♥Love At 1St Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 35
writer-Jubaida Sobti♥
সামিরের বাবা-মা স্নেহাকে অনেক প্রশ্নই করে যাচ্ছে…তার কি পছন্দ না পছন্দ,পড়া লিখা কেমন চলছে..এমন অনেক ধরনেরই, কিন্তু স্নেহা কিছুরই জবাব দিতে পারছিলো না বার বার কথা আটকে যাচ্ছে, মুখ দিয়ে কোনো শব্দই বেরুচ্ছিলো না…
স্নেহা একটু লাজুক বলে,সব প্রশ্নের উত্তর স্নেহার বাবাই দিচ্ছিলো…
সামিরের মা : লাজুক তো এমন সবাই হয়…সব সময় লাজুকতায় থাকে নাকি আজ আমাদের দেখে লজ্জা পাচ্ছে!
স্নেহার বাবা : না আসলে ও ছোট থেকেই এমন!
সবাই কথা বলাবলি করছে হাসাহাসি করছে, মামী এসে টেবিলে নাশতা দিয়ে গেলো, স্নেহাকে অনেক জোড় করা শর্তে ও কিছু মুখে দিলো না স্নেহা!
মাথা নিচু করেই বসে আছে, আড়চোখে সামিরের দিক তাকালেই দেখে সামির ও কিছুক্ষণ পরপর তাকাচ্ছে স্নেহার দিক! মোটেও ভালো লাগছিলো না এসব স্নেহার! ইচ্ছে করছে দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে রাহুলের কাছেই ছুটে যাবে…
সামিরের মা : আচ্ছা আমরা একটু ওদের একা কথা বলতেদি! ওদের পার্সোনাল কোনো কথা থাকলে ওটাও ডিসকাস করেনিক!
স্নেহার বাবা : হ্যা! এটাও ঠিক! [ বলেই আমরিনকে ডাক দিলো, আমরিন এগিয়ে আসতেই ]
– শোন আমরিন তুই স্নেহা আর সামিরকে ছাদে নিয়ে গিয়ে ঘুড়িয়ে আন!
আমরিন : আচ্ছা!
[ আমরিন স্নেহা আর সামিরকে ছাদে নিয়ে গেলো, পা চলছিলো না স্নেহার,যেনো পায়ে কেউ কাটা বেধে দিয়েছে, তাও বাধ্য হয়ে ছাদে উঠলো ]
আমরিন : আপনারা কথা বলে বলে দেখুন! আমি ওদিকটাই আছি! [ স্নেহাকে চোখ মেরে ] স্নেহা! তুই ঘুড়িয়ে দেখা! [ বলেই হেসে অন্যপাশ চলে গেলো ]
স্নেহা সামিরের দিক একবার তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নেয়! এদিকওদিক তাকিয়ে রিলিং এ হাত রেখে দাঁড়ালো, চারদিক তাকাতেও আজ অসজ্য লাগছে স্নেহার! তারউপর এই শাড়ী!
সামির : [ স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] আমি জানি স্নেহা! হুট করেই এসব তোমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে!
– আমি চাইলেই তোমাকে ভার্সটিতে পার্সোনাল অর সবার সামনে প্রপোজ করে মনের কথা বলতে পারতাম! কিন্তু আমি এসব করিনি কারণ…আমি জানতাম তুমি কক্ষনোই হ্যা বলতে না!
– কিন্তু স্নেহা! বিশাস করো যেদিন থেকে তোমাকে দেখেছি… আমার সবই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো!
স্নেহা : দে…দেখেন! এসব আমাকে বলে লাভ নেই! আপনিতো জানেনই রাহুল আর আমার ব্যা..ব্যাপারটা!
সামির : হ্যা! জানি!
স্নেহা : তাহলে এসব কেনো করলেন?..
সামির : ভাগ্য! ভাগ্যই আমাকে তোমার কাছে টেনে এনেছে!
– ভালো তো অনেককেই বাসা যায় স্নেহা, কিন্তু ভাগ্যে যার সাথে মিল থাকবে তুমি তো তারই হবে তাই না!
স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] আ…আমি আপনাকে বি..বিয়ে করতে পারবো না…
– আমি রাহুলকে…. [ বলতেই চোখে পানি এসে জমে গেলো ]
সামির : রাহুল! [ বলেই হেসে উঠে ] ওর বাবা – মাই তো একত্রে থাকতে পারলো না! আর ও তোমাকে সারাজীবন এক করে রাখতে পারবে তার গ্যারান্টি কি?..
স্নেহা : দেখেন! এসব ফালতু কথা আমার সাথে বলবেন না! আমাদের মাঝে গ্যারেন্টি বলতে কিছু নেই,রাহুল কেমন?..আমাকে কিভাবে রাখবে এসব আমাদের মাঝেই থাক!
সামির : ওকে! সরি!
স্নেহা : আপনার পরিবার আমার পরিবারের জন্য যা করেছে তার জন্য ধন্যবাদ দিলেও ছোট হবে!
– চেষ্টা করবো আপনাদের টাকা গুলো যাতে তাড়াতাড়ি …
সামির : হেইই ওকে ওকে! টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না! ওসব বাদ দাও!
স্নেহা : আ..আপ..আপনি প্লিজ! আপনার বাবা- মা কে বলে দিবেন! যে আপনার আমাকে পছন্দ না! আর আপনি এই বিয়ে করবেন না!
[ বলেই স্নেহা পাশমুড়ে দৌড়ে নিচে চলে যায়, সামির ও একটু হেসে এদিকওদিক তাকিয়ে নিচে নেমে আসে ]
স্নেহা নিচে নেমে রুমে ঢুকে হাতের চুরি কানের দুল সব খুলেই টেবিলে ছুড়ে মারলো!
স্নেহার মা : [ রুমে এগিয়ে এসে ] স্নেহা! সব ঠিকাছে তো! [ স্নেহা চুপ করে রইলো ]
– আরে কি হলো?.. কিছু বলছিস না কেনো?…
স্নেহা : মা আমি এসব শাড়ী পড়ে থাকতে পারছিনা! আমি চেঞ্জ করে আসি!
স্নেহার মা : আরে?..আগে ওদের যেতে তো দে!
[ হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়লো, তাকিয়ে দেখলেই দেখে সামিরের মা এগিয়ে আসছে ]
স্নেহার মা : আরে আপনি আসুন!…
সামিরের মা : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] স্নেহা?..কথা হয়েছে তো সামিরের সাথে?…
স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ]…জি! হ…হয়েছে!
সামিরের মা : [ হেসে ] আচ্ছা! [ বলেই তার হাত থেকে দুটো চুড়ি খুলে স্নেহার হাতে পড়িয়ে দেয় ]
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] জি…এসব?..
সামিরের মা : এসব আমার থেকে তোমার জন্য গিফট! ওকে?.. [ স্নেহা শকড হয়ে তাকিয়ে রইলো! কি হচ্ছে এসব তার সাথে, ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কেঁদে উঠবে ]
– আচ্ছা আমরা এখন আসি হ্যা!
স্নেহার মা : আরে না এভাবে কেনো যাবেন! কিছুক্ষণই তো হলো এসেছেন!
সামিরের মা : আমরা তো স্নেহাকে দেখতে এসেছি, স্নেহাকে দেখা শেষ! তাই এখন চলে যাওয়ার পালা…
– শেষ বললে ও হয়না! মাশাল্লা পরীর মতো দেখতে!
– আচ্ছা স্নেহা! আমরা আসি হ্যা! ভালো থেকো! [ বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে বেড়িয়ে যায়, সাথে স্নেহার মা ও পিছু পিছু বেড়িয়ে গেলো ]
[ ধপাস করেই স্নেহা খাটে বসে পড়লো,কি হচ্ছে? কি করবে? কিছুই মাথায় আসছে না! চোখ থেকে পানি ফেলছে আর ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে ]
[ কিছুক্ষণ পর রুমে কেউ ঢুকার আওয়াজ আসলে স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে ]
আমরিন : ওহো! স্নেহা! সব ঠিকটাক তো?..আচ্ছা হ্যা! তুই ঐ সময় এভাবে না বলে চলে এলি কেনো…বেশি লজ্জা লাগছিলো বুঝি! হ্যা?
– [ স্নেহার হাত টেনে নিয়ে ] ওয়াওও দেখি…কে পড়িয়েছে?..
পেছন থেকে,
স্নেহার মা : কে আর পড়াবে?.. স্নেহার হবু শাশুড়ি পড়িয়ে দিয়েছে! [ বলতেই স্নেহা পেছনে তাকিয়ে দেখে মা আর মামী দুজনেই এসেছে ]
আমরিন : বাহ! তাহলে একটা বিয়ে খাচ্ছি শিঘ্রই!
[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে খাট থেকে কাপড় গুলো টেনে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়, দরজা আটকাতেই চোখে জমিয়ে রাখা অভিমান সব ঝড়ে পড়তে লাগলো, মুখ চেপে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠছে স্নেহা! ]
মা! ওয়াসরুমের দরজা বাড়ি দিতেই,
কিছুক্ষণ পর, শাড়ী চেঞ্জ করে তার কাপড় পরে বেড়িয়ে আসে স্নেহা, রুমে ঢুকতেই দেখে তার মা বসে আছে, স্নেহা কিছু না বলে সোজা ব্যাগটা এগিয়ে নিয়ে টেবিল থেকে মোবাইল ব্যাগে ঢুকিয়ে কাধে নিয়ে চলে যাচ্ছিলো!
স্নেহার মা : আরে স্নেহা! দাড়া কোথায় যাচ্ছিস!
স্নেহা : [ ফিরে তাকিয়ে ] কো..কোথায় যাবো আর?..
স্নেহার মা : কি হয়েছে স্নেহা?..তুই ঠিকাছিস তো?…
স্নেহা : হ্যা! ঠিকাছি
মা : [ বুঝতে পারলো স্নেহা কেঁদেছে ]
– দেখ স্নেহা হুট করেই এসব হয়েছে তাই হয়তো তোর!
স্নেহা : মা! [ বলেই হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলে তার মায়ের হাতে এগিয়ে দিয়ে ] আ..এসব তোমার কাছেই রাখো!
মা : [ অবাক হয়ে ] আরে?..পাগল নাকি?.. এসব তোকে দিয়েছে পড়তে [ বলেই স্নেহার হাত টেনে পড়িয়ে দিয়ে ] এগুলো পড়ে থাক এখন খুলবি না!
স্নেহা : কিন্তু মা এসব আমি…
মা : স্নেহা! সামান্য চুড়িই তো পড়ে থাকতে সমস্যা কি?…
স্নেহা : আচ্ছা!
-আমি! যাচ্ছি…
মা : কিন্তু স্নেহা! আজ থেকে যা নাহয়!
স্নেহা : মা! সা..সামনে এক্সাম আছে! আমার পড়তে হবে! [ বলেই বেড়িয়ে যাচ্ছে হঠাৎ আবার থেমে গিয়ে পেছন ফিরে এগিয়ে এসে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, মা তাকিয়ে আছে দেখে স্নেহা আয়না থেকে টিপটা হাতে নিয়ে বেড়িয়ে যায় মা ও হেসে পেছন পেছন এগিয়ে আসে ড্রইং রুমে ]
বাবা : স্নেহা! কোথায় যাচ্ছিস?… আজ এইখানেই থেকে যা?…
স্নেহা : আ..বাবা! কাল ভার্সেটিতে Assignment জমা দিতে হবে! ওটা রেডি করা বাকি থেকে গেছে!
বাবা : আচ্ছা চল তোকে আমি পৌছেদি!
স্নেহা : এখনো সন্ধায় তো বাবা! যেতে পারবো আমি!
– আর এতোদিন তো একাই সব করেছি তাই না!
বাবা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে যা! কাল আসছিস তো আবার?…
স্নেহা : হ্যা! আ..আসবো! ভার্সেটি শেষ করে!
বাবা : আচ্ছা!
স্নেহা : আসি বাবা!
[ বলেই দরজা খুলে বেড়িয়ে পড়ে, জোড়ে একটি শাস ফেললো স্নেহা! দম আটকে যাচ্ছিলো এতোক্ষণ!
কান্না লুকিয়ে রাখতে যে এতো কষ্ট তা আজই বুঝছে স্নেহা!
কপালে টিপটা লাগিয়ে, হাত থেকে চুড়ি গুলো খুলে ব্যাগে ভরে নেই, নিচে নেমে আসলো, রাস্তায় হাটছে আর ভাবছে,কিভাবে এসব আবার সমাধান করা যাবে, সামির বলবে তো তার বাবা মা কে?..সব আবার আগে মতো হয়ে যাবে তো?.. বিনা বাধায় রাহুলের কাছে ছুটে যেতে পারবে তো?.. এসব চিন্তায় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আর চোখ থেকে অজস্র অশ্রু ঝড়ে যাচ্ছে ]
গাড়ী ঠিক করতেও ভুলে গেছে হাটতে হাটতে ব্রীজের ধারে চলে এলো, রিলিং ধরে দাঁড়িয়ে নদীতে বয়ে যাওয়া পানি গুলোই দেখছে! আর চোখ থেকে জল ফেলছে!
হঠাৎ, ফোনটা বেজে উঠলো, ধীরেধীরে ব্যাগ থেকে ফোনটা এগিয়ে নিতেই রাহুলের কল দেখে স্নেহা আরো ফুফিয়ে কেঁদে উঠে, রিসিভ করে কথা বলবে রাহুলের সাথে সে সাহস পাচ্ছে না!
জীবনটা বার বার এভাবেই থমকে যাচ্ছে স্নেহার! যখনি কিছু ভালোবেসে আগলে নিতে চাই! একটা না একটা কাটা বেধে সামনে এসে দাঁড়ায়!
দু-তিনবার কল দিলো রাহুল আর স্নেহা ফোনের দিক তাকিয়ে তাকিয়ে কেঁদে চলছে!
এসময় রাহুলের সাথে কথা বললে ও রাহুল ধরে ফেলবে যে সে কাঁদছে!
দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা! ওভাবেই! এতেই ভালো লাগছে….
ভাবছে,
যদি নদীর ঢেউ হতো বিনা বাধায় এভাবেই বয়ে চলতো! না কোনো কষ্ট থাকতো না চিন্তা থাকতো… রাহুলের সাথে ও আর দেখা হতো না!
রাহুলকে হারানোর ভয় ও আর থাকতো না!
আধ ঘন্টা হয়ে গেলো, এভাবে ভেবে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে,কুয়াশায় চারদিক ভরপুর ঠান্ডা ও লাগছে, আশেপাশে একবার তাকিয়ে দেখলো সবাই সবার মতো করে চলছে.. দূরের দিক মিটিমিটি লাল-সাদা বাতি ঝলছে, কেউ কেউ ফল-ফ্রুট বিক্রি করছে আবার কেউ বাজার করছে, মাঝে মাঝে ব্রীজের নিচ দিয়ে একটা দুটা শিপ আওয়াজ করে চলে যাচ্ছে, শপিংমলের বাইরে কয়েকজন কাপল দাঁড়িয়ে আছে! তারা হাসাহাসি করছে কথা বলছে,
তা দেখে রাহুলের কথাই মনে পড়ছে স্নেহার! রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে, চোখ মুছে নিলো, ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করলো, রাহুলকে ফোন দিবে বলে, আবার ভাবলো না থাক এক্কেবারে বাসায় গিয়েই ফোন দিবে!
মোবাইলটা ব্যাগে ঢুকাতেই ফোনটা বেজে উঠলো, হাতে নিয়ে দেখে রাহুলেরই ফোন!
স্নেহা : [ রিসিভ করে ] হ্যালো?…
রাহুল : ফোন দিচ্ছিলাম রিসিভ করছিলে না?..
স্নেহা : আ..আসলে ফোন সাইলেন্ট ছিলো তাই?…
রাহুল : কই তুমি?..
স্নেহা : এইতো বাব…বাসায়!
রাহুল : কবে এসেছো?…
স্নেহা : আ..আধ..আধ ঘন্টা হলো!
রাহুল : কি করছো?..
স্নেহা : Assignment কক…করছি!
রাহুল : ব্রীজের ধারে?..
স্নেহা শকড হয়ে গেলো রাহুলের কথা শুনে, তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে রাস্তার ওপাড়ে রাহুল তার গাড়ীর সামনে কানে ফোন রেখে দাঁড়িয়ে আছে!
স্নেহা : আ..আপ..আপনি?…
রাহুল : কেনো আমাকে দেখে অবাক হয়েছো?..
স্নেহা ধীরেধীরে কান থেকে ফোনটা নামিয়ে রাহুলের দিক তাকিয়ে রইলো,রাহুল ও ফোন পকেটে ঢুকিয়ে রাস্তা পাড় হয়ে এগিয়ে এলো স্নেহার দিক!
স্নেহা : [ একটু হেসে ] আপনি..আস আসলে….
রাহুল : মিথ্যে বললে কেনো?…
স্নেহা : মি…মিথ্যে…কই নাতো…[ একটু হেসে ] আমি মজা করছিলাম আপনার সাথে?…
রাহুল : তাই?…
স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] হ্যা!
রাহুল : এখন যে মিথ্যেটা বলছো ওটাও সাজিয়ে বলতে পারছো না! [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]
রাহুল : কাঁদছো কেনো?…
স্নেহা : [ চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ] কক…কই?.. নাতো!
রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার মুখ তার দিক ফিরিয়ে ] ইউ কান্ট লাই টু মি! স্নেহা!
– তোমার চোখ আমি পড়তে জানি ওকে?…
স্নেহা : [ চোখ নামিয়ে ] স..সত্যি রাহুল! আমি কাঁদছি না! [ বলতেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পানি পড়লো ]
রাহুল : [ চোখ মুছে দিয়ে স্নেহার দু-গালে হাত রেখে ] কি হয়েছে স্নেহা?…বলো আমাকে?..
স্নেহা : [ ঢোগ গিলে ] আ..আপনি কিক…কিভাবে জানলেন আমি এইখানে?…
রাহুল : সিরিয়াসলি? এখন এটা জানা বেশি ইম্পর্টেন্ট ?..
– [ জোড়ে একটি শাস ফেলে পকেটে হাত রেখে ] ওখে! তোমার লোকেশন ট্রেস করলাম!
– [ রাগান্বিত ভাবে ] জারিফাকে ফোন দিলাম বললো ও বাসায় আসেনি!
– তোমাকে ফোন দিচ্ছিলাম রিসিভ করছো না!
– স্নেহা! কথা না বললে অন্তত একটা মেসেজ করে জানাতে পারতে! আমার টেনশন হচ্ছিলো তোমার জন্য! তোমার তো এসবে কিছু আসে যায় না!
স্নেহা : [ মাথা নিচু করে ] স…সরি!
রাহুল : এবার বলো তুমি এইখানে কি করছো একা?…
স্নেহা : আব….চচ..চলেন আমরা..ওদিক থেকে হেটে আসি…ঠান্ডা বাতাস আছে!
রাহুল : [ দাত কিলিয়ে ] Shut-up ok?..just shut-up!
[ স্নেহা ঢোগ গিলতে লাগলো ]
রাহুল : স্নেহা! হোয়াট হ্যাপেন?..প্লিজ টেল মি!
স্নেহা : [ মুখ গোমড়া করে ] কিছুই তো হয়নি কি বলবো?..
রাহুল : [ স্নেহার কপালের টিপটা সোজা করে বসিয়ে দিয়ে ] এটাও ঠিক মতো পড়তে পারোনি!
[ স্নেহা মাথা নিচু করে আছে বাতাসে চুল গুলো উড়ছে, রাহুল সামনে চলে আসা স্নেহার চুল গুলো কানে গুজে দিলো ]
রাহুল : তোমার বাবা-মা কিছু বলেছে?…
স্নেহা : না..নাহ তো!
রাহুল : তাহলে কাঁদছিলে কেনো?..কোনো আমার কথা বলায় তোমার বাবা রেগে যায়নি তো!
স্নেহা : নাহ…আ…আসলে বব…বলতে পারিনি!
রাহুল : তাই?.
স্নেহা : জার্নিং করে এসেছে ওরা! ভাবলাম আজ রেষ্ট করুক! কাল না হয় বলবো!
রাহুল : [ একটু হেসে ] ওকেই! বাই দ্যা ওয়ে তোমার বাবা রাজি না হলে ও টেনশন করার দরকার নেই! তোমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলবো [ বলেই হেসে দেই ]
[ স্নেহা চুপ করে রইলো ]
রাহুল : [ আশেপাশে তাকিয়ে ] আচ্ছা তোমার ঠান্ডা লাগছে না এইখানে ?…[ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে ]
রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আরে?..স্নেহা!
– তুলে নিবো বলছি তাই কাদছো?..
স্নেহা : [ চোখ মুছে একটু হেসে ] আব..কিছু না! [ রাহুলের হাত জড়িয়ে ] আসলে আপ..আপনাকে অনেক মিস্ করছিলাম!
রাহুল : আচ্ছা তাই তো ফোন রিসিভ করছিলেনা!
স্নেহা : বললাম তো ফোন সাইলেন্ট ছিলো রাহুল!
রাহুল : আচ্ছা চলো! গাড়ীতে উঠো!
স্নেহা : গা..গাড়ীতে কেনো?
রাহুল : স্নেহা! এইখানে অনেক ঠান্ডা তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বা! চলো [ বলেই টেনে গাড়ীর দিক এগিয়ে নিয়ে সামনের দরজা খুলে দিলো, স্নেহা কিছু না বলে হুট করেই পেছনের দরজা খুলে উঠে বসে ]
রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হেই! পেছনে কেনো উঠলে?…
স্নেহা : আব..আস আসলে আমার মাথাটা না পেইন করছে! সামনে গাড়ীর লাইটিং পড়বে তাই পেছনে এসে বসেছি!
রাহুল : আচ্ছা?.. [ বলেই রাহুল ও স্নেহার পাশে এসে বসে ] ওকে দাও আমি মাথা টিপে দি… [ বলেই স্নেহার মাথা টিপে দিতে লাগলো ]
স্নেহা : আরে রাহুল! [ বলেই রাহুলের হাত সরিয়ে ] ওকে চলে গেছে মাথা ব্যথা!
রাহুল : বাহ! স্নেহা! আগে জানতাম না তো আমার হাতে এতো জাদু আছে, হাত লাগাতেই মাথা ব্যথা উধাও!
স্নেহা : [ একটু হেসে ] আচ্ছা আপনি সামনে যান…আমি এইখানেই ঠিক আছি!
রাহুল : মেইন রিজনটাই বলো স্নেহা তুমি তোমার চোখের পানি লুকাতেই এইখানে এসে বসেছে তাই না?…
[ স্নেহা কিছুক্ষণ রাহুলের দিক তাকিয়ে কেঁদে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে, রাহুল ও অবাক হয়ে জড়িয়ে ধরলো ]
রাহুল : স্নেহা! ইউ ওকে?…
স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আপনাকে অনেক মিস্ করছিলাম রাহুল!
রাহুল : [ স্নেহার পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে ] ওকে ডোন্ট ক্রাই এখন তো তোমার পাশেই আছি!
স্নেহা : [ ধীরেধীরে ছুটে এসে রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে ] রাহুল! আমি…আপ..আপনাকে….[ বলেই জলভরা চোখে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]
– আপনাকে….
রাহুল : [ একটু হেসে ] আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই স্নেহার কপালে একটি চুমু দিয়ে ] আই লাভ ইউ টু! [ বলতেই স্নেহা ও হেসে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ]
স্নেহা : আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ রাহুল! [ বলেই ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে লাগলো ]
রাহুল : [ স্নেহাকে ছুটিয়ে এনে ] রিলেক্স স্নেহা! এভাবে কাদছো কেনো?.. [ চোখের পানি মুছে দিয়ে ] লাল হয়ে যাচ্ছো পুরা স্নেহা! [ With tedi smile ]
স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] রাহুল! আপনি আমাকে…কখনো ছেড়ে যাবেননা প্রমিস করেছিলেন!..
– আ…আপনি যাবেননা তো?
রাহুল : [ স্নেহার দু-হাত শক্ত করে ধরে ] কক্ষনো না!
স্নেহা : আপনাকে ছেড়ে থাকবো এমন ভাবলেই মনে হয়…যেনো নিশাসটা আটকে গেছে!
রাহুল : রিলেক্স! তাহলে ভাবছো কেনো?…
[ স্নেহা অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক বাচ্চাদের মতো ঠোট টেনে টেনে কান্না চেপে রাখছে, তা দেখে রাহুল মুচকি হাসে ]
রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] আহা!স্নেহা বাচ্চা মেয়েদের মতো কেঁদে যাচ্ছো! এভাবে… কি কিউট লাগছে তোমাকে জানো? একটা ফটো তুলি?..
[ স্নেহা চোখ মুছে একটু হেসে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]
রাহুল : [ স্নেহার হাত তার হাতে শক্ত করে ধরে ] স্নেহা!
স্নেহা : হুম!
রাহুল : এতো ভালোবাসো?..
স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকালো, রাহুল ও চেয়ে আছে, দুজনেই কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো, স্নেহার গাল বেয়ে পানি পড়ছে,
চোখ সরিয়ে অন্যদিক তাকিয়ে ফেললো স্নেহা,
তা দেখে রাহুল স্নেহার গালে একটি চুমু খেলো, স্নেহা রাহুলের দিক ফিরে তাকিয়ে রাহুলের দাড়ির উপর হাত বুলিয়ে ধীরেধীরে সেও একটি চুমু খেলো, রাহুল তেডি স্মাইল দিলো স্নেহার দিক তাকিয়ে!
স্নেহা চেয়ে আছে রাহুলের চেহেরার দিক, রাহুল চোখ নামিয়ে স্নেহার ঠোটের দিক তাকালো!
চোখ বন্ধ করে ফেললো স্নেহা! রাহুল তার মুখ স্নেহার ঠোটের দিক এগুতেই হঠাৎ পেছন থেকে গাড়ীর লাইটের ফ্লাশ এসে পড়লো!
স্নেহা চমকে চোখ খুলে ফেললো তাড়াতাড়ি, রাহুল হেসে স্নেহার ঘাড়ে মাথা নুয়ে দিলো, স্নেহা ও হেসে দিলো,
রাহুল : [ হেসে ] You know স্নেহা! আমার কিন্তু মিস্ যেতো না! যদি কাজ কন্টিনিউ রাখতাম না!
– তাহলে আমাদের দেখতে দেখতে ওরা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতো!
চলবে….