হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-৮

0
1176

হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-৮

লেখা- sharix dhrubo

[বিঃদ্রঃ যাদের কাছে মনে হবে এটা কোথাও থেকে কপি করা কৃপা করিয়া রেফারেন্স দিয়ে কথা বলবেন। ধন্যবাদ।]

সংস্থাটির প্রধান অফিস রাজধানীর অনেক প্রশিদ্ধ একটি কলেজের পাশে অবস্থিত। রাফির টিমমেট এই কলেজেই পড়তো। বাইরে থেকে বেশ পরিপাটি প্রধান অফিসটি। বেশ পুরাতন দালান কিন্তু রিকনস্ট্রাকশন করে পূর্বের রুপ ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। ভেতরে ঢুকে একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে গেলো তারা। টিমমেট তার পরিচয় দিলো এবং রাফিকে নিজের কাজিন হিসেবে পরিচয় দিলো। এরপর কিছু ইনভেস্টিগেশনের রিজন দেখিয়ে বছরখানেক আগের ফরেন স্টুডেন্ট ডোনেশন লগ দেখতে চাইলো। অনেক পীড়াপিড়ি আর কমিটির এক্স সদস্য হিসেবে রিকুয়েষ্ট করে শেষমেষ রাজি করতে পারলো একাউন্টেন্টকে ।
সেল্ফ থেকে শেষ বছরের লগবুকটা বের করেতে করতে একাউন্টেন্ট বললো

একাউন্টেন্ট – ভাই আপনি নিজেও কমিটিতে ছিলেন, আপনি জানেন এখন যা করা হচ্ছে তা সংস্থার পলিসি পরিপন্থি।

বলতে বলতে লগবুকটা এগিয়ে দিলো একাউন্টেন্ট। লগবুকটা হাতে পেয়েই ডেট আর টাইম মিলিয়ে ফরেন ট্রানজেকশন মেলানো শুরু করলো রাফি এবং টিমমেট। প্রায় হাজারখানেক প্রবাসী প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ওই সপ্তাহে ডোনেট করেছে। এতো বিপুল প্রবাসী ডোনেশনের কারন জানতে চাইলে একাউন্টেন্ট জানালো ওইদিন এক্স স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যাল উইক ছিলো, রেগুলার ইরেগুলার কম বেশী সব প্রবাসী প্রাক্তন ডোনার স্টুডেন্টদেরকে চিঠি লেখে আমাদের পরবর্তি কর্মসূচির উদ্দেশ্য জানানো হয়েছিলো এবং একটি খরচ এস্টিমেশন করে দেয়া হয়েছিলো। যে কারনে ওই সপ্তাহে বছরের অন্যন্য সময়ের থেকে বেশী প্রবাসী স্টুডেন্টস সংস্থাটিকে ডোনেট করেছে। কাছাকাছি সময়ে প্রায় ৮ জন প্রবাসী প্রাক্তন স্টুডেন্ট সেই বিশেষ ব্যাংকের মাধ্যমে ডোনেশন পাঠিয়েছিল। কিন্তু ইনভেস্টিগেশনে জানা গিয়েছিলো সেই বিশেষ ব্যাংক থেকে মোট ৪ জন বিদেশীর একাউন্ট থেকে টাকা সংস্থাটিতে ট্রান্সফার হয়েছিলো। কিন্তু রাফির যতদূর মনে পড়ে ৪ জনের কেউই স্বদেশীয় নয়, চারজনই জন্মসূত্রে চারটি ভিন্ন দেশের নাগরিক যার ফলে এটা কোনভাবেই সম্ভব নয় যে তারা এদেশের কোন কলেজে পড়াশোনা করবে। রাফি তার টিমমেটকে ইশারা করলো লগবুকের ওই ৮ জনের ডিটেইলের একটা ছবি তুলে নিতে, টিমমেট ইশারা করলো সে ওই কাজ অনেক আগেই করে ফেলেছে।

এখানকার কাজ শেষ, বের হতে হতে টিমমেট সেই ৮ জন ডোনারের টোকেন নাম্বার থেকে তাদের কলেজের নাম, তাদের ডিপার্টমেন্ট, ব্যাচ ও রোল নাম্বার বের করে ফেললো। এদের মধ্যে ৪ জন একই কলেজের এবং ৪ জন ভিন্ন ভিন্ন জেলার ভিন্ন কলেজের ডোনার।
রাফি তার টিমমেট কে উদ্দেশ্য করে বললো,
রাফি- আমাদের কি ওই বিশেষ ব্যাংকে খোঁজ নেয়া উচিৎ? এই ডোনেশন ফেস্টিভ্যাল উইক এ সেই বিশেষ ব্যাংক থেকে এই সংস্থার নামে অন্য কেউ টাকা পাঠিয়েছিলো কি না?

– অবশ্যই স্যার, তাহলে বোঝা যাবে আদৌ কেউ স্বইচ্ছায় ডোনেট করেছে নাকি পুরোটাই চুরির টাকা।
রাফি – আর এই লগবুকে থাকা ৮ জনের ডিটেইলস স্ব স্ব কলেজ থেকে কালাক্ট করার ব্যবস্থা করতে হবে।

– Right away, sir.
রাফি -চলো তাহলে অফিসে ফেরা যাক।
এদিকে অফিসে ফেরার পর অন্যান্য টিমমেটসদের কাছে অন্য কোন ক্লু পাওয়া গেছে কিনা তা জানতে চাইলো রাফি,
একজন একটা কাগজ তুলে ধরে বললো হয়তো কিছু একটা সে পেয়েছে।

– স্যার, আফ্রিকায় চরমপন্থীদের সাথে হীরার বিনিময়ে অস্ত্র বেচাকেনায় যারা যারা জড়িত ছিলো তাদের প্রায় সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়েছিলো। আপাতোদৃষ্টিতে ব্যাপারটা এখানেই সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু চরমপন্থিদের একজনের সাথে আমি আমাদের দেশীয় একজনের সমপৃক্ততা পেয়েছি। কিছুদিন আগে আমরা যে জংঙ্গী সংগঠন র্র্যাকেটটা ধরেছি তাদের অস্ত্রের সাপ্লায়ারদের সাথে ওই চরমপন্থী সদস্যের সরাসরি যোগসাজশ ছিলো।

রাফি – তো?
– তো যদি ওই অস্ত্রের কন্ট্রাক্ট টি সফল হতো তাহলে হয়তোবা ওই অস্ত্রের কিছুটা অংশ অথবা পুরোটাই আমাদের দেশে চলে আসতে পারতো।
রাফি – তার মানে যদি আমরা ধরে নেই যে এই অস্ত্র আমাদের দেশে আসার কথা তাহলে এটা ধরে নেয়া যেতেই পারে যে মাফিয়া গার্ল এই খবর আগে থেকেই জানতে পেরেছিলো আর চালান আটকাতে সবধরনের ইনফরমেশন জোগাড় করে ওই দেশের সরকারের কাছে তুলে দিয়েছিলো।
(মনে মনে )কারন এতো ডিটেলস কোন সাধারন মানুষের হাতে থাকার কথা না আর পৃথিবীর কোন পাওয়ারফুল দেশ বিনিময়বিহীন ইনফরমেশন শেয়ার করে না। আর একমাত্র মাফিয়া গার্লের কাছেই এমন প্রযুক্তি আছে যার দ্বারা সে এত একুরেট ইনফরমেশন বিনামূল্যে ও বিনা ক্রেডিটে দান করে দিয়েছে।
রাফি – আচ্ছা তাহলে এই ঘটনার কোন লীড আছে আর?
টিমের সবাই না সূচক মাথা দোলায়।
রাফি – ok, next?

চলতে থাকলো রাফি ও তার টিমের ইনভেস্টিগেশন, কিন্তু অন্য কোন ঘটনা এমন লীড দেয় নি যা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ডোনেশন কেসে পাওয়া গেছে। তাই রাফি তার টিমকে আরো ডিপলী এই একটা লীডের উপর জোর দিতে বললো।
রাফি তার টিমের ৪ জনকে সরকারি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অর্ডার ইশ্যু করে সেই চার ভিন্ন জেলার কলেজে পাঠালো ডোনারদের ইনফর্মেশন কালেক্ট করতে আর রাফি গেলো সেই কলেজে যে কলেজের ৪ জন একই দিনে ডোনেট করেছিলো।
কলেজটি বেশ পুরাতন, প্রায় ৪০ বছর বয়স কলেজটির। পুরাতন পুরাতন সব বিল্ডিং এর। ফাঁকে বিশাল বিশাল গাছের মাঝ দিয়ে চলে গেছে ছিমছাম রাস্তা। রাফি সোজা চলে গেলো কলেজের এডমিনিস্ট্রেশন রুমে। গিয়ে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অর্ডার দেখালো।
এডমিন – বলুন মি.রাফি কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?
রাফি – আপনাদের আর্কাইভে তো প্রাক্তন ও বর্তমান সব স্টুডেন্টদের রেকর্ডস থাকার কথা, তাই না?
এডমিন – জ্বী তা সব কলেজেই রাখার নিয়ম আছে, এটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমাদের আর্কাইভেন্ট ১৯৯৯ ব্যাচ থেকে শুরু করে প্রতিটা ব্যাচের স্টুডেন্ট ইনফরমেশন আছে।

রাফি কিছুটা অবাক ও কৌতুহলভরা চোখে পূর্বের ব্যাচগুলোর রেকর্ডস না থাকার কারনটা জানতে চাইলো।
এডমিন – আসলে ১৯৯৮ সালে আমাদের কলেজের আর্কাইভ রুমে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে যার ফলে ১৯৯৮ সালের পূর্বের সকল নথিপত্র ও রেকর্ডস নষ্ট হয়ে গেছে।
রাফির কিছুটা মর্মাহত হয় কারন যে ৪ জন ছাত্রছাত্রীর খোঁজে রাফি এসেছিলো তাদের দুইজন ৯১ ও অন্য দুইজন ৯৩ ব্যাচের স্টুডেন্ট ছিলো।
এটা কেমন হলো, একটা ক্লুর এতো কাছে এসে হারিয়ে যাবে? মনে মনে রাফি ভাবলো।
রাফি – আচ্ছা অন্য কোন উপায় আছে কি?

পুরাতন ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের তালিকা খুজে পাওয়ার?
এডমিন – আমার পক্ষে যতটুকু জানানো সম্ভব আমি আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। এর বাইরে আর কোন তথ্য আমার কাছে নেই।
রাফি – আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই সাহায্যটুকু করার জন্য। আসছি।
এডমিন – ঠিক আছে।

কিছুটা মনক্ষুন্ন হয়ে রাফি বের হয়ে এলো এডমিনিস্ট্রেশন থেকে। হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পাসের গন্ডি পার হবে তখনই ক্যাফেটেরিয়ার পাশে একটি বটগাছের দিকে নজর গেলো রাফির। একঝাঁক কচিকাঁচা পথশিশুদের বসিয়ে পড়াচ্ছে একটা মেয়ে। দৃশ্যটা দেখে রাফির খারাপ মন হঠাৎ ভালো হয়ে গেলো। আনমনে হাটতে হাটতে বটগাছটার নীচে চলে গেলো রাফি। এমন সময় ফোন এলো হেডকোয়ার্টার থেকে, অন্য চার জন টিমমেট কলেজ থেকে ডোনারদের ইনফর্মেশন কালেক্ট করে ফেলেছে। টিমমেট ৪ জনই এখন হেডকোয়াটারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। রাফি চাচ্ছিলো না এই কলেজে xyz সংস্থাটির শাখায় খোঁজ নিতে কিন্তু অন্য কোন উপায় না দেখে সংস্থাটির থেকেই প্রয়োজনীয় তথ্য নিতে চাইলো।

বটগাছের নীচে কিছু ছাত্রছাত্রী আড্ডা দিচ্ছিলো। রাফি চাইলো তাদের কাছে গিয়ে জানতে চাইবে সংস্থাটির সম্পর্কে।
রাফি – (হালকা কাশি দিয়ে) আসসালামু আলাইকুম।
আড্ডা থেকে সবাই তাকালো রাফির দিকে।
– ওয়ালাইকুমুস সালাম। (কৌতূহল নিয়ে) কি চাই?
রাফি – জ্বী যদি কিছু মনে না করেন তো কিছু জিজ্ঞাসা ছিলো।
– তাড়াতাড়ি বলুন, কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের মিটিং শুরু হবে।
রাফি – (কোনপ্রকার ভনিতা না করে) xyz সেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কলেজ শাখা অফিস কোনদিকে?
– (এবার সবাই একসাথে তাকিয়ে পড়লো) কেন? কি দরকার?
রাফি – একটু দরকার ছিলো। বলবেন কি?
– কারণ না বললে বলা যাবে না। সবাই আবার আড্ডায় মন দিলো।
রাফি – আসলে আমি কিছু প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের খোজ করছি, কিন্তু কলেজের আর্কাইভের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাক্তন স্টুডেন্টদের সব ইনফর্মেশন নষ্ট হয়ে গেছে, তারা xyz সংস্থার সদস্য ও ছিলো। তাই যদি সংস্থাটির সাথে যোগাযোগ করা যায় তাহলে হয়তো তাদের কাছ থেকে আমি ইনফর্মেশনগুলো পেতে পারি।
-(আড্ডার সবাই একজন আর একজনের চেহারা দেখতে দেখতে) আমরাই xyz সংস্থার কলেজ শাখা কমিটি আর ওইযে যাকে বাচ্চাগুলো পড়াচ্ছে সে সভাপতির দায়িত্বে আছে।
ততক্ষনে বাচ্চাগুলো উঠে দাড়িয়ে মেয়েটিকে ঘিরে ধরলো আর মেয়েটি সবাইকে দুইটা করে সিংগাড়া তুলে দিচ্ছিলো। রাফি না চাইতেও মুখ দিয়ে বের হয়ে গেলো বাহ শব্দটি।
বাচ্চাদের বিদায় দিয়ে মাষ্টার ম্যাডাম আড্ডার কাছে এগিয়ে এলে অন্য সবাই আড্ডা ছেড়ে মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেলো। রাফিও পিছন পেছন এগিয়ে গেলো।
অন্যান্যরা মেয়েটিকে রাফির উদ্দেশ্য খুলে বললো, মেয়েটি এবার রাফিকে লক্ষ্য করলো, আপাদমস্তক দেখে এগিয়ে এলো রাফির কাছে। নিজের থেকেই রাফির সাথে কথা বললো।
– হয়তো আপনি যে তথ্য চাচ্ছেন তা আমাদের কাছে থাকলেও কোন সদস্যের পার্সোনাল ইনফরমেশন ডিসক্লোজ করা আমাদের পলিসির বাইরে।
রাফি – কিন্তু ইনফরমেশনগুল যে খুউবই……..
– (রাফিকে হাত উচু করে থামিয়ে দিয়ে) দেখুন আপনার আরো কিছু জানার থাকলে অপেক্ষা করতে হবে। আমাদের কমিটির রেগুলার মিটিং শেষ হওয়ার পর দেখা করুন।
রাফি আর কথা না বাড়িয়ে ক্যাফেটেরিয়ার বাইরে পাতানো চেয়ার টেবিলে গিয়ে বসলো আর দূর থেকে তাদের মিটিং দেখছিলো। এর মধ্যে রাফি অন্যান্য টিমমেটদের কনফারেন্স কল করলো।
রাফি – টিম, তোমাদের প্রোগ্রেস জানাও?
– প্রয়োজনীয় তথ্য কালাক্ট করতে পেরেছি স্যার।
– কলেজে গ্যান্জাম চলছিলো তারপরও মিশন কমপ্লিট স্যার।
– Done sir.
– I have the necessary information sir.
রাফি – Any problem?
-( সবাই একসাথে) No sir.
রাফি- very good team. See you all in headquarter.
কলটা কেটে দিয়ে সংস্থার মিটিং শেষ হওয়ার অপেক্ষা করতে থাকলো রাফি।

সভাপতি মেয়েটার বডি ল্যাংগুয়েজ আর প্রেজেন্টেশন স্ট্যাইল ই আলাদা। একজন লিডারের মতই ডাইরেকশন দিচ্ছিলো বাকী সবাইকে।
ঘন্টা ২ পর সবাই উঠে দাড়ালো, রাফি বুঝলো যে মিটিং শেষ হয়েছে। সবাই যে যার মত নিজ নিজ রাস্তায় রওনা দিলো। রাফি একটু জোর পায়ে সভাপতির পিছু নিলো। সভাপতির কাছাকাছি এসে রাফি বললো –
রাফি – এক্সকিউজ মি?
সভাপতি ঘুরে তাকালো আর চোখে হালকা বিরক্তি ভাব নিয়ে বললো
সভাপতি – ওহ আপনি, এখনো অপেক্ষা করছেন? দেখুন আপনি যা চাচ্ছেন তা সর্বরাহ করা সম্ভব নয়, আমাদের সংস্থার নিয়ম বহির্ভূত। আমি এই কলেজ শাখার সভাপতি হয়ে আপনার এই অনৈতিক ডিমান্ড কিছুতেই পূরন করতে পারি না।
রাফি অনেকভাবে বোঝাতে চেষ্টা করলো যে ইনফরমেশনগুলো হাতের নাগালে পাওয়া রাফির জন্য খুবই জরুরী কিন্তু সভাপতিও নাছোড়বান্দা, কিছুতেই তথ্য প্রদান করবে না। রাফি চাচ্ছিলো না স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অর্ডারটা শো করতে কিন্তু এখন এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যে সভাপতির কাছ থেকে ইনফরমেশন বের করতে হলে ওটাই একমাত্র চাবি। শেষমেশ রাফি বলেই বসলো
রাফি – দেখুন আমি আপনাদের কলেজে একটি ইনভেস্টিগেশনে এসেছি যার দরুন কিছু প্রবাসী প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের ইনফরমেশন আমার দরকার, ব্যাগ থেকে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অর্ডার বের করে সভাপতিকে দেখালো।
সভাপতি কিছুটা ভ্রু কুঁচকে অর্ডার পেপারটা নিলো। পুরোটা খুঁটে খুঁটে পড়লো।
সভাপতি – এখানে তো কলেজের নাম আছে। আমাদের সংস্থার নাম ত উল্লেখ নেই আর তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় থেকে আমাদের কোন অর্ডার ইশ্যু করে ফরোয়ার্ড করে নি। (একটু কৌতুহলী হয়ে) আপনার আইডি কার্ড দেখি?
প্রশ্ন শুনে রাফির চোখ কপালে উঠে গেলো।
রাফি – কেন?
সভাপতি – প্রতিদিন তো আর আমাদের অফিসে তথ্য মন্ত্রনালয় থেকে ইনভেস্টিগেশন অর্ডার নিয়ে কেউ হাজির হয় না। দেখান আপনার আইডি?
রাফি উপায়ন্ত না পেয়ে পকেট থেকে আইডি কার্ড বের করে দিলো।

তথ্য মন্ত্রনালয়ের আইডি কার্ড,
নামটা খুব স্পষ্ট করেই লেখা, রাফিউল ইসলাম।
জন্মদিন দেখে সভাপতির চোখ আটকে গেলো পোষ্ট এ গিয়ে।
(সভাপতি নিজে নিজে) সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার! সরকারী মন্ত্রনালয়ের সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার এসেছে সরকারী স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অর্ডার নিয়ে ইনফরমেশন খুঁজতে! সরকারী অফিসে কি জনবল শর্ট পড়েছে!
রাফি – দেখুন ইনভেস্টিগেশন অর্ডারে আমার নাম এবং পদবী সুন্দর করে দেয়া আছে। চাইলে চেক করে নিতে পারেন।
সভাপতি – তা তো অবশ্যই। এখনই আমাকে একটা জরুরী কাজে বের হতে হববে তাইই আপনাকে দেয়ার মত পর্যাপ্ত সময় আমার কাছে নেইই। আপনি আপনার অর্ডারের ফটোকপি রেখে যান। আমাদের সংস্থার সদস্য রয়েছেন তথ্য মন্ত্রনালয়ে। অর্ডারটা ভেরিফাই হলে আমিই আপনাকে ডেকে নিবো। তখন আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন পেয়ে যাবেন। ও আর হ্যাঁ আপনার কন্ট্যাক্ট নাম্বারটা দিতে ভূলবেন না।
রাফি তো এখন পড়লো মহা বিপাকে, অগত্যা কোন উপায় না পেয়ে ইনভেস্টিগেশন অর্ডারের কপি এবং মোবাইল নাম্বার দিলো সভাপতিকে। সভাপতি অফিসের ল্যান্ডলাইন নাম্বার থেকে রাফির নাম্বারটা ডায়াল করলো। রাফি ভেবেছিলো এখনই হয়তো তথ্য মন্ত্রনালয়ে ফোন দিচ্ছে সভাপতি, কিন্তু যখন নিজের ফোনটা বেজে উঠলো আর রিসিভ করার পর শুনলো “ভেরিফাই করে নিলাম” তখন বুঝতে পারলো এই মেয়ে ভয়ংকর ত্যাড়া একটা মেয়ে। অবশ্যই এর যোগ্যতা আছে সভাপতি হবার।
রাফি – আরকিছু?
সভাপতি – নাহ আপাতত আর কিছু না। আমি বের হবো। সো টাটা।
দুইজনই অফিস থেকে বের হতে লাগলো,
রাফি – আমার তো সব রেখে দিলেন, এটলিষ্ট আপনার নামটা তো বলে যান।
সভাপতি একপ্রকার দৌড় থামিয়ে পেছনে ফিরলো
সভাপতি – রুহী।
বলেই পাখির মত কোথায় হাওয়া হয়ে গেলো।
রাফি আর সাতপাচ না ভেবে ডাইরেক্ট স্যারকে ফোন দিয়ে সংস্থায় হওয়া সিচুয়েশন খুলে বললো।
ডাইরেক্টর স্যার ব্যপারটা দেখতেছেন বলে রাফিকে অফিসে ব্যাক করতে বললেন।
রাফি গাড়িতে বসে ভাবতে লাগলো কি মেয়ে রে বাবা। এতো স্ট্রিক্ট মেয়ে আজ পর্যন্ত দেখে নি রাফি।

এটা শেষ হলে কি সিজন-২ আনবো? মন্তব্য জানাবেন। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে