদি বলে দিতে ভালো হতো।
রাইশা মুচকি হেসে বলে,” তুমি তো দেখছি ঠিক আগের মতোই আছো।একদমই চেঞ্জ হওনি,আর তুমি ভালো করেই জানো কি সারপ্রাইজ তা সময়ের আগে কিছুতেই তোমাকে বলবো না।তাই রিকোয়েস্ট করে কোন কাজ হবে না,হা হা হা,,,,,”
আরিয়ান কপট রাগ দেখিয়ে বলে,” এই তুমি এমন কেন?ভালো হবে না কিন্তু,,,, হুমম।”
রাইশা মজা করে বলে,” কি খারাপ হবে শুনি?”
আরিয়ান বাঁকা হেসে বলে,তা তো দেখতেই পাবে।
রাইশা ন্যাকামি করে বলে,এমন সুখের দিনে কই তুমি আমাকে আরও একটু বেশি উৎসাহ দিবে তা না করে তুমি আমার সাথে ঝগড়া করছো।
আরিয়ান অবাক হয়ে বলে, “আরে ঝগড়া আমি কই করলাম? তুমিই তো শুরু করলে, আচ্ছা বাদ দাও।”
হুমম,আচ্ছা আমি এখন যাই।আরোও অনেককেই ইনভাইট করার বাকি আছে।তোমাকেই প্রথমে বললাম, ঠিক সময় চলে আসবে কিন্তু।
আরিয়ান ছোট করে বলে,” আচ্ছা,,, ”
রাইশা চলে গেলে আরিয়ান আবারও তার কাজে মন দেয় এমন সময় হঠাৎ নিলয় তাকে কল করে।আরিয়ান সাথে সাথে তা রিসিভ করে বলে,” হ্যালো স্যার, কেমন আছেন?”
আলহামদুলিল্লাহ।যেই জন্য আপনাকে কল দেওয়া, অফিসের কাজ কেমন চলছে?ওই খানে সব ঠিক আছে তো।
এখানে সব ঠিক আছে,আপনি কবে দেশে আসবেন?
এইতো আমার কাজ প্রায় শেষ। ৪-৫ দিনের মধ্যে চলে আসবো।আচ্ছা আপনার ওয়াইফ,মিসেস অদ্রিতা কেমন আছে?
হঠাৎ করে স্যার আবার অদ্রিতার কথা কেন জিজ্ঞেস করলো?নিলয়ে মুখে অদ্রিতার নাম শুনে সে কিছুটা অবাক হলো তবুও বললো,ভালো আছে।
নিলয় গম্ভীর স্বরে বললো,”আচ্ছা,আমি এখন রাখছি।কোন পবলেম হলে আমাকে জানাবেন।”
আরিয়ান ছোট করে বলে,”আচ্ছা।”নিলয় ফোন কেটে দেয়।
আরিয়ান কাজ কমপ্লিট হলে সে বাড়িতে চলে যায়।
আজ আরিয়ান একটু তাড়াতাড়িই বাড়িতে চলে যায়।রাতে সবাই একসাথে ডিনার করে, যে যার রুমে চলে যায়।অদ্রিতা সব কিছু গুছিয়ে রুমে যায়,রুমে ঢুকে দেখে আরিয়ান বেডে শুয়ে আছে।সে কিছু না বলে বিছানা থেকে বালিশ আর কম্বল নিয়ে সুফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
~~~~ পরের দিন সকালে,,,,,,,,
আরিয়ান ফ্রেস হয়ে অফিসে চলে যায়।আজ তাকে পার্টিতে যেতে হবে তাই একটু দ্রুতই কাজ কমপ্লিট করতে হবে,তাই মনোযোগ দিয়ে কাজ শেষ করে।পরে আরিশাকে ডাক দেয়( তার পি.এ)
আরিশা এসে নম্রতা বজায় রেখে বলে,”Yes,sir. আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”
জ্বি,এই ফাইলগুলো আমি প্রায় কমপ্লিট করে রেখেছি আর অল্প বাকি আছে।আপনি তা কমপ্লিট করে রাখবেন,কাল মিটিং আছে।কোন প্রকার ভুল যাতে না হয়।গট ইট।”
জ্বি স্যার,আপনি কোন টেনশন করবেন না।আমি সব কিছু গুছিয়ে রাখবো।
আরিয়ান গম্ভীর স্বরে বলে,” আচ্ছা, আমি এখন যাচ্ছি। সব কাজ কমপ্লিট করে আপনি চলে যাবেন।”
জ্বি স্যার,,,,,,
আরিয়ান বাড়িতে চলে যায়।কেলিং বেল বাজাতেই খালা দরজা খুলে দেয়,সে সুজা রুমে চলে যায়।
অদ্রিতা বেলকনিতেই দাঁড়িয়ে ছিল দরজা খোলার শব্দেই সে রুমে ঢুকে আরিয়ানকে দেখে বলে,”আপনি আজ এত তাড়াতাড়ি চলে এলেন,আপনি ঠিক আছেন তো?”
আরিয়ান আস্তে করে বলে,” হুমমম,ঠিক আছি।”
আচ্ছা আপনি ফ্রেস হয়ে নিন,আমি আপনার জন্য কফি নিয়ে আসছি।
আরিয়ান নিশ্বাস ছেড়ে বলে,” আচ্ছা।”
অদ্রিতা রান্নাঘরে গিয়ে আরিয়ানের জন্য কফি নিয়ে আসে।রুমে ঢুকে দেখে আরিয়ান সুফায় বসে আসে, সে তাকে কফি দিয়ে নিচে চলে যায়।সে ৯ টার দিকে আবার রুমে ঢুকে, রুমে ঢুকতেই সে অবাক হয়ে যায় আরিয়ান রেডি হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সে একটা ব্লু সার্ট পরেছে সাথে ব্ল্যাক ব্লেজার ম্যাচিং করা প্যান্ট,সাথে হাতে ব্যান্ডেড ওয়াচ,সিল্কি চুলগুলো হাল্কা বাতাসে উড়ছে,সে একধ্যানে তার দিকে তাকিয়ে আছে।আরিয়ান তার দিকে তাকাতেই সে অন্য দিকে তাকিয়ে তাকে প্রশ্ন করে,”আপনি এত রাতে কোথায় যাচ্ছেন?”
আরিয়ান গম্ভীর স্বরে বলে,” আমার এক ফ্রেন্ডের পার্টিতে যাচ্ছি,ফিরতে অনেক রাত হবে।”
এই বলে সে চলে যায়,অদ্রিতা আরিয়ানের যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।আর নিজের মনে মনেই ভাবতে থাকে,
মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনে আমার যা চাওয়া- পাওয়া তার সবই অপূর্ণ থেকে যায়। আমার কোন চাওয়াই কখনো পূর্ণতা পায় না।এই #অপূর্ণতা গুলোই আমাকে হতাশ করে। আমাকে ভেতরে ভেতরে কুড়ে কুড়ে খায়।কিন্তু পরে মনে হয়,এই অপূর্ণতা আছে বলেই জীবনতা এত সুন্দর। জীবনের সব চাওয়া- পাওয়ার পূর্ণতা পেতে নেই।হয়তো জীবনে কিছুটা #অপূর্ণতা থাকা ভালো।
জীবনের সব চাওয়া-পাওয়া যদি পূর্ণ হয়ে যায়,
সব যদি পেয়েই যাই,
তবে তো সব ইচ্ছেও শেষ হয়ে গেল।
আর ইচ্ছে শেষ হওয়া মানে তো,,
জীবনের সব স্বাদই শেষ হয়ে যাওয়া!
তাই থাকুক না জীবনে কিছুটা #অপূর্ণতা।হয়তো এই অপূর্ণতার মাঝেই লুকিয়ে আছে জীবনের পূর্ণতা আর এটাই হয়তো জীবনের রীতি!
আরিয়ান পার্টিতে চলে যায়,ভিতরে ঢুকতেই সে রাইশাকে দেখতে পায়।রাইশাকে দেখেই সে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।আজ রাইশাকে অনেক সুন্দর লাগছে,সে একটা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে আছে যা পুরো পা পর্যন্ত ডাকা হলে কি হবে ড্রেসটার এক পাশ দিয়ে হাঁটুর উপর পর্যন্ত ফাঁড়া।যার ফলে তার ধবধবে সাদা পা দেখা যাচ্ছে। গোলাপি কালারের
ড্রেসটা তার সৌন্দর্য যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঠোঁটে ম্যাচিং লিপস্টিক,চুল গুলো একটু ফুলিয়ে ছেড়ে রেখেছে,মাঝে মাঝে উড়ে তার মুখের পড়ছে।আমি মুগ্ধ হয়ে তাকে দেখছি,একদম অন্য রকম লাগছে তাকে আজ।পুরো আমার মনের মতো।
রাইশা আরিয়ানকে দেখেই দৌড়ে তার কাছে আসে আর বলে,ওয়েলকাম টু দা পার্টি।আজ তোমাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে।
আরিয়ান মুগ্ধ হয়ে বলে,” তোমাকেও আজ খুব সুন্দর লাগছে, আমি তো চোখই ফেরাতে পারছি না।”
রাইশা একটু মন খারাপ করে বলে, কেন অন্য দিনকি আমাকে দেখতে বাজে লাগে?
আরিয়ান ব্যস্ত হয়ে বলে,”আরে না,আমি কি তা বলছি?তোমাকে তো সব সময়ই সুন্দর লাগে।”
রাইশা হেসে বলে,” তুমিও না,মজাও বুঝো না।আমি তো একটু মজা করছিলাম,হি হি হি।আচ্ছা এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন, ভিতরে চলো।জানো তোমার জন্য আমি আধা ঘন্টা ধরে ওয়েট করছি।এত দেরি করেছো কেন?”
আরিয়ান বিষন্ন কন্ঠে বলে,” জানোই তো বাড়িতে সবকিছু সামলিয়ে আমাকে আসতে হয়েছে।তাছাড়া রাস্তায় একটু জ্যাম ছিল,তাই একটু দেরি হলো।”
রাইশা আর কিছু না বলে আরিয়ানের হাত ধরে তাকে ভিতরে নিয়ে যায় পরে মাইক নিয়ে বলে,”Hey guys, Attention please.”
রাইশা কথা শুনে সবাই তার দিকে তাকায় পরে রাইশা আবার বলা শুরু করে,আমি এতক্ষন ওর জন্যই ওয়েট করছিলাম।মিট মাই উড বি হাসবেন্ড এন্ড নাও মাই বয়ফ্রেন্ড মি. আরিয়ান চৌধুরী।আমরা খুব দ্রুতই বিয়ে করছি,সো কনগ্রেট আস্।
রাইশার কথা শুনে পার্টির সবাই আর আরিয়ানও অবাক হয়ে যায়। পার্টির অনেকই আরিয়ানকে চিনে আর তার বৌ ভাতেও গিয়েছে।এই কথা শুনে তারা কানাঘুষা করতে থাকে। আরিয়ান রাইশাকে অন্য পাশে নিয়ে জিজ্ঞেস করে,”What are you saying? you know that i am married. Than how can this possible?”
রাইশা মুসকি হেসে বলে,”So what?তুমি কি আমার কথায় খুশি হয়নি বেবি?তুমিতো চাইতে আমি তোমার ওয়াইফ হই।তবে পবলেম কোথায়?”
আরিয়ান বিরক্ত হয়ে বলে,”তুমি বুঝছো না কেন,আমি এখন বিবাহিত। তোমাকে এখন বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।সব জেনেও কেন এইসব বলছোআর সবাই এখন কি ভাববে?”
রাইশা শান্ত স্বরে বলে,” আচ্ছা এখন এইসব কিছু বাদ দাও,পরে তোমাকে আমি সব কিছু বুঝিয়ে বলবো।এখন চলো পার্টিটা ইনজয় করি।”
আরিয়ান আর কিছু বলে না।রাইশা কেক কেটে আরিয়ানকে খাইয়ে দেয় তার পরে আরিয়ানের হাত ধরে ডান্স ফ্লোরে গিয়ে বলে,”চলো ডান্স করি।আরিয়ানও কিছু না বলে রাইশার সাথে ডান্স করে।”
রাত প্রায় সাড়ে ১২ টা বাজে।পার্টি,মিউজিক, খাবার- দাবার,ডান্স শেষে অনেকেই চলে গেছে।রাইশা এখনো পার্টিতে আছে।কয়েকটা ছেলে তাকে দেখে বাজে কমেন্ট করছে।
মেয়েটা দেখতে তো সেই,ফিগার দেখছিস্,পুরোই মাখন,,,,একটি ছেলে বললো।
হুমম,ঠিক বলছিস্,আজকের রাতের জন্য যদি পেতাম তবে রাতটা সপ্নের চেয়েও ভালো কাটতো।অন্য জন বললো।
আরও নানা বাজে কথা বলতে লাগলো,ছেলেগুলোর কথা শুনে আরিয়ান রাগে ফুসতে লাগলো।মন চাচ্ছে এগুলোকে মেরে এখানে পুঁতে রাখতে।কিন্তু সে চায় না কোন সিন ক্রিয়েক্ট করতে তাই কিছু বললো না।সে রাইশার কাছে গিয়ে বলে,চলো অনেক রাত হয়ে গেছে তোমাকে হোটেলে দিয়ে আসি।
আরিয়ানের কথা শুনে রাইশা তার দিকে তাকায় আর বলে আচ্ছা।একটু ওয়েট করো,
পরে মাইক নিয়ে বলে,”Hey guys, attention please.”
সবার তার দিকে তাকাতেই আবার বলে,আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।আমার এমন একটি দিনে আমার পাশে থাকার জন্য।এখন আপনারা সবাই আসতে পারেন।পার্টি আজকের জন্য শেষ, সো বাই অল।
রাইশার কথা শুনে সবাই বাহিরে বেরিয়ে যায়।রাইশা আর আরিয়ানও বাহিরে বেরিয়ে আসে।পরে রাইশা আরিয়ানকে বলে,
.
..
…
চলবে,,,,,,,,,,,
(কালকে আমি গল্পটি দিতে পারবো না, তার জন্য সরি।তাই কেউ ওয়েট করে থাকবেন না,,,,)
#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_৪৪
রাইশার কথা শুনে সবাই বাহিরে বেরিয়ে যায়।রাইশা আর আরিয়ানও বাহিরে বেরিয়ে আসে।পরে রাইশা আরিয়ানকে বলে,’তুমিতো গাড়ি আনোনি।এক্সিডেন্টের পরে গাড়ি রিপেয়ারের জন্য দিয়েছো আর এত রাতে গাড়িও পাবে না।আমি গাড়ি এনেছি চলো তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে।”
আচ্ছা,,,,,,
রাইশা গাড়ি চালাচ্ছে আর আরিয়ান মুগ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।রাইশা তা খেয়াল করে বলে,
আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
আজ তোমাকে একদম পরির মতো লাগছে,আমিতো চোখই ফেরাতে পারছি না।
ওহ তাই, আচ্ছা এখন নামো।নাকি গাড়িতে থাকার প্ল্যান আছে।আমরা এসে পরেছি।
রাইশার কথা শুনে আরিয়ান গাড়ি থেকে নামে তার পিছু পিছু রাইশাও গাড়ি থেকে নেমে যায়। রাইশাকে নামতে দেখে আরিয়ান বলে,তুমি গাড়ি থেকে নামছো কেন?
রাইশা একটু মজা করে বলে,” আজ তোমার সাথে তোমার বাড়িতে যাবো।আঙ্কেল – আন্টির সাথে দেখা করবো তো তাই।
আরিয়ান ভয় পেয়ে বলে,” কি বলছো এইসব? এত রাতে তোমাকে আমার সাথে দেখলে মা-বাবা কি ভাববে?”
রাইশা হেসে বলে,”আরে মজা করছি আর পার্টিতে আমি যা বলছি তা কিন্তু মজা ছিল না।সত্যিই আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।”
আরিয়ান বিষন্ন কন্ঠে বলে,” তা এখন আর সম্ভব নয়,আমি বিবাহিত। মা-বাবা কোন ভাবেই তা মেনে নিবে না।”
তুমি তো আমাকেই পছন্দ করো আর ওই মেয়েকে তো তুমি এখনো নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারোনি। আর বাকি রইল আঙ্কেল – আন্টির কথা, তুমি তাদের একমাএ ছেলে। হয়তো দুই- এক দিন রাগ করে থাকবে কিন্তু পরে ঠিকই মেনে নিবে।ততো দিন না হয় তুমি আমার সাথে নিউইয়র্কে গিয়ে থাকবে।দেখবে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে আর আমি কি এতোই খারাপ যে আমাকে মেনে নিতে পারবে না?
আরিয়ান একটু ভেবে বলে,” কিন্তু অদ্রিতা,তার কি হবে?”
আর কোন কিন্তু নয়।আমার হাতে বেশি সময় নেই যাস্ট ১ সপ্তাহ।তুমি যদি চাও আমাকে বিয়ে করতে তবে ওই মেয়েকে তোমার ডিবোর্স দিতে হবে।আর তোমাকে আমি কোন কিছুর জন্য জোর করবো না।তুমি সিদ্ধান্ত নেও কি করবে?ওই কালো মেয়ের সাথে সারা জীবন সংসার করবে না আমার মতো কারো সাথে। ডিসিশন ইস ইউর,আমার আর কিছু বলার নাই।
রাইশা আর কিছু বলে না আরিয়ানকে জরিয়ে ধরে।রাইশা হঠাৎই তাকে জরিয়ে ধরায় সে অবাক হয়।রাইশা তাকে ছেড়ে পরে তার কপালে একটা কিস করে চলে যায়।
আরিয়ান কিছুক্ষন রাইশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বাড়িতে ঢুকতে যাবে তখনই তার বেলকনির দিকে চোখ যায়।
বেলকনিতে তাকাতেই সেখানে কেউ দাঁড়িয়ে আছে,আবছা আলোতে তার মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সে আর অন্য কেউ নয়,অদ্রিতা।স্থির দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। অদ্রিতাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে তার অস্বস্তি হচ্ছে।এই শীতেও সে ঘামছে।মনে মনে ভাবছে,অদ্রিতা সব কিছু দেখেনি তো।এখন কি হবে।সে আর এক মূহুর্ত সেখানে না দাঁড়িয়ে বাড়ির ভিতরের আসতে থাকে।
অন্যদিকে রাত প্রায় দেড়টা বাজে এখনো ওনী আসছেন না।এমনেতেই ওনার শরীর খারাপ তার উপরে এত রাত করে বাহিরে থাকলে শরীর আরোও বেশি খারাপ করবে। সে আরিয়ানের কথা ভাবতে থাকে এমন সময় হঠাৎ গাড়ির হর্নের আওয়াজ শুনে সে গিয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়।রাস্তার সোডিয়াম লাইটের আলোটে সবকিছু দেখা যাচ্ছে।গাড়ি থেকে আরিয়ান নামার সাথে সাথেই তার মন খুশিতে ভরে যায় কিন্তু পরক্ষনেই একটি মেয়েকে তার সাথে বেরুতে দেখে তার মুখটা কালো হয়ে যায়।মেয়েটা যখন ওনাকে জরিয়ে ধরলো তখন মন চাচ্ছিল গিয়ে ঠাসিয়ে একটা চর মারি। কেমন নিলজ্জ, বেহায়া মেয়েরে বাবা।এত রাতে পরপুরুষের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার উপরে আবার তাকে জরিয়ে ধরে,,,ছিঃ ছিঃ,,,
আরিয়ান বেল ২-৩ বার বেল বাজাতেই খালা দরজা খুলে দেয়।ঘুম ঘুম চোখে আরিয়ানকে দেখে অবাক হয়ে তাকে প্রশ্ন করেন,আরিয়ান বাবা আপনি এত রাতে কোথায় থেকে এসেছেন।আর এতক্ষনই বা কোথায় ছিলেন?
আরিয়ান কিছু না বলে উপরে চলে যায়।খালা মনে মনে বলে,বড়লোকদের যে কি কাজ থাকে জানি না বাপু।রাতবিরাতে কি যে করে।এত রাতে আমার ঘুমটা নষ্ট করলো।সে কিছু না বলে দরজা লাগিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরে।
আরিয়ান রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়।অদ্রিতার কাছে যায় আর বলে তুমি যা ভাবছো তেমন কিছু নয়,আমি তো জাস্ট।
অদ্রিতা আরিয়ানকে থামিয়ে দিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,আপনি তো কি?আর আমি ভাবছি তা যদি নাই হয় তবে ওই মেয়ে আপনাকে জড়িয়ে ধরলো কেন আর কেনই বা আপনাকে কিস করলো?সেদিন যখন আমি জড়িয়ে ধরলাম তখন সাথে সাথে আমাকে চর মারলেন।আমার স্পর্শ সহ্য হয় না।কিন্তু আপনিও তো ওই মেয়েকে জরিয়ে ধরলেন,কে ছিল মেয়েটা?
আরিয়ান অদ্রিতার মুখের দিকে তাকাতেই দেখে, তার চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে আছে।দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে অসম্ভব রেগে আছে।অদ্রিতাকে এততা রাগ করতে সে আর কখনো দেখিনি।আজ প্রথম অদ্রিতার দিকে তাকাতে সে সাহস পাচ্ছে না।এখন সে কি বলবে তা তার জানা নেই।তাই চুপ করে আছে,
আরিয়ানকে চুপ থাকতে দেখে সে আবার বলা শুরু করে,আপনার লজ্জা করলো না ঘরে বউ থাকতে এত রাতে একটা মেয়েকে নিয়ে ঘরতে,তাকে জড়িয়ে ধরতে। আমি ভাবতাম আপনি রাগী হলে কি হবে আপনার মন অনেক ভালো আর একদিন ঠিক আমাকে মেনে নিবেন কিন্তু আপনার মন- মানসিকতা এত নিকৃষ্ট জানা ছিল না।আপনার বিবেকে কি একটুও বাঁধলো না।আপনি পরকিয়ায় জড়িয়ে পরবেন তা কোনদিন ভাবিও নি।তা মেয়েটা কে ছিল,আপনার রাক্ষিতা নাকি?নিলজ্জ, বেহায়া একটা মেয়ে।
অদ্রিতার কথা শুনে রাগে আরিয়ানের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে,,,,,
.
..
…
চলবে,,,,,,,,,