তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা_২ পর্ব-১৬+১৭

0
1874

#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা_২
#সিজন-২
#Jannatul_ferdosi_rimi [লেখিকা]
#পর্ব-১৬+ পর্ব-১৭ (বোনাস)( রহস্য উন্মোচন)

In comander room,,
আমানঃ হ্যালো মিঃশুভ(কাব্যের সহকারী অফিসার)
শুভঃ জ্বী স্যার বলুন
আমানঃ আপ্নারা কি?আভি কে ধরতে পেরেছেন? আর অয়রি ঠিক আছে তো?
কাব্য কোথায়?
শুভঃ আসলে স্যার গোডাউন টায় স্যার একাই ঢুকে গিয়েছেন আমাদের বাইরেই অপেক্ষা করতে বলেছেন
আমান প্রচন্ড রেগে যায়

আমানঃ এইসব কি বলছো টা কি? তুমি হ্যা? তোমরা জানোনা আভি রায়জাদা একজন ডিঞ্জারাস পার্সন আর কাব্য এইরকম বোকামি করলো কীভাবে?

শুভঃ আসলে স্যার বলেছেন ম্যাডামের বিপদ হতে পারে

আমানঃ আমি বুঝতে পারছিনা কাব্য এতো বড় একটা রিস্ক কীভাবে নিতে পারলো
দেখো কাব্যকে আমরা ফোনে পাচ্ছিনা তোমরা তাড়াতাড়ি ভিতরে ঢুকো আমি আসছি

শুভঃ জ্বী স্যার

???
কাব্য কে উঠিয়ে কয়েকজন গার্ড বড় একটা ব্রিজে এনে ফেলল তারা জোড়ে ধাক্কা মারলো যার কারনে কাব্য ছিটকে পড়ে নিজের রক্তাক্ত দেহ নিয়ে পানির ভিতর তলিয়ে গেলো
কিন্তু কাব্যকে মারা এতোই সোজা?
(আপনাদের কি মনে হয়??)

ইশান কোলে করে অয়রিকে উঠিয়ে নেয়।

ঈশাঃ চল এখন বেশি টাইম নস্ট করলে
চলবেনা পিপি আমাদের জন্য ওয়েট করছে

ইশানঃ হুম তো মিঃ আভি আমরা এখন আসি

ঈশা আর ইশান চলে যেতে গেলে আভি তাদের পথ আটকায়

ঈশাঃ কি হলো?

আভিঃ আরে তোমরা এইরকম একটা জিনিস কে নিয়ে যাবা তা কি করে হয়?

ইশানঃ মানে?

আভিঃ আরে যতই হোক কাব্য আহমেদ এর হবু বউ বলে কথা আমি কি টেস্ট না করে যেতে দিবো নাকি?

ইশানঃ ওয়াট রাবিশ দেখুন এইরকম ডিল কিন্তু আমাদের মাঝে হয়নি আপনি কাব্যের থেকে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন নিয়েছেন এখন আমাদের যেতে দিন

আভিঃ আহা দেখো কাব্যের মতো একজন সিবিয়াই অফিসার মারা গেছে এইটা কালকের মধ্যেই সারা দেশে হ্যাডলাইন হবে তাই নিজেকে বাঁচাতে তোমাদের দুজনকেই আমার ফাঁসাতে হবে

ঈশাঃ মানে?

আভিঃ মানে এইটায় তোমরা কাব্যকে মেরেছো অয়রির সাথে পারাবারিক সমস্যা থাকায় তাকে এবং তার হবু হাজবেন্ড কে মেরেছো কিন্তু অয়রি মরবেনা ও আমার হয়ে থাকবে একটা মাস্ত মাল

ইশানঃ আমরা কাব্যকে মারেনি মেরেছেন তো আপনি আমরা জাস্ট অয়রিকে নিতে এসেছি

আভিঃএইটা জাস্ট আমরা জানি বাট মিডিয়া জানবে তোমরা মেরেছো

ঈশাঃ আপনি তো আস্ত একটা গিরিন্গিবাজ এখন আমাদের ফাসাতে চাইছেন

আপনার এই প্লেন কোনোদিন সফল হবেনা
মেয়েলি কন্ঠ শুনে সবাই পিছনে ঘুরে

ঈশা ঃ পিপি এই বলে সে
তার পিপি (ফুপি)কে জড়িয়ে ধরে

আভিঃ আরে আসুন আসুন মিসেস প্রাপ্তি খান( হ্যা অচেনাটা প্রাপ্তিই রিকের বউ ?)

প্রাপ্তিঃ দেখুন আপনার সাথে আমাদের এই যুক্তি হয়নি আপনি এই অন্যায় কাজ করে নিজের দোষ ঢেকে রাখতে পারবেন?

আভিঃ আরে রাখুন আপনার ন্যায় অন্যায় আপনি নিজে নিজের পরিবারের সাথে শত্রুতা করছেন আবার আমাকে বলেন?

প্রাপ্তিঃ আমার টা আপনাকে বলতে হবেনা?

তখনি আমান ঢুকে
আমানকে দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়

আমানঃ প্রাপ্তি তুমি এখানে?

আভিঃ তুই এখানে?

আমানঃ কেন আমাকে এখানে আশা করিসনি বুঝি?আর অয়রির এই অবস্হা কেন?

কাব্য কোথায়?

আভিঃ ওকে মেরে দিয়েছি ওর লাশ আমার গার্ড ফেলে দিয়ে এসেছে ব্রিজে

আমানের যেন পায়ের নীচে মাটিটায় সরে গেছে কাব্যের মতো একজন অফিসার মারা গেছে?নাহ নাহ এইটা হতে পারে

আমানঃ তুই মিথ্যে বলছিস

আভিঃ সেইটা না হয় এদের কাছেই জিজ্ঞাসা কর

আমান জিজ্ঞাসু দৃস্টিতে বাকিদের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই মাথা নিচু করে আছে
আমানের চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে না তাকে এখন শক্ত থাকতে৷ হবে

আভিঃ এইবার তোকেও মরতে হবে কম জ্বালাসনি আমাকে

আমানঃ এতো সোজা?

আভি খেয়াল করে চারদিক থেকে ফোর্স রা তাকে ঘিরে রেখেছে
আভি তার গার্ডসদের ডেকে যাচ্ছে কিন্তু কেউ তাকে সারা দিচ্ছেনা

কীভাবে দিবে সবাইকে আমানের ফোর্সরা ঘিরে রেখেছে

আমানঃ এইবার সব টা বল কি করেছিস তোরা?

আভি চাপের মুখে সব বলে দেই
আমানের চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে যাচ্ছে

আমানঃ তোকে আমি ছাড়বে
শুভ

শুভঃ জ্বী স্যার

আমানঃ এরেস্ট হিম

আমানের কথা শেষ হওয়ার আগেই
রিমি অয়ন অনিক মেঘা মেঘলা রিক মিঃ ফারহান(কাব্যের আব্বু) আর মিসেস সুমাইয়া(কাব্যের আম্মু) সবাই চলে আসে
প্রাপ্তিকে এখানে দেখে সবাই অবাক

অয়রিকে দেখে রিমি ছুটে যায়

রিমিঃ কি হয়েছে কি আমার মেয়ের আর

সুমাইয়া ঃ আমার ছেলে ও তো এখানেই ছিলো? ও কোথায়?

আমান সব খুলে বলে

মিসেস সুমাইয়া অজ্ঞান হয়ে যায়।
সবাই স্তব্ধ
মিঃ ফারহান আভিকে মারতে মারতে বলে

তুই আমার ছেলেকে মেরেছিস তোকে আমি ছাড়বো না

সবাই কোনোরকম ফারহানকে আটকায় রিমি মিসেস সুমাইয়া কে ধরে সবার চোখে পানি চলে আসে।।

রিক গিয়ে প্রাপ্তিকে ঠাসসস করে চর মারে

রিকঃ তুমি অই বাজের লোকটার সাথে কেন হাত মিলিয়েছো তাও আমাদের বিরুদ্ধে গিয়ে ছিহ প্রাপ্তি ছিহ

প্রাপ্তিঃ বেশ করেছি

সবাই অবাক

রিকঃ মানে

প্রাপ্তিঃ আর তোমরা যা আমার সাথে করেছো আমার ভাইয়ের সাথে করেছো
আমার মা আমার এই দুই ভাইয়ের ছেলে মেয়ে( ঈশা আর ইশান কে দেখিয়ে)
ওদের সাথে কি করেছো তোমরা তার বেলায়

অয়নঃ মানে?

প্রাপ্তিঃ মানে আমি নীল খানের (রিমির বড় চাচা) মেয়ে এবং আদি খানের বোন(রিমির চাচাতো ভাই)

মেঘলাঃ ওয়াট?

প্রাপ্তিঃ মনে পড়ে? তোমাদের জন্য আমার বাবাকে জেলে যেতে হয়েছিল আমার বাবা তা সহ্য করতে পারিনি তাই হার্ট অ্যাটাক করেছে আর আমার ভাই আদি ওকে পুলিশ এনকাউন্টার করে মেরেছে

এইযে তখন ইশান খুবই ছোট
মাত্র ৯ মাস এর
আর ঈশা তখন ভাবির পেটে ছিলো
এই দুই বাচ্ছাকে তোমরা পিতাহারা করেছিলো

এই ছোট্র ইশান প্রেগনেন্ট ভাবিকে নিয়ে অসুস্হ মাকে নিয়ে আমাদের কেমন দিন গিয়েছে তা শুধু আমরাই জানি
মনে মনে প্রতিশোধের নেশা জাগ্রত করি যাদের জন্য আমার এই অবস্হা তাদের আমি ছাড়বো না তাউ রিক কে ভুলিয়ে বালিয়ে খান বাড়িড় বউ হয়েই আসি

প্রথমে কে টার্গেট করি অনিক কে মেঘার থেকে দূরে সরানোর জন্য মেঘার বিরুদ্ধে এমন নাটক সাজায় যার কারনে অনিক মেঘাকে ভুল বুঝে তারপর অভির সাহা্যে একটা ছোট্র ডিল করি

অনিকঃ ছিহ মামি আপনি এতো নীচ

মেঘাঃ আমি ভাবতেই পারছিনা

রিমিঃ ব্যাস প্রাপ্তি ব্যাস তোর বাবা আর ভাই কি করেছে তা জানিস না? তোর বাবা আমার মাকে পাইনি বলে আমার মাকে খুন করেছে তোর ভাই আমানের বোনকে
মেরেছে মিথ্যে ভালেবাসার নাটক করে
অয়নকে ফাঁসিয়েছে
আমান কে আমার বিরুদ্দে দাড় করিয়েছিল
নিজেরা নারী পাচার করে সেই মেয়েদের মেরে আমানের নামে দোষ করেছিলো
আমাকে অয়নকে আলাদা করতে চেয়েছিলো
আমান কে আর আমাকে একে অপরের বিরুদ্ধে ভুল বুঝিয়েছিলো

অয়নঃ এমনকি পুলিশ যেদিন আদিকে ধরতে যাই সেদিন রিমি কে এমন ভাবে ইঞ্জুরেড করে রিমি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে হলো এরপরেও বলবে তোমার বাবা আর ভাইয়ের সাথে ভুল কিছু হয়েছে

মেঘলাঃ আর আমরা তো তোমাদের কথা জানতাম -ই না
এতে আমাদের দোষ দাও কীভাবে?

প্রাপ্তি মাথা নিচু করে আছে

রিমিঃ আর আরেকটা জিনিস
আদি ভাইয়া মরেনি

সবাই শখ

প্রাপ্তিঃ মানে?

রিমিঃ ডক্টর

তখনি কিছু ডক্টর একজনকে নিয়ে আসে।।
ওয়েলচেয়ারে

ঈশা আর ইশান পাপা বলে দৌড়ে যায়
প্রাপ্তিও কান্না করতে করতে তার ভাইয়ের কাছে দৌড়ে যায়

অয়নঃ রিমি

রিমিঃ আমাকে ক্ষমা করো অয়ন সেদিন আদি ভাইয়া মরেনি মাথায় গুলিটা গেলেছিলো আর যার কারনে ও কোমায় চলে ঢ়ায় এখনো প্যারালাইসড
আমি কোনোভাবে এইটা জানতে পারি আর তারপরেই আদি ভাইয়ার চিকিৎসা করি
কিন্তু আদি ভাইয়া নিজের কাজে অনুতুপ্ত তাই নিজের কোনো বাঁচার ইচ্চা নেই
আমি সরি

অয়নঃ আমি তোমার অবস্হা বুঝতে পেরেছি
দেখেছো এই আমার রিমি যে ওর এতো বড় ক্ষতি করতে চাইলো তাকেই এতোবছর ধরে সুস্হ করতে চাইছে

প্রাপ্তি কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা
সেও তার কাজে অনুতুপ্ত

আভিকে ধরে নিয়ে যায়

আমানঃ প্রাপ্তি এবং ঈশা ইশান কেও আমাদের সাথে যেতে হবে

প্রাপ্তি রিকের কাছস যায় কিন্তু রিক মুখ ঘুড়িয়ে নেয়

প্রাপ্তিঃ আমি যাচ্ছি রিক জেল থেকে ফিরে এসে একদম তোমার মনের মতো হবো
কিন্তু জানিনা তারপর তুমি আমাকে মেনে নিবে কিনা

রিমি গিয়ে ঈশা আর ইশান কে জড়িয়ে ধরে

ঈশা এবং ইশানঃ আমাদেএ ক্ষমা করে দাও ফুপি

রিমিঃ যাহ একদম খাটি মানুষ হয়ে ফিরে আয়

???????
হসপিটাল,,

চারদিকে নিস্তবতা
মিসেস সুমাইয়া হসপিটালে সবার মাঝেই শোকের ছায়া

রিমি অয়নকে জড়িয়ে কান্না করছে

রিমিঃ আমি বুঝতে পারছিনা মেয়েটার জ্ঞান ফিরলে আমি অকে কীভাবে সামলাবো

আমানঃ অই আভি কি আমরা কিছুতেই ছাড়বো না ওর চরম শাস্তি হবে

অনিকঃ আমার তো বনুর জন্য চিন্তা হচ্ছে ও এইসব মানবে কীভাবে

অয়নঃ এইসময় আমাদের শক্ত হতে হবে
অয়রিকে সামলাতে হবে

তখনি ডাক্টার বলে অয়রির জ্ঞান ফিরেছে

সবাই ছুটে যায়

অয়রিঃ আমার কাব্য আমার কাব্য কোথায়?
ওই লোকটা কাব্যকে
আর কিছু বলতে পারলোনা
অয়রি চিৎকার করে উঠলো

অনিকঃ দেখ বনু

অয়রিঃ কি? কাব্য কোথায়?

বলো
।সবাই নিশ্চুপ
সবাইকে চুপ থাকতে দেখে অয়রি নিজের হাতে স্যালাইন খুলে ফেলে
সব কিছু ভাংতে শুরু করে

রিমি মেয়েকে এই অবস্হায় দেখে কান্না করে দেয়

অয়ন অয়রিকে আটকিয়ে বলে

–শান্ত হো মা কস্ট হলেও এইটাও সত্যি কাব্য আর নেই

অয়রি চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায়

চলবে কি?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে