অনুভূতি পর্ব-১৩

0
1233

#গল্পের_নাম_অনুভূতি
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১৩

রুকাইয়া সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে ঢোক গিলে বললো,
~মামী কেমন আছেন?
হ্যাঁ সামনে থাকা ব্যক্তিটি আর কেউ নয় আরফির মামী রুকাইয়া তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো দুটো বড় ব্যাগ।আরফির মামী বিরক্তি নিয়ে বললেন,
~এই যে বউ ওহন ভিতরে ঢুকবার দাও।কতক্ষন এইহানে খারায়া কথা কইতাম।
রুকাইয়া সরে দাড়ালো আরফির মামী ভিতরে ডুকেই সোফায় ধপ করে বসে বললো,
~তা তোমার শাশুড়ি কই দেখতাসিনা যে?
রুকাইয়া বললো,
~মা ঘরে।
মামী হেসপ বললো,
~হো ওহন তো তোমার শাশুড়ীর আরামের দিন।পায়ের উপর পাও দিয়া সংসার চালাইবো।
মামীর কথাটা বেশ ভালো লাগলো না রুকাইয়ার তাই সে বললো,
~আমি মাকে ডেকে আনছি।
রুকাইয়া সায়েদা খানমকে ডাকতে চলে গেলো।আর আরফির মামী ব্যাগ থেকে পানের বক্স বের করে পান চিবুতে শুরু করলেন।
সায়েদা খানম বিছানায় শুয়ে আছেন তখনই রুকাইয়া এসে বললো,
~মা,মামী এসেছে?
রুকাইয়ার কথায় সায়েদা খানম বিছানা থেকে উঠে বসলেন তারপর বললেন,
~আমি আসছি।
সায়েদা খানম আরফির মামীর সামনে বসে আছে।আরফির মামী বললেন,
~কী গো মাইয়ার বিয়া একা খাইবা নি?
সায়েদা খানম বললেন,
~ঠিক সময় দাওয়াত পেয়ে যাবেন।
আরফির মামী বললেন,
~দাওয়াত?আমি তো আজকা আয়া পরছি এইহানে থাকোনের লেইগা আর তোমার ভাই আর সালাম আইতাসে।
সায়েদা খানম অবাক হলেন যারা বছরেও একটা ফোন করে না আজ তারা বিয়ের এতোদিন আগে থেকে এসে থাকবেন।
আরফির মামী বললেন,
~দেহো সায়েদা আমার পোলাডারে দিয়া আরফির লেইগা কইবার চাইছিলাম কিন্তু তার আগেই তুমি।থাক আর এ বিষয় কথা কইলাম না
মহিলার কথাগুলো সায়েদা খানম দাঁতে দাঁত চেপে শুনতে লাগলো।তখনই আরফি রুম থেকে বের হয়ে আসলো নিজ মামীকে দেখে একটু অবাক হলো কিন্তু তা প্রকাশ করলোনা।আরফির মামী আরফিকে দেখে গদগদ হয়ে বললেন,
~আহারে আমার মাইয়াডা কী শুকায়া গেছে?এইহানে আহো আমার কাছে আহো
আরফি একবার মায়ের দিকে তাকিয়ে তারপর মামীর কাছে গিয়ে বসলো।
আরফির মামী বললো,
~ব্যাগটা খুলো তো মা।
আরফি ফ্লোরে থাকা ব্যাগটার চেইন খুললো আরফির মামী বললো,
~বক্সটা লও।
আরফি সামনে থাকা বক্সটা হাতে নিলো আরফির মামী বললো,
~এইডা তোমার নানীর হার তোমারে দিলাম আমি।তোমার মামার শখ তুমি এইডা পইরা শশুড় বাড়ি যাইবা।
আরফি বললো,
~এই হারটা তো এখন আপনার তাহলে আমাকে কেন দিচ্ছেন?
আরফির মামী বললেন,
~এতো কথা কয় না যাও ঘরে যাও।
তখনই আরফির মামা আর সালাম সেখানে উপস্থিত হলো।তাদের দেখে সায়েদা খানম চটে গেলেন কিন্তু কিছুই বললেন না।আরফির মামা বাসার ভিতর ডুকেই সায়েদা খানমকে জিজ্ঞেস করলেন,
~বোন কেমন আছিস?
সায়েদা খানম গম্ভীর গলায় বললেন,
~ভালো।
সালাম এসে সায়েদা খানমকে বললেন,
~ফুপি কেমন আছেন?
সায়েদা খানম ভাতিজাকে দেখে অনেক খুশি হলেন সে সালামকে পাশে বসিয়ে কথা বলতে লাগলেন।আরফি বললো,
~আমি একটু আসি।
বলেই রুমের ভিতর চলে গেলো রুকাইয়া আরফানকে ফোন করে সব বললো আরফান বললো,
~আমি একটু পর আসছি।আর সন্ধ্যায় আবরার আর অবনি আসবে।
রুকাইয়া বললো,
~ঠিক আছে মাকে বলে দিচ্ছি।
রুকাইয়া হলরুমে গিয়ে বললো,
~মা আবরার ভাই আর অবনি আসবে সন্ধ্যায়।
সায়েদা খানম বললেন,
~আমি রান্নার কাজ শুরু করি।
আরফির মামী বললেন,
~আহো তোমার কামে সাহায্য কইরা দেই।বউমা তুমি ঘরে যাও আরাম করো।
সায়েদা খানম আজ পদে পদে অবাক হচ্ছে।এই মানুষটা এতো ভালো হলো কী করে।

______________

আরফি বারান্দার গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে একটুপরই আবরাররা চলে আসবে।গহনার ডিজাইন দেখাতে আসবে তখনই সালাম এসে হাজির আরফি সালামকে দেখে একটু অস্তিত্বতে পরে গেলো।সালাম বললো,
~আরফি,কেমন আছো?
আরফি বললো,
~ভালো আছি ভাইয়া।
সালাম বললো,
~তোমার সাথে এতো কথা হয়নি কখনো আরফানের সাথে তবুও ছোটবেলায় দেখা হয়েছে।তোমার জম্মের পর আমরা আর তোমাদের সাথে ততোটাও সাক্ষাৎ করিনি।হয়েছে তা অনেক কম
আরফি বললো,
~হ্যাঁ।
সালাম বললো,
~তোমার কী আমার সাথে কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে?
আরফি বললো,
~নাহ তো ভাইয়া।
সালাম বললো,
~ফুপার মৃত্যুর খবর শুনে খুবই খারাপ লেগেছে।কাজের জন্য ঢাকার বাহিরে না গেলে অবশ্যই আসার চেষ্টা করতাম
আরফি বললেন,
~সমস্যা নেই ভাইয়া।
তাদের কথার মাঝেই আরফান এসে হাজির হলো আরফান আরফিকে বললো,
~আরফি,আবরার এসেছে অবনি তোর সাথে দেখা করতে চায়
আরফি বললো,
~আসছি।
আরফি সালামের থেকে বিদায় নিয়ে হলরুমে চলে আসে।
আবরার মহাবিরক্ত সেই কখন থেকে আরফির মামী একেরপর এক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতেই আছে।আরফিকে দেখে আবরার স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে বললো,
~মামী আরফি চলে এসেছে এই ডিজাইনের বইটা ওকে দেখতে দিলে ভালো হতো।
আরফির মামী বললো,
~এই আরফি এইখান টায় আয়া বয়।
আরফি মামীর পাশে বসলো অবনি রুকাইয়া সবাই এসে হাজির সবাই গহনার ডিজাইন দেখতে লাগলো।
আবরার সবার সাথে বসে কথা বলছে আরফি গহনার ডিজাইন পছন্দ করে অবনিকে দেখিয়ে দিলো।
আরফি আর আবরার বারান্দায় দাড়িয়ে আছে আবরার আরফির হাতে একটা আংটি পড়িয়ে দিয়ে বললো,
~মা দিয়েছে।
আরফি বললো,
~খুব সুন্দর।
আবরার আরফির আঙ্গুলে ঠোট ছুইয়ে বললো,
~অপেক্ষা করতে মন চাইছে না।
আরফি বললো,
~অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।
আবরার বললো,
~একবার আমার বাহুডরে আটকা পরলে সেখান থেকে বের হতে পারবেনা সুন্দরী মনে রেখো।
আরফি বললো,
~সে দেখা যাবে নে।
আবরার বললো,
~হাতটা দাও তো।
আরফি বললো,
~কেন?
আবরার বললো,
~দেওনা।
আরফি হাত এগিয়ে দিতেই আবরার সেটা ধরে বললো,
~তোমার হাতে আমার নামের মেহেদী লাগাবে তখন এই হাতটা আরো সুন্দর হয়ে যাবে।
আরফি ফিক করে হেসে উঠলো। আবরার সেই হাসির দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো এতো সুন্দর হাসি হয়তো সে কখনো দেখেনি।
আবরারা খাওয়া-দাওয়া করে আরফিদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার জন্য রওনা হলো।
তারা চলে যেতেই আরফান তার মামাকে বললো,
~আরফির বিয়ের খবরটা কীভাবে পেলেন?
আরফির মামা বললেন,
~তোমার তাজরীন খালা থেকে।
আরফান বললো,
~ওহহ।
আরফির মামা বললেন,
~বিয়ের সব ব্যবস্থা ঠিক ভাবে হয়ে গেছে তো?
আরফান বললো,
~জ্বী।আল্লাহর রহমত সব ঠিকভাবে হচ্ছে।
মামা বললেন,
~এই টাকা গুলো রাখো।
আরফানের দিকে এক বান্ডিল ৫০০টাকার নোট এগিয়ে দিয়ে বললেন তিনি।আরফান বললো,
~এসব কেন?মামা আপনারা এসেছেন তাই অনেক এসবের দরকার নেই।
আরফির মামা হালকা হেসে বললেন,
~অতীতের ভুল সুধরাতে আজ তোমাদের দরজায় এসেছি।মানা করো না
আরফান বললো,
~এগুলোর কোনো প্রয়োজন নেই।আমরা সেগুলো মনে রাখেনি।
আরফির মামা আর কিছু না বলে টাকাটা হাতে নিয়ে চলে আসলেন রুমে।আরফান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আকাশপাণে তাকিয়ে রইলো।

____________

গায়ে হলুদের দিন চলে আসলো দেখতে দেখতে সবাই ব্যস্ত নিজ নিজ কাজে আরফি সকাল থেকেই হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে।কেউ তাকেই কাজ করতে দিচ্ছেনা একটুপর রুকাইয়া তার রুমে এসে বললো,
~আরফি,মেহেদী লাগানোর জন্য মেয়ে এসেছে তুমি রেডি হয়ে যাও।
আরফি বললো,
~আসতে বলো আমি রেডিই আছি।
কিছুক্ষণ পর দুজন মেয়ে ঘরে ঢুকলো আরফির হাতে মেহেদীন লাগানো শুরু করলো।
রুকাইয়া গোসল করে বের হয়ে আসলো আয়নার সামনে দাড়িয়ে শাড়ি ঠিক করছে।আরফান পিছন থেকে রুকাইয়াকে জড়িয়ে ধরে বললো,
~কী ব্যাপার বাবুর মা কে যে অনেক সুন্দর লাগছে?
রুকাইয়া মুখ বাকিয়ে বললো,
~আপনার সময় হলো বাবুর মায়ের খবর নেওয়ার জন্য?
আরফান রুকাইয়ার গলায় মুখ গুজে বললো,
~বাবুর ফুপির বিয়ের জন্য যে কতো কাজ বাকি আছে।
আরফানের কথায় রুকাইয়া বললো,
~সব কাজ শেষ হয়নি?
রুকাইয়ার কথায় আরফান তাকে ছেড়ে দিয়ে বললো,
~কিছু কাজ বাকি আছে সালাম তা করছে।
আরফানের কথায় রুকাইয়া বললো,
~মামা কতোটা সাহায্য করছে তাইনা?
আরফান বললো,
~হুমম।
সায়েদা খানম মেয়ের পাশে বসে আছে হাতের মেহেদী দেখছে।আবরারের নামটা জ্বলজ্বল করছে আরফির হাতে সায়েদা খানম মেয়ের কপালে ঠোঁট ছুইয়ে বললো,
~আরফি তোর মেহেদীটা অনেক সুন্দর হয়েছে।তোর হাতে আবরারের নামটা অনেক মানিয়েছে।
আরফি লজ্জায় মাথানিচু করে ফেললো সায়েদা খানম মেয়ের মাথায় হাতবুলিয়ে দিলেন।
সন্ধ্যার সময় আবরারা সেন্টারে পৌছে গেছে একসঙ্গেই হলুদের প্রোগ্রাম করা হবে।আরফিরাও কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসলো আবরার আরফিকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে।রাতুল বললো,
~তড় সইছেনা আন্টি মানা করেছে স্টেজে গেলেই দেখতে পারবি।
আবরার বললো,
~বেশি কথা বলিস না এমনেই মনটা আনচান আনচান করছে।
রাতুল মুখবাকিয়ে বললো,
~হইছে তোর আদ্যিক্ষেতা তুই একাই দুনিয়ায় বিয়া করতাসোস।
আবরার বললো,
~চুপ থাক।
আরফি কাঁচা হলুদ রঙ্গের শাড়ি,ফুলের গহনা পরে বসে আছে দেখতে তাকে হলুদ পরী লাগছে।রুকাইয়া অবনি আর শ্রেয়া এসে আরফিকে নিয়ে স্টেজে চলে গেলো।আবরার আগেই স্টেজে উঠে বসে আছে ছেলের এমন কান্ডে জাবেদা বেগম মুখ টিপে হাসলেন।আরফি স্টেজের কাছাকাছি আসতেই আবরারের নজর তার উপর পরলো।আবরার আরফির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আরফিকে আবরারের পাশে বসিয়ে দেওয়া হলো।আবরার ড্যাবড্যাব করে আরফির দিকে তাকিয়ে আছে আবরারকে রাতুল একটা চিমটি কেটে কানে ফিসফিস করে বললো,
~কী শুরু করছোস?ইজ্জত সম্মান খোয়াবী নাকি?
আবরার নিজের ধ্যানে ফিরলো সবাই মুখ টিপে হাসছে আবরারের কান্ডে।এক এক করে সবাই হলুদ লাগাচ্ছে আরফি আর আবরারকে হলুদ রাঙ্গা মুখে আবরার আর আরফিকে অনেক সুন্দর লাগছে।
গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে সবাই খেতে বসলো আরফি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে সায়েদা খানমের কাছে যাচ্ছে তখনই তাকে কেউ হেঁচকা টানে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো আরফি যখনই চিৎকার করতে যাবে সামনের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেলো কারণ আবরার দাড়িয়ে আছে।

___________

আরফি আবরারকে দেখে ঢোক গিলে বললো,
~আপনি এভাবে টেনে আনলেন কেন?
আবরার বললো,
~আমার বউকে আমি হলুদ লাগাবো না?
আরফি বললো,
~কেউ দেখলে কী লজ্জাটাই না পাবো আমি?ছাড়েন
আবরার বললো,
~একটুও না আগে হলুদ তারপর
বলেই আবরার আরফির গালে হলুদ ছুঁইয়ে দিলো।আরফি চোখ বন্ধ করে রাখলো আবরার মুগ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।আবরার মুখ এগিয়ে আরফির গালে ঠোঁট ছোঁয়াতে যাবে তখনই অবনি এসে ডাকতে লাগলো
~আরফি ভাবি ভাবি।
আবরার আরফিকে ছেড়ে দিয়ে সেখান থেকে চলে আসলো আরফি নিজেকে ঠিকঠাক করে অবনির কাছে চলে আসলো।
আরফিকে দেখে অবনি বললো,
~খেয়ে নিবে চলো।মা ডাকছে তোমাকে।
আরফি অবনির পিছন পিছন চলে আসলো সবাই খাবার খেতে বসলো।আরফিকে সায়েদা বেগম খাইয়ে দিচ্ছে সবার খাওয়া-দাওয়ার পর রওনা হলো বাসার উদ্দেশ্যে আগামীকাল বিয়ে তাই সবারই রেস্টের দরকার আছে।
বাসায় পৌছে সবাই ফ্রেশ হয়ে যার যার রুমে শুয়ে পরেছে সবাই কিন্তু ঘুম নেই আরফির চোখে। সে আনমনে বারান্দায় দাড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে আজ এবাসায় এরাতটাই তার শেষ রাত কাল থেকে হয়তো নতুন জীবনের শুরু হবে।
আবরার মানুষ ভালো সে হয়তো প্রতিটি কাজে তাকে সাহায্য করবে।মাকে অনেক মিস করবে মায়ের বকা, শাসন,আদর অনেক মিস করবে।ভাইয়া আর ভাবি তো নয়নের মণি কীভাবে তাদের ছাড়া থাকবে।
ভাবতেই ঢুকরে কেঁদে উঠে আরফি এতোটা কষ্ট কেন হচ্ছে।হঠাৎ আরফির মাথায় কেউ হাত বুলিয়ে দিলো আরফি তার পাশে তাকাতেই আরফানকে দেখতে পেলো আরফি আরফানের বুকে মাথা রেখে কেঁদে উঠলো।আরফান আরফির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
~ঘুমিও পর আরফি নাহলে কালকে ভুতনির মতো দেখা যাবে।
আরফি ফিক করে হেসে উঠলো আর বললো,
~তুমি আবার শুরু করেছো
আরফান বললো,
~শুয়ে পর।
আরফান আরফিকে শুইয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে নিজের রুমে চলে গেলো।আরফি চোখ বন্ধ করে ফেললো

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে