Love At 1st Sight Season 3 Part – 62

0
6018

Love At 1st Sight
~~~ Season 3 ~~~

Part – 62

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : ইডিয়ট [ বলেই রেগে স্নেহার কাছাকাছি আসতেই স্নেহা ভয়ে পিছিয়ে যায় ] তোমাকে কিছু বলেছে কি বলেনি তা আমি ভালোকরেই বুঝতে পারছি,

– তোমার মুখ ছিলো না জবাব দাওনি কেনো?

– ওর বাপের খাচ্ছো? হ্যা? ওর বাপের জবানা শেষ, আমার বাপের খাচ্ছো! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে বেরুতেই যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : [ রাহুল থেকে হাত ছুটিয়ে ] পাগল হয়েগেছেন আপনি? কি এসব বলছেন?

[ রাহুল অবাক হয়ে ফিরে তাকালো স্নেহার দিক, স্নেহা পলক ঝুকিয়ে নিলো রাহুলের এই চাহনিতে, চোখ মেলাতে পারছিলো না সে,কেনো যেনো রাহুলের চোখের দিক তাকিয়ে মিথ্যে বলাটা তার দমচাপিয়ে রাখার মতোই হয়, এক পা এগিয়ে রাহুলের বরাবরই দাঁড়িয়েছে, জ্যাকেট ধরে ঠিক করে দিতে দিতেই বললো ]

স্নেহা : জা..জানেন! কাল রিসিপশানে আপনাকে ব্লাক কোর্টটাই প্রিন্সের মতোই লাগবে, টাট..টাইটানিক মুভিতে জেক পড়ে না, ঐরকমই!

– নাহ, আ..আপনাকে না জেক এর চেয়ে আরেকটু বেশিই হ্যান্ডসাম লাগবে! কা..কারণ জেকের হেয়ার স্টাইলটা না কেমন যেনো, আমার মোটেও পছন্দ না, [ মাথা তুলে তাকিয়ে রাহুলের কপালে বিছিয়ে থাকা চুল গুলোর উপর হাত বুলাতে বুলাতে ] আপনার হেয়ার স্টাইলটা আমার খুব পছন্দ, কিছু উঠানো কিছু বসানো, আর কপালে ছিটিয়ে থাকা এই চুল গুলো ও!

– ও হ্যা! আমার গাউনটাও না একদম প্রিন্সেস স্টাইলের, কালারটা আপনার হোয়াইট শার্টের সাথেই ম্যাচ করা, [ মৃদু হেসে ] অবশ্য আমার স্টাইলিশ মাদার-ইন-লো এর পছন্দ বলে কথা!

– আ..আচ্ছা! আপনার তো কাপড় গুলো দেখাই হলো না, চলেন আমি দেখাচ্ছি! [ বলেই পাশফিরে এগিয়ে গেলো আলমিরার দিক, আলমিরার দরজা খুলতেই, হঠাৎ পেছন থেকে রাহুল হনহনিয়ে এগিয়ে এসে ধুম করেই লাগিয়ে দিলো দরজাটা, চোখ দুটো বড় করে চমকে কেপে উঠলো স্নেহা,দরজার উপর রাহুলের রাগান্বিত ভাবে চেপে রাখা হাতটির দিক তাকিয়ে আছে নিস্থব্দতা নিয়ে ]

রাহুল : [ দাতে দাত ঘেষে ] স্টপ ইট! স্নেহা! টপিক চেঞ্জ করার কোনো দরকার মনে করছি না, গীতালি আমাকে সব বলেছে, [ স্নেহা ধীরেধীরে ফিরে তাকালো রাহুলের দিক, চোখে যেনো আগুন জ্বলছে রাহুলের, কি ভয়ংকর চাহনি ]

রাহুল : রাগ তুলোনা স্নেহা! আমার, [ স্নেহা ঢোগ গিলে অবাক হয়েই তাকিয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলো, আরে বাপরে! রাগ নাকি উঠেনি এখনো আর এই অবস্থায় এমন বিহেভ করছে, তাহলে না জানি রাগ উঠলে কেমন করে ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার ফ্রেন্ডসরা নিজ ইচ্ছায় এইখানে আসেনি, ওদের আমি এনেছিলাম,দ্যাট মিনস্ ওদের টেক কেয়ার করার রেস্পন্সিবিলিটি আমার ছিলো, আর আমার রেস্পন্সিবিলিটি মানে তোমারই, সো্ তুমি ওদের এইভাবে কেমনি যেতে দিলা?

– [ বিরক্তিবোধ হয়ে ] আর ওদের আমি আনি বা নাই আনি, ওরা নিজ ইচ্ছায় আসলেও ওনার কোনো অধিকার নেই ওদের ইন্সাল্ট করার!

– [ স্নেহার মুখের সামনে আংগুল তুলে ] আর তুমি!

– মিসেস রাহুল! বেয়ার ইন মাইন্ড, ওকে? [ স্নেহা ঢোগ গিললো ]

– সো্ লেটস্ কাম উইথ মি! [ বলেই রাহুল স্নেহার হাত ধরে টেনে বেরুতে যাচ্ছিলো তখনিই ]

স্নেহা : রাহুল! কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

রাহুল : এক্ষুণিই তো বললাম! ভুলে গেছো? তুমি মিসেস রাহুল! আর মিসেস রাহুল জবাব শুনবে না জবাব দেবে! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি বাধাগ্রস্থ করে রাহুলের সামনে এসে দু’হাত ছড়িয়ে দাঁড়ায় ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হোয়াট আর ইউ ডুয়িং স্নেহা?

স্নেহা : দেদ..দেখেন রাহুল! কাল রিসিপশানের আয়োজন নিয়ে সবাই কতো খুশি, আর আজ আপনার আর আপনার বাবার এক হোওয়া নিয়ে দাদী যেনো হাজার বছরের সুখ ফিরে পেয়েছে, প্লিজ এমন কিছুই করবেন না, আ..আজ রাত আর কালকের দিনটাই তো! এরপর ওরা চলে যাবে, হাসিমুখে এসেছে ওনিও, এইসময় এমন কিছু বললে মনে কষ্ট নিয়েই যাবে তখন..

রাহুল : জাষ্ট শাট-আপ স্নেহা! কার মনে কি কষ্ট নিবে আই ডোন্ট কেয়ার!

স্নেহা : বাট! রাহুল আপনি..

রাহুল : তুমিও তো কষ্ট পেয়েছো স্নেহা! তোমাকে বলার সময় ভেবে দেখেছেন ওনি?

স্নেহা : আমি কষ্ট পাইনি রাহুল! কারণ ওনি সব ঠিকই তো বলেছে, আমি আসলেই লাকি আপনাকে পেয়ে! আর আপনি আনলাকি কাক..কারণ আপনি আরো রিচ ফ্যামিলির মেয়ে ডিজার্ব করেন!

– আ..আসলেই আপনার ফ্যামিলি,আপনি, আপনাদের যা কিছুই আছে এই অনুযায়ী আমি কিছুই না রাহুল! [ বলতেই রাহুল রাগান্বিত ভাবে নাক-ফুলিয়ে স্নেহার হাত ধরে টেনে আলমিরার সাথে লাগিয়ে দাড় করাই ]

স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] আরেহ!..

রাহুল : [ চেচিয়ে ] আমাকে এক্সপ্লেইন করার দরকার নেই তোমার স্নেহা! এন্ড নেক্সট টাইম এইধরনের কথা গুলো বলা তো দূরের কথা তোমার এই [ স্নেহার মাথায় ঠোকা মেরে ] ফুলিশ-থিংকিং এ ও আনবা না! গেট ইট?

– আর হ্যাঁ! তোমার যাওয়া লাগবে না, ওনাকে তো জবাব এখন আমিই দিবো!

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে ] ডোন্ট গো রাহুল, প্লিজ! [ থামলো না রাহুল স্নেহার হাত সরিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, মনটা ছটফট করছে স্নেহার, রাহুল ফুফিকে গিয়ে নাজানি কি না কি বলে, দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে দাড়ালো সে ও, ততোক্ষণে রাহুল শিরি দিয়ে নেমে পড়ছে ]

গীতালি : [ চেচিয়ে ] ও! দাদী রাহুল ভাইয়া আইয়া পড়ছে আর ডাকতে অইবো না! [ দাদী শিরির দিক তাকাতেই দেখে রাহুল নেমে এগিয়ে আসছে, ডাইনিং টেবিলে বসে আছে বাকিরাও, না পারতে দাদীর জোড়ে খেতে বসেছে নেহাল ও ]

গীতালি : ভাইয়া! ভা..ভাবী করবো না..ডিনার? [ রাহুল চেয়ার টেনে বসলো টেবিলে ]

দাদী : রাহুল! স্নেহা কোথায়?

রাহুল : করবেনা এইখানে ডিনার, ভালো লাগছে না তাই, বেড রুমেই পাঠিয়ে দিতে বলেছে! ভালো লাগলে খাবে,

নাফিসা ফুফি : [ মুচকি হেসে ] প্রথম দিনেই অর্ডার প্রেস! গ্রেট, বাট রাহুল নতুন বউ হিসেবে ওর উচিৎ আজ আমাদের সাথে এইখানে বসে ডিনার করা, আর না করলেও অন্তত আমাদের সার্ব করতে আসতে পারতো!

রাহুল : সার্ব করবে? কেনো এইখানে সবাই কি প্যারালাইসে এফেক্টেড? যে নিজ হাতে সার্ব করে নিয়ে খেতে পারবে না?

নাফিসা ফুফি : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] কেউই প্যারালাইসিস এফেক্টেট না রাহুল! এটা একটা অবজারভেন্স!

রাহুল : ও সিরিয়াসলি? এতো বছর অষ্ট্রেলিয়া থেকেও এই অবজারভেন্স নিয়ে পড়ে আছো? ফুফি আই থট তোমার মাইন্ড তোমার মতোই স্মার্টলি থিংকিং হবে!

– হাহ! বাট আই ওয়াজ রোং! আসলে বাংগালীর ব্লাড বলে কথা, তাই যতোই আপডেট হোকনা কেনো এসব অবজারভেন্স গুলো কখনোই ভুলবে না!

লিনিসা ফুফি : রাহুল! লিভ ইট! ওকে? দ্যাটস ওকে নো প্রবলেম! এন্ড লিসেন্ট,এ দু-দিনে অনেক জার্নি গেছে ওর উপর হয়তো তাই খারাপ-টারাপ লাগছে! তুই উপরে গেলে ডিনার করানোর পর মেডিসিন খাইয়ে দিস!

দাদী : হ্যা! তাই হবে! আচ্ছা গীতালি শোন স্নেহার ডিনার গুলো তুই উপরে দিয়ে আয়!

রাহুল : কোনো দরকার নেই দাদী! আমি নিয়ে যেতে যেতে মরে যাবে না!

দাদী : [ অবাক হয়ে ] রাহুল! কি হয়েছে তোর! এইভাবে রেগে আছিস কেনো?

রাহুল : দাদী! মনে আছে তোমার, আমাকে সব সময় একটা কথা শিখিয়ে দিতে, কখনো টাকা নিয়ে অহংকার করবিনা!

– সো্ এই লাইনটা কি শুধু আমায় শিখিয়েছো? আর কাউকে শেখাওনি?

দাদী : হ্যাঁ শিখিয়েছি! তোকে, তোর বাবাকে,তোর ফুফিদের! সবাইকেই শিখিয়েছি, কেনো কি হয়েছে?

রাহুল : হয়তো কারো একজনের কানে ভালো করে ঢুকেনি, আরেকটু ভালো করে ঢুকিয়ে দিও!

দাদী : [ হেসে ] পাগল হয়েগেছিস? কি এসব বলছিস, চল ডিনার শুরু কর!

রাহুল : আর হ্যা! দাদী, আমি স্নেহাকে ভালোবাসি, তাই ওকে বিয়ে করেছি, ওর ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে নয়! এন্ড এটা নিয়ে যদি কারো প্রবলেম হয় না? তাহলে মেইন ডোর ওদিকে দেখিয়ে দিও! [ দাদী এইবার শকিং এক্সপ্রেশন দিয়েই তাকালো রাহুলের দিক,কারণ বুঝার বাকি ছিলো না রাহুল কাকে ডেডিকেট করেই কথা গুলো বলছে, হাত দিয়ে রাহুলের হাতে গুতাতে গুতাতেই ইশারা করছে দাদী, আর কিছু না বলার জন্যে ]

রাহুল : কি হলো দাদী! গুতাও কেনো? কিছু বলবা? বললে ডিরেক্টলি বলো?এসব সাইলেন্ট গেইম আমি খেলিনা! [ দাদী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো, কিছু বললো না, আড়চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে, গ্লাসে পানি ঢালতে লাগলো ]

রাহুল : ও ইয়াহ! দাদী, তুমি তো আবার কাউকে না খাইয়ে যেতে দাও না, কিন্তু আজ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের খালিমুখে বিদায় করে দিলে যে?

দাদী : রাহুল! আমি ওদের অনেক রিকোয়েষ্ট করেছি, ওরা আমায় প্রমিস করলো নেক্সট টাইম খাবে,কিন্তু আজ যেনো ওদের আর কোনোভাবেই রিকোয়েষ্ট না করি, তাই আমি বাধ্য হয়েই যেতে দিই, [ তাকিয়ে রইলো রাহুল কিছু বললো না ]

দাদী : তোত..তোর আমাকে বিশ্বাস না হলে নেহাল থেকেই জিজ্ঞেস কর,ওর সামনেই তো জোড় করেছিলাম ওদের,

নাফিসা ফুফি : তো কি হয়ে গেছে ডিনার করে যায়নি? সারাদিনই তো ছিলো!

নেহাল : স্টপ ইট মম! সব সময় ওদের পেছন লেগে থাকছো কেনো বুঝতে পারছি না!

নাফিসা ফুফি : কারণ ওরা তোর পেছন লেগে আছে বলে,

নেহাল : আর ইউ ক্রেজি, ওরা আমার পেছনে লেগে ছিলো? ইউ আর রোং মম, ইনফ্যাক্ট আমিই ওদের মাঝে ছিলাম!

নাফিসা ফুফি : থাকবিই তো, পটিয়ে যে নিয়েছে তোকে!

রাহুল : ওহ রিয়েলি? তাহলে এইভাবেই প্রিপেয়ার করেছো তুমি ওকে? মেয়েরা যা বলবে তাদের আচলের স্মেল নিতে নিতেই যেনো পটে যায়!

– হাহা, নেহাল নট অ্যা নিউ ব্রন বেবী রাইট, হি ইজ অ্যা মেচর বয়,

– এন্ড ফুফি রিমেম্বার, দেই আর নট অনলি স্নেহা’স্ ফ্রেন্ড, দেই আর স্নেহা’স্ সিস্টার অলসো্! [ স্নেহা নিচে নেমে এলো ধীরেধীরে, কিভাবে আটকাবে রাহুলকে মাথায়ও আসছে না ]

নাফিসা ফুফি : সিরিয়াসলি রাহুল! তুই ওদের কারণে আমার সাথেই ঝগড়া করছিস?

নেহাল : [ চেচিয়ে ] তো করবেনা তো কি করবে মম? সেই কখন থেকেই দেখছি ওদের অপোজিটে বলেই যাচ্ছো বলেই যাচ্ছো!

নাফিসা ফুফি : বাট আমি তো..

নেহাল : স্টপ ইট মম! প্লিইজ স্টপ ইট! [ বলেই রেগে প্লেটটা ঠেলে দিয়ে উঠে চলে যায় হনহন করে ]

দাদী : [ চেচিয়ে ] আরে নেহাল! ডিনারটা তো ফিনিশ করে যা,

লিনিসা ফুফি : কিছুই বুঝতে পারছি না, কে কি বুঝাতে চাচ্ছে! ক্লিয়ারলি বলো কেউ কি হয়েছে? আর রাহুল তুই হঠাৎ এভাবে রেগে আছিস কেনো?

রাহুল : ফুফি! জানিয়ে দিও তাদেরকে যারা মানুষকে মন থেকে নয় ফ্যামিলি স্ট্যাটাস দিয়ে জাজ করে,

– ফাষ্ট অফ অল আমি মিষ্টার হার্শ না, যে বাকিদের কথায় কান দিয়ে নিজের বউ এর উপর হোওয়া টর্চার কমপ্লাইজ করে যাবো,

– আমি রাহুল! মাইন্ড ইট!

নাফিসা ফুফি : বাহ! প্রথম দিনেই কান ভর্তি করে দিলো? এমন লোও ক্লাস মেয়েদের থেকে এমনিতেও আর কি আশা করা যায়, [ বলতেই রাহুল দাঁড়িয়ে গিয়ে সামনে থাকা প্লেটটা ছুড়ে মারলো মাটিতে, চমকে গিয়ে তাকালো সবাই রাহুলের দিক, পা দিয়ে পেছনে লাত্তি মেরে বসার চেয়ারটাও ফেলে দিলো,ফুফাচ্ছে রাহুল মাথাটা দু-দিক নেড়ে, ঝেড়ে নিলো, যেনো রাগ কন্ট্রোল করছে, মুখের ভেতর দাতে দাত চেপে ঘেষে রেখেছে, কপালের রগ গুলো ও ভেসে উঠছে লাল হয়ে হয়ে ]

দাদী : রা..রাহুল!

রাহুল : [ দাঁত কিলিয়ে ] দাদী স্নেহা লোও ক্লাস মেয়ে না!

দাদী : হ্যাঁ.. রাহুল তুই শা..শান্ত হয়ে বয়..

রাহুল : ফাইনেন্সিয়াল সিচুয়েশান লোও হতে পারে বাট মাইন্ড অন্তত ওনার চেয়ে বেটার হাই ক্লাসের আছে! জানিয়ে দাও!

– আর এটাও বলে দাও যে ওনার এসব লোও ক্লাস এটিটিউড থিংকিং গুলো যেনো অষ্ট্রেলিয়ায় দেখায় আমার সামনে না, [ দৌড়ে এগিয়ে এসে রাহুলের হাত চেপে ধরে দাড়ালো স্নেহা, রাহুল ও অবাক হয়ে তাকালো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : [ ফিসফিসিয়ে ] ব্যাস রাহুল! আর না,

রাহুল : [ চেচিয়ে ] ব্যাস? হোয়াই স্নেহা? তোমার ক্লাস দেখাচ্ছে ওনি আমাকে! যাদের মুখে তোমার নাম নিলে ঐনামের ইন্সাল্ট করা হবে, সেই আবার ঐ মুখে তোমার ক্লাস ভেরিফাই করছে! বাহ!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] প্লিইইজ রাহুল! স্টপ দ্যা ম্যাটার! [ রাহুল কিছু বলতে যাবে তখনিই ]

স্নেহা : আমার কসম আছে রাহুল! ব্যাস! আর না! [ রাহুল রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক, রাগ যেনো স্নেহার উপরও বেড়ে চলছে, কি দরকার ছিলো কসম দেওয়ার? হাত ছুটিয়ে নিলো স্নেহার কাছ থেকে, দু-কদম পিছিয়ে গিয়ে পড়ে থাকা চেয়ারটাকে আরো জোড়ে একটি লাতি মেরে, শিরি দিয়ে উঠে হনহন করে চলে গেলো রুমে, স্নেহা ঐদিকটাই দাঁড়িয়ে আছে নিস্তব্ধতা নিয়ে, নাফিসা ফুফিও সামনে থাকা প্লেটটা জোড়ে ঠেলে দিয়ে উঠে চলে যায়, লিনিসা ফুফি উঠে এসে দাড়ালো স্নেহার বরাবরই, স্নেহা পলক ঝুকিয়ে আছে ভয়ে ]

লিনিসা ফুফি : চিন্তা করোনা স্নেহা! রাহুলের মতো এমন প্রটেক্টিভ হাজবেন্ড ও বা কজনের মিলে, বলো? আম প্রাউড অফ হিম!

– আর হ্যা! এসব যাই হয়েছে এগুলো নিয়ে মোটেও টেনশন করো না ওকে? সবই মাথা থেকে ফেলে দাও, [ হেসে ] জাষ্ট এখন রুমে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় তোমার মাথা থেকেও কিছু ঠান্ডা ওর মাথায় ঢেলে দাও! [ হেসে উঠলো রাহুলের কাজিনরা ]

– তুমি যাও রুমে, আমি গীতালির দিয়েই ডিনার পাঠিয়ে দিচ্ছি, ওকেও করিয়ে নিও আর সাথে তুমিও করে নিবা! ওকে? [ দাদীর দিক তাকালো স্নেহা, দাদী ও মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো ]

স্নেহা : জ্বি! [ বলেই ধীরেধীরে হেটে উপরে উঠে এলো, রুমের দিক এসে দরজা খুলতেই চমকে উঠলো স্নেহা, ফুলের টপ গুলো ভেঙে চুরমার হয়ে আছে, বিছানার চাদর, কম্বল,বালিশ,কশুন, সবই মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে, গিটার গুলো ও ছিটিয়ে রয়েছে, অলরেডি দুটো গিটারের তার সহ ছিড়ে ফেলেছে, আরেকটির ছেড়ার জন্য হাতে নিচ্ছিলো, ঐটাইমেই স্নেহা, রাহুল! বলে চেচিয়ে দৌড়ে গিয়ে রাহুলের হাত থেকে কেড়ে নিলো গিটারটি, ফুফাচ্ছে রাহুল জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে, তাকালো না স্নেহার দিক, হাত মুঠি করে জানালার দিকই এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো, স্নেহা ও গিটারটা খাটের উপর রেখে ধীরেধীরে এগিয়ে দাড়ালো রাহুলের পাশে, রাহুলের চোখের দিক তাকাতেই শকড হলো স্নেহা, পানি জমে আছে চোখে, কিন্তু কেনো? রাগে? অপমানে? নাকি অভিমানে? কাধে হাত রাখলো স্নেহা রাহুলের, চুপ করে রইলো রাহুল ]

স্নেহা : রাহুল!

রাহুল : [ রাগি চোখে স্নেহার দিক ফিরে ] কি দরকার ছিলো, স্নেহা! তোমার কসম দেওয়ার?

স্নেহা : তাহলে কি করবো রাহুল? থামছিলেনই না আপনি! আর কোনো রাস্তা ছিলো না আমার কাছে,

রাহুল : থামবো মানে? [ বলেই রাগান্বিত ভাবে স্নেহার কাছাকাছি এগিয়ে এসে ] কেনো থামবো? কি বলেছিলো ওনি শুনতে পাওনি?

স্নেহা : [ পা পিছিয়ে নিয়ে ] রাহুল! কেউই ডি..ডিনার করতে পারছিলো না…,

রাহুল : [ আবারো স্নেহার কাছাকাছি এগিয়ে এসে ] না পারুক! [ চেচিয়ে ] আই ডোন্ট কেয়ার!

স্নেহা : [ পিছিয়ে গিয়ে ] রাহুল! কক..কতোদিন পরই আপনার পরিবার এক হলো,

রাহুল : [ পা এগিয়ে ] চাইনা আমার এমন পরিবার!

স্নেহা : বাট রাহুল! [ বলেই আবার পেছাতে নিচ্ছিলো তখনিই ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] কেয়ারফুল ডেম ইট! [ বলেই হাত ধরে নিজের কাছেই টেনেনিলো স্নেহাকে, চোখ বড় করে চমকে উঠলো স্নেহা, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে, কি হয়ে গেলো মুহুর্তেই, কিছু বুঝে উঠলো না, শুধু রাহুলের বিকট শব্দটাই কানে বাড়ি খাচ্ছিলো বারবার,ধীরেধীরে পেছন ফিরে নিচের দিক তাকাতেই দেখে টপের ভাংগা কাচের টুকরো গুলো ছিটে আছে, বুঝতে পারলো স্নেহা এখনি রাহুলের এই বিকটভাবে চেচিয়ে উঠার কারণ, তাই মাথা তুলে ধীরেধীরে তাকালো রাহুলের দিক, চোখাচোখি হতেই রাহুল মুখ ওপাশ ফিরিয়ে নিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের মুখ ধরে তার দিক ফিরিয়ে ] রাহুল!

– আ..আপনার ফুফি যাই কিছু বলেছে সস..সবই আপনাকে ভালোবেসেই বলেছে, ভেবে দেখুন আপনি,

– আপনার জন্য রিচ ফ্যামিলির মেয়ে চাওয়া তো আর অন্যায়ের কিছুনা!

রাহুল : [ ধমক দিয়ে ] জাষ্ট শাট-আপ স্নেহা!আমার চাইনা ওনার এমন ভালোবাসা, যে ভালোবাসাকে পুর-রিচ দিয়ে জাজ করে, আর তোমাকে!

– [ বিরক্তিবোধ হয়ে ] ফরগেট ইট! তোমাকে এসব বুঝানোই বেকার! [ বলেই রাগান্বিত ভাবে নাক ফুলিয়ে জানালার পাশ গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, কিছু বললো না আর স্নেহা ও, ধীরেধীরে এগিয়ে গিয়ে গিটার গুলো আগের জায়গায় দাড় করিয়ে সাজিয়ে রাখছে, ছিটিয়ে থাকা কশুন আর বালিশগুলো তুলে খাটের উপর সাজিয়ে দিলো, এগিয়ে এসে হাটু গেড়ে বসে মাটিতে পড়ে থাকা কম্বলটা কুড়িয়ে নিচ্ছিলো তখনিই, সামনে সাদা কের্চ পড়া রাহুলের পা-দুটি দেখতে পেলো, ধীরেধীরে চোখ বুলিয়ে নিচ থেকে উপরের দিক তাকাতেই দেখে জলভরা চোখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাহুল, লালছে হয়ে আছে নাকটা,চোখাচোখি হতেই রাহুলও হাটু গেড়ে বসলো স্নেহার বরাবরই, তাকিয়ে আছে স্নেহাও তার আহ্লাদি চাহনিতে ]

রাহুল : [ কাদো সূরে ] সরি স্নেহা!

স্নেহা : কেনো?

রাহুল : রা..রাগ দেখিয়েছি তোমার উপর! তা..তাই! [ গড়িয়ে পড়লো জল স্নেহার চোখ থেকেও, তাও মৃদু হেসে উঠলো ]

রাহুল : আ..আই লাভ ইউ স্নেহা!

স্নেহা : [ ফুফিয়ে কেদে মাথা নিচু করে ] আই লাভ ইউ টু রাহুল! [ মৃদু হাসলো রাহুল ও স্নেহার কান্ড দেখে, হাতে ভর করে, হাটু পিছলিয়ে স্নেহার একদম কাছাকাছিই এসে বসলো ]

রাহুল : কা..কাদছো কেনো?

স্নেহা : আ..আপনি এতো ভা..ভালোবাসেন তাই! [ বলেই সাথেসাথে আবারো ফুফিয়ে কেদে উঠলো ]

রাহুল : [ কাদো কন্ঠে ] পাগলী! ভা..ভালোবাসলে কাদে নাকি? [ ঠোট কাপছে স্নেহার, মুখ লাল হয়ে গেছে, চোখ থেকে গড়িয়ে জল পড়ছেই তো পড়ছে ]

রাহুল : [ আংগুল দিয়ে স্নেহার চোখ মুছে দিয়ে ] শিসসস! স্টপ ক্রায়িং! ননসেন্স!

স্নেহা : আ..আপনিও তো কাদছেন!

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু!

রাহুল : [ স্নেহার দুহাত নিজের হাতের মুঠোয় ধরে ] আ..আমার তোমার কাছ থেকে,তিনটি প্রমিস চাই! [ স্নেহা মাথা তুলে তাকালো রাহুলের দিক ]

রাহুল : ফাষ্ট অফ অল! তু..তুমি কখনোই নিজেকে আমার চেয়ে ছোট মনে করবেনা! কখনোই না, প্রমিস মি! [ মাথা নাড়ালো স্নেহা ]

রাহুল : আ..আমি তোমার,মানে আমার সবই তোমার, তাই কখনোই পার্মিশন জিনিষটা আনবে না আমাদের মাঝে, তোমার মনে যা চাই তাই করবা! বাট স্নেহা! একা কোথাও বেরুবা না, আমাকে বলবা তোমার যতোবার ইচ্ছা বেরুতে আমি ততোবারই ড্রাইভ করতে রাজি তোমার জন্যে,বাট প্লিজ একা বেরুবা না!

– [ কাদো কন্ঠে ] ভ..ভয় হয়! তোমাকে হারানোর! [ কথাটি শুনতেই বুক ধরে উঠলো স্নেহার, শুনেছিলো অধিক চাওয়া জিনিষটাকেই নাকি সবসময় হারানোর ভয় থাকে, আজ তার প্রমাণও পেয়েছে তারই অধিক চাওয়া ভালোবাসার ব্যাক্তিটির কাছ থেকে ]

রাহুল : প্রমিস মি স্নেহা! [ ভালোবাসার মমতায় অশ্রুজলে ভাসিয়ে ঠোট-নাক সবই কাপছে স্নেহার, ঢোগ গিলে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো রাহুলের কথায় ]

রাহুল : এন্ড লাষ্টলি! [ দুহাত তুলে স্নেহার চোখের নিচের পানি গুলো মুছে দিয়ে ] আমাকে এ..এতোগুলো ভালোবাসবা! আ..আনলিমিটেড! [ হেসে উঠলো স্নেহা,রাহুল ও মুচকি হাসি দিয়ে স্নেহার কপালের সাথে কপাল লাগালো ]

রাহুল : প্রমিস মি না ইডিয়ট!

স্নেহা : [ হেসে ] ইয়াহ! প্রমিস! [ হেসে উঠলো রাহুল আবারো ]

স্নেহা : হাসছেন কেনো?

রাহুল : তুমি পাগলী বলে! [ স্নেহা রাহুলের চোখের দিক তাকালো ]

রাহুল : আর তুমি হাসছো যে?

স্নেহা : [ রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] কারণ আপনি একটু বেশীই পাগল বলে! [ বলতেই দুজনে আবারো একত্রে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

রাহুল : [ চোখ বটে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে, স্নেহার নাকে নাক চেপে রেখে ] হ্যা! এই পাগলীরই পাগল আমি! [ স্নেহা ও ব্লাশিং হয়ে হেসে চোখ বটে নিলো ]

রাহুল : স্নেহা!

স্নেহা : হু?

রাহুল : একটা টাইইইটট করে হাগ করো আমায়![ স্নেহা চোখ খুলে তাকিয়ে রইলো রাহুলের চোখের দিক ]

রাহুল : [ বুঝতে পেরে স্নেহার চোখের দিক তাকিয়ে ] কামঅন!

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] আই..লাভ ইউ রাহুল!

রাহুল : [ হেসে স্নেহাকে টেনে জড়িয়ে ধরে ] আই লাভ ইউ টু! [ স্নেহা ও টাইট করে জড়িয়ে ধরে রাখলো রাহুলকে, সুখ! অজানা একসুখ অনুভব করছে স্নেহা, রাহুলকে জড়িয়ে রেখে, শান্তি! অজানা এক শান্তিবোধ হচ্ছে রাহুলের মনে, স্নেহাকে নিজের বুকের সাথে আগলে রাখতে ]

খানিক্ষণ পড়েই, কড়া নাড়ালো দরজায়,স্নেহা রাহুলকে সরিয়ে,এগিয়ে গেলো দরজার দিক,

গীতালি : [ ফিসফিসিয়ে ] ওও.. ভাবী! ভালা অইছে আপনেই আইছেন, রাহুল ভাইয়ার মাথা ঠান্ডা হইছে? [ স্নেহা মৃদু হেসে মাথা নাড়ালো ]

গীতলি : উমমম! আমি তো জানতামই আপনার মতো মিষ্টি একটা বউ সামনে থাকলে ভাইয়া তো হুশই হারাইয়া ফেলবো,মাথা গরম রাখা তো বহুদ দূর! হিহি,

– আইচ্ছা আইচ্ছা নেন, ডিনার ফর ইউ এন্ড ভাইয়া! [ স্নেহা মুচকি হেসে গীতালির হাত থেকে এগিয়ে নিলো ডিনার গুলো ]

গীতালি : আনজয় ভাবী! [ বলেই হেসে হেসে চলে গেলো, স্নেহা ও ডিনার হাতে নিয়ে এগিয়ে এসে বসলো রাহুলের সামনে, রাহুল তাকিয়ে আছে, স্নেহা ডিনার রেডি করে সামনে এগিয়ে দিলো রাহুলের ]

রাহুল : স্নেহা আমার খিধে নেই! তুমি করে নাও! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের হাত ধরে আটকিয়ে ] রাহুল!

রাহুল : স্নেহা প্লিজ! আমার সত্যিই খিধে নেই! [ বলেই স্নেহার হাত ছুটিয়ে ওয়াসরুমে এগিয়ে চলে যায়, স্নেহা বুঝতে পারলো রাহুলের রাগ এখনো কমেনি, তাই এমন বিহেভ করছে, আর কিছু বললো না সে ও,ডিনার গুলো টেবিলের উপর ঢেকে রেখে দিলো ]

কিছুক্ষণ পর টাওয়েল হাতে ফ্রেশ হয়ে ওয়াসরুম থেকে বেড়িয়ে এলো রাহুল, চোখ পড়লো স্নেহার দিক,টপের ভাংগা কাচের টুকরো গুলো এক এক করে উঠাচ্ছিলো স্নেহা!

রাহুল : [ স্নেহার দিক এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! আর ইউ মেড? হোয়াট আর ইউ ডুয়িং স্টুপিড? [ স্নেহা শকড হলো হঠাৎ রাহুলের চেচানিতে ]

রাহুল : [ স্নেহার হাত থেকে কাচের টুকরো গুলো ফেলে দিয়ে ] পাগল হয়ে গেছো তুমি? তোমার হাত কেটে গেলে? তোমাকে এসব করতে কে বলেছে? [ বলেই টেনে এনে খাটে বসিয়ে দিলো ]

স্নেহা : বাট রাহুল..

রাহুল : চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো! তোমার এগুলোর চিন্তা করতে হবে না! [ বলেই পাশ ফিরে সোফায় টাওয়েলটা রাখতে যাবে তখনিই চোখে পড়লো ডিনারগুলোর উপর ]

স্নেহা : [ গোমড়া মুখে বিরবির করে ] আমি করলে হাত কেটে যাবে ,নিজে করলে কাটবে না,এতো ভয় পাওয়ার কি আছে! আমি যেনো কোনো কাজই করতে পারিনা,

রাহুল : ডিনার করেছো? [ স্নেহা কিছু বললো না,মুখটা ভেংগিয়ে গায়ে কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ভোর কুচকে ] এক্সকিউজ মি! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি? [ তাতেও কোনো জবাব এলো না স্নেহার, মুখের উপর ও টেনে দিলো কম্বলটা ]

রাহুল : [ স্নেহার মুখ থেকে কম্বল টেনে সরিয়ে ] ঐ! কি হলো? [ পাশ মুড়ে শুয়ে গেলো স্নেহা ]

রাহুল : [ অবাক হয়ে ] আজিব!

– স্নেহা!

স্নেহা : কি হয়েছে?

রাহুল : আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি,

স্নেহা : তো?

রাহুল : তো মানে?

স্নেহা : [ রাহুলের দিক ফিরে ] হোহ! মিষ্টার রাহুল! আপনি, তো! মানেও জানেন না? [ রাহুল নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে রইলো, স্নেহা আবারো মুখ ভেংগিয়ে দিয়ে,গায়ে কম্বল টেনে ওপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : ইডিয়ট! [ বলেই স্নেহার গায়ের থেকে কম্বলটা সরিয়ে দিয়ে,নিজের দিক টেনে ফিরিয়ে হুট করেই কোলে তুলে নিলো ]

স্নেহা : [ শকড হয়ে চেচিয়ে ] আরেহ! কি করছেন আপনি?

রাহুল : তোমাকে বলা ইম্পর্টেন্ট মনে করছিনা!

স্নেহা : রা..রাখেন আমাকে!

রাহুল : স্টুপিড! মুখ ও ভেংগায় আবার! [ বলেই হেটে এগিয়ে নিয়ে গেলো সোফার দিক ]

স্নেহা : কি হয়েছে ভেংগিয়েছি তো? আ..আপনি আমার দিক তাকিয়ে থাকেননি হিংস্র পশুর মতো!

রাহুল : হোয়াট?

স্নেহা : আর নয়তো কি? [ গোমড়া মুখে ] জারিফা ঐদিন ঠিকই বলছিলো!

রাহুল : [ স্নেহাকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে সে ও পাশে বসে ] এক্সকিউজ মি! জারিফা যে হিংস্র পশুর কথা বলেছিলো না, ঐ রুপ আমি এখনো দেখায়নি ঐ রুপ দেখালে না তুমি এতোক্ষণে..[ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক ]

স্নেহা : থেমে গেছেন কেনো বলেন বলেন আমি এতোক্ষণে?

রাহুল : ফরগেট ইট! ভয় পেয়ে যাবা তুমি!

স্নেহা : [ বিরবির করে ] হ্যাঁ আমি তো ভয় পেয়ে যাবো! আপনিই দুনিয়ার একমাত্র সাহসী ব্যাক্তি!

রাহুল : কি বললে?

স্নেহা : কিক..কিছুনা!

রাহুল : [ হেসে, স্নেহার সামনে প্লেট এগিয়ে দিয়ে ] আচ্ছা! নাও ডিনার করে নাও!

স্নেহা : করবো না!

রাহুল : ওহ রিয়েলি?

– আমি বললে না, তোমার বাপের.. [ বলতেই স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]

রাহুল : [ হেসে ] মানে! আমার ফাদার-ইন-লো! ওনার থেকেও করতে হবে! বুঝেছো! [ স্নেহা মুখ ভেংগিয়ে ওপাশ ফিরে গেলো ]

রাহুল : আরে কি হলো স্নেহা! হঠাৎ এমন বিহেভ করছো কেনো?

স্নেহা : আমি যখন বলেছিলাম করতে তখন আপনি করেছিলেন ডিনার?

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] আচ্ছা তো এই ব্যাপার!

– [ মুচকি হেসে ] বাট! স্নেহা! আমার সত্যিই খিধে নেই!

স্নেহা : হুমম! আমার ও খিধে নেই! [ বলেই উঠে যাচ্ছিলো, রাহুল বুঝতে পেরে হেসে স্নেহার হাত ধরে টেনে আবারো বসিয়ে দেই ]

স্নেহা : কি হলো! বললাম তো! খিধে নেই!

রাহুল : [ চোখ বটে নাক দিয়ে স্নেহার ঘাড়ে স্লাইড করে করে ] তোমার হাতে খাইয়ে দিলে, খিধে চলে আসবে কিন্তু!

স্নেহা : [ রাহুলকে সরিয়ে দিয়ে ] প..প্রমিস?

রাহুল : [ হেসে স্নেহার গালে একটি চুমু খেয়ে ] ইউর প্রমিস!

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে