Love At 1st Sight Season 3 Part – 67

0
6618

Love At 1st Sight
~~~Season 3~~~

Part – 67

writer-Jubaida Sobti

নেহাল : ইই..ইয়াহ! হো..হোয়াট অ্যা বিউটিফুল সারপ্রাইজ!

আসিফ : ইয়েস্! হোয়াট অ্যা বিউটিফুল সারপ্রাইজ, [ বলে বলেই হাসতে লাগলো তিনোটা স্নেহার দিক তাকিয়ে, স্নেহা ও কিছু বললো না, অবাক হয়ে তাকিয়েই যাচ্ছে তাদের কান্ড গুলো ]

শায়লা : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! তোদের মাঝে সব হয়ে গেছে তো তাই না?

– আ..আই মিন! হাজবেন্ড-ওয়াইফ..টাইপ্স! একটা ব..বন্ডিং হয় না? ওসব হ..হয়েছে?

স্নেহা : মানে?

শায়লা : এক্সুলি আমার না এদের বিহেইভিয়ার মোটেও ঠিক লাগছে না, মানে অ..অল ওকে লাগছে না, [ বলতেই হঠাৎ মাথার মধ্যে কেউ একজন টোকা মারলো, সাথেসাথে শায়লা ফিরে তাকাতেই দেখে রাহুল! নাক ফুলিয়ে ভোর নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করছে কি বলছে স্নেহার কানে কানে ]

শায়লা : [ মুচকি হেসে ] কিক..কিছুনা তেমন কিছুনা!

রাহুল : বেড এ চলো দেখিয়ে দিচ্ছি! অল ওকে কিনা!

শায়লা : ছিইইইই! [ বলেই মার্জানকে টেনে স্নেহার পাশে এনে দাড়করিয়ে দিয়ে সে অপোজিট সাইড গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, রাহুল ও হেসে হেসে স্নেহাকে তার আরো কাছে টেনে নিয়ে হাতে হাত মুঠি করে ধরে দাঁড়ায়, স্নেহাও মাথাঘুড়িয়ে আড়চোখে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ চোখ টিপ মেরে ] তোমার ও কোনো ডাওট আছে নাকি এই ব্যাপারে?

স্নেহা : আমার তো ডাওট হচ্ছে আপনার আইটেমটাকে নিয়ে!

রাহুল : হোয়াট, হোয়াট,হোয়াট? স্নেহা তুমিও ওদের মতো..

বলতেই স্টেজের দিক থেকে ঝুমুরের আওয়াজ ভেসে এলো, স্নেহা আর রাহুল ও ফিরে তাকালো, লাল রঙের ঘাগড়া আর মিনি টপ্স পড়ে, কোমোড়ে গোল্ডেন ঝুমুর বেধে দশ-বারো জন সাইড ডান্সাররা কোমোড় ধুলাতে ব্যস্ত, মাঝে সেই ঈশা মেয়েটি সাদা রঙের ঘাগড়া কোমোড়ে সিলভার ঝুমুর, কানে স্পিকার লাগিয়ে নেচে নেচে গান গেয়ে উঠলো
.
.
♪ মেরে বিন সো্নি হে দিল কি রাহে্ ♪
♪ মেরে বিন পিয়াসি্ সা্বকি নিগাহে ♪
♪ জো মিল বলে ভারকে বো আহে ♪

♪ সুনিয়ে ♪

♪ আশিক বানায়া আ~
♪ আশিক বানায়া আ ~
♪ আশিক বানায়া আ ~ আপনে ♪

♪ আশিক বানায়া আ~
♪ আশিক বানায়া আ ~
♪ আশিক বানায়া আ ~ আপনে ♪

♪ দিওয়ানা রুখ্ যা তেরা হাম সে্ সা্মনা হে ♪
♪ আখোসে্ ছুলে ছুনা হাতোসে্ মানা হে ♪

♪ বেচেনিওকা ফাসে্লো কা~
♪ সি্লসি্লা হে ♪
♪ দারদে জিগার কা ~
♪ ইয়ে সা্ভাব হামকো মিলাহে ♪

♪ খাবো মে যো আয়ে যায়ে ♪
♪ পিয়ারে হাম বোহিহে এ~~
♪ হাম কিসি্কো আসা্নিসে্ ♪
♪ মিলতেহি নেহি হে ♪

♪ মেরে বিন শামে হে বেনাজা্রা ♪
♪ মেরে বিন বেজিয়া হার সি্তারা ♪
♪ মেরে বিন ইশকে হে বেসা্রা ♪

♪ সুনিয়ে ♪

♪ আশিক বানায়া আ~
♪ আশিক বানায়া আ ~
♪ আশিক বানায়া আ ~ আপনে

[ তালি দিয়ে উঠলো সবাই ]

রিদোয়ান : [ রাহুলের পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] রাহুল!

রাহুল : হু!

রিদোয়ান : আই নোও হার? কোথায় যেনো দেখেছি দেখেছি মনে হচ্ছে?

আসিফ : হোয়াট অ্যা বেলি ডান্স গাইস্!

নেহাল : ফুল আইটেম দোস্ত!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্টপ ইট গাইস্! [ অবাক হয়ে তাকালো বাকিরা ]

রাহুল : এ..এক্সুলি আই ডোন্ট লাইক দিজ সারপ্রাইজ!

নেহাল : হোয়াই ম্যান?

আসিফ : [ হেসে ] আই নোও! আই নোও! সেই ওল্ড হ্যাবিট মাইন্ডে ডিষ্টার্ব করছে রাইট? আরে দ্যাটস্ ওকে! স্নেহা মাইন্ড করবে না তুই যা,

– তাই না স্নেহা?

স্নেহা : ইয়াহহ! আ..আই হেভ নো প্রবলেম!

রাহুল : ও তাই? কি বুঝে নো প্রবলেম বললা বলো তো?

স্নেহা : মা..মানে?

রাহুল : লিসেন্ট তুমি ওদের কথায় কান দিওনা আমার কথা শুনো..

আসিফ : [ মার্জানকে সরিয়ে স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] আরে শোনার আর না শোনার কি আছে স্নেহা! আমরা তো জাষ্ট মিস্ ঈশার বায়োগ্রাপি বলছি,

– তা..তাই না রাহুল?

রিদোয়ান : আচ্ছা! হ্যা! মনে পড়েছে এইবার! রাহুল এটা ঈশা না? পার্টিতে তুই অলোয়েজ ওকেই তোর পার্টনার বানাতে চাইতি! [ রাহুল কিছু বললো না আড়চোখে তাকিয়ে অন্যপাশ ফিরে গেলো, রিদোয়ান জিহবায় কামড় দিয়ে ফেললো স্নেহার দিক চোখ পড়াতে, আসিফ এবং নেহাল দুজনই হেসে উঠলো ]

নেহাল : এক্সুলি গাইস্ আই ফিল রিগ্রেটিং ফর মাইসেল্ফ!

আসিফ : তা কেনো?

নেহাল : এই যে মনের কথা যাকে বললাম সে তো কিছু বুঝছে না, তাই ভাবছি সারপ্রাইজ আইটেমে রাহুলেরটা না পড়ে যদি আমারটা পড়ে যেতো! তাহলে আমিও দেবদাস হয়ে কিছু চান্স টান্স মারতে পারতাম!

স্নেহা : রাহুলেরটা মানে? আপনারা কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা!

রাহুল : স্নেহা! এরা পাগল হয়েগেছে আসলে! চলো আমরা অন্য কোথাও গিয়ে দাঁড়ায়!

স্নেহা : [ নাকফুলিয়ে ] যখন কথা বলছি তো কথার মাঝে কথা বলবেন না!

রাহুল : ও..ওখেই! [ বলেই অবাক হয়ে ঘুরঘুর চোখে তাকিয়ে থাকে স্নেহার দিক, স্নেহা ক্ষেপেছে তারমানে আজ আর রেহাই নেই রাহুলের ]

স্নেহা : হ্যা! আপনারা কি যেনো বলছিলেন? [ নেহাল, আসিফ, রিদোয়ান তিনজনই রাহুলের চেহেরা দেখে মুখ চেপে ধরে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

জারিফা : মেন্টালের দল সব! কথা বলার আগেই হাসছে!

শায়লা : [ জারিফার কানে ] আই থিং ড্রিংক্স বেশি করে ফেলেছে এরা!

জারিফা : উমম! আমার ও তাই মনে হচ্ছে!

আসিফ : [ হেসে ] আসলে স্নেহা ঈশা হচ্ছে রাহুলের… [ বলেই আবারো কিটকিটিয়ে হেসে দিলো ]

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] লিসেন্ট স্নেহা আমিই বলছি!

– এক্সুলি ঈশা! আমার ফেভারিট ডান্সার ছিলো, আমার ওকে ভালো লাগতো এজ অ্যা আইটেম!

রিদোয়ান : ওয়াও! আইটেম!

রাহুল : উফফ! আ..আই মিন আইটেম ডান্সার! স্নেহা! আইটেম ডান্সার!

আসিফ : [ হেসে ] হ্যাঁ! স্নেহা রাহুলের এমন ফেভারিট আইটেম ডান্সার ছিলো যে, ও তো ওকে নিয়ে রুমে ও..

স্নেহা : [ শকড হয়ে ] রুমে ও?

রাহুল : [ আসিফের গলা চেপে ধরে ] দেখ আসিফ বেশী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু!

স্নেহা : রাহুল! আপনি এমন করছেন কেনো ওনাকে? দেখছেন না কথা বলছি?

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ] বাট স্নেহা ও আমাকে কথা ক্লিয়ার করে বলতে দিচ্ছেনা তো?

স্নেহা : আমি ভালো করেই দেখছি কে কথা ক্লিয়ার করে বলছে আর কে কথা আনক্লিয়ার করে বলছে!

রাহুল : ওখে!

রিদোয়ান : ধ্যাত! আসিফ এমন করছিস কেনো বলতো বেচারাকে! স্নেহা আমি বলছি!

– আসলে আংকেল এর বিজনেস পার্টি গুলোতে ক্লাইন্টদের ওয়েলকাম করার জন্য এমন কিছু আওট কান্ট্রির ডান্সার আনা হতো! তেমনি ঈশাও একজন তুর্কিস ডান্সার! তাই ওর সাথেও পার্টিতে পরিচয়!

আসিফ : [ হেসে ] হ্যা! তারপর ঈশার ডান্স রাহুলকে ফিদাও করে দেই অনেক! [ চোখ টিপ মেরে ] তাই না দোস্ত?

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] স্নেহা! ওসব তো আগে..আই মিন তুমি তো জানোই আগে আমি…

– এক্সুলি ঈশার ডান্স আমার ভালো লাগতো সেটার ও একটা রিজ্ন ছিলো কজ্..

নেহাল : কজ্ ঈশা ইজ ভেরী সেক্সি এন্ড হট!

রাহুল : শাট-আপ নেহাল!

নেহাল : ওকে সরি সরি!

রাহুল : স্নেহা! ঈশা ইজ ভেরী ফ্রেন্ডলি গার্ল! দ্যাটস্ হোয়াই আই লাইকড হার!

আসিফ : ঈশা ইজ ভেরী ফ্রেন্ডলি গার্ল দ্যাটস্ হোয়াই রাহুল ঈশার ডান্স, বেড রুমে নিয়ে গিয়েও দেখতো,

– তাই না রা..হুল?

রাহুল : [ চেচিয়ে ] ঐ!

– এমন ভাব করছিস যেনো শুধু আমি একাই দেখতাম?

– আর এই নেহাল! স্নেহা ওতো একবার ড্রিংক করে করেই দেখছিলো! যদি উল্টোপালটা কিছু হয়ে যেতো?

নেহাল : আরে! তখন তো আমি ইনকোন্সোলেবল ছিলাম! বাচ্চা ছিলাম তাই..

রাহুল : ওহো বস্! তুমি ক্লাস টেন এ ছিলে তখন! দ্যাট মিনস্ নো বাচ্চা! বাচ্চার বাপের বয়সী ছিলা!

– আর আসিফ! স্নেহা ওতো…

আসিফ : ও..ওকে ওকে গাইস্ লেটস্ সেলেব্রেট দ্যা পার্টি! এঞ্জয় এঞ্জয়!

রাহুল : নো নো নো.. কথা এখন নিজের দিকও ছুটছে তাই টপিক চেঞ্জ করা হচ্ছে তাই না?

– দেখ সবগুলো হুশিয়ার থাক,তোদের গুলো ও আমার জানা আছে কিন্তু!

মার্জান : আপনারা, ডান্সারদের পার্সোনাল রুমে এনেও ডান্স দেখতেন ছিইইই!

নেহাল : আরে পার্সোনাল রুম না, ওটা ব্যাংকক এর শাংরিলা হোটেল ছিলো!

মার্জান : হোটেল হোক আর যাই হোক, ওখানের রুম গুলোওতো পার্সোনাল ভাবে বুকিং করে নেওয়া হয় তাই না মিষ্টার অষ্ট্রেলিয়া?

নেহাল : ই..ইয়াহ!

স্নেহা : ছিঃ রাহুল!

রাহুল : আরে এতো ছিঃ ছিঃ করছো কেনো তোমরা? জাষ্ট ডান্সই তো দেখেছিলাম,অন্য কিছু হলে একটা কথা ছিলো… [ স্নেহা আড়চোখে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক ]

রাহুল : ওহো স্নেহা এভাবে তাকাচ্ছো কেনো! ইয়র প্রমিস্ জাষ্ট ডান্সই দেখেছিলাম!

নেহাল : গাইস্ ঈশা ইজ কামিং! [ সবাই একত্রে তাকালো সামনের দিক ]

ঈশা : মারহাবা!

নেহাল : মারহাবা! মারহাবা! [ আসিফ, রিদোয়ান, রাহুল ও হ্যান্ডশেক করে হাই, হ্যালো করলো ঈশার সাথে ]

ঈশা : নেসি্লসি্ন এদেমার!

আসিফ : ইয়াহ উই আর অলরাইট! হাউ এবাউট ইউ?

ঈশা : বেন ইয়িয়িম!

নেহাল : ইউ লুক গরজিয়াস্ ঈশা!

ঈশা : [ মুচকি হেসে ] চোক তেশেক্কুর এদেরিম ভে,নেহাল! আইরিজা ইয়াকিসিক্লি গোরুনোইয়োরসুন!

নেহাল : [ কনফিউজড হয়ে ] ইই..ইয়া..ইয়াহ!

রাহুল : [ নেহালের মাথায় বাড়ি দিয়ে ] কি বুঝে ইয়া..ইয়াহ করছিস বলতো?

নেহাল : [ রাহুলের কানে ] ব্রো কি কি যেনো, বলে ফেললো বুঝলাম না তো!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] শি সেইস্ থেংক ইউ ভেরী মাচ নেহাল! ইউ লুক হ্যান্ডসাম অলসো্!

নেহাল : অহ ইয়াহহ! থেংক ইউ টু ইউ টু ঈশা!

ঈশা : সিনি চোক ওযলেদিম রাহুল!

স্নেহা : [ আসিফের দিক ফিসফিসিয়ে ] রাহুলের কথা কি বলছে ও?

আসিফ : আই মিসড ইউ সো্ মাচ রাহুল!

স্নেহা : হুহ! [ বলেই রাহুলের দিক নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকে ]

রাহুল : আম সো্ গ্লেড ইউ কেম ঈশা!

ঈশা : কারিন চোক গুযেল রাহুল!

স্নেহা : [ আসিফকে ফিসফিসিয়ে ] এখন কি বললো?

আসিফ : ইয়র ওয়াইফ ইজ সো্ বিউটিফুল রাহুল! [ বলতেই স্নেহা আড়চোখে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে হেসে ] ইয়াহ শি ইজ!

ঈশা : আহ ইভেত! [ বলেই স্নেহার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে ] আম ঈশা!

স্নেহা : হ্যালো স্নেহা!

ঈশা : ত্যানিশতিমা মিমনাম অলদাম! [ স্নেহার মাথায় কিছু ঢুকলো না, কনফিউজড হয়ে ধীরেধীরে রাহুলের দিক তাকালো ]

রাহুল : [ হেসে ] নাইস্ টু মিট ইউ!

স্নেহা : ওহ! [ বলেই ঈশার দিক তাকিয়ে ] নাইস টু মিট ইউ টু!

রাহুল : অহ রিয়েলি? [ স্নেহা নাকফুলিয়ে তাকালো রাহুলের দিক, বাকিরা হেসে উঠলো ]

ঈশা : তেব্রিকলের মুতলু ইভ্লি হায়াত ইকিনিযদি!

রাহুল : থেংক ইউ ভেরী মাচ!

জারিফা : [ আসিফের দিক ফিসফিসিয়ে ] কি বললো এখন উনি? কিছু বুঝছি না তো!

আসিফ : [ হেসে ] রাহুল আর স্নেহাকে কনগ্রেচুলেশন আর হ্যাপি ম্যারেড লাইফ বলেছে!

জারিফা : ইয়া আল্লাহ! আমিতো ভাবলাম কার হায়াত মতের কথা বলছে [ বলেই কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো, বাকিরা অবাক হয়ে তাকালো জারিফার দিক, জারিফাও তাড়াতাড়ি লজ্জা পেয়ে নিজের মুখ নিজে চেপে ধরে ফেললো ]

ঈশা : তামাম সি্মদি গিতমিলিয়িম! হেদি ওযা্মান!

– হোসচেকালিন মিল্লিত!

জারিফা : এবার কি বললো?

আসিফ : ওর এখন যেতে হবে, আর সবাইকে বাই বলেছে!

রাহুল : ওখে বাই ঈশা!

আসিফ : বাইইই! [ নেহাল আর রিদোয়ান ও হাত নাড়ালো, ঈশাও বাকিদের হাত নাড়িয়ে চলে গেলো ]

শায়লা : যে যাই বলো না কেনো! আমার কিন্তু মাস্ত লেগেছে এই ঈশাকে!

জারিফা : আমার তো সবই ভালো লেগেছে কিন্তু ওর লেংগুএজ গুলো সব মাথার উপর দিয়েই গেছে! [ বাকিরা হেসে উঠলো, রাহুল ও হেসে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা বুঝতে পেরে মনে মনে হেসে অন্যপাশ ফিরে রইলো ]

রাহুল : [ স্নেহার কানে ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা!

স্নেহা : হু?

রাহুল : এদিক তাকাও!

স্নেহা : উমহুম!

রাহুল : এখনো রেগে আছো? [ কিছু বললো না স্নেহা, সামনের দিক চলে গেলো হেটে ]

রাহুল : [ পেছন থেকে স্নেহার হাত টেনে ধরে ] স্নেহা! রিজন কি রাগ করার?

স্নেহা : এখনো রিজন খুজছেন কেনো রাগ করেছি?

রাহুল : [ মুখ গোমড়া করে ] বাট স্নেহা! শুধু ডান্সই দেখেছিলাম আর কোনো কিছুর ইন্টেনশন ছিলো না ট্রাষ্ট মি!

স্নেহা : ডান্স দেখেছিলেন! তাও আবার পার্সোনাল রুমে!

রাহুল : পাষ্ট স্নেহা! ত..তখন আসলে,এসবকেই লাইফ ভাবতাম..

স্নেহা : ভুল করেছেন রাহুল! পানিশমেন্ট তো মিলবেই!

রাহুল : তুমি যে পানিশমেন্টই দাও না কেনো, আমার কাছে তো সবই তোমার ভালোবাসা মনে হবে স্নেহা!

স্নেহা : কথাটা ফুল্লিশ লাগলো মিষ্টার রাহুল! [ বলেই হাত ছুটিয়ে সামনের দিক পা বাড়াতেই হঠাৎ ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] ওকে স্নেহা! বাট কি করতে হবে সেটা তো বলো! [ বলেই থমকে যায়, স্নেহা ও শকড হয়ে পেছন ফিরে তাকালো, রাহুল আড়চোখে চারদিক চোখবুলিয়ে দেখছে আশেপাশের সবাই ও কৌতুহলিভাবে তাকিয়ে রয়েছে তাদের দুজনের দিক, আওয়াজটা বেশি জোড়েই হয়ে গেলো বুঝি!

দূর থেকে রাহুলের মা ইশারা দিয়ে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে, রাহুল মাথা নাড়িয়ে জানালো কিছু হয়নি, কি আর করার রাহুলেরও পরিস্থিতি এমন বিপদে ফেলে দিয়েছে, সামলাতে ওতো হবে এইবার, বুদ্ধি এলো মাথায়, তাই পকেট থেকে মাউথ স্পিকারটা এগিয়ে নিয়ে কানে লাগিয়ে বলে উঠলো ]

রাহুল : এটেনশন এভ্রিওয়ান! আই হেভ ওয়ান রিকোয়েষ্ট ফর বোথ কাপল!

– সবাই যেনো তার পার্টনারদের সাথে নিয়ে ডান্সিং সাইড চলে আসে!

[ বলেই রাহুল স্নেহাকে চোখ টিপ মেরে,তার মায়ের কাছে এগিয়ে গিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে ডান্স ফ্লোরের দিক চলে আসে, বাকিরাও ধীরেধীরে এসে জড়ো হচ্ছে এক এক করে, সফট টোন বাজছে, জারিফাও রিদোয়ানকে টেনে নিয়ে দাড়ালো ]

আসিফ : [ মার্জানের কাছাকাছি এসে ] কেন আই ডান্স উইদ ইউ! [ অবাক হয়ে তাকালো মার্জান ]

আসিফ : ইফ ইউ হেভ নো প্রবলেম মিস্ এংগড়ি বার্ড! [ লজ্জা পেয়ে মৃদু হেসে পাশ ফিরে গেলো মার্জান, তখনি নেহাল এসে মার্জানের দিক হাত বাড়ালো মার্জান ও আসিফকে মুখ ভেংগিয়ে নেহালের হাতে হাত রেখে ডান্স ফ্লোরের দিক চলে গেলো, আসিফের ও কি আর করার মুচকি হাসলো আগেই জানতো এই মিস্ এংড়ি বার্ড এতো সহজে মেনে নেওয়ার পাত্র নয়, তাই সে শায়লাকেই জোড় করে টেনে নিয়ে গেলো ডান্স ফ্লোরে ]

রাহুলের বাবা : [ স্নেহার পাশে এসে দাঁড়িয়ে ] কি সেল্ফিস দেখেছো স্নেহা!

– গতরাত ও আমায় বলেছিলো চান্সটা আমায় দিবে,কিন্তু এখন দেখছো উল্টো ওরা মা ছেলে ডান্স করছে!

স্নেহা : ডোন্ট ওয়ারি আংকেল! করছে তো কি হয়েছে? আমরাও দাঁড়িয়ে থাকবো কেনো? লেটস্ ডান্স!

রাহুলের বাবা : শিয়র! বাট ডিয়ার ডোন্ট কল মি আংকেল! ওকে?

স্নেহা : [ মৃদু হেসে ] ওকে বা..বাবা!

রাহুল : দ্যাটস্ মাই গার্ল! [ বলেই হাত এগিয়ে দিলো, স্নেহাও হাতে হাত রেখে রাহুলের দিক তাকালো, তেডি স্মাইল দিয়ে দূর থেকে তাকিয়ে আছে রাহুল, এতোটাই কিউট লাগছিলো স্নেহার,ইচ্ছে তো করছিলো যেনো গালটা রাহুলের টেনে দিয়ে একটি চুমু খাবে,কিন্তু এইসময় তা কিভাবে সম্ভব, তাই উল্টো রাহুলকে মুখটা ভেংগিয়ে দিয়েই ডান্সে জয়েন করলো ]

বাকিরাও করছে, সফটেড টোনের সাথে তাল মিলিয়ে, সবাই তাদের পার্টনার ও এক্সচেঞ্জ করছে,নেহালের তো অপেক্ষায় সইছে না কখন যে শায়লা এক্সচেঞ্জ হয়ে তার কাছে আসবে,তেমনি আসিফ ও অপেক্ষার প্রহর গুনছে,কখন তার মিস্ এংড়ি বার্ডটা এক্সচেঞ্জ হয়ে তার দিক আসবে,

আর এইদিকে, রাহুল তার বাবাকে চোখনাড়িয়ে ইশারা করছে যেনো স্নেহাকে কারো কাছে এক্সচেঞ্জ না করে, বুঝতে পেরে হাসলো রাহুলের বাবা ও, রাহুল ও পার্টনার এক্সচেঞ্জ না করে, তার মা কে নিয়ে প্রত্যেকটা ডান্স স্টেপের রুলস্ ভংগ করে করেই তার বাবার পাশের স্টেপে এসে দাড়ালো,

এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে রাহুল চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো সবাই সবার ক্যারেকট পার্টনার নিয়ে নিয়েই ডান্স করছে ঐ সময়,

আসিফ তো মার্জানকে পেয়ে ছাড়ছেই না, রিদোয়ানও আছেই জারিফাকে নিয়ে, নেহালের কাছেও রয়েছে শায়লা তাও জোড়াজোড়িতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে,

দেরী করলো না আর রাহুল ও,চোখ টিপ মারলো তার বাবাকে, সাথেসাথেই রাহুলের বাবা স্নেহার হাত ধরে ঘুরিয়ে রাহুলের দিক পাঠিয়ে দিলো, আর রাহুল ও তার মাকে ঘুরিয়ে তার বাবার দিক পাঠিয়ে দিলো ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] অল দ্যা বেষ্ট গাইস্ [ নাক ফুলিয়ে তাকালো রাহুলের মা,রাহুলের দিক ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] পার্ফেক্ট মা! [ বলেই চোখ নাড়িয়ে ইশারা করে বুঝালো, আশেপাশের সবাই দেখছে, তাই যেনো নরমাল থাকে ]

রাহুলের মা : [ বিরবির করে ] স্টুপিড!

স্নেহা : আপনি চিটিং করেছেন, এটা স্টেপ ব্রেক ছিলো! পার্টনার এপাশ থেকে নয় ওপাশ থেকে চেঞ্জ হয়,

রাহুল : ওহো ডান্সার মেম! আম সরি বাট! এটা করেছি কারণ ওদের দুজনকে একত্রে করার জন্য!

স্নেহা : [ পাশ ফিরে তাকিয়ে ] আরে হ্যাঁ! আমার তো খেয়ালই হয়নি!

– দেখেন রাহুল! বাবাকে কি খুশিই লাগছে তাই না?

রাহুল : হুমম!

স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে, কাধে চিমটি কেটে ] কিন্তু আপনি ভাববেন না আমি এখনো আপনার উপর রাগ করে নেই! আ..আমি কিন্তু রেগে আছি মিষ্টার রাহুল!

রাহুল : [ হাত দিয়ে স্নেহার কোমোড়ে চাপ মেরে ] তা কি করলে আপনার রাগ কাটবে শুনি?

স্নেহা : লজ্জা করে না আপনার? কেউ দেখলে?

রাহুল : সো্ হোয়াট? আমার বউ! আমি না করলে কে করবে?

স্নেহা : ব্যাস্ ব্যাস্! আই আন্ডারস্ট্যান্ড!

[ হাসলো রাহুল, আবারো আলতো করে চাপ দিলো স্নেহার কোমোড়ে ]

স্নেহা : রাহুলল!

রাহুল : এতো সফট কেনো তুমি?

স্নেহা : [ আশেপাশে একবার তাকিয়ে ] স্টপ ইট রাহুল!

রাহুল : আজ কিন্তু কোনো বাহানা চলবে না স্নেহা!

লজ্জায় মাথা নুয়ে রাখলো স্নেহা! ইচ্ছে তো করছিলো যেনো মাটি কুড়ে ঐদিকটাই ঢুকে যাবে,কিন্তু এই রাহুলটাও এসব বলতে কোনোদিক দিয়ে ছাড়ছে না, রাহুলের ও ভালোই লাগছিলো স্নেহার এভাবে করে লজ্জা পাওয়াটা

আর কিছু বললো না সে ও, মাউথ স্পিকারটা সোজা করে নিলো মুখের উপর, তাকিয়ে আছে স্নেহাও অবাক হয়ে, পকেট থেকে স্নেহার মোবাইলটা বের করে কি কি নাম্বার যেনো ডায়াল করলো,সাথেসাথেই সফটেড টোনটা বন্ধ হয়ে, টুট…টুট…টুট করে ফোনের রিং যাওয়ার সাউন্ড বেজে উঠলো, বাকিরাও থেমে গিয়ে এদিকওদিক তাকাতে লাগলো..

মিউজিশিয়ান : হ্যালো!

রাহুল : হ্যালো! মিউজিশিয়ানস্! হ্যালো-হ্যালো-হ্যালো! [ স্নেহা হাসবে নাকি অবাক হবে বুঝতে পারছে না রাহুলের কান্ডে ]

মিউজিশিয়ান : সাউন্ডস গুড?

রাহুল : সাউন্ডস গুড, বাট টোন চেঞ্জ! বিকজ আম গোন্না সিংগিং অ্যা সং ফর মাই লাভলি ওয়াইফ!

মিউজিশিয়ান : সুপার্ভ,আই প্লে ইট!

[ বলতেই বেজে উঠলো মিউজিক টোন আবারো, রাহুল স্নেহার কোমোড়ে স্লাইড করে ধরে নাচাতে লাগলো, ভালো লাগছিলো স্নেহার ও তাই সেও রাহুলের হাতের ইশারার সাথে তাল মিলিয়ে মিলিয়ে নেচে যাচ্ছে, কিছু সময় পরই রাহুল গেয়ে উঠলো ]

♪ যাব কই বাত্ বিগাড় যায়ে ♪
♪ যাব কই মুশকিল পাড় যায়ে ♪
♪ তুম দেনা সা্থে মেরা আ ~~
♪ ও হামনাভা আ~~

♪ যাব কই বাত্ বিগাড় যায়ে ♪
♪ যাব কই মুশকিল পাড় যায়ে ♪
♪ তুম দেনা সা্থে মেরা আ ~~
♪ ও হামনাভা আ~~

♪ হো চান্দেনী জাবতাক রাত ♪
♪ দেতা হে হার কয়ি সা্থ ♪
♪ তুম মাগার আন্ধেরোমে এ~~
♪ না ছোড়ে না মেরা হাত ♪

♪ হো চান্দেনী জাবতাক রাত ♪
♪ দেতা হে হার কয়ি সা্থ ♪
♪ তুম মাগার আন্ধেরোমে এ~~
♪ না ছোড়ে না মেরা হাত ♪

♪ না কয়ি হে, না কয়ি থা ♪
♪ জিন্দেগী মে, তুমহারে সি্ভা ♪
♪ তুম দেনা সা্থে মেরা ♪
♪ ও হামনাভা আ~

[ গান শেষ করেই, রাহুল একটানে ঘুড়িয়ে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে ফেললো স্নেহাকে, স্নেহা ও ব্যালেন্স রাখতে না পেরে রাহুলের বুকে মাথা ঢলে দিয়ে, হাত দিয়ে কোর্টটা শক্ত করে মুচড়ে ধরে ফেলেছে, দীর্ঘশ্বাস নিচ্ছে দুজনই, চারদিক থেকে কড়া তালি আর শিস বাজাচ্ছে সকলেই, লজ্জায় স্নেহা পারছে না যেনো রাহুলের পাজরে এক্কেবারের জন্যই ঢুকে পড়বে, মুচকি হাসছে রাহুলও স্নেহার কান্ড দেখে ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা ধীরেধীরে মাথা তুলে তাকালো রাহুলের দিক, রাহুল মৃদু হেসে স্নেহার সামনে চলে আসা চুলগুলো সব আলতো করে করেই কানে গুজে দিচ্ছিলো,

ভালো লাগে স্নেহার,ভীষণ ভালো লাগে তখনি, যখন রাহুল এভাবেই তার চুলগুলো কানে গুজেদেই! মন ছুয়ে যায় স্নেহার,ভীষণভাবেই মনটা ছুয়ে যায় ঠিক তখনি, যখন রাহুলের এতোটা কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থেকে তার পার্ফিউম স্মেলটা নিশ্বাসে টেনে নেই!

নিজেকে ভীষণ ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে আজ স্নেহার! খুব প্রাউড ফিলও হচ্ছে, কারণ এই রাহুল যে শুধু তারই, আর কারোই না!

একটি সুখের জীবন বলতে স্নেহা পেয়েই গেছে,আর কিছুই চাইনা তার!

তবে এই সুখ রবে তো স্নেহার কপালে?এই ভেবেই মুখটা গোমড়া করে ফেললো স্নেহা!

রাহুল : এতো কিউট করে তাকিয়ে থেকোনা স্নেহা! আমার কিন্তু তোমার এই কিউট এক্সপ্রেশন গুলোতে আনলিমিটেড কিস্ দিতে মন চাই!

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে