#LOVE❤
part:23+24
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
৬ মাস কেটে গেছে
-শোনা তুই বড্ড পাজি হয়ে ছিস কিন্তু ।মাকে এভাবে কিক মারছিস খুব ভাল লাগছে না।একবার তোকে পাই তখন দেখিস তোকে আমি কি করি।কি হলো ভয় পেলি নাকি।আরে তোকে মারবো নাকি আমি।তোকে কি আমি মারতে পারি বল।তুই তো আমার সব রে।তাড়াতাড়ি আয় তো আমার কোল আলো করে।তোকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে ।কিন্তু তোকে কি আদৌ দেখে যেতে পারবো
দিশা ঘরে এসে দেখে রিদিতা পেটে হাত দিয়ে কথা বলছে
-কি রে পুচকু র সাথে কথা বলছিস নিশ্চয়ই
-হ্যাঁ রে।ভারি দুষ্টু হয়ে ছে এখন তো ঘন ঘন কিক মারে।পেটের মধ্যে ফুটবল খেলে
-আমার তো আর তর সইছে না।আর এক সপ্তাহ পর ই তোর ডেলিভারি ।পুচকু কে দেখবো
-হ্যাঁ আমার ও তর সইছে না
আজ রিদিতা র প্রেগন্যান্সি র নয় মাস রানিং।আবেগ এর অফিস থেকে চলে আসার সময় তিন মাস ছিলো ।আজ নয় মাসে পড়লো
কিন্তু এই ছয় মাসে আবেগ খুঁজে পায় নি রিদিতা কে।ঢাকাতে যতো আত্মীয় স্বজন আছে সবার কাছে গেছে।সিলেট এ এসে সেই বাড়িতে গেছিল যেখানে রিদিতা থাকতো।সেখানে গিয়ে আবেগ জানতে পারে যে ঐ বাড়ির মালিক রিদিতা কে মিথ্যা বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।সেদিন ই ঐ বাড়িতে গিয়ে বাড়ি র মালিক কে সবার সামনে এনে মারতে মারতে সব সত্যি বলায়।ঐ মালিক কে এলাকা ছাড়া করে
-আশফি আমি কি পাব না রিদিতা কে।আমি কি করবো আশফি।ছয় মাস ধরে খুঁজে চলেছি কোন ক্লু ও পেলাম না
-ধৈর্য্য ধরে আবেগ।মনে রাখিস রিদিতা ভাবি কে তুই নিজের দোষেই হারিয়ে ছিস ।আর ভাবি ও চায় না তোর কাছে ফিরতে।দেখলি এতো দিনে ও ভাবির ফোন নাম্বার টাই অন পেলাম না।এক বার যদি ফোনটা অন করতো তাহলে অন্তত লোকেশন ট্রাক করে পৌছে যেতাম আমরা
-হুম।আমি একটু বেরোচ্ছি
-কোথায় যাচ্ছিস তুই
-অফিসে রিদিতা যেদিন অজ্ঞান হয়ে পরে সেদিন যে ডাক্তার এর কাছে গেছিলাম সে বলেছিল,ওর নাকি লো প্রেসার ।এ মিথ্যা কেন বলেছিল এটাই জানতে যাব
আবেগ আশফি আবেগের বাবা তিন জনেই যেন পরিবার হয়ে উঠেছে।তিনজনে সিলেটে।ঢাকাতে কোন জায়গা বাদ নেই যেখানে রিদিতা কে খোঁজে নি তারা।আবেগ চেয়েছিল পেপারে বিজ্ঞাপন দিতে।কিন্তু আশফি নিষেধ করে।কারণ রিদিতা নিজের ইচ্ছে ই চলে গেছে।নিজের ইচ্ছে তে যে চলে যায় তাকে খুঁজে পাওয়া এতো সহজ নয়
-ডক্টর কেন আমাকে বলেছিলেন যে ওর লো প্রেসার
-সরি মি,চৌধুরি ।কথাটা আমি না আপনার ওয়াইফ ই বলেছিলেন ।আমিতো সত্যি টাই বলতে চেয়েছিলাম
-কি সত্যি
-আপনার ওয়াইফ এর প্রেগন্যান্সি তে ঝুঁকি আছে।ওনার শরীরে ব্লাড এর পরিমাণ প্রয়োজন এর তুলনায় কম।আরো কিছু সমস্যা আছে।আমি ওনাকে বলেছিলাম এখন এবরশন করে এক দুবছর পরে কনসিভ করতে।কারণ ডেলিভারির সময় ওনার লাইফ রিস্ক হতে পারে।কিন্তু উনি আমার কথা শোনেন নি।উনি আপনাকে বলতে নিষেধ করেন।আর তারপর,,
লাইফ রিস্ক কথাটা শুনে আবেগের বুকটা আরো ধক করে উঠলো
-আচ্ছা ডক্টর রিদিতা র শরীর তখন কেমন ছিল।মানে এই সমস্যা ছাড়া
-এই সমস্যা ছাড়া উনি ভালোই ছিলেন।তা ওনার এখন কি অবস্থা ।কোথায় চেকাপ করাচ্ছেন ।ওনার তো ডেলিভারির সময় হয়ে এলো।কেমন আছেন উনি
আবেগ কিছু না বলে হাঁটা শুরু করলো।ডেলিভারির কথা শুনে আবেগের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো
-আমাদের ভালোবাসার জন্য লাইফ রিস্ক ও নিলে রিদি।আর কিছুদিন পর আমাদের ভালোবাসা পৃথিবীতে আসতে চলেছে।আর এই সময়ে তোমার পাশে থাকতে পারলাম না।আল্লাহ্ আর কতো শাস্তি দেবে আমাকে।এবার তো পথ দেখাও
ঐদিকে
-এই রিদি তোর সেই দারোয়ান চাচা তো আর তোর খোঁজ নিলো না।এতোদিন তো খোঁজ নিতো ।হঠাত্ যোগাযোগ বন্ধ করে দিলো
-আরে না আমিই তো সিম ফেলে দিয়ে ছি।উনি কিভাবে যোগাযোগ করবেন।শেষ বার যখন কথা হয়ে ছিল তখন শুনি চাচি র শরীর ভালো নেই।দিশা তোর ফোনটা নিয়ে আয় তো একটু কল করে দেখি।আমার ডায়েরি তে বোধহয় নাম্বার টা আছে যা নিয়ে আয়
রিদিতা দিশার ফোন দিয়ে দারোয়ান কে ফোন দিলো
-হ্যালো কে বলছেন
-চাচা আমি রিদিতা
-তুমি ।কেমন আছো মা।তোমার নাম্বার এ এতো দিন কল দি বন্ধ পাই
-চাচা ভালো আছি।তুমি আর চাচী কেমন আছো
-এই তো ভালো।মা তুমি কোথায় আছো এখন
-এই তো চাচা সিলেটে আমার দিলরুবা আন্টি,,,,,,হ্যালো হ্যালো
ফোন কেটে গেল
-কি রে কি হলো
-আরে জানি না ফোন কেটে গেল।আবার সংযোগ দিচ্ছি তাও বন্ধ
-আচ্ছা পরে কথা বলিস
ঐদিকে দারোয়ান রহিম এর তো মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে
-আল্লাহ্ মোবাইল টা বন্ধ হওয়ার টাইম পেলো না।এখনি চার্জ শেষ হতে হলো।আমি গিয়ে বড় সাহেব কে বলি।যাই হোক এ দিয়ে যদি রিদিতা মা র কাছে যাওয়া যায়
দারোয়ান গিয়ে আবেগের বাবাকে সব জানায়।তিনি সাথে সাথে আবেগকে কল দেন
-হ্যালো আবেগ
-হ্যাঁ বাবা বলো।আবেগ রিদিতা আজ রহিম কে ফোন করেছিল
তারপর আবেগের বাবা সব খুলে বললেন আবেগকে
-বাবা আর দেরী করা ঠিক হবে না।আমি রিদিতা র মাকে ফোন দিচ্ছি ওনারাই ঠিকানা জানবেন
আবেগ রিদিতার মাকে ফোন দিল
-হ্যালো আবেগ বলো।রিদিতা র কোন খোজ পেয়েছো
-দিলরুবা কে মা
-দিলরুবা কেন
-শিগগিরই বলুন।রিদিতা ওনার কাছে আছে।সিলেট এ
-আরে ও তো আমার ছোট বোন।সিলেট এ এই গ্রামে,,,,,,,, থাকে ও।আমার তো মনে ই ছিল না ওর কথা।ওর কাছে রিদিতা যেতে পারে
-তাহলে দেরী নয় আপনি বাবা নিশিতা আপু সবাই চলে আসুন আজ রাতেই যাব আমরা ওখানে
নিশিতা ওর হাসবেন্ড রিদিতা র মা বাবা আবেগের বাবা সবাই ঢাকা থেকে সিলেট এ চলে গেলেন আবেগ আশফির কাছে
-আবেগ চলো ভাই।আর দেরী নয় রিদি র কাছে যেতে হবে
-হ্যাঁ চলুন সবাই
আবেগ ও সবাই বেরোবে হঠাত্ কোথা থেকে লাবনি এসে হাজির হয়
-আবেগ
-এখানে কেনো এসেছেন আপনি
-আমি দারোয়ান এর কাছে গিয়ে কষ্ট এ খবর পেলাম তোমরা না কি রিদিতা র খোঁজ পেয়েছো।আমি তোমাদের সাথে যাব আবেগ।আমি অনেক পাপ করেছি জীবনে।ওর কাছ থেকে ক্ষমা চাইবো ।এক দিন এর জন্য হলেও তো মা বলে আমাকে ডেকে ছিস ।সেই দাবি নিয়ে বলছি আমাকে নিয়ে চল।আমি ক্ষমা চেয়ে চিরদিনের মতো সবার থেকে দূরে চলে যাব
আবেগ কিছু বলতে পারলো না।এক সময় তো এই মহিলা কে ভীষণ ভালোবাসতো।মা বলে ডেকেছিল
-চলুন।কিন্তু রিদিতা র কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না
-আচ্ছা
সবাই রওনা হলো
ভোরের আলো ফুটে গেছে।রিদিতা নামাজ সেরে সেই নীল পানজাবি টা নিয়ে বসেছে।বৃষ্টি র সেই রাতে আবেগ যে ওটা পরেছিল রিদিতা সেটা আর ধুয়ে দেয় নি।আবেগের এর গন্ধ লেগে আছে যে।বালিশের নিচে থেকে ওর কাছে থাকা আবেগের শেষ ছবি টা নিয়ে বুকে জরিয়ে ধরলো।দিশা এলো ঘরে
-প্রতিদিন সকালে এ কেনো ঐ লোকটার মুখ দেখিস বলতো
-জানি না।বড্ড ভালোবাসি যে
-কেন বলেছিলি তো ঘৃনা করবি
-পারিনা রে।যাকে ভালোবাসা যায় তাকে কি ঘৃনা করা সম্ভব
-নে খাবি আয়
-আসছি
রিদিতা খেয়ে ঘরের ভেতর আসতে আসতে পায়চারি করছে
-রিদি বস মা।এতো হাটিস না
-আন্টি আর বসতে ভাল লাগছে না।একটু হাটি।আআআহ
-এই কি হলো
-কি আর হবে।জোরে কিক মেরেছে।যা দুষ্টু হয়ে ছে না
-তা যা বলেছিস ।তোকে খালি কিক দেয়।দেখিস ও খুব দুষ্টু হবে
-আমার ও মনে হয়
আবেগ আর সবাই এসে গাড়ি থেকে নামলো ।দেখা যাচ্ছে এক তলা একটা টিনসেটের বাড়ি ।সবাই এগোচ্ছে দরজার দিকে।আবেগের রিদ স্পন্দন বেরেই যাচ্ছে ।সে চলে এসেছে রিদিতা র কাছে
হঠাত্ দরজায় কেউ বারি দিল
-দিশা দেখতো কে এলো
-আন্টি আমি দেখছি
-তুই বস।তোকে বলেছি না এতো হাঁটা হাটি করবি না।দিশা দেখ
-আসি মা
দিশা দরজা খুলে ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে।দিশা দরজা থেকে সরে এসে রিদিতা র পাশে দাঁড়ালো ।দিলরুবা ও এগিয়ে এসেছে
-কি রে দিশা কে এসেছে
-কে এসেছে দিশা বল তো
দিশা সামনে তাকাতে ইশারা করলো
আসতে আসতে পুরো ঘর মানুষে ভরে গেল।নিশিতা নিশিতা র হাসবেন্ড রিদিতা র মা বাবা আবেগের বাবা আশফি সবাই ঘরে ঢুকলো।সবার শেষে ঢুকলো আবেগ।সবার চোখে পানি চিক চিক করছে
আবেগের ভেতরে ঢুকে রিদিতা কে দেখে কষ্ট টা আরো বেড়ে গেল।রিদিতা পেট ফুলে অনেক বড় হয়েছে।মেক্সি পরেছে ওরনা দিয়ে আবার পেটটা একটু ঢাকা।রিদিতা কে আর আগের মতো লাগছে না।এ পুরো অন্য রিদিতা ।একজন মা
সবার চোখে পানি।হঠাত্ নিশিতা রিদিতা র দিকে এগিয়ে গেল
রিদিতা দিশা দিশা র মা একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে।এতো বড় ধাক্কা সাত সকালে কেউ হজম করতে পারেনি
চলবে——
#LOVE❤
part:24
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
নিশিতা কাঁদতে কাঁদতে রিদিতা কে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।রিদিতা ও নিশিতা কে
-আমি কি মরে গেছিলাম বোন।তুই আমার কাছে কেন যাস নি সেদিন।মা বাবা তোকে যাই বলুক আমি কি কখনো তোকে ফেলেছি।তুই একা এই অবস্থায় কিভাবে,,,,,,কেনো আমার কাছে যাসনি তুই
নিশিতা র হাসবেন্ড ও এগিয়ে এলো
-রিদিতা আমি কি কখনো তোমাকে নিজের বোন ছাড়া আর কিছু ভেবেছি।তুমি কেন আমাদের কাছে যাও নি।আমরা দেখতাম তোমাকে ।কেনো আমাদের পর করে দিলে তুমি
-আমি পর করিনি দুলাভাই ।আমি জানতাম মা বাবা আমাকে ফেললেও নিশিতা আপু তুমি আমাকে ফেলতে না।কিন্তু কি বলোতো মা বলেছিল তোমাদের সাথে যোগাযোগ না করতে তাই আমিও তোমাদের সংসার এ বাধা হতে চাই নি
আশফি এগিয়ে এলো রিদিতা র দিকে
-নিশিতা আপু আপনি একটু সরুন
নিশিতা সরে গেলে আশফি রিদিতা র পায়ের কাছে বসে পরে
-আমাকে ক্ষমা করে দেও রিদিতা ভাবি।আমি জানি আমার পাপের কোন ক্ষমা নেই।কি করবো।তুমি যেমন তোমার বাচ্চা র জন্য লড়াই করেছো আমি ও আমার বাচ্চা র জন্য সেদিন ঐ নাটক করতে বাধ্য হই
-তোমার বাচ্চা
-হ্যাঁ ভাবী আমার বাচ্চা
আশফি রিদিতা কে সব খুলে বলে
-ভাবি মাফ করে দেও আমাকে।আমি যদি জানতাম যে এসব নোভা র কারসাজি আমি কোনদিন তোমার আর আবেগের মাঝে আসতাম না
-ওঠো আশফি ভাই।তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই।আর ক্ষমা তোমাকে অনেক আগেই করে দিয়েছি।দোষ তোমার নয়।দোষ আমার ।আমি অন্ধ ভাবে ভালোবেসেছি বিশ্বাস করেছি।কিন্তু আমাকে কেউ বিশ্বাস করেনি।আর সেজন্য ই আজ ,,,থাক আর বললাম না
রিদিতার মা বাবা এগিয়ে এসে রিদিতা কে জরিয়ে ধরতে গেলে রিদিতা বাধা দেয়
-খবর দার আমার কাছে আসবেন না আপনারা
-রিদিতা ।নিজের মা বাবা কে এভাবে বলতে পারলি
-কিসের মা বাবা ।আমার মা বাবা তো সেদিন ই মরে গেছে যেদিন রাতের অন্ধকারে নিজের অসহায় গর্ভ বতী মেয়ে কে তাড়িয়ে দিয়ে ছিল।আমার মা বাবা সেদিন ই মরে গেছে যেদিন আমি জন্মেছিলাম।তার পর থেকে প্রতি মূহুর্তে আমার ওপর অবহেলা ।মানুষ সৎ ছেলে মেয়ে কেও এতো অবহেলা করে না যতোটা আমি পেয়েছি।আমার কোন মা বাবা নেই
-রিদিতা মাফ করে দে মা ।তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমরা
-কিসের অন্যায়।কোন অন্যায় না।আপনাদের তো একটাই মেয়ে নিশিতা ।আপনাদের আর কোন মেয়ে নেই।থাকলেও সে মরে গেছে ।এটাই তো বলেছিলেন আপনি মিসেস দিলশাদারা
-রিদিতা নিজের মা কে এভাবে কষ্ট দিস না।দোহাই তোর মাফ করে।কোন অজানা জায়গায় এসেছিস তুই।ফিরে চল মা
-কিসের মা।বললাম না আমার মা বাবা নেই।শোনেন নি আপনি।আর অজানা জায়গায় ।অজানা জায়গায় তো এতো বছর ছিলাম ।এখন আছি জানা জায়গায় ।আমার আপনজনের কাছে।যারা আমাকে ফেলতে পারে নি
দিশা র মা এসে রিদিতা কে ধরলো
-মা এতো হাইপার হোস না।তোর শরীর এমনিতেই ভালো নেই
-কি করবো আন্টি ।একটু শান্তি তে ছিলাম ।সেটা ও এদের সহ্য হলো না ।চলেই তো এসেছি।তোমাদের কিছু তো নিয়ে আসিনি।বেরিয়ে যাও সব।বেরিয়ে যাও।আন্টি ওদের যেতে বলো
-তোর আন্টি বললেই আমি যাব নাকি।ও আমাকে আটকানোর কে।আমার মেয়ে কে আমি নিয়ে যাব
-খবর দার।আমার আন্টি র নামে একটা বাজে কথা বলবেন না আপনি।নিজের বোনের সাথে যে এতো জঘন্য কাজ করতে পারে নিজের মেয়ে র সাথে এমন করতে পারে তার কাছে কখনো যাব না
দিশা র মা ও মুখ খুলল
-ওরা বললেই আমি তোকে দেব নাকি।তুই আমার মেয়ে ।আর দিলশাদারা কিসের এতো অধিকার দেখাস তুই।কোথায় ছিল এতো মায়ের দরদ যখন তোর মেয়ে রাস্তায় ঘুরেছিল ।বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে।ও আমার মেয়ে ।আমার যদি ভিক্ষা করে ও ওকে খাওয়া তে হয় তবে তাই খাওয়া বো তবুও ওকে কারোর কাছে যেতে দেব না
আবেগের বাবা রিদিতা র দিকে এগিয়ে এলেন
-রিদিতা মা।ক্ষমা করে দে আমাকে।আমি সেদিন লাবনি র কথা শুনে,,,,,,,
-না বাবা ।আপনার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই।নিজের বাবা র থেকেও ওতটা ভালোবাসা পাই নি যতোটা আপনি দিয়ে ছেন ।ঐরকম অবস্থায় নিজের বাড়ি র বৌকে দেখলে যে কেউ ঐ সিদ্ধান্ত নেবে।আপনার কোন দোষ নেই বাবা ।ভুল ছিল আমার ভালোবাসায়।ক্ষমা চেয়ে আমাকে ছোট করবেন না
এবার সবার শেষে আসলো রিদিতা র সবচেয়ে কাছের মানুষ টি।আবেগ।চোখের পানিতে একাকার হয়ে চলে গেল রিদিতা র কাছে
-রিদিইই
আবেগের ডাক শুনে রিদিতা র বুকের হাহাকার বেরে গেল।আবেগের দিকে তাকালো না রিদিতা
-দিশা আমাকে একটু ঘরে দিয়ে আয়।তাঁর পর এতো মেহমান এসেছে।খালি মুখে তো বিদায় দেওয়া যায় না।কিছু মুখে দিয়ে মেহমান বিদায় দে
বলে রিদিতা ঘুরতে যাবে তার আগে আবেগ গিয়ে দুহাত দিয়ে রিদিতা কে জরিয়ে ধরলো
-রিদি আমার সাথে কথা বলবে না
-,,,,,,,,,
-এই রিদি তোমার আবেগের সাথে কথা বলবে না
-,,,,,,,,
না চাইতেও রিদিতা র চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো।এতোদিন মনে মনে একবার হলেও চাইতো অপেক্ষা করতো প্রতীক্ষা করতো যে আবেগ আসবে।কিন্তু ঐ যে অভিমান ।অভিমান বাধা হয়ে দাঁড়ায়
-এই রিদি কথা বলো না আমার সাথে।আমি যে মরে যাচ্ছি।তুমি কথা বলো না আমার সাথে।এই রিদি
-,,,,,,,,,
-এই রিদি একবার কথা বলো আর অভিমান করে থেকো না।আমি যে তোমার অভিমান মানতে পারছি না।আমার বুক ফেটে যাচ্ছে
-ছাড়ুন আমাকে
-রিদি আমাকে ক্ষমা করে দেও।আমি অনেক বড় ভুল করেছি।ক্ষমা করে দেও
-ছাড়ুন আমাকে।আপনি কোন ভুল করেন নি।ভুল আমি করেছি।পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিন।আমার জন্য আপনার জীবন নষ্ট হয়েছে
-রিদি প্লিজ ভুলে যাও সব।ফিরে চলো।আমরা আবার ভালোবেসে ঘর বাধবো ।আমি তুমি আর আমাদের সন্তান কে নিয়ে
-ভুলতে চাইলেই কি সব ভোলা যায় আবেগ চৌধুরি ।পারবেন আমার জীবনের ঐ কষ্ট এর দিন গুলো মুচে দিতে ।পারবেন আমার হারানো সম্মান ফিরিয়ে দিতে।পারবেন আমার সাজানো সংসার ফিরিয়ে দিতে।যদি পারেন তা হলে বলেন আমি সব ভুলে যাব ফিরে যাব
-রিদি আমি জানি এসব পারব না।কিন্তু বাকী জীবন টা তো সাজাতে পারি বলো।ক্ষমা করে দেও আমাকে।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।আমি মরে যাব তোমাকে ছাড়া
-ও তাই।ভালোবাসেন।কোথায় ছিল এই ভালোবাসা এতদিন যখন রাতের আধারে কুকুর এর মতো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন
রিদিতা এবার ঐ দিন এর পর থেকে সব ঘটনা খুলে বললো
-বলুন এই ভালোবাসা কোথায় ছিল তখন
-রিদিতা আমি তোমার পায়ে পরছি তুমি ক্ষমা করে দেও আমাকে।ফিরে চলো
-দয়া করে ছারুন আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।ছাড়ুন কষ্ট হচ্ছে আমার
আবেগ তাড়াতাড়ি রিদিতা কে ছেড়ে দিল।এই অবস্থায় রিদিতা র কষ্ট হওয়া টা স্বাভাবিক
এমন সময় লাবনি এসে রিদিতা র সামনে দাঁড়ালো
-রিদিতা
-এই মহিলা এখানে কি করছে।আন্টি বের করে দেও একে।তোমরা কেন একে নিয়ে এসেছো।আমার জীবন টা শেষ করে দিয়ে ছে।বের করে দেও এই মহিলা কে
লাবনি গিয়ে আবেগকে সরিয়ে রিদিতা কে জরিয়ে ধরে কান্না তে ভেঙে পরলো
-আমাকে ক্ষমা করে দেও রিদিতা ।তুমি ক্ষমা না করলে মরেও শান্তি পাব না
-ছাড়ুন আমাকে
-ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম
বলেই লাবনি ধাক্কা দিয়ে রিদিতা কে ফেলে দিল।ঘটনা তে সবাই অবাক
-আআআআআআআআআআ
-রিদিতা আআআ আ
অট্টহাসিতে ফেটে পরলো লাবনি
-ভাবলি কি করে ক্ষমা চাইবো তোর কাছে।আমি এসেছি আমার মেয়ে র প্রতিশোধ নিতে।তোর জন্য আমার মেয়ে জেলে।এবার তোর বাচ্চা ও মরবে।হা হা
ফ্লোর এ রক্ত এ ভেসে গেল।আবেগ রিদিতা কে গিয়ে ধরলো।ঘর জুড়ে রিদিতা র আর্তনাদ
-আআআআআআআ আল্লাহ্ হহহহ
চলবে——-