স্বামীর অধিকার পর্ব/৯

0
3069

স্বামীর অধিকার
পর্ব/৯
লেখক/ ছোট ছেলে
~~~~~~

বাসায় আসতে একটু লেট হয়ে গেলো

বাসায় এসে দেখি রিমি আর তার বান্ধবী খেয়ে দেয়ে গল্প করছে

রিমি আমাকে দেখতে পেয়ে

রিমি/ কি ব্যপার এতক্ষন কোথায় ছিলেন

আমি/ তোমার জন্য সুখের সন্ধানে

রিমি/ মানে কি সুখ কি হাঁটতে বাজারে বিক্রি হয় যা আপনি টাকা দিয়ে কিনে নিবেন

আমি/ টাকা দিয়ে আর জোর করে যে সুখ আর ভালোবাসা কেনা যায়না সেটা আমি বুঝেছি

রিমি/ বুঝেছেন তবে আমার জীবনটা নষ্ট করে

খেয়েছেন আপনি

আমি/ না

রিমি/ এখনও না খেয়ে আছেন
যান টেবিলে খাবার দেয়া আছে খেয়ে নিন

আমি কোনকিছু না বলে চুপচাপ দু বান্ধবীর মাঝখান থেকে চলে আসলাম

অন্য আরেকটা ঘরে শুয়ে রইলাম চোখেও অনেক ঘুম তাই বিছানা পিঠ লাগাতে ঘুমিয়ে পড়লাম

একটু পরে রিমি এসে ডাকাডাকি করে

রিমি/ এইযে শুনছেন এইযে

আমি/ কি হলো আপনার
আপনার জন্য কি শান্তিতে একটু ঘুমাতেও পারবনা

রিমি একটু অবাক হলো
অবাক হওয়ার-ই কথা

বিয়ের পর থেকে রিমিকে আমি তুমি করে বলতাম
কখনও তার সাথে রাগী গলায় কথা বলতামনা

কিন্তু আজকের কন্ঠটা আমার অন্যরকম

রিমি/ কি হয়েছে আপনার এমনভাবে কথা বলছেন কেন

প্রীতি (বান্ধবী)কি আপনাকে কিছু বলেছে

আমি/ সবকিছু কি আপনাকে বলতে হবে নাকি আপনি আমার কে

আপনি আমাকে একদম বিরক্ত করবেন না
যান এখান থেকে

ম রিমি/ যাবো তার আগে বলুন না খেয়ে আছেন কেন

আমি/ আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই খাইনি
বুঝেছেন

প্রীতি এসে রিমিকে নিয়ে চলে গেলো

আমি মনে মনে বলি তোকে ছাড়া কখনও খেয়েছি আমি

রিমি/ যে মানুষটা আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল হয়ে যেতো সে মানুষটা আজ এতটা কঠিন হলো কি করে

তুই কিছু বলিসনি তো তাকে

প্রীতি/ আরে না কি বলিস
পুরুষ মানুষের মনটা এরকম
নেশা ধরলে বুকে নেয়
নেশা কেটে গেলে লাথি মারে

রিমি/ আরে দূরররর তুইও না

মানুষটা ঐরকম নয় যেমনটা তুই ভাবছিস

মানুষটা ভালো সবসময় আমার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কতকিছুই না করতো শেষ পর্যন্ত কান্নাও করে খাইয়েছে

সেই মানুষটা আজ আমাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে

প্রীতি/ তুইও না কি আমি বুঝিনা

যাকে সহ্য করতে পারিসনা তাকে নিয়ে এত চিন্তা করিস কেন দেনা তাকে তার মত করে থাকতে

রিমি/ কি বলিস এসব বিয়েটা যেমন করে হোক আর মানুষটা যেমন হোক কিন্তু সে তো এখন আমার স্বামী

প্রীতি/ এই দাঁড়া দাঁড়া কি বলিস এসব স্বামী মানে তুই কি ওঁকে স্বামী বলে স্বীকার করেছিস

রিমি/ জানিনা শুধু এটা জানি
ওর একটু রাগে আমার খুব কষ্ট হয়

প্রীতি/ সর্বনাশ শুধু স্বামী হিসেবে নয় তুইতো ওকে ভালোবেসে ফেলেছিস

তাহলে তাকে বলে দে

রিমি/ না আমি কখনওই পারবনা

প্রীতি/ ঠিক আছে তাহলে তোর হয়ে আমি বলে দিবো

রিমি/ না না একদম এমনটা করবিনা আমাকে একটু সময় দে আমি বলবো আমার মনের কথা তাকে

প্রীতি/ কিন্তু আমি এটা বুঝতেছিনা ওর প্রতি তোর এই ভালোবাসব কোথা থেকে জন্ম নিলো

একটু আগে আমার কাছে যার সম্পর্কে এত বাজে কথা বললি

আর সে তাকে তুই ভালোবেসে ফেললি
কি এমন দেখলি তার মাঝে

রিমি/ আমি নাহিদকে ভালোবাসতাম ঠিক-ই
কিন্তু আমার ভালোবাসা তার কাছে কোন দাম নেই

আমি সবসময় চাইতাম তাকে
কিন্তু সে অন্যকাউকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতো আমাকে একা রেখে

আমি সবসময় নাহিদকে বোঝাতে চাইতাম তাকে ছাড়া আমার পৃথিবীতে কেউ নেই
কিন্তু সে আমাকে কিন্তু বোঝাতো আমি ছাড়াও আরও অনেকে আছে তার পৃথিবীতে

আমি যেদিন আমার অমতে এই বাড়ির বউ হয়ে এসেছি

সেইদিন থেকে বুঝেছি
এই পাগলটা আমাকে কত ভালোবাসে

কত উপায়ে আমাকে নিজের করে নিতে চেয়ে

হাজারো ঝগড়া দুষ্টুমিতে আমার কাছে আসতে চেয়েছে

আমাকে ঠিক ততটা ভালোবেসেছে ততটা আপন করে নিয়েছে যতটা আমি চাইতাম

আমি চাইতাম আমার বরটা আমাকে রান্নার কাজে সাহায্য করবে সেটাও সে করেছে

আমি চাইতাম আমার বরটা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিবে
সেটাও সে করেছে

আমার মুখের একটু হাঁসির দেখার জন্য যে মানুষটা ব্যাকুল হয়ে থাকতো

তুই বল সে মানুষটাকে রেখে আমি কিভাবে অন্যকে নিয়ে সুখী হবো

প্রীতি/ আমি আর কিছুই বলার নেই শুধু এটাই বলবো
স্বামী পেতেছিল একটা মনের মত

তাই আর দেরি না করে বলে দে তাকে

দেখবি অনেক ভালোবাসা পাবি অনেক স্বপ্নের চেয়েও বেশি

রিমি/ বলবো আমার জন্মদিনের দিন

সেদিন আমি আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে তাকে চাইবো

প্রীতি/ ঠিক আছে তুই যা ভালো বুঝিল তাই কর

যাইরে অনেক দেরি হয়ে গেছে

রিমি/ থাকবেনা আজ

প্রীতি/ অন্য একসময় এসে থাকবো

রিমি/ আচ্ছা ঠিক আছে

চলবে,,,???

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে