Shadow in love Part-7

0
2070

Shadow_in_love❤

Part-7

#ফাবিহা_নওশীন

আয়েশা ভার্সিটিতে গিয়ে আনমনে ক্যাম্পাস দিয়ে হাটছে।হটাৎ ওর সামনে আরহানকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।আরহানকে দেখে আয়েশার পিলে চমকে উঠে।আয়েশা আরহানকে দেখে বারবার ঢুক গিলতে লাগলো।তারপর পেছনে দৌড় দিলো।
আরহানের কপালে বিরক্তির রেখা ফুটে উঠলো।
বিরক্তি নিয়ে বললো,
—–আয়শু!!

আয়েশা দৌড়াতে দৌড়াতে ক্যাম্পাসের শেষ মাথায় চলে গেলো।আশেপাশে কেউ নেই।আয়েশা হাফাচ্ছে।আর জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।ও স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।তারপর ঘাসের উপর বসে পড়ল।ব্যাগ থেকে একটা বোতল বের করে পানি মুখে দিতেই ওর চোখ চড়কগাছ।মুখ থেকে পানি ছিটকে পড়ে গেলো।
ভয় ভয় চেহারায় আতংক নিয়ে বললো,
—–আয়ায়া…পনি?

—–আয়শু ভুলে যেওনা আমি জ্বিন।তাই আমার সাথে এসব লুকোচুরি খেলা খেলে আমার টাইম অযথা নষ্ট করোনা।

—–কি চান আপনি আমার কাছে?(কেদে দিয়ে)

—–উহু কেদোনা(চোখের পানি মুছে দিয়ে)
আমি কি চাই তুমি খুব ভালো করে জানো।আমি তোমাকে চাই।তোমাকে চাই।

—–আমি একটা মানুষ।আপনি একজন জ্বিন হয়ে একটা মানুষের পেছনে পড়ে আছেন কেন?আপনি কোনো পরীর পেছনে যান,তাকে বিয়ে করুন।আমাকে ছেড়ে দিন।আমার আপনাকে দেখলেই ভয় লাগে।প্লিজ।
(হাত জোর করে কান্নারত অবস্থায়)

আরহানের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।আরহান রেগে জিদে বললো,
—–এই মেয়ে তোকে বলেছি না আমি তোকে সেদিনই ছাড়বো যেদিন আমি পৃথিবী ছাড়বো।যতদিন আমার শ্বাস আছে ততদিন তুই আমার।
তারপর নিজেকে শান্ত করে নরম গলায় বললো,
—–দেখো আয়শু আমি নিজেও জানতাম না আমি একজন জ্বিন।ছোট থেকে যাকে মা জেনে এসেছি হটাৎ জানতে পারি সে আমার মা নয়।আমি একজন পরীর ছেলে।আমার অবস্থাটা বুঝতে পারছো।আমি কতটা অস্থিরতার মাঝে আছি।এখন তুমিও যদি এমন করো তাহলে আমি কি করবো?
আরহান আয়েশাকে জড়িয়ে ধরলো।আয়শু চুপ হয়ে আছে।ভয়ে নড়াচড়া করছে না।

আয়েশাকে ছেড়ে আয়েশার কপালে পাগলের মতো দু-তিনবার চুমু খেয়ে বললো,
—–প্লিজ আমার সাথে এমন করোনা।আমি জ্বিন কিন্তু মানুষের মতো।দেখো আমায়?আমার বাবা একজন মানুষ,আর আমিও মানুষের মতো বাচতে চাই।মানুষের পরিচয় নিয়েই বাচতে চাই।তোমাকে নিয়ে বাচতে চাই।আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবোনা।আমাকে বিশ্বাস করো।আমাকে ভয় পেওনা।

আয়েশা তবুও ভয়ে কুকড়ে যাচ্ছে।আর সেটা দেখে আরহান চিতকার করে বললো,
—–তুমি তবুও কেন ভয় পাচ্ছো ডেম ইট?

আয়েশা কেপে উঠলো।তারপর কাদতে লাগলো।আরহান বিরক্তি নিয়ে বললো,
—–চুপ একদম চুপ।আমাকে রাগিওনা।যাও ক্লাসে যাও।আর হ্যা আমাকে একদম এভয়ড করবে না।চেষ্টাও করোনা।যাও।

আয়েশা দৌড়ে ক্লাসে চলে গেলো।আরহান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চলে গেলো।

আয়েশা বাসায় ফিরে ব্যাগ রেখে ফ্রেশ না হয়েই বাবার রুমে গেলো।ওর বাবা বইয়ে ডুবে আছে।আয়েশা বাবার পাশে বসে বললো,
—–বাবা বই রাখো কথা আছে।

বই থেকে চোখ না সরিয়েই বললো,
—–এই পাতাটা শেষ করে নেই তারপর শুনছি।

—–না বাবা এখুনি শুনতে হবে।

আয়েশার বাবা বই থেকে চোখ সরিয়ে বললো,
—–বল কি এমন গুরুত্বপূর্ণ কথা?

আয়েশা কোনো ভনিতা না করেই বললো,
—–আমি ইফাতকে বিয়ে করতে রাজি।ইফাতকে জানিয়ে দিও।

আয়েশার বাবা আয়েশার কথা শুনে খুশিতে আত্মহারা।বাট আয়েশা ওর বাবাকে রিয়েকশন করার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো।

আয়েশা রাতে রুমের দরজা,বারান্দার দরজা ভালো ভাবে লক করে চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।ঘুমানো বললে ভুল হবে।চোখ বন্ধ করে রেখেছে।যদি আরহান আসে।তখনই ওর ফোন বেজে উঠলো।আয়েশা আস্তে আস্তে চোখ খোলে ফোন হাত দিয়ে চাদরের ভিতরে নিয়ে গেলো।
আরহানের ফোন।আয়েশার চেহেরাটা কাদো কাদো হয়ে গেলো।আয়েশা একবার ফোন রিসিভ করতে চাইলোনা।কিন্তু রিসিভ না করলে যদি আবার চলে আসে তখন?
তাই আয়েশা বাধ্য হয়েই ফোন তুললো।
আরহান অপর পাশ থেকে বললো,
—–বাহ! আজ এতো তাড়াতাড়ি ফোন তুলে ফেললে যে?

আয়েশা কাপা কাপা গলায় বললো,
—–এমনি।

আরহান মুচকি হেসে বললো,
—–মিস করছিলে বুঝি?আচ্ছা আমি তাহলে আসছি।
আয়েশা কিছু বলার আগেই আরহান ফোন কেটে দিলো।।

আরহান আয়েশার বাসার নিচে দাড়িয়ে ছিলো।ফোন রেখে বিরবির করে বললো,
—–ওহ জান তুমি আমার কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করবে সেটা আমি জানি তাই তোমাকে নজরে রাখছি।আ’ম কামিং।

আয়েশা ঠাস করে উঠে বসে।ও রাগে ফেটে যাচ্ছে।গায়ের চাদর ছুড়ে ফেলে দেয়।আর তখনই বারান্দার দরজা খোলার শব্দ পেলো।
আয়েশা মনে মনে বলছে,
—–লে জ্বিন আগায়া…
আগে তো মুভিতে দেখেছি ভূতেরা দরজা না ভেঙেই দরজা খোলে ফেলে আর এখন সামনাসামনি।জীবনটা ভূতুড়ে হয়ে গেলো।

আরহান এসে আয়েশার পাশে বেডে বসলেই আয়েশা বেড থেকে নেমে যায়।
আরহান মুচকি হেসে বললো,
—-এতোক্ষন মিস করছিলে আর এখন দূরে সরে যাচ্ছো।

—-আমি আপনাকে মিস করছিলাম না।আমি ঘুমাচ্ছিলাম।আপনি চলে যান আমি ঘুমাবো।

আরহান কিছু না বলে উঠে দাড়িয়ে চারদিকে হাত দিয়ে ম্যাজিক করলো।আয়েশা চোখ বড়বড় করে দেখছে।
—–কি…হহহ।। কররছেনন..?

—–লক করে দিলাম।বাইরের কেউ তোমার গলার শব্দ শুনতে পাবেনা।

তারপর আরহান ম্যাজিক করে আয়েশার ড্রেস চেঞ্জ করে দিলো।গর্জিয়াস একটা লেহেঙ্গা,গা ভর্তি গহনা,বউ সাজ।
আয়েশা ভয়ে থরথর করে কাপছে।আরহান আয়েশার কাছে গিয়ে আয়েশাকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে নিয়ে দাড় করালো।
তারপর বললো,
—–দেখো তোমাকে পরীর মতো লাগছে।তুমি আমাকে বলেছিলে না পরী খোজে নিতে?আমি এই পরীকে খোজে নিয়েছি।

আয়েশা চোখ তুলে নিজের দিকে তাকালো।ও নিজের থেকে নিজেই চোখ সরাতে পারছেনা।বউ সাজে ওকে কত সুন্দর লাগছে।
আরহান আয়েশার ঘাড়ের কাছে জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলছে।আরহানের উষ্ণ নিশ্বাস আয়েশার ঘাড়ে পড়ছে।আয়েশা চোখ খিচে রেখেছে।খুব ভয় পাচ্ছে ও।
আরহান আয়েশার ঘাড়ে ঠোঁট ছোয়ালো।আয়েশা কেপে উঠে বললো,
—–প্লিজ!!
আমার সাথে এমন কিছু করবেন না।

আরহান মুচকি হেসে বললো,
—-বোকা মেয়ে!!ভয় পাচ্ছো কেন?
খুব শীঘ্রই তোমাকে এভাবে সাজিয়ে বউ করে নিয়ে যাবো।
আয়েশাকে আরহান নিজের দিকে ঘুরালো।আয়েশা চোখ বন্ধ করে আছে।আরহান ম্যাজিক করে আয়েশাকে আগের মতো করে দিলো।আয়েশা চোখ খোলে নিজেকে আগের রুপে দেখতে পেলো।অবাকের উপর অবাক হচ্ছে।

—–গুড নাইট।ঘুমিয়ে পড়ো।

আরহান বারান্দার দরজা খোলে চলে গেলো।আয়েশা হাফ ছেড়ে বাচলো।

আয়েশা ভয়ে আরহানের সব কথা মেনে চলে।
এভাবে আরো কয়েকদিন কেটে গেছে।আরহান আয়েশাকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।ওর মনে হচ্ছে আয়েশা কোনো গন্ডগোল পাকাবে।তাই আরহান ম্যাজিক করে একটা টিয়াপাখি বানালো।
“টিয়াপাখি তোর নাম দিলাম টুইংকেল।তোর কাজ হলো আমার আয়শুপাখির উপর নজর রাখা বুঝলি?””

টিয়াপাখি বললো,
—–বুঝেছি।
তারপর আরহান ইশারা করতেই উড়ে গেলো।

আয়েশা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে বসেছে ওর বাবা আর ইফাতের সাথে।
—–বাবা আমি খুব তাড়াতাড়ি বিয়েটা করতে চাই।কোনো রকম অনুষ্ঠান ছাড়াই।

আয়েশার বাবা অবাক হয়ে বললো,
—– হটাৎ কি এমন ঘটলো?

আয়েশা ইফাতের দিকে একবার চেয়ে বললো,
—–বাবা একটা ছেলে আমার পেছনে খুব বাজেভাবে পড়েছে।তাই আমি বিয়ে করে ফেলতে চাই।ইফাত আপনার কোনো আপত্তি আছে?

—-না আমার কোনো আপত্তি নেই।তুমি যখন বলবে আমি রাজি।

আয়েশার বাবা কিছু বলতে গেলে আয়েশা ওর বাবাকে থামিয়ে বললো,
—-বাবা আমি কোনো ঝামেলা চাইনা।তাই বিয়েটা করে নিতে চাই।

—–আচ্ছা ওই কথাই রইলো।(আয়েশার বাবা)

আয়েশা ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে বেরুলো।
আর তখনই আরহান ওকে এক টানে গাড়িতে তুলে নিলো।আয়েশা আরহানকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।আরহানের চোখ মুখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে।বুঝাই যাচ্ছে খুব রেগে আছে।কোনো কথা বলছেনা।

আরহান ওর মতো করে ড্রাইভিং করছে।কোথায় যাচ্ছে বুঝতে পারছেনা আয়েশা।
আর চুপ করে থাকতে পারলোনা।
কাচুমাচু করে বললো,
—–আমরা কোথায় যাচ্ছি?

আরহান মুচকি হেসে বললো,
—–তুমি কি ভেবেছো আমি জানি না তুমি কি ফন্দী করছো?

আয়েশা ঘাবড়ে গেলো।ভয়ে ঢুক গিলছে।
“উনি বুঝে গেলেন না তো আমি আর ইফাত বিয়ে করছি?”

আরহান চোখ মুখ শক্ত করে স্টেয়ারিংয়ে জোরে আঘাত করে বললো,
—–হ্যা জেনে গেছি।তুমি বারবার কেন ভুলে যাও আমি আরহান।আমাকে এত বড় ধোকা দিচ্ছিলে?আমাকে?

আয়েশা চিতকার করছে।
—–হেল্প হেল্প!!

আরহান অদ্ভুত হাসি দিয়ে একটা রুমাল দিয়ে আয়েশার মুখ চেপে ধরলো।আয়েশা জ্ঞান হারালো।

আয়েশার জ্ঞান ফিরতেই আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালো।ও সিটে হেলান দিয়ে আছে।পাশে আরহান নেই।আয়েশা সোজা হয়ে এদিক সেদিক চেয়ে আরহানকে খোজছে।আরহানকে না পেয়ে আয়েশা দরজা খোলে গাড়ির বাইরে গেলো।
আরহানকে গাড়ির পেছনে দেখতে পেলো।আরহান গাড়িতে একটা লাফি মেরে সামনে ঘুরতেই আয়েশাকে দেখতে পেলো।

আয়েশা জিজ্ঞেস করলো,
—–আমরা কোথায়?আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন?রাস্তার দু’ধারে শুধু গাছ আর জঙ্গল।মানুষজনও নেই।এটা কি জ্বিনদের ডেরা?আপনি এখানে থাকেন?(ভয়ে ভয়ে)

আরহান বিরক্তি নিয়ে বললো,
—–আমার এত সুন্দর বাড়ি থাকতে আমি এই জঙ্গলে কেন থাকবো?আমার গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে।তাই এখানে পড়ে আছি।

আয়েশা অবাক হয়ে বললো,
—–তাতে কি!! ম্যাজিক করে ঠিক করুন।

আরহান দাতে দাত চেপে বললো,
—–সেটা হলে আধাঘন্টা যাবত এখানে থাকতাম?আজ আমাবস্যা তাই আমার ম্যাজিক আজ কাজ করবেনা।

আয়েশা আরহানের কথা শুনে খুশি হয়ে গেলো।আয়েশা কিছু না বলে চারদিকে দেখতে লাগলো।নীরব নিস্তব্ধ জায়গা।বিকেল পড়ে গেছে।সন্ধ্যা নেমে আসছে।আরহান গাড়ি ঠিক করায় ব্যস্ত।
আয়েশা পালানোর সুযোগ খোজছে।আজ আরহানের ম্যাজিক কাজ করবেনা
তাই একটা চান্স নেওয়াই যায়।

আরহান অনেক চেষ্টা করেও গাড়ি ঠিক করতে পারছেনা।
উফফ,আজই এটা হওয়ার ছিলো? ডেম ইট।

হটাৎ ওর খেয়াল হলো আয়েশা এখানে নেই।আশেপাশে নেই।
“ওহ নো আয়েশা তুমি অনেক বড় ভুল করে ফেললে তোমাকে পেলে আমি কি করবো নিজেও জানি না।”

আরহান আয়েশা আয়েশা বলে চিতকার করে,ডাকছে আয়েশা মাটির রাস্তা ধরে দৌড়াচ্ছে।কোথায় যাচ্ছে নিজেও জানেনা।শুধু জানে এখান থেকে পালাতে হবে।
আয়েশা হাপিয়ে গেছে।তাই দাঁড়িয়ে গেলো।পেছনে থেকে আরহান ওকে ডাকলো।পেছনে আরহানকে দেখে আয়েশা আবার দৌড়াতে লাগলো।

আয়েশা হটাৎ করে আরহানের আর্তনাদ শুনতে পেলো।আর একটা শব্দ।আয়েশা পেছনে ঘুরে দেখে আরহান মাথায় হাত দিয়ে হাটু গেড়ে বসে আছে।পাশে ইফাত দাড়িয়ে।ওর হাতে মোটা একটা লাঠি।ইফাত যে আরহানের মাথায় আঘাত করেছে সেটা বুঝতে বাকি নেই আয়েশার।

—–ইফাত!!

ইফাত আয়েশার দিকে আগাচ্ছে আয়েশাও ইফাতের দিকে আগালো।ইফাত আয়েশার দুবাহু ধরে বললো,
—–তুমি ঠিক আছো?

—–হ্যা।

আরহান পেছনে থেকে চিতকার করে বললো,
—–ইফাত আয়শুকে ছাড়।ওকে ছুবি না।

ইফাত বললো,
—–না ছাড়লে কি করবে?

—–তোকে খুন করবো।
ইফাত আয়েশাকে ছেড়ে আরহানের দিকে এক পা আগাতেই আয়েশা মানা করলো।

—–তুমি জানো আয়েশা এই আরহান আমাকে ধমকি দিয়েছে তোমাকে ছেড়ে দেওয়ার।আর আজকে তোমাকে তুলে নিয়ে এসেছে।এখন আবার খুন করার হুমকি দেয়।

—–হ্যা আমি তোকে খুন করবো।

ইফাত এগিয়ে গিয়ে আরহানের মাথায় আরেকটা বাড়ি মারলো।আরহান কিছু বলতে যাবে তখনই ইফাত আরহানকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করলো।আরহান চিতকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
আয়েশা ইফাতকে এভাবে আরহানকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করায় চোখ বন্ধ করে চিতকার করে উঠলো।

ইফাত আয়েশার কাছে এসে আয়েশার হাত ধরে বললো,
—–চলো।

আয়েশা হাত ছাড়িয়ে বললো,
—–এটা কি করলে?তুতুমিমি….আমি ভাবতে পারছিনা।

ইফাত আয়েশার হাত শক্ত করে ধরে বললো,
—–আয়েশা আমার সাথে বাড়ি চলো।

—–একটা মানুষকে এভাবে ফেলে আমি যাবোনা।আমার হাত ছেড়ে দেও।(শক্ত গলায়)

আরহান বুক চেপে ধরে অনেক কষ্টে বললো,
—–আয়শু যদি আমার হাত থেকে মুক্তি চাও তাহলে চলে যাও।তুমি যতক্ষণ এখানে থাকবে আমি বেচে থাকবো।তুমি চলে গেলেই আমি….
আরহান ব্যথায় ছটফট করছে। আয়েশা আরহানের কাছে যেতে চাইছে।ইফাত ওকে যেতে দিতে চাইছেনা।আয়েশা ইফাতের সাথে ধস্তাধস্তি করছে।হটাৎ আয়েশা ছিটকে পড়ে গেলো।
আহ করে শব্দ করে উঠলো।ওর হাত কেটে গেছে।

আরহান আয়েশাকে ব্যথা পেয়েছে দেখে বললো,
—–ইফাত দোয়া কর যেনো আমি বেচে না যাই। আমি যদি বেচে যাই আয়শুকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তোকে আমি পুতে দেবো।

ইফাত আবারো আরহানের দিকে এগিয়ে গেলো।মাটিতে পড়ে থাকা ছুড়িটা তুলে আঘাত করবে তখন ইফাত আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।তারপর জ্ঞান হারালো।আরহানের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে তবুও ভালো করে চেয়ে দেখলো আয়েশা একটা মোটা লাঠি হাতে দাড়িয়ে আছে।
আয়েশা ইফাতকে আঘাত করেছে।আয়েশা বিশ্বাস করতে পারছেনা ও কাউকে আঘাত করেছে।হাতের লাঠিটা ফেলে আরহানের কাছে বসে পড়ল।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে