#The_unlimited_love💖
#Season_2
#Part_9
#Writer_Nusrat
রকির কথা অনুযায়ী আমি শাড়ি আর কিছু অর্নামেন্টস পরে নিলাম৷ পরে যদি রেগে আবার কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে তখন৷ না বাবা রিস্ক নেওয়া যাবেনা৷ আপাতত রকি যা বলছে সেটা শুনাই ব্যাটার৷প্রচুর খিদে পেয়েছে আমার৷ দিন নাকি রাত সেটাও বুঝতে পারছিনা৷ রুম এমনভাবে অন্ধকার হয়ে আছে৷ এতোটা পাষাণ মানুষ কী করে হয় সেটাইতো বুঝতে পারছিনা আমি৷ এতক্ষণ হয়ে গেলো তারপরও একবার এসে জিজ্ঞেস করলো না আমার খিদে পেয়েছে কী না৷ যদি সত্যি রকি আমায় ভালোবাসতো তাহলে আমার অবস্থা বুঝার অন্তত চেষ্টা করতো৷ ও কি সত্যি আমায় ভালোবাসে নাকি কোনো রিভেঞ্জ নিচ্ছে আমার উপর এখান থেকে যে পালাবো সেই সুযোগটাও নেই৷ কোথায় বন্দী করে রেখেছে কে জানে৷ আমি আদৌ ঢাকায় আছি তো৷রকি যদি আমায় বিয়ে করে ফেলে তখন কী করবো আমি৷ এখান থেকেতো পালাতেও পারবোনা দরজা জানালা সব বন্ধ৷ আজ খুব আদনান ভাইয়ার কথা মনে পরছে৷ ভাইয়া কী জানে আমার যে বিয়ে হতে যাচ্ছে৷ ভাইয়া কী আটকাতে আসবেনা৷
♣️
রকি এখনো সামান্তার কাছে যায়নি৷ বাজারে আছে এখনো৷ কী যেনো খোঁজাখুঁজি করছে৷ কী মনে হতেই কাকে যেনো ফোন করলো৷
হ্যালো রিয়াদ ওদিকের কী খবর৷
.
ভাই ওদিকের খবর মানে কোনদিকের খবর??
.
আদনানের কথা বলছি আমি৷ আদনান এখন কী করছে?? কিছু জানো তুমি?
.
আদনান খান তো আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে চলে গেছে৷ ৭,৮ঘন্টার মতো হবে৷
.
হোয়াট?? তুমি এখন জানাচ্ছো আমাকে৷ যখন আমেরিকা থেকে রওনা দিয়েছিলো তখন কেনো বলোনি৷ বলো কেন বলোনি?কোথায় ছিলে তুমি ড্যাম ইট৷ তোমাকে আমি আমেরিকায় কী জন্যে পাঠিয়েছিলাম৷ তুমিও চলে এসো৷ তারপর তোমাকে মজা দেখাচ্ছি৷ (রেগে)
♣️
আদনান তার বাংলোতে বসে জিসানের সাথে কথা বলছে৷ তার এই বাংলোর খবর জিসান ছাড়া আর কেও জানেনা৷ ইভেন ওর ফ্যামিলির কেউ ও না৷ লুকিয়ে এখানে কাজ করে তারা৷ যারা অন্যায় করে তাদের ধরে এখানে এনে শাস্তি দেয়৷ তবে মার্ডার করেনা৷ কাউকে মুখও দেখায়না৷
জিসান জানার চেষ্টা করেছিস রকি এখনা কোথায় আছে৷
.
হ্যাঁ রকির নাম্বার খুব কষ্ট করে কালেক্ট করেছিলাম আমি৷এখন ওর নাম্বার ট্রাক করছি দেখি লোকেশন কোথায় দেখায়৷
একি ভাই ওর লোকেশন তো উত্তরার দিকে ইনডিকেট করছে৷ তার মানে ও উত্তরায় আছে৷ ভাই আমাদের এখুনি যেতে হবে৷
.
হুম চল ও কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলার আগেই আমাদের ঠিক সময়ে পৌঁছাতে হবে৷
♣️
আদনান দেশে চলে এসেছে মানে ও কোনো না কোনো কিছু করবেই৷ হাত পা গুটিয়ে একদম বসে থাকবেনা৷ ও যদি কোনো উল্টা পাল্টা করে তাহলে আমিও সামান্তার ভিডিও ভাইরাল করে দিবো৷ বাট সব ভিডিও তো আমার ল্যাপটপে আছে৷ এখন আবার ল্যাপটপ আনতে হবে৷
রকি ওর বাড়িতে এসে ল্যাপটপ দেখছে,বাট ভিডিওর কোনো চিহ্নই নেই৷ সব ফাইল খালি দেখাচ্ছে৷
আশ্চর্য আমিতো দুদিন আগেও দেখলাম সব ভিডিও ঠিকঠাক ভাবেই আছে তাহলে আজ কীভাবে ভ্যানিশ হয়ে গেলো৷ এটাই যে আমার এক মাত্র হাতিয়ার ছিলো বাসায়তো মা ছাড়া আর কেউ নেই, তাহলে কী মা আমার ল্যাপটপে হাত দিয়েছে৷ না না মা আমার কোনো জিনিসেই হাত দেয়না আর ল্যাপটপে তো না ওই৷ তবুও একবার জিজ্ঞেস করি,
“মা তুমি কি আমার ল্যাপটপে ধরেছিলে৷?
.
না আমি কেনো তোর ল্যাপটপে ধরবো?তুই না একটা ম্যাকানিককে পাঠিয়েছিলিস তোর ল্যাপটপ ঠিক করার জন্য সে ওইতো ধরেছে৷আর কেউ ধরেনি৷
.
রকি নিজের মাথার চুল টেনে বললো,,
মা এটা তুমি কী করলে আমি কোনো ম্যাকানিককে পাঠাইনি৷ তুমি তো আমাকে একবার জিজ্ঞেস করতে পারতে আমি কোনো ম্যাকানিককে পাঠিয়েছি কী না৷ কী করলে এটা তুমি মা৷
কথাটা বলে রকি চলে গেলো৷
আদনান সামান্তার কাছে পৌঁছানোর আগেই সামান্তাকে সরিয়ে ফেলতে হবে৷
♣️
রকি সামান্তার রুমে ঢুকে দেখলো ও সেজেগুজে ফ্লোরে লেপ্টে মাথা নিচু করে বসে আছে৷
“সামান্তা উঠো আমাদের চলে যেতে হবে৷
.
রকির কথায় চোখ তুলে তাকালাম আমি৷
আমি কোথায়ও যাবোনা৷ আগে আমায় খাবার দেন তারপর আপনি কি বলছেন সেটা ভেবে দেখবো৷ আপাতত আপনার কথা শুনার আমার কোনো মুড নাই৷ খুব খিদে পেয়েছে আমার৷ আপনি আমায় ইট্টু খাবারও দেন নাই৷ পানি পর্যন্ত দেন নাই (ঠোঁট উল্টে)
.
আমি যা বলেছি সেটাই হবে৷ তুমি যাবে আমার সাথে আর এক্ষুনি৷ তুমি কী মনে করেছো আমি তোমায় আদর করার জন্য বন্দী করেছি৷ মোঠেও না৷
কথাটা বলে রকি আমায় টেনে দাঁড় করালো৷ দরজা দিয়ে বেড় হতেই,,
‘আরেহ্ বাহ, আমাদের ছাড়াই শুভ কাজ সম্পন্ন করবে নাকি মিঃ রকি৷
আদনান ভাইয়ার কন্ঠ শুনে আমি আর রকি দু’জনই চমকে গেলাম৷ ভাইয়া দুই হাত পেকেটে গুজে দাঁড়িয়ে আছে৷ভাইয়াতো ইউএসএ ছিলো তাহলে বিডিতে কখন এলো৷ আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে ভাইয়া আবারো বলে উঠলেন,,
“আরে তোমরা দুজন স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেনো৷ শুভ কাজে দেরি করতে নেই৷ চলো চলো বিয়ের আয়োজন শুরু করা যাক৷
ভাইয়ার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি৷ ভাইয়া এসব কী বলছে৷ ভাইয়া আমায় অন্য কারো সঙ্গে দেখলে এটা মেনে নিতে পারবে?দুই ফোটা চোখের জল ছেড়ে দিলাম আমি৷আমাকে পরপুরুষের সাথে দেখেও কিছু বলছেনা উল্টো আরও বিয়ের আয়োজন শুরুর করার কথা বলছে৷যেনো উনার কিছুই যায় আসেনা৷ ভাইয়া এতোটা চেঞ্জ হয়ে গেলো এই কয়েকদিনে৷ তার মানে কী ভাইয়া সত্যি সত্যিই বিয়ে করে নিয়েছে আর এখন একজন ভাই হয়ে বোনের বিয়ের দায়িত্ব পালন করছে৷ রকির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও ঘামছে৷ স্ট্রেঞ্জ ও ঘামছে কেনো ভাইয়াকে দেখে?ওর না অনেক পাওয়ার এই তার পাওয়ারের নমুনা৷
“দেখো আদনান আমাদের এখান থেকে যেতে দাও৷ আমাদের যাওয়াতে বাধা দিবেনা একদম বলে দিলাম৷
.
আরে রকি এসব কী বলছো তুমি? আমি কী তোমাদের যাওয়া থেকে আটকিয়েছি৷ আর মিস সামান্তা বিয়ে নিয়ে তোমার কী মত?রকি কিন্তু আমার চেয়ে অনেক ভালো৷ ও এট লিস্ট আমার মতো ঠকবাজ নয়৷ খুব ভালো রাখবে সুখে রাখবে আপনাকে৷
আমি বেশ ভালো বুঝতে পারছি সেদিনের আমার বলা কথাগুলোই ভাইয়া আবার আমায় রিপিট করে শুনাচ্ছে৷ কী করবো এখন আমি৷ শরীর বেশ দুর্বল লাগছে আর টিকে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা আমার৷ মাথা ঘুরছে প্রচন্ড ভাবে৷ চোখেও সরিষার ফুল দেখছি৷ চোখ বন্ধ করেই পরে গেলাম আমি৷ কিন্তু অস্পষ্ট ভাবেই দেখতে পেলাম ভাইয়া দৌড়ে আসছে৷
আদনান রকিকে ধাক্কা মেরে সামান্তার পাশে বসে পরলো৷ সামু সামু চোখ খোল আমি তো শুধু তোর সাথে একটু মজা করছিলাম৷ প্লিজ চোখ খোল ইয়ার৷
তারপর রকির দিকে শক্ত চোখে তাকিয়ে বললো,,
আমার সামুর এই অবস্থা কীভাবে হলো৷ যদি তোর কারণে আমার সামুর কিছু হয় আমি কিন্তু তোকে জ্যান্ত পুতে ফেলবো৷ চুপ করে আছিস কেনো বল ওর এই অবস্থা কীভাবে হলো৷
চলবে????