Love Marriage
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ
পর্ব ০৬
দিশা বাবার বাড়ি পৌঁছার কিছুক্ষণ পরেই ইশান ফোন দিলো।
——— তোমরা কবে আসবা?
——— মাত্র আসলাম।
আর তুমি এখনি যাওয়ার কথা বলছো?
——— আমাকে কিন্তু একা একা ভালো লাগছে না।
দিশা হাসতে লাগলো।
দুই তিন ঘন্টায় এই অবস্থা?
তাহলে সাত দিন পরে কি হবে?
——— কি বলছো এসব?
তোমরা সাতদিন থাকবে?
——— তোমার মা তো সেটাই বললো।
তিনি নাকি এক সপ্তাহ থাকবেন।
——— মা আর আপা কে রেখে তুমি চলে এসো।
——— পাগল হইছো তুমি?
আমার বাবার বাড়ি,আর আমিই থাকবো না?
সেটা কি করে হয়?
——— তাহলে কিন্তু আমি এখনি রওনা দিলাম।
——— না,না,আজকে এসো না।
তোমার বাবা কে রান্না করে খাওয়াবে কে?
——— আমি কি বাড়ির কাজের লোক নাকি?
যে রান্না করে খাওয়াতেই হবে?
——— মা কিন্তু রাগ হবে।
তুমি আজকেই এসো না প্লিজ।
মানসম্মানের তো একটা ব্যাপার আছে।
——— রাখো তোমার মানসম্মান।
আমি একা একা থাকতে পারবো না।
আমি আজকেই যাবো।
——— তুমি যদি আজকেই আসো খুব খারাপ হবে কিন্তু।
শুক্রবারে এসো।
এককথা বার বার বলতে হচ্ছে কেনো?
সেই কথা শুনে ইশান ফোন কেটে দিলো।
সে রাগ করে ফোন বন্ধ করে রাখলো।
দিশার খুব খারাপ লাগলো।
সে জানে ইশান তাকে ছাড়া এক মুহুর্ত ও থাকতে পারবে না।
তবুও তাকে সেটা বুঝতে দিলো না।
দিশা বাবার বাড়ি এসেও শান্তি পাচ্ছিলো না।
সবাই খুব খুশি
অনেক আনন্দ করছে।
কিন্তু দিশার মন প্রচন্ড খারাপ।
সেই রাত টা খুব টেনশনে কাটালো দিশা।
কারন ইশানের ফোন তখনও বন্ধ ছিলো।
সকালবেলা ইশানের বাবা অফিস যাওয়ার জন্য বের হলো।
কিন্তু রান্নাঘরে গিয়ে দেখে ইশান ও নাই আর কোনো খাবারের ঘ্রাণ ও পাওয়া যাচ্ছে না।
ইশানের বাবা ইশানের রুমে গেলো।
আর ডাকতে লাগলো।
বাবা,,,,,,,?
বাবা ইশান,,,,,,?
আমার খাবার টা কি রেডি করছিস?
ইশানের কোন সাড়াশব্দই নাই।
ইশানের বাবা আবার ডাক দিলো।
কিন্তু ইশান এবার ও উঠলো না।
ইশানের বাবা এবার ইশানের গা ধরে ঝাকাতে লাগলো।
আমার খাবার কই রাখছিস?
ইশান মাত্র শুয়েছে।
সারারাত সে ঘুমাতে পারি নি।
তাই কাচা ঘুম থেকে উঠে আবোল তাবোল বলতে লাগলো।
ইশানের বাবা বললো আমার খাবার কই?
ইশান বললো খাটের নিচে দেখো।
এই বলে আবার শুয়ে পড়লো।
ইশানের বাবা অবাক হলো।
ঘরে তো বক্স খাট,তাহলে খাটের তলা এলো কোথা থেকে?
ইশানের বাবা ইশান কে টেনে তুললো।
কি বলছিস এসব?
পাগল হয়েছিস নাকি?
ইশান এবার রাগ হলো কি করলে এটা?
কিস টাও করতে দিলে না?
আর এই মেয়েটা এতো দুষ্টু যে খাটের নিচে লুকায়ছে।
তাকে খুঁজতে খুঁজতেই আমার সারাদিন পার হয়ে গেলো।
ইশানের ভাবা হাসতে লাগলো।
এই কি বলছিস এসব?
আমি তোর বাবা।
বউ না।
ইশান চোখ ঘষতে লাগলো।
এতোক্ষনে তার হুঁস হলো।
সে তার বাবা কে দেখে লাফ দিয়ে উঠলো বিছানা দেখে।
——— তুমি এখনি অফিস যাচ্ছো?
——— কয়টা বাজে দেখেছিস সেটা?
——— পাঁচ মিনিট সময় দাও তোমাকে কিছু একটা বানিয়ে দিচ্ছি।
——— থাক লাগবে না আর কষ্ট করতে।
আমি গেলাম।
——— বাবা অন্তত একটু চা খেয়ে যাও।
ইশানের বাবা ভাবলো না খেয়ে কিভাবে থাকবে সে?
অন্তত চা টা একটু খেয়ে যাওয়া যাক।
তাই তিনি থামলেন।
এদিকে ইশান চা পাতি খুঁজে পাচ্ছিলো না।
তার বাবা কে সে ডাক দিলো।
চা পাতি খুঁজে দাও।
তার বাবা বললো আমি কি করে জানবো কই আছে?তুই সবগুলো কৌটার মুখ খুলে খুলে দেখ।
তাহলেই পেয়ে যাবি।
হ্যাঁ ইশান চা পাতি পেয়ে গেলো।
ইশান চা বানাতে শুরু করলো।
ইশানের বাবা শুধু বলছে হইছে?
হইছে?
এখনো হয় নি?
ইশান বললো আরেকটু দাঁড়াও।
——— চা বানাতে এতোক্ষণ সময় লাগে?
——— এই তো হবে এখন?
ইশান তার বাবা কে বললো বাবা চা গুলো ভালো না মনে হয়।
তুমি আসার সময় নতুন চা পাতি আনিও।
ইশানের বাবা বললো কি বলিস এসব?
কালকেই নতুন প্যাকেট এনেছি।
ইশানের বাবা ইশানের কাছে এলো।
এসে দেখে চায়ের কোনো রঙ হয় নি?
——— ১০ মিনিট হয়ে গেলো আর এখন পর্যন্ত চায়ের কালার আসে নি?
——— আমি কি করবো?
তোমার চা যদি ভালো না হয়।
ইশানের বাবা চামুচ দিয়ে তুলে দেখলো।
তিনি হাসতে হাসতে শেষ।
——— তুমি হাসছো কেনো বাবা?
——— বাবা তুই আরেকটু ঘুমিয়ে নে।
তোর ঘুম এখনো ভাংগে নি।
আমি গেলাম।
——— বাবা না খেয়েই যাবে?
——— কি আর করার আছে?
——— কেনো?
চা হচ্ছে তো?
বাবা আগে চা পাতি আর কালোজিরা চিনতে শেখ।
তারপর আমাকে চা বানিয়ে খাওয়াস।
ইশানের বাবা চলে গেলো।
ইশান হাত দিয়ে দেখে হ্যাঁ ঠিকই তো।
এগুলো না কালোজিরা?
সেইজন্য ১০ মিনিট থেকে রান্না করছে তবুও চা এর রঙ আসতেছে না।
ইশান রাগ করে সবকিছু ফেলে দিয়ে ঘরে গিয়ে আবার ঘুমাইলো।
এদিকে দিশার মা কত ধরনের পদ রান্না করছে।
দিশার শাশুড়ী তো সেই খুশি!
কত আদর যত্ন করছে তাদের।
দিশার শুধু আফসোস হচ্ছে।।
ইশান থাকলে অনেক ভালো হতো।
দিশা ইশান কে আবার ফোন দিলো।
কিন্তু ইশান ধরলো না।
সে আবার ফোন অফ করে রাখলো।
দুপুরবেলা ইশানের ঘুম ভাংলো।
তার মনে হলো বাবা তো কিছুক্ষণ পরে দুপুরের খাবার খেতে আসবে।
তাই তাড়াতাড়ি করে রান্না ঘরে গেলো।
এদিকে তার প্রচন্ড ক্ষুধা লাগছে।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর সে বিস্কুটের প্যাকেট পেলো।
সেখান থেকে তিন চার টা বিস্কুট খেলো।
কিছুক্ষণ পর তার বাবা আসলো।
কিন্তু তার বাবার সাথে তার খালাতো বোন তানিয়া কে দেখতে পেলো?
——— তুই কই থেকে আসলি?
——— খালু নিয়ে আসলো।
তোদের বাসায় নাকি কেউ নাই।
——— খুব ভালো করেছিস।
এই রান্না নিয়ে যে ঝামেলার মধ্যে আছি বলে বোঝাতে পারবো না।
——— সবাই চলে গেছে।
আর তোকে রান্না করার জন্য রেখে গেছে?
——— কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি?
একটু দিশার রান্নার কাজ এ সাহায্য করি দেখে এরা ভেবেছে আমি তো সেরা রাধুনি হয়ে গেছি।
তানিয়া হাসতে লাগলো।
তুই তোর বউ কে রান্নার কাজে সাহায্য করিস?
তুই কবে রান্না শিখলি?
——— দূর আমি কি রান্না করতে পারি নাকি?
ইউটিউব এর ভিডিও দেখে দেখে বলি আর দিশা রান্না করে।
——— আমাকে বিয়ে করলে তোর এই কষ্ট টা হতো না।
আমি কত সুন্দর রান্না করতে পারি তা তো জানিস?
——— তোর আর কাজ টা কি?
এই রান্না টায় ভালো পারিস।
পড়াশোনায় তো গোল্লা।
শুধুমাত্র রান্না পারিস দেখে তাই বিয়ে করতে হবে?
——— তুই আমাকে খোটা দিলি?
ইশানের বাবা বললো তানিয়া ঝটপট কিছু করে দে।
আমি আবার অফিসে যাবো।
ইশান তানিয়ার মাথায় একটা টোকা দিলো আর বললো কথা না বলে রান্না কর?
আর বাবার জন্য হালকা পাতলা রান্না করলেও আমার জন্য একটু ভালোমন্দ রান্ধিস।
——— আমি কি তোর বউ নাকি?
তাই হুকুম করছিস?
——— তাহলে কেনো এসেছিস এখানে?
যা চলে যা।
তানিয়া তার খালুকে ডাকতে লাগলো খালু ইশান কিন্তু অপমান করছে।
ইশানের বাবা বললো কি হচ্ছে ইশান?
ঘরে যা।
আর ওকে কাজ করতে দে।
ইশান ঘরে চলে গেলো।
দিশার শাশুড়ী এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে।
দিশার ননদ ও খুব খুশি।
তারা ঠিক করলো বেশ কয়েকদিন থাকবে।
তাছাড়া এখানে থাকতে তাদের ভালোই লাগছে।
কিন্তু দিশার শুধু অস্থির অস্থির লাগছে।
কিছুই ভালো লাগছে না তার।
সে তার শশুড় কে ফোন দিলো।
——— বাবা খাইছো তোমরা?
——— এখনো খাই নি।
তবে রান্না হচ্ছে।
দিশা হাসতে লাগলো।
শেষে ইশান কি বাড়ির রাধুনি হলো নাকি?
দিশার শশুড় বললো সে কথা আর বলিস না।
তোরা এমন রাধুনি রেখে গেছিস যে ১০ টায় ঘুম থেকে ওঠে।
হাজারবার ডাকলেও ঘুম থেকে ওঠে না।
তুই ওকে কি করে সকালে ওঠাস?
দিশা হাসতে লাগলো।
ওকে সকালে ওঠাতে অনেক কষ্ট হয়।
উঠতেই চায় না।
তো দুপুরে কি রান্না করছে?
——— এখনো দেখি নি?
——— ইশান কে একটু ফোন টা দাও না?
ও আমার উপর রেগে আছে।
আমি ওকে এখানে আসতে বারণ করেছি দেখে।
——— চিন্তা করিস না মা?
ওকে আজ পাঠিয়ে দেবো।
——— তুমি খাবে কিভাবে?
——— ইশান আমাকে এখন পর্যন্ত কিছুই রান্না করে খাওয়াতে পারে নি?
সে ঘুমাচ্ছে এখন।
ইশানের বাবা সকালের ঘটনা দিশা কে বললো।
দিশা হাসতে হাসতে শেষ।
হঠাৎ দিশার মনে হলো তাহলে রান্না করছে কে?
দিশার শশুড় তানিয়ার কথা বললো।
তানিয়ার নাম শোনামাত্র দিশার পুরো শরীর জ্বলতে লাগলো।
কারন দিশা এই তানিয়ার কথা অনেক আগেই শুনেছে।
এই তানিয়ার সাথেই ইশানের বিয়ে দেওয়ার জন্য ইশানের মা পাগল হয়ে গেছিলো।
কিন্তু ইশান করে নি।
তখন ইশান বলেছিলো তার গার্লফ্রেন্ড আছে।
তাকে সে বিয়ে করবে।
কিন্তু ইশানের মা রাজি হয় নি।
তাই ইশানের বাবা বলেছিলো ঠিক আছে আমি তাহলে একটা উপাই বের করে দেই।
ইশানের সাথে তানিয়ার বিয়েও হবে না আবার ইশানের গার্লফ্রেন্ড এর সাথেও হবে না।
আমরা সবাই মিলে পছন্দ করে যাকে নিয়ে আসবো তার সাথেই ইশানের বিয়ে হবে।
ইশানের বাবা আর তার বোন দুলাভাই এর সাথে জড়িত ছিলো।
তাই তো ইশান দিশাকে বিয়ে করতে পেরেছে।
ইশানের মা সে কি কান্না!
তার খুব ইচ্ছা ছিলো তানিয়া কে ঘরের বউ করার।
কারন এতো সুন্দর সুন্দর রান্না করে মেয়েটা।
যে একদম মন ভরে যায়।
সব কাজ করতে পারে।
তবে স্টুডেন্ট তেমন একটা ভালো না।
দিশার এবার ইশানের উপর খুব রাগ হলো।
সে ফোন কেনো খুলছে না?
দিশা তার শশুড় কে বললো বাবা ইশান কে একটু ডেকে দেন না?
তার শশুড় ইশান কে ফোন টা দিলো।
ইশানঃহ্যালো?
দিশাঃফোন অফ করে রাখছো কেনো?
ইশানঃকে আছে আমার?
কার জন্য খুলে রাখবো?
দিশা রাগ না দেখিয়ে খুব ভালোভাবে বললো আজ কে তুমি আসতে পারো।
কখন আসবে?
——— যাবো না।
কি দরকার যাওয়ার?
——— এখনো রেগে আছো?
আমি কি করেছি?
——— আমি কখন বললাম রেগে আছি আমি?
আমি যাবো না বলেছি তো যাবো না।
——— কেনো?
——— এমনি।
দিশা এবার তার রাগ কে কন্ট্রোল করতে পারলো না।
সে ইশানের কান ঝালাপালা করে দিলো।
———আমি জানি তো কেনো তুমি আসবে না?
আজ এতো করে আসতে বলছি কিন্তু তুমি আসতে চাচ্ছো না।
অথচ কাল আসার জন্য কত কাহিনী করলে?
আমি কিন্তু বুঝি সব।
কি চলছে তোমার মনে।
——— বুঝলাম না কিছু।
কি বলছো তুমি?
———আমি যাই বলি না কেনো সেটা বাদ দাও।
তুমি আর এক মুহুর্ত ও থাকবে না ওই বাড়িতে।
এখনি চলে এসো এখানে।
———বলছি তো যাবো না।
——— ভালো হবে না কিন্তু।
আমার কথা না শুনলে খুব খারাপ হবে।
——— আজকে এতো তাড়া কেনো?
ব্যাপার কি?
——— কোন ব্যাপার না।
তুমি কখন আসবে সেটা আগে বলো?
——— খুব বেশি মিস করতেছো?
না তানিয়া আসার কথা শুনে জ্বলতেছো?
——— তানিয়া কে?
সে আবার কখন এলো?
——— তুমি তাহলে জানো না ওর কথা।
আমি ভেবেছিলাম তানিয়া আসার কথা শুনে আমাকে আর এ বাড়িতে থাকতে দিচ্ছো না।
দিশার রাগ এবার আরো বেড়ে গেলো।
সে বললো তানিয়া এসেছে তাই কি হয়েছে?
তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই ডাকতেছি।
তুমি কখন আসবা?
তাড়াতাড়ি বলো।
——— আমি যাবো না আজ।
দেখি কাল যেতে পারি কিনা?
———আজ রাতে কি ওই মেয়েটা তোমার সাথে থাকবে?
——— কি বলছো পাগলের মতো?
——— বললাম আজ রাতে কি সে তোমাদের বাড়ি থাকবে?
——— হ্যাঁ।
শুধু আজ রাত কেনো?
তোমরা যতদিন আসো নি ততোদিন সে এখানেই থাকবে।
আমি আরো ভাবছিলাম তোমাকে ফোন করে বলবো যে আর কয়েকটা দিন থাকো তোমরা।
আনন্দ করো।।
বাসায় তো রান্না করা নিয়ে আর কোন টেনশন নাই।
আর ওর হাতের রান্নার যে কি স্বাদ?
বলে বোঝাতে পারবো না।
দিশা রাগ করে বললো শয়তান ছেলে।
বেয়াদব ছেলে।
তোর মনে এই ছিলো?
সেই জন্য আসতে চাচ্ছিস না?
দাঁড়া মজা দেখাচ্ছি।
আর তোকে খাওয়া শিখাচ্ছি।
আমি আজকেই বাসায় যাচ্ছি।
এই বলে দিশা ফোন কেটে দিলো।
ইশান তো সেই লেভেলের খুশি হলো।
লাইনে বলে আসো না?
ইশান তার বাবা কে ধন্যবাদ দিলো।
কি দারুন একটা কাজ করেছে বাবা!
এই বুদ্ধি টা তো তার মাথায় একবার ও আসে নি?
এখন শুধু দিশা কেনো?
দিশার পুরো ফ্যামিলি আসবে?
দিশার এতো রাগ হচ্ছে যে সে ইশান কে আজ হাতের কাছে পেলে কি করতো নিজেও জানে না।
সে কিছুতেই খেতে পারছে না।
শুয়ে থাকতেও তার ইচ্ছা করছে না।
কিছুই ভালো লাগছে না।
এদিকে প্রায় দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলো।
দিশা তার শাশুড়ী কে বললো মা আজকেই আমি বাড়ি যেতে চাচ্ছিলাম?
দিশার শাশুড়ী বললো কিছুক্ষণ পরে সন্ধ্যা হবে।
আজ কিভাবে যাবে?
দিশার সেই কথা শুনে বুক টা ধড়ফড় করতে লাগলো।
ইশান ওই মেয়েটার সাথে একা একা আজ থাকবে?
না এটা হতে পারে না।
সে ইশান কে আবার ফোন দিলো।
——— হ্যালো?
——— কখন আসতিছো?
——— আজ আর কখন যাবো?
কিছুক্ষণ পরেই তো রাত হবে।
——— আমি এতো করে বলার পর ও কেনো আসলে না?
——— আসার জন্য তো একটু সময় লাগবে?
তাই না?
আর যখন তখন ডাকলেই যাওয়া যায় নাকি?
——— আমার কিন্তু খুব রাগ হচ্ছে ইশান।
তুমি আসবে কি না বলো?
হঠাৎ তানিয়া ইশানের রুমে ঢুকলো আর বললো তোর কি কিছু লাগবে?
ইশান দিশা কে রাগানোর জন্য বললো হ্যাঁ লাগবে।
কেমন জানি ঠান্ডা লাগছে।
তাই শরীর টা একটু গরম করতে হবে?
তানিয়া বললো বুঝেছি।
তোর এই অভ্যাস আর গেলো না?
——— যখন বুঝেছিস তাহলে দেরী করছিস কেনো?
তানিয়া চলে গেলো।
দিশাঃতুমি কিসের কথা বললে?
ইশানঃতুমি বুঝবে না এসব।
ঘুমালাম গুড নাইট।
——— দাঁড়াও দাঁড়াও।
কই রাখছো ফোন।
যদি আজ ফোন একবার রাখছো তাহলে খবর আছে।
আজ সারারাত ভিডিও অন করে রাখবে।
——— তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছো?
——— না।
আমার স্বামীর খেয়াল রাখছি।
কারন আশেপাশে তো মশামাছির অভাব নাই।
কখন যে গায়ে বসবে তার ঠিক নাই।
——— তুমি এতোদূর থেকে মশা তাড়াবে?
——— হ্যাঁ।
ইশান হাসতে লাগলো।
তার খুব মজা লাগছে।
এদিকে দিশা তো শুধু জ্বলছে।
ইশান দিশার কথা শুনে ভিডিও অন করে টেবিলে রাখলো।
তানিয়া চা নিয়ে আসলো।
দিশা কে দেখে তানিয়া বললো ভাবি কেমন আছেন?
দিশাঃএই তো ভালো আছি।
তুমি এখনো ঘুমাও নি?
তানিয়াঃনা।
এই তো ঘুমাবো এখন।
দিশাঃঠিক আছে তুমি রুমে গিয়ে শুয়ে পড়।
আর ইশান তুমিও দেরী করো না।
তাড়াতাড়ি দরজা টা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়।
ইশানঃআমি পরে ঘুমাবো।
তুমি আগে ঘুমাও।
দিশাঃএতো বেশি বোঝ কেনো?
যা বলছি সেটাই কর।
তানিয়া হাসতে লাগলো।
এবং আর দেরী না করে চলে গেলো।
ইশান এখনো দরজা লাগায় নি।
দিশাঃকি হলো?
দরজা খোলা কেনো?
ইশানঃএই মেয়েটা আসলেই পাগল।
এই বলে ইশান দরজা লাগিয়ে দিলো।
দিশাঃএবার মোবাইলের ক্যামেরা দরজার মুখ করে রাখো।
আর তুমি ঘুমিয়ে পড়।
ইশান এবার রেগে গেলো।
কি হচ্ছে এসব দিশা?
এমন পাগলামি করছো কেনো?
——— কত করে বললাম আসো আসো।
শুনলে না কেনো?
এখন এসব পাগলামি সহ্য করো।
——–আমি যখন যেতে চাইলাম তখন কি আমায় যেতে দিয়েছো?
এখন এতো অস্থির হচ্ছো কেনো?
এবার পাগলামি করা তুমি থামিয়ে দাও।
আমি বলেছি তো যাবো না।
তো যাবো না।
পারলে তুমি নিজে এসো।
——— তাহলে তুমি আসবে না?
ঠিক আছে আমিও যাবো না।
দেখি কে আসে আগে?
ইশান হাসতে লাগলো।
নিজের অবস্থা দেখেছো?
তারপর ও বলছো কে আগে আসে?
আমি তো যাবোই না।
তোমাকেই আসতে হবে।
চলবে,,,,,,,,,