স্বামীর অধিকার শেষ পর্ব

0
5419

স্বামীর অধিকার
শেষ পর্ব
লেখক/ ছোট ছেলে
~~~~~~

হয়তো করবে কারন তার ভালোবাসার মানুষটির হাতে আজ তাকে তুলে দিবো

এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে

রিমি ঘুমিয়ে গেছে ঘুম নেই শুধু আমার চোখে কি করে নিজের বউকে অন্যের হাতে তুলে দিবো

অপেক্ষা করছি ভোরের
অপেক্ষার রাত যেন কাটতে চায়না

দেখতে দেখতে সকাল হয়ে এলো

ছোট্র একটা কেক কয়েকটা মোমবাতি এনে পাশের টেবিলে রেখে রিমিকে ডাক দিলাম

আমি/ এই উঠুন সকাল হয়ে গেছে আর কত ঘুমাবেন

রিমি একটু রাগী গলায়

রিমি/ কি হলো এত ডাকাডাকি করেন কেন
একটু ঘুমাতেও পারবনা আপনার জন্য
বলতে রিমির চোখ পড়লো কেক আর মোমবাতির দিকে

এসব কি

আমি/ একটু ঘুমে ভুলে গেলে আজ না তোমার জন্মদিন

রিমি মাথায় হাত দিয়ে

রিমি/ সরি

আমি/ আর সরি বলতে হবেনা আসেন কেক কাঁটেন

রিমি কেক কাঁটলো তারপর তাকে শুভেচ্ছা জানালাম একটা ফুল দিয়ে

রিমি/ এত সকাল সকাল কি দরকার ছিলো এটা করার

আমি/ কারন…. আমি চেয়েছিলাম আমার আগে কেউ যেন তোমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা না জানায়

এখন যাও রেডি হয়ে নাও এবার তোমার উপহারের পালা

রিমি/ কই যাবেন আর সেই উপহারটা কি

আমি/ উঁহু এখন বলা যাবেনা

রিমি/ আপনি না সত্যি পাগল
যান বাহিরে যান আমি কাপড় বদলাবো

আমি/ আচ্ছা

বাহিরে এসে অপেক্ষা করছি রিমির জন্য

এতক্ষন অনেক কষ্ট হয়েছে চোখের পানি ধরে রাখতে

আর পারছিনা তাই বাহিরে এসে চোখ দিয়ে বৃষ্টি ঝরালাম

মন চায় চিৎকার করে কাঁদতে আর বলতে রিমি তুই শুধু আমার আর কারও নয়

নাহিদকে একটা ফোন দিয়ে বললাম

আমি/ ভাই একটু তাড়াতাড়ি আসো

নাহিদ/ আমি আসতেছি রিমি আর আপনি কোথায়

আমি/ এতো আমরা বের হচ্ছি

নাহিদ/ ঠিক আছে আসুন

আমি ফোনটা রেখে রিমিকে বললাম

আমি/ কই হলো আপনার

রিমি/ না

আমি/ দ্যাতততত এত দেরি হয় কেন

রিমি/ কি করবো শাড়ী তো পড়তে পারিনা

আমি/ কি….. দুদিন পরে মা হবেন এখনও শাড়ী পড়তে পারেন না

আমি আসবো নাকি

রিমি/ হুমমমম আসেন যদি পড়াতে পারেন

আমি ভিতরে গিয়ে রিমিকে শাড়ী পড়িয়ে দিলাম

আমি/ এ কি চুল গুলো এমন কেন

মেয়ে মানুষের চুল যদি কপালে না থাকে তাহলে তাকে পেত্নীর মত লাগে

রিমি চুলের বাঁধনহার খুলে কয়েকটা চুল তার কপালে এনে রাখলাম

আমি/ দেখুনতো এবার কেমন লাগছে আপনাকে

রিমি/ বাহ্ববা…. আপনি তো দেখি অনেককিছু জানেন

আমি/ এতকথা না বলে এবার চলুন

দুজনে বের হয়ে গেলাম

একটা সি এন জি নিলাম

রিমি বার বার জানতে চাচ্ছে আমরা কোথায় যাচ্ছি

আমি/ চুপ করে বসে থাকুন

রিমি/ একি আপনার চোখে জল
কি হয়েছে আপনার

আমি/ মনে হয় চোখে কিছু পড়েছে ও কিছুনা

দেখতে দেখতে চলে আসলাম

রিমি/ একি পার্কে কেন

আমি/ এখানে আপনার সবচেয়ে বড় উপহারটা

রিমি/ আজ সারাদিন বুঝি এখানে কাটাবো আমরা

আমি কোন কথাই বলিনা

নাহিদকে দেখা যাচ্ছে একটু দূর থেকে

আমি/ ঐ দেখুন আপনার উপহারটা

রিমি একটু হেঁসে

রিমি/ এটাতো একটা মানুষ আমার উপহার হয় কিভাবে
সত্যি আপনার মাথা ঠিক নেই

আমি/ হুমমম তাই চলুন সামনে গেলে বুঝবেন

রিমি/ চলুন তাহলে
সামনে যেতে না যেতে রিমির চোখ কপালে উঠলে

রিমি/ একি নাহিদ তুমি

আমি/ হ্যাঁ তোমার নাহিদ তোমার ভালোবাসার নাহিদ তোমার স্বপ্নের পুরুষ
তোমার মনের মানুষ
যাকে ভেবে রোজ তুমি কাঁদো

রিমি/ আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সত্যি ছোট এই জীবনে আমাকে এতবড় উপহার কেউ দিতে পারেনি

কেমন আছো নাহিদ

নাহিদ/ ভালো তুমি

রিমি/ আমি ভালো নেই

আমি/ তোমরা তাহলে কথা বলো আমি চলে যাচ্ছি

রিমি/ চলে যাচ্ছি মানে কোথায় যাবেন

আমি/ শোন ভাই
রিমিকে আমি বিয়ে করেছি সত্যি তবে কখনও স্বামী হতে পারিনি

রিমি আমার বউ ঠিক-ই তবে তার মনে কখনও আমার জন্য জায়গা হয়নি

রিমিকে আমি ভালোবেসেছি
ঠিক-ই কিন্তু কখনও তার একটু আদর সোহাগ ভালোবাসা কিছুই পাইনি

কেন জানো
কারন…. তার মনে প্রাণে শুধু তুমি আর তুমি ছিলে

ও সবসময় কাঁদতো তোমার জন্য
নামাজ পড়ে মুনাজাতে তোমাকে চাইতো

আমিও রিমিকে ভালোবাসি হয়তো তোমার মত না
তাই হয়তো তার মনে জায়গা করে নিতে পারিনি

তাই আজ তাকে তোমার হাতে তুলে দিলাম
আমি চাইনা আমার জন্য দুটো জীবন নষ্ট হয়ে যাক

সুখে থেকো তোমরা এই কামনা করি

রিমি পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও

জানো রিমি আজ আমি অনেক অনেক খুশি তোমার চেয়েও বেশি

কেন জানো

কারন… আজ আমি তোমাকে তোমার প্রিয় মানুষটার হাতে তুলে দিতে পারছি

রিমি/ এসব আপনি কি বলছেন আমিতো কিছুই বুঝতেছিনা

আমি/ যা আরও অনেক আগে বলার ছিলো অনেক আগে করাতোমার হাতটা দাও
নাহিদ তোমারটাও দাও

দুজনের হাত নিয়ে দুজনার হাত মিলিয়ে দিলাম
আর বললাম
তোমাদের এই নিষ্পাপ ভালোবাসার মাঝে আমি আর থাকতে চাইনা

পারলে ক্ষমা করে দিও

বলে চলে আসতেছি

চোখের পানিটাও কেন জানি স্বার্থপর হয়ে গেলো
শুধু অন্যের জন্য কাঁদে
চোখের জল মুছতে মুছতে হাঁটতে লাগলাম

আর ভাবছি
কতই না সুন্দর মানিয়েছে ওদের জুটিটা

আচ্ছা ওরা দুজন কি আমাকে ক্ষমা করেছে
নাকি এখনও আসামীর কাঁঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখছে

কি স্বার্থপর মেয়েরে বাবা এতবড় একটা উপহার দিলাম একটা ধন্যবাদও দিলনা

হয়তো নাহিদকে পেয়ে ভুলে গেছে দিতে

এভাবে হয়তো আস্তে আস্তে ভুলে যাবে আমাকে

একবার পিছন ফিরে তাকাবো না থাক

কেন জানি মন বলে রিমি হয়তো একবারের জন্য হলেও আমাকে ডাকবে

কিন্তু ডাকেনি

চলে আসলাম ওদের মাঝখান থেকে

আজ আর বাসায় যাবোনা
আর বাসায় গিয়ে কি করবো
তাই সব হারিয়ে দেউলিয়ে হয়ে এদিক ওদিক ঘুরি

আর খোদাকে বলি শুধু একটা কারন দাও আমাকে যার জন্য রিমিকে ঘৃণা করতে পারব

সন্ধ্যা হয়ে এলো তাই চলতে লাগলাম বাসার দিকে

বাসায় গিয়ে দরজা টোকা দিলাম

ওহহহহ আমিতো ভুলে গেছি দরজা খুলার মত এখন কেউ নেই

দরজাটা খুলে ভিতরে গিয়ে বসলাম

উফফফ খুব ক্লান্ত লাগছে

চোখটা বন্ধ করলাম

কিছুক্ষন পরে একটা কণ্ঠ শুনতে পেলাম

খুব ক্লান্ত লাগছে তাইনা এই নিন শরবত খান

র ছিলো তাই করছিআমি একটু ভয় পেলাম চোখটা খুলে

আমি/ এ কি আপনি এখানে কখন আসলেন আর কেন আসলেন আপনাকে না আপনার শেষ ঠিকানা রেখে আসছি

রিমি/ হুহহহহহ আমার বাড়িতে আমি আসছি তাতে আপনার কি

আর আপনি কি বলুনতো লজ্জা করেনা আপনার নিজের বউকে অন্যের হাতে তুলে দিতে

এই বুঝি আপনার স্বামীর অধিকার

খুবতো বড় বড় কথা বললেন সেখানে

আমার চোখের জল আপনার সহ্য হয়না
আমাকে সুখী দেখতে চান
আমার মুখে হাঁসি দেখতে চান

কিন্তু একবারও কি জানতে বা বুঝতে চেয়েছেন আমার কি চায়

আমি/ মানে

রিমি/ মানে আবার কি

আমি কি বাজারের পণ্য যে চাইবে সেই পাবে

আমি কারও প্রেমিকা হয়ে নয়
আমি কারও লক্ষী বউ হয়ে থাকতে চাই আর সে হলেন আপনি

আমি আপনাকে না বলছি আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো

জানেন সে কথাটা কি
জানেন না

তবে এখন শোনেন আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবেসে ফেলেছি
দয়া করে একটু জায়গা দাও তোমার বুকে

রিমির চোখের জল মুছে দিয়ে রিমিকে বললাম

খুব কষ্ট হয়েছে তোমাকে সেখানে রেখে আসতে
মন চেয়েছে আবরও জোর করে নিয়ে আসি সঙ্গে কিন্তু পারিনি

রিমি/ তখন পারেন নি এখনতো পারবেন

আমি/ কি

রিমি/ খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে

রিমি বলতে করেছে কিন্তু আমি বুকে নিতে একটুও দেরি করিনি

রিমিকে বুকে নিয়ে বললাম

আমি স্বামীর অধিকার চাইনা
শুধু তোমাকে যে তোমাকে হারিয়ে যাবো আমি তোমার ভালোবাসায়

ছোট ছেলে

#ধ্রুব

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে