#the_unlimited_love❤️
#part_12
#writer_nusrat
আহিল আদিলের থেকে একটু দুরে গিয়ে রেহান কে ফোন করলো৷রিং হওয়ার কিছুক্ষণ পর রেহান ফোন রিসিভ করলো৷
“হ্যালো রেহান আমি আহিল বলছি৷ তুই কী আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবি??
“হঠাৎ দেখা করতে বললি যে৷”
“এমনি কতদিন ধরে তোকে দেখি না তো তাই একটু দেখতে ইচ্ছে করছে আরকি৷ থাক তুই যদি আসতে না চাস তো আসিস না৷ “”
“আমি তোকে কখন বললাম যে আমি আসবোনা৷ কোথায় আসতে হবে বল৷ আমি চলে আসবো৷”
“আচ্ছা ঠিকাছে কফি শপে চলে আয় তুই৷ আমি ওয়েট করবো৷”
“ওকে ডান”
আহিল রেহানের সাথে কথা বলে আদিলের দিকে তাকিয়ে বললো
“রেডি হয়ে নাও ফাস্ট৷ রেহান দেখা করতে রাজি হয়েছে৷ আর সব সত্য শুনার জন্য প্রস্তুত আছো তো”?? কথাটা বলে আহিল চলে গেলো৷
☕☕☕☕
কফি শপে বসে আছে আদিল আর আহিল৷ আর অপেক্ষায় আছে কখন রেহান আসবে৷ প্রায় ১৫ মিনিট পর রেহানের দর্শন মিললো৷ রেহান টেবিলে এসে বসতেই আদিলকে দেখে চমকে গেলো৷ তারপর কাপা কাপা গলায় বললো,,,,
“আপনি এখানে কী করছেন”??
“আরে উনি তো আমার ভাইয়া আদিল৷ তুই চিনিস নাকি??
রেহান কিছু না বলে এক ধ্যানে টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে৷
“আরুহি কেমন আছে”??
আদিলের এমন প্রশ্নে আহিল আর রেহান দু’জনই চমকে উঠলো৷
“আরুহি কেমন আছে সেটা আমি কী করে জানবো”৷
“ওতো তোমার গার্লফ্রেন্ড৷ আর বাড়ি ছেড়ে যখন চলে গেছে তখন নিশ্চয় তোমার কাছেই আছে”৷
“এসব কী বলছেন আপনি ভাইয়া??আরুহি আমার কাছে নেই আর আপনি ওকে বাড়ি থেকেই বা কেনো বেড় করে দিয়েছেন??
“কারণ আমার বাড়িতে কোনো ধোঁকা বাজের জায়গা নেই৷ ”
রেহান আদিলের দিক থেকে চোখ সরিয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে৷ আহিল একটু গলা ঝেরে বললো,,
“ভাইয়া আমায় সব বলেছে রেহান৷ আই ডোন্ট নো তুই কেনো এসব করছিস৷ কার কথায়ই বা করছিস?? তুই তো এমন না তাহলে?? দেখ তোর এমন মিথ্যা কথা আর মিথ্যা প্রমানে ওরা আলাদা হয়ে গেছে৷ এখন যদি ওদের ডিভোর্স না চাস তো বলে ফেল প্লিজ যে এসব কার কথায় করছিস”??
“তুই এতো শিওর কী করে যে আমি সব মিথ্যা বলেছি আর কারও কথায় করছি??
“বিকজ আই ট্রাস্ট ইউ৷ বন্ধু আমি তোর তাই সব জানি আমি৷তুই আর রুহি বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড নস৷ ইভেন তোরা একজন আরেকজনকে চিনিস পর্যন্ত না৷ আমি তোকে যেমন বিশ্বাস করি তেমনি রুহিকেও বিশ্বাস করি৷ তাই এখন সত্যি কথাটা বলে দে প্লিজ কার কথায় এমন করছিস??
রেহান তবুও কিচ্ছু বলছেনা আদিল শুধু বসে বসে নিরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে৷
“দেখ রেহান তুই যদি না বলিস তো আমি অন্যপথ বেচে নেবো৷”
“অন্যপথ মানে??(ভ্রু কুচকে)
আহিল একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে তার ফোন বেড় করে রেহানকে তার আর সোহানির ক্লোজ ফটোগুলো দেখালো৷ রেহান ছবিগুলো দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷
“একি এটাতো সেদিনের ফটোগুলো যেদিন আরুহি গিয়ে আমাকে আর সোহানিকে একসাথে দেখে নিয়েছিলো৷,, কথাটা বলে রেহান আবার মাথা নিচু করে নিলো৷
রেহানের কথা শুনে আদিল আর আহিল দুজনেই ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে রেহানের দিকে৷
“তারমানে এই মেমোরিটা আরুহির ছিলো৷ আর ও আমায় সেদিন এই ফটোগুলোই দেখাতে চেয়েছিলো বাট আমি তাকে বিশ্বাস করিনি৷”
আদিলের কথা শুনে আহিল একবার রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার রেহানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“দেখ ভাই আস্তে আস্তে সব ক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে৷ তাই তুইও আর কিউরিওসিটি না বাড়িয়ে বলে ফেল প্লিজ”৷
“ওকে ফাইন বলছি আমি সব৷”
রেহান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,,,
“সেদিন আরুহি আমার সাথে মিট বা ডেট করতে ক্লাবে যায়নি৷ ওতো আমায় চিনতো পর্যন্ত না৷ তারপর রেহান” আদিল আর আহিলকে এ টু জেট খুলে বললো৷
“তা এসব কে করাচ্ছে এটা তে বললি না৷”
“সোহানি করিয়েছে৷”
“কীহহহ!!!! সোহানি তোমায় এসব করতে বলেছে বাট হুয়াই???”
“যাতে আপনি আর আরুহি আলাদা হয়ে যান সেই জন্যে৷”
“সোহানি তোকে বললো আর তুই রাজিও হয়ে গেলি, হুয়াই ব্রো???
“আমি কী এমনি এমনি রাজী হইসি নাকি ও আমায় ব্ল্যাকমেইল করেছে এসব করার জন্য৷”
“কী ধরনের ব্ল্যাকমেইল?”?
“আসলে সোহানির সাথে আমার ২ বছরের সম্পর্ক৷ আর অনেক বার ওই আমি ওর সাথে ফিজিক্যাল রিলেশনে গিয়েছিলাম৷ আমি যাইনি ও নিজেই আমায় জোর করতো৷ আর ওই মুহুর্তের ছবি দেখিয়েই ও আমায় ব্ল্যাকমেইল করতো৷সেদিন ট্রায়াল রুমে আমিই আরুহিকে জরিয়ে ধরেছিলাম আর সোহানি ছবি তুলেছিলো৷ আমি এমন করতে চাইনি৷ আমি জানি আরুহির সাথে আমি যা করেছি সেটা অন্যায় করেছি, ক্ষমার অযোগ্য আমি৷ তবুও আরুহির কাছে একদিন আমি ক্ষমা চেয়ে নিবো৷ আর অন্যায় কিন্তু আমি একা করিনি৷ আদিল ভাইয়াও অন্যায় করেছে৷ উনার এভাবে আরুহিকে বেড় করে দেওয়া একদম উচিৎ হয়নি৷ আরুহির কথাও শুনা উচিৎ ছিলো উনার৷ আরুহি মেয়েটা সত্যি খুব ভালো৷ আর খুব ভালোবাসে আদিল ভাইয়াকে,, সেদিনের কথার দ্বারাই বুঝেছিলাম আমি৷আমি তো সেদিন ভাইয়াকে এটাও বলেছিলাম যে আমরা সবসময় যা দেখি তা সত্য হয়না৷ তাই যাই করুননা কেনো ভালো করে চিন্তা ভাবনা করে যেন করেন৷যাইহোক আমি এবার যাই৷ ভালো থেকো””৷,,,কথাটা বলে চলে গেলো রেহান৷
আদিল এখনো শক্ত হয়ে বসে আছে৷কী মনে হতেই কফি শপ ছেড়ে বেড়িয়ে গেলো সে৷তারপর একটা লেকের পাড়ে গিয়ে সোহানিকে ফোন করলো৷ কিছুক্ষণ পরেই সোহানি চলে আসলো৷ সোহানিকে দেখেই আদিলের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে রাগে৷তবুও রাগ প্রকাশ না করেই বললো,,,
“শুনো সোহানি আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই”??
“হ্যা বলো বেবি কী বলবে??
“আমি আরুহিকে আমার বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিয়েছি৷ ও একটা ধোঁকাবাজ৷ আর তুমি তো জানো ধোঁকাবাজকে আমি একদম লাইক করিনা৷ তাই আমি এখন তোমাকে বিয়ে করবো৷ তুমি কী আমায় বিয়ে করবে”???
“কী বলছো তুমি?? তোমাকে বিয়ে না করার কী আছে৷ তোমাকে বিয়ে করার জন্যইতো আমি এত্তো কিছু করলাম৷ এত্তো প্লেন করলাম৷ নাও আই এম সাকসেস”৷
সোহানির কথা শুনে আদিল আর রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো না কষিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিলো৷
“তুই কী মনে করেছিস??তুই এতো কিছু করবি তারপরও আমি তোকে বিয়ে করবো৷ সেই ভুল আমি করবো না৷ খুব ভালো করেছি আমি আরুহিকে বিয়ে করেছি৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাকেও তোর জন্য হারাতে হয়েছে৷ যে মেয়েটা ফুলের মতো নিষ্পাপ সে মেয়েটিকে আমি চরিত্রহীন বলেছি৷ আর যে আসল চরিত্রহীন তাকে আমি নিষ্পাপ ভেবে এসেছি৷ তোর জন্য শুধু মাত্র তোর জন্য আরুহিকে ভুল বুঝে আমি বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছি”(রেগে চিৎকার করে)
“আরে বাহ্ এতো ভালোবাসা৷ যাক তুমি আমায় বিয়ে করো বা নাই করো আমি একটা খুব ভালো কাজ করেছি তোমাকে আর আরুহিকে আলাদা করে দিয়েছি৷”
সোহানির কথা শুনে আদিল আরেকটা চড় মেরে দিলো তার গালে৷
“তুই কী মনে করেছিস আমার সর্বনাশ করে তুই পার পেয়ে যাবি??? নাহ৷ পুলিশে দিবো আমি তোকে৷,,,
কথাটা বলে রেগে লেক থেকে চলে গেলো আদিল৷
🛤️🛤️🛤️🛤️🛤️🛤
মানুষের হৈচৈ এ ঘুম ভেঙে গেলো আমার তাকিয়ে দেখলাম সব যাত্রীরা নেমে যাচ্ছে তারমানে কি চলে এসেছি নাকি৷একজনকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম ২টা বাজে৷ হায় আল্লাহ এতো সময় ঘুমিয়ে ছিলাম৷ আমিও নেমে পরলাম ট্রেন থেকে৷মাথাটা খুব ব্যথা করছে৷ চারিদিকে তাকিয়ে রিংকিকে খুজতে তাকলাম আমি৷ওকে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা৷
আমাকে দেখে কোথায় থেকে জানি রিংকি দৌরে এলো৷
“তুই এখন এলি?? আমি কতো সময় ধরে অপেক্ষা করছি৷”
আমি কিছু বলতে পারছিনা৷অনেক খিদে পেয়েছে আমার সেই সকাল ৬টায় ১টা রুটি কোনোরকমে খেয়েছিলাম৷ প্রচুর দুর্বল লাগছে৷ কথাও যেনো মুখ থেকে বের হচ্ছেনা৷
“একি রে কী হয়েছে তোর৷ শরীর দুর্বল নাকি???
“তুই কী আমাকে তোর সাথে নিয়ে যাবি নাকি চলে যাবো আমি৷???
“এই না না চল আমার সঙ্গে৷”
চলবে,,,,,,,,