মায়াবতী বউ ৪র্থ পার্ট
পিচ্চি পোলা
আমি শিউরে উঠলাম। সত্যি বলতে আমি
কখনো যুবতি মেয়ের স্পর্শ অনুভব করিনি।
ভাবছেন হয়তো আমি তো প্রেম করেছিলাম।
হা করেছিলাম তবে কখনো ওকে ছুয়ে দেখিনি।
এটা নাকি ওর পছন্দ না অবশ্য আমার ও না।
একটু চোখ ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম ওর ব্যাগটা
ভালোভাবে নিতে গিয়ে আমার হাতের উপর
হাত রেখেছে। পরে খেয়াল করে হাত সরিয়ে
নিলো মায়া।
বাস তার আপন গতিতে এগিয়ে চলছে। আমি
তাকিয়ে দেখছি বাইরের আশেপাশের
দৃশ্যগুলো।
আসলে গাড়িতে উঠলে প্রায় সবার চোখে
ঘুমের
ভাব চলে আসে তবে আমি এর ব্যতিক্রম।
সবাই ঘুমায় আর আমি জানালা দিয়ে দেখি
বাইরের দৃশ্যগুলো।
প্রায় ৪/৫ ঘন্টা লাগবে কড্ডায় পৌছাতে।
ওখান
থেকে নেমে সোজা আবার তামাইয়ের
বেলকুচি বাস ধরবো।
গাড়িটা হঠাৎ থেমে গেলো। তাকিয়ে দেখি
পুলিশ লাইসেন্স চেক করার জন্য গাড়ি
থামিয়েছে অনেকগুলো।
আমাদের গাড়িটা সিরিয়ালে পড়েছে।
হঠাৎ জানালার কাছে কেউ বলছে স্যার
বাদাম নিবেন?
পাশে তাকালাম দেখি মায়া আমার কাধে
মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে।
পাশের সিটে লক্ষ করলাম মা আর বোন ও
ঘুমিয়েছে।
২০ টাকার বাদাম দেন।
বাদাম হাতে নিয়ে রেখে দিলাম। যখন
সামনে
কোথাও ওদের ঘুম ভাংগে তখন খাবো সবাই
মিলে।
গাড়ি হঠাৎ একটা ঝাকুনি খেয়ে মায়া
আমার উপর
সেটে গেলো। মাথাটা আমার কাধেই ছিলো
এখন
একটা হাত আমার অন্য কাধে দিলো যাতে
ঝাকিতে পড়ে না যায়।
ও অবশ্য ঘুমের মধ্যেই এমন করছে বুঝলাম।
কারন
পাশের সিটের মা আর বোনকে দেখেলাম
তাদের ও একি অবস্থা।
বোনটাও মার উপর হেলান দিয়ে একটা হাত
মার
কাধে দিয়ে আছে। আর মা জানালার সাথে
হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।
মায়ার চুলগুলো বারবার আমার মুখের সামনে
উড়ে আসছে।
ওর চুল থেকে মিষ্টি একটা ঘ্রান আসছে। ভালোই লাগছে
ঘ্রানটা।
চুলগুলো হালকাভাবে ধরে ওর গাড়ে পেচিয়ে
দিলাম।
মুখটার দিকে একটু তাকালাম। মানুষ এতো
সুন্দর
হতে পারে ওকে না দেখলে বুঝতাম না।
অবশ্য ওর গায়ের রং খুব বেশি ফর্সা না তবে
চেহারায় আছে মায়াবী ভাব আর সুন্দর গঠন।
যেনো কবিদের আকা কল্পনার পরি।
ওর শরীরটা আমার শরীরে লেপ্টে রয়েছে।
মেয়ে
মানুষের শরীর যখন একটা পুরুষের শরীরে
স্পর্শ করে
তখন তার কি অবস্থা হয় তা শুধু আমার মতো
এমন
পাল্লায় পড়েছে বা বিয়ে, প্রেম করেছে
এমন পুরুষরাই জানে।
তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছি কারন
এসব আমার কল্পনায় থাকেনা।
তাছাড়া মেয়েটির চোখেও খারাপ কোন
উদ্দেশ্য
এখন পর্যন্ত লক্ষ করিনি। আর ওর রহস্য না
জানা
পর্যন্ত ওকে কিছু বলতেও পারছি না।
মেয়েটি আমাকে বিশ্বাস করেই এমন একটা
কঠিন
চরিত্রে অভিনয় করছে। জানিনা এই
অভিনয়ের কি
কারন? কি রহস্য লুকিয়ে আছে ওর মাঝে।
এভাবে ৩ ঘন্টা পার হয়ে গেছে। গাড়িটা
টাঙ্গাইল এলেঙ্গায় থামিয়েছে।
৩০ মিনিট সময় দিয়েছে এর মধ্যে যার যা
খাওয়া বা যা করার করে আসবে।
সবাই গাড়ি থেকে নামছে হইহুল্লা করে।
এরমধ্যে টের পেলাম মায়া মাথাটা কাধে থেকে
তুলে
লজ্জা রাঙা চোখে চেয়ে আছে আর শাড়ীর
আচল ঠিক করছে।
পরিস্থিতি হালকা করতে বললাম মা আর
রুমাকে ডাক দেন। নেমে হোটেলে গিয়ে হালকা
কিছু খেয়ে আসি।
মায়া আমার দিকে এগিয়ে এসে কানের
কাছে মুখ
নিয়ে বললো এখন থেকে তুমি করে বলবেন।
নইলে অভিনয়টা ফাঁস হয়ে যাবে।
এই বলে মুচকি হেসে ও মাকে ডাকলো।
বাস থেকে নেমে সবাই মিলে
হোটেলে ঢুকে খেয়ে নিলাম।
ওদের বাসে বসিয়ে আমি একটু বাইরে গিয়ে
আড়ালে একটা দোকানে বসে সিগারেট
ধরালাম।
তখনি আবার বাসের হর্ন বেজে উঠলো। তারাতারি
২/৩ টা টান মেরে সিগারেট ফেলে দিয়ে দৌড়ে
বাসে উঠলাম।
কই গিয়েছিলে? (চুপেচুপে মায়া)
সিগারেট খেতে।
এখানে বাদাম দেখছি তুমি এনেছো? (এবার
স্বাভাাবিক জোরেই বললো)
হুম মা আর রুমাকে কিছু বাদাম দিয়ে আসো।
না বৌমা আমি বাদাম টাদাম খাবো না।
রুমাকে
দাও।
মায়া রুমাকে বাদাম দিয়ে আবার বসে
পড়েছে
পাশে। কয়েকটা বাদাম আমার সামনে
এগিয়ে
দিছে।নাও তুমিও খাও কয়েকটা।
কি আর করার বউয়ের দেয়া বাদাম না করি
কি
করে? দাও কয়েকটা খাই।
চোখ ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম মায়া মুচকি
মুচকি
হাসছে আর আড়চোখে আমায় দেখছে।
গাড়িটা এখন যমুনা সেতুর উপর। এই সেতুর উপর
যখন
গাড়ি ওঠে তখন বড্ড বেশি ভালো লাগে।
এই জানো তোমাদের এই ইকোপার্কে বাবার
সাথে একবার এসেছিলাম। (মায়া)
ব্রিজের পরেই যমুনা ইকো পার্ক। ওটা
দেখিয়ে বলতেছে মায়া।
হুম ভালোই পার্কটা। একসময় তোমায় নিয়ে
ঘুরতে
আসবো নে কি বলো?। (আমি)
ধুর ভালো না ছাই। জংগল শুধু ভিতরে।
পার্কের
কোন কিছুই নাই এর মধ্যে। আছে শুধু….
শুধু কি?
ও পাশের সিটে চোখ বুলিয়ে দেখলো মা আর
রুমা আবার ঘুমিয়েছে।
এই পার্কে শুধু ডিজিটাল প্রেম চলে।
(কানের কাছে মুখ এনে বললো মায়া)
বলেই মাথাটা নিচু করে নিয়েছে লজ্জায়।
হুম এই পার্ক নামে পার্ক। শুধু তরুন তরুনীদের
প্রেমবাগান হিসেবে চলে এই পার্ক (আমি)
আবার ওর দিকে তাকালাম। আড়চোখে
কখনো
কখনো দেখছে আমায়।
বাসটা কড্ডায় থামিয়ে দিয়েছে। নেমে
পড়লাম সবাই।
বাসে যাবে নাকি সিএনজিতে যাবে মা?
সিএনজি ডাক বাবা। আর বাসে চড়বো না
মাথাটা ঘুরছে। (মা)
একটা সিএনজি ডেকে উঠতে বললাম ওদের।
প্রায় আধঘন্টার মধ্যে সিএনজি নামিয়ে
দিলো তামাই বাজারে।
ওখান থেকে অটোতে উঠে বাড়ি পৌছলাম।
মায়ার দিকে তাকালাম। গাড়ি থেকে
নেমেই ও অবাক।
আমার কাকিরা ও কাজিনরা প্রায় ১০/১২ জন
এসে ওকে ঘিরে ধরেছে।
এর মধ্যে ২ জন ভাবি (চাচাতো বড় ভাইয়ের
বউ)
এসে বলতেছে সরো তো তোমরা। আমাদের
দেবরের সুন্দরী বউটাকে আগে ঘরে নিয়ে
যাই।
তারপর তোমরা ভালো করে দেইখোনে।
চলবে……………………….