♥Love At 1st Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 61
writer-Jubaida Sobti♥
রাহুল : মা..মানে? [ বলতেই স্নেহা পা আলগে তুলে রাহুলের দু-গালে হাত রেখে ঠোটে চুমু বসালো, রাহুল ও বুঝতে পেরে হেসে স্নেহাকে পিছে ঠেলে দেওয়ালে লাগিয়ে স্নেহার ঠোটের সাথে তাল মেলাতে লাগলো ]
কিছুক্ষণ পর,
[ স্নেহা রাহুলকে থামিয়ে সরিয়ে দিয়ে, আবারো ঠোটের উপর হাত রেখে চেপে, ভ্রু কুচকে এক নজরে তাকিয়ে রইলো রাহুলের দিক, রাহুল ও ভ্র-কুচকে তাকালো, কারণ সে বুঝতে পেরেছে স্নেহা কেনো এইভাবে হয়ে তাকিয়ে আছে! একই রিয়েকশন কিছুক্ষণ আগেই তো দিয়েছিলো ]
রাহুল : [ হেসে দিয়ে ] শিটট! ব্যথা? [ স্নেহা কিছু বললো না, জখমি ঠোটে চেপে ধরে রাখা হাতটা দিয়ে মুখ মুছে তাকালো, মৃদু হেসে রাহুল স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে খুব যত্নে ঠোটে আংগুল বুলাতে বুলাতে বলতে লাগলো ]
রাহুল : আই হেভ মেমোরাইজড ইউ আওয়ারলি, আই থট!
– আই উইল বি মেনশনড ইউ লাইক অ্যা প্রেয়ার, বাট! আম সরি ওকে? কজ আই হার্ট ইউ! [ অবাক হলো স্নেহা রাহুলের কান্ড দেখে, একটা মানুষ ভালোবাসায় এতোটা পাগল হতে এই প্রথমই রাহুলকে দেখছে সে, ঠোটের সাথেও কি কথা বলে নাকি মানুষ, হেসেই দিলো ]
রাহুল : ডু ইউ নো,হাও ডেঞ্জারাস্ ইয়র স্মাইল ইজ?
স্নেহা : [ হেসে রাহুলের কাধের দু-দিক হাত রেখে ] ইয়াআহ! আই নোও! বিকজ স্নেহা’স্ স্মাইল পাসওয়ার্ড ইজ রাহুল!
রাহুল : রিয়েলি?
স্নেহা : হোয়েন ইউ ডোন্ট হেভ পেইন ইন ইয়র লাভ, হোয়েন ইউ ডোন্ট হেভ স্মাইল ইন ইয়র পেইন! সো্ ইটস্ হার্ড টু লিভ ইন লাভ!
– রাহুল!
রাহুল : হু!
স্নেহা : [ রাহুলের ঠোটের নিচে আলতোভাবে চুমু দিয়ে ] ডু ইউ নো! ইউ আর মাই পেইন![ আবারো চুমু খেয়ে ] ইউ আর মাই লাভ!
রাহুল : ইয়াহ!
স্নেহা : [ চোখ বন্ধে হেসে ] ইউ আর মাই এভ্রিথিং!
রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়া আই নোও! [ বলেই আপ্রাণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে স্নেহার মায়াবী চেহেরাটির দিক, অদ্ভুত এক ভালোবাসা জেগে উঠে স্নেহার, তা অবশ্য সবসময় নয় মাঝেমাঝেই দেখা দেই, ঠিক তখনিই মুখ দিয়ে তার ভালোবাসার প্রতিশব্দ গুলো বাহারি ফুলের মতোই ঝড়ে পড়ে, যেটা এখন আবারো পড়ছে, তবে এই ভালোবাসার প্রতিশব্দ গুলো স্নেহার মুখ দিয়ে ঝড়ে পড়ার ও কি দরকার সে তো স্নেহার চোখ দেখেই সব পড়ে নিতে পারে, অবিশ্বাস্য কিছুই নয়, ভালোবাসা বিস্তর হলে বোধহয় এমনই হয় ]
স্নেহা : [ চোখ খুলে ] কি দেখছেন এভাবে?
রাহুল : তোমাকে!
স্নেহা : আর কতো দেখবেন?
রাহুল : যতোক্ষণ না এই শ্বাসটা থেমে যায়!
স্নেহা : এতো ভালোবাসেন কেনো?
রাহুল : তুমি এতো ভালো তাই!
স্নেহা : যদি কষ্ট দেই?
রাহুল : লড়াই করে যাবো ঐ সব কষ্ট গুলোর সাথে!
স্নেহা : জানেন!
রাহুল : [ স্নেহার কপালে আসা চুলগুলো কানে গুজে দিয়ে ] বললে জানবো!
স্নেহা : শুনেছি! এতো বেশী ভালোবাসা নাকি ঠিকনা! অধিক চাওয়া অধিক ভালোবাসা জিনিষটাই নাকি সবার আগে হারাতে হয়
রাহুল : [ মৃদু সূরে ] খোদা ছাড়া আর কারো ঐ সর্বশক্তি নেই যে তোমাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিবে!
– দুনিয়ার সব অশুভ শক্তির সাথে লড়ে যাবো! জান নিয়ে খেলবো, মরতে হলে একসাথেই মরবো,তাও তোমাকে হারাতে দেবো না আমার কাছ থেকে! [ বলেই দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্নেহার নাকে নাক ঘষলো ]
– আসল কথা জানো কি স্নেহা? [ স্নেহা আহ্লাদি চোখে তাকালো রাহুলের চোখের দিক, রাহুল স্নেহার মাথাটা কাছে টেনে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে ধরলো, অজানা কোনো শব্দই নয় সেই চিরচেনা রাহুলের হৃদস্পন্দনের ধুপধুপ আওয়াজটায় স্নেহার কানের কাছে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে, তবে এই ধুপধুপ শব্দটি কি ভালোবাসার কোনো কথা বলে যাচ্ছে? হ্যাঁ তাই তো, এতো তীব্র কেনো হচ্ছে শব্দটি ]
রাহুল : শুনতে পাচ্ছো স্নেহা? এই হৃদয়ের স্পন্দন গুলো বলছে! তুমি আছো বলেই এরা চলছে, তুমি না থাকলে এরা থেমে যাবে! [ স্নেহা রাহুলের বুকে একটি চুমু খেয়ে মাথা উঠিয়ে তাকালো রাহুলের দিক, দু-হাতে রাহুলের কলার ধরে নাকে নাক চেপে দীর্ঘশ্বাস নিচ্ছে, রাহুলের শ্বাসগুলো ও স্নেহার মুখের উপর এসে পড়ছে, এক অদ্ভুত অনুভূতি এসে ভীর জমিয়ে দিচ্ছে দুজনের মনে, তীব্র হতে চলছে ভালোবাসা গুলো, আড়াআড়ি অনুভব করছে স্নেহার মুখে রাহুলের খোঁচা-খোঁচা দাড়ি গুলোর স্পর্শে, আলাদা এক স্মেল আছে রাহুলের এই দাড়ি গুলোর, যে স্মেলটায় স্নেহার মনটাকে পাগল করতে বাধ্য হয়, তবে এই অনুভবটায় স্নেহার সবচেয়ে প্রিয় অনুভব, আলতো করে রাহুলের গালে হাত বুলিয়ে স্নেহা, নিজের ঠোট দিয়েই গভীর চুমু বর্ষন করলো রাহুলের ঠোটে, রাহুল ও বাধা দিচ্ছিলো না স্নেহাকে, যেহেতু স্নেহা নিজ ইচ্ছায় আদর করছিলো, কোমোড়ের শাড়ীর নিচে হাত দিয়ে স্লাইড করে ধরে সেও তালমিলিয়ে নিলো,
হঠাৎ, স্নেহা রাহুলকে ঠেলে দিয়ে আবারো তাড়াতাড়ি ঠোটে হাত দিয়ে চেপে ধরলো,ব্যপারটা কোনোভাবেই অবাক করলো না রাহুলকে, বরং কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো রাহুল, মলিন চোখে তাকিয়ে থেকে জখমি ঠোটটা ঘষতে লাগলো স্নেহা ]
রাহুল : রিলেক্স স্নেহা! ইটস্ নট অ্যা প্রেশার! আমরা পরে ও করতে পারবো! [ কিছু বললো না স্নেহা, নিস্তব্ধই রয়ে গেলো, তবে রাহুল ও স্নেহার মজা উড়াতে ছাড়লো কই! ]
রাহুল : [ স্নেহার ঘাড়ের পাশে দেওয়ালে হাত রেখে ] বিটউইন! স্নেহা,আজ ফিল একটু বেশি এসে গেলো বোধ হয়!
– বাট! বেড লাক! আমার কামড়টা জোড়ে পড়ে সব ডিস্ট্রাকশন করে দিলো!
– বাই দ্যা ওয়ে! চিন্তা করোনা, তুমি চাইলে কিন্তু এটা ছাড়া আমরা অন্যকিছুও করতে পারি! [ With tedi smile ]
স্নেহা : অ..অন্যকিছু মানে? [ রাহুল দীর্ঘশ্বাস নিয়ে পাশফিরে তাকিয়ে একটু হেসে, আবারো স্নেহার দিক তাকিয়ে চোখ দুটো ত্যাড়া করে ধীরেধীরে একবার স্নেহার চেহেরার দিক আরেকবার স্নেহার পুরো বডিতে চোখ বুলাতে লাগলো, স্নেহা ও রাহুলের এভাবে তাকানোর দৃষ্টির নজরদারিতে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ]
রাহুল : অন্যকিছু মানে হচ্ছে..উমম! [ বলেই আংগুল দিয়ে স্নেহার ঠোট থেকে গলায় স্লাইড করে, বুকের দিক এনে শাড়ীর আচলটা সরাতেই যাবে তখনি ]
স্নেহা : [ রাহুলের আংগুল ধরে ফেলে ] আই গট ইট মিষ্টার তেডি স্মাইল!
রাহুল : স্নেহা! তোমার শাড়ীর লেংথ একটু বেশি হয়ে গেছে, চলো আমি শর্ট করেদি, [ বলেই আংগুল দিয়ে স্নেহার পেটের দিক স্লাইড করে শাড়ী তুলে কুচিগুলো ধরতেই ]
স্নেহা : [ রাহুলের হাত সরিয়ে দিয়ে ] ছিইইই রাহুল!
রাহুল : হোয়াট ছি? ছিইই মানে কি? হ্যা?
– নাও আম ইয়র হাজবেন্ড স্নেহা, এখনো যদি ছি বলো [ স্নেহা লজ্জিত একটি হাসি দিয়ে রাহুলকে ঠেলে সরিয়ে চলে যায় ]
রাহুল : ওয়েট স্নেহা! [ বলেই দৌড়ে গিয়ে স্নেহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ফেললো ]
স্নেহা : রাহুল! কি করছেন পাগল নাকি?
রাহুল : হ্যা! পাগল তো করেই দিয়েছো আমাকে! এখন পাগলামিটা শেষ করতে দাও!
স্নেহা : [ রাহুলের হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আচ্ছা ছাড়ুন!
রাহুল : [ আরো শক্ত করে চেপে ধরে ] আরেহ! ছাড়বো কেনো?
স্নেহা : [ হেসে দিয়ে ] পা..পানি খাবো তৃষ্ণা পেয়েছে!
রাহুল : বাহানা কম বানাও স্নেহা! [ বলেই চোখ বন্ধে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে স্নেহার ঘাড়ে মাথা হেলিয়ে রাখলো ]
স্নেহা : সত্যি রাহুল! বাহানা না
রাহুল : এমনিতে তৃষ্ণা তো আমার ও অনেক পেয়েছে বাট পানির না আমার তো তোমার তৃষ্ণা.. [ বলেই স্নেহার পেটে হাত বুলিয়ে নাক দিয়ে ঘাড়ে স্লাইড করতেই, স্নেহা রাহুলের হাতটা ছুটিয়ে ডাইনিং টেবিলের দিক চলে যায়, জাগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে,গ্লাসটা এগিয়ে নিতেই পেছনে রাহুলের উপস্থিত অনুভব করলো, কোমোড়ে রাহুলের হাতের স্পর্শ, জুড়ান এক অনুভুতি কাজ করছে, বুকের সাথে হাতটাও কেপে চলছে, কিছু না বলেই গ্লাসটা শক্ত করে ধরে নিয়ে পানি খেতে লাগলো, রাহুল তার মুখ এগিয়ে স্নেহার ঘাড়ের কাছে এনে গলার দিক তাকালো, ঢোগ গিলছে স্নেহা যেনো তৃষ্ণা মেটাচ্ছে রাহুল, পানি গুলো ও রাহুলের লোভনীয় দৃষ্টির মতো ছুয়ে ছুয়েই নামছে স্নেহার গলা দিয়ে, আলতো করে একটি চুমু দিয়েই দিলো রাহুল সেই গলায়, পানি খাওয়া থামিয়ে দিয়ে স্থীর হয়ে দাড়িয়ে গেলো স্নেহা, গ্লাস হাতে নিয়ে ধীরেধীরে ফিরে তাকালো রাহুলের দিক ]
রাহুল : [ চোখ বন্ধ করে স্নেহার কপালে কপাল লাগিয়ে ] স্নেহা! পানিটাও এতো সুন্দর করে কেমনি খাও?
স্নেহা : [ হেসে ] রার..রাহুল! আপনার মনে আছে ভার্সেটিতে একদিন গার্ডেনের ঐদিক আপনাকে পানি দিয়েছিলাম, আ..আপনি খাচ্ছিলেন না, যতোক্ষণ না পর্যন্ত আমি মুখ লাগিয়ে খায়নি!
রাহুল : [ চোখ খুলে হেসে দিয়ে ] ইয়া..ইয়াহ আই রিমেম্বার!
স্নেহা : [ হেসে ] কিনা পাগল ছিলেন আপনি!
রাহুল : এক্সকিউজ মি! এটা পাগলামি না ভালোবাসা স্নেহা ভালোবাসা! [ স্নেহা মুচকি হেসে রাহুলের গালটা টেনে দেই ]
রাহুল : চলো আজ আবার নতুন ভালোবাসা দেখায়!
স্নেহা : মা..মানে? [ রাহুল কিছু বললো না এক হাতে টেবিলে ভর করে হাত রেখে অন্য হাতে স্নেহার থেকে পানির গ্লাসটা নিজ হাতে এগিয়ে নিলো, স্নেহা ও তাকিয়ে আছে অবাক চোখে কি করতে যাচ্ছে রাহুল কিছুই বুঝে উঠছিলো না, হঠাৎ রাহুল নিজের ঠোট স্নেহার কাছাকাছি এনে গ্লাসটা কাত করে কিছু পানি স্নেহার ঠোটে ঢাললো, স্নেহা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো তাড়াতাড়ি, দু-হাত পেছনে থাকা টেবিলের উপর ভর দিয়ে রেখে শক্ত করে টেবিল চেপে ধরলো, জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলছে, ঠোটে পানির ঠান্ডা অনুভব সাথে রাহুলের গরম নিশ্বাসটাও অনুভব করছে, রাহুল ও কাতর দৃষ্টিতে স্নেহার কাপা-কাপা জলসানো ঠোটের দিক পলক ঝুকিয়ে তাকিয়ে আছে ]
রাহুল : স্নেহা!
স্নেহা : হু!
রাহুল : [ মৃদু সূরে ] পানি গড়িয়ে যেদিক যেদিকই গিয়েছে ওদিক থেকেই পান করবো! [ নিস্থব্দে ঢোগ গিললো স্নেহা, রাহুল স্নেহার জলসানো ঠোটের জলগুলো জিহবা দিয়ে আলতো করে স্লাইড করে মুখে নিলো, থুতনিতে বিন্দু হয়ে জমে থাকা পানির ফোটাটি ও নিজের ঠোট দিয়ে স্লাইড করে নিলো, মাথা ঝুকিয়ে গলায় গড়িয়ে পড়া পানি গুলো নিজ ঠোটের গভীর চুমুর স্পর্শে পান করে করে চলছে, বুকের ধারে আসতেই স্নেহা যেনো চমকে কেপে উঠলো, রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরে ঠেলে সরিয়ে দিলো, রাহুল মাথা তুলে স্নেহার চোখের দিক তাকালো, স্নেহা ও চোখাচোখি হতেই লজ্জিত এক অনুভবে পাশ ফিরে সরে যাচ্ছিলো, হঠাৎ তখনিই হাতটা রাহুলের হাতে বন্ধি হয়ে আটকা পড়লো ]
রাহুল : [ টান দিয়ে স্নেহাকে একই জায়গায় দাড় করিয়ে ] বললাম তো স্নেহা! তুমি লজ্জা পেতে থাকো আমি ভাংগতে থাকবো!
[ চুপ করে চোখ নামিয়ে ফেললো স্নেহা, রাহুল স্নেহার সামনে আসা চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে, ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে স্নেহার কানের ঝুমকাটা কামড়ে ধরলো, স্নেহা জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে কানের পেছনে হাত দিয়ে ঝুমকার পুষটা খুলে নিলো, রাহুল দাত দিয়ে স্নেহার কান থেকে ঝুমকাটা টেনে নিলো, স্নেহা হাত তুলে এগিয়ে দিলে, মুখ থেকে ঝুমকাটা স্নেহার হাতে ছুড়ে ফেললো রাহুল! একইভাবে অপর কানের ঝুমকাটাও রাহুল দাত দিয়ে কামড়ে টেনেখুলে স্নেহার হাতে ফেললো,
লাল হয়ে আছে স্নেহার কান দুটো, মুখ এগিয়ে রাহুল আলতো করে চুমু খেলো কানে, শিউরে উঠলো স্নেহা, রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরতেই হাত থেকে ছুটে কানের ঝুমকো গুলো মাটিতে পড়ে যায়, গালে দাড়ি ঘষে চোখের দিক একনজর তাকিয়ে একটু পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো, স্নেহাও তাকিয়ে আছে, হাতটা এগিয়ে কাছে টেনে হুট করেই কোলে তুলে নিলো রাহুল, নির্বাধায় স্নেহাকে নিয়ে বেড রুমের দিকই এগিয়ে গেলো, খাটের ধারে এসে শুয়ে দিলো স্নেহাকে,
অবিকল এক অনুভুতি, মাথা নুয়ে দাঁড়িয়ে তাই ভাবছে রাহুল, জ্যাকেটটা খুলে বিছানার কোণে রাখতেই স্নেহার পায়ের দিক নজর পড়লো, ধবধবে মলিন হয়ে আছে স্নেহার পা-জোড়া, এতোদিনে এসেই বুঝি রাহুল স্নেহার পা গুলো এতো গভীরভাবে লক্ষ্য করছে, হাটু গেরে বসে, হাত দিয়ে আলতো করে ছুয়ে দিলো পা দুটো, মুখ এগিয়ে চুমু দিতেই যাবে তখনিই স্নেহা পা বটে ফেললো, রাহুল মৃদু হেসে হামাগুড়ি দিয়ে খাটে এগিয়ে উঠলো, স্নেহার পা টেনে সোজা করে নিয়ে, চুমু দিয়েই মাথা তুলে তাকালো,পেটের দিক শাড়ীটা সরে আছে স্নেহার, পানি পড়ে হালকা একটু ভিজে ভিজে ও আছে, যা রাহুলকে তৃষ্ণার্থ করে কাছে টানতে বাধ্য করেই চলছে, ধীরেধীরে মুখ এগিয়ে ঠোট দিয়ে পেটে স্লাইড করে চুমু খেলো রাহুল, তার সাথে স্নেহার জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নেওয়াটা যেনো আরো পাগলই করে দিচ্ছে রাহুলকে, চুল মুঠি বেধে ধরে রাহুলকে সরিয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা স্নেহার, কিন্তু এই তীব্র ভালোবাসায় হার মেনেই চলছে দুজন, পেটের দিক থেকে নাক দিয়ে এক শ্বাসে স্নেহার খুশবো নিয়েই মুখের ধারে আসলো রাহুল, ঠোট জোড়া কাপছে স্নেহার, আলতো করেই সেই ঠোটে চুমু খেলো রাহুল,গলার চুল গুলো সরাতেই স্নেহা চোখ বন্ধে শিউরে উঠে বিছানার চাদর মুচড়ে ধরে ফেললো, রাহুল চাদর থেকে স্নেহার হাত ছুটিয়ে নিজের হাতে মুঠি করে ধরে ধীরেধীরে গলাই চুমু বর্ষন করলো, চোখ বন্ধ করে ফেললো রাহুল ও,
ঠিক সেই মুহূর্তেই, হঠাৎ ফোনের রিংটোনটা বেজে উঠলো রাহুলের,
চমকে উঠে চোখ খুলে ফেললো স্নেহা, রাহুল ও স্নেহার গলার ধারে মাথা ঠেকিয়ে রেখে স্থির হয়ে গেছে, মাথা মুড়িয়ে রাহুলের দিক ফিরে তাকালো স্নেহা, চোখাচোখি হতেই দেখে রাহুলের চোখে যেনো রাগ ভাসছে, হাসি আসছিলো স্নেহার অনেক, রাহুলের বেচারা বেচারা চেহেরার ছাপ দেখে, তাই তাড়াতাড়ি মুখ সোজা করে ফিরিয়ে নিলো স্নেহা,
রাহুল : হাসো, হাসো স্নেহা! চেপে রেখেছো কেনো হাসি?
স্নেহা : ফো..ফোন বাজছে!
রাহুল : কান আছে আমার, শুনেছি! [ হাসি লুকাতে মুখের উপর হাত দিয়ে ঢেকে ফেললো স্নেহা ]
রাহুল : ইডিয়ট! [ বলেই বালিশে স্নেহার মাথার পাশাপাশিই মাথা রেখে শুইলো, পা সোজা করে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কানে ধরলো ]
রাহুল : হ্যা! দাদীজান বলেন! [ স্নেহা ও হেসে রাহুলের ফোনের সাথে কান লাগিয়ে রাখলো ]
দাদী : আরেহ! রাহুল কোথায় গায়েব হয়ে গেলি বলতো?
রাহুল : হানিমুনে এসেছি দাদী ডিষ্টার্ব করোনাতো! [ চিমটি দিলো স্নেহা রাহুলের পেটে ]
দাদী : বদমাশ! হানিমুনে তো তুই ইটালি যাবি বলেছিলি, আমি কি ভুলে গেছি মনে করেছিস নাকি!
রাহুল : [ কান থেকে ফোন সরিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] লুক স্নেহা! দাদী আমাকে নিজের দেশের হানিমুন এখনো কমপ্লিট করতে দিচ্ছে না আবার বলে ইটালির কথা, কতোবড় সেল্ফিশ দেখেছো!
স্নেহা : [ হেসে ] শিসস! রাহুল! [ বলেই হাত টেনে আবারো ফোনটা কানের দিক ধরিয়ে দিলো ]
রাহুল : আচ্ছা দাদী! কি কারণে খুজছো বলোতো ?
দাদী : আরে তোদের রিসিপশানের ড্রেস এসে গেছে, তাই দেখার জন্যই..
রাহুল : উফফ! দাদী ড্রেসগুলো কি ভেগে যাবে নাকি? যে এক্ষুণি ডাকা ইমর্টেন্ট হয়ে গিয়েছিলো!
দাদী : ঢং কম কর! আর এক্ষুণি আয়!
রাহুল : আসবো না!
দাদী : আরে রাহুল এমন কেনো করছিস! সবাই অপেক্ষা করছে, তাড়াতাড়ি আয়!
স্নেহা : [ মাথা তুলে ফিসফিসিয়ে ] রাহুল নাহ কেনো বলছেন?
রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে আবার শুয়ে দিয়ে ] দাদী! বললাম তো আসবো না!
দাদী : ঠিকাছে তোর যা ইচ্ছে তাই কর! কিন্তু স্নেহাকে পাঠা!
রাহুল : পাঠাবো না আমার বউ!
দাদী : হ্যা! তোর বউ তাতো জানিই আমরা! অন্ততপক্ষে ওর ড্রেসটা তো দেখতে পাঠা!
রাহুল : দাদীইইই জান! স্নেহা বিজি আছে আমার সাথে…
স্নেহা : [ মাথা তুলে ] আজিব! রাহুল পাগল নাকি আপনি? বলেন আসছে,
রাহুল : নাহ!
স্নেহা : [ চিমটি দিয়ে ] বলেন!
রাহুল : আহহহ! স্নেহা ব্যথা পাচ্ছি! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি রাহুলের মুখ চেপে ধরে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, রাহুল ও কিটকিটিয়ে হেসে উঠে স্নেহার চেহেরার অবস্থা দেখে ]
স্নেহা : আপনি আসলেই..
– উফফ… [ বলেই খাট থেকে নামতেই যাচ্ছিলো, তখনি ]
রাহুল : [ হেসে স্নেহার হাত টেনে ধরে নিজের কাছে শুয়ে রেখে ] দাদী! উই আর কামিং!
দাদী : আচ্ছা ঠিকাছে আয়! [ রাহুল ফোন কেটে খাটে ছুড়ে রেখে, স্নেহাকে চেপে ধরে শুইয়ে সে ও স্নেহার উপর হয়ে শুয়ে পড়লো ]
স্নেহা : রাহুল ছাড়েন! দাদী অপেক্ষা করছে,
রাহুল : আহা! দাদী সামান্য একটু অপেক্ষা করছে এতে কতো মায়া, আর জামাইর দু-ভাংগা হয়ে যাওয়া মনটার জন্য একটুও মায়া হচ্ছে না,
স্নেহা : [ রাহুলকে ঠেলে সরানোর চেষ্টা করতে করতে ] ভালোই হয়েছে একদম! এইবার সরেন!
রাহুল : [ স্নেহার দু-হাত টেনে নিয়ে দু-দিক চেপে ধরে ] কি বললে! আবার বলোতো!
স্নেহা : ছাড়েন রাহুল! প্লিইজ লেইট হচ্ছে তো!
রাহুল : উহু! আমারও ছাড়তে মন চাইছে না তো! [ স্নেহা হাপিয়ে উঠলো রাহুলের সাথে ছুড়াছুঁড়ি করতে করতে ]
রাহুল : [ হেসে ] শেষ শক্তি? এইটুকুতেই? [ স্নেহা কিছু বললো না, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই ধীরেধীরে মাথাটা আলগে তুলে রাহুলের ঠোটে ঠোট মেশালো, রাহুল হালকা একটু অবাক হলেও আবার স্নেহার ঠোটের সাথে তাল মিলিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো, হঠাৎ কিছুক্ষণ পরই রাহুল স্নেহার হাতের ধাক্ষা অনুভব করলো,
ফুফিয়ে উঠে সোজা হয়ে শুয়ে আছে রাহুল! দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে মুচকি হাসলো, স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা বসে শাড়ী ঠিক করছে উঠে দাড়ানোর জন্য ]
রাহুল : কি রোমান্টিক তারিকায় চিটিং করেছো স্নেহা!
স্নেহা : [ উঠে দাঁড়িয়ে রাহুলের দিক ফিরে ] আপনি যদি রোমান্স কিং হন! তাহলে রোমান্স কিং এর ওয়াইফ রোমান্স কুইন তো হবেই!
রাহুল : [ মুচকি হেসে ] তাই?
স্নেহা : বাই! [ বলেই মুখ ভেংগিয়ে হেসে বেড়িয়ে যায়, রাহুলের ও কি আর করার হাসতে হাসতেই গাঁ হেলিয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে খাটে শুয়ে পড়লো ]
আর এইদিকে, স্নেহা গেষ্ট হাউজ থেকে বেড়িয়ে দাদীর কাছেই রওনা দিলো, ড্রইং রুমে ঢুকতেই দেখে, দাদী মাত্রই সোফা থেকে উঠে চলে যাচ্ছিলো! তখনি আবার স্নেহাকে দেখে থেমে দাঁড়িয়ে যায়!
দাদী : [ স্নেহা কাছে আসতেই ] আরে স্নেহা! এসেছো! আমি ভাবলাম রাহুল মিথ্যে বলছে, কারণ ও আমাকে সবসময়ই এমন বোকা বানিয়ে থাকে! [ হাসলো স্নেহা দাদীর কথা শুনে ]
দাদী : আচ্ছা বাদ দাও শুনো! তোমাদের রিসিপশানের কাপড় গুলো আমি উপরে তোমাদের রুমে পাঠিয়ে দিয়েছি! তুমি গিয়ে দেখে নাও! আর শয়তানটা আসলে ওকে ও দেখিয়ে নিও!
স্নেহা : আচ্ছা! [ দাদী হেসে চলে গেলো, স্নেহা ও রুমের দিক যাওয়ার জন্য শিরিতে পা দিবে তখনিই, গীতালি ডাইনিং টেবিলের পাশ থেকে ভাবীইইই বলে ডাক দেই, স্নেহা ফিরে তাকালে গীতালি হাত দিয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো, স্নেহা হেসে এগিয়ে গেলো গীতালির দিক ]
গীতালি : ভাবী আমার না আপনের লগে কিছু ইমপর্টেন্ট কথা আছিলো!
স্নেহা : হ্যা! বলো!
গীতালি : [ ফিসফিসিয়ে ] ভাবী আপনের ফেন্সরা আছে না? ওনারারে নেহাল ভাইয়ার মা, মানে রাহুল ভাইয়ার বড় ফুফিডা বহুত কথা কইছে একটু আগে,
স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] বু..বুঝলাম না আমি!
গীতালি : [ আশেপাশে একবার উকি দিয়ে আবারো স্নেহার দিক তাকিয়ে ] মানে ইনশাল্ট! ইনশাল্ট করছে! ভাবী, আমি তো ওনারার চেহেরা দেইখাই বুঝছি ওনারা বুহুদ কষ্ট পাইছে, ভাগ্যিস হঠাৎ নেহাল ভাইয়া আইয়া শুইনা গেছিলো তারপর উনার ঝাড়িতেই থাইমা গেছে [ বুকটা ধরে উঠলো স্নেহার গীতালির কথা শুনে ]
গীতালি : পেরেশান হইবেননা ভাবী! বড় ফুফিডা অনেক আগে থেইকাই এমন কুটনী মার্কা! রাহুল ভাইয়া যে আপনারে বিয়া করছে? এইডা নিয়াও খুশি না ওনি! ওনার তো বড় বড় খানদান থেইকা বউ চাই তাই! বিয়াতে ও আইতে চাইছিলো না, দাদী জোড় করছিলো, আর ঐখান থেইকা নেহাল ভাইয়ার ঠেলায় পইরা আইছে!
– আরে হার্শ স্যাররেও অনেক উল্ডাপাল্ডা বুঝাইতো! রাহুল ভাইয়ার মায়ের ব্যাপারে! এইজন্যই তো মেডাম আয়ে না!
হঠাৎ দূর থেকে গীতালি বলে ডাক আসে,
গীতালি : ঐ দেহেন শয়তানের নাম লইতেই শয়তান হাজির!
[ গীতালি মুখ ভেংগিয়ে তাড়াতাড়ি টেবিল পরিস্কার করতে ব্যস্ত হয়ে যায়, ফুফি কাছে এগিয়ে এসে গীতালি বলে আবার ডাক দিতেই স্নেহাকে দেখে থেমে যায় ]
গীতালি : জি কিছু কইবেন?
নাফিসা ফুফি : টেবিলে ডিনার লাগিয়ে দাও!
গীতালি : জি! [ বলেই কিচেনের দিক এগিয়ে গিয়ে আবার পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে ফুফি স্নেহার কাছাকাছি গিয়েই দাড়ালো, তাই গীতালি ও কাজের বাহানা করে তাদের কাছাকাছি এসে টেবিলে প্লেট বিলি করতে লাগলো ]
নাফিসা ফুফি : দেখা যাচ্ছিলো না তোমায় স্নেহা! কোথায় ছিলে? [ ঢোগ গিলছে স্নেহা একেতো গীতালির কথা শুনে হাত-পা অবোশ হয়ে গেছে, তারমধ্যে ফুফির এই প্রশ্নের কি জবাব দিবে সেটাও মাথায় আসছে না ]
– এনিওয়েস্ আই থিংক তোমার ক্লেভার ফ্রেন্ডসদের সাথেই ছিলে রাইট?
– আচ্ছা ওরা কোথায়? চলে গিয়েছে নাকি কোনো? ডিনারটাও করে যাবে না?
– [ হেসে ] যাবেই তো! মেই বি আশেপাশে কোথাও আছে খুজে দেখো! আর হ্যা! যদি চাই রাতটাও এইখানে স্টে করতে পারবে, এমনিতেও কোনদিকটা ছেড়েই বা রেখেছে!
– তবে হ্যা! যদি মনে একটু শেম থাকে না? তাহলে এটা জানিয়ে দিও যে, ক্লাস ছাড়া মেয়েদের আমি আমার ছেলের বউ বানাবো না,
– এই ক্ষেত্রে রাহুল আনলাকি হলেও তুমি আবার অনেক লাকি, [ বিরবির করে অন্যপাশ তাকিয়ে ] নাজানি ছেলেটা তোমার কাছে এমন কি দেখেছে!
– আচ্ছা আমি যায় এখন! [ চেচিয়ে ] গীতালি! কি বলেছি মনে আছে তো?
গীতালি : [ হাতের প্লেটটা টেবিলে জোড়ে ছুড়ে রেখে ] সা্রি সা্রি! হো মনে আছে! [ চলে গেলো ফুফি স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে ]
[ হাত-পা কাপছিলো স্নেহার ফুফির এমন কথা শুনে, এখন তো শুধু তার মাথায় একটাই টেনশন ঘুরছে, তার সাথে এইভাবে কথা বলতে পারলে না জানি তার ফ্রেন্ডসদের সাথে কেমন কথা বলেছে ]
গীতালি : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] ভাবী! [ বলতেই স্নেহা চমকে উঠে তাকালো ]
– টেনশন কইরেন না! আনজয়! আনজয়! আরে কালকা সন্ধ্যায় ফ্লাইড ওনারার আপনেরার অনুষ্ঠান বিকালে শেষ অইলেই তারপর চইলা যাইবো! [ স্নেহা একবুক কষ্ট চাপা একটি হাসি দিয়ে মাথা নাড়ালো ]
গীতালি : আমি যায় ভাবী ডিনার রেডি করোন লাগবো নাইলে আবার মাথা হড হইয়া যাইবো![ বলেই কিচেনের দিক চলে গেলো, স্নেহা আশেপাশে একবার তাকিয়ে, পা বাড়াতেই যাবে হঠাৎ তখনিই শিরির দিক চোখ পড়লো, জারিফা মার্জান এবং শায়লা নামছে শিরি দিয়ে, জারিফা হাত নাড়ালো স্নেহাকে দেখে ]
শায়লা : [ এগিয়ে এসে ] কোথায় ছিলি স্নেহা! আমরা তোর রুম থেকেই খুজে আসছি, ভেবেছি তোরা রুমেই আছিস!
স্নেহা : গে..গেষ্ট হাউজে ছিলাম!
জারিফা : আচ্ছা! শোন স্নেহা! আমরা যাচ্ছি এইবার! ওকে? আর হ্যা! জিজুকে আমাদের পক্ষ থেকে বাই বলেদিস
স্নেহা : ডি..ডিনার..
জারিফা : আরে বাবা! এতোগুলোই খাবার না খেয়েছি, এরমধ্যে আবার ডিনার?
শায়লা : [ হেসে ] ডিনার করার মতো পেটে একদমই জায়গা নেই আমাদের! [ স্নেহা ও তাদের জোড় করার মতো সাহস পাচ্ছিলো না, মার্জানের দিক তাকালো, মাথায় একচটা রাগ নিয়ে ফুসলে আছে সে, চেহেরা দেখেই বুঝা যাচ্ছে ]
জারিফা : [ মার্জানকে ধাক্ষে ফিসফিসিয়ে ] কি হলো মার্জান! বাই বল স্নেহাকে!
মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] স্নেহা! এইখানে কেউ যদি তোকে উল্টো-পাল্টা কিছু বলে না? একদমই চুপ করে থাকবি না! মুখের উপর জবাব দিয়ে দিবি, আর না পারলে কল করে আমাকে ডেকে নিস!
শায়লা : আ..আরে কি বলছিস এসব? স্নেহা ওর মাথা আওট হয়ে গেছে, তুই তো জানিসই মাঝে মাঝে ও এমনিই হয়ে যায়! [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] আচ্ছা চল বাই ওকে?
জারিফা : [ স্নেহাকে জড়িয়ে ] বাইই স্নেহা! [ স্নেহা মার্জানের দিক তাকিয়ে রইলো, ছটফট করছে মার্জান এদিকওদিক তাকিয়ে, বুঝতে পারছে স্নেহা এই ছটফটের কারণ ]
স্নেহা : বাই! [ জারিফা আর শায়লা ছুটে এসে দাঁড়ায় ]
মার্জান : [ স্নেহার কাছে এসে শক্ত করে জড়িয়ে ] বাই স্নেহা! [ চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে স্নেহার, দূর থেকে গীতালি তাকিয়ে রইলো তাদেরদিক ]
শায়লা : আরে স্নেহা! কাদছিস কেনো আবার! এই সময় আমদের ও ইমোশনাল করে দিবি নাকি? [ স্নেহা চোখ মুছে হেসে উঠে ]
শায়লা : গুড গার্ল! আসি তাহলে
জারিফা : [ হাত নাড়িয়ে চেচিয়ে ] বাইই গীতালি [ গীতালিও হাত নাড়ালো, মার্জান আর শায়লা ও হাত নাড়িয়ে দিয়ে হাটা ধরলো, স্নেহা জলভরা চোখে তাকিয়ে আছে পেছন থেকে তাদের চলে যাওয়া ]
মেইন ডোর পার হতেই,
মার্জান : কি বলে আমাদের ঐ বজ্জাত মহিলা? আমরা গ্রীডি গার্ল? স্নেহার ফুফি শ্বাশুড়ী না হলে তো আজ একে আমার হাত থেকে কেউ বাচাতেই পারতো না
– আমার তো স্নেহার জন্যই টেনশন হচ্ছে! নাজানি ওকেও কি কি বলে আমাদের জন্য! এক্সুলি আমাদের না আজ এইখানে আসায় উচিৎ ছিলো না!
জারিফা : আরে টেনশন করছিস কেনো স্নেহার সাথে রাহুল তো আছেই! রাহুল কিছু হতে দেবে না স্নেহার!
মার্জান : কিছু জানলেই তো হতে দেবে না! তোর কি মনে হয়? স্নেহাকে কিছু বললে সেটা স্নেহা রাহুলকে গিয়ে বলবে?
জারিফা : উমম তাও ঠিক!
হঠাৎ পেছন থেকে,
নেহাল : গাইস্!
শায়লা : [ বিরবির করে ] এসেছে! এর জন্যই এসব হয়েছে, আজ যদি ও আমাদের পেছন পেছন না ঘুরতো, তাহলে ওনার রিচ মমের ও কোনো এলার্জি উঠতো না!
জারিফা : শিসস! শায়লা! আস্তে বল শুনলে কষ্ট পাবে!
শায়লা : [ চেচিয়ে ] তাতে কি হয়েছে শুনুক! শুনলে আর আমাদের সাথে কথা বলবে না এটাই ভালো হবে!
নেহাল : লিসেন্ট! মম যা বলেছে..
শায়লা : হ্যা! তা কম পড়েছে নাকি এইবার আপনিও কিছু বলবেন? [ নেহাল আর কোনো জবাব দিলো না শায়লার কথার, শুধু আবেগী চোখ দুটো দিয়ে তাকিয়ে রইলো ]
জারিফা : বা..বাই! নেহাল! [ শায়লার দিক দেখিয়ে ] এ..এক্সুলি ও..
নেহাল : ইটস্ ওকে! তোমরা কি চলে যাচ্ছো?
শায়লা : তা কি আরো ইন্সাল্ট হোওয়ার জন্য থেকে যাবো নাকি?
জারিফা : [ শায়লাকে চিমটিয়ে ফিসফিসিয়ে ] স্টপ ইট শায়লা!
নেহাল : আ..আমি ড্রপ করেদিচ্ছি!
শায়লা : এতো দয়া দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই! গাড়ী ভাড়া আছে আমাদের, আর না থাকলে না, হেটেই চলে যাবো!
হঠাৎ পাশ থেকে রিদোয়ান আর আসিফ এগিয়ে আসে,
আসিফ : আরে তোমাদের ছাদ থেকে নামার পর আর দেখা গেলো না যে?
মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে অন্যপাশ ফিরে ] জারিফা ওনাকে বল আমার সিগারেটের স্মেল মোটেও পছন্দ না! তাই একটু দূর হয়ে দাড়াতে,
আসিফ : আচ্ছা! তাহলে কি সিগারেট খাওয়াও ছেড়ে দিতে হবে নাকি এখন?
মার্জান : জাহান্নামে যাক তাতে আমার কি! [ আসিফ অবাক হয়ে, মনে মনে ভাবতে লাগলো, এই মেয়ে পুরোদিন তো ঠিকই ছিলো হঠাৎ আবার এখন ঘাড় ত্যাড়া হয়ে গেলো কেনো, পুরোনো রক্তটা বোধহয় মাথায় আবার চেটে গেছে! ]
রিদোয়ান : [ জারিফার কাছে এসে ] আচ্ছা শুনো! আলিসা থেকে শুনলাম চলে যাচ্ছো নাকি?
জারিফা : হ্যাঁ!
রিদোয়ান : আমাকে না বলেই! আর তোমরা তিনজন এইভাবে একা?
জারিফা : ভাবলাম আ..আপনি আরো লেইটে যাবেন হয়তো, তাই আর..
রিদোয়ান : হ্যাঁ! আমিও ভাবলাম একসাথেই বের হবো, তবে তোমরা এক্ষুণিই কেনো যাচ্ছো!
শায়লা : এক্সুলি আমরা খুব টায়ার্ড, গতকালই তো বিয়েটা শেষ হলো, মানে বুঝতে পারছেন কতোটা লেভার গেছে আমাদের উপর! সো্ আই থিংক আমাদের এখন বের হওয়া উচিৎ!
রিদোয়ান : আচ্ছা চলো আমি ড্রপ করে দিচ্ছি!
জারিফা : নাহ আমরা তো..
রিদোয়ান : কথা বেশী বলোনা! [ জারিফা ও আর কিছু বললো না, এগিয়ে গেলো গাড়ীর দিক, মার্জান আসিফের দিক আড়চোখে তাকিয়ে মুখ ভেংগিয়ে দিয়ে চলে গেলো জারিফার পিছু পিছু, শায়লা নেহালের দিক নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে গাড়ির দিক হাটা ধরলো ]
রিদোয়ান : বাই নেহাল! আর হ্যা! রাহুলকে বলেদিস, ইভেন্টাররা সকাল সকাল এসেই সাজিয়ে দিবে,
– আচ্ছা! বাদ দে আমিই ফোন করে বলে দিবো! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো তখনিই ]
আসিফ : [ রিদোয়ানকে আটকিয়ে,পকেট থেকে তার গাড়ীর চাবিটা বের করে দিয়ে ] ধর এটা নে! তোরটা দে!
রিদোয়ান : [ কনফিউজড হয়ে ] বুঝলাম না!
আসিফ : মানে হচ্ছে আমার গাড়ীতে জারিফাকে নিয়ে তুই উঠ! আর ওদের দুজনকে নিয়ে আমি উঠছি!
রিদোয়ান : [ হেসে ] উমমম! বুঝেছি দোস্ত চান্স মারছিস হুমম?
আসিফ : আরে আমার গাড়ী হলে উঠবেনা তাই করতে হচ্ছে! [ বলেই হেসে চাবিটা কেড়ে নিয়ে চলে যায়, গাড়ীর দিক এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিতেই শায়লা, মার্জান দুজনই উঠে বসলো গাড়ীতে, আসিফকে ড্রাইভিং সিটে বসতে দেখেই ]
মার্জান : [ চেচিয়ে ] আরেহ! আপনি?
আসিফ : জ্বি আমি!
মার্জান : কিন্তু..
আসিফ : আরে ওরা দুজন কাপল! আলাদা যাচ্ছে আরকি! আর আমরা কাপল আলাদা যাচ্ছি! [ বলেই গাড়ী স্টার্ট দিলো ]
মার্জান : এক্সকিউজ মি?
আসিফ : [ জিহবায় কামড় খেয়ে ] মানে হচ্ছে! ওদের একটু আলাদা টাইম স্পেন্ড করতে দিলাম! সিম্পল! [ শায়লা হেসে উঠলো, মার্জান নাক ফুলিয়ে জানালার পাশ তাকিয়ে ফেললো ]
___ এইদিকে রাহুল গেষ্ট হাউজ থেকে মেইন ডোরের সামনে আসতেই দেখে,নেহাল পকেটে হাত রেখে একা দাঁড়িয়ে আছে, আর গেইট দিয়ে আসিফ আর রিদোয়ানের গাড়ী দুটোই বেড়িয়ে যাচ্ছে,
রাহুল : [ নেহালের কাধে হাত রেখে ] আরে!স্টুপিড গুলো আমাকে না বলেই চলে গেলো! আর তুই এইখানে একা দাঁড়িয়ে কি করছিস?
নেহাল : নাথিং! [ বলেই মৃদু হেসে রাহুলের দিক একটু তাকিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো ]
রাহুল : [ কনফিউজড হয়ে ] নাথিং মানে? এর আবার কি হলো? [ বলেই সে ও ভেতরে ঢুকে পড়লো, ডাইনিং টেবিলের দিক গীতালিকে দেখতেই ]
রাহুল : হেইই গীতালি! স্নেহাকে দেখেছিস?
গীতালি : অওও! রাহুল ভাইয়া আপনারেই খুজতাছি!
রাহুল : আমাকে? কেনো?
গীতালি : [ রাহুলের কাছে এসে ] ভাইয়া! ভাবীর থেইকাই শুইনেন! আমি এতোসব এহন কইতে গেলে আবার ফুফি আইয়া দেইখা ফেলবো! তহন ভাববো আমি আবার প্যাচাল লাগাইতেছি, ব্যাস আমি তো অনলি এইজন্যই কইতাছি, ভাবীরে আমার খুব ভাল্লাগছে একদম সিধাসাধা, আর ভাইয়া আফনের সাথে তো একদম পার্ফিক্ট মেছ অইছে!
রাহুল : ওয়েট! আই কান্ট আন্ডারষ্ট্যান্ড এনিথিংক!
গীতালি : ইউ নট আন্ডাষ্টান! ওকে, [ বলেই আশেপাশে উকি দিয়ে ] আসলে ভাইয়া! ভাবীর ফেন্সরা আছে না? ওনারারে নাফিসা ফুফি বহুদ ইনশাল্ট করছে, নেহাল ভাইয়া আইবার পরই ফুফি থামছিলো নাইলে তো এক একডা কথা কইয়ায় যাচ্ছিলো কইয়ায় যাচ্ছিলো, তারা ডিনার না কইরাই চইলা গেছে, আমার মনে অয় দেয়ার ফিলিং ইনশাল্ট!
– আর তো কি অয়ছে জানেন! ভাবী আসার ফরে ভাবীরেও অনেক কিছু কইছে, ভাবী একদম চুপ কইরাই হুইনা আছিলো কিছুই জবাব দেইনাই!
– আচ্ছা ভাইয়া! আপনি এহন যান ভাবীরে একটু মিষ্টি মিষ্টি কথা কইয়া মন ভালা কইরা ডিনার করানোর লাইগা লইয়া আয়েন! আমি যায় বাকিদের ও ডিনার করানোর লাইগা ডাহোন লাগবো [ বলেই চলে গেলো গীতালি, রাহুল হাত মুঠি করে ঐদিকটাই থমকে দাঁড়িয়ে আছে, মাথায় যেনো আগুন জ্বলছে রাহুলের, এমন কিছুও হবে সে কখনো কল্পনা করতে পারেনি, মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে রিদোয়ানকে কল দিলো ]
রিদোয়ান : [ রিসিভ করে ] সরি! দোস্ত তোকে বলে আসতে পারলাম না!
রাহুল : কোথায় এখন?
রিদোয়ান : ড্রপ করে দিচ্ছি জারিফাদের!
[ রাহুল আর কিছু বললো না ফোন কেটে পকেটে ঢুকিয়ে, তাড়াহুড়ো করে দু-তিন লাফে শিরি বেয়ে উঠে রুমে গিয়ে ঢুকলো, স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে জানালার ধারে বাহিরের দিক তাকিয়ে, চোখ থেকে ঝড়ে যাচ্ছিলো বেদনার অশ্রু, রাহুল এসেছে বুঝতে পেরে স্নেহা চোখ মুখ ভালো করে মুছে পেছন ফিরে তাকিয়ে মুচকি হাসলো ]
রাহুল : [ স্নেহার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে ] কাদছিলে?
স্নেহা : [ হেসে ] আরে নাহ! কাদবো কেনো?
– [ রাহুলের জ্যাকেটের কলার ঠিক করে দিয়ে ] আচ্ছা শুনেন! আপনার কাপড় আলমিরা তে রেখেছি! দাদী বলেছে দেখেনিতে!
রাহুল : কি বলেছে ফুফি? [ চমকে উঠলো স্নেহা রাহুলের কথা শুনে ]
রাহুল : [ চেচিয়ে ] হা করে তাকিয়ে আছো কেনো? বলো আমায় কি বলেছে? [ স্নেহা দরজার দিক একবার তাকিয়ে আবার রাহুলের দিক তাকালো তাড়াতাড়ি ]
রাহুল : স্নেহা! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি!
স্নেহা : রাহুল! ধীরে বলুন কেউ শুনবে!
রাহুল : [ দাতে দাত ঘেষে ] শুনুক! আই ডোন্ট কেয়ার!
স্নেহা : কেক..কে বলেছে আপনাকে এসব? আমাকে ফুফি কিছুই বলেনি!
রাহুল : ইডিয়ট [ বলেই রেগে স্নেহার কাছাকাছি আসতেই স্নেহা ভয়ে পিছিয়ে যায় ] তোমাকে কিছু বলেছে কি বলেনি তা আমি ভালোকরেই বুঝতে পারছি,
– তোমার মুখ ছিলো না জবাব দাওনি কেনো?
– ওর বাপের খাচ্ছো? হ্যা? ওর বাপের জবানা শেষ, আমার বাপের খাচ্ছো! [ বলেই স্নেহার হাত টেনে নিয়ে বেরুতেই যাচ্ছিলো তখনিই ]
স্নেহা : [ রাহুল থেকে হাত ছুটিয়ে ] পাগল হয়েগেছেন আপনি? কি এসব বলছেন?
চলবে…