Your Lover পার্ট – ৫+৬

0
2768

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৫+৬

সকাল ৬টা বাজে বাসে সবাই উপস্থিত আছে শুধু ইভা ছাড়া। সানভি, লামিসা বার বার ইভাকে কল করে যাচ্ছে কিন্তু কোনো খবর নেই। ফোনও রিসিভ করছে না। ৬:৩০টা বেজে গেছে। কেউ আর অপেক্ষা করতে রাজি না। বাস স্টার্ট দিয়েছে তখন ইভার আগমন। আয়ান বলে উঠে,
-যে সময় মতো কাজ করতে পারে না তারজন্য এক মিনিটও দাড়ানো যাবে না।
-হয়তো কোনো কারনে আসতে লেট হয়েছে, বাস থামান (সানভি)
-না বাস থামানো যাবে না (আয়ান)
-প্লিজ ভাইয়া এমন করবেন না বাস থামাতে বলেন (লামিসা)
-আমি যা বলছি তাই হবে নয়তো আমি তোমাদের সাথে যাবো না (আয়ান)
-দোস্ত আমার কথাটা একবার শোন (সানভি)
-তোর সব কথা কক্সবাজার গিয়ে শুনবো এখন না (আয়ান)

সবাই চুপ হয়ে গেছে। লামিসা, রাহি,ঈশিতা ওদের আনন্দ সব মাটি হয়ে গেছে, মন মরা হয়ে বসে আছে।
কালকে রাত ১২টা দিকে আয়ান ইভাকে কল করে ঘুম ভেঙ্গে দেয় তাই সকালে উঠতে লেট হয়। এদিকে ইভা রাস্তায় বসে কান্না করে এবং মনে মনে গালি দিতেছে,
“বজ্জাত লোক একটা রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে দিয়ে কক্সবাজার যাওয়া মাটি করে দিলো। যদি তোরে আমি সামনে পাই বুড়িগঙ্গা নদী নিয়ে রামছাগলের মতো গোসল করাবো। খাটাশ, গন্ডার, হাতি,ছাগল তোর সব নাম্বার ব্ল্যাকলিসটে দিবো। আমার নাম্বার চেঞ্জ করে ফেলবো তারপর দেখবো কেমন করে আমাকে কল দিস”

-বাস থামান (আয়ান)
-কেনো? কি হয়েছে?( ড্রাইভার)
-আরে আমার বাইকের চাবি খুঁজে পাচ্ছি না, বাস পিছনে ঘোরান (আয়ান)
-ঠিক আছে (ড্রাইভার )
আর কেউ কিছু না বুঝলেও সানভি ঠিক বুঝেছে কেনো বাস পিছনে যাচ্ছে।
-কি ইভাকে আনতে যাচ্ছিস
-তোকে এতো বেশি বুঝতে কে বলেছে হ্যাঁ
-আমি না বুঝলে কে বুঝবে। যাকে ভালোবাসিস তার সাথে এমন করলি কেনো?
-তুই খুব ভালো করে জানিস আমি টাইম মেইনটেইন করে চলি আর ও খুব লেজি। তাই ওকে শিক্ষা দিলাম যাতে টাইম মেইনটেইন করে চলে।
-আয়ান তোকে বোঝা খুব মুশকিল। বোনটাকে সামলে রাখিস।
-হাহাহাহা রাখবো।

ইভার ফ্রেন্ডের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক বাস পিছনে যাচ্ছে এখন তো ইভা যেতে পারবে।
-ভাই বাস কি আরো পিছনে নিতে হবে ( ড্রাইভার)
-না এখানে রাখেন (আয়ান)
আয়ান, সানভি বাস থেকে নেমে চাবি খোঁজার অভিনয় করছে। লামিসা ও বাস থেকে নেমে আয়ানকে বলে,
-ভাইয়া এই দেখেন ইভা বসে কাঁদছে, ওকে আমাদের সাথে নিয়ে চলুন (লামিসা)
-চাবি খুঁজতে এসেছি বলে তোমার ফ্রেন্ড কে নিয়ে যাচ্ছি নয়তো আয়ান চৌধুরী এক বার যা বলে তাই করে। (আয়ান)
লামিসা আর সানভি ইভার কাছে গিয়ে বলে,
-এবার চল, কেঁদে কেঁদে বন্যা বানিয়ে ফেলছিস (সানভি)
-আপনার ফ্রেন্ড আগে যদি ওকে নিয়ে যেতো তাহলে এই বন্যা তৈরি হতো না (লামিসা)
-সত্যি আমি যেতে পারবো (ইভা)
-সত্যি নাকি মিথ্যা দেখতে চাইলে ঘুমিয়ে পর তারপর সমুদ্র নিয়ে ফেলে দিয়ে দেখাবো সত্যি নাকি মিথ্যা (সানভি)
-তুই আমার ভাই না চরম শত্রু (ইভা)
-ঝগড়া না করে চল ( লামিসা)
ইভা আর লামিসা একসাথে, সানভি আর আয়ান একসাথে বসেছে। আয়ান ব্ল্যাক কালার সানগ্লাস পরে আড় চোখে ইভাকে দেখছে। কেউ বুঝতে পারছে না আসলে আয়ান কাকে দেখছে৷
আয়ানের খুব ইচ্ছে করছে ইভার চুলগুলো আলতো ভাবে ছুঁতে, পিক তুলতে।
সকালে নাস্তা করার জন্য বাস একটা হোটেলে সামনে থামালো। সবাই নেমে যাচ্ছে কিন্তু ইভা কান্না করেছে বলে ঘুমে মগ্ন আছে “কান্নার পর ঘুম ভালো হয় ”
লামিসা খেয়ে ইভার জন্য খাবার নিয়ে আসবে তাই নেমে গেলো৷
বাস পুরো ফাঁকা এই সুযোগে আয়ানের ইচ্ছে পূরণ করলো । আয়ানের কাঁধে ইভার মাথা রেখে কয়েকটা পিক তুললো আর এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করে দিয়ে নিজের সিটে এসে বসলো। সানভি আয়ানের জন্য খাবার নিয়ে এসে বললো,
-নে খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর।
-খুব ক্ষিদে পয়েছে, ভালোই করেছিস খাবার এনে।
-তুই না গিয়ে আমার অনেক বড় উপকার করলি।
-আমি ক্ষুদার জ্বালায় মরি আর উনার উপকার হলো হায় আল্লাহ গো।
-হ্যাঁ তুই ছাড়া আমার কে আছে বল।
-কেন এখন তো লামিসা আছে।
-হুম কিন্তু একটা কথা রাইয়ানের উদ্দেশ্য আমার ভালো লাগছে না, তুই দেখেছিস?
– হুম খেয়াল করেছি আমাদের ভালো করে ওদের নজরে রাখতে হবে।
-হুম

লামিসা ইভাকে খাবার এনে দিয়েছে। বাসের মধ্যে গান বাজে যে যার মতো মজা করে৷
কক্সবাজার পৌঁছে হোটেলের রুম বুকিং করেছে তাতে ইভা, লামিসা, ঈশিতা, রাহি একটা রুমে থাকবে এটা আগে থেকে ঠিক করেছিলো। সবাই ফ্রেস হয়ে খেয়ে নিয়ে ঘুরতে বেড় হলো।
আয়ান ইভাকে চোখে চোখে রাখছে। কতোক্ষন রাখতে পারবে বুঝতেছে না। রাইয়ান ইভার পিছু নিয়েছে কিন্তু ইভা এভয়েড করে।
কিছুক্ষন পর ইভাকে একা পেয়ে হাত টান দিয়ে একেবারে আয়ানের বুকের সাথে মিশিয়ে বলে,
-তুমি এতো বোকা কেনো? সানভির সাথে আমাকে সব সময় দেখো তাও আমার চোখের ভাষা বুঝতে পারো না?
-কি করছেন, আমাকে ছাড়ুন। কেউ দেখে ফেলবে।
-কেউ দেখবে না।
-প্লিজ ছাড়ুন
-আগে বলো আমাকে বিয়ে করবে?
-চিনি না জানি না আপনাকে কেনো বিয়ে করতে যাবো হ্যাঁ?
-তাও ঠিক তুমি তো আমাকে চিনো না তবে চলো আমাকে চিনতে।
ইভাকে ছেড়ে দিয়ে দূরের একটা জায়গায় বসে আয়ান বললো,
-দেখো তো এই ফোন নাম্বারটা চিনো
-হুম চিনি
-কে?
-আমার লাভার
-তাহলে কল দেও
ইভা কল দিতে আয়ানের ফোন বেজে উঠে।
-তাহলে বুঝতে পেরেছো এতোদিন তোমার সাথে আমি কথা বলছি।

-তোমাকে হিজাব গিফট করা, রেস্টুরেন্টের বিল না দিতে দেওয়া, তোমাকে ফলো করা, সাত গোলাপ দেওয়া এতো সব যা হয়েছে সব আমি করেছি ইভা। তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি।কিন্তু আমার সাথে প্রেম করতে বলবো না যদি তোমার মনে হয় আমি তোমাকে ভালোবাসতে পেরেছি তোমার মনে আমার জন্য জায়গা করতে পেরেছি তাহলে তুমি আমাকে ভালোবেসো।

-ইভা কিছু বলো?
-কি বলবো?
-ভালোবাসতে পারবে কি না?
-যদি বলি,
-কি
-রাতে সমুদ্রের পাড়ে আসবেন, আমি এখন যাই।
-আচ্ছা চলো তোমাকে দিয়ে আসি
-আমি ছোট বাচ্চা নাকি যে আমাকে দিয়ে আসতে হবে?
-হ্যাঁ। তোমার কান্ডকারখানা দেখে তো তাই মনে হয়।
-হুহ

রাইয়ান দূর থেকে ইভা আয়ানকে দেখছে। রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। মনে মনে বলছে,” ইভা তোমাকে দেখে নিবো আমাকে এভয়েড করে আয়ানের সাথে সময় কাটানোর শখ মিটিয়ে দিবো। শুধু একবার তোমাকে একা পাই “।

বিকেলে ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যা বেলা সবাই আড্ডার আসরে বসেছে। আয়ান ফোনে গেম খেলছে আর ইভাকে দেখছে। ইভা মনে মনে বলছে ” কি নির্লজ্জ রে বাবা, মেয়েদের দিকে ডেপ ডেপ করে তাকিয়ে থাকে। এমন একটা ভাব করছে যেনো কিছু বুঝে না। একটু শান্তি মতো আড্ডাও দিতে পারছি না। গেম তো রুমে গিয়েও খেলতে পারে, এখানে বসে থাকার কি দরকার! ”
টুংটাং মেসেজের সাউন্ডে ইভা ফোন হাতে নেয় ” এভাবে আড় চোখে আমাকে দেখো না প্লিজ! আমি তোমার লুকোচুরি খেলার প্রেমে পরে যাচ্ছি ”
মেসেজ সিন করে রেখে দিলো। এর জবাব পরে দিবো হুহ।
আড্ডা শেষ সবাই যে যার মতো করে সমুদ্রের পাড়ে হাটতে বেড়িয়ে।
আয়ান সানভিকে বলে দিয়েছে ইভা যেনো ওর সাথে দেখা করতে যায়।
ইভা ওর কথা মতো দেখা করতে যায়।

চলবে,
#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৬

-রাতের বেলা অচেনা জায়গা একটা ছেলের সাথে সমুদ্রের পাড়ে হাঁটতে বের হয়েছো ভয় করে না?
– আপনি বাঘ না ভাল্লুক যে ভয় করবে? আর ভয় মানুষ তাকেই করে যাকে বিশ্বাস করতে পারে না।
-আমাকে কেনো বিশ্বাস করো?
-আপনার মধ্যে খারাপ কোনো কিছু দেখি নি।
-এখন দেখো নি পরে তো দেখতে পারো!
-তখন ভালো করার দায়িত্ব নিবো।
-যদি ভালো না হই?
-মেরে নাক ভোতা করে দিবো তাহলে অন্য মেয়ে আপনার দিকে তাকাবে না, আমার কথাই শুনতে হবে।
-তোমার সাহস তো কম না আয়ান চৌধুরীকে হুমকি দেও।
-শুধু হুমকি দিয়েছি কাজটা এখনো করি নি
-আচ্ছা শুনো তুমি একটু সাবধানে থেকো, একা একা কোথাও যাবে না।
-কেনো কি হয়েছে যে আমাকে সাবধানে থাকার কথা বলছেন?.
-অনেক কিছু আছে শুধু বলবো রাইয়ানের থেকে দূরে থেকো।
-উনি বড্ড খারাপ লোক। খুব বাজে ইঙ্গিত করে।
-ওর এসব বেশি দিন চলবে না, সময় বুঝে ও ওর কাজের ফল পেয়ে যাবে৷
-আপনি মারপিট করেন নাকি?
– না মাঝে মাঝে হাতের ব্যায়াম করি।
-সেটা আবার কেমন?
-কখনোও খারাপ কাজ করে দেখো তারপর দেখবে আমার ব্যায়াম কেমন.
-আপনি কেমন জানি অদ্ভুত?
-ভূত তো না
-রাতের বেলা ভূত নিয়ে কথা বলবেন না
-কেনো ভয় পাও নাকি?
-হুম অনেক
-ওই তোমার পায়ের উপর কাঁকড়া দেখো
-বাঁচাও বাঁচাও কে কোথায় আছো আমাকে বাঁচাও। কাঁকড়ায় আমাকে খেয়ে ফেললো।
ইভা চিল্লাপাল্লা করতে করতে আয়ানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো
-কি করছো তুমি? ছাড়ো আমাকে।
-না না আগে কাকড়ার হাত থেকে আমাকে বাঁচান।
-হাহাহাহাহাহাহ্ কাঁকড়া নেই চলে গেছে।
-সত্যি বলছেন?
-হুম, এবার ছাড়ো।
ইভা আয়ানকে ছেড়ে দিলো৷
-আমি এখন যাই,
পিছন থেকে আয়ান ইভার হাত টেনে বললো,
-এতো লজ্জা একটু আগে কোথায় ছিলো।
-না মানে ভয় পেয়েছিলাম তাই আর কি,,,
-আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না, এবার আমার দিকে তাকাও।
-না আমার লজ্জা লাগে।
-তোমার লজ্জা রাঙা মুখটা দেখবো বলে তো তাকাতে বলছি৷
-নির্লজ্জ একটা।
আয়ান ইভার গালে দু হাত দিয়ে বলে,
-আমি সারাজীবন তোমার নির্লজ্জ হয়ে থাকতে চাই, রাখবে আমাকে?
– না
-কেনো? আমি কি খুব খারাপ?
-জানি না।
-প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না
-ফিরিয়ে তো দেই নি।
-তার মানে তুমি আমাকে চাও। আই লাভ উই এ লোট সোনা পাখি
-কি করছেন কি, পাগল হয়ে গেছেন।
-তোমার প্রেমে পাগল হয়ে গেছি
-ধুর কি যে বলেন।
-তুমি বলবে কোনো আপনি না।
-তা পরে দেখা যাবে।
-সবার সামনে আমার সাথে বেশি কথা বলতে আসবে না, কিছু দরকার হলে মেসেজ করবে বুঝছো আর তোমার ওয়াটসএ্যাপ আছে?
– না কেনো?
-এতো কেনো তোমার জানতে হবে না, তোমার ফোন দেও একাউন্ট খুলে দেই।
-হুম।
আয়ান ইভাকে ওয়াটস এ্যাপ একাউন্ট খুলে দেয়।
– চলো তোমাকে রুমে পৌঁছে দেই আর হ্যাঁ ফোনে লক দিয়ে রাখবে
-আচ্ছা।

ওরা রুমের কাছে আসতে রাইয়ানের সাথে দেখা,
-কি রে ইভার সাথে তো ভালোই টাংকি মারছিস (রাইয়ান)
-আরে না, পিচ্চি মেয়ে একা ওই দিকে ছিলো তাই রুমে এগিয়ে দিয়ে গেলাম (আয়ান)
-ইভা আমার সাথে হাঁটতে বের হবে? (রাইয়ান)
-না আমি রুমে গেলাম (ইভা)
-না চলো, আমাকে একটু টাইম দেও (বলে ইভার হাত টান দিলো)
-হাত ছাড়ুন (ইভা)
-না ছাড়বো না, আয়ান তুই একটু ওকে বল আমার সাথে যেতে (রাইয়ান)
-রাইয়ান ওর হাত ছেড়ে দে (আয়ান)
-না ছাড়বো না। ও আমাকে অনেক এভয়েড করেছে এর ফল দিবো (রাইয়ান)
ঠাসসসস্ (ইভা রাইয়ানের গালে চড় দিলো)
-এই থাপ্পড়টা তোকে অনেক আগে দেওয়া উচিৎ ছিলো, যেদিন তুই আমাকে কলেজ ছুটির পর ভিরের মধ্যে আমার কোমড়ে স্পর্শ করেছিলি কিন্তু সে দিন আমি বুঝতে পারি নি আসলে কে আমাকে স্পর্শ করেছে, এখন বুঝতে পেরেছি তুই ছাড়া আর কেউ করে নি। ছিঃ ছিঃ এতো খারাপ (ইভা)
-ইভা তুমি কাজটা ঠিক করলে না, এই রাইয়ানের সাথে তোমার সংসার করতে হবে মনে রেখো (রাইয়ান)

ওদের চেচামেচিতে সবাই এক জায়গায় হয়েছে। আয়ানের মাথায় রক্ত উঠে গেছে, চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে। ইভাকে এতো নজরে রাখে তাও এতো খারাপ কাজ হয়ে গেছে বুঝতে পারে নি। সানভি আয়ানের হাত ধরে রাখে যাতে সবার সামনে কোনো সিনক্রিয়েট না হয়। সানভির ও খুব রাগ হচ্ছে তার বোনের সাথে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে কিন্তু এখনই এর জবাব দেওয়ার সময় আসে নি।

-ইভা তুই রুমে যা আর সবাই এখান থেকে যাও (সানভি)
সবাই সানভির কথা মতো চলে গেলো।

-দোস্ত এসব কি হলো বল, আমার খুব খারাপ লাগতে আছে। এতো কিছু করেও আমি রাইয়ানের কাছ থেকে ইভাকে বাঁচাতে পারি নি (আয়ান)
-এখনও কিছু হয় নি, রাইয়ান যে কতো বড় ভুল করেছে তা বুঝতে পারবে (সানভি)
-রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে, সবার আনন্দ মাটি করতে চাই না নয়তো রাইয়ানকে দেখিয়ে দিতাম আয়ান কি করতে পারে (আয়ান)
-কলেজে সেদিন ইভাকে দেখে কয়টা ছেলে সিস বাজিয়েছে বলে তুই যে হারে মার মেরেছিলি সেটা জেনেও ও এমন কাজ করতে পারে ভাবতে পারি না (সানভি)
-শোন আমার সাথে ইভার রিলেশনের কথা কাউকে বলা যাবে না যা করতে হবে আমাদের কয়জনের মধ্যে সব কথা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে (আয়ান)
-তুই কি বড় কোনো প্ল্যান করতে আছিস(সানভি)
-সময় হলে তোকে বলবো (আয়ান)

ইভা রুমে গিয়ে টপ টপ করে চোখের পানি ফেলতে আছে সবাই ওকে বোঝাচ্ছে যে আয়ান রাইয়ানকে শাস্তি দিবে তাও কান্না থামছে না।

-তুই এতো বলদ কেন? আয়ান ভাইয়া তোর পাশে আছে তাও এমন করলে কি চলে বল(ঈশিতা)
-এরকম খারাপ কাজ হতে থাকলে একটা সময় আয়ান আমাকে ভুল বুঝে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে (ইভা)
-পাগলী একটা, তুই জানিস আয়ান ভাইয়া তোকে কতো ভালোবাসে। (লামিসা)
-দু দিন আগে তোকে একটা,বার দেখার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তোর বাসার সামনে দাড়িয়ে ছিলো (রাহি)
-আবার কয়েকটা ছেলেকে মেরেছেও (লামিসা)
-এতো যদি ভালোবাসে তাহলে রাইয়ানকে আজকে কেনো কিছু বললো না(ইভা)
-হয়তো কোনো কারন আছে, তবে তুই চিন্তা করিস না ওর কাজের ফল ও পেয়ে যাবে (রাহি)
-হ্যাঁ, তুই এবার তোর কান্না বন্ধ কর নয়তো তোকে মেরে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিবো (ঈশিতা)
-তোরা সবাই আমার শত্রু (ইভা)
-একদম চুপ কর, এখন খেতে যাবো (লামিসা)

রাতের খাবার খেয়ে সবাই কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ঘুমাতে গেলো। রাইয়ানের দেখা আর মেলে নি।

সকালে সবাই ঘুরতে বের হয়েছে। যে যার মতো পিক তুলছে, ফেসবুকে গিয়ে লাইভে এসেছে, ভিডিও কলে ব্যস্ত।আয়ান বসে বসে গেম খেলতে ব্যস্ত তবে ইভার কাছে আছে। কিছুক্ষন পর সানভি এসে বলে,
-তুই এখানে তাহলে ইভা কার সাথে কোথায় গেছে?
-মানে কি আমি তো ওকে ২মিনিট আগেও দেখছি।
-লামিসাকে জিজ্ঞাসা করলাম ও বললো এখানে ছিলো পিক তুলতে ছিলো।
-রাইয়ান কে কি কোথাও দেখছিস?
-না
-উফফফ্, অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে।
-আর সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না চল।।

লামিসা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলে,
-ভাইয়া এই এই দেখেন
-কি দেখবো কি (আয়ান)
-লামিসা শান্ত হয়ে বলো কি হয়েছে (সানভি)
-ইভা সাঁতার জানে না ও পানিতে ডুবে যাচ্ছে (লামিসা)
-সানভি আমার সাথে আয় (আয়ান)

আয়ান, সানভি কেউ ভালো করে সাঁতার জানে না কিন্তু ইভার জন্য পানিতে দুজনে নেমে গেলো।
আয়ান ইভাকে বাঁচাতে গিয়ে আয়ান ডুবে যাচ্ছে। আশেপাশের লোকজন ওদের উদ্ধার করে পড়ে নিয়ে আসলো।
আয়ান, সানভি ঠিক আছে কিন্তু ইভা ঠিক নেই। ইভার চোখে মুখে আয়ান পানি ছিটাচ্ছে। হাতের তালু ও পায়ের তলা লামিসা, রাহি,, ঈশিতা মালিশ করছে।

চলবে,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে