♥Love At 1st Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 51
writer-Jubaida Sobti♥
মার্জান : [ মনে মনে ] গেলো কই? উফফফ! ওভার করে ফেলেছি নিশ্চয়! [ বলেই বাহিরের দিক এগিয়ে এলো, রাত প্রায় গভীরে, কাউকেই চোখে পড়ছে না ছোট ছোট কয়েকজন বাচ্চা দৌড়াদৌড়ি করছে পার্কিং এর দিক ,হঠাৎ চোখে পড়লো রাশুকে,রাশুও মার্জানকে দেখে দৌড়ে এগিয়ে এলো ]
রাশু : [ হেসে হেসে ] কি হলো খাইয়েছো চিলি জুস?
মার্জান : হ্যা! খাইয়েছি, কিন্তু খাওয়ানোর পর আর খুজে পাচ্ছিনা কোথায় গেলো বলতো? তুই দেখেছিস?
রাশু : না আমি তো এইদিকটাই ছিলাম,এদিকেও আসলো না দেখিওনি, কিন্তু দেখার খুব ইচ্ছা! কেমন হাল হয়েছে, [ বলেই হাসতে লাগলো ]
মার্জান : [ মনে মনে ভাবতে লাগলো ] আজিব এইদিকেও এলো না ভেতরে ও নেই তাহলে গেলো কই?
রাশু : আচ্ছা বাকি মরিচ গুলো কি করবো? [ মার্জান আর রাশুর কথার প্রতি ধ্যান দিলো না পেছন মুড়ে ভেতরের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো তখনি আবার, ]
রাশু : আরে বাকি মরিচ গুলো কি করবো বললে না যে,
মার্জান : উফফ! [ বিরক্ত হয়ে ] এক কাজ কর ঐগুলো দিয়েও জুসওয়ালাকে বল আরেকগ্লাস বানিয়ে দিতে তারপর এনে আমাকে খাইয়ে দে,
রাশু : সত্যিইই! দাঁড়াও আমি এক্ষুণি বানিয়ে আনছি,
মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] তোকে তো আমি…[ বলতেই রাশু হেসে হেসে দৌড় দিলো ]
দীর্ঘ একটি নিশ্বাস ছেড়ে ভেতরের দিকই হাটা ধরলো,চারদিকই তো খুজে দেখলো কোথাও নেই, মনে মনে ভাবতে লাগলো এতে তারই বা কেনো এতো টেনশন হচ্ছে, যাক গিয়ে যেখানে যাওয়ার, উফফফ! কিন্তু গেলো কই এটাও তো জানার বিষয়, এসব ভেবে হাটতে হাটতে হঠাৎ পাশে ওয়াসরুম চোখে পড়লো, মাথা এগিয়ে একবার ওয়ারুমে ও উকি দিলো, কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না, তাই আবার ও চারদিক চোখ বুলিয়ে হাটা ধরলো, হঠাৎ দু-তিন কদম এগিয়ে যেতেই থমকে দাঁড়িয়ে যায়, তাড়াতাড়ি পেছন ফিরে আবারো ওয়াসরুমের দিক এগিয়ে এসে ধীরেধীরে লেডিস ওয়াসরুমের দিকই ঢুকলো,মিডলে সাদা একটি পর্দা লাগানো,পাশে জ্যামস ওয়াসরুম, বেসিনে পানি ছেড়ে রাখার আওয়াজ আসছে, মনে মনে ভাবছে, কি আজিব ব্যাপার পানির ট্যাংক খালি করে ছাড়বে নাকি, তবে সাদা পর্দার ছায়ার ওপারের মানুষটাকে কেনো যেন যাকে খুজছে এতোক্ষণ সেই মনে হচ্ছে, তাই শিয়র হওয়ার জন্য ধীরেধীরে পর্দাটা ফাক করতেই এক্সাইটেড হয়ে একচিৎকার করে উঠলো ]
মার্জান : আরে! এইতো দেখছি আপনিইই! [ বলেই পর্দা সরিয়ে আসিফের কাছাকাছিই এগিয়ে আসলো, আসিফ মাথা ঝুকিয়ে আছে বেসিনে, মার্জানের চেচানিতে মাথা তুলে মিররের দিক তাকালো ]
মার্জান : ও হ্যা! আপনার তো এমনিতেও এইখানেই থাকা উচিৎ! কিন্তু আপনি ওয়াসরুমে কেনো আপনার তো টয়লেটে হওয়া উচিৎ ছিলো! [ বলতেই হঠাৎ চোখ পড়লো বেসিনে,সাথেই হাসি উদাও হয়ে যায় মুখ থেকে, ধীরেধীরে আড়চোখে তাকালো আসিফের দিক, ভালো করে চোখের দিক তাকিয়ে খেয়াল করলো চোখ দুটো লাল হয়ে আছে ]
মার্জান : আপনি বব..বমি করেছেন? [ চুপচাপ চেয়ে রইলো আসিফ ]
মার্জান : [ আসিফের চোখের দিক তাকিয়ে ] কাক..কাদছেন নাকি আপনি? কি হয়েছে? [ আসিফ কোনো জবাব দিলো না চোখ নামিয়ে বেসিনের দিক তাকিয়ে, হাতে পানি নিয়ে আবার কুলি করে বেসিনে ফেললো ]
মার্জান : আরে কি হয়েছে কিছু বলছেননা কেনো? আচ্ছা ঠিকাছে আমি..
– সরি! [ বলতেই আসিফ অবাক হয়ে তাকালো, হঠাৎ একজন সারভেন্ট জুস হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো ]
সারভেন্ট : সরি! ভাইয়া আনতে একটু লেইট হয়ে গেছে, এটা খেয়ে দেখেন,হয়তো ভালো লাগবে!
মার্জান : [ অবাক হয়ে আসিফের দিক তাকিয়ে ] আপনার ঝাল লাগছে এখনো?
সারভেন্ট : হ্যা! কে যেনো স্পাইসি কি খাইয়ে দিয়েছে, ভাইয়ার নাকে মুখে স্মেলটা প্রবলেম করছে! তাই তো বমি হচ্ছে, [ বলেই আবার মিররের দিক তাকাতেই আসিফের চোখাচোখি হোওয়ায় জুসটা বেসিনের পাশে রেখে ]
– ভাইয়া আর কিছু লাগবে? [ আসিফ মাথা নাড়িয়ে কাছে আসতে ইশারা করলো, সারভেন্ট মাথা এগিয়ে দিলে আসিফ কানে কানে কি যেনো বলতে থাকে, মার্জান ও মাথা কিছুটা এগিয়ে কান পেতে রাখলো, কিন্তু কিছুই শুনতে পারলো না, সারভেন্ট মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে গেলো, কথা শেষে আসিফ মার্জানের দিক তাকাতেই ]
মার্জান : [ তাড়াহুড়ো করে ঠিক হয়ে দাঁড়িয়ে ] রিভেঞ্জ নিচ্ছেন আমার কাছ থেকে? আমি কিছু বুঝি না ভেবেছেন? কি শিখিয়ে দিয়েছেন ওনাকে হ্যা? [ আসিফ পাশমুড়ে মার্জানেরদিক এক পা এগিয়ে দিতেই পিছিয়ে গিয়ে পাশের বেসিনের সাথে লেগে দাড়ালো মার্জান ]
– দে..দেখেন তখন থেকেই আপনি আমার ইন্সাল্ট করে যাচ্ছিলেন সবার সামনে,তাই আমিও রিভেঞ্জ নিয়েছি আপনার কাছ থেকে.. হ্যা.. আ..আমারটা এ..একটু ওভার হয়েছে বুঝতে পারছি…কিন্তু এখন দুজনের বরাবর! মানে সে্ইম সে্ইম! এরপর ও যদি আপনি আপনার চামচা-টামচা দিয়ে কিছু করিয়ে ছাড়েন না..তাহলে দেখবেন আমি…[ বলতেই থমকে চুপ হয়ে যায়, আসিফ তার দু-হাত বেসিনে রেখে মার্জানের একদম কাছে মাথা নুয়ে দাড়ালো ]
আসিফ : থেমে গেলে কেনো? বলো তুমি! কি করবে?
মার্জান : কক..করবো! আগে জেনে তো নেই..আপনি কি করছেন!
আসিফ : এতো কেপে কেপে বলছো কেনো? ভয় লাগছে আমাকে?
মার্জান : না তো.. ভব..ভয় কেনো পাবো আপনাকে! নেভার কক..কখনোই না!
আসিফ : আমি ওকে জাষ্ট বলেছি! বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে,ভেতরে কেউ আসলে যেনো ইনফর্ম করে, কারণ…
মার্জান : [ শকড হয়ে ] কারণ?
আসিফ : [ মুচকি হেসে ] কারণ,তুমি জ্যামস ওয়াসরুমে, কেউ দেখলে তোমাকে খারাপ ভাববে!
মার্জান : দেখেন কে কি ভাববে সেটা জানার আমার বিন্দু পরিমাণ ও ইন্ট্রেষ্ট নেই! আমি তো জাষ্ট এসেছি আপনাকে…
আসিফ : হ্যা! বলো আমাকে?
মার্জান : দূ..দূরে সরে দাড়ান! আপনি..এতো কাছে এসে দাড়িয়েছেন কেনো? [ আসিফ মুচকি হেসে হাতেহাত বটে সোজা হয়ে দাড়ালো, মার্জান কিছুক্ষণ চুপ হয়ে একবার আসিফের দিক আরেকবার অন্যদিক তাকাতে লাগলো ]
– [ মনে মনে ] কি আজিব! এভাবে ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে কেনো! [ আর না ভেবে, সামনে চলে আসা চুল গুলো কানে বটে, বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য দু-পা বাড়াতেই, হঠাৎ হাত ধরে একটানে, একই জায়গায় আবারো দাড় করিয়ে নিলো আসিফ, মার্জান ভোর কুচকে শকড হয়ে তাকালো ]
আসিফ : এমনিতে মরিচ ছাড়া আর কিছু দিয়ে তো রিভেঞ্জ নিতে পারো না তুমি,ইউ নো! এর চেয়ে বড় রিভেঞ্জ নেওয়ার ক্যাপাসিটিই তোমার কাছে নেই! [ বলেই হুট করে নিজের ঠোট দিয়ে মার্জানের ঠোটে শক্ত করে চেপে চুমু দিয়ে রাখলো, চোখ দুনোটা বড় হয়ে গেছে মার্জানের, কয়েক সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছে সে পৃথিবীতেই নেই ]
আসিফ : [ ধীরেধীরে ঠোট ছেড়ে মার্জানের চোখের দিক তাকিয়ে ] কখনো কখনো আমার মতো ও রিভেঞ্জ নিতে শেখো! মিস্ এংগ্রী বার্ড! [ বলেই মার্জানের ওড়নার আচলটা টেনে নিয়ে ঠোটে লেগে যাওয়া লিপিষ্টিক গুলো মুছে নেই, মার্জান এখনো শকিং এক্সপ্রেশন নিয়ে চেয়ে আছে আসিফের দিক, আসিফ ও চোখ টিপ মেরে দাত দিয়ে ঠোট কামড়ে ধরে একটি হাসি দিয়ে বেড়িয়ে চলে গেলো, শকিং এখনো শেষ হলোনা মার্জানের, আকাশের সবচেয়ে বড় বাজটায় যেনো তার মাথায় পড়লো, মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরে আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে হুরহুর করে পাশের লেডিস ওয়াসরুমে চলে গেলো ]
মার্জান : [ মনেমনে ] ছিইইইইই! কি অসভ্য! আর আমিই বা কেমন? ও যখন কাছে এসেছিলো তখন ধাক্ষা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিলো তো তাই না?
– কিন্তু ও কাছে আসাতে আমি কিছু বললামই না, মুখ দিয়ে কিছু বেরুচ্ছিলোই না, এমন কেনো লাগছিলো যেনো হৃদস্পন্দন গুলো খোলা হাইওয়ে পেয়েছে, তীব্র গতিতেই চলছিলো তখন!
– ছিঃ ছিঃ ছিইইই! আমি এসব কি ভাবছি!
___________এইদিকে,
সবাই বাড়ি ফেরার জন্য রেডি,হলের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছে সবাই, গাড়ী সব পার্কিং থেকে হলের সামনে এসে দাড়াচ্ছে,
স্নেহা : শায়লা! এই মার্জানটা কই গেলো বলতো! রিং পড়ানোর সময় ও ওকে কাছে দেখলাম না,
শায়লা : আরে হবে কোথাও! [ চোখ মেরে ] আই মিন আসিফের সাথেই হবে নিশ্চয়…
স্নেহা : কিন্তু আসিফ তো রাহুলের সাথে কথা বলছে ঐ দেখ!
শায়লা : আরে হ্যা!
স্নেহা : কোথায় গেছে মেয়েটা! আমাদের যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, বেরুতে হবে তো তাই না,
শায়লা : আচ্ছা টেনশন নিস না! আমি খুজে আনছি তুই দাড়া! [ বলেই খুজতে চলে গেলো ]
হঠাৎ স্নেহার দিক এগিয়ে এলো,
রাহুলের মা : আরে স্নেহা! টেনশনে মনে হচ্ছে! কাউকে খুজছো নাকি?
স্নেহা : না..নাহ! তেমন কিছুই না, এক্সুলি মার্জানকে দেখা যাচ্ছে না, যাওয়ার ও সময় হয়ে গেছে,
রাহুলের মা : আরে ওকে তো দেখলামই কিছুক্ষণ আগে,আচ্ছা দাঁড়াও আমি কাউকে পাঠিয়ে খুজে আনছি,
স্নেহা : না না..অতোকিছুর দরকার নেই, শায়লা গিয়েছে! হয়তো এদিকে কোথাও হবে!
রাহুলের মা : [ হেসে ] আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলতেই দেখে জারিফা এবং স্নেহার মা ও পাশে এসে দাড়ালো ]
জারিফা : সব রেডি স্নেহা! এবার চল!
স্নেহার মা : আরে এই শায়লা আর মার্জান কই গেলো আবার?
রাহুলের মা : [ হেসে ] শায়লা গিয়েছে মার্জানকে খুজতে! আর যাওয়ার এতো তাড়া কিসের? ধীরেসুস্থে যান!
জারিফা : ওহো আন্টি! তাড়া থাকবে না? একটু পড়ই সকাল হতে চলবে, আর আপনাদের বউমাকে ঘরে তোলার এতো তাড়া যে গায়ে হলুদের পরের একটা দিন যে রেষ্ট করবো সেটাও রাখলেন না,
রাহুলের মা : আরে এতে আমার কি দোষ! আমি তো চেয়েছিলাম সব সাজিয়ে-গুছিয়ে করবো কিন্তু [ বলতেই দেখে রাহুল এগিয়ে এসে হুট করেই মাঝ থেকে স্নেহার হাত ধরে টেনে এগিয়ে নিয়ে চলে যায় ]
রাহুলের মা : [ হেসে ] দেখলা? কার কতো তাড়া আছে তাতো জানিনা কিন্তু এর অনেক তাড়া!
– আমাকে তো বিকেলে অনেক ঝাড়িটাড়ি দিলো, ও যতোবারই নাকি স্নেহাকে একদম তার নিজের করতে চাই তখনি নাকি বারবার কেউ না কেউ বাধা প্রধান করে এবং ঐ লিষ্টে নাকি এখন আমিও যোগ হয়েছি, [ জারিফা আর স্নেহার মা হেসে উঠলো ]
রিদোয়ান : [ এগিয়ে এসে ] হ্যালো গাইস্! কি কথা হচ্ছে আমাকে ফেলে? আরে এই দুলা-দুলহান কই গেলো?
জারিফা : দুলা নিয়ে গেছে দুলহানকে! কোনো এক জায়গায়,লাষ্ট মুহুর্তের লাষ্ট রোমেন্স করতে!
রিদোয়ান : তো কোনো এক জায়গায় যাওয়ার কি দরকার এইখানে করলেও তো পারতো! [ সবাই অবাক হয়ে তাকালো রিদোয়ানের দিক ]
রিদোয়ান : [ হেসে ] আরে এভাবে কেনো দেখছো, রাহুলের জন্য নতুন কি সবার সামনে রোমেন্স করার [ স্নেহার মায়ের দিক তাকিয়ে ] তাই না আন্টি? আন্টিও অনেক দেখেছে তার মেয়ের বরের রোমেন্স! [ সবাই আবারো হেসে উঠলো ]
রাহুলের মা : আরে! আমার ছেলেটা একটু বউ পাগলা আরকি! তাতে কি হয়েছে? ছেলেদের এমনিতেও এমন হওয়া উচিৎ!
জারিফা : দ্যাটস্ রাইট আন্টি! কিন্তু এমন ছেলে আজকাল পাওয়া ও অনেক মুশকিল! [ বাকিরা বুঝতে পারলো কাকে ডেডিকেট করে বলছে, রিদোয়ান ও আর দেরী কিসের এক মিনিট ও অপেক্ষা করলো না, সাথেসাথেই জারিফার গালে একটি কিস করে বসলো, জারিফা অবাক হয়ে পাশ ফিরে তাকাতেই রিদোয়ান হেসে দিলো দৌড়, বাকিরা হাসতেই রইলো ]
____________ এইদিকে নিরিবিলি এক কোণে,স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে দেওয়ালের সাথে লেগে, রাহুল দেওয়ালে হাত রেখে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,
স্নেহা : এভাবে আনাটা ঠিক হয়নি আপনার!
রাহুল : আচ্ছা তাই?
স্নেহা : নয়তো কি? সবাই নাজানি কি কি ভাবছে এখন!
রাহুল : এক্সকিউজ মি! সবাই কি ভাবছে মানে? অন্য কাউকে টেনে আনিনি! আমার বউকে আমি টেনে এনেছি!
স্নেহা : [ মুচকি হেসে ] বউ এখনো হইনি!
রাহুল : তাতে কি হয়েছে? আমি মন থেকে মেনে নিয়েছি মানেই তুমি আমার বউ হয়ে গেছো! এসব প্রোগ্রাম টোগ্রাম তো মানুষ জাষ্ট সবই শো অফের জন্য করে!
স্নেহা : মোটেও না! সব ধর্মেরই আলাদা আলাদা একটা রীতি আছে বিয়ের, হ্যা! এসব প্রোগ্রাম করাটা জরুরি নয়,তবে রীতি অনুযায়ী বিয়ে করাটাও জরুরী, নাহলে হাজবেন্ড ওয়াইফ মানা যায় না, [ বলেই রাহুলের গাল টেনে দিয়ে ] বুঝেছেন?
রাহুল : [ বিরবির করে ] এক্সট্রা লজিক! [ বলেই হেসে অন্যপাশ ফিরে যায় ]
স্নেহা : কি বললেন বিরবির করে?
রাহুল : আরে স্নেহা! মন থেকে বড় রীতি আর কি হতে পারে বলো? কাগজে কলমে সই করে দিয়ে শুধু দুনিয়াকে দেখানো যায় যে তুমি আমার বউ, আসল তো আগে মন থেকে মেনে নিতে হবে তাই না?
স্নেহা : হুমম! সেটাও রাইট!
রাহুল : রাহুল অলোয়েজ রাইটই বলে! [ with tedi smile ] সো্ স্নেহা! এখন তো মানছো তাই না? তুমি! আমার বউ! [ মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো স্নেহা ]
রাহুল : [ ও মাথা নাড়িয়ে ] ওখেই! সো্ ইউ নো দ্যাট! হাজবেন্ড যা যা বলে তা নাকি বউদের সরাসরি মেনে নিতে হয়!
স্নেহা : [ হেসে ] হুম তারপর?
রাহুল : হাসছো কেনো? সত্যিই বলছি এর আগে শুনোনি তুমি? না শুনলে যার থেকেই ইচ্ছে তার থেকে জিজ্ঞেস করে নিও! হাজবেন্ড এর কথা না শুনলে নাকি গুনাহ হয়!
স্নেহা : হ্যা! হ্যা! তারপর…
রাহুল : [ হেসে ] সো্ বলছিলাম যে, যেহেতু গুনাহ হবে, তাই চুপচাপ মেনে নাও! আমি এখন কিস্ করবো! [ বলেই স্নেহার ঠোটের দিক নিজের ঠোট এগুচ্ছিলো তখনি ]
স্নেহা : [ রাহুলের মুখে হাত রেখে বাধা দিয়ে ] কি করছেন আপনি? কেউ এসে গেলে!
রাহুল : আরে কেউ আসবে না! এতো ভয় পাচ্ছো কেনো,দেখো তুমি হাজবেন্ড এর কথা রিফিউজড করছো গুনাহ হবে তো!
স্নেহা : [ হেসে,হাত তুলে দু-দিকের গাল টেনে দিয়ে ] গুনাহ! তখনি হবে যখন ব্যাপারটা লজিক্যাল হবে! এবার চলুন লেইট হচ্ছে সবাই আমাদের অপেক্ষা করছে! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো তখনি ]
রাহুল : [ স্নেহার হাত ধরে ফেলে ] আরে স্নেহা! লজিক্যাল মানে? এটাও তো আমার হক! [ পেছন ফিরে তাকালো স্নেহা ]
রাহুল : [ হেসে মাথা চুলকাতে চুলকাতে ] না মানে বলছিলাম যে জাষ্ট কিসি্ই তো! [ স্নেহা ও মুচকি হেসে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ আবার কি ভেবে দাড়িয়ে পড়লো কে জানে, তা দেখে রাহুল ও মুচকি হাসলো,পেছনে ফিরে আবার রাহুলের দিকই এগিয়ে এলো স্নেহা! তাকিয়ে আছে রাহুল স্নেহার চোখের দিক, ধীরেধীরে পা আলগে তুলে রাহুলের গালে আলতো করে চুমু খেলো! ]
রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] জানতাম তুমি হাজবেন্ডকে নিরাশ করবা না!
স্নেহা : হ্যা! সেটা তখনি, যখন হাজবেন্ডটা বউকে আপনার মতো এত্তোগুলা ভালোবাসে [ Rahul give e tedi smile ]
স্নেহা : এবার চলেন! [ বলেই হাটা ধরলো, রাহুল হেসে ঘাড়ে হাত রেখে চুলকাচ্ছে আর ব্লাশিং হচ্ছে ]
স্নেহা : [ কিছুদূর হেটে গিয়ে আবার পেছন ফিরে ] আরে কি হলো? চলেন!
রাহুল : ই..ইয়াহ! কাম ইন! [ বলেই দৌড়ে এসে দাড়ালো স্নেহার পাশে, দুজনেই একসাথে এগিয়ে গেলো বাকিদের কাছে ]
জারিফা : ওহো! আপনাদের রোমান্স তাহলে এবার শেষই হয়েছে তাই না!
রাহুল : [ হেসে জারিফার মাথায় বাড়ি দিয়ে ] শাট-আপ ইয়ার!
স্নেহা : [ মার্জানের দিক এগিয়ে গিয়ে ] কোথায় ছিলি মার্জান তুই?
মার্জান : এইতো এইদিকেই ছিলাম!
স্নেহা : এইদিকে?
মার্জান : আচ্ছা চল এবার! আমার অনেক টায়ার্ড লাগছে! [ বলেই এগিয়ে গিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে বসে যায়, স্নেহা ও আর কিছু বললো না, বাকিরা ও এক এক করে উঠতে লাগলো গাড়ীতে, স্নেহা গিয়ে রাহুলের বাবা-মা এবং বাকিদের থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ীতে উঠতে যাবে তখনিই রাহুল এসে গাড়ীর দরজা আরো পাশ করে খুলে দেই, মুচকি হেসে উঠে বসলো স্নেহা ]
রাহুল : [ স্নেহার শাড়ী এবং ওড়না ভালো করে গাড়ীর ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে জানালায় হাত রেখে উকি দিয়ে ] বাই গাইস্!
জারিফা : ওহো জিজু! এতো কেয়ারিং চলছে!কালকের জন্য ও কিছু বাচিয়ে রাখুননা!
রাহুল : বাচিয়ে রাখতে হবে না! [ With tedi smile ] ওর জন্য তো সবই অফুরন্ত!
জারিফা : ব্যাস ব্যাস জিজু! স্নেহা লাল হয়ে যাচ্ছে! [ বলতেই স্নেহা চিমটি দিলো জারিফাকে ]
রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] বাই!
স্নেহা : বাই! [ সরে দাড়ালো রাহুল, গাড়ী টান দিয়ে চলে গেলো ]
________ ভোর ৪টা বেজে ২০ মিনিট! বাড়ী এসে সবাই কাপড়-চোপড় জিনিষপত্র খুলছে!
স্নেহা : আরে! মা রাশু কোথায়? ওকে দেখছি না যে?
স্নেহার মা : ওর চিন্তা বাদ দে! ও আছে ওর মজাই!
স্নেহা : মানে?
জারিফা : একশয়তান আরেক শয়তানকে নিয়ে গেছে! ঐ যে কথায় আছে না শয়তান শয়তান ভাই ভাই
শায়লা : ওকে রিদোয়ান সাথে নিয়ে গেছে, আমরা তো অনেক বললাম, কিন্তু ও এলো না,
স্নেহার মা : উল্টো বলছে ও নাকি আজ থেকে কনে পক্ষ না, বর পক্ষ! [ বলেই হেসে কাপড়-চোপড় বিলিয়ে দিয়ে চলে যায় পাশের রুমে ]
স্নেহা : আচ্ছা?..কিন্তু তাও…
জারিফা : ডোন্ট ওয়ারি স্নেহা! আমার কথা হয়েছে রিদোয়ানের সাথে ওরা সবাই রাহুলের গেষ্ট হাউজেই আছে একসাথে! [ স্নেহা ও আর কিছু বললো না,তাওয়েল নিয়ে মুখ মুছে,খাটে শুয়ে পড়লো,কম্বল টেনে নিতেই হঠাৎ পাশে মার্জানের দিক চোখ পড়লো,একধ্যানে উপরের দিক তাকিয়ে সোজা হয়ে শুয়ে আছে মার্জান ]
স্নেহা : মার্জান?
মার্জান : হুমম?
স্নেহা : তুই ঠিকাছিস?
শায়লা : [ পাশে এসে শুয়ে ] আরে আমার ওতো একই প্রশ্ন কখন থেকে এক ধ্যানে উপরের দিক তাকিয়ে আছে, গাড়ীতেও আমরা বকবক করে গিয়েছি আর ও রোবোট হয়ে বসে ছিলো!
জারিফা : [ লাইট বন্ধ করে এসে কম্বল টেনে শুয়ে ] আরে মার্জান কোনো আসিফের ধ্যানে মগ্ন হয়ে আছিস নাকি?
মার্জান : [ জোড়ে একটি নিশ্বাস ছেড়ে ] মোটেও না! [ বলেই মুখের উপর কম্বল টেনে দেই, বাকিরা ও হেসে শুয়ে পড়ে ]
হঠাৎ, কিছুক্ষণ পর,
মার্জান : [ মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে ] স্নেহা!
স্নেহা : হুমম!
মার্জান : তুই কি রাহুলের সাথে কিস্ করেছিস? [ জারিফা আর শায়লা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো, স্নেহা ও অবাক হলো মার্জান হঠাৎ এমন প্রশ্ন করাই ]
জারিফা : আরে! মার্জান স্নেহা রোমেন্স কিং এর সাথে রিলেশন করেছে, মানে বুঝতে পারছিস কতোবার কিস্ করেছে!
– তুই বরং এটাই জিজ্ঞেস কর! স্নেহা রাহুলের সাথে রিলেশন হওয়ার পর তুই কোনদিন কিস্ করিসনি! [ বলেই আবার হাসতে লাগলো ]
স্নেহা : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] হ্যা! বলেছে তোকে শয়তান কোথাকার!
শায়লা : আরে মার্জান! কিন্তু এতো রাতে হঠাৎ! তোর কিসে্র কথা কেনো মনে পড়লো?
জারিফা : বলেছিলাম না আমি হান্ড্রেট পার্সেন্ট শিয়র ও আসিফকে নিয়েই ভাবছে তাই না! মার্জান?
মার্জান : আরে তেমন কিছুই না পাগল নাকি ওকে নিয়ে কেনো ভাববো? ব্যাস এমনিতেই জিজ্ঞেস করছি! রাহুল যখন ওকে ফাষ্ট কিস্ করেছিলো তখন ওর কেমন ফিল হয়েছে! ব্যাস এইটুকুই, কাল স্নেহার বিয়ে হয়ে যাবে এরপর কি আর জিজ্ঞেস করতে পারবো নাকি!
জারিফা : [ হেসে ] আরে আর দুটো দিন পর জিজ্ঞেস করলে, কিস্ কেনো স্নেহা তোকে আরো অনেক কিছুর এক্সপেরিয়েন্স জানিয়ে দিতো!
স্নেহা : জারিফাআআআআ!
জারিফা : [ হেসে ] ওকে সরি সরি!
শায়লা : বাই দ্যা! ওয়ে জারিফা নাহয় তুই বল! তোর কেমন ফিল হয়েছিলো ফাষ্ট কিসে্!
জারিফা : এহহ! আমি কেনো বলবো! আগে স্নেহা থেকে কুয়েশ্চন করেছে!
স্নেহা : [ মুখের উপর কম্বল টেনে ] আমার ঘুম পাচ্ছে গাইস্ গুড নাইট!
মার্জান : [ স্নেহাকে নাড়িয়ে দিয়ে ] আরে স্নেহা বলনা!
শায়লা : হ্যা! স্নেহা বলনা! আমরাও তো একটু শুনি আমাদের রাহুল এবং স্নেহার রিলেশনের কখন থেকেই রোমান্স স্টার্ট হয়েছে! হুমহম!
স্নেহা : রিলেশন তো দূরের কথা! ওকে দেখলেই তখন আমার ভয় হতো! তখনি একদিন হলরুমে! ও হঠাৎ করে কিস্ করেছিলো! ফুললি আনেক্সপেক্টেড!
শায়লা : কিস্ দিয়েই সব শুরু! তাইতো বলি তোদের প্রেম এতো মিষ্টি কেনো!
জারিফা : আরে আমি ভালোবেসেছি, তবে সময়ের অপেক্ষা কেনো করবো! তখনি রাহুলের মন বলছিলো, চুম্মা চুম্মা দে দে! [ বাকিরা হেসে উঠলো ]
শায়লা : আচ্ছা নেক্সট নেক্সট স্নেহা তারপর কি হয়েছে বল না!
স্নেহা : তারপর ঘোড়ার ডিম হয়েছে! এবার ঘুম যা [ বলেই শক্ত করে মাথায় কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো ]
শায়লা : এইই জারিফা এবার তুই বল?
জারিফা : ভাই আমাদের কিস্ তো রিলেশনের পরই হয়েছিলো! ব্যাস এটাই বলবো! বাকি ডিটেইল বলা যাবে না কেমন ফিল হয়েছে! ছিঃ তোদের লজ্জা করে না এসব শুনতে ছোট ছোট বাচ্চারা এগুলো কি শোনার জন্য বসে আছিস যা ঘুম যা [ বলেই কম্বল টেনে পাশ মুড়ে শুয়ে গেলো, স্নেহাও জারিফার কথা শুনে কম্বলের ভেতর হাসতে লাগলো ]
শায়লা : আচ্ছা আমরা ছোট বাচ্চা তাই না? বাই দ্যা ওয়ে মার্জান! তুই চিন্তা করিসনা! আসিফকে বললে ও তোকে ফিল করিয়ে দিবে! [ বলতেই আড়চোখে তাকালো মার্জান,শায়লা কিটকিটিয়ে হেসে মুখের উপর কম্বল টেনে শুয়ে পড়লো ]
মার্জান : [ উপরের দিক তাকিয়ে মনে মনে কাদো ভাবে ] বলার দরকার হলো কই! আমার ভার্জীনিটাই শেষ করে দিলো,শয়তান একটা! [ এভাবেই ভাবতে ভাবতে চোখ লেগে এলো সবার ]
_________ সকাল ১১ টা বেজে ৪৫ মিনিট! ফোন বেজে চলছে স্নেহার! কিন্তু খবরই নেই কারো, বেঘোরের মতোই ঘুমিয়ে আছে সবাই!
পাশের রুম থেকে,
স্নেহার মা : [ এগিয়ে এসে ] আরে ফোন বাজছে স্নেহা রিসিভ করছিস না কেনো? [ বলেই ফোন হাতে নিয়ে রিসিভ করে ] হ্যালো! কে?
রাহুল : গুড মর্নিং আন্টি!
স্নেহার মা : আরে রাহুল! গুড মর্নিং!
-এক সেকেন্ড দাঁড়াও ও ঘুমাচ্ছে তো তাই!আমি এক্ষুনি ডেকে দিচ্ছি! [ বলেই মোবাইল কান থেকে সরিয়ে নেড়ে নেড়ে ডাকতে থাকে স্নেহাকে ]
রাহুল : [ গাড়ী একপাশে সাইড করে রেখে ] আরে আন্টি! দ্যাটস্ ওকে! ঘুমালে ঘুমুতে দিন! ডাকতে হবে না! আমি পড়ে কথা বলে নিবো!
স্নেহার মা : স্নেহা ওঠনা!
স্নেহা : ওহো! মা আরেকটু ঘুমুতে দাওনা!
স্নেহার মা : আরে রাহুল ফোন করেছে! নে ধর কথা বল, [ বলেই স্নেহার কানে লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো ]
স্নেহা : হ্যালো! [ বলতেই রাহুল মুচকি হেসে উঠলো, স্নেহার ঘুমন্ত কন্ঠটি যেনো তার আজকের সকালটি আরো মধুর করে দিয়েছে ]
রাহুল : নাইস্ [ বলতেই রাহুলের কন্ঠ শুনে স্নেহার মনে বাড়ি খেয়ে উঠলো,চোখ খুলে হুট করে উঠে বসলো ]
রাহুল : এক্সুলি আমি নিষেধ করেছি আন্টিকে তাও ডেকে দিয়েছে! এনিওয়ে ঘুমাও তুমি আমি পরে কল দিবো!
স্নেহা : [ কম্বল সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ] না নাহ! সমস্যা নেই বব..বলেন!
চলবে….