অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-৪

0
3180
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-৪
অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-৪

অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-৪

 

লেখা –সুলতানা ইতি

 

গাইথি নির্বাক দৃষ্টিতে চুহেসের যাওয়ার তাকিয়ে আছে চুহেসের এই অদ্ভুত আচরনে সত্যি একটু অভাক হয়েছে
গাইথি ব্যাপার টা মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে বাড়ির বিতর যায়

আহমদ মেহেরাহ গাইথির বাবা মেয়েকে দেখে বল্লো কি রে মা কোথায় ছিলি
গাইথি- বাবা নিদিপাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম

আহমদ মেহেরাহ- মা তুই এখন বড় হয়েছিস যখন তখন যেখানে সেখানে যাওয়া ঠিক নয়

গাইথি- ওহ বাবা বান্ধুবীর বাড়িতেই গিয়েছি অন্য কোথা ও যাইনি
এই বলে গাইথি বাড়ির বিতরে চলে গেলো
গাইথি গিয়ে তার ভাবিকে বল্লো
– ভাবি কি করচো
গাইথির ভাবি ঐশী বল্লো
– কি আর করবো দেখতেই পাচ্ছো কাজ করছি আমার তো আর তোমার মতো রাজ কপাল নয় যে সারা দিন টই টই করে এসে সব রেডী পাবো

গাইথি- ওহ ভাবি তুমি এমন করছো কেনো, তুমি তো আমার লক্ষি ভাবি তোমার মুখে এই সব কথা মানায় বলো

ঐশী- থাক আর পাম্প দিতে হবে না, সাইমুম কল দিয়েছিলো, তোর সাথে কথা বলতে চাইছিলো

গাইথি- ওহ ভাবি মেজাজ খারাপ করো না তো,উনি কল দিয়েছে কেনো

ঐশী- আমি কি করে জানবো, দেখ গাইথি ছেলেটা ভালো ভদ্র তোর ভাইয়া তোর ভালো চায় বলেই তো সাইমুমের মতো একটা ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে

গাইথি- আমি জানি ভাইয়া ভালো চায় ভাবি,কিন্তু এ কেমন ভালো চাওয়া,একবার ও জানতে চাইলো না বিয়েতে আমার সম্মতি আছে কি না

ঐশী- রেগে যাচ্ছিস কেনো বিয়েটা তো আর এখন হচ্ছে না, লম্বা সময় আছে,এর মধ্যে ওর সাথে কথা বল দেখবি ভালো লাগবে

গাইথি কিছু না বলে চলে গেলো
গিয়ে নিজের রুমের দরজা আটকে দিলো, ফেজবুক লগইন করলো নাহ আজ ও কোন মেসেজ এলো ঐ আইডি থেকে,ছেলেটা কি হারিয়ে গেলো নাকি আজ চার দিন হলো কোন মেসেজ নেই

গাইথি ভাবছে পিছনের কথা, কবিতা গাইথির বরাবরি অপছন্দ ছিলো কিন্তু কেনো জানি ঐ দিন একটা কবিতা তে চোখ আটকে যায় কবিতা টা ছিলো এমন
“আমার একলা দিনের ক্লান্ত বেলায় আমার মাঝে আমার বাস
সেই মেঘলা দিনের নিভু আলোয় লেপ্টে ছিলো দূরের ওই নীলাকাশ”

কয়েকবার পড়ার পর কবিতা টা গাইথি মুখাস্ত হয়ে যায়, আইডির নাম দেখে ছেলে না মেয়ে বুঝা যাচ্ছে,নেইজিনের নীড়ে,এটা কি হতে পারে,তার পর কিছু না ভেবেই ইনবক্সে নক করে,
হাই আপনি কি কবি?
কবিতা কি আপনার খুব পছন্দ
– কি করেন আপনি

কিন্তু মেসেজ সিন করার কোন নাম গন্ধ নেই
দুই দিন পরে মেসেজের এন্সার আসে,
-না আমি কবি নই, কবিতা আমার ভালো লাগে তাই দিলাম

প্রায় সংগে গাইথি রিপ্লায় দেয়
-ওহ আমি ভেবেছি আপনি কবিতা লিখেন
আবার রিপ্লায় আসে
– নাহ আমি ওতো সময় পাই না যে বসে বসে কবিতা লিখবো

গাইথি বল্লো
-আপনি কি করেন
– কোথায় থাকেন
-আমরা কি বন্ধু হতে পারি

গাইথির প্রশ্নের কোন উত্তর আসলো না অনেক্ষন অপেক্ষা করার পর গাইথি ফেজবুক থেকে বেরিয়ে যায়,এ কেমন মানুষ কথা কয়টা বলেই অফলাইনে চলে গেলো দূর,এই প্রথম কাউকে নিজে থেকে মেসেজ দিলাম আর সে এতো দাম দেখালো,এটা তো পূরো পুরি আমাকে ইনসাল্ট করেছে

আজ চারদিন ফেরিয়ে গেলো এখন ও মেসেজ গুলো সিন ও হলো না এন্সার এলো না,

গাইথি কে ডাকলো তার ভাবি ঐশী
ঐশী- গাইথি মিশমি কাঁদছে ওকে নিয়ে একটু কান্নাটা থামিয়ে দে না আমি পারছি না

গাইথির ভাইজি মিশমি বয়স দু বছর, এখন দু একটা করে আধো আধো কথা বলে
গাইথি মিশমি কে নিয়ে বাগানের দিকে গেলো

চুহেস রেস্ট হাউজে এসেই তার রুমে ডুকে দরজা বন্ধ করে দিলো
সব কিছু তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে গাইথি ই যে তার বাবুই,

ছোট বেলায় গাইথির মিষ্টি কথা, সব থেকে বেশি চুহেসের কাছে কাছে থাকা সব মিলিয়ে চুহেস গাইথি কে আদর করে বাবুই বলে ডাকতো, আজ সেই বাবুই কে দেখে তার বিস্ময়ের শেষ নেই তার বাবুই তাকে ছিনতে পারেনি, এটা যে খুব যন্ত্রনার কি করবে মানবে চুহেস তা

চুহেস গিয়ে আয়নার সামনে দাড়ালো আয়না নিজেকে দেখছে, এটা সত্যি
কিন্তু তার চাওয়ার মাঝে ছোট বেলার চুহেস কে খুজে ফিরছে, সে কি এতোটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে যে বাবুই তাকে ছিনতে পারেনি , কি করলে বাবুই তাকে ছিনবে,
একটা পথ আছে তা হলো আহমদ মেহেরার সামনে যাওয়া তা হলে উনি আমাকে ছিনবে,

আর গাইথি ও তার ছোট বেলার কথা মনে করবে, কিন্তু আমি এতো তাড়া তাড়ি আহমদ মেহেরার সামনে যেতে চাই না,
আগে বাবুইকে ভালো করে বুঝতে হবে, ওকি ছোটবেলারর চুহেস কে মনে রেখেছে,
নাহ আমাকে আরেক বার গাইথির মুখোমুখি হতে হবে, একবার কেনো প্যাচে ফেলে গাইথি কে আমার পাশে পাশে রাখতে হবে

সেদিন বিকেলে আবার চুহেস গাইথিদের ওখানে যায়, এবার আর নিহার কে সাথে নিলো না
একা ই গেলো, অনেক্ষন গাইথিদের বাড়ির দিকে নজর রাখলো

নাহ কেউ বের হচ্ছে না বাড়ি থেকে, কি করা যায় একবার কি বেতরে যাবো,
কে আছে এখন ওদের বাড়িতে?
বাবুইর মা নেই, কিন্তু আমার ছিনার মতো আহমদ মেহেরাহ আছে,
তার সাথে অনেক পুরনো হিসেব বাকি,কিন্তু বাবুইর ব্যাপার টা অন্য
ভালোবাসি বাবুই কে বাবুই কি আমার এই অবেলায় ভালোবাসা টা মেনে নিবে
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে কি করা যায়,
এমন সময় চুহেসের নজর পড়ে গাইথির দিকে গাইথি যেন কোথায় গিয়েছে এখন বাড়িতে ফিরছে

চুহেস এগিয়ে গেলো গাইথির সামনে
গাইথি একটু অভাক হলো চুহেস কে দেখে
-আরেহ আপনি এই সময় এখানে

চুহেস- হুম তোমার সাথে দেখা করতে এলাম( কিছু মনে করোনা বয়সে তুমি আমার অনেক ছোট তাই তুমি করে বললাম)

গাইথি ইষ্যত হেসে বল্লো,
-ইটস ওকে, কি মনে করবো আমি,,আপনি তো বললেন না আমার সাথে কেনো দেখা করতে এলেন
চুহেস- এখন এখানে বলা সম্ভব নয়
গাইথি- তা হলে?
চুহেস- তুমি কাল আমার সাথে দেখা করবে দিঘীর উত্তর পাশে যে খালি জায়গা টা, ওটা অনেক সুন্দর আমি সেখানে সকালবেলা অপেক্ষা করবো,মনে রেখে সকাল বলতে খুব সকালে

কথা শেষ করে চুহেস হন হন করে হাটা ধরলো
গাইথি কে কিছু বলার সুযোগ দিলো না

গাইথি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে লোক টা এমন কেনো,দেখে মনে হচ্ছে অতি ভদ্র কিন্তু রোবটের মতো

গাইথি বাসায় ফিরে এলো,দুটো টিউশনি করায় তার জন্য তাকে প্রতিদিন বিকেলে বের হতে হয়

গাইথি মনে মনে চুহেসের কথা ভাবছিলো এমন সময় গাইথির কল আসে,মোবাইল স্কিনে নামটা দেখে গাইথি খুশি হয় শ্রুতি আপু ফোন করেছে আমেরিকা থেকে

to be continue

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে